#প্রেমোদ্দীপক। (পর্ব-২৬)
আফিয়া খোন্দকার আপ্পিতা
চলমান যুগটাকে আধুনিকা যুগ বলা হয়। এই যুগে সবকিছুতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। কুসংস্কারভরতি মস্তিষ্ক গুলো পরিষ্কার হয়ে অনেক দিক থেকে মানুষের ধ্যান ধারণা বদলেছে। তবে কিছু ব্যাপার এখনো পূর্ব যুগের আদলেই রয়ে গেছে, তার মধ্য একটা হলো বর্ণ বৈষম্য। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও মানুষকে গায়ের চামড়া দিয়ে মাপা হয়। সুন্দরের পূজারীদের কাছে কোন মানুষ সাদা চামড়ার হলে তার মূল্যায়ন বেশি, কালো হলে তাকে হেয় করা হয় বেশি। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় মানুষের গায়ের চামড়া তিন ধরনের হয়, সাদা,কালো আর বাদামী। তৃতীয় রঙ বাদামী, যাকে সবাই শ্যামলা বলে। এই রঙের মানুষগুলোর মাঝে মায়ায় ঠাসা থাকে। কবি লেখকের ভাষায় সবচেয়ে মায়াবতী মানুষ হলো শ্যামবর্ণের মানুষ। ইয়াং জেনারেশনের কাছে শ্যামবর্ণটা আকর্ষণীয় মনে হলেও মুরুব্বি সমাজের কাছে এটি একবারেই অগ্রাহ্য। তৃতীয় রংটাকে ধরাই হয়না। দুটো রঙ ধরা হয়, সাদা কালো। সাদা চামড়ার মানুষদের সুন্দরের তালিকায়,আর যাদের রঙ চাপা তাদের কালো রঙের তালিকায়। বাদামীকে চাপা রঙ ধরা না হলেও আমাদের মুরুব্বি সমাজ বাদামী চেহারার মানুষজনকে কালোর তালিকায় ফেলে দেন অনায়েসে । বর্ণ বৈষম্যের শিকার হয় বেশি নারীরা এবং তা সবচেয়ে বেশি হয় গ্রামীন সমাজে। বিশেষ করে পাত্রী দেখার সময় পাত্রীর গায়ের রং সাদা হওয়া বাধ্যতামূলক হিসেবে ধরে নেন তারা। বাকিসব ছাড়া যায়, রংটা একটু ভালো না হলে হয়? ছেলে কালো হলে সমস্যা নেই কিন্তু বউটা সুন্দর হতে হবে, বউ কালো হলে ছেলেমেয়েও কালো হবে। তাদের কন্যা সন্তান যদি কালো হয়, তবে বিয়ে শাদী দিবে কীভাবে? কেউ বিয়ে করতে তো চায়না কালো মেয়েকে, সবাই চায় সুন্দর বউ। কালো বউ নিয়ে বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনের সামনে যাওয়া যায় না, পরিচয় করিয়ে দেয়া যায় না। সমস্যাটা ব্যাপক। এত সমস্যা নিয়ে কোন ভাবেই ছেলেকে কালো মেয়ে বিয়ে করানো যায় না। এই মন মানুষিকতা সম্পন্ন মানুষ হচ্ছেন জাহানারা। তার দুই ছেলে, তাদের বেছে বেছে সুন্দরী বউ দেখে বিয়ে করিয়েছেন। ছেলে দুটো একবারে কালো সেটা ভিন্ন ব্যাপার। ছেলেদের এত দোষ ধরতে নেই। একমাত্র মেয়ে জাবিনের গায়ের রঙটাও দুধে আলতো। জাবিন ও সুন্দরের পূজারী। রূপ দেখেই একটা ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছে, বাকি কিছুই দেখেনি। আবেগের বশে বিয়েও করে ফেলেছে। বিয়ের কদিন পরেই টের পেল ছেলে নেশাখোর, ভাবীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত। এত সুন্দরী বউ ঘরে থাকতে তারপ্রতি কোন টান নেই। এখন হায়হায় করছে। সুন্দরের পূজারী হওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া টের পাচ্ছে, এটাও ভিন্ন ব্যাপার। নিজের ঘর ভেসে যাক, চোখ দিতে নেই, অন্যের ঘরে নুন থেকে চুন ঘষাটা মানা যায় না।
ননদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত নীলিমা। রাগ আর ঘৃণার জন্ম নিয়েছে মনে। কত ভাবনা আসছে মনে। ইচ্ছে করছে কয়েকটা কড়া কথা শুনিয়ে দিতে, কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবার ভয়ে চুপ আছে। জাহানারাকে এখন কিছু বললে কেঁদে কেটে বাড়ি মাথায় তুলবেন, নীলীমাকে যা নয় তা বলবেন। অসুস্থ মাকে ফেলে চলে যাবেন, আর আসবেন ও না। শেষে সব দোষ এসে পড়বে নীলীমার গায়ে। তিনি সুযোগ খুঁজছেন, সুযোগ পেলে মনের সব রাগ উজাড় করবেন।
তাহিয়ার ভাপা পিঠা পছন্দ। শহরে ভাপা পিঠার সেই স্বাদ কোথায়, যতটা গ্রামের তাজা গুড়ের ভাপা পিঠার? আজ ভাপা পিঠা বানানো হচ্ছে দেখে নীলিমা খুশি হয়েছেন, মেয়েটা আজ খেতে পারবে। কিছু ঝামেলাটা উড়ে এসে পড়ায় তা আর হলো কই? চাচীকে তুলে দিয়ে নিজেই পিঠা বানাচ্ছেন নীলিমা। মাঝে কত কথাই না ভাবছেন। জাহানারা এখন মায়ের কাছে, নীলিমার পাশে আছেন রেহানা। কয়েকটা ভাপা পিঠা বানিয়ে একটা প্লেটে তুলে নিলেন। পিঠা বানানোর দায়িত্ব রেহানাকে দিয়ে তিনি চললেন ছেলের ঘরের দিকে। ঘরের দরজায় নক দিলেন,
‘অভী, দরজা খুল তো।’
ভেতরে মান অভিমান পর্ব চলছে। তাহিয়ার মন খারাপের কারণ কিছুতেই ধরতে পারছেনা অভীক। তাহিয়া কিছু বলতে নারাজ। এত খারাপ কথা মুখেও আসছে না ওর। নীলিমার উপস্থিতি টের পেয়ে অভীক দূরে সরে গেল। দরজা খুলতেই নীলিমা উদ্ধিগ্ন হয়ে চাপাস্বরে প্রশ্ন করলেন,
‘তাহিয়া কী করছে? এখনো কাঁদছে?’
অভীক ভ্রু কুঁচকাল,
‘তুমি জানো ওর কান্নার কারণ?’
নীলিমা করুণ গলায় বললেন, ‘হ্যাঁ। তোদের গ্রামে আসতে বলাটাই আমার ভুল হয়েছে। গ্রামে না আসলে তাহিয়ার এত কথা শুনতে হতো না। ‘
‘কী হয়েছে বলো তো! কে কথা শুনিয়েছে ওকে?’ প্রশ্নবিদ্ধ চাহনিতে প্রশ্ন করল অভীক। নীলিমা হাত টেনে ছেলেকে বাইরে আনলেন। তারপর সন্ধ্যার ঘটনা বিশদভাবে বর্ণনা করলেন ছেলের কাছে। সব শুনে বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে গেল অভীক। মানুষকে এভাবে মাপা হয়! কিছুক্ষণ কথা বলতে পারল না। তারপর নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,
‘এখানে তাহিয়ার দোষটা কোথায়? ও কি নিজের গায়ের চামড়া নিজে লাগিয়েছে? আল্লাহর প্রদত্ত চামড়া নিয়ে দুনিয়াতে এসেছে, কালো সুন্দর হওয়ার ক্ষেত্রে ওর তো হাত নেই। তবে ওকে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে কেন এটা বুঝতে পারছি না আমি। আর ফুপি নারী হয়ে তাহিয়াকে কিভাবে অপমান করতে পারল?’
