You_are_mine
Season_2
Poly_Anan
part_8
জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বৃষ্টির ধ্বনি উপভোগ করছে ঈশা।গত কালের কথা ভাবলেই তার গা ছম ছম করে উঠে।হুট করে জমিনে বৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে যেন ঈশার জীবনেও প্রেম নেমে এসেছে…! ঈশানের বলা কথা গুলো তার মনের ভেতর বার বার ঝড় তুলে গেছে।কাল বাড়িতে আসার পর ঈশা ফোন বন্ধ করে চার্জে বসিয়েছে সেই ফোন আর অন করেনি।সে যানে ঈশান নিশ্চই তাকে কল ব্যাক করবে আর দুষ্টু মিষ্টি কথা বলে তাকে লজ্জা দেবে। সময়টা এখন সকাল এগারোটা। কালকের বৃষ্টি এখনো থামেনি… একটানা ঝির ঝির করে বৃষ্টি পরেই যাচ্ছে।
“ঈশা…এই ঈশা তোর ফোন কোথায়…?(ঘাবড়ে গিয়ে অনু)
” কেন কি হয়েছে আর তুই এতো ছুটে এলি কেন? ঘুম থেকে উঠে এসেছিস মনে হচ্ছে।
“তা নয়তো কি..? তোর ফোন অফ কেন ঈশান ভাই আর রাসেল তোকে অনেক বার ফোন দিয়েছে..!
” আয়ায়ায়ায়া…আমি যানিনা।
“তুই কি যানিস ঈশান ভাইয়ের প্রচন্ড জ্বর.. কাল সন্ধ্যার পর থেকে পুরো শরীর কেঁপে জ্বর উঠেছে। রাসেল ডাক্তার নিয়ে এসেছিল কিন্তু ঈশান দরজা অফ করে দেয় তুই নাকি ফোন ধরছিস না যতক্ষন পর্যন্ত তুই ফোন না ধরছিস ততক্ষন পর্যন্ত ঈশান ভাই নাকি ডাক্তার দেখাবে না..!সকাল থেকে রাসেল তোকে ট্রাই করে যাচ্ছে এদিকে ঈশান দরজা খুলছে না। শুধু মাত্র একবার খুলেছে আবার অফ করে দিয়েছে..!
” ক…কি বলছিস তুই,ওহ সিট.. আমি ভুলেই গেসিলাম ঈশানের বৃষ্টির পানি সহ্য হয় না।আমি কি করে এতটা কান্ডজ্ঞানহীন হয়ে গেলাম।তুই রেডি হয়ে আয়। আমরা ঈশানের বাড়ি যাবো।
ঈশা চটজলদি মাথায় ওরনা পেচিয়ে হাতে পার্স আর মোবাইল নিয়ে রান্না ঘরের দিকে যায়।
“আম্মু আমি একটু বাইরে যাবো!
” কোথায় যাবি তুই, এই বৃষ্টির মাঝে(ভ্রু কুচকে সুলতানা।)
“মা আসলে দিহানের সাথে দেখা করতে যাবো!ও নাকি অসুস্থ..!
” ওহ আচ্ছা যা তবে তাড়াতাড়ি চলে আসিস।
“হুম।
ঈশা রাস্তায় বেরিয়ে অনুকে উদ্দেশ্য করে বলে,
” দিহানকে ফোন দিয়ে যানিয়ে দে আম্মু ফোন করলে যেন বলে আমরা তাদের বাসায়।
“হুম।
“ঈশান প্লিজ দরজা খোল। তুই যদি দরজা না খুলিস আমি আন্টিকে ফোন করে বলে দেবো!
” ঈ.সসস শা আয়ায়াসলে দরজা খুলবো তার আগে না(জ্বরে কাপতে কাপতে)
রাসেল বিরক্ত হয়ে দরজায় একটি ধাক্কা দেয়।কাল থেকে তার এই নাটক দেখে যাচ্ছে সে কি ভেবেছে কি ছেলেটা এমন করছে কেন.?
