#আমার রাজ্যের রানী
#Part : 32
#Writer : Sriti Nur Avni
?
ভার্সিটির সামনের বড় তেতুল গাছ টার নিচে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে নীর্ঝয়।তার ঠিক নাক বরাবর দাঁড়িয়ে আছে নীল।বাম হাত সাব্বিরের কাঁধের উপর রেখে ডান হাতে সানগ্লাস ঘুরাচ্ছে সে।নীলের দুপাশে সাব্বির আর রাতুল দাঁড়িয়ে থেকে শাহাদাত আঙুলের নক কাঁমড়িয়ে যাচ্ছে অনবরত। অসহায় মুখ করে বলে উঠলো নীর্ঝয়,,,,,
—দোস্ত এমন ভাবে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখছিস কেন?দেখ চারদিকে সবাই কেমন কেমন করে তাকাচ্ছে।আমার অসম্মান কি তোর অসম্মান না বল?
সাব্বিরের কাঁধ থেকে হাত সরিয়ে সানগ্লাস টা ঘুরাতে ঘুরাতেই ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো নীর্ঝয়ের দিকে নীল।ভ্রু জোরা নাচিয়ে বলে উঠলো সে,,,,
—কিরে কি চলে?
—মানে? (অবাক হয়ে)
—দাঁড়োয়ান চাচা বললো ইদানিং নাকি তোর রুম থেকে কয়েকটা মেয়ে বের হতে দেখা যাচ্ছে?রাতুল আর সাব্বিরও খুব কনফিডেন্ট সূরে বললো আমায় তোর নাকি বউ ও আছে?
নীর্ঝয়ের চোখ দুটো চড়কগাছ হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে।দেখলে তো শুধু নীরা কে একদিন দেখবে তাই বলে কিনা কয়েকটা?রাগে ফুসতে ফুসতে বলে উঠলো নীর্ঝয়,,,,
—হুয়াট ননসেন্স।তোর কি মনে হয় আমি তোকে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলবো?এই দুইটা যেমন হাঁদারাম ঠিক তেমনি দাঁড়োয়ান চাচাও হাদারাম।এই জন্য তুই এতোক্ষন যাবত আমায় কান ধরিয়ে রাখলি?
—ওয়েট ওয়েট ওয়েট তুই কি ভেবেছিস এমন রাগি সূরে কথা বললেই আমি সব ভুলে যাবো?তাহলে তুই সব থেকে বড় হাঁদারাম।হাফিজ আংকেল বললো ইদানিং নাকি তুই মেয়েদের মতো তেতাপোকা দেখলে ভয়ে চিল্লিয়ে উঠছিস। বাহ ইন্টারেস্টিং!
— সব কথাই সবাই তোকেই বলে কেন বুঝিনা (রেখে)
—কোয়ালিটি আছে বস (ভাব ধরে)
—হুহ তোর কোয়ালিটি তুই ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে খা।চাইলে আমার না হওয়া বউ বাচ্চা নিয়ে পালিয়ে যা,,আমি বরল বাঁচি।
রাগে কটমট করতে করতে ভার্সিটির ভেতরের দিকে এগিয়ে গেলো নীর্ঝয়।একমুহূর্ত নীর্ঝয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে পরক্ষনেই হুহু করে হেসে উঠলো নীল সাব্বির আর রাতুল।
নীর্ঝয় রাগে ফুসতে ফুসতে মাঠের মাঝখানে যেতেই সামনে দেখতে পেলো নীরাকে।ওর দিকে তাকিয়ে এদিকেই আসছে নীরা।নীর্ঝয়ের রাগ টা নীরা কে দেখে পালাক্রমে প্রতিযোগীতার মতো বাড়তে লাগলো।এই মেয়েটা!শুধু মাএ এই মেয়েটার জন্যই আজ আমার চরিএ নিয়ে কথা উঠলো?হাউ?আমার মতো ইনোসেন্ড মার্কা ছেলেকে একদিনেই কিনা চরিএ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলো?
নীর্ঝয় ভাবনার সাগরে হাবুডুবু খেতে খেতেই ওর সামনে এসে দাঁড়ালো নীরা,,,ভ্রু নাচিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠলো,,,,
—কি ব্যাপার মি. নীর্ঝয় আমাকেই খুঁজছিলেন নিশ্চয়ই?
