The Colourful Fragrance Of Love?Part:19

0
1302

?#The_Colourful_Fragrance_Of_Love?

Part:19

উজানঃ হিয়া প্রেগনেন্ট!!কি ভাবে সম্ভব ওর সাথে তো আবীরের বিয়ের বেশি দিন হয়নি তার মধ্যে হিয়া

অভিকঃ কিছু ভাবছিস

উজানঃ না

অভিকঃ হিয়ার সাথে এভাবে দেখা হয়ে যাবে ভাবতে পারিস নি না

উজানঃ হিয়ার দাড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে অভিক

অভিকঃ হুম____হিয়া____হিয়াআআ____হিয়াআআ তোকে ডাকছি আমি

হিয়াঃ কে অভিক দা,,(একটা হাসি টেনে) শুনতে পারি নি বলো না?

অভিকঃ শুনতে পারিস নি না শুনতে চাসনি,,কোনটা??

হিয়াঃ আমি আসলে

অভিকঃ এদিকে এসে বস,,এ অবস্থায় তোর দাঁড়িয়ে যাওয়া টা ঠিক হবে না

হিয়াঃ না আমি ঠিক আছি,,তুমি বসো না বসো

অভিকঃ তোকে যেটা করতে বলেছি সেটা কর,,নিজের জেদ টাকে বজায় রাখতে গিয়ে নিজের বাচ্চা টাকে অনন্ত কষ্ট দিস না

হিয়া আর কথা না বাড়িয়ে বসে যায় অভিকের জায়গায় এমনিতেও দাঁড়িয়ে থাকতে তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছিলো,,বাস চলতে শুরু করে,,আস্তে করে সন্ধ্যা নেমে এখন রাতের দেখা মিলছে,,বড় রাস্তার মোড়ে গাড়ি থেমে গিয়ে যাএী নামলেও হিয়া আর উজানের পাশের সীট টা ছেড়ে উঠে যায় নি,,উঠতে চেয়েছিল কিন্তু কোন এক টানে পারে নি উঠতে,এদিকে অভিক একটা সীট ম্যানেজ করে বসে যায়,,বাস চলতে থাকে আবার তার নিজ গতিতে,,এদিকে সময় পেরুতে থাকে হিয়া উজান তখনো নিশ্চুপ,,

রাত তখন আটটার কাছাকাছি

বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে গুঁড়ি গুঁড়ি সাথে আছে দমকা বাতাস,,হিয়া জানালার পর্দা টা হালকা সরিয়ে শ্বাস নিতে শুরু করছে,কেমন যেনো একটা দম বন্ধ বন্ধ লাগছে তাঁর,,মাথা ভারী হয়ে আসছে বমিও পাচ্ছে ভীষণ,,কিছুক্ষণ বাদে সামনে থাকা পলি ব্যাগটা হাতে নিয়েই হিয়া ওখানে বমি করতে শুরু করে,,উজান কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারে না,,না চাইতেও ধরে নেয় সে হিয়াকে,,হিয়ার চুল গুলো ঠিক করে হিয়ার পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়,,হিয়ার বমি করা শেষ হয়ে আসলে হিয়া পলি ব্যাগটা জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে পানি খুঁজতে শুরু করে,,কিন্তু বোতলে নেই এক ফোঁটা পানি,,উজান অভিকের থেকে জল এনে হিয়াকে খাইয়ে দেয় সাথে টিস্যু দিয়ে খুব যত্ন করে মুছে দেয় হিয়ার মুখ,,নিমিষে সমস্ত জল রাশি এসে জমা হয় হিয়ার চোখে,,কেনো উজান এখনো ওর এতো খেয়াল রাখছে কম কষ্ট তো দেয় নি সে তাকে,কম অপমান তো করে নি সে উজানকে তাহলে কিসের জন্য উজান আজো ওকে এ-তো টাই ভালোবাসছে কেনো

হিয়াঃ উজান (অস্ফুটে)

উজানঃ (উজান জানে হিয়া কখন এ-র কম মায়াবী কন্ঠে ওকে ডাকে,,তাই উজান হিয়া ডাকবার সাথে সাথেই হিয়াকে জড়িয়ে নেয় নিজের প্রশ্বস্ত বুকে,আগলে ধরে নিজের সবটা দিয়ে)_____কেনো আজ আমার বুকে জড়াতে চাইছো তুমি হিয়া,,কে আমি??

হিয়াঃ (নিজ মনে)কি করে বোঝাবো আপনাকে আপনি আমার কে,,ভালোবাসি যে আপনাকে খুব,,আমি জানি আপনি নীলিমা আপু কে বিয়ে করেননি কিন্তু আজ সে কথা আমি আপনার সামনে বুঝতে দেবো না,,আপনার উপরো আমার একটা চাপা অভিমান জমে আছে!!আমি জানি না আপনি কোনোদিন আমার সেই অভিমান টা ভেঙে দিতে পারবেন কি না,,

উজানঃ আবীর কি রকম হাসবেন্ড তোমার তোমাকে এ অবস্থায় একা রেখে

হিয়াঃ (চোখ টা মুছে নিয়ে) না উনি আসলে আসতে চেয়েছিলো আমার সাথে,,আমি ওনাকে

উজানঃ আমাকে মিথ্যে বলতে তুমি আজো শেখো নি হিয়া_______কোথায় এসেছিলে এখানে,,আমার জানা মতে আবীর বা তোমার কারোরি কোনো রিলেটিভ এ শহরে থাকে না

হিয়াঃ না আমি আসলে একটা চাকরির ইন্টারভিউ দিতে

উজানঃ আবীরের এতো ভালো স্যালারি থাকতে তোমাকে চাকরি খুঁজতে হচ্ছে স্ট্রেন্জ

হিয়াঃ আপনি তো জানেন আমি নিজের পায়ে দাঁড়ানো তে বিশ্বাস করি অন্যের ভরসা হয়ে থাকতে না

