অভিমান #পর্বঃ১৫

0
869

#অভিমান
#পর্বঃ১৫
……………

.
কাব্য ভাইয়া রুমে এসে ঠাস করে দরজা বন্ধ করলেন,
দরজা বন্ধ করার শব্দ শুনে আমার প্রান পাখি উরে যায় যায় অবস্তা,এই রাক্ষসটা এভাবে ক্ষেপে আছে কেন কে জানে,নিলয়ের আমাকে জরিয়ে ধরা কি উনি স্বাভাবিক ভাবে নেন নি,
এতে এত রেগে যাওয়ার কি হল,বন্ধু হিসেবে ও আমাকে জরিয়ে ধরেছে এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়,সব সময় শুধু রাগ দেখানো এটা মেনে নেওয়া যায় না,
উনি তখন ও আমাকে কোলে নিয়ে গম্ভীর মুখে থ মেরে দাঁড়িয়ে আছেন,উনার এভাবে হুটহাট যার তার সামনে আমাকে কোলে নেওয়াটা আমার খুব বিরক্তিকর লাগে,
উনি যে পরিমান রেগে আছেন ভয়ে উনার দিকে তাকাতে পারছিলাম না,
আমি উনার দিকে না তাকিয়ে অন্যদিকে দিকে তাকিয়ে কপট রাগ দেখিয়ে বলে উঠলাম ,এটা কোন ধরনের ফাজলামো ,আর কত বার বলবো এভাবে যখন তখন যার তার সামনে আমাকে কোলে নিবে না ,নিজের লজ্জা সরম নেই বলে কি মনে কর অন্যের ও নেই ,
হুট করে কোলে নিয়ে চলে এলে ওরা কি ভাবছে কে জানে,
উনি চোঁখ মুখ শক্ত করে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলেন,কে কি ভাবছে তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না,আই ডোন্ট কেয়ার,,
উনার চিৎকার শুনে আমি কেঁপে উঠলাম,
এত মায়াবী চেহারার ছেলেটা সব সময় এত হাইপার থাকে কেন কে জানে ,অল্প কিছুতেই ভয়ংকর রেগে যায় ,এর রাগের পরিমাণটা একটু কম হলে কি এমন ক্ষতি হতো ,সবই আমার কপাল ,আমি রাগী মানুষ ভয় পাই আর শেষে কি না আমার কপালে এমন বদরাগী জল্লাদ বর জুটলো,
‘উনার রাগ দেখে আমার রাগ দমে গেল আমি মিনমিনিয়ে বলে উঠলাম,এবার তো আমাকে কোল থেকে নামাও ,না কি সারাদিন এভাবে কোলে নিয়েই দাঁড়িয়ে থাকবে ,
কাব্য সুহার কথার কোনো জবাব না দিয়ে হাঁটতে লাগল,কাব্যকে এভাবে হাঁটতে দেখে সুহা চাপা চিৎকার দিয়ে বলতে লাগল,কি করছো টা কি রুমের ভিতর কোলে নিয়ে হাঁটা শুরু করেছো নামাও আমাকে,আমি কি বাচ্চা না যে হাঁটতে পারি না তাই কোলে নিয়ে হাঁটছো,
কাব্য সুহার কথায় কোনো পাত্তা দিল না,নির্লিপ্তভাবে হাঁটতে লাগল ,তারপর
ও সুহাকে নিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকে নামিয়ে দিল,কাব্যের চোঁখ মুখ থেকে রাগ
ঠিকরে পরছে ,ও হাত মুষ্টি বদ্ধ করে রাগী দৃষ্টিতে সুহার দিকে তাকিয়ে রইল,
কাব্যের চাহনি দেখে আর হুট করে এখানে নিয়ে আসায় সুহা ঘাবরে গেল,ও গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে ভীতু চাহনিতে তাকিয়ে কাব্যের দিকে ভাবতে লাগল ,
আমাকে এখানে নিয়ে এলো কেন,কি করতে চাইছে টা কি ,কোনো বাজে মতলবে নিয়ে আসে নি তো ,আর এভাবে এতো এংরি লুক দিচ্ছে কেন,যেন মনে হচ্ছে এক্ষুনি গিলে খাবে আমাকে,আমি ভয়ে ভয়ে ঢুক গিলে বলে উঠলাম,আমাকে এখানে নিয়ে আসলে কেন??আমার কাজ আছে আমি যাচ্ছি তোমার দরকার হলে তুমি সারাদিন এখানে বসে থাকো আমার কোনো সমস্যা নেই,বলেই আমি বেরিয়ে আসতে চাইলাম তখনই উনি আমার হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে একদম উনার কাছে নিয়ে গেলেন,আমি উনার কাছে যেতেই উনি শাওয়ারটা ছেড়ে দিলেন,হঠাৎ উনার এমন কান্ডে আমি থতমত খেয়ে গিয়ে দু পা পিছিয়ে গিয়ে দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেলাম ,শাওয়ারের নিচে পানিতে উনার সাথে সাথে আমি ও ভিজে একাকার হতে লাগলাম ,উনি তখন ও রাগী মুখ বানিয়ে এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন,আমি উনার দিকে প্রশ্নবিদ্ধ চোঁখে বিস্ময় নিয়ে তাকালাম,সাথে সাথে উনি আমার শাড়ীর আচঁলটা টান মেরে ফেলে দিলেন,আমি আতংকে উঠে উনার দিকে একবার তাকিয়ে দ্রুত শাড়ী
