You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_19
বাংলাদেশের ঢাকা শহরটা ঈশানের অপরিচিত নয়। অলি গলি গুলো বেশ ভালো করেই চিনে সে।রাসেলের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিডিতে অবশেষে রাসেল নিজেও পা রাখে।যখন প্লেন থেকে নেমে এয়ারপোর্টের দিকে যাচ্ছিল তখন রাসেলের বুকের ভেতরটায় কে যেন ড্রাম বাজাচ্ছে।এই শহরটায় তার ভালোবাসার সূচনা ঘটে আবার এই শরটাতেই সব কিছুর সমাপ্তি। সে আর ফিরে আসতে চায় নি তার জীবনের মোড় ঘুরানো এই শহরটার কাছে। তবুও পাগল বন্ধুটার
জেদের কাছে হার মেনে সে আবারো ফিরে আসে।
রাসেলের কাছে ,
“এই শহরটা ছিল ভালোবাসার, এই শহরটারটা এখন মিথ্যা আশার..!
ঈশানকে এয়ারপোর্টের বাইরেই অপেক্ষা করতে দেখে সে ছুটে আগে ঈশানকে জড়িয়ে ধরে ।
” থ্যাংস গড। তোকে আবার ফিরে পেয়েছি(ঢোক গিলে)
” এই শহরে এখন কেমন ফিলিংস হচ্ছে তোর।(তাছিল্য হেসে ঈশান)
রাসেল ঢোক গিলে ঈশানের দিকে তাকায়।কি করে বোঝাবে সে তার বুকের ভেতটায় সব দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।ঈশান বুঝতে পেরে রাসেলকে আবারো জড়িয়ে নেয়।
” এই শহরে এখন তুই আমার আমি তোর!চল..!
“হুম।
ঈশান আর রাসেল ফিরে আসে আগের বাড়িতে। সব কিছু ঠিক আগের মতোই আছে কোন কিছু পরির্বতন হয়নি। সেই সিকিউরিটি আংকেল কে জড়িয়ে ধরে কেদেঁ উঠে ঈশান।সেইদিন যদি ঈশাকে আর তাকে গ্রামের বাড়িটায় আশ্রয় না দেওয়া হতো তবে যাওয়ার মতো জায়গা তাদের ছিল না।ঈশান সিধান্ত নেয় সেই গ্রামের বাড়িটা কিনে নেবে সেই বাড়িটা ঠিক ঠাক দেখা শোনার জন্য একজন সিকিউরিটি নিয়োগ দেবে।ঈশার সাথে কাটানো শেষ মধুময় স্মৃতি ছিল সেই বাড়িটায়।তাই যেকোন মূল্যে সে বাড়িটাকে হারাতে চায় না ঈশান।
ঈশান নিজের বাড়িতে ডুকেই ধীর গতিতে আসতে আসতে ঈশার নিজের হাতে সাজানো সেই রুমটায় পা বাড়ায়। ঈশা যেমনটা সাজিয়েছে ঠিক তেমনটায়, পিংক কালারের চাদর, পর্দা,ঈশানের বুকটার ভেতর মূহুর্তেই মোচর দিয়ে উঠে। সব ঠিল ঠাক থাকলে এতো দিনে তারা সংসার করতো।
কিন্তু আজ সব ছন্ন ছাড়া।রাসেল ঈশানের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে।তার নিজের সাথে যেন নিযে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। পুরোনো স্মৃতিরা তার মন মস্তিষ্কে আঘাত করছে নিজেকে সামলাতে পারছেনা।
হুট করেই তার চোখে পরে ঈশান হাটু মুড়ে ডুকরে কাদছে।ঈশানের কান্না দেখে রাসেল তার পাশে বসে,
” ভাই তুই পাগল হয়ে গেছিস কাদঁছিস কেন?
“এ.এএই রুমটা আমার ঈশা আমাদের জন্য সাজিয়েছে আমরা সংসার করবো বলে!কিন্তু, কিন্তু কি হয়ে গেলো আমাদের সব আশা ভরসা, সপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে আমি কেন বেচেঁ আছি বলতে পারিস আমি তো মরে যাওয়ার কথা।
” আমি এই জন্য তোকে বলেছি বিডিতে আসার দরকার নেই কিন্তু তুই তো শুনিস না তুই কেন আসলি? আর এখন পাগলামি করছিস কেন?
