#সুখের_কষ্ট
#Part_7_( Last part)
#Writer_Tahsina_Islam_Orsha
–‘ সিহা কালকে তুই এইখানে তারাতাড়ি আয় তোর সাথে আমার কথা আছে।
–‘ কিন্তু আপু কি হয়েছে??? হ্যালো, হ্যালো।
সন্ধ্যা আর কিছু না বলেই কলটা কেটে দিলো।
ভালো লাগছে না কিছু তাই স্বাধীনকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
স্বাধীন সন্ধ্যার যে খারাপ লাগছে তা বুঝতে পারছে
–‘ আমি আপনাকে পিঠে মলম লাগিয়ে দেই? আপনার তো কষ্ট হচ্ছে।
–‘ না আমি ঠিক আছি।আপনি আমার কাছে থাকলে আমার আর কিছু লাগবে না।
–‘ তবু ও ঔষুধ লাগালে আপনার ভালো লাগবে।
স্বাধীন উঠে গিয়ে ড্রয়ার থেকে একটা বক্স বের করে মলম নিয়ে আসে। সন্ধ্যাকে উঠে বসিয়ে চুল গুলো সামনে নিয়ে পিঠে মলম লাগিয়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। সন্ধ্যা চোখ বন্ধ করে আছে স্বাধীনের স্পর্শে। সন্ধ্যা সামনে ফিরে স্বাধীনকে জড়িয়ে ধরে।
?????
নাফিজা বেগম সন্ধ্যার দিকে কেমন করে জানি তাকাচ্ছে। সন্ধ্যা ও বিষয়টা খেয়াল করছে আড়চোখে। নাফিজা বেগম কথা আর চেপে না রাখতে পেরে সন্ধ্যাকে জিজ্ঞেস করেই ফেললো
–‘ মা স্বাধীন কালকে তোমার সাথে কোন খারাপ বিহেভ করেনি তো??
সন্ধ্যা নাফিজা বেগমের কথায় বুঝতে পারছে সে কি বলতে চাচ্ছে।
–‘ মা উনি তো প্রতিদিনই একি রকম। কেন কালকে কিছু হয়েছে?
নাফিজা বেগম সন্ধ্যার কথায় চমকে গিয়ে
–‘ ন না না কালকে কি হবে আবার। শাপলা আমার জন্য এক কাপ চা নিয়ে আয় রুমে, আমি রুমে যাচ্ছি।
–‘ জি খালাম্মা।
সন্ধ্যা সাইফার দিকে তাকিয়ে
–‘ সাইফা তোমার যেতে হবে না আমি চা নিয়ে যাচ্ছি। ওদের সামনে না পারি আড়ালে তো তোমাকে আমি হেল্প করতেই পারি। আর সব কাজ আমিই করবো তুমি শুধু আমার সাথে বসে থাকবে।
–‘ কিন্তু ভাবি…..
–‘ আর কোন কিন্তু না।
সন্ধ্যা চা নিয়ে নাফিজা বেগমের রুমে গেলেন।
চা টেবিলে রেখে
–‘ মা স্বাধীনকে আরেক বার ডাক্তার দেখানো দরকার আমার মনে হয়।
সন্ধ্যার কথায় নাফিজা বেগম ভয় পেয়ে যায়। তার মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে সন্ধ্যা।
সন্ধ্যা নাফিজা বেগমকে আরেকটু ভয় দেখানোর জন্য আবার বলে উঠে
–‘ আমার মনে হয় উনাকে আরো ভালো ডাক্তার দেখালে বা দেশের বাহিরে নিয়ে গিয়ে ট্রিটমেন্ট
করালে উনি ভালো হয়ে যাবে তারাতাড়ি।
নাফিজা বেগম আমতা আমতা করে
–‘ না ভালো হবে কি করে। মানে আমরা অনেক ভালো ভালো ডাক্তার দেখিয়েছি কাজ হয়নি। তুমিই পারবে মা ওকে ভালোবেসে ওকে সুস্থ করে তুলতে।
–‘ তা তো অবশ্যই মা। আমাকে তো পারতেই হবে। অনেক কিছু যে তার পাওয়ার বাকি আছে।আচ্ছা আপনি চা খান। আমি আসি।
.
