লাভ গেম পর্ব-২৪

0
916

#লাভ_গেম
#ফাবিহা_নওশীন

২৪.

দুই ঘন্টা যাবৎ হাসপাতালের ওয়েটিং রুমে বসে আছে রুশা। পা ঝিম ধরে গেছে। প্রেগন্যান্সির সময় এক জায়গায় এভাবে বসে থাকা যায়? কিন্তু আদ্রিশ ওকে জোর করে বসিয়ে রেখেছে৷ ওর থেকে কিছুটা দূরে একটা চেয়ারে আদ্রিশ বসে আছে। সেজান রুশার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিশ রুশার প্রেগন্যান্সি কনফার্ম করতে এসেছে। নতুন করে রুশার কোনো নাটকে জড়াতে চায় না। প্রেগ্ন্যাসির রেজাল্ট নিয়েই যাবে। যতক্ষণ রেজাল্ট না আসছে রুশাকেও নড়তে দিবে না। চোখের সামনে রাখবে। ও যাতে আর কোনো গরবর করতে না পারে। রুশার প্রেগ্ন্যাসির রিপোর্ট নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। আদ্রিশের জানা না জানাতে কিছু আসে যায় না। এছাড়া ওকে দেখতে যে কেউ অনুমান করতে পারবে ও প্রেগন্যান্ট। পাঁচ মাসের পেটটা কারো কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা সম্ভব না। রুশা উসখুস করছে। আর কতক্ষণ বসে থাকতে হবে কে জানে। দুই ঘন্টা আগে টেস্ট শেষ হয়েছে। প্রায় চার ঘন্টা ধরে না খেয়ে আছে। পেটে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে। রুশা বাড়িতে থাকলে এতক্ষণে কমপক্ষে চারবার খেয়ে ফেলত। ক্ষুধায় রুশা মোচড়ামুচড়ি করছে। রুশা আদ্রিশের দিকে আড়চোখে তাকাল। ও মোবাইলে ব্যস্ত।

রুশা জড়তা কাটিয়ে বলল,
“সেজান ভাই, আমার ক্ষুধা পেয়েছে।”

আদ্রিশ, রুশার কথা শুনে চোখ তুলে তাকাল। সেজান, আদ্রিশের অর্ডারের অপেক্ষায় চেয়ে আছে।
“চুপচাপ বসে থাকো। কাজ শেষ হোক তারপর যত ইচ্ছে হবে খাবে।”

রুশা মিনমিন করে বলল,
“চুপ করে থাকলে কি পেট চুপ করে থাকবে? আমার বাচ্চাটার নিশ্চয়ই ক্ষুধা পেয়েছে খুব। হয়তো ক্ষুধায় কাঁদছে।”

আদ্রিশ ওর কথা শুনে সেজানকে ইশারা করল। সেজান খাবার আনতে চলে গেল। রুশা বসে বসে হাই তুলছে। হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করল। কিছুক্ষণ পরে সেজান ওর জন্য খাবার নিয়ে এলো। রুশা পানির বোতল খুলে পানি খেয়ে গলা ভিজিয়ে নিল। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে দুহাতে হাঁটু স্পর্শ করল। কয়েক পা এদিক সেদিক হেঁটে আবারও বসে পড়ল। আদ্রিশ আর সেজান ওর কাহিনি দেখছে।
রুশা তারপর খেতে শুরু করল। ক্ষুধার্তের মতো গপগপ করে খাচ্ছে। খাওয়া শেষ করে আবারও হাই তুলল।

রুশা উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“আমি এখানে আর বসে থাকতে পারব না। এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা যায়? আমি চললাম।”

আদ্রিশ বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলল,
“এক পা আগাবে না। এক পা আগালে তোমার পা ভেঙে দেব৷ চুপচাপ বসে থাকো।”

