অবহেলায় ভালোবাসা? পর্ব-১৩ শেষ

0
1156

#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ১৩ ( শেষ )
রিয়ান মেঘাকে বলল, আবির ভাইয়াকে আমি অনেক ভালো জানতাম সে এমন জগন্য কাজের সাথে জড়িত থাকবে তা আমি ভাবতেও পারিনি

সবাই এখন ভাববে আমরাও তার সাথে জড়িত। খুবই ঘৃনা হচ্ছে তার প্রতি। তাকে বড় ভাই মনে করতাম আর সে কিনা এমন জগন্য কাজ করলো

আয়ান ভাইয়ার বন্ধু অথচ আয়ান ভাইয়া তার সাথে থেকেও কিছু বুঝতে পারলো না। সে খুবই বুদ্ধিমান ছিলো। আমার তো মনে হয় রবিও এসবের সাথে জড়িত। ও নিজে ভিপি হওয়ার জন্য আবিরের সব অপকর্ম সামনে আনলো। আর এতদিন সবার সামনে খারাপ ছিলো কিন্তু এখন হিরো হয়ে গেছে

ওর মনে কোন পরিকল্পনা আছে। আমার মনে হয় ও আর মেহেদী নিজেই ড্রাগের সাথে জড়িত তা না হলে ওকে কেনো কেও মারতে চাইবে?

মেঘা বলল, যে সবার ভালো চাইবে তার অনেক শত্রু থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এতদিন রবি এসব কেনো করেছে তার কারন সবার সামনে এসেছে রবি যাদেরকে মেরেছে তারা সবাই মেয়েদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতো। ড্রাগের সাথে জড়িত ছিলো। এর সাথে তোমার বন্ধুরাও আছে

মেঘার কথা শুনে রিয়ান অবাক হয়ে গেলো। ও এতদিন মেঘাকে রবির কাছে খারাপ বানিয়ে এসেছে আর এখন মেঘা রবিকে ভালো বলছে। রিয়ান এখন মেঘাকে কিছু বলতেও পারবে না তাহলেই মেঘা ওকে সন্দেহ করবে

মেঘাকে নিয়ে রিয়ানের অন্য পরিকল্পনা আছে। খুবই ভয়ংকর পরিকল্পনা। রিয়ানের শুধু ক্ষমতা আর টাকা দরকার। ভালোবাসার কোন প্রয়োজন নেই ওর কাছে

রিয়ান মেঘাকে বলল, নিজেকে এখন খুবই অপরাধি মনে হচ্ছে। আমার বন্ধুরাও এর সাথে জড়িত আর আমি জানতেও পারলাম না। এটাও জানি না রবির পরিকল্পনা কি। তবে এটা জানি ও আমার সাথে কিছু একটা করবে

– রবি কেনো তোমার ক্ষতি করবে?

– নিজের চোখেই তো দেখলে ও কতবার আমাকে মেরেছে। তারপরও এই কথা বলছো। আমি নিশ্চিত ও ভয়ংকর কিছু একটা করবে।

– তুমি অযথাই চিন্তা করছো। তখন তো রবি আমার জন্য তোমাকে মেরেছিলো। রবি আর কোনদিন তোমাকে কিছু বলবে না কারন ও আর আমাকে বিরক্ত করে না

– তুমি হঠাৎ রবির পক্ষ নিয়ে কেনো কথা বলছো?