উজানঃ হুম,,,,বাচ্চা টার কতো মাস হলো

হিয়াঃ (এনাকে কিছুতে বুঝতে দেওয়া যাবে না আমার ছ মাসের কাছাকাছি চলছে,,ইনি নির্ঘাত সব বুঝে নেবেন)হয়েছে মানে বিয়ের পরের মাসে কনসিভ করেছি তাই সবাই_____আমার কথা বাদ দিন নীলিমা আপু কেমন আছে বললেন না তো

উজানঃ নীলিমা যাতে ভালো থাকে তার জন্যেই তো এতো আয়োজন ছিলো তোমার,,ভালোই আছে

হিয়াঃ মা,সন্ধি আপু এরা কেমন আছে,,ভুলে গেছে না সবাই আমাকে

উজানঃ সবাই তোমার মতো এতো স্বার্থপর না হিয়া,,মা সন্ধি সবাই আমরা খুব ভালো আছি,,মা আর সন্ধি তোমাকে মনে রাখলেও তারা কিন্তু কখনো তোমাকে ক্ষমা করবে না

হিয়াঃ আপনি করবেন তো??

উজানঃ তোমাকে ক্ষমা করা যায় না হিয়া তোমাকে তো করুনা করা যায়,দয়া করা যায় তোমার উপর বুঝছো

হিয়াঃ করুনা দয়া!!

উজানঃ তা নয় তো কি যার জন্য আমাকে অবহেলা করে ছুঁড়ে ফেললে সে কি না তোমাকে আর তোমার বাচ্চা কে এভাবে,,(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)

হিয়াঃ (উজানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে) আমি এসে গেছি আমাকে নামতে হবে

উজানঃ তোমাকে ধরেও বা কোথায় রাখতে পারলাম আমি হিয়া!!

হিয়াঃ না আমি মানে

উজানঃ থাকো না আর একটু কিছুক্ষণ,,কি ক্ষতি হবে আমার পাশে একটু থাকলে,,

হিয়াঃ না সেটা সম্ভব না আমাকে নামতে হবে,,আমি আসছি

উজানঃ হিয়া শোনো হিয়া,,হিয়া যেও না হিয়া,,হিয়া

হিয়া উজানের ডাক এক রকম না শোনার ভান করে কিছু না বলে ওর সব গুছিয়ে যতো দূত সম্ভব ওখান থেকে উঠে আসে,,কিন্তু তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে ফেলে রাখে পরশু করে আসা বাচ্চার ultrasonogram এর রিপোর্ট এর ফাইল টা,,রিপোর্ট টা উজানের চোখে না পড়লেও চোখে পড়ে অভিকের,,অভিক রিপোর্ট গুলো তুলে নিয়ে নিজের কাছে রেখে দেয় এই মুহুর্তে উজান কে কিছু না বলাটাই ওর কাছে শ্রেয় মনে হয়

বাস শেষ স্টপে নামলে অভিক উজান দুজনে নেমে একটা উবার ভাড়া করে,,এখান থেকে সোজা যেতে হবে মিটিং এ,,খুবই বিরক্ত নিয়ে পেছনের সীটে বসে আছে অভিক আর মনে মনে উজানকে গালি দিচ্ছে হাজার টা,কতো করে সে বললো মিটিং টা কাল রাখতে উজান শুনলোই না,,এদিকে উজান নিজের সীটে চোখ বন্ধ করে কপালে হাত দিয়ে বসে আছে,,মুখে কোনো কথা নেই তার,,শুধু চোখের সামনে ভাসছে হিয়ার মলিন মুখ টা,,

উজানঃ কেনো জানি মনে হচ্ছে হিয়া ভালো নেই অভিক

অভিকঃ হঠাৎ এরকম মনে হবার কারণ

উজানঃ আমি আমার হিয়ার অস্থিরতা টা বুঝি অভিক,,আমার শুধু ভয় হয় আবীর সত্যি হিয়াকে নিজের ভোগের বস্তু হিসাবে ট্রিট করছে না তো নাকি আবীর কে নিয়ে হিয়া সত্যি ভালো আছে??

অভিকঃ তুই তো অনেকবার হিয়াকে ফিরিয়ে নিতে গিয়েছিলি বল,,তোর তো বিশ্বাস ছিলো হিয়া এরকম কাজ করতে পারে না

উজানঃ আজো আমার মন বলে আমার হিয়া আমাকে ঠকাতে পারে না,,কিন্তু বাস্তবে যা হচ্ছে আমি সেটাকেই বা কি করে অস্বীকার করি বলতে পারিস

অভিকঃ ওহ ভালো কথা মনে করে দিয়েছিস,তখন হিয়া চলে যাবার পর খেয়াল করলাম হিয়ার কি যেনো একটা ফাইল পড়ে গিয়েছিল,,ওয়েট

