The Colourful Fragrance Of Love ?Part: 08

0
1060

?#The_Colourful_Fragrance_Of_Love?

Part: 08

কিছুদিন পর;

উজান আজ অফিস থেকে ফিরে ভীষণ ক্লান্ত,স্নান করে এসেই রুমের লাইট ওফ করে দিয়ে শুইয়ে আছে নিজের বিছানায়,হিয়া বাসবির ঘরে বাসবির সাথে বসে টিভিতে সেই সন্ধ্যা থেকে কি জানি একটা মুভি হচ্ছিল তাই দেখায় ব্যস্ত,এদিকে যে গত এক ঘন্টা ধরে উজান রুমে একা একা শুইয়ে আছে সেদিকে তার কোন মনোযোগ নেই,এ-রকম করে করে দু ঘন্টা হয়ে আসে কিন্তু হিয়া আসে না,শেষমেশ বাধ্য হয়ে উজান হিয়াকে ডেকে পাঠায়

জিনিয়াঃ ও হিয়াদী ভাইয়া ডাকছে তো যাও না

হিয়াঃ ও হো,মুভিটা শেষ হোক তারপর যাই না?

বাসবিঃ ডাকছে যখন তখন শুনেই আয় না একবার,,,,দরকার হয়তো কোনো

হিয়াঃ দরকার না ছাই,যাচ্ছি

_______________________
হিয়াঃ আ হা ঘর টা কি রকম অন্ধকার করে রেখেছে দেখো,লাইট টা জ্বালাবো??

উজানঃ নাআ

হিয়াঃ ধুরো,,(বিছানার একপাশে উজানের কোমড়ের কাছে গিয়ে বসে পা দুলাতে দুলাতে)কি হয়েছে ডাকলেন কেনো,বলুন তাড়াতাড়ি

উজানঃ পড়াশুনা নাই তোমার,কখন থেকে টিভি দেখছো

হিয়াঃ ও তো কাল কলেজ খুলবে তারপর থেকে

উজানঃ কলেজে যাবার সময় আমি ড্রাইভার পাঠিয়ে দেবো উনি এসে তোমাকে নিয়ে যাবে আর ফেরার পথে আমি গিয়ে নিয়ে আসবো মনে থাকবে

হিয়াঃ ড্রাইভার আঙ্কেলকে পাঠাতেও হবে না,আর ফেরার পথে আপনাকেও আসতে হবে না,আমি একাই পারবো যাওয়া আসা করতে?

উজানঃ আবার কোনো সার্তকি টাইপ ছেলের চক্করে পড়ার জন্য

হিয়াঃ আন্দাজ-ই,,,,আপনার বউ তো মনে হয় যেনো কোনো বিশ্বসুন্দরী যে,যে কেউ তার সুযোগ নিতে চাইবে?

উজানঃ এসব ফালতু কথা না বলে যা করতে বলেছি ঠিক সে ভাবেই চলবা,ইটস মাই ওডার

হিয়াঃ ইটস মাই ওডার হু,আপনি কি নীলি আপুর উপরো এরকম করে হুকুম চালাতেন,কি করে যে আপু আপনাকে সহ্য করতো কে জানে?

উজানঃ ইউ নো নীলিমা না তোমার মতো এতো অবাধ্য ছিলো না,আমি ওকে যা বলতাম ও আমার সব কথা শুনতো,সে রকম করেই চলতো

হিয়াঃ হ্যা এজন্য তো নীলি আপুর ভয়ে আপনি ঔ একবার ক্যাম্পাসে কান ধরে উঠবস করেছিলেন(বিড়বিড় করে)

উজানঃ এরকম মিন মিন করছো কেনো যা, বলবা স্পষ্ট ভাবে বলবা?

হিয়াঃ কই,কিছু বলি নাই তো?,,,,আর কিছু বলবেন আপনি,আমার মুভি টাই শেষ হয়ে গেলো ধুর

উজানঃ মুভি দেখতে হবে না,,এক মগ কফি করে নিয়ে আসো আমার জন্য,কুইক

হিয়াঃ(কপাল ভাজ করে),,,,কফি শেষ?

