সূর্যোদয় পর্ব ২৬

0
62

#সূর্যোদয়
#পর্ব_২৬+ বোনাস পর্ব
#কারিমা_দিলশাদ

৭০.

মারুফের পরিবার আসার বেশ কিছুক্ষণ পর ঐশীকে তাদের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা এতোক্ষণ গল্প করছিল। ঐশীর পরিবার তাদের সবটা দিয়ে মারুফের পরিবারকে আপ্যায়ন করার চেষ্টায় মত্ত। ঐশীকে তাদের সামনে নিয়ে যাওয়ার পর সবার দৃষ্টি তার উপরেই নিবদ্ধ হয়। সে গিয়ে হাসিমুখে সবাইকে সালাম দেয়। মারুফের এক মামা ব্যতিত অন্য কেউ সেই সালামের জবাব নিয়েছে বলে তার মনে হয় নি। এরপর তাকে বসতে বলা হয়।

এরপর তারা একে একে তাদের পরিচয় দেওয়া শুরু করে। এরপর এক মহিলা যিনি সম্পর্কে মারুফের বোন। সে ঐশীকে জিজ্ঞেস করে,

“ তা তোমার নামটা যেন কি?”

“ জ্বি আমার নাম তারান্নুম ঐশী।”

“ কিসে পড়ো? কোথায় পড়ো?”

“ আনন্দমোহন কলেজে ইংলিশে অনার্স করছি। এবার থার্ড ইয়ারে উঠলাম।”

আরও কিছুক্ষণ একেকজন একেকরকমের প্রশ্ন করতে থাকে। আর ঐশী সবার প্রশ্নের জবাবই হাসিমুখে দিতে থাকে। একপর্যায়ে এক মহিলা বলে,

“ আমরার মারুফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। তার উপরে আবার অফিসার। হের লাইগা এমন মাইয়া তোমরা কেমনে চিন্তা করো গো মারুফের মা?” — কথাটা বলতেই ঘরে যেন বাজ পড়ল। ঐশীর মা বাবা ঐশীর দিকে তাকায়। ঐশীর শরীর কেমন ঝিমঝিম করছে। তবুও সে চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে।

এরপর একজন বলে,

“ মাইয়ার শইল্যার রঙও ময়লা। চুলও লম্বা না। আমরার মারুফের শরীল একবারে ফকফকা।”

এমন করে একের পর এক খুঁত বের করতে থাকে তারা। রাগে ঐশীর চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে। সে রাগে রীতিমতো কাঁপছে। তার মেজো খালা তার কাঁধে এক হাত দিয়ে ধরে রেখেছে। যেন সে কিছু না বলে। তবে ঐশী এইজন্যই যে চুপ তা না, সে দেখতে চায় এরা আরও কি কি বলতে পারে। এক পর্যায়ে মারুফের মামারা তাদের চুপ করতে বলে। আর মারুফের বড় মামা ঐশীর বাবার উদ্দেশ্য বলে,

“ ভাই কিছু মনে নিবেন না। মহিলা মানুষের বুদ্ধি হাঁটুর নিচে আপনি তো বুঝেনই। আপনার মেয়ে যথেষ্ট ভালো। আমাদের মনে ধরেছে। তার থেকেও বড় কথা পাত্র নিজে আপনার মেয়েকে পছন্দ করে আমাদেরকে পাঠিয়েছে। কিন্তু বুঝেনই তো? সমাজে আমাদের একটা স্ট্যাটাস আছে। আমার ভাগ্নের একটা স্ট্যাটাস আছে। আর আমার ভাগ্নে আল্লাহ দিলে মাশাল্লাহ আপনাদের মেয়ে থেকে অনেক বেশিই যোগ্য। তারপরও ভাগ্নের ইচ্ছা, এখন কি আর করার বলেন। এখন সম্মানির দিকটাও তো আপনার ভাবতে হবে। যেমনই হোক একটা মাত্র মেয়ে আপনার। তার উপর এমন সুযোগ্য পাত্র…… ” — বলেই হা হা করে হেসে উঠেন তিনি। পেশায় একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। অথচ তার চিন্তাভাবনা! যাকে বলে সুন্দর করে ভদ্রভাষায় পাত্রী এবং পাত্রীপক্ষকে ছোট করা। ঐশীর বাবা মা মাথা নিচু করে আছেন।

এরপর মারুফের মা ঐশীর বাবার উদ্দেশ্য বলে,

“ দেখেন ভাইসাব আমার ছেলে বড় অফিসার। তার জন্য কত মেয়ে আর মেয়ের বাবার যে লাইন লেগে আছে বলার মতো না। এতোদিন কত মেয়ের সম্বন্ধ যে আসলো তারে দেখাইলাম, একটাও তার মনে ধরে না। ওইদিন আইসা বলে এক মেয়েরে দেইখা নাকি তার পছন্দ হইছে। আপনার মেয়ের কথা কইলো আরকি।

