মেঘের আড়ালে রোদ পর্ব ১৩

0
165

#মেঘের_আড়ালে_রোদ
#পর্ব_১৩
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

মেঘলা আশেপাশে তাকিয়ে দরজা ঠেলা দিলো ভাগ্য ভালো দরজা খুলা। আস্তে করে মাথাটা ভেতরে দিয়ে দেখে নিলো রুমে শ্রাবণ আছে কিনা! তারপর ধীর পায়ে রুমে ঢুকে দরজা ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে একটা লম্বা শ্বাস নিলো।

এখন মিশন হলো শ্রাবণে মানিব্যাগ খুঁজে বের করা। বিছানার উপর, নিচে, বালিশের কভারের ভেতর, টেবিল সব জায়গায় খুঁজে নিরাশ হলো। কোথাও মানিব্যাগ নেই।

আলমারির দিকে চোখ যেতেই খুশিতে হাত দিয়ে চুল গুলো উড়িয়ে বলে উঠলো, ” চিল মেঘু ভয় পাবি না এটা তোর রুম, আর এখানের সব কিছু তোর জামাইর, এই বিছানা, এই টেবিল, এই রুম, এই আলমারি আর আলমারি ভেতরের সব কিছু। বাহিরে চুরি করলে অপরাধ কিন্তু জামাইর থেকে চুরি করলে অপরাধ নেই।
বলেই আলমারি খুলতে গিয়ে থেমে গেলো ড্রেসিং টেবিলের উপর শ্রাবণের কাপড় ভাজ করে রাখা।
মেঘলা ভাজ করা শার্ট হাতে নিয়ে দেখলো। কালো শার্টটা ভীষণ ভালো লেগে গেলো সাথে সাথে ইচ্ছে জাগলো এটা একবার পড়ে দেখার।

” আমার জামাইর শার্ট গুলো এতো সুন্দর কেনো!!.??”

শ্রাবণ রুম থেকে বের করে দেওয়ার পর মেঘলা শ্রাবণের পাঁচটা শার্ট চুরি করে নিয়ে ছিলো। হয়তো এতো এতো শার্টের ভেতর শ্রাবণ খেয়াল করেনি কখনো।

মেঘলা শার্ট নিজের কাপড়ের উপর পড়ে আয়নার সামনে নিজেকে বার বার দেখছিলো। চুল গুলো জুটি করা ছিলো ছেড়ে দিলো। আয়নার সামনে ঘুরে ঘুরে নিজেকে দেখল কিছু সময়।

শ্রাবণের শার্টের নিচেই ওর মানিব্যাগ ছিলো। মেঘলার নজর গেলো মানিব্যাগের দিকে। ওফ্ফ মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি! মানিব্যাগ হাতে নিয়ে বলতে লাগলো,’ আমি চোর হলেও ভালো বউ! বেশি না মাত্র ৫০০ টাকা নিবো। স্বামী আপনি রাগ করবেন না।’ বলেই মানিব্যাগ খুলে দেখলো ভেতরে সব হাজার টাকার নোট। একটা নোট নিয়ে পকেট থেকে ৫০০ বের করে আবার রেখে দিলো কারন সে ভালো বউ।

মেঘলা সব কিছু জায়গায় রেখে শার্টের দিকে তাকালো ইচ্ছে করছে না শার্টটা রেখে যেতে। একটা একটা করে বোতাম খুলে আবার রুমের চারদিকে তাকালো। হঠাৎ কিছু দেখেই এক চিৎকার দিয়ে হাত দিয়ে মুখ ডেকে নিলো। ভয়ে হাত পা কাঁপছে। এখনি বুঝি সে জ্ঞান হারাবে। মনে মনে বলতে লাগলো, ‘ আল্লাহ জীবনে আর এই ঘরে চুরি তো দূর প্রবেশও করবো না শেষ বারের মতো বাঁচিয়ে দাও, অজ্ঞান করে দাও।’

শ্রাবণ ব্যালকনির দরজায় হেলান দিয়ে মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে।
মেঘলা ভয়ে মানিব্যাগ জায়গায় রেখে দিলো একটা একটা করে শার্টের বোতাম খুলে শার্ট খুলে রাখলো। শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ আপনি এখানে!.? ‘
শ্রাবণঃ আমার রুম আমি থাকবো না কে থাকবে.? তুমি এখানে কেনো!.?