ঈশা দ্রুত সিড়ি দিয়ে উঠে রাসেলের সামনে দাড়ায়।
“রাসেল ভাইয়া..
” তুমি এসেছো ঈশা, তোমার ফোন বন্ধ কেন তুমি যানো কত বার তোমাকে ফোনে ট্রাই করেছি আমি(দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে)যাও পাগল টাকে সামলাও আমি বরং ডাক্তারকে কল করছি আসার জন্য।
ঈশা দরজার সামনে দাড়িয়ে করাঘাত করতে থাকে..
“গুন্ডা ঈশান আপনি শুনছেন..(সংশয় নিয়ে)ঈশান আপনি যদি দরজা না খুলেন আমি কিন্তু চলে যাবো..!
কোন রেসপন্স নেই।ঈশার বুকের ভেতরটায় কেউ যেন হাতুড়ি পেটা করছে। দরজা খুলছে কেন ঈশান.. সে কি সেন্সলেস হয়ে গেছে?
পেছনে তাকিয়ে দেখে অনু আর রাসেল নিচে চলে গেছে।ঈশা একাই ঈশানের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।শুষ্ক ঠোঁট দুটকে জিব দিয়ে একবার ভিজিয়ে আবারো দরজায় করাঘাত করে।
” ঈশান প্লিজ দরজা খুলুন,ঈশ……
ঈশাকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ঈশান ঝট করে দরজা খুলে ঈশার হাত টেনে রুমের ভেতরে ডুকিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। আর ঠাসস করে দরজাটা বন্ধ করে দেয়।
বিষয়টা চোখের পলকে হওয়ায় ঈশা কিছুটা ঘাবড়ে যায়।সে অনুভব করে উত্তপ্ত কোন মাংসপীন্ড তাকে জড়িয়ে ধরে আছে।ঈশানের অবস্থা দেখে ঈশা সম্পূর্ণ ভয় পেয়ে যায়।
“আপনার এই অবস্থা কেন?কি হলো কথা বলছেন না কেন?
ঈশান চোখ বন্ধ করে ঈশাকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
” আপনি কথা না বললে আমি কিন্তু এবার সত্যি সত্যি চলে যাবো।
ঈশার কথা শুনে ঈশান তাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। ঈশার যেন দম বন্ধ হয়ে যাবে।
“আরে ছাড়ুন আমার কষ্ট হচ্ছে প্লিজ..!
ঈশান চোখ তুলে ঈশার দিকে তাকায়।
” তুমি সত্যি চলে যাবে ঈশা(অস্পষ্ট কন্ঠে)
“না যাবো না আপনি আমায় ছাড়ুন।
ঈশান ঈশাকে ছেড়ে বিছানায় সুয়ে পরে।ঈশা কিছুক্ষন ঈশানের দিকে তাকিয়ে থাকে । চোখ মুখ লাল হয়ে কি করুন পরিস্থিতি ঈশানের।৷ এই মূহুর্তে অসুস্থতার কারনটা যে ঈশা নিজে.. তা বেশ ভালো করে যানে সে।
ঈশা ঈশানের পাশে চুপ চাপ বসে কপালে হাত দিয়ে আতৎকে উঠে।ঈশান ঈশার হাতটা টেনে নিজের হাতের মুঠোয় করে নেয়।
” আপনি ডাক্তার দেখাচ্ছেন না কেন?
“আমার ওষুধ তুমি ঈশা।তুমি থাকলে আর ডাক্তারের প্রয়োজন নেই।
” এখানে আমি রোমান্টিক কথা শুনতে আসিনি। সমস্যা কি আপনি কেন ডাক্তার দেখাতে দিলেন না। কাল থেকে এই অবস্থা যদি উলটা পালটা কিছু হয়ে যেতো তবে.?