অভিক ফাইল টা বের করে পড়তে শুরু করে

অভিকঃ ডক্টরের ফাইল এটা হিয়ার,,হিয়ার বাচ্চার মনে হয়

উজানঃ দে দেখি

অভিকঃ হুম নে,,

উজান ফাইল টা নিয়ে খুতে খুতে দেখতে থাকে,,ultrasonogram রিপোট টায় বাচ্চা দুটোর অবয়ব স্পষ্ট দেখা মিলছে,,উজান নিজের অজান্তেই সেই অবয়বে নিজের হাত ছুঁইয়ে দেয়,,নিমিষে কান্নার মেঘ এসে জড়ো হয় উজানের চোখে,,আজ এই বাচ্চা টা তো উজানের হতে পারতো,,উজান হিয়া দুজনে আজ একসাথে,,হঠাৎই উজানের খেয়াল হয় রিপোর্ট এ একটা না দুটো বাচ্চার অবয়ব দেখা যাচ্ছে,,উজান নিজেকে সামলে নিয়ে রিপোর্ট টা পড়তে গিয়ে দেখে ওখানে টুইন বেবির কথা স্পষ্ট করে লেখা,,উজান আর এবার নিজেকে সামলাতে পারে না সেদিনের সেই মুহুর্ত গুলোর কথা মনে আসতেই উজানের দমটা আঁটকে উঠে,,মনে তো হচ্ছে এই তো সেদিনই সে হিয়াকে ওর বুকে করে নিয়ে হিয়ার মান ভাঙ্গাতে গিয়ে বললো তাদের যদি জমজ বাচ্চা হয় তাহলে কতো ভালো হবে আর আজ কি-না,,চোখ টা বন্ধ করে বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরে রিপোর্ট টাকে সে,,কেনো সে রিপোর্ট গুলো আঁকড়ে ধরলো সে নিজেও জানে না,,খুব কষ্ট হচ্ছে তার,,রিপোর্ট গুলো আঁকড়ে ধরে শান্তি পাচ্ছে সে মনে হচ্ছে হিয়া কোথাও না কোথাও মিশে আছে তার সাথে

উজানঃ কেনো করলে আমার সাথে এমনটা হিয়া,,কেনো__তোমাকে আঁকড়ে ধরে তো বাচঁতে চেয়েছিলাম কি পেলে এতোটা আঘাত দিয়ে,,এই বাচ্চা দুটো তো আমার আর তোমার ও হতে পারতো হিয়া,,কিসের এতো শাস্তি দিলে আমায় তুমি,,কিসের প্রতিশোধ নিলে??
_________________________________

হিয়াঃ কি রে আজ বাবা কে প্রথম কাছে পেয়েছিস বলে খুব আনন্দ হচ্ছে তাই না,, দুটোতে দেখছি পেটের মধ্যে খুব লাফঝাপ শুরু করে দিয়েছিস,,থাম না রে বাবা মা টার কষ্ট হচ্ছে তো নাকি,,বুঝেছি বুঝেছি খুব খুশি আজ তোরা____আচ্ছা তোদের বাবা কি বুঝেছিলো আজ আমি ওনার হাত টা আলতো করে আমার পেটে ছুঁইয়ে দিয়েছিলাম,,,,,বুঝেনি হয়তো যেভাবে রাগ ঝাড়ছিলো আমার উপর,,,এখনো সেই আগের মতো জেদ আছে গোমড়ামুখো একটা____কোথায় আজো তো সেই একই ভুল বুঝে গেলো আমাকে,,জানতে তো চাইলো না আমি হিয়া কেমন আছি,,আমাকে নাকি শুধু করুনাই করা যায় সত্যি তাই তো!!

!
!
!

মিটিং শেষে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয় অভিক উজান দুজনেই,,আজ অভিক ড্রাইভ করছে উজানের আজ ড্রাইভ করবার শক্তি ইচ্ছে কোনোটাই শরীরে নেই,,কেনো জানি রিপোর্ট গুলো দেখার পর ওর খুব ইচ্ছে করছে হিয়ার কাছে ছুটে যেতে,,তার মন বলছে হিয়া ভালো নেই,,সে শুধু চাইছে ছুটে গিয়ে আবার দেখতে হিয়া আসলেই আবীরের সাথে ভালো আছে তো!!!!!

সীটের মধ্যে বসেই কেমন জানি ছটফট করছে উজান,সত্যি কিচ্ছু ভালো লাগছে না তার,কেনো দেখা হতে হলো হিয়ার সাথে আজ ওর,বেশ তো ছিলো সবটা সে তো সব হিয়ার সব অপমান মেনেই নিয়েছিলো তাহলে কেনো এ-র কম লাগছে বুকের ভেতরে,অভিক বুঝে উজানের এই অস্থিরতা কিন্তু উজান কে শান্ত করাবর উপায় টাও যে তার জানা নেই!!!!

অভিকঃ রিপোর্ট গুলো হিয়াকে দিয়ে আসা টা জরুরি মনে হচ্ছে,,কখন কোথায় গিয়ে লাগে

উজানঃ হ্যা__কিছু বললি

অভিকঃ বললাম রিপোর্ট গুলো হয়তো জরুরি হিয়ার জন্য,,একটা কাজ করলে হয় না হিয়াকে বা আবীরকে রিপোর্ট গুলো দিয়ে

উজানঃ কোথায় খুঁজবি ওদের তুই,, হিয়া তো এখন ওর আগের বাড়িটাতেও থাকে না,,যেখানে গিয়ে আমি ওকে অনেকবার ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলাম_____ওদের নতুন কোনো ঠিকানা জানা আছে তোর

অভিকঃ তা জানা নেই,,আচ্ছা রিপোর্টে তো বাচ্চার গার্ডিয়ানের নাম্বার থাকার কথা ঔ নাম্বারে একটা কল করে দেখলে হয় না,,,আবীর তো মনে হয় ওর নাম্বার টা চেঞ্জ করে নিয়েছে

উজানঃ দেখ–ছি

উজান রিপোর্ট গুলোর সামনের অংশে গার্ডিয়ান পরিচয় টুকু পড়তে গিয়েই থমকে যায়,,ওখানে যা লেখা আছে সেটা সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারে না,বাবার নামের জায়গায় স্পষ্ট করে লেখা উজান শাহরিয়ার আর মায়ের নামের জায়গায় হিয়া শাহরিয়ার,,,,!!দম টা মুহুর্তেই বন্ধ হয়ে আসে উজানের,,বুক টা হয়ে উঠে শূন্য,,কথা গুলো গলার কাছে দলা পাকিয়ে যায়,,তার মানে ও এতোক্ষণ যা সন্দেহ করছিলো তার পুরোটা সত্যি!!!!

