?#The_Colourful_Fragrance_Of_Love?
Part: 20 (অন্তিম পর্ব)
বহু ঝড়-ঝাপটা পেরিয়ে হিয়ার কোল জুড়ে আজ এসেছে তাদের দুই পুঁচকো সোনা,,দুটোই ছেলে বাচ্চা,,দেখতে একদম হুবহু উজানের মতো শুধু একজনের চুল গুলো খুব সিল্কি আর আরেকজনের কার্লি,,তবে দু’জনেরই আবার মায়ের মতো গলার কাছে একটা খুবই ছোট্ট তিলের দেখা পাওয়া যায়,,বয়স হবার সাথে সাথে যা চোখে পড়ার মতো হবে,,বড় জনের নাম শুভ্র আর তার দু মিনিট বাদে যার আগমন তার নাম রাখা হয়েছে অভ্র
আজ দুই সপ্তাহ হলো হিয়াকে ডিসচার্জ করে নিয়ে আসা হয়েছে হসপিটাল থেকে,,হিয়া এখন অনেকটা সুস্থ,,সিজারে বাচ্চা হয়েছে বোঝার উপায় নাই,,দুরন্তপনা করতে এখনো সে আগের মতোই চঞ্চল,,এদিকে উজানো ব্যস্ত তার সব কাজ ফেলে হিয়ার সবদিকে নজরদারি করতে,,তাইতো আজ দুপুরে উজান হিয়ার ঔষধ টা দিয়ে বলে গিয়েছিল আমি ফোন টা করে আসছি তুমি ঔষধ গুলো খেয়ে নেও তোতোক্ষনে,,এদিকে আজ বাসবি মানে উজানের মা,,সন্ধি নীলিমা সবাইকে দুপুরের খাবারের জন্য দাওয়াত করাতে সবাই এসে উপস্থিত,,তাই তো উজান চলে যেতেই বিরিয়ানির গন্ধ নাকে পৌঁছাতে মেয়ে ঔষধের কথা ভুলে গিয়ে দৌড়ে ছুটে গেছে রান্নাঘরে,,গিয়ে বাসবি সহ সবার সাথে জুড়ে দিয়েছে এক পালা গল্প,,পুঁচকো দুটো তো এখন সারাদিন ঘুমোয় আর ক্ষুধা লাগলে শুরু হয় বাড়ি কাঁপানো কান্না তাই হিয়া এখন অনেকটা আরাম করে ঘুরে বের হচ্ছে দুটোই ঘুমোচ্ছে বলে,,কিন্তু ফোনে কথা বলা শেষে এসে ঔষধের পাতাতে এখনো চারটে ঔষধ গুনে গুনে মিলাতে গিয়ে রাগে পুরো বোম হয়ে গেলো হিয়ার শাহরিয়ার সাহেব,,রাগ গিয়ে সোজা পড়লো হিয়ার উপর,,হিয়াও এবার একটু ঝেকে বসতে গিয়ে লেগে গেলো দুই টোনাটুনির ঝগড়া,, আজকে এই নিয়ে তিন বার তাদের ঝগড়া চলছে,,বাড়ির সবাই এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে তাই কেউ আর এদের বিষয়ে মাথা ঘামাতে ইচ্ছুক না
উজানঃ এজন্য এজন্য আমি বাচ্চা নিতে চাই নি এতো তাড়াতাড়ি,,নিজে যদি তুমি তোমার খেয়াল রাখতে না পারো তাহলে আমার বাচ্চা দুটোর যে তুমি কি দূর্দশা করবে কে জানে?
হিয়াঃ একদম বাজে কথা বলবেন না হ্যা,,আমি আমার পুঁচকো দু’টোকে একদম আমার বুকে আগলে আগলে রাখি,,এই এই কদিনে একবারো দেখেছেন আমার জন্য আমার বাবু দুটোর কোনো অসুবিধে হ’য়েছে
উজানঃ সে তো আমি কাজ ফেলে সারাক্ষণ বাড়িতে আছি বলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না,,আমি না থাকলে পারতে একা হাতে সব সামলাতে
হিয়াঃ (আঙ্গুল নেড়ে নেড়ে)এসব বলে বলে কিন্তু আপনি আমাকে underestimate করছেন হ্যা,,আর কে কে বলেছে অফিস বাদ দিয়ে এই সারাক্ষণ আমার আর পুঁচকো দুটোর পেছনে পড়ে থাকতে,,একবার শুধু অফিস থেকে নোটিশ আসুক খুব ভালো হবে তখন?চাকরি হারিয়ে দেখবো কোথায় গিয়ে আমাদের জন্য এতোসব জিনিস কিনে নিয়ে আসেন আপনি,,হু
উজানঃ আমি না তোমার মতো অপদার্থ না,,আমার সেন্স আছে আমি কতোদিন ছুটি নিয়েছি আর কতোদিন ছুটি নিতে পারবো,,আর আমার যদি কখনো চাকরি হারায়ও না আমি ঠিক নতুন চাকরি যোগাড় করতে পারবো,,এতোটুকু যোগ্যতা আছে আমার
হিয়াঃ এতোটুকু যোগ্যতা আছে আমার ম্যা ম্যা ম্যা ম্যা
উজানঃ (তেড়ে এসে)একদম আমাকে ভেঙ্গাবা না বলে দিলাম কিন্তু??
