অবশেষে তোমাকে পাওয়া ৪+৫

0
534

#অবশেষে_তোমাকে_পাওয়া
#পর্ব_চার+পাঁচ
#তারা ইসলাম
————————————————————————
সকালে এমন একটা কেলেঙ্কারি করে!আমি আর রান্না ঘর থেকে নিজের রুমে যায়’নি।আজ ছুটির দিন হওয়ায় সবাই বাসায় আছেন।আমি অল্প সল্প শাশুড়ি মা আর ভাবিকে সাহায্য করছি।কিন্তু গরমে ঘেমে একদম ঘামকুমারী হয়ে গেলাম।তাই শাশুড়ি আম্মু বললেন- তোমরা দুইজন গোসল করে নাও।আর তানিয়া মা তুমি তাড়াতাড়ি গোসল করে ফেলো আবার আফ্রানকেও করাতে হবে!ওকে খাওয়াতে হবে।

“তানিয়া ভাবি হেসে উনার রুমে চলে গেলেন।তবে আমি রুমের কাছে এসে ভেতরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলাম না।তাও বাধ্য হয়ে নিজেকে সামলিয়ে ভেতরে যাবো ঠিক করলাম।কি আর হবে শুধু জ্ঞান হারাবো এছাড়া তো উনি আর আমাকে মে’রে ফে’লতে পারবেন না।

“আমি রুমে ডুকে দেখলাম উনি গতরাতের সে ফাইল গুলা নিয়ে কি যেনো করছেন।দরজা হয়তো উনিই খুলা রেখেছেন।আমি আস্তে আস্তে আলমারির কাছে গেলাম।এমন ভাবে পা ফেললাম যাতে উনি না বুঝেন আমি রুমে এসেছি।তবে শেষ রক্ষা হলো না।উনি আমার দিকে গম্ভীর চোখে তাকালেন।আর আমি ভয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি কিছু না বলে উনার কাজে মন দিলেন।তাই আমি একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে শাড়ি হাতে নিয়ে সব গহনা খুলে ওয়াশরুমের দিকে চলে এলাম।

“গোসল করে ভালোভাবে শাড়ি গায়ে জড়িয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলাম।হতেই উনার দিকে তাকালাম!উনি উনার কাজেই ব্যস্ত”ভাবলাম আজ হয়তো কিছু বলবেন না।সেটা ভেবেই মনে মনে হাসলাম।তারপর আয়নার সামনে গিয়ে হাতে বালা,কানে দুল,গলায় ছোট হার পরে নিলাম।আর একটু সেজে চুল গুলা খুলে দিয়ে পাখার নিচে দাঁড়ালাম।তারপর আস্তে আস্তে চুল গুলা নেড়ে-ছেড়ে শুকানোর চেষ্টা করলাম।

“আর অন্য দিকে রুদ্র ফাইল থেকে চোখ সরিয়ে নূরের দিকে তাকাতে থমকে গেলো।ভেজা চুল এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া।ভেজা চুলের কারণে ব্লাউজ ভিজে একাকার।নূরের এমন রুপ দেখে রুদ্র চোখ বন্ধ করে কয়েকটা লম্বা শ্বাস নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করলো।মেয়েটার প্রতি সে দিন দিন আকর্ষণ অনুভব করছে।করাটা স্বাভাবিক সে তার ওয়াইফ।

“নূর চুল নাড়া-ছাড়া করতে করতে হটাৎ রুদ্রের দিকে তাকালো।রুদ্রের গভীর চোখ দুটো তার মধ্যে সীমাবদ্ধ দেখে চমকে উঠলো।রুদ্র এখনো ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে।কিন্তু কিছু একটা মনে পরতেই সে দ্রুত উঠে নূরের কাছে গিয়ে তার হাত পিছনে আলতো চেপে ধরে বললো- বলছিলান না যেখানে সেখানে বা*চ্চা*মো না করতে?হ্যা বলেছিলাম?

“রুদ্রের এমন হুট করে আক্রমণে ঘাবড়ে যায় নূর।যেন মনে হলো সে জ্ঞান হারাবে।

“রুদ্র হয়তো সেটা বুঝতে পারলো তাই রেগে বললো- যদি জ্ঞান হারাও তাহলে এমন অবস্থা করবো যে আর জ্ঞান ফিরে আসবে না।

“উনার কথার ঝংকারে আমি আর জ্ঞান হারালাম না তবে মৃদু কাঁপছে আমার সারা-শরীর।

“আমার কাঁপা-কাঁপি দেখে উনি বিরক্ত হয়ে বললেন- এত কাঁপছো কেন?ভালোভাবে দাড়াও বলছি।

“আমি নিজেকে যথেষ্ট শান্ত রাখার চেষ্টা করলাম তবে সফল হলাম না এক প্রকার দূর্বল হয়ে উনার বুকে ঢলে পরলাম তবে জ্ঞান হারায়’নি।