আমাদের পরিবারের সবাই হাইফাই মানুষ। এই যে আমার দুই মেয়ে, এই যে দুই জামাই, আমার ভাই, আমার ননদ সবাই কিন্তু হাইফাই। আমার মেয়ে জামাই একজনের বিরাট বড় ব্যবসা আরেকজন বিরাট বড় চাকুরে। আমার মেয়েরারেও তো দেখতেছেন মাশাল্লাহ কোনো অংশে কম নাই। তারপরও আমি আমার জামাইরারে সম্মানি দিতে কোনো কিছুতে বাদ রাখি নাই। আর আপনার মেয়ে দেখতেও আহামরি না, পড়াশোনাতেও আহামরি না। নেহাৎ ছেলের কথা ফেলতে পারি নাই তাই আসা। যাইহোক অত কিছুতে না যাই। আমি আবার সাফ কথা কইতে পছন্দ করি। মুখে এক আর মনে আরেক এমন মানুষ আমি না। ভাই সম্মানি কি কি দিবেন?”

“ আপা…..” ঐশীর বাবা কিছু বলবে তার আগেই ঐশী তার বাবার হাত ধরে তাকে চুপ করিয়ে দেয়। তিনি ঐশীর পাশেই বসে ছিলেন। ঐশী এতোক্ষণ মাথা নিচু করে চুপচাপ সবার কথা শুনেছে। এবার একটা শ্বাস ফেলে হাসিমুখে মারুফের মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,

“ খুব সুন্দর কথা বলছেন আন্টি। আমিও মনে এক রেখে মুখে আরেক কথা বলতে পারি না। আমিও সাফ সাফ কথা বলতে পছন্দ করি। কিন্তু আমি বুঝলাম না কিসের সম্মানির কথা বলছেন আপনারা? কাকে সম্মানি দিব?”

পাত্রী দেখতে এসে এতকথার বিপরীতে পাত্রীকে এমন হাসিমুখে আর সাবলীলভাবে পাল্টা প্রশ্ন করতে দেখে বাকিরা একটু না বেশ অনেকটাই অবাক হয়। মারুফের মা এদিক ওদিক তাকিয়ে আমতা আমতা করতে বলে,

“ ওমা সম্মানি বুঝো না? সম্মানি মানে আমার ছেলেরে কি দিবা আরকি। ওইটারেই সম্মানি কয়।”

“ কিন্তু আপনার ছেলেকে আমরা সম্মানি দিতে যাব কেন?”

“ ওমা আমার ছেলে তোমারে বিয়া করবো তার সম্মানি তারে দেওয়া লাগব না?”

“ আপনার ছেলে আমাকে বিয়ে করলে তাকে সম্মানি দিতে হবে কেন?”

“ কারণ আমার ছেলে মস্তবড় অফিসার। আর এইটা খালি তোমরা একা না সবাইরেই দিতে হয়। সবাই দেয়। আমরা খালি আগেভাগে একটু আলাপ আলোচনা করে নিতাছি। আর এইগুলা তো বিয়া হইলে তোমারই থাকব। তুমিই তো ব্যবহার করবা। আমরা তো আর ওইগুলা ধরতে যামু না। তোমার ভালার জন্যই তো বলতাছি।”

“ আন্টি আপনার বিয়ের সময় আপনার বাপের বাড়ি থেকে আংকেলকে আপনারা কি কি সম্মানি দিয়েছিলেন?”

এ পর্যায়ে তিনি আবারও গর্বের সাথে বলে,

“ তোমার আংকেল একটা সুতাও নেয় নাই। খুব ভালো আর বড় মনের মানুষ ছিলেন তিনি।”

“ তা তার ছেলে এবং তার বউ হয়ে আপনারা এতো ছোটলোক হলেন কি করে? আপনি তো আমার থেকেও অনেক বেশি ময়লা রঙের। আগেও এর থেকে নিশ্চয় খুব একটা পরিষ্কার ছিলেন না। আর আগেকার যুগে তো মেয়েদের অতো বেশি শিক্ষাও ছিল না। তাহলে আংকেল আপনার মতো একজনকে একটা সুতাও না নিয়ে কিভাবে বিয়ে করল? আর আপনারাই বা তাকে আপনার মতে একজনকে বিয়ে করার জন্য সম্মানি না দিয়ে থাকতে পারলেনই বা কিভাবে? মামা কিভাবে পারলেন?”