উজানঃ অভি–ক

অভিকঃ কি দেখছিস এভাবে

অভিকের দিকে রিপোর্ট টা এগিয়ে দিয়ে

অভিকঃ উজান শাহরিয়ার!!

মুহূর্তে রাগের পাহাড় এসে জমা হয় উজানের মাঝে,,কপালের রগ গুলো ভেসে এসে স্পষ্ট দেখা মিলে,,চোখ দিয়ে যেনো আগুন বের হতে থাকে,,

উজানঃ আবীর কে এখন কোথায় পাওয়া যাবে অভিক?

অভিকঃ আমি আমি কি ক-রে জানবো,,জানলে তো তোকে তখনি বলতে পারতাম

উজানঃ আবীরের অফিস??

অভিকঃ যতোদূর আমি জানি আবীরের ট্রান্সফার হয়ে গেছে অনেকদিন আগেই

উজানঃ তাহলে হিয়া কোথায় থাকে(গম্ভীর কন্ঠে)

অভিকঃ আমার না হিসাব গুলো কি রকম গুলিয়ে যাচ্ছে উজান,,হিয়া সত্যি আবীরকে

উজানঃ এটা যদি সত্যি হয়,আমি কিন্তু হিয়াকে খুন করে ফেলবো অভিক??

অভিকঃ এতোটাও ভেবে ফেলিস না,,ভাবনা টা ভুল হয়ে ভেঙে গেলে কষ্ট টা তোরই হবে

উজানঃ যদি আমি যা ভাবছি সেটা সত্যি হয় তখন

অভিকঃ হলে তো সেটা সবার জন্যেই ভালো হবে বল

উজানঃ আমি জানি না তুই যে করে হোক আমাকে এখুনি আবীরের কাছে নিয়ে যা আমি সত্যি টা জানতে চাই

অভিকঃ (একটু চুপ থেকে) সন্ধিকে একটা ফোন করলে হয় না,,আই থিংক সন্ধি জানে আবীর কোথায়,,সেদিন ঔ ইনসিডেন্টটার পরো তো সন্ধির সাথে আবীর যোগাযোগ টা রাখতো

উজানঃ সন্ধি আবীরের সাথে যোগাযোগ করতো!!

অভিকঃ করতো,,ওসব বাদ দে,,সন্ধিকে একটা ফোন দে,,তুই কথা বল আমি জানতে চাইলে হয়তো সন্ধি নাও বলতে পারে,,ট্রান্সফার হয়ে চলে যাবার পর তো সন্ধি রাগে আর আমার সাথে কোনো যোগাযোগই করে না

উজান একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে সন্ধিকে ফোন করে

সন্ধিঃ বাহ বা সূর্য আজ কোন দিকে উঠেছে আজ হঠাৎ আমাকে এতো বার ফোন দেওয়া হচ্ছে

উজানঃ কোন রাজ কার্জে ব্যাস্ত ছিলি, এতোক্ষণ লাগে একটা ফোন ধরতে তোর

সন্ধিঃ গলা খেকিয়ে চিৎকার করছিস কেনো এমন?মিটিং এ ছিলাম,,ফোন সাইলেন্ট ছিলো বলে শুনতে পারি নি,,তা এতো বার যে ফোন দিলি ওদিকে বাড়িতে সবাই ঠিক আছে,,আন্টির শরীর ভালো আছে তো?

উজানঃ সবাই ভালো আছে

সন্ধিঃ তাহলে?

উজানঃ আবীর কোথায় সন্ধি?

সন্ধিঃ আবীর কো–থায় মা–নে?

উজানঃ তুই সবটা জানিস আমি জানি,,এখন প্লিজ বলবি কি আবীর কোথায় থাকে

সন্ধিঃ না বলবো না,,,,কেনো বলবো এতোদিন পর তোর রিয়েলাইজেশন হলো হিয়া কি করতে পারে বা না পারে

উজানঃ তার মানে আমি এতোদিন যা ভেবে এসেছি সেটা ঠিক?

সন্ধিঃ আমি জানি না

উজানঃ তুই সব জানিস

সন্ধিঃ হ্যা জানি,,তো

উজানঃ আমাকে কি পেয়েছিস তোরা সবাই খেলার পুতুল ইচ্ছে মতো আমাকে নিয়ে যা খুশি করছিস?

সন্ধিঃ কেউ কাউকে নিয়ে কিছু করছে না,,সবাই শুধু চাইছে সবার ভালোবাসার মানুষ টা যেনো সুখে থাকে,,এতটুকুই

উজানঃ তুই তার মানে বলবি না আবীর কোথায় তাই তো

সন্ধিঃ আবীরকে না খুঁজে হিয়াকে গিয়ে খুঁজ কাজে দেবে

উজানঃ আমি আবীরের সাথে কথা বলতে চাই হিয়াকে তো আমি পড়ে দেখে নিচ্ছি

সন্ধিঃ কি করবি আবীরের সাথে দেখা করে আবার ঔ মারপিট ভুল বোঝাবোঝি এগুলোই তাই তো,,তোকে একদিন বলে ছিলাম না তোর জন্মোই হয়েছে আবীরকে ভুল বোঝার জন্য আজ আমি সেটার প্রমাণ ও পাচ্ছি??

উজানঃ আমি তোকে আর একবার জিজ্ঞেস করবো আবীর কোথায়?