“উনি আমার এমন কাজে হতভম্ব হয়ে গেলেন।তারপর মিনমিন গলায় বললেন- একটু কাছে আসতেই তুমি জ্ঞান হারাও আর দাদি যা বললো তা করতে গেলে তো তোমাকে আর খুঁজেও পাওয়া যাবে না ন্যাকা।

“উনার কথার মানে বুঝতে পেরে লজ্জায় আমি লাল হয়ে গেলাম।তবে দূর্বল শরীর নিয়ে উনার বুক থেকে মাথা তুলতে পারলাম না।

“উনি আমাকে বললেন- দাদি আমাদের সবার গুরুজন।উনাকে আমরা সবাই সম্মান দিয়ে কথা বলি।তুমি যেভাবে কথা বলেছো নিশ্চয় উনি কষ্টে পেয়েছেন?উনি কথা গুলা ভুল বলেন’নি কারণ উনি তো সে জামালার মানুষ।তাই উনার কথা গুলা এমন।তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী তাই তোমাকে বুঝাচ্ছি এখন।কিন্তু পরের বার যেন আর ভুল না হয়।তখন বুঝাবো না বরং পি*স্ত*ল দিয়ে ঠু*কে দিবো।এখনো চিনো নাই আমাকে।

“উনার কথা গুলা শুনে ভয়ে আমি আরও জমে গেলাম।আসলেই তো উনি ভুল কথা বলেন’নি।আমি কোনোদিনও দাদির সাথে এমন বিহেভ করতাম না।উনার প্রতি রাগ ছিলো সেটাই বের করেছিলাম তখন।উনি আমাকে এত সুন্দর করে বুঝালেন যে আমার বেশ ভালো লাগলো।তবে শেষের কথা শুনে কেঁপেও উঠলাম।

“তারপর আমি আস্তে আস্তে উনার বুক থেকে মাথা তুলতেই উনি হুট করে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরলেন।উনার কাজে আমি বোকা বনে গেলাম।আমি চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকাতেই উনি বললেন- এমন আধ-ভেজা অবস্থায় আমার সামনে আসবে না বলে দিলাম।ভুল কিছু হয়ে গেলে তুমি এক-মাস জ্ঞান হারিয়ে পরে থাকবা।বলেই আমাকে ছেড়ে আবার বিছানায় বসে পরলেন।

“উনার কথা শুনে লজ্জায় আমি কুঁকড়ে গেলাম।তারপর নিজেকে পরিপাটি করে উনার দিকে না তাকিয়ে রুম ত্যাগ করলাম।
————————————–
~ আজ অনেকদিন পর আমি আর মারিয়া ভার্সিটি যাচ্ছি।তাও আবার তাদের গাড়ি নিয়ে।যা আমার কাছে বিরক্তিকর!কারণ আমি সব সময় রিকশা করে চলাচল করতে পছন্দ করি।কিন্তু শশুড় বাবার হুকুমে আমাদের গাড়ি করেই যেতে হচ্ছে।আর মির্জা সাহেবের কথা মতো আমি কালো,বোরকা,হিজাব,পড়লাম!আমি আগেও পড়তাম তবে মাঝে মাঝে।আমি ভার্সিটি আসার আগে উনি বার বার করে বলেছেন- দুষ্টামি,লাফালাফি একদম করবে না।উনার এক-প্রকার হুমকি-ধুমকি শুনেই ভার্সিটি যাচ্ছি।
———————————
তো মিস্টার রুদ্র মির্জা নিজের ওয়াইফ কে কখন ডিভোর্স করছো?

“রুদ্র ভ্রু কুঁচকে রেয়ান চৌধুরির দিকে তাকিয়ে বললো- আমি কেন আমার ওয়াইফকে ডিভোর্স দিতে যাবো?

“ও মিস্টার রুদ্র মির্জা- আমি জানি তোমাদের বিয়েটা একটা মিস্টেকের কারণেই হয়েছে।

“রুদ্র স্বাভাবিক গলায় বললো- তো?

“রেয়ান হেসে বললেন- তো কথা হচ্ছে আমার বোন তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে।আমি চাই তুমি আমার বোনকে বিয়ে করো।

“রেয়ানের কথা শুনে রুদ্র চেহেরায় বিরক্তি ফুটিয়ে তুলে বললেন- মিস্টার রেয়ান চৌধুরি আমি অলরেডি বিবাহিত।আমার দুটো বউ পা*লা*র ইচ্ছে কিংবা মুড কোনোটাই নেই।

“রেয়ান এবার চোখ মুখ শক্ত করে বললেন- তুমি তোমার ওয়াইফকে ডিভোর্স দিবে।আর আমার বোনকে বিয়ে করবে!এটাই ফাইলান।

“রুদ্র বাঁকা হেসে বললেন- আমার লাইফের ডিসিশন কি আপনি নিবেন মিস্টার রেয়ান চৌধুরি?আর আমি আমার ওয়াইফকে ডিভোর্স দিয়ে তার জীবন নষ্ট করতে চাই’না।

“রেয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বললেন- তাহলে আমাদের মাঝে একটা ডিল হয়ে যাক?