সবার মুখ হা হয়ে গেল। ঐশীর মা বাবা মেয়েকে থামতে বলছে। কিন্তু ঐশী তা তোয়াক্কা না করে বলতে থাকে।

“আপনার ছেলে মস্তবড় অফিসার হতে পারে। তবে সে সেটা তার কাজের জায়গায়। তার সাথে যদি আমার বিয়ে হয় তাহলে আমি তার অংশ হবো, অর্ধাঙ্গী হবো। তার সাথে আমার সম্পর্ক হবে একে অপরের পরিপূরক। অধিনস্ত কোনো কর্মচারীর মতো না। সবাই কি দিল না দিল তা আমার দেখার বিষয় না। আর আমার জন্য, আমার ভালোর জন্য হলে সেটা যখন আমার মনে হবে যে আমার এই জিনিসটা লাগবে তখন দেখা যাবে। সেটা আমার উপর নির্ভর করে। আপনারা তা নিয়ে কথা বলার কে? সেটা আমার সম্মানি হবে আপনার ছেলের না।

আর আপনার ছেলে একাই তো কেবল আমাকে বিয়ে করবে না আমাকেও তো করতে হবে। সম্মানি তো আপনাদের পক্ষ থেকে আমারও পাওয়া উচিত। আর তাছাড়া আমরা সম্মানি দিবই বা কেন? আমার বাবা মা আমাকে আপনাদের কাছে দিচ্ছে, আমি যাব আপনাদের বাড়ি। সো কল্ড সংসার করতে। তা এখান থেকে সবকিছু আপনাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়েই যদি আমার সংসার করতে হয়। তাহলে এখানে আপনার ছেলে মস্তবড় অফিসার এটা কোন কাজে আসছে? আর আমিই বা আমার বাপের বাড়ি থেকে জিনিস নিয়ে আপনাদের বাড়িতে গিয়ে সংসার করতে যাব কেন? এভাবেই যদি সংসার করতে হয় তাহলে আপনার ছেলের এখানে এসে ঘরজামাই হয়ে থাকাই তো ভালো। বেকার এখান থেকে ওখানে জিনিস টেনে নিয়ে যাওয়ার কি দরকার? আর এমন হলে আমি আপনার ছেলেকে দয়া করে বিয়ে করছি এটা বলতে হবে। আপনাদের ছেলে বিয়ে করছে এটা বলা যায় না।

আর এসব আপনার ছেলের সম্মানিও না, এগুলোকে যৌতুক বলে। আপনার ছেলে পুলিশের এতো মস্তবড় অফিসার, সে এটা জানে না যৌতুক নেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ? ”

“ বাহ্! তুমি তো বেশ চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলতে পারো। তোমার কি মনে হয় আমরা খুব শখ করে যেচে পড়ে তোমাকে ভাইয়ের বউ করে নিয়ে যেতে এসছি? খালি আমার ভাইটার ভীমরতি হয়েছে দেখে, নাহলে তোমার দিকে মুখও দিতাম না।” —মারুফের বোনের কথায় ঐশী হেসে জবাব দেয়,

“ সে কি! কথা বলতে পারব না কেন? আমি হাঁটতে পারি কি না, আমার সব দাঁত ঠিক আছে কিনা, হাত-পা আঙুল সব ঠিক আছে কি না যখন দেখতে পারলেন তখন এটাও দেখে নিন আমি কথা বলতে পারি কি না। হ্যা আমি খুব কথা বলতে পারি। একেবারে বিঁধিয়ে দেওয়ার মতো কথা বলতে পারি। আপনিও নিশ্চয়ই কম পারেন না। শিক্ষিকা আপনি, কথা তো আপনিও বলেন তাই না।

আপনার কি মনে হয় আপনার ভাইকে বিয়ে করার জন্য আমি ম’রে যাচ্ছি? নেহাতই আপনার ভাইটা হাত ধুয়ে আমার পিছনে পড়েছিল তাই তাকে একটা সুযোগ দিয়েছি। নাহলে যদি জানতাম আপনারা এমন ছোটলোক তাহলে আমি আপনার ভাইয়ের ছায়া টাও পারাতাম না।”

এবার মারুফের পরিবারের সবাই গর্জে উঠে। একেকজন অনর্গল অকথ্য ভাষায় গালাগা’লি করছে। ঐশীর বাবা মা, আর বাকিরা তাদের কাছে মাফ চাইছে। ঐশীর মা তো চুপিচুপি দাঁত কিড়মিড় করে মেয়ের হাতের চামড়া টেনে ধরে খুব বাজেভাবে মুচড়েও দিয়েছে। ব্যাথায় ঐশীর চোখে পানি এসে পড়েছে। সে হাত ডলতে ডলতে তার মায়ের দিকে কঠোর চোখে তাকায়। ঐশীর মা এতে করে একটু ঘাবড়ে যায়। এরপর ঐশী সবার উদ্দেশ্য চিল্লিয়ে বলে,