মেঘলা কি বলবে ভয়ে ভয়ে হাসলো। মুখে লজ্জা লজ্জা ভাব এনে বলে উঠলো, ‘ আপনাকে দেখতে এসেছি। কতোগুলো বছর হলো দেখিনা ‘

শ্রাবণঃ দেখা শেষ..??
মেঘলাঃ আরেকটু সামনে আসুন ভালো করে দেখতে পাচ্ছি না…

বলেই নিজের গালে থাপ্পড় মেরে বলে উঠলো ‘ মেঘু তোর কি হয়েছে.? এখানে চুরি করতে এসেছিস কাউকে দেখতে নয় পালা।’

শ্রাবণ এগিয়ে আসতে নিলেই মেঘলা চিৎকার করে বলে উঠলো, ‘ এ্যাঁই এ্যাঁই নিজের জায়গায় থাকেন একদম আর এক পা এগিয়ে আসবেন না।’

শ্রাবণ দাঁড়িয়ে গেলো। শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

” তোমাকে নিষেধ করেছি এই রুমে আসতে তার পরেও এই রুমে কেনো এসেছো..??”

মেঘলা আমতাআমতা করে বললো,’ আপনাকে দেখতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল। এতো কিউট, গুলুমুলু, হ্যান্ডসাম পুরুষ আমার জীবনে আর দেখিনি তো তাই’

শ্রাবণের রাগ হলো, রাগে কপালের রগ ভেসে উঠলো ঝড়ের বেগে মেঘলার সামনে এসে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।

মেঘলা ভয়ে কাঁপছে।

শ্রাবণ রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকালো মেঘলার দিকে বেচারির আত্মা এখনি দেহ থেকে বেরিয়ে যাবে।

” মিথ্যা কথা আমার একদম পছন্দ না!”

~ আমি….
~ চুপ!! প্রথমত আমার রুমে আমার অনুমতি ছাড়া এসেছো, দ্বিতীয়ত আমার শার্টে হাত দিয়েছো, তৃতীয়ত আমার মানিব্যাগ থেকে টাকা নিয়েছো। এখন বলো আগে কোনটার শাস্তি দিবো..??’

মেঘলা ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে ভেতর, বাহির সব ভয়ে কাঁপছে। বিশ বছরে কোনোদিন ও এভাবে ধরা খায়নি। কোনো ছেলেকেও এতোটা ভয় পায়নি।
~ চুপ থাকলে শাস্তির পরিমাণ বাড়বে।
~ আগে আমার কাছ থেকে দূরে সরে দাঁড়ান।
শ্রাবণ মেঘলা কে ভয় দেখানোর জন্য আরও কাছে এসে দাঁড়ালো।
~ জলদি বলো.!
~ আমার আপনাকে ভয় লাগছে দূরে সরেন।
শ্রাবণ গুণে গুণে দুই পা পিছিয়ে গেলো।

মেঘলাঃ আপনি আমার স্বামী তাই না..??
শ্রাবণ মুখে বিরক্তিকর ছাপ ফেলে বললো, ‘ এটা শুধু নামের, বাধ্য হয়ে তোমার মতো মেয়েকে বিয়ে করতে হয়েছে। যাদের আমার গেইটেও দাঁড়ানোর যোগ্যতা নেই তাদের আজ বাড়িতে থাকতে দিতে হচ্ছে নিজের নামের পাশে নাম দিতে হয়েছে! আমার চোখের সামনে আসতে নিষেধ করে ছিলাম’

মেঘলা ভয় সরে গেলো জেনো সে শ্রাবণের কথায় কষ্ট পেয়েছে। কষ্ট পাবে না কেনো! সেও তো একটা মানুষ। কেউ কি কখনো বলেছে কেনো সে এই পথ বেছে নিয়েছে!..? সবাই শুধু অবহেলা, ঘৃণার চোখেই দেখে এসেছে। এতোদিন কষ্ট না পেলেও আজ শ্রাবণের কথায় ভীষণ কষ্ট পেয়েছে, স্বামী বলেই বুঝি কষ্টটা বুকে তীরের মতো বিঁধেছে!!??
মেঘলাঃ যেভাবেই হোক করেছেন তো! প্রথমত এই রুম আপনার যেখানে আপনি আমার স্বামী সেখানে আপনার আর আমার মধ্যে পার্থক্য আসছে কোথায় থেকে.? আপনার জিনিস মানেই আমার। আর নিজের রুমে আসতে কারো পারমিশন লাগে না…। দ্বিতীয়ত শার্টটা আমার অনেক ভালো লেগেছিলো তাই পড়ে ফেলে ছিলাম তার জন্য সরি। তৃতীয়ত আমার টাকার প্রয়োজন ছিলো, আপনি আমার স্বামী তাই আপনার রুমে এসে ছিলাম, স্বামীর কাছ থেকে টাকা নিতে পারমিশন লাগে না। আপনি উত্তর পেয়েছেন..? আমি এই তিন মাস বাহিরে চুরি, ছিনতাই করবো না, আমি চাই না আপনাদের পরিবারের কোনো সমস্যা হোক।