“রুদ্র শান্ত গলায় বললেন- কিসের ডিল?

“রেয়ান শান্ত আর স্বাভাবিক গলায় বললেন- তুমি যখন চাও’না তোমার বর্তমান ওয়াইফে ডিভোর্স দিয়ে জীবন নষ্ট করতে।তখন আমি একটা কথায় বলবো তুমি ডিভোর্স দিয়ে দাও ওই মেয়েটাকে তারপর নাহয় তাকে আমি বিয়ে করবো।আর তাও তুমি আমার বোনকে বিয়ে করে নাও!আমার বোনের জন্য এতটুক ত্যাগ আমি করতেই পারি।

“রুদ্র তার কথা শুনে রেগে টেবিলে থাকা গ্লাসটা নিচে ফেলে বললো- মুখ সামলে কথা বলুন মিস্টার রেয়ান চৌধুরি।ভালোভাবে কথা বলছি বলে মাথায় উঠে নাচবেন না।আমি আমার বর্তমান ওয়াইফ নিয়ে সন্তুষ্ট আছি।আর আমি কাপুরুষ না যে নিজের ওয়াইফকে অন্য কারোর হাতে তুলে দিবো।এবং গেট আউট বলেই চিল্লিয়ে উঠলেন।

“রেয়ান অপমানে সে জায়গা ত্যাগ করলেন।তবে যেতে যেতে বললেন- আমার বোনকে তোমার বিয়ে করতেই হবে।

“রেয়ানের সব কথা ভাবতেই রাগে সারা-শরীর কাঁপছে রুদ্রর।সে কখনোই ভাবতে পারে না নূর অন্য কারো হবে সেটা।সে নূরের সাথে থাকতে থাকতে তার মায়ায় পরে গেছে।কিন্তু রেয়ানের কথা গুলা কোনো ভাবে ভুলতে পারছে না।তাই সেখানে থাকা কিছু জিনিসপত্র ভাঙ্গতে শুরু করলো।

“সে কখনো তাদের অফিসে আসে না।তার আলাদা কাজ থাকে সব-সময় কিন্তু বাবার কথাতেই আজকে বাধ্য হয়ে আসলো।আর আসতেই রেয়ান হাজির।রুদ্র মনে মনে ভাবলো রেয়ান যদি এমন একটা বাজে ডিল নিয়ে আবার কখনো তার কাছে আসে।তখন সে নির্ঘাত ঠু*কে দিবে।
——————————————–
রেয়ান নিজে আজ গাড়ি চালিয়ে বোনের ভার্সিটির দিকে যাচ্ছে।সে কোনো সময় বোনকে আনতে যায়’না কারণ ব্যস্ততার জন্য একদম সময় পায়’না।কিন্তু আজ সে ফ্রী তাই বোন’কে সারপ্রাইজ দিতে আসা।মনে মনে ভাবছে রুদ্রর কথা গুলা।রুদ্র যা বলেছে তা একদম ঠিক।তবে রেয়ান কি করবে বোন’কে তাকেই ভালোবাসে।ভাবলো পরে আবার বুঝাবে রুদ্রকে আপাতত সব শান্ত হুক।

“ভার্সিটির কাছে আসতেই সে গাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কখন তার বোন বের হবে তার জন্য।

“কিন্তু কিছুক্ষণ পর কিছু একটা দেখে রেয়ান থমকে যায়।কঠোর হৃদয়ে খেলে যায় একরাশ অনুভূতি।এই অনুভূতির সাথে তার নতুন পরিচয়।সে জানে না এই অনুভূতির নাম কি?

“সে দেখতে পায়- তার থেকে কিছুটা দূরে দুটো মেয়ে বেলুন নিয়ে টানাটানি করছে কিন্তু তার চোখ আটকে যায় কালো বোরকা হিজাব পড়া মেয়েটির দিকে।চেহেরা দেখা যাচ্ছে কারণ মুখে দেওয়া মাস্কটা হাতে নেওয়া।গোল গোল টাইপের গাল দুটো ঘেমে লাল হয়ে আছে।কাজলহীন চোখ দুটো বেশ আর্কষনীয়।ঠোঁটটা অনেকটা গোলাপি।এতটুক ভাবতেই মেয়েটা তার কাছে এসে বললো- ভাইয়া আপনি কি আমার বেলুন গুলা রাখবেন। তবে ওই যে চু*ন্নি (ওর সাথে থাকা মেয়েটার দিকে ইশারা করে বললো)ওকে আবার দিতে যাবেন না।ও আপনার থেকে নিতে আসলে অবশ্যই ধমক দিবেন বলেই মেয়েটা আমার গাড়ির পিছনে লুকালো।মেয়েটার কন্ঠ শুনে যেন আমি অন্য দুনিয়ায় হারিয়ে গেলাম।সে কি বললো সেটা আমি শুনিও’নি শুধু ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