.
.
সিহা আর সন্ধ্যা বসে আছে সেই পার্কটাতে। সিহার মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না সব শুনে। এতো কাহিনি মানুষের জীবনে কি ভাবে ঘটতে পারে। জীবন আসলে গল্প উপন্যাস নাটক থেকে ও নাটকীয়। মানুষ স্বার্থের জন্য এতটা নিচে নামতে পারে ভাবতেই অবাক লাগছে সিহার। স্বাধীনের জন্য ও প্রচন্ড খারাপ লাগছে।
–‘ সিহা তুই আমার ফ্রেন্ড রাইসাকে চিনতি না?
–‘ হ্যা চিনবো না কেনো। আমাদের বাসায় তো আসতো সব সময় আর তোদের সাথে তো আমি ঘুরতে ও গেছি।
–‘ এখন চল ওদের বাসায় যাবো।
–‘ কিন্তু কেন??
–‘ পরে বলছি সব রাস্তায় চল।
?? এক মাস পর ??
নাফিজা চেয়ারে বসে আছে সাথে অয়ন আশা আর আসিফ ও। নাফিজা বেগম কি ভেবে বলে উঠলো
–‘ আমাদের এতো বছরের প্ল্যান এই মেয়ের জন্য ভেস্তে যেতে পারে না। আমার সত্যিই এই মেয়েকে সন্দেহ হচ্ছে এখন। ও হয়তো সব কোন ভাবে বুঝে গেছে। এতো বছরের রহস্য সামনে চলে আসবে সামান্য একটা মেয়ের জন্য সেটা আমি হতে দিবো না।
–‘ আমি আগেই বলেছিলাম এই মেয়ের মধ্যে কোন গর্বর আছে। অনেক চালাক এই মেয়ে।
–‘ আশা, মা অনেক হয়েছে আমার মনে হচ্ছে এখন সময় এসে গেছে এই মেয়ের ব্যবস্তা করার। এক মাস ধরে স্বাধীন পাগলের আচরণ কম করছে। রাতে ও কোন পাগলামি দেখছি না, কোন তো একটা ঘাপলা আছেই।
আসিফ বলছে
–‘ মেয়েটা ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলো হয়তো আমাদের না জানিয়ে।
–‘ আজকের রাতই ওর জীবনের শেষ রাত। দরকার হলে সাথে স্বাধীনকে ও মেরে ফেলবো।
কথা গুলো বাহিরে দাঁড়িয়ে থেকে শুনে ফেললো সন্ধ্যা। মুখ চেপে ধরে আছে সন্ধ্যা তারপর ও মুখ দিয়ে শব্দ বের হয়ে যায়। সন্ধ্যা দৌড়ে যেতে নিলেই শরীরের অংশ লেগে পরে যায় সাইডের ফুলদানিটা। নাফিজা বেগম, অয়ন আর আশা রুম থেকে তড়িঘড়ি করে বের হয়ে এসে দেখে সন্ধ্যা দৌড়ে চলে যাচ্ছে। সব শুনে ফেলেছে সন্ধ্যা।
নাফিজা বেগম আর অয়ন একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি হাসি দিলো।
সন্ধ্যা দৌড়ে রুমে গিয়ে স্বাধীনকে বললো তারাতাড়ি উঠতে। স্বাধীনকে আলমারিতে দিয়ে দিয়ে দরজা লাগিয়ে সাইফাকে কল দেই সন্ধ্যা। সাইফা কল ধরছে না সন্ধ্যার সারা শরীর কাপছে ভয়ে তারপর সিহাকে কল দিতেই অয়ন, আশা, নাফিজা আর আসিফ দরজায় এসে দাড়াঁয়। সন্ধ্যার হাত থেকে ফোন পরে যায় নিচে।
নাফিজা বেগম সন্ধ্যার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে
–‘ তার মানে তুই সব জানতি এতোদিন!! আর আমাদের সাথে নাটক করেছিস। খুব খারাপ করেছিস অভিনেত্রীর সামনে অভিনয় করে।
–‘ হ্যা আমি সব জানতাম। তোরা মানুষ ভাবতে ও ঘৃণা লাগে। এই অসহায় মানুষটার সাথে তোরা এতোদিন যেই নোংরা খেলা খেলেছিস তা আর আমি হতে দিব না।
সন্ধ্যার কথায় অয়নের চরম রাগ উঠে যায়
–‘ তুই বেচেঁ থাকলে তো হতে দিবি। ভেবেছিলাম অসহায় মেয়ে তুই এতো কিছু বুঝবি না। কিন্তু তুই দেখি আমাদের সব কষ্ট বৃথা করতে উঠে পরে লেগেছিস।
কথা গুলো বলেই অয়ন সন্ধ্যাকে একটা থাপ্পড় মারে। আশা আবার সন্ধ্যাকে ধরে আরেকটা চড় মারে।
–‘ তোর খুব তেল হয়ে গেছে তাই না।এতো দিন চুপ করে সহ্য করেছি। আজকে তোকে পৃথিবী থেকেই বিতাড়িত করে দিবো।
নাফিজা বেগম সন্ধ্যার চুলের মুঠি ধরে টান মেরে ফ্লোরে দেই।
নাফিজা বেগম বলছে
–‘ দেখতো পাগলটা কই। ওকে ও আজকে ছাড়া যাবে না। যা হবার পরে দেখা যাবে।
সন্ধ্যা নাফিজা বেগমের পা ঝাপটে ধরে।
–‘ প্লিজ উনাকে কিছু করবেন না। উনি কিছু বুঝে না। মারতে হয় আমাকে মেরে ফেলুন তবু ও উনাকে প্লিজ কিছু করবেন না। আপনার দুইটা পায়ে পরি।
–‘ নাফিজা বেগম সন্ধাকে একটা লাথি মেরে ফেলে দেই।
–‘ আগে ভাবলি না কেন সেটা??
সন্ধ্যার কপাল, নাক, ঠোঁট দিয়ে রক্ত পরছে গড়িয়ে। অয়ন বলছে
–‘ মা আগে এইটা কে শেষ করি পরে ওইটাকে দেখছি।
–‘ স্বাধীন একটা ছুরি নিয়ে সন্ধ্যার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর সন্ধ্যা ফ্লোরে বসেই পিছিয়ে যাচ্ছে
অয়ন ছুরি দিয়ে সন্ধ্যাকে আঘাত করতে যাবে তখনি স্বাধীন একটা লোহার লাঠি দিয়ে অয়নের মাথায় জোরে আঘাত করে।
স্বাধীন সন্ধ্যাকে ধরতে যাবে তখনি নাফিজা আবার বেগম স্বাধীনকে ছুরি ডুকিয়ে দেয় পিছন থেকে। সন্ধ্যা স্বাধীন বলে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে। সন্ধ্যা স্বাধীনকে ধরতেই নাফিজা বেগম সন্ধ্যাকে ও ছুরি মারতে আসে তখনি সিহা,সাইফা আর সানজিদা বেগম উপস্থিত হয় পুলিশ নিয়ে।
নাফিজা বেগম সানজিদা বেগমকে দেখে অবাক হয়ে যায়।
–‘ তুই!! তুই এখনো বেচেঁ আছিস??
সানজিদা বেগম নাফিজা বেগমকে গিয়ে জোরে কষিয়ে একটা থাপ্পড় মারে।
–‘ তুই কি ভেবেছিলি?? আমি মরে গেছি?? না আমাকে আল্লাহ এখানো বাঁচিয়ে রেখছে তোকে শাস্তি দেওয়ার জন্য।
–‘ আম্মু ভাইয়াকে দেখো। ভাইয়াকে আগে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
নাফিজা বেগম সাইফার কথায় অবাক হয়ে।
–‘শাপলা তুই!!!