হিয়াঃ একদম আমাকে ভেঙ্গাবা না বলে দিলাম কিন্তু,,আমার ঠেকা পড়ছে আপনাকে ভেঙ্গানোর
উজানঃ সবসময় বেশি কথা,,দেখি এই ঔষধ টা খাও,,হা করো
উজান হিয়ার মুখে ঔষধ টা দিয়ে হিয়াকে পানি টা খাইয়ে দেয়
উজানঃ একটু সিরিয়াস হও হিয়া,,বড় হচ্ছো না এখন,,নিজের খেয়াল এখন নিজেকে রাখতে শিখতে হবে না,,আমি কি সবসময় থাকবো
হিয়াঃ দেখুন,,আমি কিন্তু আমার খেয়াল রাখি হ্যা যখন আপনি ছিলেন না ঔ মাস গুলো কিন্তু আমি একা একা সব সামলেছি,,,আর এতো তাড়াতাড়ি বাবু টা কে নিতে বলেছিলো শুনি আমি বলেছিলাম
উজানঃ তা নয় তো কি আমি বলেছিলাম
হিয়াঃ হ্যা বলেননি কিন্তু ঔ আদর করবার সময়ও তো আপনার হুঁশ জ্ঞান হারিয়ে যায় না
উজানঃ কি খারাপ তুমি ওমনি এখন সব দোষ আমার কাঁধে দিয়ে দিলে,,আদর আদর নেবো বলে কে লাফালাফি করে সবসময় শুনি
হিয়াঃ ইয়ে মানে হ্যা,,কিন্তু ভুল আপনারো আছে হ্যা প্যাকেট ছিলো না তো কি দরকার ছিলো আদর করার,,নিজে প্রটেকশন ছাড়া আদর করবে আর আসছে আমাকে কথা শুনাতে হু
হিয়া উজানকে একটা ভেংচি কেটে অভ্র আর শুভ্রর কাছে গিয়ে ঘুমন্ত বাচ্চা দুটোর মুখে হাত বুলিয়ে খেলতে শুরু করে
হিয়াঃ আমার বাবু দুইটা,,ইসস একদম আমার মতো হইছে,,বাবার মতো একটুও হয়নি,,বাবা টা খুব পঁচা না শুধু শুধু মা’কে বকে তাই না
উজান গিয়ে হিয়ার সাথে হিয়াকে জড়িয়ে ধরে তাদের পুঁচকো দুটোকে আদর করতে থাকে
উজানঃ বললেই হলো আমার মতো হয়েছে সবাই বলছে আমার মতো হয়েছে আর ম্যাডামের কথা শুনো
হিয়াঃ এখন তোমার মতো হয়েছে দেখবা কিছুদিন পর আমার মতো দেখতে হবে হু
উজানঃ না আমি চাই অভ্র আর শুভ্র আমার মতো হবে আর
হিয়াঃ আর?
উজানঃ আমাদের যে মেয়ে হবে সে হবে হিয়ান সে হবে একদম তোমার মতো, একদম একটা পরী
হিয়াঃ তাই বুঝি,,দুটো পুঁচকো আসছে দেখে কতো কথা আপনার,হিয়া বড় হও হিয়া এটা করা যাবে না ওটা করা যাবে না আর আপনি নিবেন আরেকটা মেয়ে,,কচু হবে আপনার দ্বারা,, এখন দেখি ছাড়ুন এখন আমাকে,,আমি গোসল করবো এরমধ্যে আমার সোনা পুঁচকো দুটো উঠে যাবে ওদের খাওয়াতে হবে কতো কাজ আমার
উজানঃ পাগলি একটা যাও,,কিন্তু বেশিক্ষণ পানি নাড়বা না,,তোমার ঠান্ডা লাগলে আমার বাবু দুটরো তো ঠান্ডা লাগবে বুঝো না,,তার উপর ওয়েদার টা দেখছো কি ঠান্ডা ঠান্ডা বৃষ্টি আসলে আরো ঠান্ডা লাগবে
হিয়াঃ এএএ আসছে আমার সবজান্তা,,জীবনে মনে হয় আর কারো বাচ্চা হয়নি,,দেখি ছাড়ুন এবার,,ওহ হো ছাড়ুন নাআআ
!
!
!
হিয়া গোসলে যায় ঠিকই কিন্তু মেয়ের আজ গোসল করে বের হতে হতে ঘন্টা দেড় একের মতো সময় লাগে,,এর মধ্যে বড় শুভ্র ঘুমিয়ে থাকলেও ছোট অভ্রের ঠিক ঘুম ভেঙে যায় ক্ষুধার চোটে,,আর ঘুম থেকে উঠেই শুরু হয় তার টোয়া টোয়া কান্না,,এদিকে অভ্রর কান্না দেখে উজান তো পুরো ক্ষেপে আগুন,,বারবার করে সে হিয়াকে বললো বেশি দেড়ি করে গোসল না করতে কম পানি নাড়াচাড়া করতে কিন্তু হিয়া কি করলো গোসল করতে গেলো তো গেলো আর বের হবার নাম গন্ধ নেই,,,,,,,,এদিকে অভ্র সোনার কান্না শুনে বালতির আর দুটো কাপড় কোনো মতে কেঁচে গায়ে ঝপঝপ পানি ঢেলে দৌড়ে এসে অভ্রকে খাওয়াতে শুরু করলো হিয়া,,এদিকে তার সামনে গটগট করে রাগে কটমট করছে তার শাহরিয়ার সাহেব,, উজান রাগ করবেই না বা কেনো?কে কে বলেছিলো এতোক্ষণ গোসল করতে,,কে বলেছিলো বালতির কাপড় গুলো ধুয়ে দিতে,,কে বলেছিলো এতো বাড়াবাড়ি করতে না আজকে হিয়াকে শাস্তি দিতেই হবে এর আগেও অনেক ছেলেমানুষী করেছে সে এখনো করছে,,তাই এখন হিয়াকে শাস্তি না দিলেই যে নয় উজানের।
হিয়া তার মেক্সির দুটো হুক খুলে অভ্রকে খাওয়াতে ব্যস্ত,,চুল মোছার সময় যে সে পায়নি তাই চুল দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ে ভিজিয়ে দিয়েছে তার পুরো পিঠ,,তার উপর বারান্দা থেকে আসা বৃষ্টির আগের দমকা বাতাস,,হিয়া এবার সত্যি সত্যি ঠান্ডায় কেঁপে উঠছে,,হিয়ার হাতের লোমকূপ গুলো সব দাঁড়িয়ে যাচ্ছে যেটা উজানের চোখে ধরা দিচ্ছে স্পষ্ট,,উজানের চোখে দিকে এই মুহুর্তে তাকানোর সাহস হিয়ার নেই,,উজানের চোখে আগুন জ্বলছে এই চোখে এখন হিয়া তাকালেই যে সে পুরো ভস্ম হয়ে যাবে______!!!!!!!!!!!!!!!!
