#ভেতরে_বাহিরে
পর্বঃ০৮
লেখিকাঃ #রুবাইদা_হৃদি
‘ আবেশ ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দিয়ো না,আমি পড়ে যাবো৷ আমার হাত শক্ত করে ধরো৷’ মাধুর্য চোখ বন্ধ করে বারবার এক কথা বলছে৷ মাধুর্যের ভয়ার্ত চেহারা দেখে আবেশ হাসছে৷ আবেশ মৃদু স্বরে বলল,
‘ ধরে রাখতে পারছি না,মাধু৷ ছেড়ে দিলাম৷’
‘ না..না আবেশ ভাইয়া ছেড়ো না৷ এখানে থেকে পড়লে মরে যাবো৷ একদম আল্লাহর কাছে চলে যাবো সাত আসমানে৷’
‘ আমিও যাবো তোমার সাথে,সমস্যা নেই৷ দুজনে মিলে হুর পরীদের সাথে খেলবো৷’
আবেশ মাধুর্যের হাত আলগা কতে দিতেই মাধুর্য ভয়ে চিৎকার দিয়ে বলল,
‘ আবেশ ভাইয়া আমি বাঁচতে চাই৷ আমি আল্লাহর কাছে যেতে চাই না৷’
মাধুর্য চোখ খুলে ফেললো ৷ তার গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়লো নোনাজল৷ ছোটবেলায় ছোট ইটের ঢিবির উপর থেকে পড়ে যাওয়ার সময় আবেশ হাত টেনে ধরেছিলো ৷ ছোট ছিলো বলেই অল্প উচ্চতায় ভয়ে কুঁকড়ে উঠেছিলো৷ তবে আজ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নিজেকে সবচেয়ে অসহায় আর সুন্দর মুহূর্তের বিচরণে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে ৷ আবেশ তার হাত শক্ত করে আঁকড়ে রেখেছে৷ মাধুর্য তার দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ এখানে আসা ঠিক হবে না,আমি বুঝতে পারি নি৷
‘ তুমি বুঝোটা কী?’ আবেশ একরোখা ভাবে জবাব দিলো৷ মাধুর্য একদম ঝগড়া করতে চাইছে না৷ শুধু প্রার্থনা করছে,’ কংক্রিট ভেঙে সে থুবড়ে পড়ুক নীচে,সমাপ্তি হোক তার অভিশপ্ত জীবনের৷’
‘ আমি বড্ড অবুঝ৷ এই বুঝদার পৃথিবীতে আমার ঠাঁই নেই৷’
‘ বেশি বড় হয়ে গেছো,তুমি৷ যাকে বলে মাত্রাতিরিক্ত৷’
‘ ছাড়ুন আমার হাত৷’ মাধুর্য অভিমান নিয়ে বললো৷ তার মনে হচ্ছে কেঁপে কেঁপে উঠছে নীচের জায়গাটুকু৷ আবেশ মাধুর্যের হাত সত্যি সত্যি ছেড়ে দিলো৷ মাধুর্য ভয় পেয়ে উঠা কন্ঠে বলল,
‘ আরে ছাড়লেন কেন? আমি পড়ে যাবো তো৷’
‘ তুমি’ই তো বললে ছেড়ে দিতে৷’
আবেশের কথায় মাধুর্যের রাগ লাগছে৷ তার পা শিরশির করছে৷ এই বুঝি ভেঙে পড়লো৷ মৃত্যু টা যত সহজে ভাবা যায় উপলব্ধি করার এক্সপ্রিরিয়েন্স টা ভয়ংকর ঠেকলো মাধুর্যের৷ যারা সুইসাইড করে,তারা কেন একবার সামনে তাকিয়ে দেখে না? যদি সামনে তাকিয়ে দেখতো তাহলে হাজারো বাঁচার আগ্রহ জন্মাতো৷
‘ থাকো তুমি আমি যাই,ডাফার একটা৷’ আবেশ রাগ নিয়েই বললো৷ মাধুর্যের মন খারাপ হয়ে গেলো৷ তেজি গলায় বলল,
‘ চাই না আমার সাহায্য৷ মরলে মরবো৷ কারণ আমার মৃত্যু নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই৷’