–‘ হ্যা আমি আমি শাপলা না, সাইফা সানজিদা বেগমের মেয়ে, স্বাধীন ভাইয়ার বোন।
–‘ তুই এতো দিন অভিনয় করেছিস তাহলে!!
–‘ হ্যা আমার ভাইয়ার জন্য। আর ভাইয়া এখন সুস্থ। তোদের দেওয়া ইঞ্জেকশন কাজ করে না এখন আর ভাইয়ার শরীরে।
সিহা দৌড়ে গিয়ে সন্ধ্যাকে জড়িয়ে ধরে। আমি সব কথা শুনেছি আপু। কিন্তু ততক্ষণে ওরা তোকে মারতে শুরু করে দেই। আর আমি পুলিশকে নিয়ে আসি।
.
.
.
সানজিদা বেগম, সাইফা, সন্ধ্যা, সিহা সবাই অপেক্ষা করছে ওটির সামনে সন্ধ্যা নির্বাক হয়ে আছে। আজক যদি স্বাধীনের কিছু হয়ে যায় সে বাচঁবে তো?
একজন ডাক্তার বের হয়ে বললো স্বাধীন ভালো আছে। আর বিপদ নেই। জ্ঞান ফিরলে যাতে সবাই দেখা করে।
সকাল নয়টা বাজে স্বাধীনের জ্ঞান ফিরে।
সানজিদা বেগম গুটি গুটি পায়ে স্বাধীনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এতো বছরের অপেক্ষা অবশেষে শেষ হয়েছে সানজিদা বেগমের। চোখ দিয়ে অবিরাম জল গড়িয়ে পরছে সানজিদা বেগমের। বিশ্বাস হচ্ছে না স্বাধীন উনার সামনে। স্বাধীন ও তার মাকে দেখতে পেয়ে অবাক হয়েছে স্বাধীনের চোখ দিয়ে ও জল বইছে। মা ছেলের এমন মুহুর্ত দেখে সন্ধ্যা সিহা আর সাইফা ও কান্না করছে। সানজিদা বেগম স্বাধীনের কাছে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খায়।
স্বাধীন ও মা বলে ডেকে উঠে।
–‘ তুই জানিস বাবা তোর এই ডাকটা শুনার জন্য এখনো আমি বেচেঁ আছি। আমি তোর বাবার ধোকার পর ও আমি নিজেকে শান্তনা দিয়েছি শুধু তোর জন্য। তোর কথা আর সাইফার কথা ভেবে আমি বেচেঁ আছি।
সাইফা গিয়ে স্বাধীনকে জড়িয়ে ধরে ভাইয়া বলে।
সানজিদা বেগম বলছে
–‘ সাইফা তোর আপন বোন।
সন্ধ্যা তুয়াকে নিয়ে আসে
সানজিদা বেগম তুয়াকে দেখে।
–‘ তুয়া এই খানে কেন?
–‘ মা তুয়ার কোন দোষ নেই। তুয়া এই সব কিছুই জানে না। ও আজও জানে স্বাধীন ওর আপন ভাই।
তুয়া ও স্বাধীনকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।
সন্ধ্যা দুরেই দাঁড়িয়ে আছে। ওদের সবাইকে এক সাথে দেখে তৃপ্তির কান্না করছে সন্ধ্যা।
সবাই চলে যেতেই সন্ধ্যা গিয়ে স্বাধীনের বুকে পড়ে। কান্না করতে করতে স্বাধীনের বুক ভাসিয়ে দেই
–‘ আজকে যদি তোমার কিছু হতো। তাহলে আমি কি ভাবে বাচঁতাম?? তুমি কেনো বের হয়ে আসছিলে??
–‘ তোমার কিছু হলে কি আমি বাঁচতাম বলো?? আমার যে সুস্থ হওয়ায় বৃথা যেতো। তোমার জন্য আবার পাগল হয়ে যেতাম।
সন্ধ্যা শক্ত করব স্বাধীনকে জড়িয়ে ধরে।
?????
