#In_The_Depths_Of_Love
#Mizuki_Aura
#Part_08
আবির বর্তমানে ব্যালকনিতে দাড়িয়ে আছে। “চোখ যে মনের কথার প্রতিফলন ঘটায় , কথাটার সত্যতা বোঝা যায় তোমার দিকে তাকালে রাই….. ” রাই এর চোখে আবির যতবারই তাকিয়েছে ও শুধু নিজের জন্য ঘৃণাই দেখেছে। তবে তাতে আবিরের কোনো অসুবিধে নেই। “কিছু মানুষ ভুলকে নিয়েই বাঁচতে শুরু করে, ভেবে যে সেই ঠিক। তবে পয়সার একটা নয় দুটো পিঠ থাকে……”
রাই আয়নার সামনে দাড়িয়ে কানের দুলগুলো খুলছে, চোখে পড়লো কাজলটা। ঠিক এই একই কাজল নিশান ও ওকে দিয়েছিল।
_________________অতীতে
রাই আয়নার সামনে দাড়িয়ে কাজল লাগাচ্ছে। নিশান এর দেওয়া। তখনি ওর মা ঘরে এলো “এই রাই…. শোন”
রাই ঘুরে দাড়ালো।
“কাল কিন্তু তুই আর মায়োই যাচ্ছিস মিহিরদের বাড়িতে….”
“না আমি যাবনা….” বলে রাই জানালার সামনে গিয়ে দাড়ালো।
ওর মা অবাক হলো “যাবিনা মানে? কেনো? এতদিন তো লাফালাফি করছিলি যাবি যাবি….”
“মা… বললাম তো যাবো না। তুমি যাও এখন…..” বলে রাই মুখ ফিরিয়ে নিলো।
“আরে….”
“মা, যাও তো….” বলে রাই বিরক্তিসহকারে বাহিরে বেরিয়ে গেলো। ওর মা বেশ অবাকই হলেন মেয়ের কথায়।
রাই ছাদে বসে আছে। বাড়ির সকলে নিচে উঠানে কথা বলছে। একটা রীতি আছে , যে বাড়ির বড়ো একজন মেয়ের বিয়ের পর তার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কিছুদিন থেকে আসে। দেখার জন্য যে মেয়ে সুখে আছে কিনা। ঠিক সেজন্যই আগামীকাল সুরাইয়ার দাদী যাচ্ছেন সেবাড়ি। সাথে রাই এরও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু……..
“গতকাল আবির যা করেছে। তার পরে নিশ্চই আমি ওই বাড়িতে গিয়ে ওর মুখ দেখতে চাইনা। ” রাই নিজের ডান হাতের দিকে তাকালো। গতকাল চুড়ি ভাঙার কারণে হাতে কেটে কেটে গেছে। ওর মা জিজ্ঞেস করেছিল, ও বলেছে দরজার সাথে ধাক্কা লেগে হাতের চুড়ি ভেঙে গিয়েছিল। তাই কেউ কিছু সন্দেহ করেনি।
।
।
।
।
পরদিন…….
“আমি যাচ্ছিনা…. যতই যে জোর করুক আমি যাবনা” বলে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে রাই।
“কেনো দাদুভাই? আমার সাথে যেতে কি তোমার অসুবিধে আছে নাকি?” বললো দাদী।
রাই মলিন স্বরে বলল ” না দাদু…. সেটা না। এমনিতেই যাবনা। ভালো লাগছেনা”
“তাহলে যেতে সমস্যা কি? যা। এমনিতেও এতো বছর পর গ্রামে এসেছিস , ঘুরবিনা একটু?” বললো রাই এর খালা।
“না আমি যাবনা …. মা বল কিছু….”