হালকা রোদে ফর্সা শরীরে রাগে লাল হয়ে থাকা নীর্ঝয় কে পুরোই টমেটোর মতো লাগছে।।চোয়াল শক্ত করে বলতে লাগলো নীর্ঝয়,,,,
—হু আমি তো ভার্সিটিতে আসি আপনাকে খোঁজার জন্যই।আমার তো আর কোনো কাজ নেই তাইনা?
—কি ব্যাপার বলুন তো!আজকে হঠাৎ তুমি থেকে আপনি তে চলে গেলেন?
—দুমিনিট দাঁড়িয়ে থাকুন আমি আপনাকে ব্যাপার স্যাপার সব এক সাথে বুঝিয়ে দিবো।
নীর্ঝয় হনহনিয়ে হেঁটে যেতে লাগলো কেন্টিনের দিকে।চোখ পিটপিট করে কিছুক্ষন নীর্ঝয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভেবে হেসে উঠলো সে।
হাতের পিছনে কিছু একটা লুকিয়ে রেখে এগিয়ে আসলো নীর্ঝয়।ভ্রু কুঁচকে নীর্ঝয়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো নীরা,,,
—-আপনার হাব ভাব তো আমার মোটেই ভালো ঠেকছে না।প্রপোজ ট্রপোজ করে বসবেন নাতো আবার। (চোখ টিপ দিয়ে)
জোর করে মুখে মুচকি হাসি টেনে নীর্ঝয় বললো,,,,,,
—চোখ জোড়া একটু বন্ধ করুন তাহলেই বুঝতে পারবেন।
কিছুক্ষন চোখ পিটপিট করে কিছু বুঝার জন্য তাকিয়ে থেকে চোখ জোড়া বন্ধ করে নীলো নীরা।পরক্ষনেই মাথায় ঠান্ডা কিছু অনুভূতি হওয়াও চট করে চোখ খুলে ফেললো সে।নিজের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলো পুরো শরীর কাক ভেজা ভিজে আছে সে।রাগী দৃষ্টিতে নীর্ঝয়ের দিকে তাকালো সে।
নীর্ঝয়ের সব রাগ ফুস করে উড়ে গিয়ে হুহু করে হাসতে লাগলো সে।হাসতে হাসতেই চোখ গেলো মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটা ছেলের দিকে।লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নীরার দিকে।ছেলেগুলোর দৃষ্টি অনুসরণ করে নীর্ঝয় নীরার দিকে তাকালো,,ভেজা কালো রঙের শাড়ি টা শরীরে লেপ্টে আছে পুরো।পরক্ষনেই চোখ সরিয়ে নিলো নীর্ঝয়।নিজের উপরেই নিজের রাগ লাগছে তার। ইচ্ছে করছে আগে নিজের মাথা টা ইট দিয়ে দুভাগ করে ছেলেগুলো কে চারভাগ করতে।কিন্তু নিতান্তই শান্তি প্রিয় মানুষ নীর্ঝয়।ঝগড়া ঝাটি একদমই পছন্দ না তার।তাই নিজের গায়ের গেঞ্জির উপরে থাকা বেগুনি রঙের শার্ট টা খুলে নীরার দিকে এগিয়ে দিলো সে।
এতোক্ষন নীর্ঝয়ের উপর রাগ লাগলেও এখন নীর্ঝয় কে দেখে হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছে নীরার।
শার্ট পড়া হলে নীরার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যেতে লাগলো নীর্ঝয়।।হাঁটছে আর অবাক নয়নে নীর্ঝয়ের দিকে তাকিয়ে আছে নীরা।চোখে নোনাজল গুলো চিকচিক করছে।ভালোবাসার মানুষ টা ভালোবেসে হোক বা না ভেসে এই প্রথম হাত ধরেছে তার।
গাড়ির সামনে এনেই গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে না তাকিয়েই অপর পাশের সিটে গিয়ে বসে পড়লো নীর্ঝয়।মুচকি হেসে গাড়ির ভিতর ডুকে গেলো নীরাও।
নীরার কাছ থেকে বাসার ঠিকানা যেনে ওদের বাসার সামনে এসে গাড়ি থামালো নীর্ঝয়।বিশাল বড় বাড়ি ওদের।নীর্ঝয়দের থেকে বেশি বড়লোক বৈকি কমনা।সিট বেল্ট খুলে নীর্ঝয়ে দিকে ঝুকে বলে উঠলো নীরা,,,,
—কারনে হোক বা অকারনে,,বুঝে হোক বা না বুঝে,,ডিরেক্টলি হোক বা আনডিরেক্টলি আমি আপনার মনে একটু হলেও জায়গা করে নিয়েছি মি. নীর্ঝয়।কেউ কখনো পুরোপুরি অন্য কারো মতো হতে পারেনা।কোথাও না কোথাও একটা অপূর্ণতা থেকেই যায়। তাই আমি চাইলেও অভনী হতে পারবো না।চাই ও না হতে,অভনী থাক আপনার মাঝে অন্যরকম হয়ে।কিন্তু আপনার পছন্দ অনুযায়ী সাঁজে সেঁজে থাকতে ঠিকই পারবো।
চাইলে চলুন আপনার শশুড় বাড়িতে,,, আর যদি না চান তাহলে জোর করবো না।
.