উজানঃ এক বক্স কফির প্যাকেট এ কয়দিনে শেষ,সেদিনই তো নিয়ে আসলাম

হিয়াঃ শেষ হয়ে গেলে আমি কি করবো

উজানঃ তা লিকার চা করে আনো,যাও

হিয়াঃ গ্যাস শেষ

উজানঃ ফালতু কথা,ইন্ডাকশন নেই ওটায় রান্না করো

হিয়াঃ হাতে ব্যাথা?(ঢং করে)

উজানঃ (একটা নীরব হাসি দিয়ে)এক মগ কফি করতে হাতে ব্যাথা বাড়বে না

হিয়াঃ সত্যি খুব ব্যাথা

উজানঃ ডক্টর আঙ্কেল কে একটা ফোন করবো,উপরের ফ্লাটেই থাকে এসে না হয় দেখে যাবে একবার

হিয়াঃ না না,ডক্টর দেখার মতো ব্যাথা না তো,আনছি আমি কফি করে আপনি বসুন

হিয়া একটা ভেংচি কেটে কফি করতে চলে যায়,দশ মিনিট পর হিয়া কফি নিয়ে আসে,কিন্তু দুষ্টুমি করে কফিতে মিশিয়ে দেয় লবন

হিয়াঃ নিন আপনার কফিইইই?

উজানঃ কফি নাকি শেষ

হিয়াঃ না ছিলো একটা প্যাকেট

উজান ভূ কুঁচকে হিয়ার হাত থেকে কফি টা নিয়ে চুমুক দিতে শুরু করে

হিয়াঃ খান না খান ভালো করে খান,,কি বলুন তো মিস্টার শাহরিয়ার আপনি গাছের ডালে ডালে চড়লেও এই হিয়া মুনতাসীর কিন্তু চড়ে পাতায় পাতায়,,,,আমার হাত ব্যাথা শুনেও আমাকে দিয়ে কফি বানালেন তো এবার বুঝবেন হিয়ার সাথে চালাকি করার শায়েস্তা কি জানিস?

উজান দু চুমুক কফি গিলেই কি রকম বাংলার পাঁচ এর মতো মুখ টা করে ফেলে,হুট করে কফির স্বাদ টা এরকমই বা হতে যাবে কেনো,,,,আর একবার টেস্ট টা বোঝার জন্য কফি গিলতেই উজান বুঝে ফেলে কফিতে লবন টাইপ কিছু দেওয়া,সন্দেহজনক চোখে হিয়ার দিকে তাকালে খেয়াল করে হিয়া মিটেমিটে হাসছে,,এবার আয় উজানকে পায় কে

হিয়াঃ কি হলো আপনি কফি মগ টা থুয়ে উঠে এলেন যে?

উজানঃ (এক পা এক পা করে হিয়ার দিকে এগিয়ে) নিজেকে কি মনে করো খুব চালাক

হিয়াঃ এই আপ আপনি এরকম করে এগিয়ে আসছেন কেনো আমার দিকে,,কফ কফি টা শেষ করুন,,

উজানঃ আমার সাথে চালাকি আজকে আমি তোমাকে দেখাবো আমি ক্ষেপে গেলে ঠিক কি কি হয়

হিয়াঃ এই না,একদম না,দেখুন আমি আমি কিন্তু মা কে ডাকবো,মাআআ,,মাআআআআ

হিয়া মা মা বলে চিৎকার করতে করতে দৌড় শুরু করে,হিয়ার পিছে পিছে দৌড় দেয় উজানো,শুরু হয় দুজনের ধরাধরা খেলা,ডাইনিং থেকে ড্রয়িং কিছুই বাদ যায় না,দুজনে সমান তালে ছুটছে তো ছুটছে কিন্তু কেউ আর কারো নাগাল পায় না,এদিকে সোফার কাপড় থেকে শুরু করে কুশন এমনকি পর্দায় ঝুলানো শামুকের মালা গুলোও ওদের ধরাধরা তে ওলট-পালট হয়ে জোড়ো হয়ে একটা ছিঁড়ে নিচে সব শামুক গড়িয়ে যায়

হিয়াঃ মা দেখোওও তোমার ছেলে কি বানিয়ে ফেললো রুম টাকে

উজানঃ না মা,,,আমি কিছু করি নি,মা হিয়া তোমার পর্দার ঝুনঝুনি লাগা শামুক গুলো ছিঁড়ে দিছে একটা

হিয়াঃ না মা মিথ্যে কথা বলছে তোমার ছেলে,,,,,ওটা ওর হাত লেগে ছিঁড়ছে আমি তো তার আগে

উজানঃ তবে রে,,,,কোণা থেকে বের হও ধরলে কিন্তু হিয়াআআ আমি আজ তোমাকে ছাড়বো না

হিয়াঃ ধরে তো দেখান,,

উজান একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে আবার হিয়ার পিছে দৌড় শুরু করে কিন্তু এবার আর হিয়া জায়গা খুঁজে না পেয়ে সোজা বাসবির কোলে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে

হিয়াঃ মা মা দেখো তোমার ছেলে আমাকে ধরে মারবে বলছে

বাসবিঃ রাজাআআ কি বলছে কি হিয়া,কেনো মারবি তুই আমার মেয়ে টাকে

উজানঃ (রুমে এসে)মার কাছে লুকিয়ে লাভ নেই,আজ তো তোমাকে আমি ঔ লবন দেয়া কফি টাই খাওয়াবো হিয়া মুনতাসীর,ওয়েট

উজান দৌড়ে ওর রুমে যায় কফি মগ টা নিয়ে আসতে

বাসবিঃ কি তখন থেকে দুজনে লাফালাফি করছিস,কি করেছে ও

হিয়াঃ (ফিক করে হেঁসে দিয়ে) উনি কিছু করে নি মা,আমি ওনার কফিতে লবন মিশিয়ে দিয়েছি?

