অটবী সুখ পর্ব ১৫

0
100

অটবী সুখ

১৫.
বাতাসে মিষ্টি একটা ঘ্রাণ ঘুরে বেড়াচ্ছে। মা চুলায় হালুয়া রাঁধছেন। ঘি-য়ের মনোরম ঘ্রাণে জিভের পানি আটকানো যাচ্ছে না। রান্নাঘরের আশপাশটায় চাতক পাখির মতো ঘুর ঘুর করছে পৃথা আর নলী। কখন হালুয়া হবে, ওমনি তারা ঝাপিয়ে পরবে খেতে! অটবী জানালার বাহিরে উঁকি দিয়ে ওদের একবার দেখে নিলো। এদু’জনকে সে সকালে বলেছিল ঘরটা গুছিয়ে রাখতে। গোছায়নি। বরং পড়ার ছুতোয় উঠোনে পাটি গেড়ে হালুয়া খাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। ভেতর থেকে একটা সূক্ষ্ম দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো। কোমড়ে ওড়না বেঁধে প্রথমে বিছানা ঝাড়লো অটবী। বিছানার নিচে নলীর ব্যাগ অনাদরে পরে আছে। ব্যাগের চেন খোলা। বইপত্র মেঝে ছুঁচ্ছে! মেয়েটা এতো অগোছালো! বেশ খানিকটা বিরক্তই হলো অটবী। ব্যাগ গুছিয়ে রাখতে রাখতে হঠাৎ খেয়াল হলো, নলীর ব্যাকরণ বইয়ের ভেতর থেকে একটা লাল রঙের কাগজ বেরিয়ে এসেছে। বইটা পৃথার হলে অটবী হয়তো বিষয়টা অত আমলে নিতো না। কিন্তু একবার যখন বিশ্বাস ভেঙ্গেছে, নলীর কোনো কিছুই সে সহজে নিতে পারে না।
অনেকটা সন্দেহের বশেই লাল রঙা কাগজটা খুললো সে। যা ভেবেছিল তা-ই! এটা প্রেমপত্র। মধুর, রসালো প্রেমপত্র! নয়-দশ লাইনের। পড়তে পড়তে অটবীর ভ্রুদ্বয় কঠিন ভাবে বেঁকে গেছে। রাগটা প্রকাশ করতে না চাইলেও দমাতে পারলো না অটবী। উচ্চস্বরে ডেকে উঠলো, “নলী? এক্ষুণি রুমে আয়! এক মিনিটও দেড়ি করবি না।”

নিজ খেয়ালে মশগুল নলী জোরেসোরে চমকে উঠলো। পৃথার দিকে একবার জিজ্ঞাসু দৃষ্টে তাকিয়ে ছুট লাগালো রুমের দিকে। অটবী তখন হাতের কাগজটা টেবিলের ওপর মেলে রেখেছে। নলী আসতেই ওর দিকে বাড়িয়ে দিলো। থমথমে গলায় প্রশ্ন ছুঁড়লো, “এটা কি? কে দিয়েছে?”

কাগজটা কাল স্কুলে যাওয়ার পথে সরোজ দিয়েছিল। নলী খুলে দেখেনি। তার তো মনেই ছিল না। কাগজ হাতে এক ঝলক লেখাগুলোয় চোখ বুলিয়ে নিলো সে। নাহ্! সূচনা-উপসংহার কোথাও সরোজের নাম নেই। মনে মনে বড্ড খুশিই হলো নলী। চেহারায় দারুণ আতঙ্ক ঝুলিয়ে নির্দোষ কণ্ঠে বললো, “এইটা আমি নিতে চাই নাই বুবু। আমার কোনো দোষ নাই। ইস্কুলে একটা ছেলে আমাকে খুব বিরক্ত করে। ও-ই জোড় করে কাগজটা আমার ব্যাগে ঢুকিয়ে দিছে।”
“কাগজটা এখনো তোর ব্যাগে কি করে? ফেলে দিস নি কেন এটা?”