হিয়াঃ কেমন করে দাঁড়িয়ে আছে দেখ,,মনে তো হচ্ছে গিলে খাবে,,উফফ যাচ্ছে না কেনো সামন থেকে,,আমি একটু খেলতেও পাচ্ছি না আমার ছোট সোনাটার সাথে,,কবে যে ছুটি গুলো শেষ হবে এনার,,
হিয়া দাঁত কিড়মিড় করে নিজ মনে বকবক করতে থাকে,,অভ্রর সাথে যে এখন একটু লুকোচুরি সে খেলবে উজানের ভয়ে সেটাও সে পাচ্ছে না,,উজান এখনো হাত দুটো ভাঁজ করে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে হিয়ার সামনে,,হিয়া একটা শ্বাস টেনে উজানের চোখের দিকে তাকিয়ে আবার টপ করে চোখ টা নামিয়ে নেয়,উজানের চোখ তো না যেনো চোখ দিয়ে রাগের লাল আভা ভেসে আসছে
হিয়াঃ (তোঁতলে তোঁতলে অভ্রর দিকে মুখ করে)ঔ খালা আজ দুদিন ধরে আসছে না না কতো গুলো কাপড় জমা হয়ে ছিলো,,মা আর এক হাতে কতো করবে তাই জন্য তো আমি একটু___আর ওয়াশিং মেশিন টা তো ঠিক করবো করবো করে করা হচ্ছে না না___আমি আমি কাল থেকে তাড়াতাড়ি উঠে সকাল সকাল সব সেরে___আপনি প্লিজ ওভাবে আর তাকিয়ে থাকবেন না আমার আমার ভয় করছে ভীষণ প্লিজজজ
উজান কিছু না বলে বারান্দার দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে আসলো,,এসে হিয়ার জামাকাপড় গুলো এক এক করে একটা ব্যাগে ভরাতে শুরু করলো না আজ হিয়াকে সে এতো সহজে ছাড়বে না,,এদিকে অভ্র তার মায়ের বুকের আরামে মায়ের বুকের উষ্ণতা পেয়ে খেতে খেতে আবার ঘুমিয়ে যেতেই হিয়া শুভ্রর পাশে অভ্রকে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে চারপাশে বালিশ দিয়ে একটা সুন্দর বেষ্টন তৈরি করে অভ্র শুভ্র দু’জনের কপালে আদরের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে উঠে বসলো,,
হিয়াঃ আপ আপনি আপনি আমার জামা কাপড় গুলো এভাবে ব্যাগে কেনো ভরছেন,,ও উজান কি হয়েছে আপনার আপনি কেনো এসব ব্যাগে??
উজানঃ আমি তোমাকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম না সেবার বলেছিলাম না মনে আছে,,পুঁচকো দুটো আসলে তোমার পরিণাম আমি কি করবো তুমি শুধু দেখবা
হিয়াঃ হ্যা সেগুলো তো পুরোনো হয়ে গেছে না এখন এইসব কথা কেনো আসছে এরমধ্যে
উজানঃ আসছে,,তুমি নিয়ে আসতে বাধ্য করেছে,,এতোদিনে শাস্তি টা দিলে তোমার কিছু একটা শিক্ষা হতো কিন্তু না তুমি তো তুমি,,তাই আজকে আমি তোমাকে শাস্তি দেবো,,কি শাস্তি দেবো জানো অভ্র শুভ্র কে তুমি যেমন আমার থেকে পাঁচ মাস আলাদা করে রেখেছিলে আমিও এখন তোমাকে তোমার মামুর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে সেই সেম কাজ করবো দেখবা কেমন লাগে নিজের বাচ্চা থেকে দূরে থাকতে?
হিয়াঃ আপনি এতো রেগে যাচ্ছেন কেনো,,আপনি কি সত্যি সত্যি আমাকে মামু বাড়িতে পাঠিয়ে দেবেন,,আমি আমি তো বলছি না আমার ভুল হয়েছে আমি কাল থেকে খুব ভোরে উঠবো বিশ্বাস করুন আমি আমি ভোরে উঠে সব কাজ সেরে সারাদিন এই এই বিছানায় বসে থাকবো,,প্লিজ আপনি এবারের মতো আমাকে মাফ করে দিন
উজানঃ অনেক মাফ করেছি আর না,,তুমি মহৎ সাজতে গিয়ে আমাকে আমার বাচ্চা দুটো থেকে দূরে রেখে যে অন্যায় করছো আজ আমি তোমাকে এর শাস্তি দেবোই দেবো?
