You_are_mine season_2 Poly_Anan part_2

0
2820

You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_2

“বেয়াদপ মেয়ে তোর কারনে আজ আমি ফেসে গেছি।তোকে বাচাতে গিয়ে আমার দুই বছরের স্বাধীনতা বিলিন করে এলাম, তোকে মন চাইছে গলা টিপে মেরে ফেলি।

ঈশা রেগে কথাটি বলেই অনুর দিকে একটি বালিশ ছুড়ে মারে।অনু আবার সেটি ক্যাচ করে ঈশার দুহাত টেনে ধরে।
” বিশ্বাস কর বনু! আমি যানতাম না এটা ট্রেপ ছিল।যদি যানতাম নিজে বন্ধী না হতে উলটো তোকে বন্ধীদশা থেকে বাচাতাম।

ঈশা অনুর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে আবার হাত পা ছেড়ে অনুকে বকতে শুরু করে।

বাবা মুজাহিদ মা সুলতানার একমাত্র মেয়ে নওশীন ঈশা। দুই বেস্টি ঈশা অনু দুজনেই ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।ঈশাদের প্লাটের পাশের ইউনিটেই অনু থাকে। তাদের বন্ধুত্ব ক্লাস সিক্স থেকেই।তারা একে অপরের বিপদে সমান ভাবেই এগিয়ে আসে।

“অনু তুই ওই গোডাউনে পৌছলি কি করে।আর তুই কখনি বা গেছিস?(ভ্রু কুচকে)
” তোর নাম্বার থেকে সকাল নয়টায় আমার নাম্বারে মেসেজ আসে।সেখানে একটা ঠিকানা দেওয়া ছিল।আর লেখাছিল তাড়াতাড়ি যেন আমি যাই বাড়ির কাউকে যেন না যানাই ব্যস আমি ও নাচতে নাচতে গেলাম আর সেই সুযোগে আমাকে তুলে আনা হয়েছ(কাদো কাদো সুরে)

“তার মানে এরা আগে থেকেই আমাদের ফলো করছিল।কত্তো বড় বেয়াদপ দেখেছিস যে অন্যয় করেছে তাকে শাস্তি না দিয়ে উলটো আমাকে শাস্তি দিলো!
” দেখ ঈশা যা হয় ভালোর জন্যই হয়! হয়তো তোকে শাস্তি দিয়েছে ভালোই হয়েছে।
“কি?তুই কি বললি?এটা আমার সাথে ভালোর জন্য হয়েছে। তুই পাগল হয়ে গেছিস।আমাকে ওই সাদা ভাল্লুক টার কাছে ফাঁসিয়ে তোর বিষয়টা ভালো লাগছে বের হ বের হ আমার রুম থেকে।

ঈশা ধাক্কা দিয়ে অনুকে রুম থেকে বের করে দেয় তারপর মুখে হাতদিয়ে দরজার সাথে ঠেস দিয়ে কাদঁতে শুরু করে।

ঈশান আজ খুব খুশি।অপেক্ষার সমাপ্তি শেষে আজ তার প্রাপ্তি। রাসেল অনেকক্ষন থেকে ঈশানের কান্ডে বিরক্ত। এই ছেলের মাথায় কি চলে সে বুঝেনা।

বাবা আবিদ এবং মা মাহমুদার একমাত্র ছেলে ঈশান শাহরিয়ার।ঈশানের বয়স যখন দুই বছর তখন বাংলাদেশ ছেড়ে ঈশানের বাবা পাড়ি দেয় ইউএসএ।সেখানে নিজের ব্যবসা দাড় করিয়ে তিনি এখন রমরমা।প্রায় তিন বছর আগে ঈশান একবার বিডিতে ঘুরতে আসে।তার ঠিক একবছর হতে না হতেই সে বিডিতে নিজের এবং বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করবে বলে স্থায়ী ভাবে দেশে থাকতে শুরু করে।ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে আবারো পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়।তার বাবা ঈশানের কান্ডে অতন্ত বিরক্ত।সবাই পড়া লেখার জন্য দেশের বাইরে আসে কিংবা আসতে আগ্রহ দেখায়।আর ঈশান কি না বাংলাদেশে এসেছে অদ্ভুদ!