নীলিমা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,
‘কালো, সুন্দর, লম্বা,বেটে, চেহারা ভালো, খারাপ এসবে মানুষের হাত না থাকা সত্ত্বেও মানুষকে দোষারোপ করা হয়। তাকে এমনভাবে দেখা হয় যেন সে অনেক বড়ো অপরাধ করেছে, অথচ সে একবারেই নির্দোষ। সব আল্লাহর সিদ্ধান্ত, আল্লাহ মানুষকে এভাবে পাঠিয়েছে। এতে মানুষের কিছু করার নেই, নিজ থেকে রং পরিবর্তনের ক্ষমতা আল্লাহ মানুষকে দেন নি। এসব না বুঝে আমাদের সমাজ মানুষকে, বিশেষ করে মেয়েদের হেয় করার জন্য উঠে লেগে থাকে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার কী জানিস? হেয় করা সমাজের আটানব্বই ভাগই নারী। পুরুষরা নারীদের যতটুকু সম্মান করে, তার এক ভাগ ও নারীরা নারীদের করেনা। নারীরাই নারীদের শত্রু। এই যেমন আজ তোর চাচা, ফুপা সবাই তাহিয়াকে সহজভাবে নিয়েছে। সহজভাবে নিতে পারেনি তোর ফুপিসহ কতিপয় নারী। রঙের জন্য মেয়েরা যতটা অপমানিত হয়, তার বেশিরভাগ কোন না কোন নারী থেকে হয়। আমরা নারীরাই খারাপ, দোষ দিই অন্যকে। এটাই সমাজ, এটাই রীতি। এভাবে চলতে থাকবে বছরের পর বছর।
যাক গে, তুই ওকে বুঝা। কান্না থামিয়ে পিঠা খাইয়ে দে। আজ আর বেরুনোর দরকার নেই। রাতের খাবার আমি রুমেই এনে দিব। তুই ও রুম থেকে যাস না। ওকে সময় দে।’
মায়ের কথাগুলো মনে ধরল অভীকের। আসোলেই এটাই বাস্তবতা। একটা সংসারে অশান্তির কারণ থাকে নারীরা। বউয়ের শত্রু হয় শ্বাশুড়ি, শ্বশুর হয় না। কয়টা পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে যেখানে শ্বশুরের অত্যাচারে গৃহবধূ অতিষ্ঠ? এ সংখ্যা বেশি না। যতটা না শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়। জামাতা আর শ্বশুরের সাথে কথা কাটাকাটি হয়না, যতটা হয় শ্বাশুড়ি পুত্রবধূর মাঝে। মায়েরা ছেলের কাছে থাকলে বৃদ্ধাশ্রমে যায় না, ছেলের বউয়ের কাছে থাকলে যায়।
কখনো বউ খারাপ, কখনো শ্বাশুড়ি খারাপ। শ্বাশুড়ি ভাবে না সে একদিন বউ ছিল, তার অসুবিধা গুলো যেন বউয়ের না হয়। বউ ভাবে না সে একদিন শ্বাশুড়ি হবে, আজ শ্বাশুড়ির সাথে খারাপ ব্যবহার করলে কাল তার পুত্রবধূ তার সাথে ও খারাপ ব্যবহার করবে।
নারীরাই একে অপরকে বুঝেনা। বুঝলে হয়তো পারিবারিক কলহের কারণে মামলার সংখ্যাটা কমে যেত। নিরাপদে থাকতো প্রতিটা গৃহবধূ, শান্তিতে থাকতো প্রতিটা ছেলে মা। একটা কঠিন বাস্তবতা হলো, নারীরাই নারীদের জীবন নরকের কারণ হয়।সবাই এমন না। তার মায়ের মতো শ্বাশুড়ি ও আছে, তার বউয়ের মতো পুত্রবধূও আছে। অভীক প্রতিটি নামাযের মোনাজাতে দোয়া করে তার জীবনের দুই নারী যাতে মিলেমিশে থাকে, কখনো তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব না হোক। কারণ বউ আর মায়ের ঝগড়া সবচেয়ে বেশি অসহায় থাকে ছেলে। এমন দিন না আসুক, যে তাকে একদিক বাছাই করা লাগুক। প্রিয় দুই মানুষ থাকুক হাসিখুশি, সুখে থাকুক একসাথে। ওর পরিবার আর সব পরিবারের মতো না হোক। দোয়া কবুল হচ্ছে বোধহয়, নয়তো কোন শ্বাশুড়ি বউয়ের চিন্তায় এমন অস্থির হয়? ছেলেকে অনুরোধ করে বউকে সময় দিতে?
অভীক প্রসন্ন হেসে বলল,
‘তুমি চিন্তা করো না, আমি ওকে সামলে নিব।’
নীলিমা তৎক্ষনাৎ উত্তর দিলেন না। খানিক বাদে ইতস্ততভাবে জিজ্ঞেস করলেন,
‘বিয়েটা তো আমার পছন্দ মাফিক হয়েছে। এখন তাহিয়ার গায়ের রং বা ওকে নিয়ে তোর কোন সমস্যা নেই তো? ওকে নিয়ে ভালো আছিস তুই?’