বাসবিঃ সে কি,কেনো

হিয়াঃ ইচ্ছে করে,আমার হাত টা ব্যাথা করছিলো ওনাকে আমি বললাম,তারপরো বলে কি না কফি করে আনতে,আমিও তাই লবন মিশিয়ে স্পেশাল কফি করে এনেছি,ঠিক করেছি না বলো

উজানঃ ঠিক না ভুল এবার তুমি বুঝবে,,কফি শেষ,গ্যাস নেই,হাত ব্যাথা,তোমার সব ন্যাকামি এখন আমি বের করবো

উজান বাসবির থেকে হিয়ার হাত দুটো টেনে হিয়ার ই গায়ের ওড়না দিয়ে আগে হিয়ার দু পা মুট করে বেধে দেয়

হিয়াঃ মা দেখো আমার পা বাঁধছে?

উজানঃ বাধছি যাতে পালাতে না পারো,,,,এখন শুরু করো তো ফাস্ট

হিয়াঃ কি ফাস্ট ফাস্ট শুরু করবো

উজানঃ কফি খাওয়া শুরু করো ফাস্ট

হিয়াঃ মাআআআ দেখো নাআআ

বাসবিঃ ছাড় না রাজা কেনো বাচ্চা মেয়েটার সাথে ওরকম করছিস

উজানঃ বয়সে শুধু বাচ্চা মাথায় তো ওলয়েজ ঔ বড়দের মতো বুদ্ধি নিয়ে ঘোরে,,,কথা শুনলে তো মনে হয় আমি না ঔ আমার চেয়ে অভিঞ্গ,,,,তাড়াতাড়ি শুরু করলে তাড়াতাড়ি শেষ হবে কুইক কুইক

হিয়াঃ আমি আর এরকম করবো না আপনি আমাকে প্লিজ এবার মাফ করে দিন(কাঁদো কাঁদো গলাতে)

উজানঃ উম হুম,নেভার,আগে এই কফি তুমি পুরো গিলবা দেন আমি তোমাকে ছাড়বো

হিয়াঃ মা তুমি কিছু বলো না তোমার ছেলে কে

উজানঃ মা কে এরমধ্যে টেনে লাভ নেই পিচ্চি বাচ্চা,নীলিমাও কোনোদিন মাকে এসবে টেনে পাড় পায় নি তুমি ভাবলে কি করে সেখানে আমি তোমাকে ছাড়বো?

হিয়াঃ নীলি আপুউউউউ কোথায় তুমিইইই????মাআআআ আমি তো ওটা খেলে বমি করে দেবোওও

উজানঃ বমি করলে করবে কিন্তু এই এক মগ কফি তোমাকেই গিলতে হবে,স্টার্ট

উজান পাক্কা আধা ঘণ্টা কফি মগ নিয়ে হিয়ার মুখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু হিয়া মুখে কফি তুলে না,বাসবিও কিছু বলে না একদিকে তার প্রিয় সিরিয়াল দেখতে থাকে একদিকে উজান হিয়ার কাহিনী,হিয়াও আর বাসবি কে সাহায্য করতে বলে না কারণ যানে বাসবির গুনোধর ছেলে এই মুহুর্তে তার মার কথাও শুনবে না,শেষ মেষ চোখ মুখ খিচে কোনোরকম এক ঢোক কফি গিলেই হিয়া ওটা বের করতে যাবে ওমনি উজানের দিকে তাকাতেই আবার গিলে খায়,না অতিরিক্ত লবন এটা খাওয়া অসম্ভব

এরমধ্যে টানাটানি তে হিয়ার পায়ের বাধন টা আলগা হয়ে আসলে হিয়া টুক করে পালাতে যাবে ওমনি উজান হিয়াকে মেঝের মধ্যে টেনে ফেলে,হিয়া হাসতে হাসতে মেঝেতে চিৎ হয়ে শুরু পড়লে উজান ওর দু পা ফাঁক করে হিয়ার কোমড়ের কাছে বেষ্টন তৈরি করে দাঁড়িয়ে যায়

উজানঃ এখন পালিয়ে দেখাও,

বাসবিঃ আহ রাজা লাগবে ফ্লোরে মেয়েটার

উজানঃ আর করবা কখনো এরকম

হিয়াঃ (উজানের পা দুটো ধরে বে আক্কেলের মতো হাসতে হাসতে) আর করবো না সত্যি?

