আমার রাজ্যের রানী পর্ব-১০

0
999

#আমার রাজ্যের রানী
#Part : 10
# Writer : Sriti Nur Avni

?
রুমের মধ্যে পাঁয়চারি করছে অভনী। আজ দুইদিন যাবৎ বাসা থেকে না বেড়িয়ে হাপিয়ে গেছে সে।ছাঁদে যেতেও ভয় লাগে তার যদি লোকটা নিচে থেকে দেখে নেয় ও ছাঁদে তাহলে তো আবারো চড় বসিয়ে দিবে গালে।চড়ের কথা ভাবতেই গালে হাত দিয়ে খাটে বসে পড়লো অভনী।রাগ হচ্ছে অভনীর প্রচন্ড পরিমাণে রাগ সেদিনের ছাদের ওই ছেলেটার উপর। ওই ছেলেটার জন্যই তো এতো কিছু হলো।

সেদিন পায়ে ব্যান্ডেজ করে তখনি অভনী কে বাসায় নামিয়ে দিয়ে গেছে নীল,,,আর রাগি সুরে বলে গেছে,,

—৪ দিন যেন বাসা থেকে বের হবে না একদম,,,অফিস ৪দিন বন্ধ। যদি বের হয়েছো আমি কোনোভাবে দেখতে পারি তাহলে একটা হারগোড় ও ঠিক থাকবে না mind it.পিকু কে তোমার কাছে রাখো ৪ দিন পর আমি নিয়ে নিবো আবার।

এটা বলেই হনহন করে চলে গেলো নীল আর অভনী নীলের এমন রাগী লুক দেখে সাথে সাথেই ভিতরে চলে গেলো।কিন্তু ভিতরে গিয়েও বাঁধলো বিপওি মায়ের একগাদা প্রশ্নের জবাব দিতে না পেরে যখন বললো পা কেঁটে গেছে তখন আরো একগাধা বকা শুনতে হলো তাকে।ইসসস আজকে সকাল টা ভালো দেখে ভেবেছিলো সারাদিন ভালো কাটবে কিন্তু আজ সারাটাদিন শুধু বিরক্তি আর বিরক্তি,,,।সেদিন সারাদিন পিকুর সাথে কথা বলে কাঁটালেও পরের দিন মা কে বাজার করতে যেতে দেখে বাঁধা দেয় অভনী।মা কে বুজিয়ে সুজিয়ে বাজারে গেলেও ভালো করে হাঁটতে পারছে না সে।রিকশা ভাড়ার জন্য টাকা আনলেও ওই টাকা দিয়ে বোনের জন্য কিছু নিয়ে যাবে ভেবেই কাঁটা পা নিয়ে হেঁটে হেঁটে গেলো।কিন্তু আসার সময় বাসার সামনে নীল কে রাগী চোঁখে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অভনীর প্রান পাখি যায় যায় অবস্থা। নীল কে এমন ভাবে সামনে আসতে দেখে অভনী চোখ বন্ধ করে বিরবির করে বলতে লাগলো,,,

—ভূত আমার পুত পেতনি আমার জি আল্লাহ আমার সাথে আছে হিরো সাহেব করবে আমার কি,,,ভুত আমার পুত পেতনি আমার জি আল্লাহ আমার সাথে আছে হিরো সাহেব করবে আমার কি। হে আল্লাহ এবারের মতো এই লক্ষি বাচ্চা মেয়েটাকে এই রাগি লোকটার হাত থেকে বাঁচিয়ে দাও,,, যেমন ভাবে আসছে মনে হচ্ছে এখনি আমায় কুপিয়ে কিমা বানিয়ে ফেলবে,,, আল্লাহ আমি এখনো আমার নাতি পুতির মুখ দেখিনি এখনি আমি মরতে চাই না,,,

অভনী বিরবির করে বলতে বলতেই নীল এসে ধুরুম করে একটা চড় বসিয়ে দিলো গালে।এমন অবস্থায় অভনী চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে চারপাশ টা তে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো,,,না চারপাশে ততোবেশি মানুষ নেই তবে যারা আছে তারাই ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে।অভনী কাঁদো কাঁদো হয়ে গালে হাত দিয়ে বলতে লাগলো,,,

—আপনি আমায় মারলেন কেনো?