“তুই এতটা পাষাণ কবে থেকে হলি রাসেল।তোর কি অনুর কথা একবারেও মনে পড়ছেনা।আরে ভালোবাসতি তুই ওকে!
ঈশানের কথা শুনে শব্দ করে হাসতে শুরু করে রাসেল।হাসতে হাসতে হাটু মুড়ে বসে কাদতে থাকে। এবার সে নিজেও ডুকরে কাদছে যেন বাচ্চা ছেলে খেলনা হারিয়ে ফেলেছে।
“ত.তুই বলছিস আমি পাষাণ! হ্যা আমি পাষাণ তোকে ভালো রাখতে আমি পাষাণ! যার সাথে আমার সংসার করার কথা ছিল সে আজ অন্যর সংসার সাজাতে ব্যস্ত। যে মেয়ে আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমবে সে এখন অন্যর বুকে মাথা রেখে ঘুমায়,তোর কি ধারনা এইসব মনে পরলে আমার মাথা ঠিক থাকে?আমার মাথা ঠিক থাকেনা?আমি পাগল হয়ে যাই ভেঙ্গে চুড়ে গুড়িয়ে যাই। তবুও আবার নিজেকে শক্ত করে তুলি ভাঙ্গা কাচেঁর হৃদয়টাকে জোড়া লাগানোর অভিনয় করি! কারন তোর জন্য। যদি আমি ভেঙ্গে পড়ি তবে তোকে সামলাবে কে? তুই তো আমার থেকেও বড় পাগল।যে ঈশান শাহরিয়ারের দিকে তাকিয়ে মেয়েরা দফায় দফায় প্রেমে পরতো সেই ঈশান শাহরিয়ারের মুখের দিকে এখন আর তাকানোর অবস্থা নেই নেশা খোরের মতো লাগে তোকে। আমি আবারো তোকে আগের মতো গড়ে তুলতে চাই তাই আমি পাষাণ হয়েছি।আমি চাইলেই সেদিন অনুর হাত ধরে বলতে পারতাম আমি তোমায় ভালোবাসি আর বিয়ে তোমাকেই করবো কিন্তু কেন বলিনি যানিস? কারন আমার কাছে তখন ভালোবাসার চেয়ে দায়িত্ব বড় ছিল তোর দায়িত্ব।তোকে বাচাঁতে আমি পাষাণ হয়েছি! (চোখের পানি মুছে)
ঈশান রাসেলকে আবারো ঝাপটে ধরে কাদতে শুরু করে।
” তোর মতো বন্ধু পেলে আর কি লাগে বল!আমি যানি আমার মা বাবার থেকেও সাপোর্ট তুই আমাকে বেশি করিস।কিন্তু আমি সারাজীবন একটা অপরাধীর ট্যাগ লাগিয়ে ফেললাম তোর ভালোবাসা টা আমার কারনেই হেরে গেছে।(কেদেঁ)
“আমার জীবনে ভালোবাসা টা তোর জন্যই এসেছে ঈশান..!বন্ধুকে ভালোবাসা আর নিজের অর্ধাঙ্গিনীকে ভালোবাসা এক নয়। তারা তাদের দিক থেকে তাদের মতো করে ভালোবাসা পায় আর বন্ধুরা পায় বন্ধুদের মতো।ক্ষনিকের জীবনে চলতে আমাদের দুজকেই প্রয়োজন।
ঈশান আরো শক্ত করে ঝাপটে ধরে রাসেল কে। ছেলেটাকে আজ ভীষণ অভিভাবকের মতো লাগছে তার কাছে।
স্কুলের ক্লাস গুলো শেষ করেই বাড়িতে ডুকে ইরা।তাকে দেখেই এগিয়ে আসে বাড়ির মালিকের ছেলে জারিফ।
” আরে ইরা এসে পরেছো? মা তোমায় খুজছে!
“আন্টি আমায় হঠাৎ খুজলেন! কোন দরকার আছে?