রাই এর মা কিছু বলবে তার আগেই গাড়ির হর্নের শব্দ কানে এলো সবার। খালু বললেন ” হয়তো ও বাড়ি থেকে লোক এসে গেছে। ” বলে উনি বাহিরে বেরোলেন। রাই এর মা বললো ” আপু , থাক ও যখন যেতে চাচ্ছে না তখন দরকার নেই। ”
তখন ঘরে এলো ওর খালু, সাথে নিশান। রাই অবাক হলো ।
“আরে বাবা তুমি….. আমরা তো ভেবেছিলাম….” খালামণি কিছু বলবে তার আগেই নিশান হেসে জবাব দিলো ” হ্যাঁ আণ্টি, অন্য লোকের আসার কথা ছিল, কিন্তু বাবা আর আবির ভাইয়া ঢাকায় গিয়েছে…. তাই অন্য আরও কিছু কর্মচারীও ওনাদের সাথেই গিয়েছে। বাড়িতে তেমন কেউ নেই বিধায় আমাকে পাঠিয়েছে ”
“ওহ, আচ্ছা হ্যাঁ ভালো কথা । বসো বসো” রাই এর মা বললো।
রাই মনে মনে ভাবছে ” এই রে….. আবির নেই! তাহলে তো যাওয়াই যায়। কিন্তু না করে ফেলেছি যে…. কি করি!?” রাই অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে নিশান এর দিকে। নিশান বুঝলো না রাই এভাবে কেনো তাকিয়ে। ” তো আণ্টি, আপনাদের প্যাকিং হয়ে গেলে আমরা তাহলে বেরোই এখন?”
খালা জবাবে বললেন ” আরে হ্যাঁ বাবা, আম্মা তো রেডি আছেই। কিন্তু রাই কে বলছি যেতে ও যেতে চাইছেনা….”
নিশান চমকে গেলো ( মনে মনে ভাবলো) রাই ও যাবে! আমি তো ভেবেছিলাম ওকে এমনই দেখার সুযোগ পাবো।।। এতো মেঘ না চাইতেই জল।
“কেনো আণ্টি…. ( রাই এর দিকে তাকিয়ে) ও যাবেনা কেনো?'”
রাই এর মা জবাব দিল ” আরে কি যে বলি। ওর কখন যে কি মন চায়। ”
নিশান রাই এর দিকে তাকালো । বেচারি রাই। এখন ওর মনে চাইলেও ও যেতে পারছেনা। কষ্ট কই রাখবে…
” বেয়াইন, আপনি কেনো যাবেন না?” বললো নিশান।
রাই বলতে গেলেই ওর মা বললো ” থাক ও যখন যেতে চাইছে না…..”
” আমি যাবো….”
সবাই চমকে তাকালো রাই এর দিকে। ওর মা বললো ” তুইই তো বলি যাবিনা? আবার এখন?”
” হ্যাঁ হ্যাঁ….( ততলাচ্ছে) বলেছিলাম। তবে, মাইন্ড চেঞ্জ এখন আমি যাবো….” বলেই রাই উঠে দাড়ালো ” আমি ব্যাগ গুছিয়ে আসছি দাড়াও..
” বলে রাই দৌড়ে নিজের ঘরে চলে গেল।
নিশান হা করে তাকিয়ে আছে। খালামণি বললেন ” ওর যে মাঝে মাঝে কি হয়!”
দাদী বললেন ” সে তোমরা বুঝবেনা,।।” বলে উনি পান চিবোতে লাগলেন। নিশান দাদীর দিকে তাকালো।
খালু বললেন ” কি বুঝবো না আমরা মা? ”
উনি হেসে জবাব দিলেন ” বাচ্চাদের মন , তোরা বুঝবিনা। তোরা তো হয়েছিস আমার থেকেও বুড়ো।” বলে উনি হাসতে লাগলেন। নিশান একটু জোরপূর্বক হাসলো ” আসলেই বাচ্চা” বিড়বিড় করলো।
.
.
.
“আচ্ছা সাবধানে যাস” বলে রাই এর দাদীকে বিদায় জানালো সবাই। নিশান গিয়ে আগেই সামনের দরজা খুলে রাই কে ইশারা করলো বসার জন্য। আর দাদীকে পেছনে বসিয়ে দিল। রাই ও কিছু না বলে সামনে বসে পড়লো।
কিছুক্ষন চলার পর নিশান খেয়াল করলো দাদী ঘুমিয়ে পড়েছেন। রাই জানালার বাহিরে তাকিয়ে আছে।
“আসতে চাচ্ছিলে না কেনো?”