শ্রাবণঃ যেখানে তুমি নিজেই একটা সমস্যা সেখানে আর চাওয়া না চাওয়ার কি আসে যায়!.. খুব সুন্দর করে যুক্তি দিয়ে দিলে স্বামীর মানেই তোমার। ঠিক আছে আমিও সেটাই মানি, সাথে স্বামীর সেবা করতে হয় সেটা জানো না..?

মেঘলা ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই শ্রাবণ শয়তানি হাসি দিয়ে নিজের অনেকগুলো কাপড় মেঘলার সামনে ফেলে বলে উঠলো, ‘ এই গুলো সাবান দিয়ে হাতে কেচে ভালো করে ধুয়ে ছাঁদে দিয়ে আসো। তারপর বাকি কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছি। ‘

মেঘলা ভালো মতো ফেঁসেছে। এই দেখতে শান্ত, ভদ্র লোক যে আসলেই একটা বজ্জাত কে জানতো!

মেঘলা মুখ ভার করে কাপড় গুলো নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো আর মনে মনে শ্রাবণের চৌদ্দগুষ্ঠিকে বকতে শুরু করলো।

মেঘলা যেতেই শ্রাবণ হেঁসে ফেললো।

______________

মহুয়া আহনাফ কে দেখলেই লুকিয়ে থাকে যেই কফি খাইয়েছে আহনাফ না ওকে এক থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেয়।

টেবিলে আহনাফ, নির্জন, শ্রাবণ বসে আছে। ছোঁয়া, মহুয়া এসেও বসলো।

মেঘলা নিজের রুমে সব সময় খাবার খায়।

নির্জনঃ ভাই ভাবিকেও ডেকে আমাদের সাথে আনি..?
শ্রাবণ নির্জনের কথায় পাত্তা না দিয়ে খাবার খাচ্ছে।
নির্জন বিড়বিড় করে বলে উঠলো,’ এতো সুন্দর, কিউট বউ রেখে মানুষ একা খায় কিভাবে.? আমি তো আমার বউকে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়ে তারপর নিজে খাবো। বউ কে সাথে নিয়ে সব জায়গায় যাবো।’

ছোঁয়া পাশ থেকে বলে উঠলো, ‘ ওয়াশরুমে গেলেও সাথে নিয়ে যাস কেমন!.?। ‘

সবাই হেঁসে উঠলো ওদের কথা শুনে।
নির্জনঃ এই কটকটি তোরে বলছি সব জায়গায় নাক গলাতে তোর জামাই ঠিক শ্রাবণ ভাইয়ের মতো হইবো দেখে নিস।

শ্রাবণ নির্জনের দিকে তাকাতেই নির্জন ভয়ে বলে উঠলো, ‘ সরি ভাই মুখ ফস্কে সত্যি কথা বের হয়ে গেছে। ‘

শ্রাবণ নির্জনের কথায় পাত্তা না দিয়ে আহনাফের দিকে তাকালো, ‘ তোর হসপিটালের কি খবর..? শুনলাম এসিস্ট্যান্ট খুঁজছিস!’
আহনাফঃ হুম, আগের এসিস্ট্যান্টের বিয়ে হয়ে গেছে।
নির্জনঃ বিবাহিত মহিলা কি তোমার এসিস্ট্যান্ট হতে পারে না..? তুমি অবিবাহিত মেয়ে এসিস্ট্যান্ট খুঁজছ কেনো?
আহনাফ রেগে নির্জনের গালে ঠাসস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। বেচারা গালে হাত দিয়ে মহুয়ার দিকে তাকালো কি লজ্জা! একটা মেয়ের সামনে ভাই এভাবে মারলো! এই মুখ সে আর কিভাবে দেখাবে..? তার তো এখন বনবাসে চলে যাওয়া উচিত।

আহনাফঃ মেয়েটার স্বামী চাচ্ছে না তার ওয়াইফ বাহিরে কাজ করুক।
নির্জন মুখে তালা মেরে বসে রইলো। কথা বললে যদি আরেকটা দেয় তাহলে যতোটুকু মানসম্মান ছিলো সেটাও থাকবে না।