সন্ধিঃ হুম___ঠিকানা টেক্সট করে দিচ্ছি,,তবে একটা রিকুয়েষ্ট করবো অনেক তো এসব ভুল বোঝাবোঝি করে নিজেদের বন্ধুত্ব টাকে নষ্ট করে দিলি এবার অনন্ত আবীর কে জড়িয়ে একটা Sorry বলে দিস,,,রাখছি

সন্ধি ফোন রেখে উজানকে আবীরের ঠিকানা টেক্সট করে দেয়,,উজান অভিক কে নিয়ে সেই রাতেই আবীরের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে,,এতো রাতে উজানকে ঠিক আবীর আশা করেনি,,গেট খুলে উজানকে বসতে দিতেই উজান আবীর কে রিকুয়েষ্ট করে হিয়া কোথায় সেটা বলতে,,আবীর প্রথমে না করলেও উজান কে ফিরিয়ে দেবার সাহস ওর হয় না,,আবীর হয়তো তখনো চুপ থাকতো কিন্তু যখন জানতে পারলো উজান শেষে আর নীলিমা কে বিয়ে টা করে নি তখন সে অনেকটা হালকা হয়ে সবটা বলে দেয়,,সেদিন ঔ বিয়ের পেপারস থেকে শুরু করে যা যা হিয়া বলেছিলো সবটাই ছিলো মিথ্যে,হিয়া শুধু নীলিমার কথা ভেবে এতো বড় একটা ডিসিশন নিতে রাজি হয়,,আবীর এটাও বলে সে ওসময় জানতো না হিয়া কনসিভ করছে ইনফেক্ট হিয়া নিজেও ওসময় বুঝতে পারি নি যে ও,,কিছুদিন আগে আবীর জেনেছে সবটা যদি আগে জানতো তাহলে হয়তো আবীর হিয়াকে এতো বড় একটা কাজ করতে কখনোই দিতো না,,

আবীরের থেকে সব শুনে উজানের আজ হিয়ার উপর ভীষণ রাগ হচ্ছে,,মনে হচ্ছে হিয়া সামনে থাকলে হয়তো হিয়াকে ও নিজ হাতে গলা টিপে খুন করে ফেলতো,,এতো বড় একটা ডিসিশন নেবার আগে হিয়া একবারো ভাবলো না ওর কথা,,না আজকে হিয়াকে এসবের জন্য কঠিন শাস্তি দিতে হবে হিয়ার দেওয়া আঘাতের চাইতেও কঠিন,,

উজান আবীরকে কি বলবে ঠিক বুঝে উঠতে পারে না,,আবীর উজানকে হিয়ার ঠিকানা দিয়ে বলে তুই আপাতত হিয়ার কাছে যা আমার সাথে ঝগড়া রাগারাগি টা না হয় অন্য একদিন মিটিয়ে নিস,,উজান কিছু বলে না শুধু আবীরকে একবার জড়িয়ে ধরে sorry বলে উঠে,,আবীর তাতেই অনেক খুশি যাগ কিছু টা হলেও তো উজান রিয়েলাইজ করেছে আবীর এতোটাও খারাপ ছেলে না,,হয়তো কখনো এটাও উজান জানতে পারবে যার জন্য আবীরের সাথে তার এতো ভুলবোঝাবুঝি সেই ঘটনাটার জন্য আবীর কোনো ভাবেই দায়ী না!!!

উজান অভিকে বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে হিয়ার ঠিকানার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়,অভিক অনেক রিকুয়েষ্ট করে উজানের সাথে যাবার জন্য কিন্তু উজান রাজি হয় না,,হিয়ার সাথে বোঝাপড়া টা সে একাই সারতে চায়,,অভিক থাকলে হয়তো সে হিয়াকে ঠিক করে শাস্তি দিতে পারবে না তার যে হিয়াকে আজ খুব শাস্তি দিতে হবে খুব খুব!!!!!
__________________________

রাত তখন তিনটের কাটা ছুঁই ছুঁই,,হিয়া তার ছোট্ট বিছানাটায় কাথা মুড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে খুব শান্ত ভাবে,,হিয়া যেই খালা টার সাথে থাকে ঔ খালা টা দুদিন হলো গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে তাই হিয়া আজ দুদিন ধরে বাড়িতে একা,,হঠাৎই কলিং বেল এর লাগাতার শব্দে ঘুম ভেঙে আসে হিয়ার,,কাথা টা গা থেকে সারিয়ে উঠে বসে হিয়া

হিয়াঃ এই এতো রাতে আবার কে আসলো,,কটা বাজে___রাত তিনটের সময় কে আসতে পারে____দরজা খোলা টা কি ঠিক হবে আমার____জানালা দিয়ে দেখবো একবার নিচে কে??

হিয়া উঠে জানালা দিয়ে নিচে দেখতে চেষ্টা করে কে এসেছে,,কিন্তু হিয়া দেখতে পারে না,,একটু খেয়াল করলেই হিয়া দেখতে পারে সামনে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে যেটা একদম হুবহু উজানের গাড়ি টার মতো,,হিয়া কিছু বুঝতে পারে না এখানে হঠাৎ উজানের গাড়ি কেনো আসতে যাবে,,এদিকে উজান কলিং বেল বাজিয়ে এবার চিৎকার করে করে হিয়া বলে ডাকতে শুরু করে,,দরজা ধাক্কা তে থাকে জোরে জোরে,,হিয়া ঠিক কি করবে বুঝতে পারে না,উজানের গলার আওয়াজ তার খুব ভালো করে চেনা এটা যে উজানই ওকে ডাকছে সে ব্যাপারে সে নিশ্চিত,,কিন্তু এই এতো রাতে উজান কেনো হঠাৎ,,হিয়া কোনো স্বপ্ন দেখছে না তো এদিকে উজান যে ভাবে ডাকছে পুরো এলাকাবাসী না এবার যেনো ঘুম থেকে উঠে যায়,,

শেষ মেষ হিয়া বাধ্য হয়ে গেট টা আলতো করে খুলে দিতেই উজান দুম করে ভেতরে ঢুকে ধাম করে দরজা লাগিয়ে হিয়ার গালে পর পর দুটো দাবাং মার্কা চড় বসিয়ে দেয়,,চড় খেয়ে হিয়া তো পুরো শকড এমনিতে উজানের এই হুট করে বাড়িতে আসার কারণ কিছুই তার মাথায় ঢুকছে না তার উপর এরকম করে পরপর দুটো চড়!!