– যে ভালো তাকে কেনো খারাপ বলবো। খারাপকে খারাপ বলবো। রবি কেমন তা কলেজের সবাই জেনেছে। হয়তো রবি ভিপিও হয়ে যাবে

– আমি তো সেটাই বলতে চাইছি রবি ভিপি হওয়ার জন্য এসব করেছে। আচ্ছা তুমি বলো, তুমি ভিপি কাকে চাও

– দেখো তুমি আর আয়ান ভাইয়াও ভালো কিন্তু রবি যা করেছে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। নিজের জিবনের ঝুঁকি নিয়ে সব কলেজকে ড্রাগ মুক্ত করেছে। এখন আর কলেজে কেও কোন মেয়েকে বিরক্ত করে না। তাই আমার মতে কলেজকে অন্যায়মুক্ত রাখতে হলে রবিকেই ভিপি হিসেবে দরকার

৩দিন পর

মিম আজকে সাব্বিরকে ওর বাবা- মার সাথে দেখা করাতে নিয়ে যাবে। মিম সাব্বিরকে ওর বাসায় নিয়ে গেলো। সাব্বিরকে ড্রয়িংরুমে বসতে বলে মিম ভিতরে গেলো।

অনেকখন হয়ে সাব্বির বসে আছে। মিম এখনও আসছে না। হঠাৎ দেখলো ওর চারপাশে সবাই জড়ো হয়ে গেছে। সাব্বির বুঝতে পারছে ও ফেঁশে গেছে।

মিম বেরিয়ে আসলো। সাব্বির মিমকে বলল, কেনো করলে আমার সাথে এমন? আমি তোমাকে ভালোবাসতাম আর তুমি আমাকে ধোঁকা দিলে।

– কিন্তু আমি তোমাকে কখনও ভালোবাসতাম না। তোমার সাথে শুধু ভালোবাসার অভিনয় করেছি

– কেনো করলে এমন?

– যাতে রবির কাছে পৌছাতে পারি। কিন্তু আমাদের ধারনার থেকেও রবি বুদ্ধিমান। ওর কারনে আমাদের সব পরিকল্পনা শেষ হয়ে গেছে

– রবি তোকে ছাড়বে না

– দেখা যাবে। এখন দেখবো রবি তোকে বাঁচাতে আসে কিনা। তোকে বাঁচাতে হলে রবিকে মারা যেতে হবে। ওর আর ভিপি হওয়া সম্ভব হবেনা। খুবই দুঃখ হচ্ছে ওর জন্য

মিম রবিকে কল দিয়ে বলল, যদি সাব্বিরকে বাঁচাতে চাও তাহলে ভিপি নির্বাচন থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেও

– সাব্বিরের কিছু হলে আমি তোকে ছাড়বো না। তুই যেখানেই লুকিয়ে থাকিস সেখান থেকে তোকে খুজে বের করবে

– তা করিস। এখন নির্বাচন থেকে সরে যা

কিছুখন পর রবি চলে আসলো। সাব্বিরের গলায় কেও চাকু ধরে আছে। মিম রবিকে বলল, নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিস তো?

– না

– তাহলে আর সাব্বিরকে বাঁচিয়ে রেখে কি করবো

– হুম মেরে ফেল ওকে

রবির কথা শুনে সাব্বির অবাক হয়ে গেলো। ওর
জিবনের থেকে রবির কাছে নির্বাচনটা বড় হয়ে গেলো। সাব্বির রবিকে বলল, দোস্ত তুই এসব কি বলছিস? তুই আমাকে বাঁচাতে এটা করতে পারবি না?

– সত্যিকারের বন্ধু হলে তো তোর জন্য নিজের জিবনটাও দিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু তুই তো একটা কালশাপ। যে আমার সাথে থেকে আমাকে ধোকা দিয়েছিস। কেনো করেছিস এসব?

– সব যখন জেনেই গেছিস তাহলে আর অভিনয় করে কি লাভ। আমি কখনই তোর ভালো চাইনি। আমি শুধু নিজের ক্ষমতা চাই। আমি ভিপি হতে চাই

– তাই বলে নিজের বন্ধু্র সাথে বেইমানি করবি। তুই আমাকে মারতে লোক পাঠিয়েছিলি। কিন্তু আফসস তুই কখনও ভিপি হতে পারবি না

এর ভিতরে রবির অন্য বন্ধুরা সবাই চলে আসলো।সবাইকে মেরে সাব্বির আর মিমকে নিয়ে গেলো

কিছুদিন পর নির্বাচন। এখন রিয়ানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় এসেছে। রিয়ান মেঘাকে কিডন্যাপ করলো।

মেঘা একটা চেয়ারের সাথে বাঁধা আছে রুমের ভিতর। মেঘা চিৎকার করে বলল, আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছো? আমি কি ক্ষতি করেছি তোমাদের?