মা বাবার বাইরে ঈশানের সবচেয়ে কাছের ব্যাক্তিটি হলো রাসেল।ছোট থেকেই দুজনে একসাথে বড় হয়েছে।এক জনের আরেক জন ছাড়া দিন কাটেনা বললেই চলে।তাই ঈশানের সাথে সে নিজেও বিডিতে এসেছে।সাইফ আর নাজিম ছিল ঈশানের ফেসবুক ফ্রেন্ড।বিডিতে আসার আগে থেকেই তাদের সাথে পরিচিত।বিডিতে আসার পর থেকেই তাদের সাথে চলা ফেরা শুরু হয়।সবাই একই ভার্সিটিতে পরে তাই তাদের সব কিছু একসাথেই।

দেশে এসেই ঈশান একটি গ্যাং তৈরি করে নিয়েছে। দেশের বড় বড়, সন্ত্রাস নেতা,এছাড়াও দেশে বাইরে মাফিয়াদের সাথে ঈশানের উঠা বসা।কিন্তু এইসব কীর্তিকলাপ তার পরিবারের কেউ যানে না।

“ঈশান তোর কি হয়েছে বলবি আমাকে!
” কেন আমার কি হবে(ভ্রু কুচকে)
“দেখ তুই তখন বললি ওই মেয়ের তোর…
কথা শেষ করার আগেই ঈশান বলে,
“, এতো কিছু যানার দরকার নেই তোর ছোট মাথায় এইসব ডুকবেনা তুই শুধু যেনে রাখ সে তোর হবু ভাবী!
“কি?(চিল্লিয়ে)
” জ্বি!☺️(মিষ্টি করে হেসে)

রাসেল কিছু বলার আগেই ঈশান আবার বলে,
“নাজিমকে যে আনতে বলেছি সে কই?
” শালা পালিয়েছে। সাইফ যানতে পেরেছে কোথায় আছে তাই সে গেছে তাকে ধরে আনতে!
“গুড।শুন আগামী দুই ঘন্টার ভেতর ঈশার সকল ডিটেলস আমার চাই।সাথে তার বন্ধুদেরো!
” ওকে (মাথা নেড়ে)

….
নাজিম দাঁড়িয়ে আছে ঈশানের সামনে।ভয়ে তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।ঈশান রেগে গেলে যে খেপা ষাড় হয়ে যায় তা সে ভালো করেই যানে। নাজিমের ভাবনা আর ধারনা গুলোতে এক বালতি জল ঢেলে দিয়ে ঈশান তাকে জড়িয়ে ধরে আর হাসতে থাকে।ঈশানের হাসি দেখে সবাই অবাক হলেও নাজিমও বোকার মতো হাসতে থাকে।

“তুই কি ভেবেছিলি আমি তোকে মারবো?
” হ..হ্যা। (ঘাবড়ে)
“আমি তোকে সত্যি মারতাম যদি আজ ঈশাকে না পেতাম!
” মানে?

“মানে খুব সহজ আমি বলেছিলাম যে তোর মাথা ফাটিয়েছে সেই মেয়েকে ধরে আনতে তার শাস্তি আমি নিজের হাতে দেবো।কিন্তু রুমে গিয়ে দেখি এই মেয়ে সেই মেয়ে যাকে আমি চাই।ঈশাকে শাস্তি দেওয়াতো দূরের কথা উলটো তার দিকে যে তাকাবে তার চোখ উলটে রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।(শেষ কথাটি বেশ রাগ নিয়ে বলে ঈশান)।আর ঈশা তোর শাস্তি এমনিতেই দিয়ে দিয়েছে তাই আমি আর নতুন করে দেওয়ার দরকার নেই।