“আমি তোমাকে কালকে থেকে ফোনে ট্রাই করছি কিন্তু পাচ্ছিলাম না।অনুর ফোনেও বেশ কয়েকবার ট্রাই করেছি কিন্তু তাকেও পাওয়া গেলো না। তাই রাগের মাথায় আর ডাক্তার কে রুমে ডুকতে বারন করেছি।
” আজব তো !আমরা ফোন না ধরলে আপনার ডাক্তার দেখাতে কি সমস্যা!(ভ্রু কুচকে)
“আমি চাই ঈশা দেখুক।ঈশা বিহনে ঈশানের জীবন কেমন যাচ্ছে!
” এই আপনি পাগল.?
“হুম তোমার জন্য।
” এই আমার কিন্তু আপনার এইসব কথা শুনতে একটু ও ভালো লাগছেনা।
“তোমাকে আমার কথা শুনতে হবেনা ঈশা। তুমি শুধু আমার পাশে এইভাবে বসে থাকবে আর আমি তোমার হাতটা এইভাবে জড়িয়ে রাখবো।
” হাত ছাড়ুন..! আমি রাসেল ভাইয়াকে ডাকবো!
“খবরদার আমার পাশে থেকে উঠলে ঠ্যাং ভেঙ্গে এখানেই বসিয়ে রাখবো।তুমি কি ভেবেছো অসুস্থ হয়েছি বলে কি আমি একদম আমার রাগ জেদ সব ভুলে গেছি কিচ্ছু ভুলিনি ঈশু আমি আগের মতোই আছি।
ঈশান আরো শক্ত করে ঈশার হাত টেনে ধরে ঈশা কাচুমাচু হয়ে মনে মনে বলে,
” কে বলেছিল এই লোকটার প্রপোজাল একসেপ্ট করতে এবার তো আমি নিজেই ফেঁসে গেছি।
“যাও দরজা খুলে দাও,রাসেল হয়তো ডাক্তার নিয়ে এসে পরবে।
ঈশা দ্রুত দরজা খুলে আবারো ঈশানের পাশে বসে।
কিছুক্ষন পর ডাক্তার আসলে ঈশা নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পরে।ঈশান আবারো চোখ গরম করে তাকালে ঈশা চুপ চাপ বসে থাকে আর ঈশান
ঈশার হাত আরেকটু শক্ত করে ধরে রাখে।
ডাক্তার ঈশান কে দেখে কিছুক্ষন পর ঈশার দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়।ঈশানের দিকে ভ্রু কুচকে বলে,
” উনি কে?উনাকে তো চিনলাম না মি.শাহরিয়ার(ঈশাকে উদ্দেশ্য করে)
” উনি মিসেস শাহরিয়ার (শান্ত কন্ঠে ঈশান)
ঈশানের কথা শুনে ঈশা আর অনুর দুজনের চোখ বড় হয়ে যায়।কি বলছে সে।ডাক্তার মুচকি হেসে ঈশানকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“লাভ ম্যারেজ নাকি?সত্যি, কি বিয়ে হয়েছে?
” আমি একাই ভালোবাসি ডাক্তার আংকেল আমাকে কেউ ভালোবাসেনা।(হতাশ কন্ঠে)।
বিয়ে হয়নি আমাদের তবে বলতে পারেন অর্ধেক বিয়ে হয়ে গেছে।(চোখ ইশারা করে ডাক্তারকে)
ডাক্তার ঈশানের কথা শুনে এবার আরো জোরে হেসে দেয়।গলা খাকিয়ে ঈশানকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“শেক্সপিয়র একটি কথা বলেছে ঈশান ” Love is merely madness!
