#ভালোবাসার_অনূভুতি
#লেখিকাঃতানিশা_তিশা_মনি
#পর্ব_25
সব সিনিয়র ছেলেমেয়ে গুলো দরজার দিকে তাকালো। তাকিয়েই ওদের চেহারা ফ্যাক্যাশে হয়ে গেলো। ভয়ে ওদের হাত পা কাপাকাপি করছে। ওরা একে একে সবাই বসা থেকে দাড়িয়ে গেলো। সিনিয়রদের দৃষ্টি অনুসরন করে সাড়িকা সাঈফা সহ ওদের বন্ধুরাও দরজার দিকে তাকালো। তাকিয়েই ওরা একটা শস্তির নিশ্বাস ফেললো।সাঈফা খুব সাবধানে ওর চোখের কোনে জমে থাকা পানিটা মুছে ফেললো। মিহির আহির আরেকটু দেরি করে আসলেই হয়তো ও ভয়ে আর লজ্জায় মরেই যেতো।
সাড়িকা এতোক্ষন নিশব্দে কাদছিলো। ওরা এসেছে দেখে ও আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না। হাউমাউ করে কেদে দিলো । এতোটা অপমানিত জিবনে বোধহয় কখনো হয়নি। বারবার নিজের ভেজা শরীরকে হাত দিয়ে আড়াল করার চেষ্টা করছে আর চোখের পানি মুছছে। আহীর কোনো দিক না তাকিয়ে সোজা গিয়ে সাড়িকা কে জড়িয়ে ধরলো । সাড়িকা আহিরের বুকে মুখ গুজে আরো জোড়ে কেদে দিলো। আহির একহাত সাড়িকার মাথায় রেখে বললো
“আরে কি হয়েছে কাদছিস কেনো? আমরা এসে গেছি তো। কে কি বলেছে আমাকে বল। ওদের সব গুলোকে কঠিন শাস্তি দিবো। একটাকেও ছাড়বো না।”
সাড়িকা আহীরকে ধাক্কা দিয়ে ছাড়িয়ে কাদতে কাদতে বললো
“কাউকে কিচ্ছু করতে হবে না । আমি আর এই ভার্ষিটিতেই পড়বো না। সব কিছুর জন্য তুই দায়ি । তুই আর সাঈফা জোড় করে আমাকে এইখানে ভর্তি করিয়েছিস। দরকার হলে সুইসাইড করে মরে যাবো তাও এই ভার্ষিটিতে থাকবো না।”
আহীর এই ভার্ষিটিতে পড়ে বলে এডমিশনের সময় সাড়িকা এখানে ভর্তি হতে চায়নি। আহীর ওকে অনেক কিছু বলে ব্লাকমেইল করে ছিলো,,কিন্তু তাও সাড়িকা এখানে ভর্তি হওয়ার জন্য রাজি ছিলো না। সাড়িকাকে অনেক বুঝিয়েও যখন লাভ হলো না,, তখন আহীর সাঈফাকে বলে যে সাঈফা আর সাড়িকা যদি আহীরদের ভার্ষিটিতে ভর্তি হয় তাহলে মিহিরকে সব সময় সাঈফা নিজের চোখের সামনে রাখতে পারবে। আর সাঈফা নিজেও মিহিরের কাছাকাছি থাকবে বলে আহীরের কথায় রাজি হয়ে যায়। তারপর আহীর আর সাঈফা দুইজন মিলে এক প্রকার জোড় করে সাড়িকাকে এখানে ভর্তি করিয়েছে।
সাড়িকার মুখ থেকে মরার কথা শুনতেই আহীরের মাথা গরম হয়ে গেলো । ও সাড়িকার কাছে গিয়ে ওর গাল জোড়ে চেপে ধরে বললো
“আর যদি সুইসাইড করা বা মরার কথা বলেছিস তো আমি নিজের হাতে তোকে খুন করে মাটিতে পুতে ফেলবো। আর ভার্ষিটি ছাড়ার কথা ভুলেও ভাবিস না। একবার যখন এখানে এনে ভর্তি করিয়েছি তো এতো তাড়াতাড়ি এখান থেকে যেতে দিচ্ছি না। গট ইট?”