.
.
?
—————————–
জাম কালারের কোটা শাড়ি পরে এক হাতে কুঁচি ধরে আরেক হাতে ব্যাগ ঝুলিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার দিকে সমান্তর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অভনী।তার দুপাশে থাকা জয়া আর জুথির ভ্রু জোরা কুঁচকে আছে।কিছুক্ষন আমতা আমতা করে অভনীর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো ছেলেটি,,,,
—আপনাকে যেদিন প্রথম দেখি সেদিনই প্রেমে পরে যাই।আপনার নাম কি তাও জানিনা আমি।কিন্তু আপনার সব কিছুই মুগ্ধ করেছে আমায়।আপনাকে ভালোবাসার সুযোগ কি আমায় দিবেন প্লিজ?
অভনীর সমান্তরাল ভ্রু জোরা কুঁচকে গেলো ছেলেটার কথা শুনে।ও কিছু বলার আগেই পাশ থেকে বলে উঠলো জুথি,,,,
—আপনি ই কি বড় ভাই?
ছেলেটি একটু অবাক হয়ে জবাব দিলো,,,
—মানে?
—মানে সোজা হিসাব বড় ভাই হলে আমার বেস্টু কেন আমি সহ রাজি হয়ে যাবো কিন্তু অন্য কেউ হলে পাক্কা দশ হাত দূরে চলে যাবেন।(জয়া)
জয়া কে ধমক দিয়ে নরম সূরে বলে উঠলো অভনী,,,,,
—সরি ভাইয়া!আমি চাইলেই আপনাকে ভালোবাসতে পারবো না।কারন আমি ইতিমধ্যে ফিনিস।আই মিন আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।সেটা বুঝতে সময় লাগলেও আমি এখন বুঝতে পারছি আমি ওকে ভালোবাসি।আর আপনি যদি বড় ভাই হয়ে থাকেন তাহলে আমার লাইফ থেকে দূরে সরে যাবেন প্লিজ।
ছেলেটাকে পাশ কাটিয়ে সামনের দিকে হাঁটা দিলো অভনী।পাশে হাঁটতে হাঁটতে জয়া বললো,,,,
—তুই ছেলেটাকে এমন ভাবে না করে দিলি কেন।যদি এটাই বড় ভাই হয়ে থাকে?তাছাড়া তুই কারে ভালোবাসলি এক মুহূর্তের মধ্যে?