উজানঃ ( হালকা হাসি টেনে) কি রকম হাসতেছে দেখো আবার,,,,সত্যি তো?

হিয়াঃ হ্যা হ্যা সত্যি,হে হে

এমন সময় দুম করে সন্ধি রুমে ঢুকে ওদের কে ওভাবে দেখে থ হয়ে যায়

সন্ধিঃ একি?হিয়াকে এরকম করে ফ্লোরে ফেলে দিয়েছিস কেনো,আর তুই ওর উপর ওরকম করে দাঁড়িয়ে আছিস যে,,আন্টি কি হচ্ছে

বাসবিঃ আর বলিস না,এক ঘন্টা ধরে ওদের এসব বাচ্চামি চলছে

উজানঃ কান ধরো এখন

হিয়াঃ কেনো কান ধরে কি হবে,কান ধরলে কফি খাওয়া লাগবে না,টেস্টি টেস্টি কফি?(হাসি দিয়ে)

উজানঃ তবুও হাসতিছে দেখ কি রকম লাগে,কান ধরে বলো কাল থেকে

হিয়াঃ কাল থেকে (কান ধরে হাসতে হাসতে)

উজানঃ প্রত্যেকদিন

হিয়াঃ প্রত্যেকদিন?

উজানঃ অফিস থেকে ফেরার পরপরই আমি ওনার জন্য কফি বানিয়ে দেবো

হিয়াঃ দেবো দেবো

উজানঃ রোজ রাতে ওনার পা টিপে দেবো

হিয়াঃ (কোমড়ের কাছে থাকা উজানের একটা পা দু হাতে টিপে দিয়ে) এরকম করে

উজানঃ হ্যা এরকম করে

হিয়াঃ ঠিক আছে দেবো দেবো

উজানঃ মনে থাকবে

হিয়াঃ আর কিছু

উজানঃ রোজ ওনার জন্য

হিয়াঃ রোজ ওনার জন্য

উজানঃ রাতে সুন্দর মতো খাবার বেড়ে রাখবো

হিয়াঃ এটা কিন্তু এসবে যায় না

উজানঃ কি

হিয়াঃ বাড়বো বাড়বো

উজানঃ ঠিক আছে

উজান হিয়ার উপর থেকে উঠে হাসতে হাসতে ওর রুমে চলে যায় যাওয়ার আগে সন্ধিকে বলে তুই বস আমি শার্ট টা চেঞ্জ করে আসছি

হিয়াঃ কচু করবো আমি আপনার জন্য,আজ তো লবন মিশিয়েছি কাল মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে কফি করে দেবো,হে হে(চিৎকার করে হাসতে হাসতে)

সন্ধি এসে হিয়াকে হাত ধরে নিচ থেকে টেনে তুলে,হিয়া তখনো হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে,বাসবি এবার উঠে এসে হিয়াকে দু হাতে ওনার বুকে আগলে ধরে

বাসবিঃ আজ কতোদিন পর আমার রাজা টাকে আমি এরকম করে মন থেকে হাসতে দেখলাম,তোকে আমি কি দিয়ে ধন্যবাদ দেবো মা সে ভাষা আমার নেই তোর কাছে আমি ঋৃনই মা,তুই যদি সেদিন রাজি না হতি

হিয়াঃ এতে আমার কিছুই না মা,আমিও তো সেদিন বাধ্য হয়ে বিয়ে টা করেছিলাম,মামি আমাকে টাকা দেখে তোমাদের কাছে বিলিয়ে দিয়েছিলো তাই আমিও বাধ্য হয়ে,,,,তারপর যে কখন আমি তোমার ছেলেকে এতোটা

বাসবিঃ ভালোবেসেছিস তাই তো?

হিয়াঃ জানি না মা,শুধু জানি ওনাকে ভালো রাখতে হবে,ওনার মুখ টাতে এই হাসি টাই বেশি ভালো লাগে অন্য কিছু না❤️

সন্ধিঃ (এসে হিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে)আমি জানি উজান নীলিমা কে কখনো ভুলতে পারবে না কিন্তু সে যে এখন তোমাকেও ভালোবাসছে সে আমি বেশ বুঝতে পারছি,,,,উজান কে কখনো ছেড়ে দিও না হিয়া নীলির ধাক্কা টা উজান হয়তো সারিয়ে উঠতে পারছে ধীরে ধীরে তোমার টা নাও সইতে পারে

হিয়াঃ যদি কখনো নীলি আপু ফিরে আসে!!