উজান রাগে আবার হাত তুলতে ধরেও হিয়ার পেটের দিকে চোখ পড়তেই হাত টা থামিয়ে দেয়,,তবুও রাগ এখনো পড়ে না তার,,হিয়ার গলা টিপে ধরে রাগের চটে

হিয়াঃ উম উম আমার গ–লাআআ

উজানঃ মন তো চাইছে খুন করে ফেলি তোমাকে,,গলা টিপে শেষ করে দেই,,বেয়াদব মেয়ে একটা,,নিজে তো কষ্ট পেলে পেলে সাথে এই আমাকেও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিলে

হিয়াঃ আমার লাগ—ছেএএএ

উজানঃ (হিয়ার গলা থেকে হাত নামিয়ে হিয়াকে দেওয়ালের সাথে চিপকে ধরে) এই কটা মাস যেভাবে আমার রাতের ঘুম হারাম করছো তুমি এ-র পর থেকে আমি তোমার সব ঘুম কেঁড়ে নেবো,,,এতো ওডাসিটি তোমার আমার সাথে নাটক করো,,,,বাবু দুটো আছে বলে এখন কিছু বলছি না তোমাকে শুধু ওদের কে এই পৃথিবীতে আসতে দেও তোমার ঠিক কি পরিণাম আমি করি তাই তুমি দেখবে শুধু,,ইডিয়ট মাথামোটা বেয়াদব মেয়ে একটা

উজান হিয়াকে ছেড়ে দিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে পানির জগ থেকে পানি ঢেলে খেতে যাবে ওমনি সময় হিয়া উজানের থেকে পানির গ্লাস টা কেঁড়ে নিয়ে উজানের গায়ে সব পানি ছিটিয়ে দেয়,,আর শুরু হয় দু’জনের বাড়ি কাঁপানো চিৎকার,,মাঝরাতে সেই চিৎকার দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে বারবার ফিরে আসতে থাকে,,

উজানঃ হোয়াট দা হ্যাল ইস দিস?,,পানি কেনো ছেটালে গায়ে

হিয়াঃ কি ভেবেছেন কি আপনি,,এতো রাতে এসে আমাকে সবকিছুর জন্য দোষী বানিয়ে দেবেন আর আমি চুপচাপ সব শুনে যাবো,,,,আপনার খামতি ছিলো আমাকে ভালোবাসায় সেটা স্বীকার করুন আপনি?

উজানঃ তুমি যা বলছো ভেবে বলছো তো হিয়া,,আমার আমার ভালোবাসায় খামতি ছিলো,,সিরিয়াসলি হিয়া

হিয়াঃ ছিলোই তো নাহলে কি এতো সহজে বিলিভ করে নিতেন আমি আবীর ভাইয়া কে বিয়ে করে নিয়ে আবীর ভাইয়ার সাথে সুখে আছি

উজানঃ আমি আমি বিলিভ করেছি!!___সত্যি হিয়া কি অকৃতজ্ঞ তুমি,,তুমি সেদিন ঔ সব করে আবীরের সাথে চলে আসবার পরো আমি কতোবার কতোবার তোমাকে ফিরিয়ে নিতে এসেছিলাম জাস্ট একবার মনে করো তো,,কোনো কোনো ধারণা আছে তুমি কি কি অপমান করে আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলে প্রত্যেকবার?

হিয়াঃ তাড়াবো না তো কি করবো হ্যা তাড়াবো না তো কি করবো আপনি তো শুধু বলেই গিয়েছেন হিয়ার প্রতি আপনার দায়িত্ব আছে আপনি হিয়ার সাথে কোনো অন্যায় করতে পারবেন না,,আরো কতো কি একবারো বলেছেন আপনি আমায় ভালোবাসেন?

হিয়ার কথায় উজান শকড হয়ে যায়,,রাগ টা আরো এক ধাপ এগিয়ে আসলে উজান হিয়ার হাত মচকে ধরে হিয়ার চুল গুলো টেনে দেয়

উজানঃ কি করে এই মিথ্যে টা তুমি বলতে পারলা যে আমি এটা একবারো বলিনি আমি তোমায় ভালোবাসি,,আমি আমি যে পাগলের মতো তোমার জন্য মরিয়া হয়ে গিয়েছিলাম সেটা তোমার কাছে আমার ভালোবাসা মনে হয় নি?

হিয়াঃ আমি এতো সতো বুঝি না,,আমার আপনার উপর অভিমান হয়েছিলো তাই আমি আমার মন যা চেয়েছে আমি তাই করেছি

হিয়ার কথায় উজান রাগে হিয়ার চুল গুলো আরো চিপে ধরে

হিয়াঃ আমার লাগছে খুব,,ছাড়ুন না

উজানঃ অভিমান,,অভিমানের জন্য তুমি আমাকে,,আমার আমার কথা বাদ দিলাম কিন্তু তুমি কি করে এই বাচ্চা গুলোকে আমার থেকে,,তুমি তুমি একটা জাস্ট

হিয়া রাগ হয়ে উজানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে উজানের বুকে পিঠে সব জায়গায় খামচি দিতে শুরু করে

হিয়াঃ আমি কি হ্যা আমি কি,,নিজে তো একটা বলদের গোডাউন,,একটা একটা হাঁদারাম,, মাথামোটা,,আমাকে আমাকে দেখে একবারো আজ মনে হয়নি আমার আমার পেটে আজ কার বাবু?