রাই ওর দিকে মাথা ঘুরালো , ” এমনিতেই…..”
” তাহলে আসতে রাজি হলে যে!”
রাই চোখ সরিয়ে নিলো। কিছু বললো না। নিশান মুচকি হেসে সামনে তাকালো।
“ভাবছিলাম আমিও কালকে ঢাকায় চলে যাই,”
নিশানের কথায় পট করেই রাই প্রতিক্রিয়া করে বসে ” কেনো ?” নিশান বাকা চোখে তাকালো । রাই একটা ভাব নিয়ে নিজেকে সামলে নিলো ” আ , হ্যাঁ তো… যান। আপনাকে কে আটকে রেখেছে?”
” তুমি….”
রাই শিহরিত হয়ে উঠল । নিশান কথা ঘুরিয়ে নিলো ” চলে গেলে তো আর তোমার সাথে প্রেম করা হবেনা। তাই ভাবলাম কাজটা সেরেই নেই”
” আপনার সাথে প্রেম করার জন্য মানুষ বসে আছে” রাই হেসে উঠলো।
” ঠিক তা না। তবে প্রেমে পড়তে কতক্ষন?”
” নিজেকে হিরো আলম ভাবেন নাকি?”
নিশান তাকালো ” আমি কারো সাথে নিজেকে তুলনা করিনা। আমি নিশান চৌধুরী, দাটস ইট”
রাই ও ঢং করে বললো ” নিশান চৌধুরী”
নিশান চোখ ছোটো ছোটো করে নিলো ” ওকে বেট?”
” কিসের?’
” তুমি আমার প্রেমে পড়বে”
” খেয়ে কাজ নেই আমার?” রাই জানালার বাহিরে তাকালো।
” না, তুমি যেহেতু এতই আমাকে দামই দেও না। তো বেট? দেখা যাক। যে কয়দিন তোমরা ওই বাড়িতে থাকবে ব্যাস ততদিনে যদি পটাতে পারি তো ওকে। নইলে নাই। জাস্ট একটা সিম্পল বিষয়”
” পটাতে তো আপনি এমনিও পারবেন না। আর এসব গেম খেলার নূন্যতম ইচ্ছে আমার নেই। ”
” ভয় পাও নাকি?”
” আপনাকে? হাহ অসম্ভব”
” তাহলে বেট?” বলে হাতটা আগে বাড়ালো নিশান।
“যদি হেরে যান?”
” তুমি যা বলবে তাই…..আর যদি জিতি?” নিশান বললো
” ওকে বেট….” বলে রাই জানালার বাহিরে তাকালো আবারো। নিশান বাড়ানো হাতটা ফিরিয়ে নিলো ” উত্তর দিলে না যে?”
রাই চুপ করে রইলো। নিশান জোরেই বললো ” দেখি কতক্ষন চুপ থাকো”….
রাই মিটিমিটি হাসলো।
প্রায় সন্ধ্যার আগে আগেই পৌঁছলো তারা মিহিরের বাড়িতে। বাড়িতে ঢুকতেই সুরাইয়া এসে জড়িয়ে ধরলো। ” কীরে কেমন আছিস?”
” ভালো।।।”
রাই গিয়ে একে একে বাড়ির সকলের সাথেই কুশল বিনিময় করে নিলো।
পাশাপাশি ও একটু লক্ষ ও করলো যে আবির আছে কিনা….. নাহ। আবির নেই। মানে ওরা ঢাকায় চলে গেছে। শান্তি।
রাতে খাবার শেষে রাই , নিশান মিহির সুরাইয়া , আরো দু একটা কাজিন, সবাই ছাদে বসে গল্প করছিলো। ঠাণ্ডা শীতল বাতাস , সাথে আড্ডা, মোট মিলিয়ে পরিবেশটা সেই হয়ে উঠেছে। সবাই মিলে ট্রুথ & ডেয়ার খেলছিল। এক পর্যায়ে রাই এর পালা এলো…..