আবেশ রুমের ভেতরে গিয়েও গেলো না৷ আবারো মাধুর্যের সামনে দাঁড়িয়ে ওর মাথায় হাত রেখে পেছনের দিকে ঘুরিয়ে বলল,
‘ গাঁধী একটা৷ চোখ বন্ধ করে দুনিয়া দেখলে এমন’ই হয়৷’
মাধুর্য তাকিয়ে দেখলো সে ওই জায়গা থেকে অনেকটা দূরে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ চট করে আবেশের দিকে ঘুরে বলল,
‘ এখানে কী করে এলাম৷’
‘ কেন হাওয়ায় ভেসে,উড়ে উড়ে৷’
বলেই আবেশ রুমের দিকে চলে যায়৷ ঘড়িটা নিজের হাতে উঠিয়ে মাধুর্যকে শাসিয়ে বলল,
‘ ভুলেও আর ওইদিকে পা বাড়াবে না,ইটস মাই অর্ডার৷’
‘ বললেই হলো,ইটস মাই অর্ডার৷ গোমড়ামুখো একটা৷’ মাধুর্য বিরবির করে বলতেই আবেশ বলল,
‘ পাগলের মতো প্রলাপ বকা অফ করে,রুমে এসে আমাকে কৃতার্থ করুন মহারাণী৷’
আবেশ কাবার্ড থেকে নিজের জামা-কাপড় বের করে বলল৷ মাধুর্য কী বলবে খুজে পেলো না৷ আবারো তাকালো নড়বড়ে জায়গাটার দিকে৷ ধড়ফড়িয়ে উঠলো সে৷
__________
‘ রাত শেষে দিনের আভা ফুঁটে উঠে তেমনি হাজার দুঃখ শেষে সুখ আসে,বুঝলে মাধুর্য?’ ইরা প্রশ্ন করতেই মাধুর্য চোখ তুলে তাকায়৷ ইরা স্বভাবসুলভ হাসি দেয়৷ মাধুর্য মাথা নেড়ে ‘হ্যাঁ’ বলতেই ইরা ঘর গুছাতে গুছাতে বলল,
‘ তোমার বাবা-ভাই কেন মারতো,কী জন্য মারতো এইসব জানার বিষয়৷তাদের এমন অমানুষিক নির্যাতনের জন্য পুলিশকে জানানো দরকার৷’
ইরার কথায় আঁতকে উঠল মাধুর্য৷ মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বলল,
‘ আপু আমি চাই না আব্বু কষ্ট পাক৷ শত হলেও সে আমার বাবা৷’
মাধুর্যের কথায় দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো ইরা৷ আজ তার ডিউটি নেই বলেই বাসায় সে ৷ ব্রেকফাস্টের পর মাধুর্যকে নিয়ে নিজের রুমে নিয়ে এসেছে সে৷ মাহফুজা নিজের রুমে৷ এছাড়া বাড়িতে আজ কেউ নেই৷ নাজিফা নাবিহার বাসায় গিয়েছে যাওয়ার আগে মাধুর্যকে নিয়ে যেতে চাইলে মাহফুজা যেতে দেননি৷ ইরার নিজের ও অশান্তি লাগছে৷ আজ তিনমাস হলো ফয়েজ বাসায় আসছে না৷ লম্বা শ্বাস টেনে ইরা বলল,
‘ মাধুর্য পড়াশোনা করবে?তুমি না’কী ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট ছিলে আম্মা আর আবেশ বলতো৷’
‘ সেটা আম্মুর পরিশ্রমে৷ তার ইচ্ছা ছিলো আমি ডাক্তার হবো৷’
‘ সুন্দর ইচ্ছা৷ হবে ডাক্তার? দুই বোন মিলে চেম্বার খুলে রুগী দেখবো৷’ ইরা উৎসুক চোখে তাকিয়ে বলতে মাধুর্য আগ্রহ নিয়ে বলল,
‘ আমার ইচ্ছা করে ডাক্তার হতে তবে সাইকোলজিস্ট৷ মানুষের মনের ব্যথা সারাতে বড্ড ইচ্ছা করে৷’
ইরা আগ্রহ নিয়ে শুনছে৷ মেয়েটার চোখেমুখে আছড়ে পড়ছে স্বপ্ন৷ ইরা মুচকি হেসে প্রশ্ন করলো,
‘ পড়াশোনা করেছো,মাধুর্য?’