হিয়াঃ আমি কিন্তু কান্না করে দেবো এবার সত্যি সত্যি,,আমি আমি কোথায় যাবো আমার বাচ্চা দুটো কে রেখে,,ওরা ওরা মা ছাড়া থাকতে পারবে বলুন আপনি,,ওদেরকে তো আমি খাওয়াই না বলুন আমি চলে গেলে ওরা কার কাছে খাবে,,ও উজান এরকম কঠিন শাস্তি আমাকে দেবেন না প্লিজ
উজানঃ আরো কতো কঠিন শাস্তি তোমাকে দেবো তুমি শুধু তাই দেখবে
হিয়া উজানের শাস্তি টা সত্যি সত্যি ভেবে নিয়ে কান্না করে দেয়,,কিন্তু উজানের মন গলে না কারণ সে তো চাইছে সে এখন হিয়াকে একটু শাস্তি দেবে তাই সে চুপ হয়ে এমনি এমনি মিছে মিছে হিয়ার জামা কাপড় গুলো ব্যাগে গুছিয়ে রাখছে,,হিয়া কাঁদতে কাঁদতে বাসবি সন্ধি নীলিমা সবার কাছে বিচার দিলে সবাই এসে উজানকে বোঝাতে থাকে এরকমটা না করতে কিন্তু উজান চোখের ইশারায় বলে আমি এসব কিছুই করবো না আমি শুধু একটু হিয়াকে শাস্তি দিতে মিছে মিছে এসব করছি,,এদিকে কাঁদতে কাঁদতে তো হিয়া এবার বন্যা করে ফেলে
নীলিমাঃ আহ উজান কেনো বাচ্চা মেয়ে টার সাথে এরকম করছিস,,ও কি কখনো এরকম দেড়ি করে হয়েছে না হয় আজ একটু দেড়ি
উজানঃ নীলিমা তুমি জাস্ট চুপ থাকো একবার ওর চুল গুলো দেখো তো কি রকম পানি ঝরছে দেখো,,আরে এতোটুকু তো ওর বোঝা দরকার অভ্র আর শুভ্র দুজনকেই ও ব্রেস্ট ফিডিং করায় ওর ঠান্ডা লাগলে তো আমার বাচ্চা দুটোর ঠান্ডা লাগবে
হিয়াঃ বলছি তো আমি আর কালকে থেকে এরকম করবো না?
নীলিমাঃ (হিয়ার চোখ মুছে দিয়ে) আর কাঁদে না,,আমরা আমাদের এই ছোট্ট বোন টাকে কোথাও দিয়ে আসতে পারি কি,,অভিক আসুক অভিক খুব করে বকে দেবে এখন উজানকে
উজানঃ এ-ই যে আর এরকম ছেলেমানুষী করবে তুমি??করবো মামু কে ফোন??করে বলবো হিয়াকে এসে নিয়ে যেতে??
সন্ধিঃ আহ উজান,,দেখেছিস মেয়েটা কেঁদে কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছে তারপরো কেনো এরকম করছিস,,নীলিমা যা তো গিয়ে উজানের থেকে ব্যাগ টা নিয়ে হিয়ার সব জামা গুলো গুছিয়ে দে আবার সুন্দর করে,,আর উজান তুই যা তো অফিস,, আমি এবার সত্যি সত্যি বসকে বলে তোর পোস্টিং এর ব্যবস্থা করবো থাম,, দেখবো তখন কি করে এই সারাদিন হিয়াকে তখন বকাবকি করিস
নীলিমা হিয়ার জামাকাপড় গুলো আবার আগের জায়গায় গুছিয়ে দিয়ে সন্ধির সাথে মিলে ভাত বাড়তে চলে গেলে হিয়া ড্রেসিং আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে খুতখুত করতে থাকে,,উজান এখনো হাত দুটো ভাঁজ করে হিয়ার সামনে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে
উজানঃ কান ধরো,,
হিয়াঃ কা কান কান ধরবো কেনো?
উজানঃ কান ধরতে বলেছি না কান ধরো(গম্ভীর কন্ঠে)
হিয়া কাঁপা কাঁপা হাতে কান ধরে দাঁড়িয়ে যায়
উজানঃ এখন ৫০বার কান ধরে উঠবস করো,,,,কুইক
হিয়াঃ আপনি এরকম কেনো করছেন আমার সাথে,,আমি আমি কিভাবে উঠবস করবো,,আমার কষ্ট হবে তো
উজানঃ যা বলছি তা করো,,না হলে ফোন করবো মামুকে কোনটা?
হিয়াঃ নাআআআ?উজান আমার তো সবে সবে সিজার হয়েছে না বলুন সেলাই তো এখনো শুকোয়নি আমি কি করে এই পেট নিয়ে উঠানামা করবো একটু বুঝুন
উজানঃ বেশ তাহলে কান ধরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকো পাঁচ মিনিট আর বলো আজ থেকে আমি উজানের সব কথা শুনবো,,কুইক
হিয়াঃ এ্যা হ্যা আপনি কেনো এরকম করছেন আমি পাঁচ মিনিট কি করে কান ধরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকবো,,আমার পায়ে ব্যাথা লাগবে না?
উজান চোখ রাঙালে হিয়া এক পায়ে দাঁড়িয়ে কান ধরে থাকে আর বলতে থাকে আজ থেকে সে উজানের সব কথা শুনবে,,আজ থেকে সে উজানের সব কথা শুনবে,,হিয়ার এরকম নাজেহাল অবস্থা দেখে উজান একটা হাসি দিয়ে টুক করে ফোন বের করে হিয়ার একটা ছবি তুলে নেয়,,তারপর দরজা লাগিয়ে দিয়ে এসে বিছানা থেকে তোয়ালে টা তুলে হিয়ার কাছে এসে হিয়াকে থামিয়ে দিয়ে হিয়ার মাথার চুল গুলো মুছে দিতে থাকে
উজানঃ আর ভুল হবে এরকম
হিয়াঃ না,,কিন্তু আপনি তাড়াতাড়ি ঔ ওয়াশিং মেশিন টা ঠিক করে আনবেন আগে বলুন মা’র এতো কাজ মা কি করে সব একা করবে বলুন,,
উজানঃ আমি আছি আমি বাবুদের কাপড় ধুয়ে দেবো খুশি
হিয়াঃ হুম দেখা যাবে
উজান হিয়ার মাথা মুছে দিয়ে হিয়াকে জড়িয়ে ধরে হিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়,,পাক্কা পাঁচ মিনিট হিয়াকে আদর করে একটা দম ফেলে দুজনে
হিয়াঃ আপনি না সত্যি,,অভ্র বা শুভ্র কেউ ঘুম থেকে উঠে দেখলে কি হতো
উজানঃ উঠেনি তো না,,আর ওরা তো কেবল দুসপ্তাহ তাই না বলো
হিয়াঃ হুম ওজন্য আপনিও এরকম করবেন সত্যি!!আসুন খাবো এবার খুব খিদে পাইছে আমার,,হু
!