” হ্যা তুমি তো যানো আমার আর তন্নির বিয়ে ঠিক।বিয়ের বাকি আর মাত্র এক সাপ্তাহ।তাই মা তোমাকে কিছু দায়িত্ব দিতে চায়।
“আমাকে কি দায়িত্ব দেবে আমি তো তেমন কারো সাথে যোগাযোগ করিনা। সবার দূরে দূরেই থাকি।
” আমি যানি তুমি সবার দূরে দূরে থাকো!এর কারনটাও আমি যানি।কিন্তু তোমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা সিম্পল। তুমি শুধু তন্নির বান্ধবি দের দিকটা ঠিক রাখবে মানে বুঝতেই পারছো সবার সাথে মিলেমিশে থাকা।আর তোমার সহযোগী অনুতো আছেই।
“আমি নিশ্চই আমার দায়িত্ব গুছিয়ে পালন করার চেষ্টা করবো জারিফ ভাই।
“যাক নিশ্চিন্ত হলাম।আম্মু সাথে দেখা করে এসো!
” হ্যা আমি এখনি যাচ্ছি।
জারিফ আর তন্নির নয় বছরের সম্পর্কের পূর্নতা পেতে চলেছে।তাদের সম্পর্ক কথা যতবার মনে পরে ইরার ততবার বুকের ভেতরটায় খা খা করে উঠে।ইসসস কত খুশি তারা তাইনা, অবশেষে পূর্ণতা পাবে সবকিছুর। সবার জীবনে সব আসেনা আর সবার জীবনে হয়তো সবকিছু আসতে নেই।নিয়তির সহজ সরল সমীকরনে আমরা আটকে পড়ি জটিল ধাঁধায়।
গল্পটি লেখনীতে পলি আনান।
ইরা ঘরে ডুকে খেয়াল করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিশ্বাব্দে কাদছে অনু।অনু বুঝতে পারেনি তার পেছনে ইরা এসেছে। ইরা চুপচাপ ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়।পানির কল ছেড়ে মুখে হাত দিয়ে ডুকরে কেদেঁ উঠে।অনুর এই নিঃশব্দে চোখের জলের দায়ী সে নিজে তা ইরা ভালো করেই যানে। কিন্তু কি করবে ভাগ্য তার সাথে খেলছে এক কঠিন খেলা।
ঈশান ফিরে এসেছে আবারো তার চিরো চেনা গলিতে। এটা সেই গলি যেখান থেকে ঈশাকে প্রতিদিন গাড়িতে করে কলেজ থেকে বাসায় ড্রপ করে দিত ঈশান।আহ! স্মৃতি শুধু আজ তাকে ব্যাথা দিচ্ছে। এই জমানো স্মৃতি গুলো নিয়েই কি বাচতে হবে তাকে।বিশাল ফ্লাটের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে এই ফ্লাটের ছাদে ঈশার সাথে যে কত বার আলাপন হয়েছে, অনুভূতিরা এখনো জমে আছে বুকের বা পাশে।পালটে গেছে এই শহরের অনেক কিছু, ঈশান যানতে পারে ঈশার বাবা মা এবং অনুর বাবা মা কেউ এখানে আর থাকে না৷দুই বছর আগেই তারা এলাকা ছেড়ে চলে যায় কিন্তু কোথায় গেছে কেউ যানেনা। ঈশান তার আশার আলো খুজতে হাসিনের বাড়ির দিকে পা বাড়ায় কিন্তু সেই বাড়িতে আর হাসিনরা ও নেই।হাসিনের আগের ফেসবুক একাউন্ট খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।ঈশার সাথে সাথে সবাই যেন ধৌয়া হয়ে মিলিয়ে গেছে।হুট করে ঈশানের মনে পড়ে নাজিম আর সাইফের কথা।
“” রাসেল!
“হুম
” নাজিম আর সাইফের কি খবর?
“যানি না রে। কারো খোজা আমার কাছে নেই।
ঈশান একটি দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে।এই শহরের স্মৃতি গুলো দেখতে এসেছে সে। স্মৃতিতো দেখা শেষ আবার কি ফিরে যাবে সে?
তখনি ঈশানের ফোনে কল আসে তার বাবার।বিরক্ত হয়ে মুখ কুচকে ফোন রিসিভ করে,
” হ্যা বলো?
“তুমি কোথায় ঈশান?
” বিডিতে!
“হোয়াট?তোমাকে ওই দেশে যাওয়ার পারমিশন দিয়েছে কে?