“ চুপ। একদম চুপ। আর একটা কথাও কেউ বলবেন না। এখানে আপনাদের কেবল আমাকে দেখার জন্য নিয়ে আসি নি। আমিও দেখতে চাইছিলাম আপনারা কেমন জাতের মানুষ। কি মনে করেন আপনাদের ছেলে খুব বেশিই উপযুক্ত? আপনার ছেলের যার সাথে বিয়ে হবে সেই মেয়ের থেকে দূর্ভাগী নারী খুব কমই হবে। ”

এরপর মারুফের বোনদের উদ্দেশ্য করে বলে,

“ তা আপনারা কবেকার কোন বিশ্ব সুন্দরী? আপনাদের মধ্যে কারো চেহারাই তো খুব একটা জাতের দেখছি না। মোটা,ধামড়া, কালো, বেঁটে, হ্যাংলা পাতলা সবাই। কয়েকজন আছেন ফর্সা। এটাই সুন্দর? এই যে আপনাদের দু বোনের গায়ের রং ফর্সা তাতে আপনাদের কোন বিশ্ব সুন্দরীর খাতায় নাম তুলিয়েছে। একজনের দাঁত তো মুখ বন্ধ থাকলেও দেখা যাচ্ছে। আরেকজনের মুখে মেছতা আর ব্রুণের দাগে ভরা। আপনারা বুঝি খুব সুন্দর? আর আপনাদের ভাই’ই বা কোন মিস্টার ওয়াল্ড? না তো আপনাদের চেহারা সুন্দর আর না তো আপনাদের মন।

কেউ নিজে নিজের চেহারা বা গায়ের রং বানায় নি। আপনারাও আপনাদেরটা বানান নি, আমিও আমরটা বানায় নি। আরেকজনের বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলা বুঝি খুব শিক্ষিত আর হাইফাই লোকের কাজ? যেটা তাদের হাতেই নেই। তাও যদি নিজেরা জাতের কোনো সুন্দরী হতেন তাও একটা কথা ছিল। আপনারা তো আমার থেকেও অসুন্দর দেখতে। তাহলে আমার সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলার সাহস পান কি করে? এটাই বুঝি আপনাদের শিক্ষার নমুনা?”

এরপর মারুফের মামাদের উদ্দেশ্য বলে,

“ খুব তো স্ট্যাটাস আপনাদের। তা অন্যদের কাছ থেকে এভাবে ভিক্ষা করে করেই বুঝি স্ট্যাটাসে উঠেছেন। অন্যদের কাছ থেকে ভিক্ষা করা আপনাদের মতো ভিখারির কাছে স্ট্যাটাস মনে হলেও আমাদের কাছে তা কোনো স্ট্যাটাসের মধ্যে পড়ে না। এই বুঝি আপনারা খুব হাইফাই কর্মকর্তা। এভাবে? ” — বলেই তাচ্ছিল্য হাসে ঐশী।

এরপর বাকি মহিলাদের দিকে তাকিয়ে বলে,

“ আপনাদের ছেলে এতো যোগ্যতাসম্পন্ন তো আমার পিছনে পড়ে আছে কেন? তার তো….”

“ আরে আমার ছেলের মাথাটা তুই খারাপ করেছিস বলে। কালো জাদু করেছিস তুই আমার ছেলের উপরে। নাহলে যেই ছেলে আজ পর্যন্ত কখনো আমার মুখের উপর কথা বলে নি সেই ছেলে কি না নিজের বিয়ের কথা নিজে বলে।” — ঐশীর কথা শেষ না করতে দিয়েই মারুফের মা কথাগুলো ঐশীকে বলে। ঐশী এবার জোরে হেসে দেয়। আর বলে,

“ কেন আপনার ছেলে কি এখনো ফিডার খায়? তার কোনো বোধ-বুদ্ধি নেই? নাকি সবাইকে আপনাদের মতো শ’য়তানের উপাসক মনে করেন। আপনারা এসব কালো জাদু টাদু করে অভ্যস্ত থাকতে পারেন তবে আমরা না। এসব করার আমাদের দরকার পড়ে না। আপনারা কি আমাকে রিজেক্ট করবেন, আপনাদের এবং আপনার ছেলেকে আমি রিজেক্ট করছি। বেরিয়ে যান এ বাসা থেকে। এক্ষুনি বেরিয়ে যান।”

“ আরে তোর মতো বাজারি মেয়ে….. ” মারুফের মা আর কিছু বলবে তার আগেই পিছন থেকে কেউ ভারী গমগমে আওয়াজে ‘মা’ বলে ডেকে উঠে। সবাই আওয়াজ অনুসরণ করে তাকিয়ে দেখে মারুফ দাঁড়িয়ে আছে দরজায়।

৭১.