মাধুর্যের হাসি মুখে ফুঁটে উঠলো বিষাদের ছায়া ৷ মনে পড়লো তিক্ত কিছু অভিজ্ঞতা ৷ পড়াশোনা নিয়ে তার আম্মু মেহরুন প্রচন্ড সিরিয়াস ছিলেন৷ সব চলছিলো স্বপ্নের মতো৷ হুট করে হারিয়ে গেলো তার আম্মু৷ তারপর..তারপর.. না আর মনে করতে পারলো না মাধুর্য৷ মাথা চেপে ধরে বলল,
‘ আমি অসুস্থ শরীরে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছি,আপু৷ রক্তাক্ত শরীরে হলে বসে কেঁদেছি৷ রাব্বি পরীক্ষা দিতে দিবে না আমি জোর করে দিয়েছি৷ পরীক্ষার আগে ডান হাতের প্রত্যেকটা আঙুলের মাথায় রাব্বি ধারালো ব্লেড দিয়ে কেটে দিতো৷ কলম ধরলে রক্ত গড়িয়ে পড়তো৷ তবুও আমি পরীক্ষাটা দিয়েছিলাম ভাবী৷ জানো..জানো..’ মাধুর্য হেঁচকি তুলে কাঁদছে৷ ডান হাত উঁচিয়ে দেখছে ৷ দুই আঙুলের মাথার মাঝ বরাবর একটা করে টান দিয়েছিলো রাব্বি৷ হাত ধরে কাঁদছে মাধুর্য ৷ ইরা ছুটে গেলো তার কাছে৷ শক্ত করে চেঁপে ধরলো মাধুর্যের মাথা তার বুকের মাঝে ৷ মাধুর্য ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আবার বলল,
‘ বায়োলজি পরীক্ষা ছিলো সেদিন৷ আমি লেখেছিলাম আপু, জানো? সেই একটা পরীক্ষার জন্য আমি পিছিয়ে গিয়েছিলাম৷ গোল্ডেন টা আসে নি ৷ ওরা আমায় মেরে দিয়েছে আপু৷ কেন মারতো জানি না আপু৷ আমার কী দোষ বলো?’
‘ মাধু..এই মাধু৷ দেখো তোমার সামনে সুন্দর একটা জীবন৷ তোমায় সেটাকে আঁকড়ে ধরতে হবে৷’
‘ মাধুর্য কাঁদছে কেন,ইরা?’ মাহফুজা গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলো৷ ইরা থতমত খেয়ে মাধুর্যের মাথাটা শক্ত করে ধরে রাখলো তার বাহুডোরে ৷ মাহফুজা কিছুটা এগিয়ে গিয়ে ইরার থেকে মাধুর্যকে নিয়ে আদুরে গলায় বলল,
‘ কাঁদছে কেন,আমার আম্মুটা?’
‘ কেন চলে এসেছিলেন আম্মু’মা? কে..ন! তোমরা যদি চলে না আসতে তাহলে আমার আম্মু হারাতো না৷ আমার আব্বু বদলে যেত না৷ রাব্বির দেখা পেতাম না৷ আমাকে শেষ করে দিয়েছে সবাই ৷’
‘ ইরা,তোমাকে বারবার বলেছি এই বিষয়ে মাধুর্যকে আর জিজ্ঞেস করবে না৷ দেখো মেয়েটার হাল৷’
‘ আম্মা আমি তো শুধু পড়াশোনার কথা জিগ্যেস করে..’