” তাহলে ওই মেয়েকে তুই শাস্তি দিলি কেন ২ বছরের? (অবাক হয়ে সাইফ)

” দূর এটা শাস্তি না, এটা ঈশাকে আটকে রাখার একটা ট্রেপ ছিল। আমি যানতাম একবার ছাড়া পেলে ওকে আমার কাছে রাখতে হিমশীম খেতে হবে।তাই দুই বছরের অগ্রীম ব্যবস্থা করে নিয়েছি।পাখি আমার খাচাঁয় বন্ধী।আগামী দুই বছর পাখিকে আমার মতো করে শিখিয়ে পড়িয়ে নেবো!

” মানে কি ঈশান তুই রিলেশনে যাবি না,তাহলে (অবাক হয়ে রাসেল)
“দূর পাগল নাকি আমি এখন ঈশাকে বুঝতে দেবো না, যে আমি তাকে ভালোবাসি। সবে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার পড়ে বাচ্চা মেয়ে।পড়াশোনা চালিয়ে যাক! আর আমি তাকে তার অভিভাবকের মতো গাইড দেবো!

” ওহ তুই যে ভালোবাসিস তা যানাবি না ভাবীকে(নাজিম)
“পাগল নাকি মেয়েদের যদি ভালোবাসি কথাটা একবার বলি তখন তারা তাদের ভাব ১০০%করে ছাড়ে।এমন একটা কাহিনী করবে প্রেম টেম তারা করে না, ইহার মতো তুচ্ছ আর ইহকালে নেই।সব ডাফারের দল।(রেগে)
তাই আগে থেকেই প্রতিটা স্টেপে স্টেপে মেপে মেপে প্রেম করবো বুঝলি। কিন্তু মিস ঈশা জানবেনা।!

ঈশানের কথায় সবাই হাসতে শুরু করে।
” তাহলে আজ পার্টি হয়ে যাক ব্রো(সাইফ)
“অবশ্যই হবে.. যা তোরা তোদের মতো করে এরেঞ্জ কর। আমি বরং ঈশাকে নিয়ে একটু গবেষনা করি।!

অনুর আজ ভিষন কান্না পাচ্ছে ঈশা সেই দুপুরে দরজা লাগিয়েছে আর খুলেনি।এখন বিকেল সাড়ে চারটা। এই সময়টায় ঈশা আর সে মিলে ছাদে আড্ডা দেয় কিন্তু আজ নিজেকে একা একা লাগছে। হঠাৎ অনুর কাছে তাদের বন্ধু দিহান ফোন করে।দিহান তাদের সাথেই পড়ে।দিহানের সাথে পরিচয় ক্লাস নাইন থেকে.।

” হ্যা দিহু বল!
“তোর কন্ঠা এমন লাগছে কেন?
” না কিছু না। কি বলবি বল!
“আমি তোদের ফ্লাটের দিকে খোলা মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে আছি এক্ষুনি আয়।
” না এখন পারবো না। ভাল্লাগছেনা ঈশা রাগ করে আছে আমার সাথে।
“ঈশাকে লাগবেনা তোকে লাগবে তুই আয়।
” আচ্ছা ওয়েট আমি আসছি!

দিহান কল কেটে পাশে থাকা দুইটি ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে,
“ভাইয়া অনুকে আসতে বলেছি!
” গুড বয়!আমরা তাহলে আড়াল হচ্ছি তুমি অপেক্ষায় থাকো(ঈশান)
দিহান মাথা নেড়ে সায় দেয়।

অনু দিহানের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
“ওই তুই আমারে কেন ডাকসত তাড়াতাড়ি বল!
” আসলে ঈশার তো দুইদিন পর জন্মদিন এবার আমরা কি সারপ্রাইজ প্লান করবো?
“রাতে ভেবে দেখবো!

” তোমাকে ভাবতে হবেনা সুইটি শা….আইমিন অনু।এইসব ভাবার জন্য ঈশান শাহরিয়ার তো আছেই!