” আমি কারো পারমিশনে চলিনা সেটা আপনি ভালো করেই যানেন!(তাছিল্য হেসে)
ঈশানের বাবার ফোনটা এক প্রকার কেড়ে নিয়ে নেয় লিপি.
“কিরে ঈশান আমি এসেছি আর তুই বিডিতে পালিয়ে গেলি?(লিপি)
” তুমি কিছু বলবে ফুফু আমার এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা।রাখি!
ঈশান খট করে ফোনটা কেটে দেয়।এদিকে লিপি রাজ্যর বিচার সাজিয়ে বসেছে।
“কি ছেলে তোমার ভাবী লজ্জায় মরে যাওয়া উচিত তোমার কি এমন দুই পয়সার মেয়ের প্রেমে পড়েছে তার জন্য পরিবার ছেড়ে দেবে।নাকি ঈশানকে এইসব গুটিতে তুমি সাহায্য করছো?দেখো ভাবি যদি নিজের লজ্জা শরম থাকে তবে পানিতে ডুবে মরো না হলে গলায় দড়ি দেও এমন ছেলে আমার হলে আমি আগেই মরে যেতাম।
মাহমুদা মুখে হাত দিয়ে কাদঁতে কাদতে রুমে চলে যায়। ঈশানটা যে কেন পাগলামি করে। একটু কি স্বাভাবিক জিবনে ফিরে আসা যায় না।
এদিকে চিন্তায় পড়ে গেছে আবিদ। ঈশান হঠাৎ বিডিতে কেন গেলো?
ঈশানের বিডিতে আসার কেটে গেছে চার দিন।ঈশান এখন তার আগের বাড়ি টাতেই থাকে।কিন্তু ঈশার সাজানো সেই রুমে সে ঘুমায় না।সেই রুমটা বিশেষ যত্ন করে রেখে দিয়েছে।তার দৃঢ় বিশ্বাস ঈশা ফিরে আসবে।যেদিন ঈশা ফিরে আসবে সেদিন তারা একসাথে এই রুমে থাকতে শুরু করবে কিন্তু তার আগে নয়।ঈশানের বাবা মা সবাই জোরাজোরি শুরু করে দিয়েছে সে যেন ফিরে যায়।রাসেল কে ও বলা হচ্ছে কিন্তু ঈশান যাবেনা
। তার যত দিন ইচ্ছা সে এই দেশেই থাকবে কারো বারন সে শুনতে চায় না।রাসেল সাহস করে ঈশানকে অফার করে যেন ঈশার কবর যিয়ারত করে আসে,তখন ঈশানের মুখটা ছিল দেখার মতো রেগে সে রাসেলের কলার টেনে বলে,
” তোকে কতবার বলেছি ঈশা মরে নি!আমার ঈশা আমাকে ছেড়ে যাবেনা।আমার প্রতিদিনের প্রার্থনায় যে থাকতো তাকে আল্লাহ কেন নিবে আমি তাকে মন থেকে চেয়েচছি।
“আচ্ছা মানলাম ঈশা বেচে আছে তবে তোর কাছে ফিরে আসছেনা কেন?
ঈশানের মুখটা তখনি আষাঢ়ের মেঘে ঢেকে যায়।’সত্যি তো ঈশা বেচে থাকলে তার কাছে আসছে না কেন?নাকি সব তার মনের ভ্রম..!
চিন্তার শক্তিরা যেন লোপ পেয়েছে দ্রুত পকেট থেকে সিগারেট জ্বালিয়ে ফুকতে থাকে সে। মাথায় মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে রাসেলের কথা।ঈশা বেচেঁ থাকলে কেন তার সাথে দেখা করতে আসছে না।?
ঈশাকি তাকে ভালোবাসেনা?
ঈশানের ভাবনার মাঝেই ফোনে কথা বলতে বলতে এগিয়ে আসে রাসেল। ঈশানের দিকে মুখে বিরক্তির রেখা টেনে বলে,
” ঈশান আরেকটা ঝামেলায় ফেসে গেছি!