‘ থামো! কিচেনে গিয়ে পানি নিয়ে এসো৷ মাধুর্যকে এই বিষয়ে আর কখনো জিগ্যেস করবে না৷ কথাটা যেন মাথায় থাকে৷’ মাহফুজা কিছুটা রাগী স্বরে বললেন৷ ইরা মুখ ছোট করে ফেলতেই কিছুটা নমনীয় স্বরে বললেন,
‘ তোমরা আমার প্রাণভোমরা৷ তোমাদের চোখের পানি আমার অন্তর কাঁপিয়ে দেয়৷ মাধুর্য জঘন্য দিন পার করে এসেছে৷ আমাদের উচিৎ যতোটা সম্ভব তাকে সেইসব দিনগুলো থেকে ফিরিয়ে এনে সুস্থ জীবন দেওয়া৷’
‘ জ্বী,আম্মা বুঝেছি৷ আমি জানি আপনি আমাদের ভালো চান৷’ ইরা মুখে মৃদু হাসি ফুঁটিয়ে বলেই রুম থেকে চলে যায়৷ মাহফুজা মাধুর্যের মুখ উঠিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে কঁপালে চুমু দিয়ে বললেন,
‘ মাধু,তুই তোর আম্মু’মায়ের সাথে আছিস৷ মেহরুন কিন্তু আমার বোন ছিলো৷ হঠাৎ করেই হারিয়ে গেলো৷ কেন? কোথায়? কেউ কিছু জানি না৷ আমরা সিলেট আসার পর যোগাযোগ একবছর রেখে হঠাৎ করেই বিচ্ছিন্ন করে দিলো৷’
‘ জানি না আম্মু’মা৷ হঠাৎ করেই আম্মু পরিবর্তন হতে শুরু করে ৷ আম্মুর পরিবর্তন দেখে আব্বু আমাদের নিয়ে জায়গায় চলে যায়৷ এরপর হঠাৎ করেই হারিয়ে গেলো৷ আব্বু ভালো ছিলো জানো? আমার খেয়াল রাখতো আমাকে ছাড়া খেতো না৷ কিন্তু একদিম এসে পেপার চাইলো৷ আমি মানা করতেই তারপর থেকে দূরত্ব বাড়ায় ৷ আমি ভালো কথা জিগ্যেস করলে মারা শুরু করে.. আমি সত্যি জানি মা কীসের পে..’ মাধুর্য আবার কান্নায় ভেঙে পড়লো৷ মাহফুজার চোখেমুখে চিন্তার ছাপ ৷ মাধুর্যের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
‘ তোর আম্মু নিজের সমস্ত সত্যগুলো লুকিয়ে গেছে মাধুর্য৷ যার ফল তোকে ভোগ করতে হয়েছে৷’
মাধুর্য ফ্যাকাসে মুখে তাকালো মাহফুজার দিকে৷ মাহফুজা মাধুর্যকে জড়িয়ে ধরে বলল,
‘ ওই পেপারে তোর নানা ভাইয়ের সম্পত্তির হিসেব ছিলো,মাধুর্য৷ কোটি টাকার সম্পত্তির হিসেব না জানিয়ে উধাও হয়েছে মেহরুন এইজন্যই শাহেদ ভাই এতোটা নিষ্ঠুর হলেন? লোভ এতোটা জঘন্য,ছিঃ!’