“আমি প্রশ্ন করবো….” বলে মিহির হাত তুললো।
” ভাইয়া আপনার প্রশ্ন ভালো না লাগলেও কিন্তু উত্তর দিবনা” বললো রাই।
” সে তো আপনাকে এমনিও দিতে হবে শালীকা….. তো আপনার কি কোনো ভালোবাসার মানুষ আছে শালী সাহেবা?”
রাই বাচ্চাদের মত হেসে দিলো ” বলবোনা…..”
” আরে, কেনো? বলতে তো হবেই….”
মিহিরের সাথে তাল মিলিয়ে সবাই একই কথা বললো। কিন্তু রাই হেসেই উড়িয়ে দিচ্ছে। এক পর্যায়ে নিশান একটু ভারী গলায় জিজ্ঞেস করলো ” বলো…. কে সে…. সবাই তো জিজ্ঞেস করছে”
রাই চোখ ফিরিয়ে হেসে দিল ” আরে কেউ না। কেউ থাকলে তো বলেই দিতাম”
নিশান কিছুটা হতাশ হলো। ও হইতো ভেবেছিল রাই….. কিন্তু রাই বললো না।
পরক্ষণেই বোতল ঘুরে নিশান এর দিকে গেলো। রাই উত্তেজিত হয়ে পড়ে ” আমি , আমি প্রশ্ন করবো”
নিশান বলে ” ওকে”
” জিবনে কয়টা প্রেম করেছেন?” বলে রাই হেসে উঠলো।
নিশান কিছুক্ষন রাই এর দিকে তাকিয়ে রইলো ” প্রেম নয় তবে, টাইমপাস করেছি”
সুরাইয়া বলে ” কয়টা?”
নিশান কিছুটা শান্ত গলায় বলে ” হবে কিছু। গুনিনি কখনো”
মিহির হেসে বলে ওঠে ” আরে ওকে কি জিজ্ঞাসা করো। আমি বলছি , ও। তো ডজন খানেক এর সাথে অলরেডি ব্রেকআপ করে বসে আছে”
সবাই শুনে হাসতে লাগলো। নিশান কিছু বললোনা।
এদিকে রাই এর মুখে তেমন হাসি নেই। জোরপূর্বক যেটুকু হাসছে আরকি। নিশান সেটা ভালো করেই বুঝতে পারলো ওর চেহারা দেখে।
যাইহোক খেলার সময় হটাৎ রাই বললো ” ভাইয়া , আপনারাই খেলেন। আমি খুব ক্লান্ত। ঘুমাবো…”
“। ওহ, হ্যা এমনিতেও রাত হয়েছে অনেক। চলো সব” বলে মিহির ও উঠে দাড়ালো।
সিড়ি দিয়ে নামার সময় রাই সুরাইয়া কে বললো ” বাকি ঘটনা কালকে শুনবো” সুরাইয়া লজ্জায় লাল হয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো। রাই হেসে উঠলো।
সবাইকে বিদায় জানিয়ে রাই নিজের ঘরের দিকে পা বাড়াবে কেউ পেছন থেকে বললো ” মিথ্যে বললে কেনো?”
” কোনটা মিথ্যে?” ঘুরে দেখে নিশান।
” ঐযে…. কাওকে ভালোবাসো কিনা”
“আমি সত্যিই বলেছি। ”
নিশান সন্দিহান গলায় বলল ” একটাও না?”
“সবাইকে নিজের মত কেনো ভাবেন?” বলে রাই ঘুরে হাটতে গেলো।
নিশান আসলেই ভেবেছিল হইতো রাই কোনো রিলেশনে আছে। ও গিয়ে রাই এর ডান হাত টেনে ধরলো।সঙ্গে সঙ্গেই রাই ” আহ্….” করে উঠলো।
নিশান ওর হাত ছেড়ে দিল। দেখে রাই নিজের ডানহাত ধরে ব্যথায় কাতরাচ্ছে…..” কি হয়েছে তোমার?” বলে রাই এর হাত টেনে হাতাটা তুলে উপরে করলো। রাই এর প্রচুর ব্যাথা হচ্ছে ।
” তোমার হাত কিভাবে কাটলো? ”
রাই কিছু বললো না ” ছাড়ুন…. আমি ঘরে যাবো….”