নাইচ কাপল দোয়া রইলো তোমাদের জন্য। আশা করি খুব শীঘ্রই তোমাদের দুইহাত এক করে দেবে তোমাদের বাবা মা।
মিষ্টি করে হেসে ডাক্তার চলে যায় ডাক্তারের পেছন পেছন রাসেল ও যায়।অনু সোফায় বসে বলে,
” কি ঈশান ভাইয়া এবার খুশিতো তোমার ঈশাকে আমি নিয়ে এসেছি..!(ভাব নিয়ে)
“ওই কি ডাকছিস..! দুলাভাই ডাক.. বল, দু….লা…ভা..ইইই।
ঈশা ড্যাবড্যাব করে ঈশানের দিকে তাকিয়ে আছে কি বলছে এই ছেলে।যাস্ট প্রপোজাল টা একসেপ্ট করেছে তাতে কিনা এতো কিছু যদি বিয়ে করতো তবে কি করতে এই ছেলে, আল্লাহই ভালো যানে।
” ওকে দুলাভাইই। আপনার জন্য গরম গরম স্যুপ আনতে বলেছি ঈশা তুই দুলাভাইয়ের সেবা যত্নে ব্যস্ত থাক আমি আসি।
“হ্যা তুমিও প্রেমে লেগে যাও শালিকা অল দা বেস্ট?।(চোখ টিপে)
ঈশানের কথা শুনে অনু দাত কিড়মিড় করে বলে,
” জঘন্য আপনি!
“উচিত কথা বললেই দোষ (ঠোঁট উলটে)
অনু রুম থেকে বেরিয়ে যায় আর ঈশা হা করে তাদের কান্ড দেখছে।
বিকাল হয়ে এসেছে ঘুমন্ত ঈশানের পাশে বসে আছে ঈশা সেই সকাল থেকে।ডান হাতটা ঈশা শুরু থেকে যেভাবে শক্ত করে ধরেছে ঠিক এখনো সেই ভাবেই ধরে আছে।ঈশা ভাবছে পাগল ঈশানের কান্ড। ঈশান আড়মোড় কাটিয়ে ঘুম থেকে জেগে যায়।
” ওয়াইফি…..!(ঈশান)
“ঘুম ভাঙ্গলো তাহলে!এখন শরীর কেমন লাগছে আপনার?
” ওয়াইফি পাশে ছিল।খারাপ থাকার প্রশ্নই আসেনা।
“আপনাকে কাল, কে ভিজতে বলেছে এইভাবে, আপনার তো বৃষ্টির পানি সহ্যই হয় না!
” আমার ওয়াইফি ভিজেছে আমি ভিজবো না কেন?আর না ভিজলে তোমায় যে ভালোবাসি তা বলতাম কি করে?
“আমাকে ওয়াইফি ডাকছেন কেন শুধু তো প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়েছি তাতেই এতো, যদি ব্রেকাপ করে ফেলি তখন..?
ঈশান চট করেই ঈশার মাথার পেছনের চুল গুলো টেনে ধরে ঈশার মুখ একদম তার সামনে নিয়ে আসে।ঈশানের উত্তপ্ত শ্বাস ঈশার মুখে আচড়ে পরছে।
” খবরদার আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা মুখে আনলে খুন করে রাখবো, তুই আমার থাকবি শুধু আমার।
“যদি আমার পরিবার রাজি না হয়(চোখ বন্ধ করে)
” প্রয়োজনে তোকে তুলে নিয়ে যাবো লুকিয়ে রাখবো,না বাংলাদেশে রাখা যাবেনা সোজা দেশের বাইরে চলে যাবো। তবে আর আমাদের নাগাল আর কেউ পাবেনা(উত্তেজিত হয়ে)
“যদি আমার মৃত্যু আসে..(ঢোক গিলে)
” তবে সেইদিন ঈশান নিজেও শেষ হয়ে যাবে।
ঈশান কিছুক্ষন চুপ থেকে জোরে জোরে নিশ্বাস নেয়।ঈশার চুল ছেড়ে তার কোলে মাথা রেখে ঈশার হাত টেনে গম্ভীর কন্ঠে বলে,
“এইসব আর কোন দিন বলবেনা ঈশা..খবরদার না।তোমাকে আমি এমনি এমনি খুজে পাইনি।তোমাকে আমি যাস্ট একবার দেখেছি আমি যানতাম তোমরা ঢাকায় থাকো, কাউন্টারে খোজ নিয়ে যেনেছি কিন্তু তোমার নাম পরিচয় কিছুই যানতাম না তবুও তোমায় খুযে গেছি। আর হঠাৎ সেই তোমাকে পেয়েছি একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার মাধ্যেমে।আর তো আমি তোমাকে হারাতে পারবো না কিছুতেই না।
একটা কথা মনে রাখবে ঈশা এই ঈশান শাহরিয়ারের অনুভূতি গুলোকে কখনো সস্তা ভেবো না।
ঈশান আর কোন কথা না বলে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়।ঈশা সেখানেই স্তব্দ হয়ে বসে আছে কি বলার আছে তার?