রুশা অগত্যা বসে পড়ল। কপালে বিরক্তি নিয়ে বসে আছে। আদ্রিশ গিয়ে আবারও কথা বলে এসেছে। আর কিছুক্ষণ সময় লাগবে৷ একজন গাইনি ডাক্তার রুশাকে চেকাপ করে প্রেগন্যান্ট বলাতেও আদ্রিশের শান্তি হয়নি। ও প্রমাণ চায়।
রুশা ঘনঘন হাই তুলছে। ওর এখন ঘুম পাচ্ছে। চোখ মেলে রাখতে পারছে না। রাতে ঘুম হয়নি। দুপুর বেলায় বেকার বসে থাকায় আরো ঘুম পাচ্ছে।
রুশা হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করল।

আদ্রিশের বিরক্ত লাগছে। যতই রুশাকে ধমকাচ্ছে, ওর নিজেরও বিরক্ত লাগছে। এভাবে কতক্ষণ বসে থাকা যায়। অস্থির লাগছে রেজাল্ট হাতে পাওয়ার জন্য। সেজান বেচারা বাধ্য হয়ে ওদের সাথে বসে আছে।
আদ্রিশ আবারো মোবাইল বের করল। মোবাইলে কিছুক্ষণ টাইম পাস করে রুশার দিকে তাকাল। রুশা ঘুমিয়ে গেছে। ওর ঘাড় কাত হয়ে আছে। আদ্রিশ রুশার ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে আছে। একদম প্রথম দিনের মতো লাগছে। অবুঝ, সহজ,সরল,নরম একটা মানুষ। যার ভেতরে কোনো প্যাচ নেই। এই মুখটা দেখেই তো আজীবনের জন্য চেয়েছিল। আদ্রিশ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। যদি রুশা পিউ না হতো, যদি রুশা প্রথম দিনের মতো থাকত, যদি ওদের মধ্যে ঘৃণা না থেকে ভালোবাসা থাকত তাহলে আজ দিনটা অন্যরকম হতো। রুশার পেটে যদি ওদের বাচ্চা থাকে তাহলে দুজন মিলে তার কত যত্ন করত, তার পৃথিবীতে আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত। রুশা এতটা হেলে গেছে যে আরেকটু হলে পড়ে যাবে৷ আদ্রিশ একবার চাইছে ওকে সোজা করে দিতে। আবার ইতস্তত করছে। কিন্তু আরেকটু হেলে গেলেই রুশা পড়ে যাবে। পড়ে গেলে খুব ব্যথা পাবে।
আদ্রিশ রুশার ঘাড় ধরে সোজা করে দিতেই রুশা জেগে গেল। আদ্রিশকে দেখে হকচকিয়ে গেল। চোখ ডলে আশেপাশে দেখে পরিবেশ, পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছে। তারপর একে একে সব মনে পড়ল।

“এটা তোমার ঘুমানোর জায়গায় নয়। এখুনি পড়ে যেতে।”

রুশা হাই তুলে বলল,
“পড়ে গেলে নিজেই উঠে যেতাম, তোমার হেল্প চাইনি আমি।”
রুশা পাশে রাখা বোতল থেকে পানি খেল। কেমন বমি বমি পাচ্ছে। কিছুক্ষণ স্থির থেকে মুখ চেপে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। বমি করে মাথায়, চোখে মুখে পানি দিল। তারপর ক্লান্ত হয়ে বের হয়ে এলো। মনে মনে ভাবছে হঠাৎ করে বমি এলো কেন। রুশা চেয়ারে গিয়ে বসতেই একজন এসে বলল,
“মেম চেম্বারে ডাকছেন। আপনাদের রিপোর্ট রেডি। রিপোর্ট এনে মেমের সাথে দেখা করুন।”

সেজান রিপোর্ট আনতে চলে গেল। আদ্রিশ রুশাকে ওর সাথে যেতে ইশারা করল। রুশা আদ্রিশকে অনুসরণ করল। চেম্বারে ঢুকে চেয়ারে গিয়ে বসে পড়ল। কিছুক্ষণ পরে সেজান রিপোর্ট নিয়ে হাজির হলো। আদ্রিশের বুক ঢিপঢিপ করছে। রুশা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বসে আছে।
ওদের বরাবর অপর পাশে বসা ড. আছিয়া চোখে চশমা পরল। আদ্রিশ সেজানের হাত থেকে রিপোর্ট নিয়ে খুলে পড়তে শুরু করল। রেজাল্ট পজিটিভ।
আদ্রিশ মুখে হাসি ফুটিয়ে সেজানকে বলল,
“পজিটিভ।”