পেছন থেকে কারো কথা শুনে অনু গাড় বাকায় কিন্তু যখনি ঈশান আর রাসেলকে দেখে সে ছুটে পালিয়ে যায় কিছু দূর যাওয়ার পর দুইজন গাড এসে অনুর রাস্তা আটকে দেয়।অনু আবারো করুন চোখে ঈশানের দিকে তাকালে ঈশান বলে,

“চালাকি করে লাভ নেই চলে এসো!আমি যে কি তা তোমরা তিন বন্ধু আজ, মাত্র এক বিন্দু প্রমান পেলে।সামনে আরো পাবে যাস্ট ওয়েট করো।

অনু উপায়ন্তর না পেয়ে দিহানের পাশে দাড়ায়।
” পালাচ্ছিলে কেন?(ভ্রু কুচকে ঈশান)
“যদি আবারো তুলে নিয়ে যায় আপনার লোক?
” নাহ নিবেনা। চিন্তা করোনা।তবে নেবে যদি আমার কথা না শুনো!
“কি কথা (চোখ বড় করে)

ঈশান দিহান আর অনুর মাঝে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়। অনু ঈশানের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বলে,

” আপনি ঈশার সাথে এমনটা করছেন কেন? আমার তো মনে হয় আপনি ঈশাকে পছন্দ করেন!কি আমি ঠিক বলেছি?

“ওহ মাই ডিয়ার শালিকা তোমার মাথা তো হেভি ফাস্ট এতো সহজেই বুঝে নিলে।
” তার মানে সত্যি??
“ইয়েস, তবে তুমি কিছু ঈশাকে জানাতে পারবেনা।
“কিন্তু কেন?ঈশাকে যদি এইসব না জানানো হয় তবে আমাদের বন্ধুত্বে বেইমানি হবে(রেগে)

” আমি তোমার ধারনায় সম্মান করি।সত্যি বন্ধুত্বে বেইমানি হবে যদি ঈশা না যানে।আর তোমাকে দিয়ে তো আমি ঈশার কোন ক্ষতি করাবো না।বা ঈশার কোন গোপন তথ্য তোমার কাছে চাইবো না! আমি সম্পর্ক গুলোকে সম্মান করি, সেই বন্ধুত্বে হোক বা অন্যকিছু। একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে যতটা সহজ ঠিক ততটাই কঠিন।যদি মুখে হাসি নিয়ে অন্তরে বিষ থাকে তবে সম্পর্ক বেশি দূর যায় না। তাই প্রত্যাকটা সম্পর্কে সলিড থাকা প্রয়োজন। আর যার উপর তোমার রাগ থাকবে তার সাথে কথা কমিয়ে তার কাছ থেকে সরে আসাই ভালো।কারন কারো ক্ষতির জন্য প্রার্থনা একদমি উচিত নয়।
কি ঠিক বলেছি শালিক পাখি?

“হুম।কিন্তু আমি আপনাকে সাহায্য করছি ঈশা যানলে….(চিন্তিত হয়ে)
” কথা দিলাম কিচ্ছু যানবেনা। আর তোমার বেস্টুকে আমি অসুখী করবো না যাস্ট একটু জালাবো এই আর কি। শালাবাবু আশা করি আপনার মুখ থেকেও কোন কথা বের হবে না(দিহানকে উদ্দেশ্য করে)
“ন..না ভাইয়া৷ (থতমত খেয়ে)
” গুড। তোমরা বাড়ি যাও সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।

ঈশা রুম থেকে বের হলো সন্ধ্যায় তার চোখ মুখ ফুলে গেছে। চোখে মুখে গম্ভীর ভাব যে কেউ দেখলে বুঝবে ঈশা এতোক্ষন কেদেঁ ঘুমিয়ে গেছে।

এদিকে ঈশান ভিষন ব্যস্ত তার ঈশাকে নিয়ে।আগামী একমাসের প্লানিং করছে সে।ঈশার জন্য আলাদা ভাবে গাড রাখা হয়েছে কেউ বাড়ির আশে পাশে কেউ কলেজে যাওয়ার সময় কেউ বা কলেজ মাঠে ঘুরঘুর করবে।