“মেয়েটাকে খুঁজতে এলো সে মেয়েটা যাকে সে চু*ন্নি বলে সম্মোধন করছে।

“সে মেয়েটা আমার কাছে এসে বেলুন গুলা দেখে বললো- ভাইয়া নিশ্চয় বেলুন গুলা আপনাকে নূর দিয়েছে।তো নূর কই জানেন?

“যাকে দেখে আমার হার্ট দ্রুত চলা শুরু করেছিলো সে মেয়েটার নাম নূর।সেটা জেনেই মনে মনে হাসলাম।আরও হাসি পেলো তাদের বা*চ্চা*মো দেখে।

“আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললাম- হ্যা এইগুলা আমাকে নূরময়ী দিয়েছে।আর সে আমার গাড়ির পিছনেই লুকিয়ে আছে।

“আমার কথা শুনে নূরময়ী গাড়ির পিছন থেকে বের হয়ে এসে ছু মে’রে বেলুন গুলা নিয়ে আমাকে বললো- আপনার মতো আজাইরা লোককে বিশ্বাস করায় আমার ভুল হয়েছে।কেন বলতে গেলেন?মজাটায় ন*ষ্ট করে দিলেন।বলেই এক-প্রকার রেগে চলে গেলো নূরময়ী।তার পিছন পিছন চলে গেলো তার সাথে থাকা মেয়েটা।

“ওর কথা শুনে মুচকি হাসলাম।মেয়েটা বড়ই বা*চ্চা*মো স্বভাবের।তারপর মনে মনে নূরময়ী নামটা কয়েক-বার উচ্চারণ করতেই রেয়ানের মনে অদ্ভুত অনুভূতি হলো।মনে মনে ভাবলো এই নূরময়ীকে আমার চাই চাই।তাকে একান্ত আমার নূরময়ী করে রাখতে চাই….
—————————–
(চলবে)

#অবশেষে_তোমাকে_পাওয়া
#পর্ব_পাঁচ
#তারা ইসলাম
———————————————————————-
রোদের তাপে সারা-শরীর জ্বলসে বাসায় এসে আমি আর মারিয়া ঝগড়া শুরু করে দিলাম।ও আজ এখানেই থাকবে!কারণ আমান ভাইয়া একটা কাজে শহরের বাহিরে গেছেন।কয়েক-দিন লাগবে ফিরতে তাই সে নিজের রুমেই থাকবে।আমাদের ঝগড়া মূলত বেলুন নিয়ে।ভার্সিটি থেকে বের হয়ে মারিয়া কত গুলা বেলুন কি’নে নিলো।সে বেলুন-প্রেমী তাই তাকে রা*গা*তেই এক-প্রকার জোর করে ওর কাছ থেকে বেলুন গুলা নিয়ে দৌড় লাগিয়ে ছিলাম।কিন্তু এক আজাইরা ছেলেকে বিশ্বাস করে সব শেষ।ধরা খেয়ে গেলাম।সেখান থেকে আমরা ঝগড়া করতে করতে বাসায় ফিরেছি আর এখনো করছি।

“অবশেষে মারিয়া বললো- জানু বাদদে দোষ দুইজনের ওকে।আর যা ফ্রেশ হয়ে আয়।

~~ সে বিকেল থেকে আমি আর মারিয়া আড্ডা দিয়ে যাচ্ছি মারিয়ার রুমে।দুইজনে অনেক মজাও করছি বটে এটা সেটা বলে।অনেকটা সন্ধ্যা হয়ে গেছে।তাও আমাদের আড্ডার শেষ নেই যেন।কিন্তু আমাদের আড্ডার মাঝে তাদের কাজের লোক রিনি ভাবি এসে আমাকে বললেন- মেজো ভাবি আপনাকে মেজো ভাইয়া ডাকে।

“আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম- উনি কখন আসলেন?