মারুফ রাগে রীতিমতো ফোঁস ফোঁস করছে। ছি: এমন কিছু হবে সে ভাবতেও পারে নি। সে তার দুই মামা, তার মা-বোন এবং দুই বোন জামাইকে আসতে বলেছিল। আর বলেছিল সে এই মেয়েকেই বিয়ে করবে। তার কোনো দাবি দাওয়া নেই। তারাও যেন এসব নিয়ে একটা কথাও না বলে। কেবল এই মেয়েকে পেলেই সে খুশি। তার আর কিছু চাওয়ার নেই। তারা যেন ওখানে গিয়ে তার পৌঁছার আগেই আনুষ্ঠানিক কথাবার্তা শেষ করে নেয়। সে গিয়ে আংটি পড়িয়ে আসবে। কিন্তু যখন তার ছোট ভাই ফোন দিয়ে বলে তাকে সহ এতজন মানুষকে তার মা-বোন নিয়ে যাচ্ছে তখনই তার খটকা লাগে। আর সে তাড়াতাড়ি ঐশীদের বাসার উদ্দেশ্য রওনা হয়।

পথেই তার ছোটভাই তাকে ফোন দেয়। আর সে কল রিসিভ করে ধরে থাকে। এখানে হওয়া সবকথাই সে শুনে নেয়। মারুফ শুরু থেকে সবই শুনেছে। সে এসে দাঁড়িয়ে চুপচাপ ঐশীর কথা শুনছিল। মেয়েটার মুখ রাগে লাল হয়ে গিয়েছে। আর তার মায়ের শেষের এতটুকু কথা শুনেই সে বুঝতে পারে তার মা কি বলতে চাইছে। যা তার সহ্যের বাইরে।

মারুফকে দেখে মারুফের পরিবারের সবাই হতচকিত হয়ে যায়। তারা জানে মারুফ এসব শুনলে তাদের আর রক্ষে নেই। মারুফ বারবার বলে দিয়েছে তারা যেন কোনোরকমের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে।

মারুফের মা মারুফকে দেখে মুখে আঁচল চেপে ন্যাকা কান্না শুরু করে দেয়। আর বলে,

“ বাবা রে দেখ এরা কিভাবে আমাদের অপমান করছে দেখ একবার।”

মারুফ ভিতরে এসে সবার দিকে তাকিয়ে বলে,

“ হ্যা মা দেখছি। সব দেখছি কে কি বলেছে আর কে কি করছে সবই দেখছি। শুরু থেকে সবই আমি শুনেছি মা।” — মারুফের মা সহ বাকিরা এবার ভয় পেয়ে যায়। মারুফ ঐশীর দিকে তাকিয়ে দেখে ঐশী মারুফের দিকে একরাশ ঘৃণা নিয়ে তাকিয়ে আছে। তার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠে। ভালবাসার মানুষের চোখে ঘৃণা কখনোই সহ্য করা যায় না। মেয়েটা যে তাকে ভুল বুঝছে।

“ ঐশী প্লিজ আমাকে ভুল বুঝো না। আমি এসবের কিছুই জানতাম না৷ আমি আমার পরিবারের হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। আংকেল…….আংকেল”

ঐশীর বাবার কাছে গিয়ে তার হাত ধরে বলে,

“ আংকেল প্লিজ আপনি ওকে একটু বোঝান। আমি এসবের কিছু জানতাম না। তাও আমি দুঃখিত। এমন কিছু হবে আমি স্বপ্নেও ভাবি নি। ঐশীর সাথে আমি একটু আলাদা কথা বলতে চাই। আমার কথাগুলো আপনারা একটু শুনোন।” ঐশীর বাবা কিছু বলবে তার আগেই ঐশী বলে,

“ আর কিছু শুনার বা জানার দরকার নেই স্যার। আপনারা চলে যান। আপনার এবং আমার মধ্যে কখনো কিছু হতে পারে না। জাস্ট লিভ।” ঐশী রাগে কাঁপতে কাঁপতে কথাগুলো বলে।

মারুফ ঐশীর সামনে গিয়ে হাতজোড় করে বলে,

“ ঐশী প্লিজ জাস্ট একটা বার আমার কথাটা শুনো। আমি……”

“ নো। প্লিজ আপনি আপনার পরিবারকে নিয়ে চলে যান। ” — বলেই ঐশী হনহন করে তার রুমে চলে যায়।

মারুফ এবার ঐশীর মা বাবার কাছে আকুতি করতে থাকে। এসব দেখে মারুফের পরিবার রীতিমতো শক। মারুফ একটা মেয়ের জন্য এমন করছে। মারুফের কাকুতিমিনতি দেখে ঐশীর বাবা মাও গলে যায়।

৭২.