উজানঃ আহ,,হিয়া লাগছে আমার,,বলছি না হাতের নখ এতো বড় রাখবা না হাইজিন জিনিস যতোসব,,

হিয়াঃ এবার তো আমি আরো আপনাকে ঘুতো দেবো,,আপনি আপনি কি হ্যা এটুকুতো কমেনসেন্স থাকা উচিৎ ছিলো আপনার যে আমি,,আপনি স্বীকার করুন আপনি ভুল করেছেন

উজানঃ আমি ভুল করেছি,,আমি,,কি হ্যা কি ভুল করেছি আমি,,নিজে এই অযথা একটা নাটক সাজিয়ে আজ কতোগুলো দিন কতোটা কতোটা দূরে সরিয়ে রাখলে আমাকে আর তুমি তুমি বলছো আমি ভুল করেছি,,

হিয়াঃ করেনননি ভুল,,সেই তো আপনি ভুল কি করে করতে যাবেন,,আমি ঔ দু তিনবার দরজা থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম বলে আপনি আর আমার খোঁজ নিতে আসলেন না,,আরে অভিক ভাইয়াকে দেখে তো কিছু শিখতে পারতেন নীলি আপু এতোটা অপমান করবার পরো উনি ঠিক আপুকে বুঝিয়ে আপুকে বিয়ে করে নিলো

উজানঃ এক সেকেন্ড,,তুমি জানতে অভিক নীলিমাকে??তাহলে বাসে কেনো তখন সব না জানার অভিনয় করে গেলে?

হিয়াঃ কেনো করবো না কিসের জন্য করবো না,,বারবার বারবার কেনো এই আমাকেই সব ব্যাখা করে বলতে হবে আপনাকে,,আপনার আপনার কোনো বিবেকবোধ ছিলো না

উজানঃ তুমি জানতে হিয়া আমি কি রকম একটা মানসিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম তারপরো তুমি কি করে,,আমি তোমাকে ক্ষমা করবো না হিয়া নেভার

হিয়াঃ চাইছি নাকি আমি আপনার ক্ষমা

উজানঃ হিয়া আমি জাস্ট অবাক হচ্ছি তুমি সবকিছু জানার পরো কি করে আমাকে(হিয়াকে দুইবার ঝাঁকি দিয়ে) কি করে হ্যা কি করে পারলে আমার সাথে এই খেলাটা খেলতে

হিয়াঃ আর আমার সাথে যা করলেন আপনি,,দায়িত্ব দায়িত্ব বলে বলে তো এটা বুঝিয়ে দিতে থাকলেন আমি শুধুই আপনার দায়িত্ব অন্য কিছু না?

উজানঃ হিয়া আমার কাছে না ভালোবাসাটা কোনো ছেলে খেলা না,,আমি না মুখে সব সময় বলতে পারবো না আমি তোমাকে ভালোবাসি ঔসব আদিক্ষ্যেতা ভরা ভালোবাসার কথা লোক দেখানো ওসব আমি পারি না

হিয়াঃ তাহলে কি পারেন কি টা কি আপনি

উজানঃ আমার কাছে ভালোবাসা টা একটা দায়িত্ব হিয়া,,যাকে ভালোবাসবো তার সাথে কোনো অন্যায় বা অবিচার করবো না তার তার একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করবো,,সে অসুস্থ হলে তাকে ঠিক সময় ডক্টর দেখিয়ে তাকে ঠিক ঔষধ টা এনে দেবো,,যাকে ভালোবাসবো তার প্রত্যেকটা বিষয় দেখেশুনে রাখবো,,আর এটাই আমার কাছে ভালোবাসা আর তোমার যদি মনে হয় এসব করেও আমি তোমাকে ভালোবাসি না তো হ্যা যাও আমি তোমাকে ভালোবাসি না?খুশি

হিয়াঃ না খুশি না,,আপনি যে

হিয়া আর কিছু বলতে যাবো ওমনি গেটের মধ্যে গেট ধাক্কার জোরে জোরে শব্দ আসতেই দু’জনে চুপ হয়ে যায়,,উজান রাগে গেট খুলে দিয়ে পাশের ফ্লাটের এক আঙ্কেল কে দেখে আরো ক্ষেপে উঠে,,

উজানঃ কি সমস্যা কি?

আঙ্কেলঃ তুমি কে বাবা তোমাকে তো আগে দেখেনি

উজান খুব রাগ হয়ে আছে দেখে হিয়া দৌড়ে আসে, কি থেকে না কি বলে ফেলে উজান!!

হিয়াঃ আরে আঙ্কেল তুমি,,এতো রাতে__এ এ-তো আমার হাসবেন্ড ঔ ঔ যে তোমাকে বলেছিলাম না বাহিরে থাকে ঔ আরকি

আঙ্কেলঃ ওহ তা এই মাঝরাতে এরকম করে ঝগড়া করছো কেনো সব ঠিক আছে তো,,আমার গিন্নিতো ভয়ে বললো যে একটু মেয়ে টাকে দেখে আসো একা থাকে

উজানঃ অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আর আপনার গিন্নিকে,,যান এবার অন্যের সংসারে কম উঁকিঝুকি দিয়ে নিজের গিন্নি কে একটু আদর করুন দেখবেন মাঝরাতে আপনার আদর পেয়ে আপনার গিন্নি খুব খুশি হয়ে যাবে??

কথাটা বলেই উজান লোকটার মুখের উপর গেট লাগিয়ে দিলো,,

হিয়াঃ এটা কি হলো,,আপনি আঙ্কেলর সাথে এরকম ব্যবহার কেনো করলেন উনি কি ভাবলো আমাদের?

উজান রাগে আবার হিয়ার উপর তেড়ে আসে

উজানঃ যা খুশি ভাবুক আই ডোন্ট কেয়ার ____নাটক করো না তুমি আমার সাথে,,বয়স কতো তোমার,,এ-ই এতো বড় একটা ডিসিশন নেবার আগে একটা বার একটা বার এই বাচ্চা গুলোর কথা তোমার মনে আসে নি,,ছিঃ

হিয়াঃ তখন তখন কি আর আমি জানতাম যে আমার পেটে বাবু দুটো আছে

উজানঃ জানার পরো কি ফিরে এসেছিলে?