বলেই আহির সাড়িকার গাল ছেড়ে দিলো। তারপর নিজের গা থেকে জ্যাকেট টা খুলে সাড়িকার গায়ে পড়িয়ে দিলো। সিনিয়র ছেলে মেয়ে গুলো এতোক্ষন শুধূ ভয় পাচ্ছিলো। কিন্তু সাড়িকার আর আহীরের কথা শুনে ভয়ের সাথে অবাকও হয়েছে। কারন ভার্ষিটির শুধুমাএ হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া আর কেউই জানে না সাড়িকা আর সাঈফা,,,,সম্পর্কে মেঘ আহির এবং মিহিরের কাজিন হয়। সিনিয়র ছেলে মেয়ে গুলো শুধু মনে মনে একটা কথাই ভাবছে আহীরের সাথে সাড়িকার কি সম্পর্ক?আহীর আর সাড়িকা কি আগে থেকেই একে অপরের পরিচিত? যদি ওরা আগে থেকেই একে অপরের পরিচিত হয়,তাহলে আজকে আহির আর মিহির ওদের সবার কি অবস্থা করবে। সেটা ভেবেই ওরা আৎকে উঠছে।
মিহির নিজের গায়ের জ্যাকেট টা খুলে সাঈফার মুখের উপরে ছুড়ে মারলো। সাঈফা বিরবির করে বললো
“হার্টলেস ছেলে একটা । ওর জন্য এতো কষ্ট করে এই ভর্ষিটিতে ভর্তি হলাম । আজকে এদের কাছে অপমানিত হলাম। আর ইনি আমার উপর জ্যাকেট ছুরে মারছেন! কেনোরে ভাই আহির ভাইয়ার মতো এসে যদি একটু জড়িয়ে ধরতি আর নাহলে অন্তত নিজের গায়ের জ্যাকেট টা সুন্দর করে আমাকে পড়িয়ে দিতি ।তাহলে কোন মহা ভারতটা অসুদ্ধ হতো শুনি।”
মিহির নিজের হাত থেকে ঘড়িটা খুলে ওর এক বন্ধুর হাতে দিলো,,তারপর একটা এ্যাংড়ি লুক নিয়ে ছেলেমেয়ে গুলোর সামনে এগিয়ে গিয়ে বললো
“দুই বছর আগের একটা কাহিনি তোদের মনে আছে? তখন তোরা মনে হয় অর্নাস সেকেন্ড ইয়ারে পড়তি। ভার্ষিটির কয়েকটা ছেলে মিলে ফাষ্ট ইয়ারের একটা মেয়েকে ভির্ষিটির পিছনে নিয়ে গিয়ে র্যাগিং এর নামে গায়ে হাত দিয়েছিলো। আর ঠিক ওই ঘটনার ছয় ঘন্টা পর ওই ছেলে গুলোকে পাশের একটা জঙ্গল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ভার করা হয়েছিলো।”
পিছন থেকে আহির ওর এক বন্ধুর হাত থেকে একটা হকি ষ্টিক হাতে নিয়ে ঘুড়াতে ঘুড়াতে ছেলে গুলোর সামনে এসে দাড়িয়ে বললো
“শুধু কি তাই? ওদের হসপিটালে ভর্তি করার পর ডাক্তার বলেছিলেন ওদের হাত পায়ের হাড্ডি একদম গুড়ো করে দেয়া হয়েছে। রড দিয়ে মাথার পিছনে মেরে একদম থেতলে দেওয়া হয়েছে। জিবনে আর হাটতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। আর জানিস ডাক্তারের কথাই সত্যি হয়েছে। ওরা এখনো ঠিকঠাক মতো দাড়াতেই পারে না। ”
মিহির গিয়ে আহিরের এক কাধের উপর নিজের হাত রেখে শয়তানি একটা হাসি দিয়ে আহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“বাড্ডি,, আমরা ওদেরকে এসব কেনো বলছি বলতো! সেদিন ওই ছেলে গুলোকে ভার্ষিটির মাঠ থেকে যখন টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছিলাম তখন এরাও তো এই ভর্ষিটিতেই উপস্থিত ছিলো তাইনা। শুধু এরা কেনো টিচার্স রাও উপস্থিত ছিলো,,কিন্তু সবাই তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিচ্ছু করতে পারেনি। আচ্ছা তোরা সব কিছু জেনেও এতো বড় ভুলটা কি করে করলি বলতো? ”
আহীর বললো
“এই তোদের র্যাগিং করার সময় একবারও মনে পড়লোনা আমরা যখন র্যাগিং এর কথাটা জানতে পারবো তখন তোদের সাথে ঠিক কি কি করবো?”