সকালে কলেজের জন্য তৈরি হয়ে ঈশা আর অনু দুজনেই বেরিয়ে পরে।কালকের বিষয়টা ঈশার মনে দাগ কেটে গেছে সে একদম চুপ চাপ গম্ভীর হয়ে গেছে।অনু তাকে হাসানোর জন্য অনেকক্ষন থেকে এটা সেটা বলছে কিন্তু ঈশার মুখে হাসি নেই।হুট করেই অনু বলে,

“ঈশা আজ সাইফুল স্যারের ক্লাস আছে মনে আছে তোর!

কথাটি শুনেই ঈশার মনে লাড্ডু ফুটতে শুরু করে।সাইফুল স্যার হলেন ঈশার ক্রাশ তিনি ঈশাদের কলেজের আইসিটি স্যার।ঈশার সাথে তার বেশ ভাব।স্যার ও ঈশার সাথে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করে।তাই ঈশাকে অনেকেই শত্রু ভাবে কারন তাদেরো ক্রাশ সাইফুল স্যার।

” ও হ্যা আমি তো ভুলেই গেছিলাম আজকের পড়া টাও শিখলামনা দূর।
“চিন্তা করিস না। স্যার তোকে এমনিতেই মাফ করে দেবে!
” হ্যা ভালো এবার চল।
(গল্পটি লেখনীতেঃপলি আনান)

কলেজে সাইফুল স্যারের অপেক্ষায় আছে ঈশা।কখন আসবে তার প্রিয় ক্রাশের মুখ খানা দেখবে। আজ তার কলেজে ভালো লাগছেনা যদি সাইফুল স্যারের ক্লাস না থাকতো তবে আগেই অনুকে নিয়ে পালিয়ে আড্ডা দিতে যেত।দিহান আবার একটু হ্যাবলা স্বভাবের। কোন দিন ক্লাস ফাকি দেয় না। নিয়মিত ক্লাসে পড়া শিখে আসে ঈশা আর অনু ছাড়া তার অবশ্য কোন বন্ধু নেই তাই ঈশা তাকে হাবলু বলেই ডাকে।
হুট করে ক্লাসে দপ্তরি এসে বলে,

“নওশীন ঈশা কে!প্রিন্সিপাল স্যার তার রুমে তোমায় ডেকেছে!
ঈশা চট করেই দাঁড়িয়ে যায়।সে অবাক হয়ে দপ্তরির দিকে তাকিয়ে আছে। প্রিন্সিপাল স্যার তাকে কেন ডাকবে। ভয়ে বুকের ভেতর ধুক ধুক করছে।ক্লাসের মেম তাকে বলে,

” কি হলো ঈশা যাও! স্যার কিন্তু রাগী মানুষ দেরি হলে তুমি নিজেই বকা খাবে।

ঈশা দ্রুত পা চালিয়ে প্রিন্সিপালের রুমের সামনে যায়।
“May I coming, sir?
” yes, coming!
ঈশার দুই পা কাপছে। এক হাতের সাহায্য অন্য হাতের আঙ্গুল চুলকাচ্ছে।
ঈশা খেয়াল করে প্রিন্সিপাল স্যারের সামনে একটি ছেলে বসে আছে। তার পরনে নীল রঙের একটি ব্লেজার।ঈশা পেছন থেকে বুঝতে পারছেনা লোকটা কে!