গোধূলি লগ্ন। ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছে ঐশী আর মারুফ। কনে দেখা আলোটা ঠিক ঐশীর মুখের ডানদিকে এসে পড়ছে। কালো শাড়ি, কালো চুড়ি, হালকা লিপস্টিক, হালকা জুয়েলারি, সামনের থেকে চুল নিয়ে পিছনের দিকে বেধে ছেড়ে রাখা। মুখের দুপাশে এক গাছি করে চুল বের হয়ে আছে। নাকের উপর ঘামগুলো জ্বলজ্বল করছে। কি সুন্দর মনোমুগ্ধকর একটা মেয়ে। একদম বউ বউ লাগছে।

দু-হাত বুকের উপর ভাজ করে দূরে তাকিয়ে আছে ঐশী। এবার সে বিরক্তি, রাগ ও ঘৃণা মিশ্রিত নজরে মারুফের দিকে তাকায়। মারুফ নজর সরিয়ে ফেলে। ঐশীর চোখে চোখ মেলাতে পারছে না সে। ঐশীই প্রথম মুখ খুলে,

“ কি আপনার পরিবারকে দিয়ে অপমান করেও আপনার সাধ মিটে নি বুঝি? এখন আর কি বলার বাকি আছে আপনার।
প্রথমে তো কয়েকজনের কথা বলে পুরো খানদান পাঠিয়ে দিলেন। সেখানেও আমাদের দোষ। আপনাদের আদর আপ্যায়নে ছোটলোকি করেছি আমরা। এরপর পড়লো আমার লুকস নিয়ে। এরপর আমার কোয়ালিফিকেশন নিয়ে। কেন আপনি বুঝি আপনার পরিবারে আমার কোয়ালিফিকেশন বলেন নি আমার ছবি দেখাননি? কি হলো চুপ করে আছেন কেন এখন?”

“ ঐশী প্লিজ একটু ঠান্ডা হও। প্লিজ। আমার কথাগুলো একটা শুনো। আমি এসবের কিছুই জানতাম না বিশ্বাস করো। আমি সব বলেছিলাম। তার…..”

“ সব যদি জানিয়েই থাকেন তাহলে সব জানার পরও কেন আমাকে এতো হেনস্তা করা হলো? আমি আপনার কাছে গিয়েছিলাম? আমি আপনাকে প্রপোজাল দিয়েছিলাম? আমি আপনাকে ফোন করতাম?” ঐশী চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে কথাগুলো বললো।

“ ঐশী প্লিজ। রিল্যাক্স। আশেপাশের মানুষজন শুনবে। প্লিজ একটু শান্ত হও। একটু। আমাকে এবার বলতে দেও।”

ঐশী চুপ থাকলেও ফোঁস ফোঁস করতে থাকে। মারুফ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,

“ ঐশী আজকে যা যা হলো আমি এসবের কিচ্ছু জানতাম না কিচ্ছু না। ইনফেক্ট এমন কিছু ওরা করবে এসব আমার ধারণার বাইরে। আমি কয়েকজনকে আসতে বলেছিলাম। এও বলেছিলাম আমার কোনো দাবি-দাওয়া নেই। আমি তোমাকে পেলেই খুশি।
কিন্তু ওরা এমন বিশৃঙ্খলা করবে আমি বুঝতে পারি নি। এসব আমার অগোচরে ছিল।

ঐশী। আমার জীবনটা মোটেও সহজ নয়। বাবা মারা যাওয়ার পর আমিই সংসারটাকে টেনেছি। এই যে এখন মামা ফুফুরা এতো গদগদ ভাব করে সবকিছুতে। তেমনটা ছিল না। ওই বিপদের সময় এদের কাউকেই আমি পাশে পায় নি। অথচ এখন যখন আমার সব আছে তখন এরা আমি না চাইলেও সবকিছুতে রীতিমতো বেগড়া দিতে হাজির হয়। সারাজীবন আমি আমার মা, ভাই-বোনদের জন্য করেই গেলাম। কিন্তু বিনিময়ে আমি কিচ্ছু পায় নি। আজ অবধি না। একটু ভালোবাসাও পায় নি। আমি ওদের জন্য কেবল টাকার মেশিন।

ঐশী আমি জানি আজ যা হলো তা কোনো মেয়ের পক্ষে ভুলে যাওয়া সম্ভব না।কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি এটাই প্রথম এবং শেষ বার। আমি তোমাকে কখনো কষ্ট পেতে দেব না৷ আমি তোমাকে নিয়ে আলাদা বাসায় উঠবো। তাহলে আর ওরা তোমাকে কিছু বলতে পারবে না৷ আমি ওদের থেকেও দূরত্ব বজায় রাখবো ঐশী। তুমি প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো না৷ আমি ম’রে যাব ঐশী। আমি ভালোবাসার কাঙাল। তুমি আমাকে একটু ভালোবাসা দিও আমি আমার সবটা তোমাকে উজাড় করে দিব। প্লিজ……”