” যাস্ট আর সহ্য হচ্ছে না আমার এইসব ন্যাকামো..!(ওয়াইনের বোতলে চুমুক দিয়ে নাজিম)
“তোর কি মনে হচ্ছে আমার সহ্য হচ্ছে যাস্ট বিরক্ত লাগছে এইসব।খেয়াল করেছিস ঈশান ইদানিং আমাদের সময় না দিয়ে কুকুরের মতো ওই মেয়ের পেছনে সময় ব্যয় করছে।এখন আর ক্লাবে আসছেনা। তিনি তার প্রিয়তমা কে নিয়েই ব্যস্ত।(দাত কিড়মিড় করে সাইফ)
” আরে দেখতে দে কি হয় আমরা তো আমাদের প্রতিশোধ নিয়েই ছাড়বো।আমাকে যে আঘাত ওই মেয়ে দিয়েছে তার শোধ না তুলতে পারলে আমার শান্তি নেই।
“চিন্তা করিস না দিন শেষে আমরাই সফল হবো।
দুজনে একসাথে একটি বিশ্রি হাসি হাসতে থাকে।আবারো নেশায় বুদ হয়ে যায় দুজনে একসাথে।
সময় চলছে সময়ের গতিতে কেটে আরো বেশ কয়েক মাস।এই কয়েকমাসে ভালোবাসায় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গেছে ঈশা ঈশান দুজনেই।রাসেল আর অনু তারা তাদের মতো করেই সময় কাটাচ্ছে।ঈশার পরিক্ষার আর বেশি দেরি নেই।সব মিলিয়ে তার কাছে আর একমাস সময় আছে। ঈশান তাই সিধান্ত নিয়েছে এই একমাস ঈশাকে ঈশান রেগুলার পড়াবে।অনুকে রাসেল।তাকে যে করেই হোক ঈশানের সাথে একই ভার্সিতে চান্স পেতেই হবে।তাই ঈশার অপেক্ষায় প্রায় আধা ঘন্টার ধরে তার নিজ বাড়িতে অপেক্ষা করছে ঈশান। কিন্তু ঈশা অনু কারোরি খবর নেই।
” কিরে রাসেল এই মেয়ে গুলো পরিক্ষায় পাশ করবে? আমার তো মনে হয় না?