অভীক ও তৎক্ষনাৎ উত্তর দিল না। তড়িৎ মন যে উত্তর দিল তা হলো,
‘ সমস্যা এটা নয় যে, হিয়ার গায়ের রং চাপা। সমস্যা হলো এটা, শ্যামবতীর রঙে ঢঙে গুনের সাগরে আমি ডুবে গেছি, এখন উঠতে পারছিনা। আয়ত্ত করা সাঁতারটাও ভুলে বসেছি। হিয়ারানীতেই মজে আছি। সমস্যা যদি হয়, এটাই সমস্যা। আর কোন সমস্যা নেই। যদিও এরচেয়ে সুন্দর সমস্যা আমার দেখা দুটো নেই। যে সমস্যা শান্তি দেয়, উপভোগ করা যায়, প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করে যায়, চমৎকার অনুভূতি উপহার দেয়। অন্য সমস্যা মানুষের জীবন দূর্বিষহ করে দেয়, অথচ এই সমস্যা আমার জীবনটা রাঙিয়ে দিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটাই একমাত্র সুন্দর আর চমৎকার সমস্যা। এই সমস্যা সারাজীবন বয়ে চলতে আপত্তি নেই আমার।’
মনের উত্তর তো আর সম্মুখে দাঁড়ানো শ্রদ্ধাভাজন জননীকে দেয়া যায় না। কথা বলার স্থান কাল পাত্র আলাদা থাকে, সবাইকে সব কথা বলা যায় না। অভীক খানিক সময় নিয়ে বলল,
‘ তোমার পছন্দের উপর বরাবরই আমার সন্তুষ্টি কাজ করে। এবার বোধহয় একটু বেশি কাজ করছে। তোমার পছন্দের কোন খুঁত আজ অবধি আমি পাইনি, এখনো পাচ্ছিনা। তুমি সবসময় আমার জন্য বেস্ট কিছুই বাছাই করো। তোমার মতো এত ভালো কিছু আমার চোখে পড়ে না। তাই আমার জীবনসঙ্গিনী বাছাইয়ের দায়িত্ব তোমার কাধে তুলে দিয়েছিলাম। ইদানীং মনে হচ্ছে আমি জীবনে যদি ভালো কোন কাজ করে থাকি তবে এটাই করেছি। দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিলে হয়তো এত চমৎকার কাউকে নিজের জীবনে আনতে পারতাম না। এতটা ভালো থাকাও হতো না বোধহয়। ধন্যবাদ মা, তুমি চমৎকার মানুষ , তোমার পছন্দের মানুষ ও চমৎকার।’
অভীক সরাসরি বলল না তাহিয়া চমৎকার মানুষ, সরাসরি বলল না তাহিয়াকে নিয়ে ও সুখে আছে। মায়ের উদাহরণ দিতে গিয়ে ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে সব বলে দিয়ল। নীলিমা বিচক্ষণ মানুষ। কথার প্যাঁচ থেকে কথা বের করে পড়ে নিলেন অনায়েসে। এতক্ষণে তার মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠল। এ হাসিটা, স্বস্তির, আনন্দের, ভালো লাগার। এক পক্ষ থেকে ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে এবার তাহিয়ার দিকটা দেখলেই ষোলকলা পূর্ণ হবে।
তিনি প্রাণবন্ত হেসে বলল,
‘ আমি, সমাজ, রাষ্ট্র, কে কী ভাবল সেটা বড়ো কথা না, বড়ো কথা হলো স্বামী হিসেবে তুই কী ভাবিস। তোর সন্তুষ্টিটাই আসল। বাকিসব অগ্রাহ্য। পুরো দুনিয়া এক স্ত্রীর বিপক্ষে গেলেও স্বামী যদি পাশে থাকে তবে সেই স্ত্রী সব জয় করতে পারে, সবার সাথে লড়ে উঠতে পারে। তুই ওর পাশে থাকলেই হলো। বাকি কারো কথা কানে নেয়ার দরকার নেই। মানুষের কাজই হলো বিনা বেতনে অন্যকে কথা শুনানো, হেয় করা। এখন গিয়ে ওকে বুঝা। আমার লজ্জা লাগছে ওর সামনে যেতে, নয়তো আমিই যেতাম। মনে হচ্ছে আমিই যেচে ওকে অপমানের কুয়োয় ঠেলে ফেললাম। যা এখন। সেই দুপুরে কী খেয়েছে না খেয়েছে, আর খাওয়া হয়নি। পিঠা খাইয়ে দিবি। ‘ হাতে থাকা ভাপা পিঠার প্লেট ছেলের হাতে ধরিয়ে দিলেন নীলিমা।