—মারবো নাতো তোমাকে সাজিয়ে রাখবো?তোমাকে বলেছিলাম না চারদিন বাসা থেকে বের হবে না?আমার কথার অবাধ্য হবার পরিনতি কি হয় তা সম্পর্কে তোমার কোনো ধারনা নেই।কাঁটা পা নিয়ে বাজারে গেলে একবার ইনফেকশন হোক পরে পা কেঁটে ফেলে দিলে সারাজীবন আতোরা হয়ে বসে থাকবে তোমার মা আর বোন কে দেখা লাগবে না তাইতো?(ধমক দিয়ে)

অভনী বেচারি পা কেঁটে ফেলার কথা শুনে ভ্যাহহহহহ করে কেঁদে উঠলো,,,নীল কে বললো,,,

—আপনি জীবনেও বউ পাবেন না সারাজীবন বিধবা হয়ে থাকতে হবে আপনার।একটা অবলা বাচ্চা মেয়েকে আপনি সবার সামনে চড় মারলেন।হুহ

এটা বলেই হনহন করে ভিতরে চলে গেলো সে। অভনীর কান্না দেখা নীলের বুক টাও মোচড় দিয়ে উঠলো তার এখন নিজের উপর ই নিজের রাগ লাগছে।কেনো মারতে গেলো সে অভনী কে?কেনো নিজের রাগ টাকে কন্ট্রোল করতে পারে না?কি হয় অভনী যার জন্য এতো দূর থেকে ছোটে এসেছে একবার দেখতে?
এসব ভাবতে ভাবতে নিজের চুল গুলোই নিজের ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে নীলের।তবে অভনীর বিরবির করে বলা কথা গুলো আর শেষের কথা গুলো মনে হতেই খুব হাসি পাচ্ছে নীলের।

?
নাহ আর পায়চারি করা যাবে না একটু ছাঁদ থেকে ঘুরে আসতেই হবে।দরকার পরলে ছাঁদের সাইডে যাবো না একদম দশ হাঁত করে দূরে থাকবো তবুও একটু বাইরের সুন্দর পরিবেশ টা দেখে আসি।পিকু কে নিয়ে ছাদে চলে গেলো অভনী।

ছাঁদে গিয়ে বড় করে একটা নিশ্বাস নিলো অভনী।ইসস ২ দিন রুমে থেকেই নিজেকে কেমন বন্দি বন্দি লাগছিলো আর এখন নিজেকে মুক্ত পাখির মতো মনে হচ্ছে তার।পিকু কে নিয়ে ছাঁদের মাঝখান থেকে একটু দূরে লাগানো গোলাপ গাছ টার কাছে গেলো অভনী। একটা গোলাপে হাত রেখে বলতে লাগলো,,,

—পিকু এই ফুলটার নাম কি জানিস?লাল গোলাপ।বল বল কি ফুল এটা?

পিকু কিছু বলার আগেই পিছন থেকে একজন বলে উঠলো,,,

— একি জাল মরিচ ঠিক বলেছিলাম তো আপনি আমার ফুল গাছ থেকে ফুল চুরি করছেন।ভাগ্যিস এখন এসেছিলাম নাহলে তো পিকাচো চুন্নি টা আমার গাছের সব ফুল চুরি করে নিয়ে যেতো।

অভনীর এখন নিজের মাথায় নিজে ইট দিয়প ভারি মারতে ইচ্ছে করছে।ও যখন ছাঁদে আসবে তখনি কি এই ছেলে টার ছাঁদে আসতে হয়?

—শুনুন আমি চুন্নি নই আপনি চুর। শুধু মাএ আপনার জন্য আমার পা কেঁটে রুমে বন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে আপনার।আপনি আর ওই রাক্ষস টা দুটোই এক।আমার তো ইচ্ছে করছে এখন আপনাকে চাইনিজ কুরাল দিয়ে কুচি কুচি করে কেটে ফেলি হুহ। (রেগে)

—ওহ তাই নাকি?বাহ বাহ জাল মরিচ দেখি বোম্বাই মরিচ হয়ে যাচ্ছে।তো জাল মরিচ কি যেন করবেন বলছিলেন চাইনিজ কুরাল দিয়প কুচি কুচি তাইতে? তো আপনার চাইনিজ কুরাল টা কি নিয়ে এসেছেন নাকি আমি নিয়ে আসবো বলুন তো (সামনে এগুতে এগুতে)