“হুহ তুই ঠিক বলেছিস। পড়া লেখার ক্ষেত্রে তারা এতো উদাসীন বলার বাইরে।
” যাই হোক পিঠিয়ে ছাল তুলে ফেলবো যদি ভালো রেজাল্ট না করে।
কিছুক্ষন পর ঈশা অনু দুজনেই ঈশানের বাড়িতে ডুকে আর ঈশান আর রাসেল সুক্ষ্ণ দৃষ্টিতে বারান্দা থেকে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
ঈশান চুপচাপ স্টাডি রুমে ঈশাকে নিয়ে বসে আছে। তার পরের টেবিলেই অনু আর রাসেল।স্টাডি রুমটা বেশ বড়। রুমের চারদেয়ালে বিশাল বড় বড় বইয়ের তাক,।
“আজকে প্রথম দিন আজকে আমরা পড়বো না,তুই কি বলিস অনু?(ঈশা)
ঈশান ঈশার দিকে তাকিয়ে বলে,
” ঈশা এখানে প্রেম করতে আসিনি এখানে এসেছি তোমাদের পড়াতে সো বেশি উলটা পালটা কথা বললে একটা বেতের বারিও মাটিতে পড়বেনা।
“আপনি আমাকে মারবেন(অবাক হয়ে)
” না মারার কি আছে?আমি যেমন ভালোবাসতে পারি তেমন কষ্ট দিতে পারি তাই এইসব পাগলামো বন্ধ করো।
“আমি পড়বো না. (দাড়িয়ে)
ঈশার অবস্থা দেখে অনুর চোখ বড় হয়ে যায়।সে ঈশানের উপর কিভাবে এতটা তর্ক করে সে ভেবে পায় না।আর যাই হোক ঈশান রাসেল দুজনকে অতিমাত্রায় ভয় পায় অনু।দুজনে যে রেগে গেলে যে ক্ষেপা ষাড় হয়ে যায় তা বুঝতে আর বাকি নেই।
” রাসেল তুই বরং এখানে পড়া আমি মেডামকে আলাদা করে পড়া বুঝাবো..?(ঈশান)
“আরে না তুই থাক আমি অনুকে নিয়ে যাচ্ছি।অনু চলো…(অনুকে উদ্দেশ্য করে রাসেল)
” রাসেল যাওয়ার আগে চিকন বেত গুলো দিয়ে যা।
ঈশানের কথা শুনে ঈশার আর বুঝতে বাকি নেই ঈশান ক্ষেপেছে তাই সে মনে মনে সিধান্ত নেয় সে আর পড়তে আসবে না।এখানে পড়তে আসলেই বিপদ। পড়া লেখা ঈশার কাছে একদম ভাল্লাগেনা।
(গল্পটি লেখনীতেঃপলি আনান)
ঈশান বইয়ে পড়া খুজছে। কোন অংশ থেকে আজকে পড়ানো যায়।
এদিকে ঈশা দাঁড়িয়ে ছিল একটি বইয়ের তার্কের সামনে যখনি দেখলো ঈশান বইয়ের মাঝে মাথা গুজে দিয়েছে তখনি সে গুটি গুটি পা ফেলে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।
“খবরদার এই রুম থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করবে না তার ফল কিন্তু বেশি ভালো হবে না।(বইয়ের দিকে তাকিয়ে)
ঈশানকের কথা শুনেই ঈশা লাফিয়ে উঠে। বুকের মধ্যে থু থু দিয়ে বলে,
“আজব আমি রুম থেকে বের হবো কেন। আপনি শুধু শুধু আমায় সন্দেহ করছেন।
ঈশানকে চুপ থাকতে দেখে ঈশা আবারো বইয়ের তার্কের দিকে দৃষ্টি রাখে। আসতে আসতে এবার দরজার দিকটায় এগিয়ে যায় ঈশানের দিকে না তাকিয়েই। ঈশা দরজার নব ঘুরালেই তার ঘাড়ের দিকটাত উত্তপ্ত শ্বাসের আভাস পায়।সঙ্গে সঙ্গে পেছনে ঘুরে তাকালে ঈশানকে দেখতে পেয়ে দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে মুখে হাত দিয়ে রাখে।
” তুমি বলেছিলে পালাবে না তবে এখন পালাচ্ছিলে কেন(শান্ত কন্ঠে)
“……(নিশ্চুপ)……
” কি হলো কথা বের হচ্ছে না কেন এখন।
“….নিশ্চুপ….
ঈশাকে চুপ থাকতে দেখে
ঈশান ঝট করেই ঈশাকে কোলে তুলে নেয়।হঠাৎ এমন একটা বিষয়ে ঈশা থতমত খেয়ে যায়।
” আরে কি করছেন কি আমি।পড়ে যাবো..
“কি মনে হয় তোমার সত্যি পড়ে যাবে তুমি!
” অবশ্যই যাবো,আপনি রাগের মাথায় হয়তো আমায় কোলে তুলেছেন তারপর ঝট করে কোল থেকে ফেলে দিবেন তখন..(ভ্রু কুচকে)
ঈশান এবার সত্যি সত্যি তার হাতের বাধন আলগা করে দেয় ঈশা পড়ে যেতে নিলেই শক্ত করে ঈশানের শাটের কলার টেনে ধরে।
“আরে আমায় ফেলে দিচ্ছেন কেন?