ওদের দুজনের কথা শুনে সেই ছেলে মেয়ে গুলোর হাত পা কাপছে। ভয়ে সবাই জড়োসড়ো হয়ে গেছে । সবার মনে পড়ছে দুই বছর আগের সেই ভয়ংকর দিনের কথাটা । কিভাবে আহির , মিহির আর ওদের বন্ধুরা মিলে সেই ছেলে গুলোকে জানোয়ারের মারতে মারতে এখান থেকে নিয়ে গিয়েছিলো। আর পরে যখন ছেলে গুলোকে পাওয়া যায় তখন ওদের সারা শরীর পুরো ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিলো । সেসব ভাবতেই ওদের শরীর শিওরে উঠলো।
সাড়িকা সাঈফাও ওদের কথা শুনে ভিষন ভয় পেয়েছে। কারন ওরা এসব বিষয়ে কিছুই জানতো না। ইনফ্যাক্ট মেঘও এই বিষয়ে কিছুই জানে না। যেদিন এই কাহিনি হয়ে ছিলো সেদিন মেঘ ভার্ষিটিতেই আসেনি। আর পরে আহির আর মিহির সবাইকে বলে ছিলো মেঘ যেনো এই বিষয়ে কিচ্ছু না জানতে পারে । যদি কেউ মেঘকে এই বিষয়ে কিছু জানায় তাহলে তাকে আর এই ভার্ষিটিতে পড়তে দেওয়া হবে না। সাড়িকা কাদতে কাদতে ফিসফিস করে সাঈফাকে বললো
“সাঈফু আমি আর এই গুন্ডাদের ভার্ষিটিতে পড়বো না । এখানের সব গুলা গুন্ডা । দরকার হলে লেখা পড়া বন্ধ করে দেবো তাও আমি আর এইখানে আসবো না । এ্যা এ্যা এ্যা এ্যা…..”
সাঈফা চোখ রাঙানি দিয়ে বললো
“এই সাড়াদিন এতো ফ্যাচফ্যাচ করে কাদবি নাতো বিরক্ত লাগে। নিজের মুখটা বন্ধ করে এখানে চুপচাপ দাড়িয়ে থাক।”
একটা ছেলে অনেকটা সাহস জুগিয়ে একটু সামনে এসে মিহির আর আহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“ভাই আপনারা যেমনটা ভাবছেন এখানে তেমন কিছুই হয়নি। আমরা তো যাষ্ট ওদের সাথে একটু মজা করছিলাম ।”
ছেলেটার কথা শুনে আহির আর নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করতে পারলো না। হকি ষ্টিক দিয়ে ছেলেটার পায়ের উপরে জোড়ে একটা বারি মারলো সাথে সাথে ছেলেটা একটা চিৎকার দিয়ে হাটু ভেঙে বসে পড়লো । মিহির ছেলেটার বুকে একটা লাওি মেরে বললো
“মজা করেছিস তাইনা? কোনো মেয়েদের গায়ে পানি ঢালা,, একটা রুমে বন্ধ করে অশ্লিল কথা বলা,, ইচ্ছের বিরুদ্ধে নাচতে বলা,, শরীর থেকে ওড়না হিজাব খুলে ফেলতে বলা, এইগুলো তোদের কাছে মজা মনে হয়? কোনো মেয়েদেরকে অপমান করাকে কোথাকার মজা বলে?”
আহির গিয়ে আরেকটা ছেলের পিঠের উপরে হকিষ্টিক দিয়ে আঘাত করে সেই ছেলেটা উপুর হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। আহির ছেলেটার মাথার উপরে একপা দিয়ে চেপে ধরে বলে
“তোদের যদি এটা মনে হয়? আমরা এখন ভর্ষিটিতে বেশি একটা আসি না তাই এখানের কোনো খবরই রাখি না? তাহলে বলবো তোদের ভুল মনে হয় ,, আমরা এখানে আসি বা না আসি,, এই ভার্ষিটির কোথায় কি হয় সব খবর আমরা রাখি।”
তারপর আহির সেই মেয়েগুলোর দিকে তাকিয়ে বললো
“তোদের লজ্জা করে না তাইনা? নিজেরা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়েকে এভাবে বাজে কথা বলছিস। ছিহ। নেহাত আমরা মেয়েদের গায়ে হাত তুলি না,,নাহলে সবার আগে তোদের মতো ডাইনিদের মেরে হাত পা ভেঙে দিতাম। তবে চিন্তা করিস না তোরা যাতে এই ভার্ষিটিতে না পড়তে পারিস সেই ব্যাবস্থাই করবো।”
বলেই আহির,, মিহির আর ওদের বন্ধুরা মিলে ছেলে গুলোকে বেধড়ক মারতে লাগলো । এক পর্যায়ে ওদের মারতে মারতে ক্লাস রুম থেকে বের করে ভার্ষিটির মাঠে নিয়ে আসলো।
_________________________
ক্যান্টিনে বসে মেঘ আর দিশা পকোড়া খাচ্ছিলো আর ফোন টিপছিলো। মেঘ ফোনটা টেবিলের উপরে রেখে কপাল কুচকে বললো
“এই রিজাটা কোথায় গেলো বলতো? দশ মিনিটের কথা বলে বিশ মিনিটেও আসছে না। এতোক্ষন ওয়াশ রুমে বসে কি করে?”