অভীক হাসল, হাঁটা ধরল। নীলিমা পিছু ডাকলেন। অভীক পিছু ফিরলে বললেন,
‘কাল সকালে তাহিয়ার সাথে দেখা হলে ওর হাসিমুখ দেখতে চাই আমি। কিভাবে ওর মন ভালো করবি তোর ব্যাপার।
আর শুন, কখনো চুপ থাকাই শ্রেয়, আবার কখনো প্রতিবাদ না করা মানেই বিপদকে আমন্ত্রণ করা। প্রতিবাদটা সবসময় মারামারি, কাটাকাটি কিংবা ঝগড়া ঝাটির মাধ্যমে করতে হবে এমন কথা নেই। ঘড়ির কাটা ঘুরে একই জায়গা পেরিয়ে অন্য জায়গায় যায়। হাসিমুখে সুন্দরভাবে স্থান কাল পাত্র ভেবে প্রতিবাদ করা যায়, যাতে কোন তর্ক হয় না, ঝগড়া হয় না, মারামারি কাটাকাটি হয় না, কেউ টের পায় না, সেই টের পাবে যে অপমান করে এবং সবার অগোচরে সে শিক্ষা পেয়ে যায়। এই পথ খুঁজে নিজে শিখে নিস, তাহিয়াকে শিখিয়ে দিস।’
নীলিমা চলে গেলেন। অভীক দাঁড়িয়ে ভাবল কিছুক্ষণ। কথার সারমর্ম খুঁজে পেয়ে হাসল। ঘরে গিয়ে দেখল তাহিয়া কম্বল মুড়ে শুয়ে আছে। মাথাটাও ঢাকা কম্বলে। অভীক দরজা চাপিয়ে পিঠা রাখল খাটের পাশে থাকা চেয়ারের উপর। তারপর বিছানায় বসল, কম্বল সরাল। নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে মেয়েটা। অভীক ঝুকে আলতো হাতে উঠানোর চেষ্টা করল। তাহিয়া উঠল না, আবার কম্বল টেনে শুয়ে পড়ল। অভীক আলতো স্বরে বলল,
‘হিয়া, উঠো দেখি।’
তাহিয়া উঠল না। অভীক শক্তি প্রয়োগ করে স্ত্রীকে উঠে বসাল। এক হাতে আগলে নিয়ে অন্য হাতে কম্বল সরাল। চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল,
‘যা বলার ফুপি বলেছে। আমি কি কিছু বলেছি? আমি ছিলাম ওখানে? না আমি শিখিয়ে দিয়েছি, কোনটা?’
তাহিয়া নিচের দিয়ে তাকিয়ে রইল। উত্তর দিল না। অভীক বলল,
‘উত্তর দাও হিয়া।’
‘কোনটাই না। ‘ নিশ্চুপ থেকে উত্তর দিল তাহিয়া। অভীক প্রশ্ন করল,
‘তবে আমাকে শাস্তি দিচ্ছে কেন? ‘
তাহিয়া প্রশ্নবোধক চাহনি দিল। ও কিসের শাস্তি দিল? অভীক বলল,
‘এই যে বাইরের কার না কার কথা শুনে তুমি কাঁদছো, আমার সাথে কথা বলছো না, তাকাচ্ছো না, অদ্ভুত আচরণ করছো। এটা শাস্তি না? ‘
তাহিয়ার চোখে মুখে অনুতাপের ছায়া। মিনমিনে স্বরে বলল,
‘উনারা খুব বাজে কথা বলেছেন আমায়। আমি মেনে নিতে পারছিনা। ওসব কথা ভাবতেই খারাপ লাগছে আমার। এত বাজে কথা এর আগে কেউ বলে নি আমায়। আমি তো বিয়েতে রাজিও ছিলাম না, তবে উনারা কেন বলছেন আমি আপনাকে শরীর দিয়ে বশ করেছি? উনাদের মতো আপনাদের ও কি মনে হয় আমি সত্যিই আপনার জীবন শেষ করে দিয়েছি? আমি আপনার মতো দেখতে ভালো নই। কোথায় আপনি কোথায় আমি! আপনার কি আফসোস হয়?’
