অস্তিত্ব,পর্ব:২

0
1519

# অস্তিত্ব
#পর্বঃ০২
#বনলতা

রিয়া কফি হাউজ এ বসে আছে রোজা।শান্তশিষ্ট মেয়ে রোজা।দেখতে মন্দ নয়।উজ্জল শ্যামলা।ঠোটের উপরের বাদিকে একটা তিল আছে।চুলগুলো কোমর ছুঁই ছুঁই। গোলগাল চেহারা।কফিতে চুমুক দিয়ে বাহিরে আবারও সে তাকাল।একটু পর একটা অটো এসে থামল কফি হাউজের বাহিরে।তা থেকে নেমে এলো পাচজন ছেলেমেয়ে।কাধের ওপর থেকে ওড়নাটা নিয়ে মুখ মুছল রোজা।ঠোটের কোনে হাসির আভা।হাত ইশারা করল ওদের।একটু পরই একে একে এসে বসে পড়ল টেবিলের ওপাশে রাখা চেয়ারগুলোতে।

চলতে থাকে তাদের আড্ডা। কলেজে পড়া এই ছয়জন যেন একে ওপরের প্রাণ।তাদের হাসি আর কথার ফুলঝুরিতে মুখরিত চারপাশ।বাসস্টপে আর কফি হাউজ এ দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা,আশা আর মুহিনের মায়ার ওপরের রাগ নিমিষেই ধুসর অতিত হয়ে গেলো।গরম গরম পরোটা আর চায়ের আড্ডার সাথে চলতে থাকে তাদের বন্ধুমহলের খুনসুটি। একটা ব্যাচ মিস হয়ে আবার পরেরটাও মিস হয়ে গেলো।শান্তা আর রোজার মিনমিনিয়ে অন্তত কলেজ যাওয়ার প্রস্তাবটাও নাকচ হয়ে গেলো।

—————————–
দুপুর দুটো বাজে।মাত্র বাসায় আসল মায়া।ইচ্ছে করেই দেরি করে এসেছে। যাতে কেউ বুঝতে না পারে।কাঠফাটা রোদে ক্লান্ত দুপুর এ হেলতে দুলতে বাসায় ঢোকে মায়া।আজ অনেক গরম।ফ্রেশ না হয়েই ফ্রিজ থেকে পানি বের করে।ঠান্ডা পানি খেয়ে গলাটা ভিজিয়ে নেয়।খালি বোতলটা টেবিলে রাখতে গিয়ে দেখে দুটো চকলেট এর রাফার।আশ্চর্য হয় মায়া।কারন এগুলো বিদেশি চকলেট।

মায়ার মেজ খালু দুবাই থাকে।দুবার উনি মায়ার জন্য এমন চকলেট আর কসমেটিকস পাঠিয়েছেন। তাহলে কি আবারও পাঠালো।কিন্তু দুমাস পরেই তো উনার আসার কথা।মনির বিয়ে ঈদের পর।তাই তিনি আসবেন।মায়ার খালাতো বোনের নাম মনি।তাহলে উনি এখন বাসায় কিছু পাঠাবে কেন।হিসেব মেলে না মায়ার।আবোল তাবোল চিন্তা করতে করতে নিজের ঘরে চলে যায় মায়া।

বিকেল পাঁচটা বাজে।অথচ এখনও ঘুমিয়ে আছে সে।সেই কখন থেকে ডাকাডাকি করেই চলেছে ওর মা শাহানা বেগম।ছেলের এই খামখেয়ালীতে প্রচুর বিরক্ত তিনি।মুহিনের বাবার নিজস্ব মাছের ব্যাবসা।নিজের তিনটা বাদেও আরও পাঁচটা পুকুর ইজারা নেওয়া আছে।সেখানে মুহিনের চেয়ে কম বয়সী ছেলেরা কাজ করে।অথচ মুহিন ফিরেও তাকায় না।

ওর বাবাও চায়না মুহিন পড়াশোনা বাদ দিয়ে কাজ করুক।একটু আগেই ওর বাবা কল দিয়েছিলো।ওঘুমিয়ে থাকায় ফোনটা ওর মা রিসিভ করে।বলেছে মুহিন যেন ওর বাবার কাছে গিয়ে মাছ নিয়ে উত্তর পাড়ার বড় বাড়িতে দিয়ে আসে।ও বাড়ির বড় ছেলে পাঁচ বছর পর বাড়ি এসেছে।

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here