ছোঁয়া কিছু একটা ভেবে বলে উঠলো, ‘ ভাই তোমার তো এসিস্ট্যান্ট লাগবে তাই না..??’
আহনাফঃ হুম।
ছোঁয়াঃ মহুয়াও সাইন্স নিয়ে পড়ছে আর ও একটা জব ও খুঁজছে যেহেতু এসিস্ট্যান্ট লাগবে ওকে নিয়ে নাওও।

আহনাফ ছোঁয়ার থেকে চোখ সরিয়ে মহুয়ার দিকে তাকালো। মহুয়া খাবার মুখে দিতে গিয়ে থেমে গেলো ছোঁয়ার কথা শুনেই।

আহনাফ কিছু না বলে খাওয়ার মধ্যে মন দিলো।

মহুয়া ছোঁয়ার দিকে তাকাতেই ছোঁয়া ইনোসেন্ট মুখ করে বলে উঠলো, ‘ প্লিজ প্লিজ প্লিজ এখানে কিছু বলো না আমি রুমে গিয়ে তোমাকে বুঝিয়ে বলছি।’

শ্রাবণ হাত ধুয়ে উঠে গেলো। যাওয়ার সময় আঁড়চোখে মহুয়ার দিকে তাকালো। যতো চেষ্টা করে মেয়েটার থেকে দূরে সরে যেতে ততই যেনো আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে। যত কষ্টই হোক সে ওর জীবনে এই ফুলের মতো মেয়েটাকে জড়াবে না। ওর থেকে দূরে দূরে থাকবে।

রুমে আশার পর থেকে ছোঁয়া মহুয়া কে বার বার বুঝিয়ে যাচ্ছে।
মহুয়া বিরক্ত হয়ে বললো,’ ছোঁয়া আমি কেনো এই বদরাগী, গম্ভীর মানুষটার এসিস্ট্যান্ট হতে যাবো.? আমি পারবো না।

ছোঁয়াঃ ভাইয়া খুব ভালো। আর কোনো মেয়ে এসিস্ট্যান্ট আসলে তুমি ভেবে দেখো মেয়েটা ভাইয়াকে পটিয়ে যদি প্রেমে ফাঁদে ফেলে দেয়।
মহুয়াঃ তাতে তোমার সমস্যা কি..? এমন বদরাগী বেয়াদব লোকের প্রেমে কোনো মেয়ে কখনো পড়বে না।

ছোঁয়া তাও হার মানার মেয়ে নয় বার বার এটা সেটা বলে বুঝাচ্ছে।

মহুয়া যখন বুঝছে না তখন রুম থেকে বের হয়ে আহনাফের রুমের সামনে গেলো। সে যেভাবেই হোক অন্য কোনো মেয়েকে এসিস্ট্যান্ট হতে দিবে না।

______________

পাশাপাশি ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছে মহুয়া আর মেঘলা।
মেঘলা নিরবতা ভেঙে বললো,’ ছেলেটাকে হসপিটাল ভর্তি করিয়েছি।
মহুয়াঃ বাঁচবে তো.?
মেঘলাঃ হুম তবে অনেকদিন ভর্তি থাকবে।
মহুয়া মুচকি হাসলো।এতো জলদি মৃত্যু এই লোকের কপালে লেখা নেই।
মেঘলাঃ আমি তোমাদের সব কথা শুনে ছিলাম।ছেলেটা যতো টুকু বুঝলাম তোমার প্রেমিক। কি হয়ে ছিলো তোমার সাথে.? সে কেনো তোমাকে ওই রকম জায়গায় রেখে এসে ছিলো..? কিভাবে এমন জায়গা থেকে মুক্তি পেলে.? তোমার সাথে কি কিছু হয়ে ছিলো ওখানে.? তুমি আসলে কে.? আর খু’ন গুলো কাকে করেছো.??