হঠাৎ কেও একজন বলল, অনেক হয়েছে তোমার অভিনয়। তুমি কি ভেবেছো আমি বোকা? তুমি আমার সাথে অভিনয় করবে আর আমি বুঝতে পারবো না

– তুমি এসব কি বলছো রিয়ান? আমি কেনো তোমার সাথে অভিনয় করতে যাবো? আমি তো তোমাকে ভালোবাসি

– চুপ আর অভিনয় নয়। যে মেয়ের জন্য সবাই পাগল সে কিনা আমার সাথে কথা বলতে আসতো
তখনই আমার সন্দেহ হয়। পরে খোজ নিয়ে জানতে পারি তুমি মাইশার ফ্রেন্ড। মাইশাকে আমি ধোকা দিয়েছিলাম আর তুমি আমাকে খারাপ প্রমান করতে আমার সাথে অভিনয় করেছিলে। ওইদিন কলেজে তুমি আমার সব কথা শুনেছিলে তা আমি জানতে পেরেছি।

এখন তোমাকে ব্যবহার করে রবিকে নির্বাচন থেকে নিজেকে সরে যেতে বলবো। রবি তোমার জন্য সবকিছু করতে পারে

হঠাৎ কেও একজন বলে উঠলো ভয় পেয়ো না জানপাখি আমি আছি তো। মেঘার মুখে হাসি ফুটে উঠলো সবাই কিছু বুঝে উঠার আগেই রবি আর ওর বন্ধুরা ওদের মারা শুরু করলো

রিয়ান আর আয়ানের বিরুদ্ধে সব প্রমান রবি পুলিশকে দিয়েছে। ওরাও ড্রাগের সাথে জড়িত
আর রিয়ান যেভাবে মেয়েদেরকে ব্যবহার করেছে তাও

রবি মেঘাকে থাপ্পর মেরে বলল, কখনও তো আমার কথা শুনিসনি। এখন দেখেছিস তো কি হয়েছে। তুই কি বলেছিলি আমি তোর সামনে আসলে তুই আত্নহত্যা করবি। যা কর আত্নহত্যা

১০ দিন পর
রবি নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। মেঘা এই ১০ দিনে রবির সামনে আসেনি। ও তো রবিকে অনেক কষ্ট দিয়েছে

রবি ওর বন্ধুদের সাথে কথা বলতেছে হঠাৎ দিশা এসে বলল, ভাইয়া মেঘা তো হাসপাতালে

– কি হয়েছে ওর?

– ও আত্নহত্যা করতে চেষ্টা করেছিলো

রবি হাসপাতালে মেঘার কাছে গেলো। মেঘাকে আবার থাপ্পর মারলো

– আমি আত্নহত্যা করতে বলেছি বলে সত্যিই করবা নাকি?

– তুমি তো জানোই আমি তোমার সাথে কেমন এমন করেছি। তুমি এখন আমার সাথে কথা বলোনা কেনো?

– তুমি তো নিষেধ করেছিলে?

– তারপরও তো আমার সামনে আসলে তাহলে কথা বলতে দোষকি?

— হাহা, আচ্ছা সত্যিই কি আত্নহত্যা করবা নাকি?

– আরে না এটা তো অভিনয় ছিলো। তুমি কি আবার আগের মতই থাকবা নাকি?

রবি কিছুখন ভেবে বলল, আমি কখনও পরিবর্তন হবো না

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here