‘ আমি কিছু জানি না আম্মু’মা৷ কিছু না৷’
‘ কিছু হবে না আম্মু৷ সব আবার আগের মতো হবে৷’
মাধুর্য শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো মাহফুজাকে৷
____________
বিকেলের প্রহর শেষ৷ সন্ধ্যার গোধূলি ছুঁয়েছে ধরণীর কোলে৷ মিষ্টি হাওয়ার তালে গা ভাসিয়ে চলেছে পাতার বাহার ৷ দূরে থাকা থোকা থোকা লাল জামরুল চিকচিক করছে বৃষ্টিতে গা ভিজিয়ে৷ গাছের নীচ বিছিয়ে আছে লাল রাঙা ফলগুলো৷ ঝপাৎ ঝপাৎ শব্দ করে হাটছে রাস্তার পথশিশুর দল৷ চোখে মুখে তাদের উঁপচে পড়া খুশি৷ মাধুর্য দুপুরে ঘুম দিয়ে উঠেই বারান্দায় এসে বসেছে৷ এমন একটা দৃশ্য দেখেই মন ভালো হয়ে গেলো তার৷ সমস্ত দুঃখ ভুলে সুখ পাখিদের আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছা হলো৷ কিছু একটা মনে করে উঠে দাঁড়ালো সে৷ আবেশের রুমটা গোছালো৷ হঠাৎ করেই তার শাড়ি পরতে ইচ্ছা হচ্ছে ৷ শাড়ির কথা মনে হতেই তার মায়ের শাড়ি টার কথা মনে হতেই গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যায়৷ লাগেক খুলে শাড়ি বের করে বিরস মুখে বসে রইলো৷ শাড়ি পরা ঝামেলা তবুও তার পরতে ইচ্ছা হচ্ছে ৷
ইরা বাসায় নেই এখন,হসপিটাল থেকে ফোন আসার দরুণ চলে গিয়েছে ৷ আবেশ আসবে না ভেবেই দরজার ছিটকিনি না তুলেই শাড়ি পরার জন্য পা বাড়ায় ওয়াশরুমে ৷
বৃষ্টি মাথায় করেই আবেশ ফিরেছে ৷ পুরো দায়িত্ব এখন তার কাছে৷ ট্রান্সপোর্ট এর বিজনেসটার ঝামেলা তার কাঁধে দিয়ে তার বিয়ের দিন’ই ইমার্জেন্সী কাজে গিয়ছে৷ ফয়েজ আর্মির স্পেশাল ট্রেনিং এর জন্য আউট অফ সিটি৷
ড্রয়িংরুমে কাউকে দেখতে না পেয়ে আবেশ সোজাসুজি চলে গেলো নিজের রুমে৷ মাথার চুল হাত দিয়ে ঝাড়ছে৷ রুমে এসে আবারো ভ্রু কুঁচকে এলো তার৷ চারদিকে উঁকি মেরে মাধুর্যকে খুজে না পেয়ে বারান্দা চেক করে তাকে না পেয়ে হাতের ব্যাগ নামিয়ে এগিয়ে গেলো ওয়াশরুমের দিকে৷ শাওয়ার না নিলে জ্বর টর হয়ে বিশ্রী অবস্থা হবে ৷
আবেশ ওয়াশরুমে ঢুকে ছিটকিনি তুলে দিয়ে পেছন ফিরে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠে বলল,
‘ এই মেয়ে তু..তুমি এখানে কী করো!’
মাধুর্য আবেশের দিকে তাকিয়ে দেখে শাড়ি হাতে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ আঁচল পড়ে আছে শুকনো মেঝেতে ৷ যখন বুঝতে পারলো আবেশ সত্যি সত্যি এসেছে সে জোরে চিৎকার করতে গেলেই আবেশ হাত দিয়ে চেঁপে ধরে মাধুর্যে মুখ ৷ ফিসফিস করে বলল,
‘ হুশশ..! চেঁচাবে না৷’
মাধুর্য বড়বড় চোখে করে তাকিয়ে চোখ নীচে নামালো৷ নিজের শাড়ির বেহাল অবস্থা দেখে একদফা মরে যেতে ইচ্ছা হলো তার৷ আবেশ মাধুর্যের মুখ ছেড়ে দিয়ে বলল,
‘ কমনসেন্স নেই? ছিটকিনি কেন খুলে রেখেছো?’
‘ আপনি চোখে দেখেন না? ওয়াশরুমে আমি থাকা সত্ত্বেও কেন ঢুকেছেন?’
মাধুর্য দ্রুত শাড়ি ঠিক করে বলল৷ আবেশে নীচের দিকে তাকিয়ে আছে৷ মাধুর্যের লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা হচ্ছে৷ আবেশকে পাশ কাটিয়ে দ্রুত বাইরে বেরুতে গেলেই ঘটে গেলো আরেক বিপত্তি….
চলবে…..