” তুমি নিজেই বলেছো তোমাকে যেন আমি ফেলে দি..!
“দূর ভাল্লাগেনা আপনি আমায় একটু ও ভালোবাসেন না।
” কিহহহহ!আমি তোমায় ভালোবাসি না তুমি এই কথা বলতে পারলে?(ধমক দিয়ে)
“না বলার কি আছে ভালোবাসলে আমাকে এইভাবে সব সময় ধমক দিতেন না।সারাদিন এইভাবে পড়ালেখার জন্য বকাবকি করতেন না।শুধুই আদর করতেন (মিষ্টি করে হেসে)
” আমি তোমায় কখন শাসন করবো আর কখন আদর করবো তা কি আমার তোমার কাছে থেকে শিখতে হবে(ভ্রু কুচকে)
“অবশ্যই শিখবেন।আপনি যানেন না শেখার কোন বয়স নেই।
” বুঝেছি তোমার সাথে তর্ক করলে আমার বরং লস।
ঈশান ঈশাকে কোল থেকে নামিয়ে টেবিলের সামনেয় একটি চেয়ারে বসে পরে তার পাশের চেয়ারে টেনে ঈশাকে বসিয়ে দেয়।
“চুপ চাপ পড়া কমপ্লিট করো(গম্ভীর কন্ঠে)
” আমি পড়বো না এখন বাড়ি যাবো.বাবাকে বলবো ভালো ছেলে দেখে আমায় বিয়ে দিতে আমি আর পড়ালেখা করবো না আর আপনাকে তো বিয়ে জীবনেও করবো না.!
ঈশার কথাটি শেষ হতে দেরি হলো কিন্তু ঈশানের বেতের বারি ঈশার হাতে পরতে দেরি হলোনা।সঙ্গে সঙ্গে ঈশার ফর্সা হাতে লাল আভা ছড়িয়ে যায়।ঈশানের হুট করে কেন বা রেগে গেলো ঈশা বুঝতে পারেনা।বেতের বারিটি এতো জোরেই লেগেছে ঈশার চোখে সম্পূর্ণ পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।ঈশার চোখে পানি দেখেই এবার ঘাবড়ে যায় ঈশান কিন্তু শরীর এখনো তার রাগে কাপছে ইচ্ছে করছে আরো দুই ঘা বেত্রাঘাত করতে।
ঈশান ঈশার হাত টেনে ধরলে ঈশা একটানে তার হাত সরিয়ে নেয়।তারাতাড়ি বই পত্র গুছিয়ে বেগে পুরে সে দরজা খুলে চলে যেতে নেয়।ঈশান পেছন থেকে হাত টেনে ধরলে আবারো হাত ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দেয়।দ্রুত নিচে নেমে চলে যায়।
“ঈশু পাখি দাঁড়াও রাগ করেনা ঈশু। প্লিজ এই মেয়ে রাগ করেনা।
ঈশা তার মতো করে সিড়ি দিয়ে নেমে যায় ঈশানের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসে অনু আর রাসেল।ঈশাকে চলে যেতে দেখে অনু তার বই খাতা গুছিয়ে সে ঈশার পেছনে দৌড় লাগায়।ঈশান আর রাসেল দুজনেই হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে আছে।কি হলো বা কি হয়ে গেলো কিছুই তাদের মাথায় ডুকছে না।
#চলবে…….
?এইরে, ঈশা এবার ক্ষেপেছে, কি হবে এবার। ঈশাকি সত্যি সত্যি অন্য ছেলেকে বিয়ে করে নেবে।
আর ঈশান তার কি হবে…?
ঈশান কি করে ঈশার রাগ ভাঙ্গাবে…?
আজকের পর্বটা কেমন হলো যানাবেন….!?