–‘স্বাধীন পড়ে যাবো নামাও আমাকে।
–‘ না নামাবো না। আজকে জানো আমার অনেক খুশি লাগছে আমি বাবা হতে যাচ্ছি। এর থেকে খুশির খবর হয়তোব পৃথিবীতে আর কিছু হয় না। কিন্তু তুমি আমাকে আগে বলোনি কেন?
–‘ তুমি অসুস্থ ছিলে তাই। তখন কি বললে বুঝতে নাকি??
–‘ এখন তো বুঝবো হি হি হি।
স্বাধীন সন্ধ্যার গলায় মুখ ডুবিয়ে দেই।
–‘ ছাড়ো কেউ এসে যাবে।
–‘ না, না, না এখন শুধু তুমি আমায় আদর করবে আর আমি তোমায়। এখন কোথাও যেতে দিবো না তোমায়।
কথা গুলো বলে শেষ করতে পারলো না স্বাধীন তখনি নিচে থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে সন্ধ্যা আর স্বাধীন নিচে যায়। সন্ধ্যা নিচে রিহানকে দেখতে পেয়ে ভয় পেয়ে যায়। ও এই খানে কি করছে??
স্বাধীন রিহানকে দেখে বলে উঠলো
–‘ কে আপনি এই খানে চিৎকার করছেন কেন?
–‘ অন্যের বাচ্চার বাপ সাজতে আপনার লজ্জা করে না? আমার বাচ্চাকে আপনার বাচ্চা ভাবছেন??সন্ধ্যার পেটে আমার বাচ্চা। সন্ধ্যা আমাকে ভালোবাসে। এই যে প্রমান।
রিহান সন্ধ্যার আর রিহানের কিছু আগের ছবি স্বাধীনকে দেখায়।
–‘ আপনার বাচ্চার মায়ের অভিনয় করছে ও যাতে আপনার সম্পত্তি ভোগ করতে পারে।
সন্ধ্যা অবাক হচ্ছে রিহানা এর এই সব কথা শুনে
–‘ কি বলছো এই সব রিহান?? স্বাধীন বিশ্বাস করো ওকে আমি বিয়ের আগে ভালোবাসতাম কিন্তু ও আমাকে টাকার লোভে নাফিজা বেগমের হাতে তুলে দেই মামির মাধ্যমে। ও বলেছে ও আমাকে ওর করেই ছাড়বে তাই এই সব বলছে বিশ্বাস করো। ওর সাথে আর কোন সম্পর্ক নেই। ওকে কোন দিন আমার হাত ও ধরতে দেই নি। স্বাধীন কিছু না বলে রুমে চলে যাবার জন্য পা বাড়াতেই
সন্ধ্যা স্বাধীনের কাছে গিয়ে
–‘ তুমি আমায় বিশ্বাস করো না স্বাধীন??
স্বাধীন কোন কথা বলছে না সন্ধ্যা আবার বললো
–‘ কথা না বলে এই খান থেকে যেয়ো না তাহলে আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো। আর কখনো ফিরবো না।
স্বাধীন কোন কথা না বলে রুমে চলে যায়।
সন্ধ্যা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীন ওকে বিশ্বাস করলো না!! রিহান শয়তানি হাসি হাসছে। সাইফা গিয়ে রিহানকে একটা থাপ্পড় মারে।
–‘ তুই এইখান থেকে যাবি নাকি আমি পুলিশ ডাকবো??