রুশা রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে বলল,
“আগেই বলেছিলাম। এই কথাটা জানার জন্য সারাটা দিন আমাকে হাসপাতালে বসিয়ে রাখল। কোনো মানুষ একজন প্রেগন্যান্ট মেয়ের সাথে এমন করতে পারে না। একটা ছোট বাচ্চাও আমাকে দেখলে বলতে পারবে আমি প্রেগন্যান্ট। আর ওরা কি খায় আল্লাহ মালুম।”

ড. অদ্ভুত ভাবে ওদের দেখছে। আদ্রিশ দাঁতে দাঁত চেপে আস্তে করে বলল,
“শাট আপ!”

আদ্রিশ রিপোর্ট ডক্তরকে এগিয়ে দিলেন। তিনি কিছুক্ষণ দেখে বলল,
“পাঁচ মাস চলছে। এখন থেকে আরো কেয়ারফুল থাকতে হবে। একদম স্ট্রেস ফ্রি থাকতে হবে। বাড়তি চিন্তাভাবনা করা যাবে না। নিজের খেয়াল রাখবেন। আপনার কোনো সমস্যা আছে মেডাম? তাহলে আমাকে এখন বলতে পারেন।”

রুশা টেবিলের দিকে ঝুঁকে বলল,
“সমস্যা মানে, অনেক সমস্যা! এই অসভ্য লোকটা আমাকে সারাদিন এখানে বসিয়ে রেখেছে। সারা শরীর ব্যথা করছে। উফফ! কিছু মেডিদিন দিয়ে দিন।”

ডাক্তার ওর কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে আদ্রিশের দিকে তাকাল। তারপর মুচকি হেসে বলল,
“এখন একটু এমন করবেই। প্রেগ্ন্যাসির সময় মুড সুইং হয়। সবকিছু উনার হাতে থাকবে না। তাই আপনাকে একটু বুঝে চলতে হবে। উনার মুড বুঝে রিয়েক্ট করবেন।”

আদ্রিশ মাথা নাড়িয়ে জি বললেও ও জানে রুশা ওকে অসভ্য লোক মুড সুইং এর জন্য না ইচ্ছে করেই বলেছে৷ রুশা ডাক্তারের সাথে আর কিছুক্ষণ কথা বলে আগে আগে বের হয়ে গেছে। আদ্রিশ আর সেজান ওর পেছনে।

হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রুশা দাঁড়িয়ে আছে। ওর সাথে পার্স নেই। টাকা, মোবাইল কিছু নেই। বাসায় যাবে কি করে। আদ্রিশ ওর সামনে এসে বলল,
“গাড়িতে ওঠ।”

“আপনার কাজ শেষ। আপনি আপনার পথে আর আমি আমার পথে।”

“পথ শেষ না শুরু হয়েছে পিউ চৌধুরী।”
আদ্রিশ তাচ্ছিল্য হেসে বলল।

আদ্রিশের মুখে পিউ নামটা কেমন জানি লাগে। রুশার ভালো লাগে না। রুশা বিস্ময় নিয়ে চেয়ে আছে আর তখনই আদ্রিশ এক প্রকার জোর করে গাড়িতে তুলল।
আদ্রিশ গাড়িতে ওঠে বসে। রুশা নামার জন্য ছটফট করছে। আদ্রিশ ওর হাত চেপে ধরে বলল,
“তুই যা করেছিস তাতে তোকে এতক্ষণে কেটে টুকরো টুকরো করে মাটি চাপা দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু বাচ্চাটার জন্য বেঁচে গেলি। এখন বেশি বাড়াবাড়ি না করে চুপচাপ বস।”

“আমি যাব না তোমার সাথে। গাড়ি থামাতে বলো।”
সেজান গাড়ি চালু দিয়ে দিয়েছে।

“মাত্র পাঁচ মাস। পাঁচ মাস আমার কাছে থাকবে। বাচ্চা আমাকে দিয়ে দেবে তারপর তুমি মুক্ত।”

“বাচ্চা দেব মানে? আমার বাচ্চা আমি তোমাকে কেন দেব? আমার বাচ্চা আমি কাউকে দেব না।”

“তোমার কীসের বাচ্চা? তুমি তো বাচ্চা চাওনি। এখন এত দরদ কেন দেখাচ্ছো?”

