একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি পর্ব ১৬

0
130

একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি -১৬

কিছুতেই না, নায়ক ফায়ক আমি মানি না। বিয়ে করতে হলে আশফাককে করতে হবে৷ নয়তো বিয়ে করার দরকার নাই- নওরিনের মা চিৎকার করে কথা বলছেন ফোনের ওপাশে।

নওরিন হতভম্ব হয়ে বসে আছে। উনি থামছেন না। নওরিন নিজের মাকে চিনতে পারছে না।

এখনকার দিনে, কোনো নায়কের সংসার টিকে? আজকে একটা তো কালকে আরেকটা। দুনিয়ার মেয়ের সাথে ফষ্টিনষ্টি করে বেড়ায়, এদিক নিয়ে যায়, ওদিক নিয়ে যায়, হোটেলে রাত কাটায়, ছি! পড়াশোনা শিখে এই উন্নতি হইছে তোমার! কোথায় কোথায় গেছ এই নায়কের সাথে?

অমিতের কথা বাসায় জানাতেই এই বিপত্তি শুরু হয়েছে।

ঢাকায় থাকা লাগবে না। হোস্টেল ছেড়ে বাড়ি চলে আসবে, তোমার বাবা তোমাকে নিয়ে আসবে। আপাতত মামার বাসায় চলে যাও।

মানে কি! এত রিএ্যাকশন দেওয়ার মত আমি কিছু বলিনি মা! – নওরিন উত্তর দিলো।

আর অমিত এরকম ছেলেই নয়৷

কতদিন চেনো এই ছেলেকে, তোমার সাথে কি কি করেছে?

নওরিন ফোন রেখে দিলো।

কিছুক্ষণ পরে বাবা ফোন করলেন,নওরিন, এসব কি শুনছি, তুমি নাকি কোন নায়ককে বিয়ে করতে চাও?

নওরিন বলল, তুমি কি শুনেছ, সেটা তো আমি জানি না বাবা।

তোমাকে আমি ঢাকায় রাখছি, প্রতিমাসে খরচ দিই৷ একটা চাকরি পেয়েছ, সেটা করো, ভালো একটা ছেলে দেখে বিয়ে দিব। তুমি এসব কি শুরু করছ?

নওরিন বলল, আমি কিছু শুরু করিনি বাবা, আমি শুধু বলেছি, উনি বিয়ের প্রস্তাব দিতে চাচ্ছেন।

না না, এসব হবে না। না করে দাও। আশফাকের ফেমিলিতে কথা বলি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তোমাদের এনগেজমেন্ট করে বিয়ে দিয়ে দিতে হবে।

নওরিনের একটু অসহায় লাগতে শুরু করল। আশফাককে তার খারাপ লাগেনি৷ কিন্তু অমিতকে অন্যরকম ভালো লাগছে, এটা ঠিক বোঝানো যাবে না। কিন্তু কেন ভালো লাগছে, অমিত নায়ক এটা কি কারন? কেন অমিতের সাথে তার দেখা হলো, অমিতকে কেন সে না করে দিতে পারল না।অমিত কেন এত মেয়ে থাকতে তাকে পছন্দ করে ফেলল! মানে
এত কেন কেন কেন, মাথায় ঘুরছে, মনে হচ্ছে সব দোষ অমিতের।

অমিত আজ প্রচন্ড ব্যস্ত ছিল। এত ব্যস্ত থাকলে সে নওরিনকে ফোন করে না। এফডিসিতে ফাইটিং শ্যুট ছিল। ইয়া ডিসুম, ডিসুম সাউন্ডে মাথা হ্যাং হয়ে আছে।
নওরিনের ভয়ংকর ভাবে মন খারাপ লাগছে।

এত এত নেগেটিভ কথা সে নিতে পারছে না। অসহ্য!

অমিতকে না করে দিলেই সব ঝামেলা শেষ।

অমিত গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিল। ধানমন্ডি দুইয়ের অনেক ট্রাফিক আজ। রাতও কম হয় নি একেবারে। বারোটা দশ বাজে। নওরিন ফোন করেছিল! একবার ব্যাক করা যায় এখন।

হ্যালো, তুমি ফোন করেছিলে?

অমিত আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারব না।

ওকে ফাইন, সেটা এভাবে হন্তদন্ত হয়ে বলার কি আছে?

বলা দরকার ছিল।

বলে ভালো করেছ। বাবা মা রাজী হয় নি? তাই তো?

হুম।

কেন, আমি মিডিয়ায় কাজ করি বলে?

হুম।

কি বলেছে, নায়কদের চরিত্র ভালো না?

হুম।

ভালো কথাই তো বলেছে। এখন তুমি বলো তো, আমাকে তোমার কেমন লাগে? সত্য কথা বলবা?

নওরিন সত্যের মুখোমুখি হতে চাইল না।

সে ফোন কেটে দিলো। তবে ভাবল অমিত এখন ফোন করতেই থাকবে। অদ্ভুত, অমিত আর ফোন করল না তখন। নওরিন সারারাত বসে থাকল।বসে থাকতে থাকতে ভোররাতে চোখ লেগে এসেছিল। সকাল ছয়টার দিকে নওরিনকে অমিত ফোন করল।

-নিচে এসো আমি অপেক্ষা করছি। আজ আমরা বিয়ে করব।

চলবে

শানজানা আলম

“হিজলের ফুল” অর্ডার করতে চাইলে ইনবক্সে এড্রেস আর ফোন নম্বর দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here