দিশা মুখ থেকে একটা বিরক্তিকর চ শব্দ উচ্চারন করে বললো
“আরে ছাড়তো ওর কথা। লেইট লতিফ মেয়ে একটা । সব সময় সব কিছুতে ও লেইট করবে। কোনো জায়গায় আজ অবদি টাইম মতো পৌছাতে পেরেছে? যাহ গিয়ে দেখ হয় ওয়াশরুমের আয়নার সামনে দাড়িয়ে মেকআপ করছে ,,নাহয় জিসান ভাইয়ার সাথে প্রেম করছে। আর এই জিসান ভাইয়াটাও বা কেমন সারাদিন বাসায় বসে রিজার সাথে গুজুর গুজুর ফুষুর ফুসুর করে তাও মন ভরে না । ভার্ষিটিতে এসেও এরা পড়ালেখা বাদ দিয়ে প্রেম করে । আমি বুঝি না সারাদিনে এরা এতো কি কথা বলে?”
(জিসান হচ্ছে দিশার খালাতো ভাই)
মেঘ হাসতে হাসতে বললো
তোর মতো সিঙ্গেল বাচ্চারা এসব বুঝবেও না। একটা প্রেম কর তাহলে এমনিতেই জেনে যাবি সারাদিন ওরা কি কথা বলে।”
“মাফ কর বইন। যেনে শুনে বাশ খাওয়ার কোনো ইচ্ছেই আমার নেই। সিঙ্গেল আছি ভালো আছি। এইসব বয়ফ্রেন্ডের প্যার্যা নিতে চাই না। আর তুই এমন ভাবে বলছিস যেনো তোর প্রেম করার খুব এক্সপেরিয়েন্স আছে!”
মেঘ হাসতে হাসতে বললো
“না আমার এসব বিষয়ে কোনো এক্সপেরিয়েন্সও নাই আর ইন্টারেষ্টও নাই। আমি সব সময় করলা ভাজি আর বয়ফ্রেন্ড দুটোর থেকেই সোস্যাল ডিসটেন্স বজায় রাখি।”
দিশা ফিক করে হেসে দিয়ে বললো
“আমিও এই অসাস্থ্যকর জিনিস দুইটা থেকে একশো হাত দূরে থাকি। এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।”
ওদের কথার মাঝেই কোথা থেকে রিজা দৌড়ে এসে হাপাতে হাপাতে বললো
“গাইস প্লিজ তাড়াতাড়ি চল। আহির ভাইয়া, মিহির ভাইয়া, জিসান আর ওদের বন্ধুরা মিলে অর্নাস ফাইনাল ইয়ারের ছেলেদের মারছে।”
মেঘ আর দিশা বসা থেকে দাড়িয়ে একসাথে বললো
“হোয়াট!”
দিশা চিন্তিত ভঙ্গিতে জিঙ্গেস করলো
“কিন্তু কেনো?”