এপর্যায়ে নলী একটু তোতলালো, “মনে…মনে ছিল না বুবু।”
অটবীর তীক্ষ্ণ চোখজোড়া নলীকে আগাগোড়া পর্যবেক্ষণ করছে। যদিও তার মস্তিষ্ক বলছে, নলী যা বলছে সব মিথ্যা। কিন্তু তবুও সে মস্তিষ্কের কথা শুনলো না। বিশ্বাস করে নিলো। ডাস্টবিনে কাগজটা ফেলে দিয়ে বললো, “আর এসব কাগজ-টাগজ নিবি না। বেশি বিরক্ত করলে বলবি, বিষয়টা আমি দেখবো।”

নলী কথা বাড়ালো না। মাথা কাত করে সায় দিলো শুধু। এবার থেকে আরও সাবধান হতে হবে। এইসব চিঠি-কাগজ বাদ! এগুলোতে রিক্স অনেক।

রোদ্দুরের উত্তাপ দৃঢ়, রুক্ষ। ফ্যাকাশে একটা রঙ ধারণ করেছে সবুজ সতেজতা। ভ্যাপসা, মৃদুমন্দ বাতাস। অটবী তিনটার দিকে টিউশনে বেড়িয়েছিল। একটা পড়িয়েছে। বাকিগুলো পড়াতে ইচ্ছে করছে না। ঘুম পাচ্ছে খুব। বাসায় গিয়ে একটা মারাত্বক ঘুম দেওয়া দরকার। খুব দরকার। মোড়ের রাস্তার পাশে ছোট্ট একটা দোকান বসে। ঝালমুড়ি, চটপটি, ফুচকা— এসবের। সেদিক দিয়ে যাওয়ার সময় অটবীর কেন যেন প্রচন্ড ইচ্ছে করলো একটু ঝালমুড়ির স্বাদ নেওয়ার। ব্যাগে পর্যাপ্ত টাকা আছে। একদিন একটু পাঁচ টাকার ঝালমুড়ি খেলে মাসিক খরচে টানাপোড়ন লাগবে না নিশ্চই?

অনেকটা উৎফুল্ল মনেই ঝালমুড়ি নিয়ে বাসার পথে পা বাড়ালো অটবী। ঝালমুড়ি মুঠোয় পুরে খেতেই নিচ্ছিল, হঠাৎ কোত্থেকে আগমন ঘটলো তনয়ার। মেয়েটার ফর্সা মুখটা রক্তিম। স্পষ্ট কাঁদছে। কাজল রাঙা আঁখিদ্বয় লেপ্টানো। ভীতু সাব্যস্ত হৃদযন্ত্র অটবীকে দেখে যেন কিঞ্চিৎ শান্ত হয়েছে। আশেপাশে ত্রিস্তান, সরোজ কাউকে দেখা যাচ্ছে না। মেয়েটা কি আবারও বাসায় না জানিয়ে এতটুকু পথ এসেছে? আবার হারিয়ে গেছে? তপ্ত নিশ্বাস ফেলে তনয়ার চোখের অশ্রুগুলো হাত দিয়ে মুছে দিলো অটবী। আদুরে গলায় জিজ্ঞেদ করলো, “তোমার ভাইয়া কোথায়, তনয়া? আবারও কাউকে না বলে বাসা থেকে বেড়িয়েছ?”

তনয়া অপরাধীর ন্যায় মাথা নুয়ালো। মিনমিনিয়ে বললো, “আমি হারিয়ে গেছি।”
“তোমার ভাইয়া এমন কেয়ারলেস কেন? তুমি যখন বেড়িয়েছিলে, কেউ দেখেনি?”
“সরোজ ভাইয়া ঘুমায়।”
“আর ত্রিস্তান?”