“রিনি ভাবি বললেন- কিছুক্ষণ আগে আমি মাত্র চা দিয়ে আসলাম।সেটা বলে উনি রুম ত্যাগ করলেন।

“আমি মারিয়ার দিকে বিরক্তি নিয়ে বললাম- এখন আসি কেমন!আর শুন কিছুক্ষণ পর আবার এসে এক সাথে পড়বো।আমার কথা এখনো শেষ হয়’নি।তো*র য*ম ভাই কেন ডাকে দেখে আসি।

“মারিয়া হেসে আমাকে টিজ করে বললো- যাও মেরি ভাবি যাও বলেই খিলখিল করে হেসে উঠলো।আমি ওর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে উনার রুমের দিকে হাটা দিলাম।আর উনার রুমের দিকে আসতে আসতে ভাবলাম- আজ আবার আমি কি করলাম?কিছুই তো করি’নি তাহলে ডাকছে কেন?এসব ভেবেই ভয়ে ভয়ে উনার রুমে চলে আসলাম।

“উনি ফাইল দেখতে দেখতে চা খাচ্ছেন।আমাকে দেখতেই কিছুটা রাগি চোখে তাকালেন।

“উনার চোখ দেখে ভয় পেলেও সাহস করে মিনমিন গলায় বললাম – আমাকে ডেকেছেন কেন?

“উনি নিজেকে শান্ত করে আমার দিকে এক মনে তাকিয়ে বললেন- তোমাকে ডাকা যাবে না নাকি?

“আমি কিছু না বলে মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।

“উনি আস্তে করে বিছানা থেকে উঠে আমার কাছে এসে হালকা রাগ নিয়ে বললেন- আমি তোমার হাসবেন্ড।তাই আমি কখন বাসায় আসছি না আসছি।আমার কি পছন্দ কি পছন্দ না।আমার কখন কি প্রয়োজন সে খেয়াল আছে তোমার?আমি আমাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে চাই।আর তুমি পারো শুধু সবার সাথে হাহা-হিহি করতে?তুমি কখন বুঝবে তোমার দায়িত্ব কর্তব্য গুলা?বা*চ্চা*তো আর না তুমি।

“উনার কথা গুলা সব আমার মাথার উপর দিলে গেলো তাই কাঁদো কাঁদো হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম- আমার কি করতে হবে বলুন?

“উনি আমার কথা শুনে রেগে চিল্লিয়ে বললেন- কি করতে হবে তাই’না আসো আমার পা টিপে দাও।

“উনার চিল্লানো শুনে ভয়ে আমি রুমের দরজার সাথে মিশে গেলাম আর বুকে হাত দিয়ে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগলাম।খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো জ্ঞান হারাতে তবে উনার ভয়ে সেটাও পারলাম না।জ্ঞান কোনো ভাবে হারালো না আমার।

“উনি আমার কাছে এসে শক্ত করে কাধ চেপে ধরে বললেন- এ জন্যই আমি অবুঝ কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে চাই’নি।তুমি আসলেই একটা বলতে গিয়ে থেমে গেলেন।তারপর আবার বললেন- তুমি আমার জীবনসঙ্গী হওয়ার যোগ্য না বলেই আমাকে ধা*ক্কা দিলেন।

“উনার কথায় অপমানে লজ্জায় আমি কাঁদতে কাঁদতে নিচে বসে পরলাম।কি করবো কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।উনি রেগে বারান্দায় চলে গেলেন।আর আমি সেখানেই বসে বসে কাঁদতে লাগলাম।তার কিছুক্ষণ পর নিজেকে স্বাভাবিক করে মনে মনে বললাম- আমাকে অপমান করা তাইনা আমিও আপনার যোগ্য হয়ে দেখাবো।তারপর চোখের পানি মুছে তানিয়া ভাবির রুমের দিকে হাটা দিলাম।

~~~ রুদ্র কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখলো নূর নেই।রুদ্রর খারাপ লাগলো আজকে রাগ থেকেই সে নূরের সাথে খারাপ বিহেভ করেছে।সে বা কি করবে সে চাই নূর থাকে বঝুক তার কেয়ার করুক।আর তাকেই যেন ভালোবাসে।তারপর মনে মনে ভাবলো- নূর তো ছোট না তবে সে সব কিছু এখনো বুঝে নিতে পারে’নি হয়তো আমার ওকে সময় দেওয়া দরকার।এসব ভাবতেই তার ফোনে কল আসলো আর রিসিভ করে কিছুক্ষণ কথা বলার পর বললো- আসছি!তারপর রুদ্র আরও কিছু ভেবে রেডি হতে লাগলো তার কাজ আছে তাকে এক্ষুণি যেতে হবে।

~~~ আহা মেয়ে কান্না করছো কেন?কতদিন বা বিয়ে হয়েছে তোমাদের আস্তে আস্তে সব বুঝবা।

“আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম- প্লিজ ভাবি আমাকে বলো কিভাবে উনার প্রতি থাকা দায়িত্ব কর্তব্য গুলা পালন করবো?

“তানিয়া ভাবি হেসে আমার মাথায় আলতো হাত বুলিয়ে বললো- পা*গ*লি মেয়ে আর কান্না করিও না।আমি ও প্রথমে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি’নি তবে আস্তে আস্তে সব শিখেও গেছি মানিয়েও নিয়েছি।

“আমি বললাম- কিভাবে?