ঐশী শান্ত হয়ে রয়েছে। উল্টো দিকে ঘুরে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ায় সে। লোকটার জন্য সত্যি তার খুব খারাপ লাগে। ঐশী জানে পরিবারের অবহেলা কি জিনিস। আর যেখানে লোকটা সারাজীবন পরিবারের জন্য সবকিছু করেও দিনশেষে কিছুই পায় নি তার কেমন লাগবে তা ঐশী একটু হলেও বুঝতে পারছে। কিন্তু আবেগ দিয়ে জীবন চলবে না৷

“ এ হয় না স্যার। সত্যি বলতে কি। আমি বিয়ে করতে চাই না। কেবল আপনাকেই না। কাউকেই আমি বিয়ে করতে ইচ্ছুক নই। তবে আমি এটাও জানি বিয়ে আজহোক কিংবা কাল আমাকে একদিন না একদিন করতেই হবে। তাই একটা সুযোগ নিয়েছিলাম। ভাবলাম দেখা করেই দেখি না একবার। তবে মজার বিষয় কি জানেন আমার মনে হয়েছিল এমন কিছু একটাই হবে। আপনি বিশ্বাস নাই করতে পারেন। কিন্তু আপনি যেদিন বললেন আপনার বাবা মা’রা যাওয়ার পর সংসারের সব দ্বায় আপনার ঘাড়ে, আর আপনি এতদিন তা নিঃস্বার্থভাবে বয়ে গেছেন। আর আপনি এখনও বিয়ে করেন নি। সেদিনই আমি জানতাম এমন কিছু একটাই হবে। এর প্রভাব পড়বে আপনার পরিবারে।
আর আমার যেহেতু অন্যকোনো পছন্দ নেই তাই আমিও সবদিক ভেবে একটু বাজিয়ে দেখতে চাইছিলাম। তাই আপনাকে আসতে বলা। তবে এতটা হেনস্তা হতে হবে বুঝতে পারি নি৷

স্যার আমিও পরিবার থেকে ঠুকর খাওয়া মানুষ। আমি জানি শত অন্যায় করার পরও কোথাও না কোথাও একটা বাঁধা থেকে যায়, টান থেকে যায়। যার কারনে চাইলেও এদের ছাড়া যায় না। আর আপনি বলছেন আমার জন্য পরিবার ছেড়ে দিবেন। আপনি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবেন আপনার কখনো আফসোস হবে না? তবে আমি বলতে পারব। কোনো একদিন ঠিক আপনার আফসোস হবে। আর তখন আপনি আমাকে ব্লেম করবেন। আর এটা ছাড়াও আপনার পরিবারের সবার কাছে আমি সারাজীবন খারাপ হয়ে থাকবো। আর আমি চাই না কোনো মায়ের কাছ থেকে তার ছেলেকে কেড়ে নিতে। আল্লাহ ভালো জানে কখন কার হায় লেগে যায়।
আর আমারও একটা ভালো সুন্দর, সুখী পরিবারের শখ তা আপনি আমাকে কখনো দিতে পারবেন না। সন্তান হিসেবে আপনি আপনার দ্বায়ও ফেলতে পারবেন না। তাই প্লিজ আমাকে মাফ করবেন, আমি আপনার প্রস্তাবে রাজি হতে পারব না। ”

“ ঐশী প্লিজ একটাবার ভেবে দেখো…”

“ আমি ভেবেই বলছি স্যার। আমি এমনেতেই এতোটা বছর পরিবার নিয়ে এক জ্বা’লা ভোগ করছি এখন এটা ছেড়ে আরেক জ্বা’লায় যাব এতটা বোকাও আমি না। জেনে বুঝে আ’গুনে ঝাঁ’প দিতে আমি পারব না। ”

“ আমি তোমাকে ভালবাসি ঐশী। খুব বেশি ভালোবাসি।”

“ হয়তো। তবে কি জানেন কেবল ভালোবাসা দিয়ে জীবন আর সংসার চলে না। সম্মান লাগে, শান্তি লাগে অর্থও লাগে। আর একটা মানুষের ভালো করে বাঁচার জন্য সবচেয়ে বেশি লাগে মানসিক শান্তি। ভালোবাসা, সম্মান আর অর্থ আমি হয়তো আপনার কাছ থেকে পাবো। কিন্তু মানসিক শান্তিটা পাব না। এগুলোর একটার মধ্যে কোনো একটা না থাকলে জীবনটা বিতৃষ্ণা আর দুঃখে ভরে যাবে স্যার। আমি আমার এই জীবনে আর ডেকে ডেকে এসব দিয়ে ভরাতে চাই না।”