—ওই কি বড় ভাই বড় ভাই করছিস?তোর ওই বড় ভাই কে কি আমি কোলে নিয়ে বসে থাকবো নাকি?আর আমি তখন ছেলেটাকে ভাগানোর জন্য বলছি আমি একজন কে ভালোবাসি গাঁধা।
অভনীর কথা শেষ হবার আগেই দৌঁড়ে আবারো সামনে আসলো ছেলেটা। হাঁপাতে হাঁপাতে কান ধরে বলে উঠলো সে,,,,,
—সরি ভাবি।আমি আসলে বুঝতে পারিনি।আমি আর জীবনেও আপনার সামনে আসমু না।আমি আপনাকে ভালো ও বাসি না।দয়া করে একটু আগের সব কথা ভুলে যান।বড় ভাই আপনাকে ভালোবাসে।আমি নাহহ।
এতো বড় একটা ছেলেকে এমন ভাবে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খিলখিল করে হাসতে লাগলো জয়া আর জুথি।ওদের হাসির মধ্যেই ছেলেটা উধাও হয়ে গেলো।পেট চেঁপে হাসতে হাসতে বলে উঠলো জুথি,,,,
—তোর সাথে থেকে সেই লেভেলের বিনোদন পাচ্ছি রে দোস্ত।নিশ্চয়ই আমাদের বড় ভাই এই ছেলেটাকে শাহেস্তা করছে।কি ভাবি এখনো কি আপনি আমাদের বড় ভাইয়ের বউ হবেন না।
রাগে কটমট করতে করতে বলে উঠলো অভনী,,,,
—হুম করবো তো।একবার না দশবার বিয়ে করবো তোদের বড় ভাই কে।তবে ততোদিনে তোদের কে ব্লেন্ড করে ফিনিশিং দিয়ে।
.
.
?
ক্লাস শেষ করে ধীর পায়ে নিচে নেমে আসলো অভনী জুথি আর জয়া।ব্যাগে ফোনের রিংটোন টা নিজ গতিতে বেজে চলতে দেখে ফোন টা হাতে নিলো অভনী।মায়ের ফোন দেখে রিসিভ করে সালাম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,,,,
—হ্যাঁ মা বলো।
—তোর নানির জন্য আসার সময় ঔষুধ নিয়প আসিস তো।প্রেশারের ঔষুধ শেষ হয়ে গেছে মার।
—ওকে মা নিয়ে আসবো।
কল কেটে ফোনটা ব্যাগে রেগে সামনে তাকাতেই চোখ গেলো নীলের দিকে।এদিকেই এগিয়ে আসছে সে।কফি কালারের শার্ট পড়ে আছে আজ নীল।শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত গুটানো।পরনে ব্লাক জিন্স।হালকা ব্রাউন সিল্কি চুল গুলো খুব গুছিয়েই পরে আছে ওর কপালে।হাতে ব্রেন্ডেড ঘড়ি।দুধসাদা শরীরে কফি কালার রঙটাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রং বলে মনে হচ্ছে অভনীর।জয়ার খোঁচা আর ফিসফিস করার শব্দে নীল কে নিয়ে কল্প কাহিনী বাদ দিয়ে জয়ার দিকে তাকালো অভনী।ফিসফিস করে বলে উঠলো জয়া,,,,
—দোস্ত দেখ দেখ আমার ক্রাস। কি জেনো নাম ও হে ফারহান আহম্মেদ নীল।মনে হচ্ছে আমাদের দিকে আসছে রে।দেখিস এখন কি কিউট ভাবে প্রপোজ করে বসবে আমায়।আহা! ইশশশ আজকে পুরো চকলেট বয় লাগছে রে।ইচ্ছে তো করছে,,,,
চোখ রাঙিয়ে ধমক দিয়ে বলে উঠলো অভনী,,,,
—তোর ইচ্ছা কে তুই কাগজে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দে।অন্যের বরের দিকে খারাপ নজরে তাকাস লজ্জা লাগে না বদ মাইয়া?(দ্বিগুন ফিসফিস করে)
—হুহ অন্যের বর কেমনে বলিস এখনি?আমার বর ও তো হতে পারে।
অভনী কিছু বলার আগেই ততক্ষনে নীল এসে দাঁড়িয়ে আছে ওদের সামনে।ভ্রু নাচিয়ে বলে উঠলো নীল,,,,
—কি?এমন ফিসফিস করে কখন থেকে কি কথা বলছেন দুজনে? আপনার সামনে যে আমি এসে দাঁড়িয়ে আছি তার তো কোনো খেয়াল ই নেই।btw. গাড়িতে আসুন মিস. অভনী।
কালকে নাকি রিকশা করে গেছেন তাই বাবা আমাকে ধোলাই দিয়েছে।চলুন,,,
মাথা কাথ করে হ্যাঁ সূচক উওর দিয়ে নীলের পিছো হাঁটা ধরলো অভনী।পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা দুজনের চোখ রসগোল্লা হয়ে গেছে।এমন কিছু হবার জন্য যে ওরা প্রস্তুত ছিলো না তা ওদের রিয়েকশন বাটন প্রেস করাতেই বুঝা যাচ্ছে।
.