“তানিয়া ভাবি বললেন- আচ্ছা আগে বলো তুমি মেজো ভাইয়াকে ভালোবাসো?না ভালোলাগে নাকি মায়ায় পরেছো?

“ভাবির কথায় লজ্জা পেলাম- আর বললাম দূর ভাবি কি বলছো এসব?

“তানিয়া ভাবি ঢং করে বললেন- আর লজ্জা পেতে হবেনা।তবে উত্তরটা দিতে হবে নাহলে বুঝাবো কেমনে?

“আমি অনেক ভাবলাম হয়তো একটু মায়ায় পরে গেছি।কিন্তু ভালোবাসা ভাবতেই মৃদু কেঁপে উঠলাম।যে মানুষটা কথায় কথায় আমাকে ঠু*কে দিবে বলে!সে মানুষটাকে ভালোবাসবো ভেবেই চমকে উঠলাম।তবে নিজেকে সামলিয়ে ভাবির দিকে তাকিয়ে মুখ কালো বললাম- কোনোটা না ভাবি।আমি উনাকে ভয় করি যাকে বলে য*মে*র মতো ভয়।

“আমার কথায় তানিয়া ভাবি কপালে চা*প*ড় দিয়ে বললো- আল্লাহ তোমরা দুটো দুই-রকম তোমাদের কোনো মিলও নেই।তবে আল্লাহ তোমাদের এক-সাথে করেছেন যখন তোমাদের ভালোর জন্যই করেছেন।আর তাহলে শুনো ভাইয়ের প্রতি কি কি কর্তব্য দায়িত্ব পালন করতে হবে।তবে জ্ঞান হারালে চলবে না বলে দিলাম।বলেই ভাবি আমাকে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিলেন।ভাবির সব কথা শুনে চোখ আমার বড় বড় হয়ে গেলো আল্লাহ কথা গুল শুনেই আমি জ্ঞান হারাবো মনে হচ্ছে।করতে গেলে তো এক্কিবারে উপরে উঠে যাবো।

“ভাবি কথা শেষ করে বললো- তো ছোট বুঝেছো?

“ভাবির কথায় হাত দিয়ে মুখ ডেকে বললাম- এইগুলা করতেই হবে?আমি পারবো না উনি আমাকে জাস্ট খু*ন করে ফে’ল’বেন।

“তানিয়া ভাবি খিলখিল করে হেসে বললেন- কিছু করবে না তুমি চেষ্টা করে দেখিও বলতে বলতে সেখানে প্রবেশ করলো দাদি।

“উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন- এ যে জ্ঞান হারানো মাইয়া জামাইরে আঁচলের মধ্যে বা*ই*ন্দা রাখতে হয়।আমারে তো তুমি পছন্দ করো না কিন্তু আমি ভালাই কইতাছি।

“দাদির কথা শুনে আমি হেসে বললাম- কে বললো আপনাকে আমি পছন্দ করি না।পছন্দ না রবং আপনাকে ভালোবাসি।ওইদিনের জন্য স্যরি দাদি।তারপর দুষ্টুমি হেসে বললাম- দাদি গো জামাইরে কিভাবে আঁচলে বাধে?

“দাদি অল্প বয়সী মেয়েদের মতো খিলখিল করে হেসে উঠে বললেন- আমি জানি আমার জন্যই তোমাগো বিয়ে হয়েছে তাই আমারে পছন্দ করতে না।সেদিন আমি ওমন না করিলে তোমাগো বিয়ে হতো না।তারপর আবার থেমে বললেন- যা হইয়াছে ভালাই হইয়াছে আমার নাতী রাজপুত্রর মতো একখান বর পাইছো।বলেই উনি ভাব নিলেন।

“দাদির কথায় উনার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থেকে উচ্চস্বরে হেসে উঠলাম।তারপর ভাবি আর দাদিও হেসে উঠলেন।

“তারপর দাদি বললেন- শুনো মেয়ে সোয়ামীকে আগে আঁচলে বাধবা।যেন অন্য মাইয়ার লগে ইটিসপিটিস করতে না পারে।

“আমি গোল গোল চোখে দাদিকে বললাম- সেটা কি ভাবে করবো দাদি?

“দাদি বললেন- তোমরা আজকালকার মাইয়া গুলা জামাইরে এক্কিবারেই পাত্তা দাওনা।আমাগো জামানায় আমরা জামাই ছাড়া কিছু বুঝিও নাই বলে দাদি লজ্জা পেলেন।

“তানিয়া ভাবি বললেন- তাহলে দাদি আপনিও দাদার জন্য পা*গ*ল ছিলেন বলে ঠোঁট চেপে হাসলো।

“দাদি বললেন- যা কি যে বলো।তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন- আমার মেজো নাতীরে আঁচলে বাধতে অনেক কষ্ট হবে মেয়ে।

“আমি ঠোঁট উলটে মন খারাপ করে বললাম- তো এখন উপায়?