সন্ধিঃ (কিছুক্ষণ চুপ থেকে)নীলির ফেরার হলে এতোদিনেই ফিরতো হিয়া,উজান কে তাহলে হসপিটালের বিছানায় মাসের পর মাস কাটাতে হতো না

হিয়া একটা হাসি দিয়ে বাসবির কোলে মুখ লুকিয়ে নেয়,,

উজানঃ সন্ধি আমি রেডি,বের হ,অভিক কি গাড়ি নিয়ে নিচে দাঁড়িয়ে আছে

সন্ধিঃ হুম, কি ফোন আসলো এজন্য উপরে আসতে চাইলো না আর,,,,আচ্ছা একটা কাজ করলে কিরকম হয় হিয়াকেও আমাদের সাথে নিয়ে যাই,আমাদের তো সে রকম কোন কাজ নেই,শুধু রুম বুক করবো এই যা,,তারপর না হয় তুই হিয়ার সাথে বাড়ি ফিরিস,মেয়ে টার একটু ঘোরাও হবে আসছে থেকে তো সেরকম কিছু দেখে নি ও

উজানঃ (কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বাসবির আয়নার সামনে গিয়ে চুল টা আর একবার আছড়ে নিয়ে)__আমার সমস্যা নেই,ও যেতে চাইলে ওকে রেডি হতে বল

হিয়াঃ ??

সন্ধিঃ কি হিয়া বেরু করতে যাবে

হিয়াঃ যাবো,আপনি দু মিনিট বসুন আমি জাস্ট জামা টা পড়েই আসছি
__________________________
তিন জনে বেড়িয়ে পড়ে হোটেলের উদ্দেশ্যে,আসলে এক সপ্তাহ পর উজান দের বাহির থেকে কিছু ক্লাইন্ড আসবে তাদের জন্যেই রুম বুক করতে যাওয়া আরকি,হোটেল টা অনেক দামি হওয়াতে সপ্তাহ দু এক আগে থেকে ওখানে রুম বুক করতে হয়,সাথে আবার একটা ছোট খাটো অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হবে ওখানে একদিন,তাই নিয়ে কথা বার্তা বলবে এই যা

হোটেলে পৌঁছে চারজনে মিলে সব ঠিক করে হোটেলের নিচে এসে বাহিরে গিয়ে দাঁড় হয়,তুষার এতোক্ষণ নিচে সন্ধির জন্য অপেক্ষা করছিলো,আসলে ওয়েদার টা হঠাৎ করেই কি রকম করছে, বৃষ্টি হবে হবে হয়তো,বাতাস হচ্ছে ভীষণ,যেকোনো সময় বৃষ্টি ঝরতে পারে,

অভিকঃ ঔ দেখ তোর বর দাঁড়িয়ে

সন্ধিঃ বললাম ওকে অভিক ড্রপ করে দিয়ে আসবে,উজান হিয়াও সাথে আছে,শুনে আমার কথা,ঝগড়া করবার সময় তো এতো ভালোবাসা দেখি না ওর হু

তুষারঃ এই যে ম্যাডাম ওখানে দাঁড়িয়ে আমাকে
না গালি দিয়ে গাড়িতে এসে বসো,বৃষ্টি নামবে কিন্তু

সন্ধিঃ যাচ্ছি যাচ্ছি

সন্ধি সবার থেকে বিদায় নিয়ে তুষারের সাথে বাড়িতে চলে যায়,এদিকে অভিকের একটা ইমার্জেন্সি আসায় অভিক তখনি তখনি ওর গাড়ি টা নিয়ে চলে যায়,যাওয়ার আগে অবশ্য উজান হিয়াকে ড্রপ করে দিতে চেয়েছিলো কিন্তু রাস্তা টা উল্টোদিকে হওয়াতে উজান বলে লাগবে না ও হিয়াকে নিয়ে রিক্সা বা অটোকিছুতে চলে যেতে পারবে,রাত তখন ১১টা রাস্তা টা অনেক টাই ফাঁকা,উজান হিয়া যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই পাশাপাশি হাঁটছে,তার উপর এই অবেলার দমকা হাওয়া,

উজানঃ হাঁটতে কোনো অসুবিধে হচ্ছে না তো

হিয়াঃ না আমার তো এই ওয়েদার এ হাঁটতে বেশ লাগছে?