প্রিন্সিপাল ঈশাকে উদ্দেশ্য করে সামনে থাকা ছেলেটিকে বলে,
“দেখুনতো দ্বাদশ শ্রেণীর এই ঈশার কথাই কি আপনি বলছিলেন।

প্রিন্সিপালের কথা ছেলেটি ঘুরে তাকায় ঈশার দিকে।ছেলেটিকে দেখেই ঈশা দুই পা পিছিয়ে যায়।কেননা ছেলেটি ঈশান।ঈশান ঈশার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে একটা হাসি দেয়?।

” জ্বি স্যার! ওর কথাই বলছিলাম।যা বলেছি স্যার একটু দেখে রাখবেন এই আর কি। পড়া শোনাতো করেই না একদম ফাকিঁবাজ।এখন ভরসা আপনারাই। দরকার পরলে কোন অভিযোগ থাকলে আমায় নক করবেন।

“ঈশাকে নিয়ে আমাদের এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসে নাই।সে খুব ভালো ছাত্রী। তারপরেও আমি সকল স্যার মেমদের বলে দিচ্ছি ওর খেয়াল রাখতে। তার থেকে যেন প্রতিদিনের ক্লাসের পড়া আদায় করে নেয়।আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন মি.ঈশান শাহরিয়ার।

” গুড স্যার।আজ আসি তাহলে ভালো থাকবেন।
ঈশান ঈশার দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে যায় তার মুখে লেগে আছে এক রহস্য ঘেরা হাসি।ঈশা দাতে দাত চেপে সহ্য করছে সবটা।ঈশা প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে রুম থেকে বের হলে ঈশানকে দেখতে পায়।
সে না দেখার ভাব করে সোজা হাটতে শুরু করে কিন্তু তার আগেই ঈশান তার নাম ধরে ডাক দেয়।

“মিস ঈশা!
ঈশা পেছনে ঘুরে তাকায়।
ঈশান ঈশার সামনে দাঁড়িয়ে কানের সামনে মুখ নিয়ে বলে,
” তিন তলার ডান পাশের কোনার রুমটায় যাও!আমি আসছি!
“পারবোনা(দাতে দাত চেপে)
” পারতে হবে ইট’স মাই অর্ডার !
“মানবো না আপনার অর্ডার!(রেগে)
” কালকের কথা কি ভুলে গেছো?(ভ্রু কুচকে)

ঈশা ঈশানের দিকে একবার তাকিয়ে উপরে সিড়ির দিকে হাটা ধরে।কিছুক্ষন পর ঈশান নিজেও সিড়ির দিকে যায়।

ঈশা দেয়ালের সাথে ঠেসে দাঁড়িয়ে ঈশানকে মনে মনে বকে যাচ্ছে।ঈশান দরজা দিয়ে ঢুকেই ঈশার সামনে দাঁড়িয়ে একটি হাসি দেয়।
এই হাসি দেখলে যেখানে মেয়েরা শতবার ফিদা হয় কিন্তু ঈশার কাছে এই হাসি একটা শয়তানের হাসির মতো লাগে।

“তা মিস ঈশা দিন কাল কেমন যাচ্ছে?
” কেন ডেকেছেন আমায় তাড়াতাড়ি বলুন?
“উপ্সসসস..! প্রিয় স্যারের ক্লাস বুঝি দেরি হয়ে যাচ্ছে নাকি?
ঈশা ভ্রু কুচকে ঈশানের দিকে তাকায় এই লোকটা জানলো কি করে?
ঈশাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ঈশান বলে,
” আচ্ছা যাও মন দিয়ে পড়াশোনা করো কেমন।
ঈশা কোন কথা না বলে চলে যায় আর এদিকে ঈশান দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে মনে মনে বলে,

“তোমার খোজ লাগাতে আমি তোমার ক্লাসে তিনজন মেয়ে লাগিয়েছি ঈশা।তুমি বুঝবেও না। অনু আর দিহানের উপর বিশ্বাস নেই। তাদের দিয়ে তোমার খোজ লাগানো সবচেয়ে বোকামি।কারন তারা বন্ধুত্বে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা বদ্ধ।