!
!
কিছু দিন পর,,হঠাৎই কথা বলতে নীলিমা আর অভিকের মাঝে উজানের কথা ঢুকে পড়ায় অভিক রাগে পুরো বোম হয়ে যায়,,দু এক কথায় নীলিমার সাথে তার লেগে যায় তার তুমুল ঝগড়া
নীলিমাঃ কি কি ভুল বলেছি আমি কি ভুল বলেছি,,উজান টাকে গিয়ে দেখ তার পিচ্চি টার কতো কেয়ার করে আর তুই এই ছুটির দিনেও তোর কাজ নিয়ে বসে আছিস তো আছিসই যেনো কাজ না করলেই না
অভিকঃ নাই তো,,হানিমুনে যেতে চেয়েছিলি কক্সবাজার নিয়ে গেলাম কিন্তু তারপর কি আবার করলি,,তোর আবদারে রাঙামাটি সেন্টমার্টিন হয়ে কতো জায়গা ঘুরে আসলাম,,টাকা তো মনে হয় গাছে ধরে না আমার
নীলিমাঃ তুই আমার সাথে এরকম করছিস তো ঠিক আছে আমি আর থাকবোই না তোর সাথে চলে যাবো আমি,,তোর টাকার খোটা শোনার চাইতে আমি চলেই যাবো এই বাড়ি থেকে
অভিকঃ যা না যা কোথায় যাবি উজানের কাছে যাবি,,যা তোর দিকে এখন উজান ঘুরেও দেখবে না,,যার জন্য এতো পাগলামি করেছিস একদিন সে তো তোকে কাঁচকলা দেখিয়ে পালিয়ে গেলো
নীলিমাঃ তুই কিন্তু খুব কথা বলছিস অভিক,,আমার মুখে উজানের কথা শুনলে বোধহয় তোর খুব জ্বলে তাই না রে,,জ্বলবেই তো,,এবার থেকে সারাক্ষণ আমি উজান উজান করবো দেখবো তোর কি রকম লাগে(গাল ফুলিয়ে)
নীলিমার কথায় রাগে আগুন হয়ে যায় অভিক,,রুমের দরজাটা ধাম করে লাগিয়ে বিছানায় এসে নীলিমার উপর উঠে নীলিমাকে চেপে ধরে গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে
অভিকঃ হ্যা জ্বলে খুব জ্বলে আমার,,তোর সাহস হয় কি করে আমার সামনে তুই উজানের নাম নিস
নীলিমাঃ অভিক কি করছিস দেখ বাড়িতে আজ বাবা বড় ভাইয়া বড় ফুফু সবাই আছে তুই এই ভরা সন্ধ্যায় গেট লাগিয়ে দিলি ওরা কি ভাববে বল
অভিকঃ যা ইচ্ছে ভাবুক আই ডোন্ট কেয়ার,,তুই বল তুই তুই আর আমার সামনে উজানের নাম নিবি
নীলিমাঃ আচ্ছা মুশকিল তো তুই উজানের সাথে সারাদিন কাজ করে বের হোস তখন কোনো সমস্যা হয় না এই আমি একটু উজানের নাম নিলাম বলে তোর এতো গায়ে লাগছে
অভিকঃ হ্যা লাগছে,,তোর মুখে উজানের নাম শুনলে আমার ভয় হয়,,ভয় হয় তুই আমাকে রেখে যদি আবার কখনো উজানের কাছে পালিয়ে যাস
অভিকের কথায় নীলিমা ঠাস করে অভিকের গালে একটা চড় বসিয়ে দেয়
নীলিমাঃ তুই ভাবলি কি করে আমি এ-ই রকম একটা জঘন্য কাজ কখনো করবো??সব ভুলে তোকে নিয়ে একটা সুন্দর জীবন সাজাতে চেয়েছি আর তুই এখনো,,তোর যখন আমাকে নিয়ে এতো অবিশ্বাস ছিলো তাহলে সেদিন সুইসাইডের ভয় দেখিয়ে জোর করে আমাকে বিয়ে করলি কিসের জন্য,,করতি না
অভিক ভয়ে নীলিমা কে আবার ওর বুকে জাপ্টে ধরে❤️
অভিকঃ তুই রাগ করিস না নীলি,,অনেক কষ্টে তোকে আমি নিজের করতে পেরেছি তাই তোকে হারানোর ভয় টাও যে আমাকে ঘুমোতে দেয় না,,খুব ভালোবাসি তোকে খুব,,আর কখনো এরকম কথা বলবো না আর কখনো না এই দেখ কান ধরছি
নীলিমাঃ আর বললে না তোকে ছেড়ে দিয়ে আমি এই বাড়ি ছেড়ে সত্যি সত্যি উজানের কাছে চলে যাবো
অভিকঃ পা ভেঙে রেখে দেবো তোর আমি?দরকার পড়লে শিকল দিয়ে তোকে আঁটকে রাখবো
বলেই অভিক নীলিমার পুরো মুখে চুমু এঁকে দেয়
নীলিমাঃ বলছি কি অভি উজান তো বাবা হয়ে গেলো না,,ওদিকে সন্ধিও তো কনসিভ করেছে চার মাস হলো এখন যদি আমি আর তুই
অভিকঃ নীলপাখি তোমারো কি একটা বাবু চাই নাকি(কপাল কুঁচকে)
নীলিমাঃ (হালকা লজ্জা পেয়ে)হ্যা মানে তুই যদি!!
