In The Depths of Love part-21

0
1219

#In_The_Depths_Of_Love
#Mizuki_Aura
#Part_21

রাই মুখ চেপে ধরে কান্না করছে । হায় যদি তখন নিশানের জায়গায় আবির থাকতো, তাহলে হয়ত এই মুহূর্তটা অন্যরকমই হতো। দুজনের দুরত্বটা কতটা কমে যেত।
কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস। দুরত্ব টা উল্টো আরো বেড়ে গেলো।

তখন ছাদে নিশানকে দেখে রাই ভরকে গেলেও নিশান যে কথাগুলো বলে তা শোনার জন্য রাই কেনো কোনো মেয়েই প্রস্তুত হতে পারেনা।

চুড়ির কাচে কেটে যাওয়া হাতটার দিকে তাকালো রাই “নিজেই নিজেকে কষ্ট দিলি, এখন যন্ত্রণাটাও সইছে না!” চোখের পানি যেনো থামছেই না। ঘরের দরজাটা খোলাই ছিল।

তখনি ঘরের বাতি জ্বলে উঠলো। ঘরের এককোণে জড়সড় হয়ে বসা রাই অবাক হয়ে গেল। অশ্রুভেজা চোখে তাকিয়ে দেখে আবির বাতি জ্বালিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিল।
রাই চোখ মোছার চেষ্টা করলো, কিন্তু যে হাত অশ্রুজলে ভিজে, সে হাত কি অশ্রু মুছতে পারে?

আবিরের মুখে কোনো ভঙ্গিমা নেই। সাদা সিধে মুখ , কোনদিকে না তাকিয়ে আবির সোজা বাথরুমে ঢুকে গেলো। রাই তখনি হাঁটুতে মুখ গুজে।
কিছুক্ষন পর আবির ভেজা চুল মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো। পরনে একটা ট্রাউজার, আর কিছুই না। বাইরে এসে দেখলো রাই তখনও মাটিতে বসে। আবির টাওয়েল টা রেখে রাই এর দিকে এগিয়ে গেলো। আর এক হাঁটু ভাজ করে ওর সামনে বসলো।
কাঁদতে কাঁদতে মেয়েটার হিচকি উঠে গেছে। আবির ওর বাহু ধরে টেনে উঠিয়ে দাড় করলো। রাই এর মধ্যে এটুকুও শক্তি নেই, যে নিজেকে ছাড়িয়ে নিবে।
আবির ওকে নিয়ে টেনে বাথরুমে নিয়ে গেল, আর বেসিনে দুহাতের কাটা জায়গা সুন্দর করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিলো। তারপর ওর মুখ চোখ ও সুন্দর করে মুছিয়ে দিল পানি দিয়ে। যদিও রাই একবার সরে আসতে গিয়েছিল। কিন্তু আবিরের জন্য আর পারেনি।

রাই কে বাহিরে নিয়ে খাটে বসিয়ে মুখ চোখ মুছে দিলো আবির। রাই আর আবিরের দিকে তাকাচ্ছে না। আবির গিয়ে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে এলো। রাই এর পায়ের সামনে ফ্লোরে বসলো আবির। রাই এর হাতটা ধরে সামনে আনতেই রাই হাতটা সরিয়ে নিলো। আবির হালকা রেগে রাই এর দিকে তাকালো। রাই চোখ সরিয়ে নিলো। আবির জোর করে ওর হাতটা টেনে ধরলো। আর মলম নিয়ে লাগিয়ে দিতে লাগলো।
রাই উসখুস করছে। কিন্তু তাতে আবিরের কিছুই আসে যায়না।

কাজ শেষে আবির চোখ তুলে রাই এর দিকে তাকালো , “কতক্ষন কাঁদবে আর?”

রাই হিচকী তুলতে তুলতে বললো “কাজটা ……. করার …….. আগে…. ভাবতেন”

আবির হতাশ কণ্ঠে বললো “একটা পয়সার কয়টা পিঠ?”

রাই নির্দ্বিধায় উত্তর দিল “আপনি কি নিশান কে ……আমাদের মাঝ ….. থেকে …. সরান … নি?”

আবির দুপলক তাকিয়ে রইলো “হুম…”
“আমি….. তো…. বিয়েতে….. রাজি…. ছিলাম…. না, তবুও… তো বিয়ে করেছেন?”

“হুম….”
“তাহলে…….(ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায়) আর … কোনটা বাদ রইলো?”
আবির এর ঠোঁটদ্বয় কিঞ্চিৎ প্রসারিত হলো। রাই এর হাতদুটো নিজের হাতের ভাজে নিলো “তুমি যেটা জানো সেটা সত্যি……(রাই অসহায় চোখে তাকালো ) তবে সেটা আংশিক”

“পুরোটা কি ?”
“সন্দেহের শুরুটাই যখন তুমি করেছো ….. শেষটাও তোমারই দায়িত্বে পড়ে”
রাই তাচ্ছিল্যের স্বরে বলল “কোনো শেষ নেই এর। এটাই সত্যি”
আবির ওর হাত ছেড়ে উঠে দাড়ালো “জেনে নাও…….”
রাই তাকিয়ে রইলো।
আবিরের চোখ গেলো রাই এর গালের দিকে। দুই গাল লাল হয়ে আছে। রংটা লজ্জার হলে , বোধহয় আবির ই বেশি খুশি হতো। কিন্তু তার সুযোগ নেই। আলতো হাতে রাই এর এক গালে হাত রাখলো।

রাই এর মধ্যে দিয়ে এক চিলতে শিহরণ বয়ে গেল। নিজের হাতটা উঠিয়ে আবিরের হাতটা সরিয়ে দিলো “সহ্য হয় না আপনার এই স্পর্শ। সহ্য হয় না”

আবির তাকিয়ে রইলো। এই কথাটা এর আগেও আবির শুনেছে। কিন্তু তখন এক ফোঁটাও কষ্ট ওর হয়নি কিন্তু আজ………. আবির ওর হাত ধরে উঠিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো , আর ওর ঠোঁটদুটো নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো। রাই এর চোখ আবারো ভিজে এলো। ওর ঠোঁটে কামড় দিয়ে আবির ওর কপালে কপাল ঠেকিয়ে নিলো

“আমাকে সহ্য করার কিছুই নেই। হয় মেনে নিবে, নয় মানিয়ে নিবে…?”

বলে রাই কে নিয়ে বিছানায় শুয়ে নিজের বুকে টেনে নিল………

চলবে____________?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here