“কি ঝামেলা(ভ্রু কুচকে)(গল্পটি লেখনীতে পলি আনান)
” আম্মুর ছোট বেলার বান্ধুবির মেয়ের বিয়ে!এখন আম্মু তো অসুস্থ কিছুতেই জার্নি করতে পারবেনা।আম্মুর বান্ধবী মানে আন্টি বলছে আব্বুকে পাঠাতে আব্বুতো বিজনেসের ঝামেলায় আসতে পারবেনা।বাকি আছি আমি আর আমি তো বিডিতেই আছি তাই আম্মু বলছে বিয়েতে যেন আমি তোকে নিয়ে এটেন্ড করি।
“পারবোনা আমি তুই যা..
” আমি জানতাম তুই যাবি না। এবং কেন যাবিনা সেটাও যানি!প্লিজ ভাই আমাকে বাচাঁতে তুই রাজি হয়ে যা।সময় নেই হাতে আজকে অলরেডি রাত হয়েছে কাল হলুদের ফাংশন পরসূ বিয়ে!
“কেন সময় নেই কেন?
” আরে শালা বিয়ে হবে সিলিটে!একটা সিলেট রিসোর্টে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে।
“কি?আমাদের এখন সিলেট যেতে হবে। মাথা খারাপ নাকি।
“প্লিজ ঈশান চল। তোর নিজেরে হয়তো ভালো লাগবে।
” আমার ভালো লাগবে!এই আমার!কোন দিক থেকে তোর মনে হয় আমার ভালোলাগবে(তাছিল্যে হেসে)
রাসেল মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নেয়। কারন সে যানে হাসিনের বিয়েতে কাটানো ঈশার সাথের স্মৃতি গুলো ঈশানকে বার বার নাড়া দিচ্ছে।
“আমি যানি ঈশান তোর খারাপ লাগবে,আচ্ছা আমরা যাবো তবে যাস্ট আন্টির সাথে দেখা করেই চলে আসবো। প্লিজ ভাই এইটুকু কথা মান আমার।
” ওকে(দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে)
এদিকে জোর কদমে সব প্রস্তুতি চলছে বিয়ের।জারিফের বিয়েতে সবার বেশ আনন্দ থাকলেও আনন্দ নেই ঈশা অনুর মুখে। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে বার বার। কিছুক্ষন আগেই জারিফ নিজে পছন্দ করে ঈশা আর অনুর জন্য ড্রেস কিনে এনেছে বিয়ের ফাংশানের জন্য। তখনি অনুর মনে পরে যায় হাসিনের বিয়েতে ঈশান তাকে ডেকে একজন গাডের হাতে দুটো ড্রেস পাঠায়। সেই বিয়েতে এক কথায় পাঠার বলি ছিল ঈশা আর অনু। পুরোনো স্মৃতি গুলোর কথা ভাবতে বসলেই কান্না পায় তার। কিন্তু ইরা যদি তার চোখে জল দেখে তবে সব ছিন্নভিন্ন করে দেবে তাই নিজেকে যথাসাধ্যে শান্ত রাখে।
কাল জারিফ আর তন্নির গায়ে হলুদ।কাল সকালেই সবাই মিলে রিসোর্টে যাবে তাই সব ঠিক ঠাক করছে অনু।পুরো বিয়ের সময়টা জুড়ে কি করে থাকবে ভেবে পাচ্ছে না ইরা।এইসব ভাবতে তার এখনি দম বন্ধ লাগছে। এভাবেই ইরারো বিয়ের পিরিতে বসার কথা ছিল একজন রাজ পুত্রের সাথে কিন্তু সেই রাজপুত্রটাই আজ হারিয়ে গেছে।
অবশেষে সিলেট এসে পৌছে যায় ঈশান আর রাসেল।ঈশান নতুন করে ২০ জন গাড নিয়োগ করে।কেননা তার উপর আগের বার হামলা কে করেছে, কি কারনে করেছে হয়তো বিজনেসের শত্রু বা পারিবারিক শত্রু এইসব কিছুর প্রমান তার কাছে নেই তাই এত বড় শহরে নিজেদেরি একা সেইফ মনে করেনি ঈশান তাই সব গার্ড দের নতুন করে নিয়োগ দেয়।সবাই কে নিয়ে কিছু দিনের জন্য ঈশান একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি ভাড়া করে।
সিলেট শহরে একবার যখন এসেছে তখন এই শহরটাকে চুষে বেড়ানো ছাড়া সে ছাড়বেনা।এটা সেই শহর যে শহরে ঈশার সাথে তার প্রথম দেখা। চা বাগানে হারিয়ে যাওয়া সেই ভয়ার্ত চোখ দুটোর অধিকারি মেয়েটাকে সে পাগলের মতো ভালোবেসে ছিল।কিন্তু মেয়েটি আবারো হারিয়ে গেল চোখের পলকে।এই শহরটা ঈশানের কাছে সূচনার শহর।তার দীর্ঘ জীবনের গল্পের সূচনাতো এই সিলেটেই।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর এসে গেল জারিফ আর তন্নির বিয়ের দিন।ইরা আর অনু সেজেছে লং গাউন তার সাথে হিজাব।ইরাকে কেউ কখনো পর্দা ছাড়া দেখেনি আর দেখবে ও না। মেয়েটা যে সবার কাছ থেকে নিজেকে লুকিয়ে চলে এই কথাটা অবশ্য জারিফের পরিবার ছাড়া কেউ যানেনা।ইরা লং গাউনের সাথে নিকাব করেছে।তবে ইরা নিজেকে যতই আড়াল করুক তার ভয়ার্ত চোখ দুটোটে যে কেউ তাকে সহযে চিনে যাবে সে ঈশা…!