উজানঃ রিক্সা অটো কিছুই তো চোখে পড়ছে না,বিহান কে কি বলবো গাড়ি টা নিয়ে আসতে

হিয়াঃ আর একটু দেখুন,শুধু শুধু দাদাভাই কে বিরক্ত করবার কি আছে

উজানঃ দাদাভাই না বিহান বলেই ডাকবা ওকে

হিয়াঃ ধ্যাত তা আবার হয় নাকি,হাজার হোক উনি সম্পর্কে না হোক বয়সে বড় আমার আর আমি কি না ওনাকে

উজানঃ যা বলছি তাই করবা,অযথা কথা বাড়াবা না

হিয়াঃ আমি পারবো না

উজানঃ আবার আমার মুখের উপর কথা

হিয়াঃ আআ,,ঠিক আছে চেষ্টা করবো নাম ধরে ডাকতে শান্তি,,এনার মাথায় আসলেই সমস্যা আছে,হয়েছি না হয় সম্পর্কে বড় তাই বলে (বিড়বিড় করে)

দুজনে হাঁটতে থাকে এদিকে তখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হতে না হতেই হুড়মুড় করে একদম অঝোরে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়,উজান হিয়া দৌড়ে এসে দাঁড় হয় একটা বাড়ির সামনে নিচের খোলা অংশে যার উপর জুড়ে রয়েছে ছাঁদ,কিছুক্ষণ পর উজান হিয়ার পাশাপাশি ওখানে দৌড়ে এসে দাঁড় হয় একটা ছেলে আর মেয়ে,দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওরাও হাসবেন্ড ওয়াইফ,দুজনে একদম অঝরা বৃষ্টিতে ভিজে চৌচির,ছেলে টা আলতো করে মেয়েটার চুল গুলো থেকে জল ছড়িয়ে দিয়ে আলতো হাতে মেয়েটার মুখ মুছিয়ে দিচ্ছে,মেয়েটাও তার ভেজা শাড়ির আঁচল দিয়েই চিপে চিপে ছেলেটাকে মুছে দিচ্ছে,উজান হিয়া দুজনের দৃষ্টি ওদের উপর

হিয়াঃ এতো সুন্দর সুন্দর ভালোবাসা বেঁচে আছে বলেই পৃথিবীটা এতো সুন্দর আজ,,,,কখনো কি আমিও ওনার সাথে এভাবে বৃষ্টিতে ভিজতে পারবো,উনি কি কখনো আমাকে মেনে নিয়ে নীলি আপুর মতো ভালোবাসতে পারবেন আমায়,,,নীলি আপু এখানে থাকলে নিশ্চয় উনি এতোক্ষণে আপুর হাত ধরে টানতে টানতে বৃষ্টিতে নিয়ে গিয়ে ভিজতেন

নিজমনে কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই হিয়ার চোখ টা যায় উজানের মুখের দিকে,উজানের চোখ ভর্তি জলে,এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ছে গাল বেয়ে চিবুকের কাছে,হিয়ার চোখের উপর চোখ পড়তেই উজান পেছন ঘুরে আলতো হাতে ওর চোখ টা মুছে নেয়

হিয়াঃ একি উনি কাঁদছেন,কেনো কাঁদছে,,,,আপনি এভাবে কাঁদবেন না প্লিজ আমার কষ্ট হয় আপনাকে এভাবে কাঁদতে দেখলে,,,,নীলি আপুকে ভালোবেসে আপনি নিজেকে এতো কষ্ট দিতে পারেন না,আমি আপনাকে এ-র কম করে কষ্ট নিতে দিতে পারবো না
__________________________
উজান ওখানে আর বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না,সাব্বির কে ফোন দিয়ে বলে ইমিডিয়েট গাড়ি নিয়ে আসতে,সাব্বির গাড়ি নিয়ে আসলে উজান হিয়াকে নিয়ে বাড়ি পৌঁছে,এদিকে সময় যতো বাড়তে থাকে ঝড় ততো প্রবল হতে থাকে,উজান আর সাব্বির কে এই ঝড়ে ড্রাইভ করে বাড়ি ফিরতে দেয় না,ওদের সাথে করে বাড়িতে নিয়ে আসে আর বলে আজ রাত টা তুই রেহানের সাথে ওর রুমে থাকবি,

বাড়িতে এসে উজান গলা অবধি ধুয়ে নেয় কারণ তখন একটু হলেও গা টা হালকা বৃষ্টিতে ভেজার পাশাপাশি নিচে থাকা কাঁদা গুলো চটকে এসেছিলো,উজান ফ্রেশ হয়ে শুধু একটা ঘিয়ে রঙের হাফ প্যান্ট পড়ে বের হয়ে আসে,ঔ হাফ প্যান্ট ছাড়া গায়ে একটা সুতো অবধি নেই,এদিকে হিয়া উজান কে ওভাবে বের হতে দেখে পুরো থ,ফর্সা ফর্সা বুকের কাছে লোম গুলো পানিতে ভিজে চিক চিক করছে,গোলাপি ছাতি টা যেনো আরো প্রশ্বস্ত হয়ে চোখে ধরা দিচ্ছে হিয়ার