“না চাইলে পাঁচ মাস আমার শরীরে স্থান পেত না। তাহলে আমাকে এত লড়াই করতে হতো না। এত কাহিনি করতে হতো না। আমার বাচ্চার দিকে চোখ তুলে তাকালে আমি তোমাকে ছাড়ব না।”

“ওর উপর আমার পূর্ণ অধিকার আছে। তুমি দশ মাসের দায়িত্ব নেও। আমি ওর সারাজীবনের দায়িত্ব নেব। মাত্র দশ মাস। তারপর তুমি তোমার লাইফ অন্য কোথাও সেট করে নিও। যেমন লন্ডন। লন্ডনে চলে যেতে চাইছিলে তো তাই না?”

রুশা থতমত খেয়ে গেল কিন্তু দশ মাসকে তাচ্ছিল্য করায় ওর প্রচন্ড রাগ হলো।
“দশ মাস কি মুখের কথা? দশ মাস দশ দিন কত কষ্ট করতে হয় তা শুধু একজন মা’ই জানে। একটা শরীর অন্য আরেকটা শরীর বয়ে বেড়ায়। বাবারা শুধু তাচ্ছিল্য করতে পারে। আমি পাঁচ মাস পেটে রেখেছি বাকি পাঁচ মাস তোমার পেটে নিয়ে রাখো তাহলে এই চটাং চটাং কথা ভুলে যাবে।”
রুশার রাগের ঠেলায় যা মুখে এসেছে বলে দিল। আদ্রিশ ওর কথা শুনে তাজ্জব বনে গেল। সেজান মুখ চেপে হাসছে।

“বিরক্তিকর!”

রুশা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বসল। কি করবে তাই ভাবছে।

আদ্রিশের বাড়ির সামনে গাড়ি থামল। আদ্রিশ নিজে নেমে রুশাকে নামতে বলল। রুশার সারাদিন অনেক ধকল গেছে। শরীর খুব ক্লান্ত। তাই আদ্রিশের সাথে কোনো প্রকার তর্কে যেতে চাইছে না। গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে তাকাল। কতদিন পরে এই বাড়িতে আবার এসেছে। আদ্রিশ ওর হাত ধরে ঘরে নিয়ে গেল। ঘরে নিয়ে ওর হাত ছেড়ে বলল,
“এখানে চুপ করে থাকবে। এই ঘর থেকে বের হবে না। যদি পালানোর চেষ্টা করো তবে মারব না, দুটো পা কেটে বসিয়ে রাখব। বাচ্চা আমার চাই। জাস্ট পাঁচ মাস তোমাকে এখানে সহ্য করব। আর হ্যা আমাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই এই বাচ্চার ইস্যু ছাড়া।”

“আমার ভাইয়ের খুনির সাথে সম্পর্ক রাখতে আমিও চাইনা। চাইলে ফিরে আসতাম, চলে যেতাম না।”

আদ্রিশ রুশাকে দেয়ালে চেপে ধরে বলল,
“অকারণে আমি কাউকে মারি না। আমি ভাড়া খাটা খুনি নই। আর না আমার কোনো গ্যাং আছে আর না তোমার ভাইয়ের মতো
রাজনীতি করি। একজন ব্যবসায়ী আমি। মুনাফা অর্জনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করাই আমার কাজ।”

রুশা আদ্রিশকে ধাক্কা মেরে বলল,
“তোমার এসব কথায় আমার মন ভুলবে না।”

“তোমার মন আমি ভুলাতেও চাই না। ওসব তো তোমার কাজ। একবার বোকা বানিয়েছো বলে ভেবো না বারবার পারবে।”