“দাদি বললেন- শুনো আমার কথা।জামাই ঘরে আসলে পিছন পিছন ঘুরবা কি খাবে কি লাগবো কি চাই সব দিবা।জামাই বাসায় থাকলে বেশি বেশি সাজবা।জামাইয়ের সামনে বেশি বেশি শাড়ি পড়বা।তারপর জামাইয়ের সামনেই কাপড় বদলাবা~তারপর দাদি আরও জ্ঞান দিয়ে আমায় বললেন মাথায় ডুকেছে?

“দাদির কথা শুনে লজ্জায় আমি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম।তানিয়া ভাবির অলরেডি কাশি শুরু হয়ে গেছে।লজ্জায় কান আমার গরম হয়ে গেলো।দাদি যা বললো এসব করতে গেলে দেখা যাবে প্রাণ আমার পাখি হয়ে উড়ে যাবে।ছিঃ ছিঃ

“দাদির বললেন- এত লজ্জার কিছু নেই।এইগুলা না করলে সোয়ামী সোহাগা কেমনে হইবে মেয়ে?

“আমি দাদির কথা শুনে কানে দুই-হাত দিয়ে বললাম- এসব আমার পক্ষে করা সম্ভব না।

“তানিয়া ভাবি মুখে হাত দিয়ে হেসে বললো- এসব আমাকেও দাদি শিখিয়ে দিয়েছিলো।আর দাদির কথা মতন করেই কিন্তু তোমার বড় ভাইয়াকে এখনো আঁচলে বেধে রেখেছি বলেই অট্টহাসি দিলো।