” এখানে আসো….” বলে নিশান ওকে নিয়ে রাই এর ঘরে ঢুকে দরজাটা হালকা চাপিয়ে দিলো। কেউ দেখলে সমস্যা হবে। রাই এর ঘরের টেবিলের নিচে একটা ফার্স্ট এইড বক্স আছে ঐটা নিয়ে নিশান রাই এর পাশে বসে পড়লো আর হাতে মলম লাগিয়ে দিতে লাগলো।
“দেখেন আপনাকে এখানে কেউ দেখলে সমস্যা করবে। আপনি যান প্লিজ”
নিশান এর হেলদোল নেই। ” চুপ থাকো…আর বলো কেটেছে কিভাবে?”
” আ, এমনিতেই। ”
” হোয়াট ? হয় তুমি পাগল নয় বাকিদের পাগল ভেবে রেখেছ”
রাই এর কিছু বললো না। চুপ করে গেলো।নিশান আস্তে আস্তে বললো ” তোমার কি বিষয়টা খারাপ লেগেছে?”
রাই চোখ তুলে তাকায়। ” কোনটা?”
নিশান একটু ইতস্তত করে বলে ” আমার রিলেশন এর ব্যাপারে”
রাই এর মুখ আবারো শুকিয়ে গেলো ” আমার কেনো খারাপ লাগবে? আপনার জীবন আপনার ইচ্ছে। ১০০ টা প্রেম করেন তাতে আমার কি?”
নিশান মলম লাগানো শেষে রাই এর দিকে তাকিয়ে রইলো ” নাহ কিছুনা…..” বলে উঠে দাড়ালো ” ঘুমাও…..”
রাই ও উঠে দাড়ায়। নিশান পেছনে দুপা গিয়ে আবারো রাই এর কাছে এসে দাড়ায়…..
” কি ?” রাই জিজ্ঞেস করলো।
নিশান রাই এর আরো কিছুটা কাছে গিয়ে ওর মাথায় একটা চুমু দেয়। আর ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। রাই ওর কাজে প্রচুর অবাক। তবে রাই খুশি হয় নি ” ছেলেটা এইসব ফ্লার্ট করেই মেয়ে পটায়” ভেবে রাই একটা শ্বাস ফেলে শুতে চলে গেলো। ”
______________ বর্তমানে।
রাই ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে এলো। বাকিটা রাই ভাবতে চায়না। আয়নার থেকে চোখ সরিয়ে ব্যালকনিতে তাকালো। আবির এখনও ওখানেই দাড়িয়ে ।বাহিরে আবারো সুমি রাই কে ডাক দিল। রাই আবিরের দিকে আর মন না দিয়ে বাহিরে চলে গেলো।
বারান্দায় আবির আকাশের দিকে তাকিয়ে পুরনো সেই দিনগুলোর কথা ভাবছে , যখন রাই কে ওর সহ্যই হতো না। এমনিতেও মেয়েদের আবির সহ্য করতে পারতো না, তার উপরে রাই তো ওকে প্রথমদিন ই এমনভাবে কথা শোনালো। সেটা ও কিভাবে সহ্য করতো?