তনয়া চোখ পিটপিট করে তাকালো, “ভাইয়া বাহিরে। কাজ করে।”

ভেতরকার দীর্ঘনিশ্বাসটা রয়েসয়ে ফেললো অটবী। খেয়াল করলো, তনয়া অনেক্ষণ ধরে তার হাতের ঝালমুড়ির দিকে চেয়ে আছে। চাপা হতাশা আটকে ঝালমুড়িটা তনয়া দিকে বাড়িয়ে দিলো সে। বললো, “নাও, এটা খাও।”

ত্রিস্তানের বাসা ঠিক কোথায়, তা জানা নেই অটবীর। শুধু জানে, জঙ্গলের ভেতরের ছোট্ট আঁকাবাঁকা রাস্তা পেরিয়ে একটা মাঝারি আধভাঙা রাজপ্রাসাদ আছে। ওটাই ত্রিস্তানের বাড়ি। কিন্তু সে শতভাগ নিশ্চিত না। নলী বলতে শুনেছিল। এই শোনা ওপর নির্ভর করে সম্পূর্ণ অচেনা জায়গায় পা বাড়াতে ইচ্ছে করছে না। কপালে চিন্তার বলিরেখা এঁটে তনয়ার দিকে তাকালো। মেয়েটা ওর দিকে চেয়ে ছিল। ছটপটে কণ্ঠে বললো, “আমি এখান থেকে বাসায় যেতে পারবো, আপু।”
—“তোমাদের বাসা এই জঙ্গলের ভেতরেই? তুমি রাস্তা চেনো?”

তনয়া বেশ কয়েকবার মাথা দুলালো। হ্যাঁ, সে চেনে। কিন্তু তবুও তাকে একা ছাড়লো না অটবী। ছোট্ট রাস্তাটার ভেতর দু’জনেই পাশাপাশি হাঁটতে লাগলো। তনয়ার ঝালমুড়ি খাওয়া শেষ। সে আপাতত শক্ত করে অটবীর হাত ধরে আছে। মেয়েটা অটবী থেকে এক-দু’ বছরের ছোট হবে। তবে উচ্চতায় সমান সমান। এত বড় একটা মেয়েকে শাসন করতে একটু অস্বস্তি লাগছে তার। এই মেয়েটা যদি সুস্থ থাকতো, তবে নিশ্চই তাকে অন্যের ওপর নির্ভর থাকতে হতো না। হয়তো মেয়েটা এতদিনে নিজের মতো করে একটা সুন্দর জীবন গড়ে তুলতো।

জঙ্গল থেকে ত্রিস্তানের বাড়ি অত দূরে না। দশ মিনিটের পথ। কোনো ধরণের গেট নেই। হয়তো ছিল, কিন্তু এখন এর অস্তিত্ব সম্পূর্ণ বিলীন। দু’পাশে শুধু দু’টা পিলার গেঁথে আছে। বাড়ির সুরক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা দেওয়াগুলোও ভেঙ্গে একাকার। অটবী পিলার দুটো পাশ কাটিয়ে সামনে এগোলো। সদর দরজা সম্পূর্ণ খোলা। বসার ঘরে হাত পা ছড়িয়ে হা করে ঘুমাচ্ছে সরোজ। দুটো ঠোঁটের পাতার মাঝখানে বিস্তর ফাঁকা। কি আরামের ঘুম তার!
তয়না দৌড়ে সরোজের কাছে গেল। কিছুক্ষণ ভ্রু কুঁচকে চেয়ে, টেবিলে থাকা জগের পানিগুলো চট করে ঢেলে দিলো সরোজের মুখে। সরোজের ঘুম ভাঙ্গলো। ভয়ানক চিৎকার দিয়ে ভূত, ভূত বলে লাফিয়ে উঠলো সে। পরক্ষণেই তনয়াকে চোখের সামনে পেয়ে চড়া গলায় বললো, “তোমার সমস্যা কি, তনয়া আপু? আমার ঘুমের সাথেই তোমার এত শত্রুতা কেন?”

সরোজের উত্তপ্ত রাগটা কেউই আমলে নিলো না। তনয়া লুকালো নিজেকে অটবীর পেছনে আড়াল করে। অটবী এতক্ষণ চুপ থাকলেও এবার বেশ ক্ষিপ্ত হয়ে বললো, “রাতে কি ঘুমাও না, সরোজ? পড়ালেখাও তো করো না। সারাদিন এদিক-ওদিক ছুটতে থাকো। আসলে করোটা কি তুমি? এত ঘুম কেন আসে? মেয়েটা যে একা একা মোড়ের রাস্তায় চলে গিয়েছিল, সেই খেয়াল আছে?”