“আমি নার্ভাস হয়ে গেলাম তাদের সব কথা শুনে।ভাবতেই আমি জ্ঞান হারাচ্ছি আর করতে গেলে তো কথায় নেই।

~~~তারপর আমরা তিনজনে অনেকক্ষণ আড্ডা দিয়ে চলে আসলাম যে যার রুমে।আসার সময় দাদি আমাকে আরও পরামর্শ দিলেন।কি কি করতে হবে।আমিও বাধ্য মেয়ের মতো হুম হুম করলাম।
——————————-
স্যার আপনি যে মেয়েটার খুঁজ নিতে বলেছেন তার সব ইনফরমেশন আমি নিয়ে এসেছি~ মেয়েটার নাম নূর জামান!অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে।বাবা লেয়ান জামান! একজন ডাক্তারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী।মা রাহেলা খান! বাসায় শাড়ি” হাতের” জিনিস এসবের ব্যবসা করেন।ভাই লিয়ান জামান!এবার ক্লাস নাইনে পড়ছে।

“তবে স্যার একটা কথা হলো মেয়েটা বিবাহিত আর তার হাসবেন্ড আর কেউ না বরং রুদ্র মির্জা।

“সাহেলের কথা শুনে রেয়ান চৌধুরি রেগে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বললেন- এটা হতে পারে না।তুমি ঠিক ভাবে খুঁজ নিয়েছো?

“সাহেল বললো- জ্বী স্যার আমি ঠিক ভাবেই খুঁজ-খবর নিয়েছি।

“রেয়ান থাকে হাতের ইশারায় যেতে বললো।সে চলে যেতেই রেয়ান চেয়ারে বসে পরলো।

“রাগে রেয়ানের ফর্সা চেহেরা লাল হয়ে গেলো।তার এখন ইচ্ছে করছে রুদ্রকে জাস্ট শেষ করে দিতে।তারপর নিজেকে শান্ত করে মনে মনে ভাবলো মিস্টার রুদ্র মির্জা আমাদের আবার দেখা হবে।
——————————————-
“রাতে ডিনার করে রুদ্র ঘরে আসলো।এসেই নিজের কাজে লেগে গেলো।কিন্তু কিছু সময় পর রুমে প্রবেশ করলো নূর।রুদ্র নূরের দিকে একটু তাকিয়ে আবার কাজে মন দিলো।

“নূর রুমে এসে বিছানার এক-পাশে বসে ভাবতে লাগলো কি করবে।দাদি যা বলেছে তা করতে গেলে তো ওকে মির্জা সাহেব ঠু*কে দিবেন।তাও মনে মনে সাহস নিয়ে আলমারি থেকে থেকে ঘুমানোর জন্য কাপড় বের করে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।

“ফ্রেশ হয়ে এসে সোজা উনার পাশে শুয়ে পরলাম।তার কিছুক্ষণ পর উনিও আমার থেকে দুরত্ব বজায় রেখে শুয়ে পরলেন।আমি মনে মনে দাদির কথা গুলা মনে করে উনার বালিশের কাছে গিয়ে মাথা রাখলাম।এই কাজটা করতে গিয়ে আমি কেঁপে উঠলাম।

“আমি উনার কাছে যাওয়ায় উনি প্রথমে চমকে গিয়েছিলেন তবে নিজেকে সামলিয়ে রেগে বললেন- এখানে কেন আসছো?নিজের বালিশে যাও।

“উনার কথা শুনে ভয়ে আমি জমে গেলাম।তবে সরে আসলাম না।

“উনি আবার হালকা চিল্লিয়ে বললেন- কি সমস্যা কথা কানে যাচ্ছে না?নিজের বালিশে যাও।

“আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছি।মৃদু কাঁপছে শরীর।

“উনি এবার বললেন- শেষ বারের মতো বলছি নিজের জায়গায় যাও!

“কিন্তু আমি তখনও উনার বালিশে শুয়ে আছি আমাদের মাঝে তেমন একটা দুরুত্ব নেই।আমি ভয় পেলেও শক্ত হয়ে উনার বালিশে শুয়ে থাকলাম।

“এবার উনি বললেন- যাবে না তো?ঠিক আছে বলে উনি আমাকে এক হাত দিয়ে কোমড় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে উনার বাহু-ডোরে আবদ্ধ করে ফেললেন।তারপর ফিসফিস করে বললেন- এসব নিশ্চয় তোমার দাদি শাশুড়ি শিখিয়েছেন?তো শুনো উনার কথায় বেশি নাচা-নাচি করতে যেও না!না হলে পরে দেখা যাবে নাতীর ঘরে পু*তি*ন নিয়ে টানাটানি করবে বলেই শব্দ করে হেসে উঠলেন।

“উনার এভাবে জড়িয়ে ধরায় আমার সারা-শরীর অবশ হয়ে গেলো মনে হচ্ছলো আমি জ্ঞান হারাবো চোখ নিভু নিভু হয়ে আসছিলো।কিন্তু উনার লাগাম ছাড়া কথা শুনে লজ্জায় আমি কাঁপছিলাম।তবে উনার হাসির ঝংকারে আর চোখ খুলে উনার দিকে তাকানোর সাহস পেলাম না।

“উনি হাসি বন্ধ করে বললেন- জ্ঞান হারিয়েছো নাকি?

“আমি কিছু না বলে উনার বুকের সাথে মিশে রইলাম।

“তারপর উনি দুষ্টুমি কন্ঠে বললেন- তো মিসেস রো*গী আপনার ভয় লাগছে না?

“উনার কথার বলার স্টাইলে আমি আরও লজ্জায় কুঁকড়ে গেলাম।

“আমার এমন অবস্তা দেখে উনি আমাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে স্বাভাবিক কন্ঠে বললেন- বিয়েটা যেভাবেই হুক হয়েছে তো।তোমার পরিবার তোমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিয়েছে!তাই তোমার সব দায়িত্ব আমার।আমি একটা সুন্দর গুছানো স্বাভাবিক একটা সংসার করতে চাই।আমার সব মনের কথা আমি তোমাকে শেয়ার করতে চাই।তবে তার আগে সেটার যোগ্য তোমাকে হতে হবে।বার বার জ্ঞান হারানোটা আমার বিরক্ত লাগে।এটা যেভাবেই হুক তোমার কন্ট্রোল করতে হবে।আমার না বলা সব কথা তোমার বুঝে নিতে হবে।তুমি যেমন আমার দায়িত্ব”আমি ও কিন্তু তোমার দায়িত্ব।আর হ্যা এখন মন থেকে সংসারটা সামলাবে।আমি কখনো তোমাকে ডিভোর্স দিব না।তুমি যেমন হও না কেন।আমি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো।কারণ তুমি আমার ওয়াইফ।

“উনার সব কথা গুলা আমি মন দিয়ে শুনলাম।এখন আর উনার প্রতি ভয় কাজ করছে না।আমি শব্দে করে কেঁদে উঠলাম আমি সব-সময় চেয়েছিলাম যে আমার লাইফ পার্টনার হবে যেন আমার সব দূর্বলতা বুঝবে।আমার ভুল গুলা ধরিয়ে দিবে।আমাকে ভালোটা বুঝাবে!আমি মনে মনে ঠিক করলাম এখন থেকে আর হেলা-পেলা করবো না কোনো কাজে!মন দিয়ে সব সামলাবো।

“আমায় কাঁদতে দেখে উনি বললেন- ভালো কথা বললেও কান্না করতে হয় নাকি?আচ্ছা ঘুমাও আর কান্না করবে না।

“আমি কাঁদতে কাঁদতে এক সময় উনার বুকেই ঘুমিয়ে গেলাম……
——————————————–
(চলবে)

(ভুল ক্রুটি ক্ষমা করবেন।আর ভুল গুলা ধরিয়ে দিবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here