অভিক খুশিতে লাফিয়ে নীলিমাকে উল্টেপাল্টে জড়িয়ে ধরে কি থেকে কি করবে বুঝে উঠতে পারে না,,
নীলিমাঃ অভিক ছাড় এখন,,সবাই কি ভাববে
অভিকঃ আমি তো এখুনি বাবু নেবো নীলপাখি,,এক্ষুনি মানে এক্ষুনি?
নীলিমাঃ যা অসভ্য,,ছাড় না অভিইইই
!
!
!
অভ্র আর শুভ্রর এখন চার মাস দশদিন চলছে,,শুভ্র আগের মতো শান্ত থাকলেও ছোট অভ্র কিন্তু এই কমাসে ঔ টুকুনি ছোট হাত পা নাড়িয়ে ওর চঞ্চলতার প্রমাণ দিয়ে যায় রোজ!!!!___সকাল থেকেই ঝড়ো বৃষ্টি শুরু হলেও দুপুরে থেকে তো আকাশ কালো করে বৃষ্টি পড়ছে,,হিয়া অভ্র শুভ্র কে খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে নিজেও শুইয়ে আছে,,বড় করে বানিয়ে আনা নতুন খাট টা দেওয়ালের একদম ধার ঘেঁষে লাগিয়ে দেওয়া আছে,,যখন উজান থাকে তখন অভ্র শুভ্র মাঝে হিয়া অভ্রর পাশে আর উজান শুভ্রর সাইডে,,আর হিয়া যখন দুপুরে একা ঘুমোয় তখন শুভ্রকে বালিশ টালিশ দিয়ে দেওয়ালের কিনারে দিয়ে অভ্রকে ওর মাঝে নেয়,,কারণ শুভ্র ঘুমোলে শান্ত হ’য়েই থাকে,,যে পাশে ঘুমোয় ওপাশেই থাকে কিন্তু অভ্র তো আবার উল্টো,,দশ পনের মিনিট পর পর ওর না নড়লে যেনো ঘুম ঠিক মতো হয় না,,এরমধ্যে উজানের আজ ছুটি থাকায় সে সব কাজ সেরে ঘুমোবে বলে হিয়ার পাশে কিনারে ঘুমোতে গিয়ে খেয়ে বসে হিয়ার একটা চিৎকার করা ঝারি
হিয়াঃ আআআআআআ কাল থেকে বলছি দাঁড়ি গুলো কাটতে দাঁড়ি গুলো কাটতে কথা কানে যায় না,,ইসস কি ঘুতো দিলো
উজানঃ সরি সরি মনে ছিলো না
হিয়াঃ মনে ছিলো না তো এখন গিয়ে আগে সেফ করে দাঁড়ি গুলো কেটে আসুন,,নাহলে কিন্তু আমি এই আমাকে চুমু খেতে দেবো না হ্যা?
উজানঃ কাটতেই হবে!!
হিয়াঃ হবে মানে এক্ষুনি হবে
উজানঃ হুম?
উজান রাগে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি গুলো দিয়ে হিয়ার পুরো মুখ ঘষে দিয়ে হিয়াকে ঘুতো দিয়ে উঠে যায়
হিয়াঃ উফফ জ্বালিয়ে দিলো গাল গুলো আমার,,,এই যে শুনছেন যাওয়ার আগে এই মশারী টা একটু টাঙ্গিয়ে দিয়ে যান না খুব মশা কেনো জানি আজকে
উজানঃ বৃষ্টি দেখে মশা গুলো বের হচ্ছে মনে হয়,,কালকে লোক ডেকে বাড়ির পেছন টা একটু পরিষ্কার করে নিতে হবে তাহলে এই মশা গুলো থাকবে না
হিয়াঃ হুম
উজান মশারী টা ফেলে দিয়ে সুন্দর মতো গুন্জে দিয়ে অভ্র আর শুভ্রর মুখে চুমু এঁকে ওয়াশরুমে সেফ করতে যায়
হিয়াঃ আমি ভাই এতোক্ষণে একটু ঘুমিয়ে নেই নাহলে আবার এসে উনি আমাকে ঘুমোতে দিবে না,,আদর করতে চাইবে তার চেয়ে এই দশমিনিট ঘুমিয়ে নিলে আমার শান্তি,,হুম?
হিয়া চোখ বন্ধ করে ঘুম দিতে চেষ্টা করে এদিকে উজান সেফ করে এসে তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বারান্দায় গিয়ে দাঁড় হয় আর তখনি ওর নজর যায় একটা প্যাকেটের উপর,,এই প্যাকেট টা আবীর যখন কাল বাড়িতে এসেছিলো তখন হিয়ার হাতে দিয়েছিলো
উজানঃ হিয়া হিয়াআআ,,হিয়া
হিয়াঃ হুম বলুন না আমি একটু ঘুমোচ্ছি না
উজানঃ আবীরের দেওয়া প্যাকেট টা এখানে কি করছে তুমি খুলে দেখোনি?
হিয়াঃ দেখছেন কি ভুলো মন আমার,,কাল রাতে ঔ তাড়াহুড়ো করে মামুর সাথে কথা বলতে গিয়ে ওটা ওখানেই টুল টার উপর ফেলে রেখেছি,,আপনি নিয়ে এসে একটু খুলে দেখুন না ওটায় কি আছে
উজানঃ তুমি ঘুমোও আমি দেখছি
হিয়া আবার কম্বল মুড়ে ঘুমে পড়ে,, উজান ঔ প্যাকেট টা খুলে দেখে ওখানে একটা ডায়েরির কিছু ছেঁড়া পাতা আর একটা নীল খামে মোড়া চিঠি ভাঁজ করা আছে,,উজান টুল টায় বসে যায়,, আলতো হাতে চিঠি টা খুলে পড়তে শুরু করে,,বৃষ্টির ছাট এসে খানিকটা ভিজিয়ে দেয় সেই চিঠিটাকে,,দমকা বাতাসে চিঠি আর ডায়েরির পাতা গুলো উজানের হাতে যেভাবে পারে উড়তে থাকে,,কাগজ উড়ার শব্দ কানে ভাসে!!!!