ঈশা মাথা গরম করে ক্লাসে ডুকে। অনু আর দিহান তাকে একের পর এক প্রশ্ন করে যায় কিন্তু ঈশা কোন উওর দেয় না।কিছুক্ষণ পর ক্লাসে অন্য একজন স্যার প্রবেশ করে।তিনিও আইসিটি স্যার তবে এই সময়টাতে সাইফুল স্যার আসার কথা ছিল।
মধ্যে বয়স্ক স্যারটি ক্লাসে ডুকতেই এমন একটি কথা ছুড়ে দেয় সবার মাঝে যা শুনে ঈশা সহ সবাই রেগে যায়।
” আজ থেকে তোমাদের এই ক্লাসটা আমি করাবো সাইফুল স্যারকে অন্য গ্রুপে দেওয়া হয়েছে।

সবার প্রিয় সাইফুল স্যার আর তাদের ক্লাস করাবেনা এটা নিয়ে সবার মাঝেই গুঞ্জন সৃষ্টি হয়।তবে বিষয়টি বুঝতে পারে ঈশা।
“যেদিন থেকে এই লোকটা লাইফে এন্ট্রি নিয়েছে সেই দিন থেকেই আমার অবস্থা লে হালুয়া করে দিচ্ছি।বেটা ইতর লোক(মনে মনে ঈশা)

কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে দিহান আর অনুকে সবটা খুলে বলে ঈশা।ঈশার কথা শুনে দুজনে দুঃখ প্রকাশ করলেও দিহান আর অনু মিটিমিটি হাসতে থাকে।

রাত একটা ঈশার চোখে ঘুম নেই মেসেঞ্জারে কলেজের সব বন্ধুরা মিলে গ্রুপ চ্যাটিং এ ব্যস্ত।হুট করেই ঈশার একটি মেসেজ রিকুয়েস্ট আসে।সেখানে লেখা,

“এতো রাতে অনলাইনে! আইডি হারাতে না চাইলে চুপচাপ ঘুমাও।

মেসেজটি পড়েই ঈশার চোখ রসগোল্লা হয়ে যায়।এটা যে একটা হুমকি তা বুঝতে বাকি নেই ঈশার।
আইডির নাম লেখা,” ঈশান শাহরিয়ার”
ঈশা রিপ্লাই করে,

“? আইডি কি তোর বাপের। যে আইডি নিয়ে টানাটানি করিস!

ঈশার উওর দেখে ঈশানের মেজাজ বিগড়ে যায়।এতো বড় কথা ঈশা কি করে বললো।
” বোকা মেয়ে আমার বাপ যে তোমার শশুর।
দাতে দাত চেপে কথাটি বলে ঈশান রিপ্লাই করে।

“আইডি আমার বাপের নাকি তোমার শশুরের সেটা কাল বুঝতে পারবে গুড নাইট..! ?।

ঈশা বিরক্ত হয়ে পাশে ফোন রেখে ঘুমিয়ে পরে।এই লোকটার অত্যাচার সে আর নিতে পারছে না জঘন্য একটা মানুষ।

সকালে আজ বেশ দেরি করেই ঘুম থেকে উঠেছে ঈশা।শুক্র বারে বেলা এগারোটার আগে তাকে পাওয়া যায় না।এদিকে ঈশার মায়ের বকাবকির শেষ নেই এতো বেলা করে কিসের ঘুম। ঈশা দ্রুত উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে আবারো রুমে আসে।বালিশের পাশ থেকে মোবাইল নিয়ে বিছানায় বসে পরে।

লক খুলে ঈশা ফেসবুকে ডুকলে যা দেখে তার জন্য সে মোটেই প্রস্তুত ছিল না।রাগে সারা শরীর তার কাপছে।হুট করেই রুমে ডুকে ঈশার মা ঈশার দিকে তাকিয়ে তিনি বুঝতে পারেন আজ বাড়িতে নিশ্চই ছোট খাটো একটি তুফান বয়ে যাবে।তিনি দ্রুত ঈশার বাবাকে ডাকতে পা চালায়…….।
#চলবে…….

ঈশা আইডিতে কি দেখেছিল? আপনাদের কি মনে হয়?

?পর্বটা কেমন হলো যানাবেন….!

?হ্যাপি রিডিং..!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here