সরোজ চমকালো খুব। একবার অটবীকে দেখে আরেকবার লুকিয়ে থাকা তনয়াকে দেখার চেষ্টা করলো। বাম হাত দিয়ে ঘাড় চুলকালো কয়েক সেকেন্ড। ভ্রু বাঁকিয়ে, ভীষণ আশ্চর্য কণ্ঠে সুধালো, “সত্যি বলতাছো? আমি এত বিশ্রী ঘুমাই?”
শুনে তনয়া খিলখিলিয়ে হাসলো। থম মেরে থাকা সরোজকে দেখে তার খুব হাসি পাচ্ছে। মজাও লাগছে ভীষণ। ঠোঁটের হাসিটা দৃঢ় করে অটবীর একটা হাত জড়িয়ে ধরলো সে। আবদারের সুরে বললো, “আজকে আমার সাথে এখানে থাকবা, আপু?”

নিষ্পাপ শিশুর ন্যায় চোখের সচ্ছ মায়া অটবীকে গলাতে পারলো না। আস্তে আস্তে ধরণীতে সন্ধ্যা নামছে। এক্ষুণি বাসায় না ফিরলে অনেক দেড়ি হয়ে যাবে।
পাশ হতে সরোজ গলা মেলালো, “তনয়া আপু ঠিক বলতাছে। এখন যাওয়া ঠিক হবে না। এই রাস্তা ভালো না। শিয়ালে দল বাঁইধা বইসা থাকে। তুমি ত্রিস্তান ভাই আসার পরে যাইও আপু। ত্রিস্তান ভাই এইতো, আইসা পরবে। অনেক্ষণ হইছে বাইরে গেছে।”

অটবী একদমই চাইছিল না থাকতে। কিন্তু দুইজন মানুষের পিড়াপিড়িতে সে একা টিকতে পারেনি। ডাইনিংটেবিলের চেয়ারে গম্ভীর মুখে বসে আছে। পাশে তনয়া তার প্রিয় টেডিবিয়ার নিয়ে খেলছে। মাঝে মাঝে অটবীকে কি কি যেন জিজ্ঞেস করছে, বলছে। অটবীর উত্তর হু, হা-তেই সীমাবদ্ধ। তার আসলে বিরক্ত লাগছে সবকিছু। মনে হচ্ছে, উপকার করাটাই উচিত হয়নি।

ত্রিস্তান আসলো মিনিট খানেক বাদে। সরোজ তখন রান্নাঘর থেকে হাঁক ছাড়ছে। সে নতুন নতুন চা বানানো শিখেছে। লাল চা, দুধ চা– দুটোই। অটবী কোনটা খাবে, সেটা জানার জন্যই তার এত হাঁক-ডাক। অটবী বাঁকা চোখে একবার ত্রিস্তানকে দেখলো। লোকটার হাত ভর্তি বাজারের ব্যাগ। অটবীর দিকে একবার স্বাভাবিক দৃষ্টে তাকিয়ে সে নিজেই প্রশ্নের উত্তর দিলো, “সবার জন্য দুধ চা বানা, সরোজ।”

“অটবী আপু কি দুধ চা খাইবো?”

“হ্যাঁ।”

তনয়ার জন্য আনা চকলেটগুলো তনয়াকে দিয়ে ত্রিস্তান নিজেও চলে গেল রান্নাঘরে। অটবী চোখ-মুখ খিঁচে শক্ত হয়ে বসে রইলো। দারুণ অস্বস্তিতে হাত পা কাঁপছে তার। যাওয়ার আগে লোকটা তার হাতেও চকলেট গুঁজে দিয়ে গেছে। কাজটা এত দ্রুত করেছে যে, সে মানা করার সুযোগও পায়নি।

অটবী ভেবেছিল, ত্রিস্তান এসেই তাকে এখানে দেখে চমকে যাবে। নানান প্রশ্ন করবে। কিন্তু সেসব নিছক কল্পনা। ত্রিস্তান এতটাই স্বাভাবিক আচরণ করছে যে অটবী নিজেই ক্ষণে ক্ষণে হতবাক হচ্ছে, চমকাচ্ছে। লোকটার সফটওয়্যার গুলো কি ভালোমতো কাজ করে না? একটু তো অবাক হওয়া উচিত ছিল।