রিজা বললো
“আমি কিচ্ছু জানিনা। করিডোর দিয়ে এখানে তোদের কাছে আসছিলাম তখন দেখি ওরা কয়েকজন মিলে অর্নাস ফাইনাল ইয়ারের কয়েকটা ছেলেকে মারছে। কেনো মারছে আমি জানিনা।”
মেঘ বিরক্তি নিয়ে বললো
“ওদের কাউকে মারতে আবার কোনো কারন লাগে নাকি । ওরা তো যখন তখন যাকে খুশি মারে। গুন্ডার দল কোথাকার। ”
দিশা নিজের ফোনটা রিজার হাতে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে যেতে যেতে বললো
“ওহ আটআপ মেঘ! ওরা কাউকে অকারনে কখনো মারে না। নিশ্চয়ই ওই ছেলে গুলো কোনো অন্যায় করেছে তাই মারছে। আর আমরা সবাই জানি অর্নাস ফাইনাল ইয়ারের কয়েকটা ছেলে আছে যারা মাএা অতিরিক্ত অসভ্য। ভাইয়ারা ওদের মারছে তারমানে নিশ্চয়ই কোনো কারন আছে। এবার ফালতু কথা না বলে তাড়াতাড়ি চল ওদের থামাতে হবে।”
_________________________
মেঘ, দিশা ,রিজা এসে দেখে মিহিররা ছেলে গুলোকে মারতে মারতে প্রায় আধমরা বানিয়ে ফেলেছে। সব ষ্টুডেন্ট টিচার্সরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে মারামারি দেখছে।কেউ এসে মিহিরদের থামানোর চেষ্টা করছে না। মেঘ, দিশা গিয়ে কোনো ভাবে মিহির আর আহিরকে ঝাপটে ধরে মারামারি ধামানোর চেষ্টা করছে । মেঘ আহিরকে ধরে টানছে আর দিশা মিহিরকে ধরে টানছে ।কিন্তু ওদের শক্তির সাথে ওরা পেরে উঠছে না। রিজা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে দাড়িয়ে আছে। মারামারি থামানো তো দূরের কথা মারামারি দেখলেই ওর আত্মারাম খাচা ছাড়া হয়ে যায় । মেঘ আহির কে টানতে টানতে বললো
“ওরে আমার রাক্ষস ভাইটা থাম প্লিজ। এবার ওদের ছেড়ে দে।বেচারারা মরে যাবে তো। দেখ ওরা মরে গেলে ওদের ভবিষ্যৎ বউরা বিধবা হয়ে যাবে । ”
আহির চেচিয়ে বললো
“মেঘ ছাড় আমাকে আর যা এখান থেকে।তোর লেগে যাবে। ”
কে শোনে কার কথা মেঘ শক্ত করে ধরেই আছে। মেঘের কথা শুনে দিশার ইচ্ছে করছে মেঘকে পানিয়ে চুবানি দিতে । এরকম সিরিয়াস একটা মূহুর্তে কি সব আজাইয়া কথা বলতেছে। হঠাৎ ভার্ষিটির গেট দিয়ে দ্রুত বেগে একটা কালো রঙের গাড়ি ভিতরে ঢুকলো। গাড়িটা থামতেই ওটার মধ্যে থেকে অভি,,হিয়ান আর আহান বেড়িয়ে এলো। ওরা তিনজনই দৌড়ে মিহিরদের কাছে আসলো। আহান গিয়ে একটানে মেঘকে আহিরের থেকে ছাড়িয়ে আনলো। তারপর দিশারও হাত ধরে টান দিয়ে মিহিরের থেকে ছাড়িয়ে আনলো। আহির আর মিহির আহানদের দেখতেই মারামারি থামিয়ে ফেললো। ওদের থামতে দেখে ওদের বন্ধুরাও থেমে গেলো।
আহান দিশা আর মেঘকে ধমক দিয়ে বললো
“তোমাদের দুইজনের মাথায় কি গোবর ভরা। এই ভাবে কেউ মারামারি থামাতে যায়? যদি লেগে যেতো তখন কি হতো? কমনসেন্স নেই তোমাদের? দুইজন মেয়ে এতোগুলো ছেলেকে থামাতে গিয়েছিলে? যেখানে টিচারেরা অবদি মারামারির চারপাশেও আশে নি সেখানে তোমরা দুজন কোন সাহসে ওখানে গিয়েছিলে? কি হলো এখন চুপ করে আছো কেনো? অ্যান্সার মি?”
আহানের ধমকে দিশা আর মেঘ কেপে উঠলো। অভি ওদের কাছে এসে তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললো
“ওদের এসব বলে লাভ নেই । ওরা এইভাবে বুঝবে না ।দুইটাকে দুইটা দুইটা চারটা করে ঠাটিয়ে কানের নিচে দে তাহলে যদি ওদের আঙ্কেল দাত ওঠে। ইডিয়েটস কোথাকার!”
মেঘ মাথা নিচু করে আছে। দিশা বিরবির করে বললো
“ব্যাট্যা উজবুক তোকে যদি আমি দুইটা কানের গোড়ায় দেই তুই তিনদিন ননষ্টপ ফ্যানের মতো ঘুড়বি।”
“অভি ধমক দিয়ে বললো
এই মেয়ে বিরবির করে কি বলছো? যা বলার জোড়ে বলো।”
দিশা রাগি চোখে তাকিয়ে মনে মনে বললো,, তোর মাথা।
#চলবে,,,,,,,