ঠিক করতে চাইলাম কিন্তু উনি আমার হাত শক্ত করে ধরে ফেললেন,আমি উনার এমন কাজে আমি লজ্জায় ভয়ে কুকড়ে গিয়ে বলে উঠলাম ,কি করছো কি তুমি পাগল হয়ে গেছো না কি,ছাড়ো আমার হাত,
আমার কথা শুনে উনি আমাকে নিজের আরো কাছে নিয়ে গিয়ে জরিয়ে ধরে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে উঠলেন ,
নিলয়ের এতো বড় সাহস হলো কি করে আমার সামনে তোমাকে জরিয়ে ধরে,যার দিকে অন্য কোনো পুরুষ তাকালে আমার সহ্য হয় না সেখানে আমার সামনে ও তোমাকে জরিয়ে ধরল,এটা আমি কি করে সহ্য করবো,ও যদি আমার ভাই না হয়ে অন্য কেউ হতো তাহলে আজ ওখানেই ওকে পুতে ফেলতাম,আমি ছাড়া তোমার শরীরে অন্য কোনো পুরুষের স্পর্শ থাকবে না ,তোমাকে স্পর্শ করার অধিকার শুধু আমার,আর কারো নেই।উনার এমন ভাবে জরিয়ে ধরায় আমার দম বন্ধ হয়ে আসতে লাগল ,আমি নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতে লাগলাম ,কিন্তু উনি কিছুতেই ছাড়ছেনা শক্ত করে জরিয়ে ধরে উন্মাদের মতো কথা বলতেই থাকলেন,
আমি নিরুউপায় হয়ে কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলাম,এমন করছো কেন তুমি ছাড়ো আমাকে ,লাগছে আমার,
কিন্তু উনি আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে বলতে লাগলেন,নিলয়ের এই স্পর্শ আমি কিছুতেই তোমার শরীরে থাকতে দেবো না,এই পানি আর আমার ভালেবাসার স্পর্শগুলো দিয়ে আমি নিলয়ের স্পর্শ তোমার শরীর থেকে মুছে দেবো ,
বলেই উনি আমার সারা শরীরে একের পর এক কিস করতে লাগলেন,আর উনার হাত ও এলোমেলো ভাবে আমার সমস্ত শরীরে বয়ে বেড়াতে লাগল,উনার এমন স্পর্শে আমার নি:শ্বাস আটকে আসতে লাগল,
কিন্তু নিজেকে উনার কাছ থেকে কিছুতেই ছাড়াতে পারছি না ,উনার শক্তির সাথে কিছুতেই আমি পেরে উঠছিলাম না,অনেকক্ষন পর উনি থেমে আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে আমার কপালের সাথে কাপাল ঠেকেয়ে রইলেন,উনার চোঁখ মুখ প্রচন্ড অশান্ত জোরে জোরে নি:শ্বাস ছাড়ছেন ,এমন একটা পরিস্তিতিতে পরে আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না,উনার দিকে তাকাতে ও পারছিলাম না লজ্জায় ভয়ে,আমি চোখ বন্ধ করে এক হাত দিয়ে শাড়ীর আঁচল কামছে ধরে স্ট্যাচুর মতো দাঁড়িয়ে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগলাম,আমার সমস্ত শরীর মৃদু কাঁপছে কিন্তু কিসের জন্য কাঁপছে বুঝতে পারলাম না ,ভয়ের জন্য না কি ঠান্ডা লেগে ,না কি উনার এমন গভীর স্পর্শে শিহরিত হয়ে,হঠাৎ অনুভব করলাম পানি পড়ার শব্দ শুনা যাচ্ছে না গায়েও পানি পারছেনা আমার সম্মতি ফিরল ,উনার কোনো স্পর্শ ও পাচ্ছিনা,উনি কি চলে গেছেন ,উনি চলে গেছেন ভেবে আমি স্বস্তির নি:শ্বাস ফেললাম,ধীরে ধীরে চোঁখ খুললাম,উনি আছেন কি না দেখার জন্য ,তাকিয়ে আমি ভরকে গেলাম উনি দু হাত আমার দু দিকে দেয়ালের উপর রেখে আমার সামনে স্থির দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন ,উনার চোঁখ নাক লাল হয়ে আছে চুল থেকে পানি জরছে সারা শরীর পানিতে ভিজে একাকার,চোঁখের দৃষ্টি কেমন তীক্ষ্ণ আর ভয়ংকর,উনাকে এই ভাবে দাঁড়িয়ে তাকতে দেখে আমার মাথা ভন ভন করতে লাগল ,আজ কি এই অসভ্য লোকের হাত থেকে আমার রক্ষা নেই ,সব দোষ এই নিলয়ের বাচ্চার ,এই গাধা ছেলের গাধামীর জন্য আমার এই অবস্তা,আমি বেশীক্ষণ উনার তীক্ষ্ণ দিকে তাকিয়ে তাকতে পারলাম না,চোঁখ নামিয়ে নিয়ে মাথা নিচু করে ফেললাম,তখনই উনি ভয়ংকর রাগী কন্ঠে বলে উঠলেন,
কলেজে থাকতে নিলয়ের সাথে তোমার কেমন সম্পর্ক ছিল,তোমাদের মাঝে কি এতই গভীর রিলেশন ছিল যে সে তোমাকে দেখা মাএ জরিয়ে ধরল,
কলেজে থাকার সময়ও কি ও তোমাকে এভাবে জরিয়ে ধরতো,
আচমকা উনার মুখে এমন প্রশ্ন শুনে আমি বিব্রত হয়ে গেলাম,এটা কোন ধরনের প্রশ্ন ,আমি তো আগেই বলেছি ও আমার একজন ভালো বন্ধু তারপর ও উনি এসব কি জিজ্ঞেস করছেন,
আমি কি বলবো বুঝতে না পেরে চুপ করে গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে রইলাম,
উনি আবার একটা ভয়ংকর চিৎকার করে বলে উঠলেন,
কি হল কথা বলছো না কেন, স্পিক আউট ডেম ইট!!
উনার চিৎকার শুনে ভয়ে আমি ফুফিয়ে কেঁদে উঠলাম,
আমাকে কাঁদতে দেখে উনি আবার চিবিয়ে চিবিয়ে বলে উঠলেন,
কান্না থামাও আর আমি যা জিজ্ঞেস করছি সেটার উওর দাও ,,,এমনি তেই মাথা গরম আছে আর আমার মাথা গরম করিও না প্লিজ,,
উনার কথা শুনে ভয়ে আমি ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে বলে উঠলাম,ও শুধু আমার বন্ধু এ ছাড়া ওর সাথে আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই ,কলেজে থাকতে আমাকে জরিয়ে ধরা তো দূরের কথা আমার হাতও কখনও ধরতে দেই নি,আমি জানি না ও কেন আমাকে এই ভাবে জরিয়ে ধরল,হয়তো এত দিন পর দেখা হয়েছে সেই এক্সসাইটমেন্ট থেকে ধরে ফেলেছে,
বলেই আমি কাঁদতে লাগলাম,
উনার কোনো সাড়া শব্দ পেয়ে আমি তাকালাম উনার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি কেমন নেশা লাগা চোঁখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন,উনি ধীরে ধীরে এক হাত দেয়াল থেকে নামিয়ে আমার পেটের মাঝে রাখলেন,আমি উনার হাতের মাঝ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলাম ,উনি অন্য হাত দিয়ে আমাকে চেপে ধরে আমার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে নিলেন,আমার চোঁখ দিয়ে অজোরে জল ঝরছে,আমি মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে রয়েছি,জোরাজুরি করে যে কোনো লাভ হবে না সেটা আমার থেকে ভালো কেউ জানে না,তারই নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করলাম না,
উনি আমার ঠোঁটে একটা গভীর কিস করে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে লাগলেন ,যাওয়ার পথে হঠাৎ দাড়িয়ে বলে উঠলেন,
এমন ঘটনা যেন দ্বিতীয়বার আমার সামনে না ঘটে,তোমার বন্ধুগুলো যদি আমার হাতে মরতে না দেখতে চাও তাহলে যেখানে যেখানে তোমার যে বন্ধুগুলো রয়েছে তাদের সবাইকে সতর্ক করে দিও বলেই উনি চলে গেলেন,আর আমি অস্রুজরিত নয়নে উনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
[চলবে?]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here