মারুফের চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। চোখের পলক ফেললেই পানি গড়িয়ে পড়বে। চেষ্টা করেও সে চোখের পানি আটকাতে পারে না। তবে তা ঐশীর অগোচরে, ঐশী দেখার আগেই মারুফ তা মুছে ফেলে। ঐশী এবার মারুফের দিকে ঘুরে তাকায়। লোকটার চোখের পাপড়িগুলো ভেজা ভেজা। ঐশীর বুকটা ভার হয়ে আসে। তবে সেটা সে আমলে নেয় না। মারুফের আরেকটু কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। বলে,

“ স্যার প্লিজ আপনি আমাকে ভালো থাকতে দিন। আমাকে আর কোনো নতুন জ্বা’লায় জ্বা’লাবেন না। এটা সম্ভব নয় কখনো। আর পারলে আপনি নিজেকে একটু ভালো রাখার চেষ্টা করবেন। তবে আমাদের এক না হওয়াটাই বেটার। এতে আমরা কেউ ভালো থাকবো না।”

মারুফ একদৃষ্টিতে ঐশীর দিকে তাকিয়ে থাকে। পলক ফেলে না। যেন পলক ফেললেও তার লস। লসই তো। সে বুঝে গেছে এই মেয়েটা তার হবার নয়। এই মুখটা তার আর দেখা হবে কি না তাও তার জানা নেই। অবশ্য দেখা না হওয়াটাই ভালো। সে নিজের তৃষ্ণা মিটাচ্ছে। গলায় একরাশ মায়া আর আকুতি ঢেলে ঐশীকে বলে,

“ ঐশী আমি আপনাকে একটু জড়িয়ে ধরি? প্লিজ? জানি এটা অন্যায় আবদার। তবে এখন এই মুহুর্তে আমার ন্যায় অন্যায় চিন্তা করতে ইচ্ছে করছে না। প্লিজ…….”

মারুফের এমন আবদারে ঐশী বাকরুদ্ধ। সে মারুফের দিকে তাকায়। লোকটার চোখে পানি টলমল করছে। সে কোনোমতে বলে,

“ স্যার এটা ঠিক না। ”

মারুফ আচমকা ঐশীর মাথাটা নিজের বুকের বাম পাশে নিয়ে নেয়। ঐশী হকচকিয়ে যায়। অস্বস্তিতে সে মোচড়ানো শুরু করে। এতে মারুফ বলে,

“ প্লিজ ঐশী দুই মিনিট। জাস্ট দুইটা মিনিট একটু এভাবে থাকো। আমি ছেড়ে দেব। প্লিজ। চুপ হয়ে থাকো।”

মারুফ জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। তার হৃদপিণ্ডটা বেশ জোরে লাব ডাব করছে। কিছুক্ষণ পর ঐশী অনুভব করে একফোঁটা দুই ফোঁটা করে মাথায় কিছু পড়ছে। এটা যে মারুফের চোখের পানি তা তার বুঝতে বাকি থাকে না তার। তার মনটাও ভার ভার লাগছে। একটু পর মারুফ নিজের চোখ মুছে ঐশীর মাথাটা বুক থেকে তুলে, তার হাতের আঁজলায় ঐশীর মুখটা ধরে। কিছুক্ষণ দু’চোখ ভরে দেখে নেয়।

“ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় না পাওয়া তুমি ঐশী। আর এই আফসোস আমার আমৃ’ত্যু থেকে যাবে। কোনোকিছুর বিনিময়ে আমার এই না পাওয়া পূরণ হবে না। এই আফসোস কোনদিন কমবে না আমার, কোনদিন না।
ভালো থেকো আমার স্বপ্নময়ী। খুব খুব খুব ভালো থেকো। তোমার দুচোখের সব স্বপ্ন, তোমার সব আশা, ইচ্ছা, আকাঙ্খা যেন আল্লাহ তায়ালা পূর্ণতা দান করে। একজন ভালো জীবনসঙ্গী পাও। এমন কাউকে যেন পাও যে তোমাকে আমার থেকেও বেশি ভালোবাসবে।
আসি। আল্লাহ হাফেজ। ”

বলে চলে যায় মারুফ। আর পিছন ফিরে তাকায় না। ঐশী স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মারুফের চলে যাওয়াটা সে দেখে ঝাপসা চোখে। মনে হলো দুফোঁটা চোখের জল পড়লো। পড়ুক।

#চলবে

( বোনাস পার্টটা কালকে দিতে চেয়েছিলাম। তবে কপি করতে গিয়ে ডিলিট করে ফেলছিলাম। 🙂
তাই আজকে দিলাম। ৩৪০০ শব্দের পর্ব। পর্বটা পড়ে অবশ্যই বলবেন আপনাদের মতে ঐশীর কাজটা কি ঠিক হলো নাকি ভুল? মারুফের জন্য আপনাদের কি অনুভূতি? হ্যাপি রিডিং। )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here