অভীকের গা শিউরে উঠল তাহিয়ার কথায়। কত জঘন্য ভাষা ব্যবহার করেছে এরা! সামান্য গায়ের রংয়ের জন্য! মানুষ এত নিচু নেমে গেছে। জাহানারার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ঝরে গেল নিমিষেই। চোয়াল শক্ত হলো। ইচ্ছে হলো তৎক্ষনাৎ গিয়ে কটা কথা শুনিয়ে দিতে। কিন্তু তাহিয়ার মন খারাপের মধ্যবেলায় ওকে ছেড়ে যাওয়া ঠিক হবে না ভেবে গেল না। আপাতত তাহিয়ার মন ভালো করা মূখ্যকাজ। অভীক আলতো স্বরে বলল,
‘ আমার জীবনের প্রেমময় অধ্যায়ের এক এবং একমাত্র নারী তুমিই। তোমার আগে পরে কেউ ছিল না, নেই, থাকবে ও না। তোমার প্রতি ফুপি বিরূপ ধারণা পোষণ করে, আমি নই। তোমার এই শ্যামবর্ণের চেহারাটার মাঝেই আমি আটকা পড়ি বারেবার, সেখানে আপত্তি আর আফসোসের জায়গা নেই। তুমি আমার জীবনে শেষ করোনি বরং এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছো। আমার সাথে হিয়ারানীক মানায় বলেই আমরা ‘বিয়ে’র মতো পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। আমার তো মনে হচ্ছে, তুমি ছাড়া কাউকেই মানাবেনা আমার সাথে, অন্তত আমি মানিয়ে নিতে পারব না। এখন আমার তুমিটাকেই লাগবে। এই শ্যামবতীটার মাঝেই আমি ডুবে থাকব সারাকাল, এই শ্যামবতীই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী। তুমি যদি সাদা চামড়ার হতে তবে হয়তো আমার মাঝে এত মুগ্ধতা কাজ করত না, যতটা এখন করে। তোমার এই রূপই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে আমায়। কারো কথার ধার ধারি না আমি। যে যা বলুক, আমার হিয়ারানী তুমিই। তোমাকে নিয়ে, সম্পর্ক নিয়ে আমি সন্তুষ্ট, তোমারও থাকা উচিত। আর কখনো আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে না, আমার মনোক্ষুণ্ণ হয়।’
সুন্দর শুনাল অভীকের কথাগুলো। তাহিয়ার মনে হলো অভীকের স্বরে মন খারাপের ওষুধ মেশানো আছে। যা শ্রবণ করলেই মন খারাপ সেরে যায়। এই যে এখন অভীকের কথার মাঝেই ওর কান্না থেমে গেল। সে স্পষ্ট টের পেল জাহানারার কথার ঘা সেরে উঠতে শুরু করেছে। কষ্টের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছে। তাহিয়া উত্তর দিল না, অভীকের বুকে মাথা রেখে একটা নিঃশ্বাস ফেলল শুধু। অভীক ওর মাথায় অধর ছোঁয়াল। তারপর আবার বলল,
‘মানুষ নানান কথা বলবে, মানুষকে হেয় করাই তাদের কাজ। তুমি যদি তাদের কথা শুনে মন খারাপ করতে বসে যাও তবে তোমার সুখে থাকা হবে না। তুমি যদি তোমার অবস্থান থেকে ঠিক থাকো তবে কারো কথা কানে তুলবে না। গায়ের রংয়ে তোমার হাত নেই, এটা আল্লাহ প্রদত্ত। এখানে তুমি নির্দোষ। তুমি তোমার অবস্থান থেকে ঠিক আছো। আল্লাহ যা করেন মঙ্গলের জন্য করেন, প্রতিটা মানুষের কালো সুন্দর হওয়ার পেছনেও মঙ্গল নিহিত আছে। মানুষের উচিত নিজ রং নিয়ে সন্তুষ্টি থাকা। তা না করে মানুষের কথা ধরে খুঁত ধরতে গেলে জীবনে সুখী হওয়া যাবে না। তুমি যদি নিজের খুঁত ধরো, অন্য একজন ও তোমার দোষ ধরার সুযোগ পেয়ে যাবে। তার পরিবর্তে যদি তুমি নিজে সন্তুষ্ট থাকো, কেউ কিছু বলতে গেলে হাসি মুখে বলো যে, ‘আল্লাহ আমাকে এভাবেই পাঠিয়েছেন, এতে তো আমার হাত নেই। আল্লাহ যা দিয়েছেন তাতেই আমি সন্তুষ্ট। আমি মনে করি সবার সন্তুষ্ট থাকা উচিত।’ দেখবে পরবর্তীতে তোমাকে কিছু বলার আগে হাজারবার ভাববে, বলবেও না। এই যে তুমি ঘরে এসে কাঁদছো, এতে কোন লাভ হচ্ছে? ফুপি কি তোমার কান্না দেখছেন? ভুল বুঝতে পারছেন? কোনটাই হচ্ছে না। ফলাফল কষলে দেখা যাবে, তোমার এই কান্নাটা একবারেই অনর্থক। আবেগগুলো অপাত্রে দান করছো। কান্না যদি করতেই হয় আল্লাহর কাছে করবে। তিনি বানিয়েছেন তোমায়, রংটাও তারই দেয়া। তাকেই বলো। দেখবে তিনি সুন্দর সমাধান করে দিবেন। অনুভূতি গুলোকে কখনো অপাত্রে দান করবে না, সুপাত্রে দান করবে। নিজেকে অন্যের কাছে এতটা নিরীহ প্রকাশ করো না, নিচু মন মানুসিকতার মানুষ হেয় করার জন্য এই মানুষগুলোকেই খুঁজে। তুমি কালো সুন্দর, বাদামী যেমনই হোওনা কেন, এটা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করো না। সগর্বে বলবে, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ যা দিয়েছেন সেটাতেই খুশি আমি। আর কখনো নিজের রং নিয়ে কাঁদতে বসবে না। আমি সহজ ভাবে নিব না। আজ প্রথম বলে রাগ প্রকাশ করলাম না। ‘