উজানঃ হোয়াট?ওরকম করে কি দেখছো

হিয়াঃ কো,কোথায়,কিছু দেখছি না তো,কি দেখবো

উজানঃ হ্যা তা ওরকম ভেজা জামায় দাঁড়িয়ে না থেকে স্নান করবা না ফ্রেশ হবা হয়ে আসো

হিয়াঃ যাচ্ছি(উজানের হাত থেকে তোয়ালে টা নিয়ে)

হিয়া কি বলবে না বলবে কিছু না বুঝে ধুম করে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়,গা টা ম্যাজ ম্যাজ করাতে উজানের দেখাদেখি সে নিজেও স্নান করে নেয়,কিন্তু তখন তো ওয়াশরুমে যাবো বললো আর ঢুকে পড়লো,জামা কাপড় যে কিছুই নিয়ে এলো না এখন,

হিয়াঃ এতো দেখছি মহাজ্বালা,এখন কি পড়বো আমি,সব তো ভিজিয়েও রাখলাম আবার,কেনো যে তখন ওনাকে ওরকম করে দেখতে গেলাম,ধুর

হিয়া কিছু উপায় না পেয়ে সাদা তোয়ালেটা গায়ে পেচিয়ে নিয়ে দরজা টা হালকা খুলে উজান কে আলতো করে ডাকে,কিন্তু উজানের কোনো সাড়া আসে না,দু চার বার ডাকার পর হিয়া আলতো করে মাথা বের করলে দেখে উজান রুমে নেই,হিয়া একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে টপ করে বেড়িয়ে আগে গিয়ে ঘরের দরজা টা লাগিয়ে দিয়ে আসে,তারপর বিছানার সাইডে রাখা ওর লাগেজ টা থেকে একটা জামা বের করে যেই পেছনে ঘুরে এক পা বাড়াবে ওমনি সামনে ব্যালকুনি থেকে হেঁটে আসা উজানের সাথে দুম করে ধাক্কা খেয়ে পা হড়কে উজান সহ বিছানার এক কোণে গিয়ে ধপ করে পড়ে যায়,আসলে উজান তখন কানে হেডফোন গুঁজে ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে গান শুনছিলো বিধায় হিয়ার ডাক শুনতে পারে নি,আর হিয়া যে বেড়িয়ে রুমের সাথে ব্যালকুনিটাও একবার চেক করবে সে হুঁশ ঔ মুহুর্তে ওর ছিলো না

হিয়া নিচে,উজান হিয়ার উপরে,উজানের এক হাতে লেপ্টে আছে হিয়ার কোমড়ে এক হাতে হিয়ার মাথার এক পাশ দিয়ে সামনে,হিয়ার এক হাত উজানের তোলে আর এক হাত আঁকড়ে ধরে আছে বুকের কাছে তোয়ালেটার কাছে

উজানঃ এ-র কম খোলা গায়ে ঘুরে বের হচ্ছ কেনো,রুমে কেউ এসে দেখলে

হিয়াঃ রু-মের দর-জা তো লাগিয়ে দিয়ে আসলাম,,আপনি কোথায় ছি–লেন,ব্যালকুনিতে?আমি যে ক বার করে আপনাকে ডাকলাম,আপনি শুনতে পারেননি

উজানঃ গান শুনছিলাম,শুনতে পারি নি

হিয়াঃ ঠিক আছে,,

উজানঃ চুলের একি অবস্থা করে রাখছো,মাথাটাও মুছো নি ভালো করে,জ্বর বাধিয়ে কাল কলেজ না যাবার প্লান হচ্ছে

হিয়াঃ না তা কেনো হতে যাবে,আমি জামা নিয়ে যেতে ভুলে গেছি তাই তোয়ালে দিয়ে (চোখ নামিয়ে)

উজানঃ (হিয়াকে পুরো একবার দেখে নিয়ে)ঠিক আছে,উঠো

উজান হিয়ার উপর থেকে উঠে গেলে হিয়া ওর এক হাত বুকের কাছে দিয়েই উঠে দাঁড়াতে যাবে ওমনি উজান হিয়ার এক হাত টেনে হিয়াকে আবার বিছানায় বসিয়ে দেয়,আলতো হাতে হিয়ার পেছনে ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে সামনে মেলে দিতেই হিয়া কেঁপে উঠে,এই প্রথম উজানের স্পর্শ ওর হাত বাদ দিয়ে শরীরের অন্য খোলা অংশে,বুকের কাছের হাত টা আরো শক্ত করে চেপে ধরে জোরে জোরে শ্বাস নিতে শুরু করে হিয়া