বিয়ের ফাংশান অলরেডি শুরু স্টেজে বর আর বউয়ের নানান অঙ্গ ভঙ্গিতে ছবি তুলছে ফটোগ্রাফাররা।ইরা আর অনু স্টেজের বাইরে দাঁড়িয়ে দেখছে। দুজনে দুজনের সামনা সামনি স্বাভাবিক থাকলেও ভেতরটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে।ইসস এইভাবেই হয়তো ঈশানের সাথে নিজের জিবনকে আরো ঘনিষ্ট ভাবে জড়িয়ে নিতো ঈশা।ঈশার মনে পরে যায় সে তো ঈশানের স্ত্রী…! সেইদিন রাতেই ঈশান প্রমান করে দিয়েছিল।
সব কিছু ভাবতেই ঈশার কান্না পাচ্ছে। সে যে ভীষন ভালোবাসে তার ঈশানকে।অনুকে একা ছেড়ে বাগানের নিরিবিলি দিকটায় মুখে হাত দিয়ে কাদতে শুরু করে।মুখের নেকাবটা খুলে চোখের পানি মুছতে থাকে।ঈশা আড়ালেই কাদুক এই চোখের পানি সে কাউকে দেখাবেনা।
বিয়ে বাড়ি মানেই গান বাজনা,হাসি আনন্দ, লাইটিং হাজারো সাজ সজ্জার বাহার।কিন্তু এইসব এখন ঈশানের কাছে ঘায়ের কাটার মতো লাগছে।
“রাসেল তুই যার সাথে দেখা করার তার সাথে দেখা কর। আমি আড়ালে আছি।
” হুম..!
ঈশান বাগানের দিক টায় চলে যায়। তখনি তার কানে আছে কোন মেয়ের কান্নার আওয়াজ।তার স্নায়ু শক্তিরা কিসের যেন ইংগিত দিচ্ছে। এই কান্না ঈশান চিনে খুব ভালো করেই চিনে। কিন্তু কার কান্নার আওয়াজ। ঈশান দ্রুত গুটি গুটি পা ফেলে এগিয়ে যায়।কিন্তু একটি ফুল গাছের ঝোপের আড়ালে সে যা দেখলো তা ছিল তার দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরের অপেক্ষার ফল…
ঈশানের চোখ বেয়ে ঝরে পড়ছে অশ্রু কনা। বুকের ভেতরের হৃদযন্ত্রের শব্দ যেন ১০ গুন বেড়ে গেছে।মাথার ভেতটায় জট পাকিয়ে গেছে।নিজেকে আর নিয়ন্ত্রন করতে পারেনি ঈশান। সেখানেই সেন্সলেস হয়ে পরে যায় সে…..!
#চলবে….!
অনেকেই বলছেন লিপিকে চিনেন না।যারা সিজন ১ পড়েছে তারা লিপিকে চিনে।যারা পড়েন নি তারা না চেনার কথা।
?পর্বটি কেমন হলো যানাবেন…!
?হ্যাপি রিডিং..!