লম্বা কথা শেষ করে নিঃশ্বাস ফেলল অভীক। তাহিয়া শুনে গেল। বিস্ময় কাজ করল, এভাবে কখনো ব্যাখ্যা করা হয়নি। বর্ণ নিয়ে নাখোশ না হওয়ার সিদ্ধান্ত কষল মনে। তাহিয়া মাথা তুলল, মুগ্ধঘন স্বরে বলল,
‘আপনার ভাবনা যদি সবার হতো তবে কেউ বর্ণ বৈষম্যের শিকার হতো না। পুরো দুনিয়া আমার বিপক্ষে গেলেও আপনি আমার পক্ষে থাকলে আমি সব জয় করতে পারব। আমি আপনাকে নিয়ে ভয়ে ছিলাম, হঠাৎ মনে হলো আপনি যদি আমাকে ছেড়ে চলে যান, তবে কী হবে? হারানোর ভয় জেগেছে আমার। ‘
মায়ের বলা কথার সুর স্ত্রীর মুখে দেখে হাসল অভীক।
‘ এ ক্ষেত্রে আমি তোমার প্রেমিক নই যে, সামান্য কারণে ব্রেকাপ করে দূরে সরে যাব। আমি তোমার জীবন সঙ্গী। সুখে দুঃখে পাশে থাকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সঙ্গী। সর্বাবস্থায় সাপোর্ট করা আমার দায়িত্ব। আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাব। তুমি নিশ্চিন্ত থাকো। এবার একটু হাসো তো দেখি। বউটাকে একটু দেখি।’ অভীকের স্বরটা শান্ত। তাহিয়ার মনে প্রশান্তি ছেয়ে গেল। ও প্রসন্ন হাসল।
ওর হাসি পরখ করে হাসল অভীক। মনটা প্রশান্তিতে ছেঁয়ে গেছে। হাত বাড়িয়ে পিঠার প্লেট হাতে নিল। অনন্যচিত্তে খাইয়ে দিল স্ত্রীকে, নিজেও খেল।
•
রাতের খাবারটা তাহিয়া ঘরেই খেল। তাহিয়াকে রেখে অভীক গেল চাচাদের সাথে খেতে। চাচা, চাচী, ফুপা, ফুপি, চাচাতো ভাইবোন, ফুপাতো ভাইবোন সবাই শীতলপাটিতে পাশাপাশি সারি বেধে বসল। নীলিমা, রেহামা বেড়ে দিচ্ছেন খাবার। জাহানারা বসেছে অভীকের বিপরীত দিকে। চারপাশ তাকিয়ে তাহিয়াকে খুঁজলেন। না দেখে বললেন,
‘ভাবি , তোমার পোলার বউ আহে নাই খাইতে?’
নীলিমা উত্তর দিলেন, ‘নাহ, ওর শরীরটা ভালো লাগছেনা। ঘরেই খেয়েছে।’
জাহানারা মুখ ভেংচি কাটলেন, ‘ নখরাও তো কম না। চাল চলন ও ভালা না। কী দেইখ্যা যে আনলা এই বউ! ‘
থেমে ভাতিজার উদ্দেশ্যে বললেন,
‘হ্যাঁ রে অভী, তুই ফুপিরে ফোন দিতি, হুরের মতন মাইয়্যা আইন্না দিতাম। ভাবি জোর কইরা এই মাইয়া ঝুলাইছে তোর গলায়? কেমনে রাজি হইলি? তোর লগে মানাই নাই এক্কারে। কানা আবার কালাও, দেখতে কিরাম লাগে! ‘
অভীক ভ্রু কুঁচকাল। ওর পাতে রুই মাছের লেজ তুলে দিয়েছেন রেহানা। রুই মাছের লেজে কাটা বেশি থাকা। কাটা বাছতে বাছতে বলল,
‘রূপ দিয়ে জীবন চলে না ফুপি। রূপটা ফটো ফ্রেম রাঙানোর জন্য লাগে, নাহয় চারদেয়ালের সংসারে গুনটারই দরকার হয়। সুন্দর মানুষ খারাপ হলে তাকে খারাপই ধরা হয়, সুন্দর বলে কি তার খারাপটাও ভালো হয়ে যায়? হয়না। এই যেমন ধরুন, তাহিয়াকে আপনি অপমান করলেন, আপনি দেখতে মাশা আল্লাহ অনেক সুন্দর। এখন আপনার সৌন্দর্য দেখে কি তাহিয়া আপনার কথাগুলো সহজ ভাবে নিতে পারবে? আমার রাগ হলে আমি কি শুধুমাত্র আপনার ফর্সা চামড়া দেখে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারব? পারব না। কারণ ভালো ভালোই হয়, খারাপ খারাপই। এখানে রূপ দেখা হয়না। সংসার, জীবনও এভাবে চলে। সংসারটা রূপে হয়না, গুনে হয়। মায়ের গুনী মানুষ পছন্দ। তাহিয়া সেই কাতারেই পড়ে। আর মায়ের পছন্দেই আমার পছন্দ। আমি দেখে শুনেই বিয়ে করেছি। তাহিয়া রাজি ছিল না ওকেই জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন আলহামদুলিল্লাহ সুখে আছি। সংসারে রূপ থেকে সুখটাই আসল। তাই না মা?’