হিয়াঃ হ্যা মানে ঔ

উজানঃ আমি তোমাকে ক্ষমা করবো না হিয়া,,আমি তোমাকে ঠিক কি শাস্তি দেবো তুমি কল্পনাও করতে পারবে না,,ব্যাগ কোথায় হ্যা তোমার ব্যাগ কোথায়___তুমি এক্ষুনি আমার সাথে বাড়ি ফিরবে আজ তো তোমাকে আমি?

বলেই উজান কাবাড খুলে খুলে হিয়ার জামাকাপড় সব একটা ব্যাগে ভরাতে থাকে,,

হিয়াঃ আসছে এতোদিন পর আদিক্ষ্যেতা দেখাতে,,চাই না আমার ওনার ভালোবাসা,,অভিক ভাইয়া কি সুন্দর কিছু দিন আগে আপুকে বিয়ে করে নিয়ে এখন হানিমুনে কোথায় যাবে তার প্লান করছে আর তোদের বাবাকে দেখ সেই তখন থেকে আমার উপর কি রকম অত্যাচার করছে

উজানঃ কি বিড়বিড় করছো কি একা একা?(ঝারি দিয়ে)

হিয়াঃ না কোথায় কি বিড়বিড় করবো,,,,আপনি আপনি এই আমার জামাকাপড় নিয়ে কি সব করছেন এগুলো হ্যা,,আপনি নিতে আসলেই আমি ফিরবো কি করে ভাবলেন,,রাখুন আমার জামা রাখুন বলছি

উজানঃ রাখবো তাই না,,দাঁড়াও

বলেই উজান হিয়ার তিনটে জামা ছিঁড়ে দেয়,,হিয়ার তো এখন মাথাতে হাত,,হিয়া গিয়ে রাগে উজানের সব মাথার চুল খামচে ধরে গায়ের সব শক্তিদিয়ে

হিয়াঃ আমার আমার জামা?

উজানঃ আর আর বলবে তুমি তুমি যাবে না আমার সাথে আর বলবে

হিয়াঃ একশোবার বলবো রাগ দেখানোর ছিলো আমার উপর দেখান এই আমার জামাকাপড় গুলো কি দোষ করলো,,আমার কমলা নীল জামা?

উজানঃ একটা চিঠি লিখে চলে আসলেও আমি এতোটা কষ্ট পেতাম না যতোটা আবীরের সাথে নিজেকে জড়িয়ে এই নাটক টা তুমি করলে ছিঃ

হিয়াঃ চিঠি লিখে চলে আসলে তো আপনি আবার আমাকে খুঁজতেন তাই জন্য তো আমি বিয়ের নাটক টা করেছি যাতে আপনি আমাকে ভুলে আপুকে বিয়ে করেন

হিয়ার কথায় উজানের আবার মাথা গরম হয়ে আসে,,উজান তেড়ে এসে হিয়াকে আবার চিপে ধরে

উজানঃ আবার আবার আমার মুখে মুখে কথা বলছো তুমি আবার,,এরপর পা দুটোতে শিকলে বেধে রেখে দেবো কিন্তু আমি তোমার,,নিজে ভুল করে নিজে তেজ দেখাচ্ছো,,আজ হয় তুমি আমার সাথে ফিরে যাবা নয়তো আমি নিজেকে শেষ করে দেবো,,সবার সবার ঝামেলা চুকে যাবে তাহলে

হিয়াঃ না?

উজানঃ কি না হ্যা কি না,,তুমি ইচ্ছে মতো কষ্ট দেবা আর আমি সব সহ্য করে যাবো

হিয়াঃ (না এনাকে এখন কিছু বলে বোঝানো যাবে না দোষ টা হলেও তো কিছুটা আমার আছে না এখন এনাকে শান্ত করে পরে আমি সব প্রতিশোধ তুলবো হু)

উজানঃ কি হলো কি চুপ করে আছো কেনো,,উওর নেই না এখন কোনো

হিয়াঃ এ্যা হ্যা এ্যা?আমার পেটে ব্যাথা করছে বাবু দু’টোর কষ্ট হচ্ছে আর আপনি আসছি থেকে আমার সাথে রাগ করে যাচ্ছেন,,এ্যা হ্যা

হিয়ার কান্নায় উজান ওর সব রাগ ভুলে গিয়ে অস্থির হয়ে উঠে

উজানঃ কোথায় কোথায় ব্যাথা হচ্ছে বলো আমাকে,,এখানে এখানে__সরি সরি পিচ্চি আর আমি এরকম করবো না,,রাগ আসছিলো তো খুব তাই জন্য আমি,,আর আর এরকম ভুল হবে না

হিয়াঃ এ্যা হ্যা?আমার আমার হাতে ব্যাথা করছে পা জমে যাচ্ছে,,ঘুম পাচ্ছে তার উপর আপনি বকবক করছেন,,আমাকে রাগ দেখিয়ে আমাকে কষ্ট দিচ্ছেন আমি বাবু দুটোকে বিচার দিয়ে দেবো তাদের বাবা খুব খারাপ খুব বাজে

উজান হিয়াকে জড়িয়ে ধরে হিয়ার পুরো মুখে চুমু এঁকে দেয়

উজানঃ আর আমি এরকম করবো না,,আর কোনো কষ্ট হতে দেবো না তোমার,,কোনো কষ্ট না,,সরি এই দেখো কান ধরছি

হিয়াঃ বাহ কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে কেমন দেখো,,ঠিক হয়েছে দিয়েছি ইচ্ছে মতো ডোজ,,এখনো আগের মতোই আছে আমার একটু কষ্ট সহ্য করতে পারে না,,আপনি কি চালাক আমি তার চাইতেও মহা চালাক শাহরিয়ার সাহেব?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here