অভনী আসতে আসতে পিছনে পিছাতে লাগলো আর ছেলেটা সামনে।অভনী বলে উঠলো,,,

—দেখুন একদম সামনে আসবেন না বলে দিলাম আমি কিন্তু চিৎকার করবো।

অভনীর কথা শুনে ছেলেটি হাসতে লাগলো,,আর বললো,,

—তো মিস জাল মরিচ চিৎকার করেন না না করছে কে?করেন করেন চিৎকার করেন।

অভনী বেচারির ভয়ে মুখ দিয়ে কোনো শব্দ ই বের হচ্ছে না।ছেলেটা গিয়ে পকেট থেকে একটা চাবি বের করে ছাঁদের দরজায় তালা লাগিয়ে দিলো।অভনী এবার আরো বেশি ভয় পেতে লাগলো।ছেলেটি তালা লাগিয়ে দিয়ে ছাঁদের এক পাশে থাকা দুলনা তে গিয়ে বসে পড়লো। অন্যদিকে পিকু ছেলেটার মুখ থেকে জাল মরিচ শুনে তোতাপাখির মতো বার বার জায় মরিচ জায় মরিচ করতে লাগলো।অভনীর ইচ্ছে করছে পিকু কে হাত থেকে ফেলে দিতে কিন্তু এটা অন্যের আমানত মনে হতেই আর এমন টা করা হলো না অগত্যা পিকু কে হাতে নিয়েই ছেলেটার সামনে গিয়ে বলতে লাগলো,,,

—এই এই এই আপনি তালা লাগালেন কেন?তালা লাগিয়ে কি বুঝাতে চাচ্ছেন আপনি এই বাড়ির মালিক।শুনুন আপনি মালিক হন আর যাই হন আমি আপনাকে ভয় পাই না হুহ।

—ওহ লাইক সিরিয়াসলি তাই বুঝি আপনি আমার সামনে আসলে কাপাকাপি করার প্রতিযোগিতায় নামেন।btw, আমার নাম শাফিন আগেই বলেছি আমার অত মায়া নেই তাই তারাতাড়ি আমার গাছের ফুল চুরি করতে চাওয়ার অপরাধে ২০ বার কান ধরে উঠবস করুন তো কুইকলি।যতো লেট করবেন ততো আমার সাথে একা একা ছাঁদে থাকতে হবে।ভেবে দেখুন আমি এমনিতেই ভালো না তার উপর আবার ছেলে (চোখ টিপ দিয়ে)

অভনীর এখন ইচ্ছে করছে ছাঁদ থেকে ঝাপ দিতে।কেন যে ছাঁদে আসতে গেলো।এখন এরকম একটা অজানা খবিশ ছেলের সামনে কান ধরে উঠবস করতে হবে?হে আল্লাহ দরি ফালাও আমি উপরে উঠে যাই,,,অভনী ভয় পেলেও নিজের ভয় টাকে চেপে রেখে রাগ টাকে ভাসিয়ে তুলে বলতে লাগলো,,,

—শুনুন আপনি শাফিন হন আর যেই হন না কেন এখনি তালা খুলুন আমি আপনার সামনে কান ধরে উঠবস করবো না।

অভনীর কথায় শাফিন আবারো এগিয়ে আসতে লাগলো আর অভনী ভয় পেয়ে সাথে সাথে কান ধরে উঠবস করতে লাগলো।যা দেখে শাফিন হেঁসে উঠলো।অভনী মনে মনে ছেলেটাকে এক বস্তা বকাবকি করতে করতে ২০ বার কান ধরে উঠবস করলো।

—এবার আমায় যেতে দিন। (রাগি গলায়)

শাফিন দরজা খুলে দিলে অভনী তাড়াহুড়ো করে পিকু কে নিয়ে চলে গেলো।অভনী চলে যেতেই শাফিন জুড়ে জুড়ে হাসতে লাগলো আর বলতে লাগলো,,,

—৩ দিন দেখা না দিয়ে আমাকে যে কষ্ট দিয়েছো তোমাকে আমি কষ্ট না দেই কিভাবে জাল মরিচ।মনে রেখো আমি তোমার ভিলেন লাভার।