?
আবীরঃ সেই দুই বেনী,, সবুজ রঙের স্কুল ড্রেস,,সাদা শু,, হাতে চিপসের প্যাকেট নিয়ে মাঝেমধ্যেই তোমাস মামুর সাথে তুমি আসতে উজানদের বাড়িতে আর আমি তোমার অগোচরে অদৃশ্য ভাবে মিশে যেতে থাকতাম তোমার অন্তরালে,,,,,,লুকিয়ে চুড়িয়ে কতো যে দেখার চেষ্টা করতাম তোমাকে-তোমার ঔ মায়া মুখের হাসি টাকে,,আর আজ সেই তোমাকে দেখো বিয়ে করে দুটো বাচ্চা মানুষ করছো কতো সাবলীল ভাবে,,,,,হ্যা হিয়াপাখি তোমার প্রতি একটা নেশা অনেক আগে থেকেই আমার মনে জন্মেছিলো যেসময় তুমি এ বাড়িতে বউ হয়ে আসো নি তারো আগে থেকেই এই নেশা টা এই মোহটা আমার কাজ করতো,,,,বিয়ের আগে যতোবার তোমাকে দেখেছি তোতোবার তোমাকে আমার এই ডায়েরি তে বন্দি করে নিয়েছি,,আর এই বন্দি করা লেখা গুলো তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা ছিলো কি না জানি না তবে তুমি যদি আমার হতে ব্যাপারটা কিন্তু মন্দ হতো না বলো,,,,,,জানো হিয়া পাখি ভালোবাসার একটা অন্য রকম fragrance থাকে একটা সুপ্ত গন্ধ থাকে সেই গন্ধ,সেই fragrance টার মাঝে একটা মোহ থাকে-একটা একটা অন্য রকম নেশা থাকে যেই নেশায় না চাইতেও আমরা আসক্ত হয়ে পড়ি,মাদকের থেকেও বহুগুন প্রখরতা থাকে এই নেশায় এই গন্ধে,,সব ভালোবাসার ই একটা নিজস্ব colourful fragrance থাকে,,এই fragrance টা হয় কারো কাছে রামধনুর মতো রঙীন কারো কাছে মরুর মতো উতপ্ত কারো কাছে বা মেঘলা আকাশের মতো ধূসর,,অভিকের গল্পে নীলি ছিলো তার লুকোনো নেশা,,নীলির গল্পে উজান ছিলো অপেক্ষার অন্য এক গন্তব্য,,উজানের গল্পে তুমি ছিলে উজানের বেঁচে থাকার অক্সিজেন,,তোমার গল্পে উজান ছিলো সব প্রাপ্তির শেষ ঠিকানা,,আর আমার গল্পে,আমার গল্পে তুমি ছিলে আমার প্রাপ্তির খাতায় অপ্রাপ্তির এক সুন্দর সমাপ্ত❤️ছিলে কেনো বলছি জানো কারণ আর কিছুদিন পর আমার জীবনে আসতে যাচ্ছে ঠিক তোমারই মতো একটা পরী আমার প্রিয়ন্তি❤️,,বলে ছিলাম না আমি যাকে বিয়ে করবো তার ঠিক তোমার মতো একটা গলার কাছে তিল থাকতে হবে আমার প্রিয়ন্তিরো কিন্তু ঠিক তোমার মতো গলার কাছে একটা তিল আছে,,আর আমার প্রিয়ন্তি কিন্তু তোমার চাইতেও অনেক মিষ্টি______আমি চাইলেই ডায়েরির এই পাতা গুলো পুড়িয়ে বা ছিঁড়ে ফেলতে পারতাম কিন্তু তাতে হয়তো তোমার প্রতি আসা আমার অনুভূতি গুলোকে অসম্মান করা হতো তাই এগুলো আমি তোমাকে দিয়ে দিচ্ছি আর স্বীকার করছি হ্যা এই আবীর একটা সময় তোমার মোহতে আটকা পড়েছিলো তোমার হাসির fragrance এ এই আমি অদৃশ্য ভাবেই জড়িয়ে গিয়েছিলাম একটা সময়!!!!!_____এখন এই ধুলে ভরা ডায়েরির পৃষ্ঠা গুলোকে তুমি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করবে না আগুনে জ্বালিয়ে দেবে এটা সম্পূর্ণ তোমার সিদ্ধান্ত,,আমি আর তোমাকে নিয়ে কোনো স্মৃতি কোনো অনুভূতি কোনো নেশা কোনো ধূসর fragrance নিজের মধ্যে পুষিয়ে রাখতে চাই না,,প্রিয়ন্তীকে নিজের সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসতে চাই নিজের সর্বস্ব দিয়ে সুখে রাখতে চাই,, নীলি যেমন অভিকের মাঝে তার ভালোবাসার fragrance টাকে খুঁজে নিয়েছে উজান যেমন তোমার মাঝে ওর রঙীন ওর colourful fragrance টাকে খুঁজে নিয়েছে আমিও তাই চাই আমার প্রিয়ন্তীর মাঝে একটা অন্যরকম আদরের ছোঁয়া আদরের fragrance খুঁজে নিতে,,,,,,,,,তবে আজ আরো একটা জিনিস তোমাকে বলার ছিলো,,সেদিন ঔ বাসে যখন তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দেবো বলে একসাথে ফিরছিলাম আর তুমি উজানের ছবি বুকে লেপ্টে ক্লান্ত শরীরে নিজের