.
.
?
খাটে একপায়ের উপর আরেক পা দিয়ে চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা লাগিয়ে ম্যাগাজিন পড়ছেন নীহাল আহম্মেদ। দরজায় নক হবার শব্দে ম্যাগাজিন থেকে চোখ সরিয়ে দরজার দিকে তাকালেন ওনি।অভনী দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে।গলা উঁচু করে অভনী কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন ওনি,,,,
—তোকে কি আমাদের রুমে নক করে আসতে বলছি?
ধীর পায়ে রুমের ভেতর ডুকে গিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠলো অভনী,,,,,
—ছোট আব্বু সবার ঘরে ডুকার আগেই নক করা উচিত।
—হুহ হইছে আর জ্ঞান দিতে হবেনা আমায় জ্ঞানী মেয়ে।আয় আমার এইখানে এসে বস।
অভনী এগিয়ে এসে নীহাল আহম্মেদে পাশে বসে পরলো।ম্যাগাজিন টা গুছিয়ে রেখে দিয়ে অভনীর মাথায় হাত ভুলিয়ে বলে উঠলেন নীহাল আহম্মেদ,,,,,
—কিছু বলবি মা?
—ছোট আব্বু এখন তো আমি অফিসে যেতে পারছিনা।আর ক্লাস রেখে রেগুলার অফিসেও যাওয়া যাবে না।তাই বলছিলাম কি আমাকে কয়েকটা করে ফাইল দিয়ে দিয়ো আমি রাতের বেলা দেখে রাখবো আর আমি তো নীল স্যারের পি.এ তাই নীল স্যার যেদিন অফিসে যায় সেদিন সেদিন নাহয় আমিও যাবো।বেতন আগে থেকে কমিয়ে দিলেও হবে।(মুচকি হেসে)
হালকা উচ্চস্বরে হেসে বলে উঠলেন নীহাল আহম্মেদ,,,,,
—বোকা মেয়ে তোর বেতন তো আমি এমনি এমনি ই দিতাম।তারপরও জানি তুই কাজ ছারা নিবি না।তাই তোর কথাই আমি মানলাম আর বেতন কেমন দিবো না দিবো সেটা তোর বুঝিয়ে দিতে হবে পাকনি বুড়ি।ওয়ারড্রব এর উপরে একটা ফাইল আছে ওটা নিয়ে যা।তবে আগে পড়া শেষ করবি তারপর কাজ।
বসা থেকে উঠে ফাইল টা হাতে নিলো অভনী।এক টুকরো মুচকি হাসি মুখে ঝুলিয়ে রেখে ছোট্ট করে বলে উঠলো,,,
—থেংক ইউ,
যার পরিবর্তে নীহাল আহম্মেদও মুখে এক টুকরো মুচকি হাসি ঝুলিয়ে রাখলেন।
.
.
?
চোখে একগাদা পানি পরায় ঘুম ভেঙে গেলো অভনীর।।ভ্রু জোরা কুঁচকে উঠে বসে হাত দিয়ে মুখ মুছতে লাগলো সে।সামনের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো এটা ওদের রুম না।বিশাল বড় একটা নৌকায় শুয়ে আছে সে।আচমকা নিজেকে নৌকায় আবিষ্কার করে ভয় পেয়ে গেলো অভনী।ও তো নিজের রুমে ঘুমিয়ে ছিলো,,,, তাহলো এখানে আসলো কিভাবে?
ভাবতেই ভয়ে কেঁপে উঠছে সে।
.
#চলবে…….
(আমি একটু অসুস্থ।গল্প লেখা হয় ভালোলাগা থেকে,,,মন খারাপের তীব্র ঔষুধ হয়ে গল্প কাজ করলেও শরীর খারাপে শরীর সেটা মানতে নারাজ।তারউপর সকালে একবার লিখার পর দুম করে মোবাইল টা বন্ধ হয়ে গিয়ে সব লিখা শেষ,,তখন ইচ্ছে করছে মোবাইল টা কুঁচি কুঁচি করে ডাস্টবিনে ফেলে দেই।?)