“তোমাকে নিয়ে আমার আর কোনো ইচ্ছাই নেই।”

“গুড! দ্যাটস বেটার ফর ইউ।”
আদ্রিশ ঘর থেকে বের হয়ে গেল। রুশা বিছানায় বসে পড়ল। ওর ভাইয়ের খুনির সাথে থাকতে ইচ্ছে করছে না আর না নতুন করে সম্পর্কের মেরামত করতে চাইছে। কি করবে বুঝতে পারছে না। আদ্রিশ বাচ্চা নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে দিয়েছে। রুশা চিন্তায় পড়ে গেল।

ভোর বেলায় ঘুম ভেঙে নিজেকে একাই বিছানায় আবিষ্কার করল। এর মানে আদ্রিশ আর আসেনি। আদ্রিশ তো বলেই দিয়েছে ওর সাথে সম্পর্ক নেই। এর মানে রুশা এই ঘরে নিজের মতো থাকবে। আদ্রিশ নিজের ঘরে থাকবে।

রুশা ফ্লাট থেকে নিজের সবকিছু আনিয়ে নিয়েছে। মোবাইল, ল্যাপটপ এসব ব্যবহারে আদ্রিশ আপত্তি জানায়নি। তবে সব সময় ওকে নজরে নজরে রাখে। বাড়ির সার্ভেন্ট থেকে শুরু করে গার্ডরা ওকে নজরে রাখে। বারান্দায় গেলেও চেয়ে থাকে। আদ্রিশ ওর ঘর তো দূরের কথা আশেপাশেও আসে না। ওদের তেমন দেখা সাক্ষাত হয় না। রুশা বসার ঘরে সোফায় পা তুলে মুভি দেখছে আর খাচ্ছে। পাশে রাখা মোবাইল বেজে উঠল। রুশা টিভির দিকে চেয়ে হাতরে নেওয়ার আগেই আদ্রিশ ছু মেরে নিয়ে গেল। কল রিসিভ করে কানে দিল। রুশা আতংকিত হয়ে উঠে দাঁড়াল। রকি কল করেছে।

“বাহ,রুশা! ভালো খেল দেখালে। আমার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, বললে ভাইয়ের প্রতিশোধ নিবে, বিয়ে করবে না। প্রতিশোধ নিতে সাহায্য করব বলি যাতে তোমাকে তাড়াতাড়ি পাই। তারপর তুমি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আদ্রিশকে বিয়ে করতে চাইলে
প্রথমে না করলেও পরে তোমার জেদের কাছে হেরে গিয়ে সম্মতি দিলাম। কারণ তোমার উপর আমার বিশ্বাস ছিল। কিন্তু সে বিশ্বাসের মর্যাদা রাখলে না। তুমি কাকে ধোকা দিলে আদ্রিশকে না তোমার ভাই আর আমাকে? এতদিন ধরে নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা করে এসেছি। এর বিনিময়ে কি পেলাম? আমি আজো বুঝতে পারলাম না। ওকে বাঁচিয়ে দিলে আবার ওর কাছে চলে গেলে? সব ঠিক থাকতে এতদিনে আমাদের বিয়ে হয়ে যেত। এভাবে আমাকে ঠকালে? আমাকেও ব্যবহার করলে আবার আদ্রিশকেও হাসিল করলে। দু’দিকই পেলে। কি কপাল তোমার! আদ্রিশ আর রকি দু’জনই দিওয়ানা তোমার জন্য। তুমি কার জন্য দিওয়ানা? নিজেকে একবার প্রশ্ন করো প্লিজ! আমি এত সহজে তোমাকে ছাড়ছি না। আমার আবেগ অনুভূতি নিয়ে খেলতে দেব না আর। এখন যা হবে সরাসরি।”
আদ্রিশ নিজেই কল কেটে দিল। রকির এসব কথা শুনতে ইচ্ছে করছে না। মাথায় আগুন জ্বলে উঠছে। তারপর রুশার দিকে তাকাল। ওর দৃষ্টিতে রুশার পিলে চমকে গেল।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here