মহুয়াঃ আস্তে ধীরে প্রশ্ন করো মেঘ।
মেঘলাঃ তুমি আস্তে ধীরে উত্তর গুলো দিলেই হয়।
মহুয়াঃ আজ বলতে ইচ্ছে করছে না।
মেঘলাঃ তোমার বাড়িতে কে কে আছে.?
মহুয়াঃ মামা, মামী দুই ভাই।
মেঘলাঃ বাবা মা..?
মহুয়াঃ নেই আমি ছোটো থাকতেই না ফেরার দেশে পারি জমিয়েছে।
মেঘলাঃ আপন ভাই.?
মহুয়াঃ না। আমার ভাই বোন নেই। আমার আম্মু একজন বড় উকিল ছিলেন, আর আব্বু পুলিশ। আমি যখন জন্ম নেই সেই খবর পেয়ে আব্বু আমার বোনকে নিয়ে হসপিটাল যেতে নেয় মাঝ রাস্তায় গাড়ি এক্সিডেন্ট করে বড় একটা ট্রাকের সাথে সেখানেই তারা মা-রা যায়। সেই কথা শুনতে পেয়ে আম্মুও স্টক করে আমি হয়ে যাই দুই দিনেই এতিম। তারপর আমার দেখা শোনা করে মামা মামী। লোক মুখে শুনতাম আমি অপয়া, অলক্ষী সেই জন্যই আমার জন্মতে আমার পুরো পরিবার শেষ হয়ে যায়।

মেঘলাঃ তোমার কখনো মনে হয়নি এই গুলোর পেছনে অন্য কারো হাত থাকতে পারে.?? তুমি ভেবে দেখো! আমার কাছে অন্য কিছু মনে হচ্ছে।
মহুয়াঃ না কখনো মনে হয়নি। আর আমি আমার আব্বু আম্মুর বিষয় তেমন কিছু জানি ও না। মামা মামী যতোটুকু বলেছে ততটুকুই জানি।
মেঘলাঃ তার মানে তোমরা দুই বোন ছিলে। এই ছেলের সাথে কিভাবে পরিচয়.?
মহুয়াঃ কোনো একদিন তোমার সাথে বসে চায়ের আড্ডা দিবো তখন আমার জীবনের ছোটো গল্পটা বলবো।

মেঘলাঃ আচ্ছা তবে সেই আড্ডা খুব জলদি হোক।
মহুয়াঃ তুমি কেনো এই পেশা বেছে নিয়েছো। পৃথিবীতে এতো কাজ থাকতে!.?
মেঘলাঃ তুমি কেনো খু’ন করে ছিলে দেশে আইন থাকতে.? এতো মানুষ থাকতে..?
মহুয়াঃ রাখো দেশের আইন এরা শুধু বাংলা সিনেমার মতো লাস্ট মুহূর্তে এন্ট্রি নিতে আসে। নিজেকে বাঁচানোর জন্য আমার কাছে আর কোনো রাস্তা ছিলো না। সাথে এতো গুলো মেয়ের আর্তনাদ আমার মধ্যে অন্য মহুয়াকে খুঁজে পেয়ে ছিলাম।
মেঘলাঃ আমিও নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য এই পথ বেছে নিয়েছি।যখন নিজের মা’কে চিকিৎসার অভাবে কষ্টে হসপিটালের সামনে কাতরাতে কাতরাতে মরতে দেখেছি। আমি সেই দিন অনুভব করে ছিলাম এই পৃথিবীতে বাঁচতে হলে টাকার প্রয়োজন। মা মা-রা যাওয়ার পর খাওয়ার জন্য এক মুঠ ভাত পাইনি কতো লোকের ঘরের দরজায় গিয়েছি ছোটো ছিলাম। একদিন খিদায় রাস্তার পাশে বসে ছিলাম একটা ছেলের হাতে বিস্কুট দেখে তা নিয়ে দৌড় দেই। তারপর থেকে এই পথ বেছে নিলাম।

মহুয়া মেঘলার হাতের উপর হাত রাখে। মেঘলার কষ্টটা বুঝার চেষ্টা করে।

__________

মহুয়া রুমে এসে বললো আমি রাজি।
ছোঁয়া খুশিতে মহুয়াকে জড়িয়ে,ধরে বলে উঠলো, ‘ সত্যি মেহু.?’
মহুয়াঃ হুম।

ছোঁয়াঃ ভাইয়ার কাছে চলো।
মহুয়াঃ কেনো..?
ছোঁয়াঃ ভাইয়া বলে ছিলো তুমি নিজে বললে ভাইয়া ভেবে দেখবে।

মহুয়ার হাতে হসপিটাল যাওয়ার এটা একটা দাড়ুন সুযোগ কিছুতেই হাত ছাড়া করলে চলবে না। পলাশকে শায়েস্তা করতে হলে হসপিটাল যেতেই হবে। কঠিন থেকে কঠিন মৃত্যু দিবে তাকে। বিশ্বাসঘাতক, বেইমানদের কোনো ক্ষমা নেই।

চলবে…..

( সত্যি বলছি কাল থেকে প্রতিদিন গল্প দিবো ইনশাআল্লাহ আজ কেউ বকা দিও না,😞)

ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here