সীটে ঘুমিয়ে গিয়েছিলে সেদিন আমি তোমার অজান্তে তোমাকে প্রথম ছুঁইয়ে দিয়েছিলাম,,মানে তোমার কপালে একটা স্নেহের পরশ বুলে দিয়েছিলাম,,সরি হ্যা না বলেই কাজ টা করেছিলাম সামলাতে পারি নি নিজেকে,,তবে যেটুকু সাহায্য তখন তোমাকে আমি করতে পেরেছি সেটাকে কখনো দয়া হিসাবে গণ্য করবা না প্লিজ হিয়া,,সেটা আমি মন থেকেই করেছি অপ্রাপ্তির খাতা টা একটু পূর্ণ করার ইচ্ছে জন্মেছিলো ক্ষনিকের জন্য এই যা,,,,কিন্তু সেটা শুধু ক্ষনিকের জন্য কারণ পর মুহুর্তেই আমি বুঝে গিয়েছি হিয়া আর উজানের তো একটা আত্নার সম্পর্ক আছে এই সম্পর্কে যতোই কেউ দেওয়াল তৈরি করতে চেষ্টা করুক যতোই টুকরো টুকরো করে ছিন্ন বিছিন্ন করে দেবার চেষ্টা করুক উজানের থেকে তার হিয়াকে আর হিয়ার থেকে তার উজানকে কেউ আলাদা করতে পারবে না কেউ না,,উজান শুধু হিয়ার হিয়া শুধু উজানের দুজনে একই fragrance দিয়ে তৈরি একই বৃওে যাদের বসবাস,,,,,,,,,আমার বিয়ের আমন্ত্রণ রইলো,, সামনের ভ্যালেনটাইন আমার আর আমার প্রিয়ও বিয়ে,, স্বপরিবারে এসো কিন্তু,,কার্ড সাথে পাঠিয়ে দিলাম,, ও হ্যা আর একটা কথা আমার প্রিয় কিন্তু তোমার কথা জানে আর এটাও আমি তার কাছে স্বীকার করেছি আমি তোমার কপালে একবার আমার ঠোঁট স্পর্শ করেছি!!যদি কখনো সামনাসামনি হয়ে যাও ওকে দেখে আবার হিংসে করো না কিন্তু আমার প্রিয় কিন্তু উজানের এই পিচ্চি টার চাইতেও অনেক মিষ্টি!!পারলে এই পৃষ্ঠা গুলো জ্বালিয়ে দিও আমি পারিনি জ্বালাতে তোমার প্রতি আসা অনুভূতি টাকে অসম্মান করতে চাই নি এই যা
ইতি
আবীর
?
চিঠি টা পড়ে একটা বড় দম ছাড়লো উজান,,অজান্তেই একটা নীরব হাসি দিয়ে উঠলো সে,,কিছুক্ষণ চিঠি টা আর ডায়েরির পৃষ্ঠা গুলো উল্টেপাল্টে দেখে সে ওগুলো আবার আগের জায়গায় সুন্দর মতো গুছিয়ে ড্রেসিং এ এনে রাখলো,,আলতো পায়ে দরজা জানালা সব লাগিয়ে মশারি তুলে কম্বলের মাঝে ঢুকে হিয়াকে জড়িয়ে ধরলো
হিয়াঃ উফফ হাত গুলো কি ঠান্ডা বরফ বরফ!!
উজান হিয়ার কপালে একটা স্নেহের পরশ এঁকে দিয়ে হিয়াকে সামনের দিকে সোজা করে ঘুরিয়ে হিয়ার হাতের ভাঁজে নিজের আঙ্গুল রাখলো
হিয়াঃ কি দিয়েছে ভাইয়া প্যাকেটে?
উজানঃ কি জানি তোমাকে দিয়েছে তুমি দেখো আমি দেখিনি,,বিয়ের কার্ড হবে হয়তো বাহির থেকে মনে হলো
হিয়াঃ হুম যাক ভালো হবে এখন,,সবাই বিয়ে করে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে নিক,,নাহলে এই আমি ছোট হয়েও বড় বড় হয়ে থেকে যাবো
উজানঃ হুম এখন ওসব বাদ,,কাল থেকে তোমার স্টাডি টাইম পড়াশুনা তো যেনো আর করতে হবে না না
হিয়াঃ হে হে করবো তো,,আমার বাবু দুটো আর একটু এই যে এই অল্পইকটু বড় হলে তারপর করবো
উজানঃ বেশি পাকা,,দেখি এখন আমাকে আদর দেও দেখি,,অভ্র শুভ্র আসার পর তো আমার আদর এখন কমেই যাচ্ছে দিনদিন
হিয়াঃ কি হিংসুটে দেখো কোথায় বলবে আমার ভাগের আদরো তুমি আমার বাচ্চা দুটোকে দেবে তা না উনি কি বলছে শুনো
উজান একটা হাসি দিয়ে হিয়ার মেক্সির হুক দুটো খুলে দিয়ে হিয়াকে জড়িয়ে ধরে
হিয়াঃ এই দেখো অভ্র আর শুভ্র কি রকম হাসছে দেখো,,ওরকম করো না প্লিজ ওরা দেখবে
উজানঃ কোথায় হাসছে,,ওরা তো ঘুমোচ্ছে
হিয়াঃ না উজান তোমার হাত ঠান্ডা
উজানঃ আচ্ছা আচ্ছা কিছু করবো না,,আমাকে এই তোমার বুকে জড়িয়ে ধরো আমি একটু ঘুমোই তাহলে চলবে
হিয়াঃ আচ্ছা আচ্ছা আসো আসো!!
___________________?সমাপ্ত?_______________________
জ্বর নিয়ে লিখেছি জানি না কি রকম লিখতে হয়েছে,,এই গল্পের পুরো জার্নি টা কি রকম লাগলো জানাতে ভুলো না কিন্তু??