?
আজ ৪ দিন পর অফিসে যাওয়ার জন্য বের হয়েই একটা জটকা খেলো অভনী। বাসার একটু সামনেই সেদিনের নদীর পাড়ের ছেলেগুলো আর বাসের ছেলেগুলো এক সাথে দাঁড়িয়ে আছে।শুধু দাঁড়িয়ে থাকলে হতো কিন্তু ওদের কে দেখে মনে হচ্ছে কেউ ওদের বল বানিয়ে ফুটবল আর ক্রিকেট খেলেছে।

অভনী আরেকটু সামনে যেতেই সবগুলো ছেলে ওর সামনে এসে দাঁড়ালো আর বলতে লাগলো,,,

—আপু সরি প্লিজ আমাদের মাফ করে দিন। আমরা আর কখনো আপনার দিকে চোখ তুলে তাকাবো না।

ছেলেগুলোর কথায় অভনী আরো বড় একটা জটকা খেলো,,সেদিনের ছেলেগুলো ও তো ঠিক এমন ভাবেি এসে মাফ চেয়েছিল।অভনীর মনে মনে হাজারো প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে,,,, আচ্ছা আমাকে আবার কেউ ফলো করে নাতো?কিন্তু বাসের ছেলেগুলো নদীর পাড়ের ছেলেগুলো কে তো হিরো সাহেব দেখে ছিলো তাহলে কি হিরো সাহেব ওদের?না না এইসব কি ভাবছি আমি হিরো সাহেব কেনো আমার জন্য এমন করবে কিন্তু তাহলে কে?
অভনী ছেলেগুলো কে প্রশ্ন করলো,,,

—তোমাদের কে পাঠিয়েছে আমার কাছে মাফ চাইতে?বলো নাহলে মাফ করবো না।

—শহড়ের সব থেকে বড় মাফিয়া বস।এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারবো না আমরা। প্লিজ আপু মাফ করে দিন আমাদের (একজন ছেলে)

অভনী বুঝতে পারছে ওদের কে বার বার জিজ্ঞাসা করলেও বলবে না কিন্তু ওর মনে খটকা লেগেই থাকলো।অভনী ছেলেগুলো যেন আর কোনো মেয়ের সাথে এমন না করে তার প্রমিস করিয়ে চলে গেলো মাথায় প্রশ্নের জট পাকিয়ে।ছেলেগুলো প্রমিস করলেও ওদের প্রমিসের কোনোই দাম নেই,,, একলা একটা মেয়ে দেখলে হয়তো আবারো এদের পশুত্ব জেগে উঠবে,,।

অভনী প্রশ্নের জটলা পাকিয়ে ভাবতে ভাবতে অফিসে গিয়ে পৌঁছালো,, প্রথমেই নীলেদ কেবিনে গেলো নীল কে প্রশ্ন করতে হবে তার কিন্তু নীল এখনো অফিসে আসেনি তাই নিজের কেবিনে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো সে।

বেশ কিছুক্ষন পর অভনীর ডাক পরলো নীলের কেবিনে।অভনী সাথে সাথেই গিয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগলো,,,

—আপনি ওই ছেলে গুলো কে মেরেছেন তাই না হিরো সাহেব?

—কোন ছেলে?

—ওই যে নদীর পাড়ের আবার বাসের যেই ছেলেগুলো কে আপনায় দেখিয়ে ছিলাম।

—নিজেকে এতো ইস্পেশাল কেনো ভাবেন মিস অভনী?আমার এতো এতো কাজ রেখে আমি যাবো ওদের মারতে?এটা আপনার মাথায় আসলো কিভাবে?আর কারো কেবিনের ডোকার আগে যে নক করে আসতে হয় জানেন না?(কথা ঘুরিয়ে)

অভনীর এবারও নিজের প্রতি নিজের রাগ হতে লাগলো। সত্যিই তো ওনি কেনো মারতে যাবে ওদের।অভনী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাহিরে গিয়ে আবারো নক করে ভিতরে ডুকলো।

?
আজ শুক্রবার হওয়ার অফিস বন্ধ অভনীর,,আরিহার স্কুল প্রাইভেট ও বন্ধ তাই সবাই মিলে একসাথে বের হলো সংসারের কিছু জিনিস কিনার জন্য।