সুযোগ বুঝে হাতছাড়া করল না অভীক। ষোলকলা পূর্ণ করল। কথার রেশ আবার মায়ের দিকে টানল।
নীলিমা মুখ চেপে হাসলেন। তারপর বললেন,
‘হ্যাঁ, ঠিক তাই। রূপই সবকিছু হলে জাবিনও সুখে থাকতো। কত রূপসী মেয়েটা! কাল কে যেন বলল, ওর স্বামী নাকি পরকীয়া লিপ্ত। ঘরে সুন্দরী বউ রেখে কোন ভাবীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে আছে। আবার শ্বাশুড়িকে মারধরের অভিযোগ আছে না কি জাবিনের। রূপে ভার হলে মানুষকে ভারি প্রমাণ করা যায় না। জাবিনের রূপ কাজে এলো না। এত বুঝা গেল রূপই সব না। আমি ভাই, রূপে নয় গুনে বিশ্বাসী। তাহিয়ার মনটা বেশ ভালো, ও সবাইকে সুখে রাখবে, অন্তত এইটুকু বিশ্বাস রাখতে পারি। আমি, অভীক, আমার পুরো পরিবার সন্তুষ্ট ওকে নিয়ে। বাকি সবাই সম্মান না করলেও অসম্মান করতে পারবেনা। ‘
জাহানারার মুখটা চুপসে গেল। মেয়ের কথা আসায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন তিনি। অভীকের বড়ো চাচা রাশেদ কবির বললেন,
‘ অভীকের বউ ত দেখতে শুনতে মাশা আল্লাহ। আদব কায়দা ভালা, সালাম দিয়া কতা কইল। ভাবি আপনে হক কতা কইছেন, রূপ দিয়া সংসার চলে না। ‘
বাকিরাও সায় জানালেন। জাহানারা চুপসে বসে রইলেন। অভীক খাওয়া শেষে উঠতে গিয়ে বলল,
‘ আমি মনে করি, একটা মানুষকে পছন্দ না হলে তাকে সম্মান দেয়া যায় না। কিন্তু তাকে অসম্মান করাও ঠিক না। কটু কথা বলে তাকে হেয় করাটা উচিত নয়। তার সামনে কিংবা পিছনে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করা ঠিক না, যাতে মানুষটার কোন দোষ নেই, অপবাদ দেয়া ব্যাপারের কোন সত্যতা নেই। এমন উদ্ভট কথা মানা যায় না, মানতে না পারলেই সমস্যা। মানুষের এ দিকগুলো খেয়াল রাখা উচিত। পরে আবার হিতে বিপরীত হতে পারে। আগে থেকে সতর্ক থাকা ভালো।’
অভীক চলে গেল। ওর কথার তীর কোন দিকে গেল কেউ টের পেল না। জাহানারা কথার তীরটা তার দিকে আসতে দেখলে ঠিকই। তিনি স্পষ্ট ধরতে পারলেন অভীককে তাকেই শাসিয়ে গেছে।
চলবে….
বর্তমান প্রেক্ষাপটে লিখতে গিয়ে গল্পে কিছু বাড়তি বিষয় যোগ করেছি। এতে পর্বের শব্দ বেড়ে একটা পর্ব দুটো হয়েছে। আমার মনে হয় প্রেম শেখার সাথে সাথে নৈতিকতা শেখা উচিত পাঠককে। এক থেকে দশ, দশ থেকে একশো পরিবর্তন হবে। সমাজের নীতিমালা বদলাবে এভাবেই। চিন্তাধারা বদলালে, বদলাবে সমাজ, সুন্দর হবে জীবন।
এ পর্বের দুটো অংশ হয়েছে। এটা প্রথম অংশ পরবর্তী অংশ কাল পাবেন।