ডাইনিংটেবিলের একদম সামনের দেওয়ালটাতে বাঁধাই করা একটা ছবি আছে। সুখী পরিবারের। লম্বা, সুদর্শন মতো একজন লোক। স্যুটপ্যান্ট পরে আছেন। তার কোলে আট-নয় বছরের একটা ভীষণ সুন্দর ছেলে। দাঁত বের করে চোখ বুজে হাসছে। সুদর্শন লোকটার পাশে শাড়ি পরা একজন অত্যাধিক সুন্দরী নারী দাঁড়িয়ে আছেন। দেখতে মোটেও এদেশের মতো না। বিদেশিনী। একটু খেয়াল করলে বোঝা যায়, চুলগুলো ভীষণ লাল। আমেরিকান মুখাবয়ব। ফর্সা টকটকে ত্বকে ঘিয়া রঙা শাড়ি ফুঁটে আছে। তার কোলে তোয়ালে পেঁচানো নবজাতক শিশু। ছবির এই চারজনই এত স্নিগ্ধ হাসছে! অটবী চোখ সরাতে পারলো না। মুগ্ধ হয়ে চেয়েই রইলো। সরোজ তার মুগ্ধতা দেখে চায়ের ট্রে-টা টেবিলে রাখতে রাখতে উচ্ছাস নিয়ে বললো, “এইটা ত্রিস্তান ভাইয়ের বাপ-মা। পোলাটা ত্রিস্তান ভাই, আর বাচ্চাটা তনয়া আপু। সুন্দর না ছবিটা?”

অটবী মন্ত্রমুগ্ধের মতো মাথা নাড়ালো। ত্রিস্তান এসে পাশে বসেছে। ট্রে থেকে একটা চায়ের কাপ, এক প্লেট বিস্কুট অটবীর সামনে রেখে বললো, “খাও।”

অটবী খাবারের দিকে তাকালো না। সরাসরি বললো, “আমি বাসায় যাবো। আপনি শুধু জঙ্গলটা পার করে দিন। বাকিটা আমি পারব।”
—“দিবো। আগে খেয়ে নাও।”

বিরক্ত হয়ে কপাল কুঁচকালো অটবী। লোকটা এত অসহ্য কেন? চিবিয়ে চিবিয়ে বিস্কুট খেতে খেতে হাতের মুঠোয় থাকা চকলেটটা ত্রিস্তানের কোলে ছুঁড়ে মারলো সে। অথচ ত্রিস্তান কিছুই বললো না। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে প্রশ্ন করলো, “তুমি এখানে কেন এসেছো?”

এতক্ষণ! এতক্ষণ পর জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন বোধ করলেন জনাব! অটবী বলতেই নিচ্ছিল, সরোজ তাড়াহুড়ো করে বাঁধা দিলো, “ওইতো, তনয়া… মানে তনয়াকে ইয়ে করেছিল…”
মাঝপথে থামিয়ে তনয়া নিজেই বললো, “সরোজ ভাইয়া অনেক কাজ চোর হয়ে গেছে ভাইয়া। আমাকে পাহারা না দিয়ে নাকে তেল লাগিয়ে ঘুমাচ্ছিল। এই সুযোগে আমি বাসা থেকে পালিয়ে গেছি। দরজা খোলার সময় এত শব্দ করেছি, তবুও ঘুম থেকে উঠেনি। তোমার কিছু করা উচিত। সরোজ ভাইয়া খুব বাজে ভাবে নাক ডেকে ডেকে ঘুমায়।”

আধখাওয়া বিস্কুট-টা হাত থেকে পরে গেছে। গলা দিয়ে খাবার নামছে না। অগ্রিম ভয়ে হার্ডফেল করে যেন মারা যাবে সরোজ। সে এখনই তার ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে। এই ঘন আঁধারে, বটগাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় চিৎকার করে ‘মাগো মা’ চিলাচ্ছে সে।

______________

চলবে~
ঈশানুর তাসমিয়া মীরা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here