এজন্যই ও বিয়ের দিন রাই কে উচ্ছৃঙ্খল বলে কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে ওকে ড্রেস পাঠানোর কারণ কিছুই ছিল না। আবির শুধু চাইছিল ওর দেওয়া জিনিসটাই যেনো রাই ব্যবহার করে। কেননা রাই তো ওকে ঘৃণা করতো। তাই একটা ছোট্ট শোধ নিলো।
কিন্তু এরপরেই তো সব উলোট পালোট হয়ে গেলো
____________ অতীতে
সেদিন রাতে যখন নিশান রাই কে মলম লাগিয়ে দিচ্ছিল তখনি আবির সেখানে উপস্থিত ছিল। আসলে ওইদিন যে কাজের জন্য আবির আর রেজোয়ান সাহেব ঢাকায় গিয়েছিল সেই কাজটা ক্যানসেল হয়ে যাওয়ায় রেজোয়ান সাহেবের জোরাজুরিতে আবির আর উনি আবারো বাড়িতে ফিরে আসে। রাত অনেক হয়ে যাওয়ায় তারা কাওকে ডিস্টার্ব করেনি। আর নিজের ঘরে যাওয়ার সময় আবির ওদের দেখে ফেলে।
সামনে নিশান রাই এর খুবই কাছে বসে ওর হাতে কিছু একটা দিচ্ছে। ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না। আবিরের তেমন মাথা ব্যাথাও ছিলনা বিষয়টা নিয়ে। ও ফিরেই যাচ্ছিলো। কিন্তু তার আগেই আবির দেখে নিশান গিয়ে রাই এর মাথায় চুমু দিল ,,,,,,,, কিন্তু রাই কিছুই বললো না। এটাই আবিরের মাথা গরম হয়ে গেলো ” খুব সখ , ছেলেদের কাছে আসার?” আবিরের হাত শক্ত হয়ে এলো।
রাতে রাই ঘুমাচ্ছিল। হটাৎ ওর মনে হলো ওর মুখে খুব গরম হওয়া আছড়ে পড়ল। রাই টিপটিপ করে চোখ খুলে ভয়ে চিৎকার দিতে গেলেই কেউ ওর মুখ চেপে ধরলো।
” উম উম”
” গতকালকের কথা কি ভুলে গেছো নাকি? ‘”
কন্ঠটা রাই এর মধ্যে শীতল স্রোত বইয়ে দেয়, আবির! রাই এর ছটফটানি থেমে যায়…… আবির হালকা হাসে ” স্মৃতিশতি ভালো…. তাহলে কালকের কথা কিভাবে ভুলে গেলে?”
রাই আবিরের হাতটা টেনে সরিয়ে দিলো ” আপনি এখানে কি করছেন?”
আবির জবাব দিলো না।
রাই উঠতে গেলে ওকে উঠতেও দিলো না ” সমস্যা কি আপনার?”
“নিশান এর প্রতি এতই টান? এখানে চলে এলে”
রাই রেগে গেলো। ” আজেবাজে কথা বন্ধ করেন”
আবির ওর ডানহাত এর ক্ষত এর জায়গায় শক্ত করে চেপে ধরলো “যদি এতটুকুও লজ্জা থাকতো এখানে আসতেই না”
” আহ্ ছাড়ুন ব্যাথা করছে…..”
রাই যতই ব্যথায় আর্তনাদ করছে আবির ততই শক্ত করে ওর হাত চেপে ধরছে। রাই চিৎকার ও করতে পারছেনা।
ব্যথায় ওর অবস্থা খারাপ রাই ওর বাম হাতটা আবিরের কাঁধের নিচে বুকের দিকে রাখলো , ওর এতই ব্যথা করছে ” প্লিজ ছাড়ুন , আপনাকে কেউ এইভাবে দেখলে না আপনি বাঁচবেন , না আমি। প্লিজ”
রাই এর স্বরে প্রচণ্ড এক ভয় আর কষ্ট দুটোই অনুভব করা যাচ্ছে।
আবিরের হাত আলগা হয়ে এলো। রাই নিজের হাতটা ছড়িয়ে চেপে ধরলো ” আহ্…..” অনেক ব্যাথা করছে ওর। আবির ঘৃণার দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
” কেনো আমার সাথে এমন করেন আপনি! কেনো? ” বলে রাই কাঁদতে লাগলো।
_____________বর্তমানে।
রাই এর সেই কথার উত্তরে আবির বললো ” খুব শীঘ্রই জানতে পেরে যাবে………” বলে আকাশের দিকে তাকালো আবির।
চলবে✨✨✨✨
শুধু শুধু না। তবে অতীতের সাথে কানেকশন আছে বলেই অতীত টা নিয়ে লিখছি। তাই কেউ রাগবেন না।