রিহান ভয় পেয়ে চলে যায়। যেটা চেয়েছিলো রিহান সেটা হয়ে গেছে। সন্ধ্যা আর স্বাধীনের মাঝে পেচঁ লাগিয়ে দিতেই এসেছিলো রিহান।
সাইফা জড়িয়ে ধরে সন্ধ্যাকে
–‘ ভাবি ভাইয়া এই সব বিশ্বাস করেনি চিন্তা করো না। আমি ভাইয়াকে সব বুঝিয়ে বলছি।
–‘ না সাইফা ও সব বিশ্বাস করেছে। আর ওর কিছু মনে থাকতো না তো ইঞ্জেকশন দিলে। তাই ও এই সব বিশ্বাস করছে।
মাকে আর স্বাধীনকে দেখে রেখো আমি আসছি।
–‘ ভাবি কি বলছো এই সব তুমি!! তুমি কোথায় যাবে?? ভাইয়া কিন্তু তোমায় ছাড়া থাকতে পারবে না
–‘ পারবে সাইফা। খেয়াল রেখো ওর।
সন্ধ্যা বাড়ি ছেড়ে চলে আসে মামির বাড়িতে। কারন মামি তার ভুল বুঝতে পেরেছে। অনেক কান্না কাটি করেছিলো সন্ধ্যার সাথে মাফ ও চেয়েছে।
সিহা সব শুনে
–‘ ভাইয়াকে বুঝিয়ে কেনো বললি না? এতো কষ্ট করেছিস ভাইয়ার জন্য আর এখন তোকে ভুল বুঝে!! দাড়াঁ আমি যাচ্ছি।
–‘ না সিহা দরকার নেই। ও ভালো থাকুক আমি সেটাই চাই।
–‘ ওই দিন যদি তোর বান্ধবী ডাক্তার রাইসার কাছে না যেতি উনার সাথে পরামর্শ না করতি ভাইয়া কিন্তু ভালো হতো না। উনার ঔষুধের জন্যই ওদের দেওয়া ইঞ্জেকশন কাজ করতো না। আর ভাইয়া ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠে
সব ভুলে গেছে ভাইয়া??
সিহা কথা গুলো বলতেই সাইফা দৌড়ে রুমেএ ভিতরে ডুকে।
–‘ ভাবি ভাইয়া কেমন জানি করছে আগের মতো। ভাইয়া কি আবার পাগল হয়ে গেছে!!তারাতাড়ি চলো ঘরের সব ভেঙে ফেলছে।
সাইফার কথা শুনে সন্ধ্যা আর কিছু না বলে সাইফার সাথে চলে।
স্বাধীনের রুমের ভিতরে গিয়ে দেখে সব ভেঙে চুরে ফেলেছে স্বাধীন। লাইট অফ করে বসে আছে। সন্ধ্যা স্বাধীনের কাছে এসে স্বাধীন বলে ডাক দিতেই স্বাধীন সন্ধ্যাকে জড়িয়ে ধরে।
সন্ধ্যার বুকে মাথা রেখে
–‘ আপনি আমায় ছেড়ে কোথায় গিয়েছিলেন। আমার একা একা ভয় লাগে আপনি জানেন না?? আমাকে রেখে আর কোথাও যাবেন না বলেন। ( ছোট বাচ্চার মতো)
স্বাধীনের কথা শুনে সন্ধ্যা কান্না করে দেই। বুকের মাঝে চেপে ধরে স্বাধীনকে
–‘ কোথাও যাবো না কথা দিলাম। আমি যে তোমায় ভালোবাসি অনেক। তোমাকে ছাড়া আমি বাচঁতে পারবো না।
–‘ তাহলে ছেড়ে গেলে কেনে হুম?? ( নরমাল ভাবে)
–‘ আপনার কিছু হয়নি??
–‘ কি হবে আবার?? গেলে কেনো বলো?? রিহানের কথায় মাথা কেমন জানি করছিলো ইচ্ছে হচ্ছিলো ওকে মেরে ফেলি রাগ সামলাতে ঘরে আসছি তাই বলে তুমি চলে যাবে??
–‘ তাই বলে এমন অভিনয় করবে?? জানো কতো ভয় পেয়ে গেছিলাম।
–‘ ছেড়ে গেলে কেনো? এই ভয় তোমার প্রাপ্য।
সিহা, সাইফা, তুয়া আর সানজিদা বেগম ওদের মিষ্টি ঝগড়া দেখে চলে যায় হাসতে হাসতে।
স্বাধীন কিছু বলতে যাবে সন্ধ্যাকে তখনি সন্ধ্যা ঠোঁট ডুবিয়ে দেই স্বাধীনের ঠোঁটে।
কারন সন্ধ্যা এখনো জানে স্বাধীনকে কি ভাবে শান্ত করতে হয়।
সমাপ্ত
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য আর সবাই পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।