শপিং করে ফেরার সময় গাড়ি থেকে নেমে দেখলো একটা মধ্যবয়ষ্ক পুরুষ একজন বৃদ্ধ মহিলাকে টেনে অন্য গাড়িতে তুলছে।অভনীর মা সেটা দেখে নিজেকে আটকাতে পারলো না চলে গেলো পুরুষ টির কাছে মায়ের সাথে সাথে অভনী আর আরিহা ও গেলো।

—আপনি ওনাকে এভাবে টানছেন কেনো?বুড়ো মানুষ হাতে ব্যাথা পাবে তো তাছাড়া ওনি যেতে চাচ্ছেন না যখন ওনাক কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?ওনি কে হয় আপনার? (শাহেরা)

—ওই আপনি কে যে আপনাকে বলতে যাবো? সরেন সামনে থেকে জামেলা মিটাতে দেন (লোকটি)

—এমন ভাবে আপনি ওনাকে নিয়ে যেতে পারেন না।জনগনের মার খেয়েছেন কখনো?নাকি খেতে ইচ্ছে করছে? (শাহেরা)

—না মা ওরে কিছু কইরো না।আমি ওর মা হই মা।কিন্তু আমিই আইজ ওগো জামেলা।আমারে বৃদ্ধাশ্রম লইয়া যাইতাছে।আমি কইছি আমারে তগো লগে থাকতে দে দু বেলা দু মুঠ ভাত দিলেই হইবো কিন্তু তবুও আমারে লইয়া যাইতাছে বউ কয় আমি জালাই।তুমি আমার পোলা রে কওনা মা আমি ওগো রো জালামু না তবুও যেন আমারে না দিয়া আইয়ে। (বৃদ্ধা)

—দেখেছেন আপনি এই হচ্ছে মা।আপনাকে জনগণের হাতে মার খাওয়ার কথা শুনে এখনো আপনার কথাই বলছে।মাবাবা রা কিডনি বিক্রি করে আপনাদের লেখাপড়া করাতে পাড়লেও আপনাদের বিশাল বড় বাড়িতে মায়ের একটু ও জায়গা হয়না।যেই মা ছাড়া ছোট বেলা ঘুমুতে পারতেন না সেই মা কেই আজ আপনার জামেলা মনে হচ্ছে। যেই মা আপনার একটু শরীর খারাপ হলে সারারাত জেগে আপনার সেবা করে আল্লাহর কাছে আপনার সুস্থতা কামনা করেছে সেই মা আজ আপনার কাছে বোঝা।এখন তো আপনি বড় হয়ে গেছেন মা কে আর কি দরকার তাই তো দূরে রেখে আসতে যাচ্ছেন।শুনুন যেই পুরুষ নিজের বউয়ের জন্য মা কে কষ্ট পেতে দেয় না আবার মায়ের জন্য বউকে কষ্ট পেতে দেয়না সেই হচ্ছে আসল পুরুষ। আপনার মা এখন থেকে আমার মা।ওনি আমাদের সাথে থাকবে তবুও বৃদ্ধাশ্রম না।আপনি যেমন মাঝে মাঝে দেখতে যেতেন ঠিক তেমনি আমাদের বাসায় গিয়ে বাহিরে থেকে দেখে চলে আসবেন,,,।আজ আমার নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে যে আমার আপনার মতো কোনো ছেলে নেই।আমার মেয়ে কো নিয়ে আমার প্রাউড ফিল হচ্ছে,,,,,,।কিরে মা তুই পারবি না আমাদের সাথে ওনার খরচ চালাতে? (অভনী কে)

অভনী মায়ের থেকে একটু দূরে গিয়ে এক হাত উচু করে মা কে স্যালুট জানিয়ে বললো,,
—মা গো যার তোমার মতো একজন মা আছে সে কীভাবে পারবে না বলো?আমি পারবো মা। আজ থেকে ওনি আমার নানুর মতো হয়ে থাকবে।আমরা গরিব হতে পারি কিন্তু মনুষ্যত্ব হীন নয়।

চলবে,,,,

(কেউ আবার বলবেন না আমি গল্পে বাহিরের লোক ডুকিয়ে দিচ্ছি।ওরা সবাই ই গল্পের একেকটা অংশ।আমি ওদের কে উদাহরনসরুপ এনে শুধু বাস্তবতা টাকেই তুলে ধরতে চাচ্ছি।আশা করি বুঝবেন,,,।ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here