উজানঃ ঘাড়ের নিচে কি হয়েছে এটা,,রক্ত রক্ত লাগছে কেনো,কোথাও ব্যাথা পেয়েছিলা

হিয়াঃ হ্যা মানে না,ব্যাথা না ঔ আসলে তখন তাড়াহুড়ো করে জামা খুলতে গিয়ে মাথার কাটা টা দিয়ে হালকা ঘুতো লেগে কেটে গিয়েছিলো,রক্ত বের হচ্ছে কি,আমি তো পেছনে দেখতে পারি না

উজানঃ এতো কেনো কেয়ারলেস তুমি হিয়া,এটা আমি খেয়াল না করলে তো ওরকমি পড়ে থাকতো,পরে রক্তজমে গিয়ে ইনফেকশন হলে খুব ভালো হতো

হিয়াঃ আমি কি করে জানবো

উজান আর কথা না বাড়ির ফাস্ট এইড বক্স এনে খুব যত্নভরে হিয়ার কাটা জায়গাটা ব্যান্ডেজ করে দেয়,হিয়া কাঁদবে না হাসবে কিছুই বুঝতে পারছে না,কতোক্ষনে সে তোয়ালে খুলে জামা টা চেঞ্জ করবে এটাই হচ্ছে এখন ওর মূল কাজ,উজানের ব্যান্ডেজ করা হবার সাথে সাথেই হিয়া ওর পাশে পড়ে থাকা জামা টা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে চেঞ্জ করে বাহিরে আসে

রাত এখন প্রায় দুটো,বাহিরে তুমুল ঝড়,সব কিছু লন্ডভন্ড হয়ে যাবার উপক্রম,বাজ পড়ছে থেকে থেকে,বজ্রপাতের শব্দে জানালার থাই থেকে শুরু করে সব কাঁপছে

বাসবিঃ রাজা তোরা ঠিক আছিস তো রুমে,ব্যালকুনিতে যাস না কিন্তু গেট লাগিয়ে রাখ,হিয়াকে কিন্তু দেখে রাখিস,ভয় যেনো না পায় আবার

উজানঃ মা রেহানকে বলো রহিমচাচাকে ফোন করে বলতে জেনারেটরের লাইন টা ওফ করে দিতে,বলা যায় না যা ঝড় হচ্ছে

বাসবিঃ হ্যা বিহান বলছে ফোনে,আমি জিনির কাছে শুতে গেলাম,ও ভয় পাচ্ছে,তুই হিয়াকে দেখে রাখ কিন্তু

উজানঃ ঠিক আছে,,,,,(সোফার কাছে গিয়ে হিয়ার পাশে বসে)হিয়া

হিয়াঃ হুম

উজানঃ ভয় করছে

হিয়াঃ হালকা,এরকম শব্দ করছে কেনো আকাশ টা

উজানঃ আকাশ টা রেগে আছে ভীষণ তাই

হিয়াঃ আপনার রাগের চাইতেও বেশি রাগ নাকি আকাশ টার আজ?

উজানঃ আমার আবার রাগ আছে নাকি

হিয়াঃ নেই বলছেন

উজানঃ কি জানি,,,,উঠো বিছানায় গিয়ে ঘুমোও,এখানে একা আরো ভয় করবে

হিয়াঃ আমি এখানেই ঠিক আছি,আপনি ঘুমোননা আপনার না কাল অফিস আছে

হিয়া আর কিছু বলার আগে জেনারেটর ওফ হয়ে কারেন্ট চলে যায়,ঘর অন্ধকার,আর এই অন্ধকারে হিয়া ভয় পেয়ে উঠে বসে

উজানঃ কাল তো তোমারো কলেজ আছে,দেড়ি করে ঘুমোলে চলবে,আসো

হিয়াঃ কিন্তু আমি পারবো এখানে একা

উজানঃ হিয়া আবার আমার উপর কথা

হিয়াঃ যাচ্ছি,হাত টা ধরুন

উজান ফোনের টর্চ জ্বালিয়ে হিয়াকে বিছানায় নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দেয়,চোখে ঘুম থাকায় হিয়া তখনি তখনি ঘুমিয়ে পড়ে,তার কিছুক্ষণ পর উজান,সকালের জানালার থাইয়ের সরু ফাঁক দিয়ে আলো এসে জোড়ো হয় রুমের মধ্যে,এতো রোদের তেজ কে বলবে কাল এতো ঝড় হয়েছিলো,হিয়ার ঘুম ভাঙ্গতে শরীর টাকে আড় মোড়ে দিয়ে চোখ খুলতে হিয়া নিজেকে উজানের বুকের উপর আবিষ্কার করে পুরো থ হয়ে যায় মুহুর্তে

হিয়াঃ আমি উনার বুকের উপর,কি করে,কখন,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here