#পঞ্চভূজ_তারা!
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ২৮+২৯
২ জন লোক মেঝেতে পরে আছে আর হাপাচ্ছে।আর সাদু ওদের দিক তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিচ্ছে।একটা লোক কোনরকম ফোন বের করে কাউকে কল লাগালো।
-” হ্যালো বস!
-“হ্যা! বল শাহিন।”
-” বস আপনি আসেন এই মেয়েকে আমাদের পক্ষে দেখে রাখা সম্ভব না।এইটা মেয়ে না এলিয়েন।ভাই মাফ চাই।”
বলেই ঠুস করে পরে রইলো শাহিন।এদিকে ফোনের ওপাশের লোকটি হ্যালো হ্যালো করে যাচ্ছেন।শেষ মেষ কোন জবাব না পেয়ে ফোন কেটে দিলো লোকটি।
-” নাহ! আমার ভূল হয়েছে এই মেয়েকে ওদের কাছে রেখে আসায়।এই মেয়ের যে মাথার সব গুলো তার ছেঁড়া তা তো আমি ভালো করেই জানি।সিট!”
লোকটি পাশের টেবিলে লাত্থি মারলো।
ফ্ল্যাশব্যাক—–
লোকটি যাওয়ার আগে সাদুকে দেখে রাখার জন্যে দুটো লোক দিয়ে গেছে।আর বলেছে সাদুর খেয়াল রাখতে। সাদূর যেন বিন্দু মাত্র ক্ষতি নাহয়।আর ও যা চায় তাই দিতে শুধু যেন এখান থেকে না পালাতে পারে।এর হেরফের হলে দুটোকে উড়িয়ে দেবে বলেছে।লোকগুলোও সে অনুযায়ী কাজ করতে লাগলো।
-” ম্যাম খেয়ে নিন প্লিজ।” খাবারের প্লেট এগিয়ে দিলো শাহিন।
-“খোচ্চর বেডা কোনহানের আমি কি তোর মাথা দিয়ে খাবো আমার হাত বাধা চোখে দেখোস না।”চোখ রাঙিয়ে বললো সাদু।
-” কিন্তু আপনার হাত খুলে দিলে তো আপনি পালিয়ে যাবেন।”
-” আমি এতো ভীতু না যে পালিয়ে যাবো।আমার ভাইয়ারা আর আমার স্বামি আমাকে না নিতে আসা পর্যন্ত আমি কোথাও যাবো না।আর তোদের বস কে ক্যালানি না খাওয়ানোর পর্যন্ত আমি তো কোথাও যাবো না।” বাকা হেসে বললো সাদু।
লোকটি কিছু একটা ভেবে সাদু’র হাতের বাধন খুলে দিলো।সাদু আয়েস করে খাবার খেয়ে আবারো গিয়ে চেয়ারে বসে পড়লো।শাহিন আবারো ওকে বাধঁতে নিলে সাদু বললো,
-” ওই বেডা আমারে আবার বাঁধতাছিস কেন? বললাম না আমি পালাবো না।অনেকক্ষন বেঁধে রেখেছিস এইবার একটু শান্তি মতো বসতে দে।”
শাহিন বোকার মতো মাথা নাড়ালো।সাদু কিছুক্ষন বসে থেকে আবারো চিল্লিয়ে উঠলো,
-” কোথায় কেউ কি আছে?আমি বোর হয়ে গেছি একটু ইন্টারটেইনমেন্ট লাগবে।”
শাহিন ঘাবড়ে গেলো আমতা আমতা করে বলে,
-” মেম কি করবো বলুন?”
-” সাউন্ড বক্স নিয়ে আসো। ”
-“আচ্ছা মেম।(চিল্লিয়ে) এই রাকিব সাউন্ড বক্স নিয়ে আয়।”
রাকিব ছেলেটি কিছুখনের মাজেই সাউন্ড বক্স নিয়ে আসলো।সাদু সাউন্ড বক্স ওন করে বলে,
-” গাধারা আমি গান চালাবো কি দিয়ে ফোন দে।”
-” সরি মেম বাট আপনাকে ফোন দেওয়া যাবে না।এইটার জন্যে বস অনুমতি দেয় নাই।”
-” তাহলে আমি গান বাজাবো কি দিয়ে?” রাগী গলায় বললো সাদু।
শাহিন কিছু একটা ভেবে রাকিব কে কিছু একটা আনতে বললো।কিছুক্ষন পর সাদু দেখে রাকিবের হাতে একটা ল্যাপটপ।রাকিব ল্যাপটপটি এনে সাদুকে এনে দিলো।সাদু একটা হাসি দিলো। সাদুকে হাসতে দেখে ওরাও হাসলো।আসলে দুজনি একটু বোকা টাইপের তাই সাদু’র একটু সুবিধা হচ্ছে এদের দিয়ে যা মন চায় করানো যায়।
সাদু ল্যাপটপটি সাউন্ড বক্সের সাথে কানেক্ট করলো।তারপর শয়তানি হাসি দিলো একটা।ল্যাপটপটি ক্লিক করতেই গান বাজতে লাগলো
?তুমি হলে বাবু
আমি তোমার হিরো,
করলে তোমায় টেলিফোন
বলবে তুমি বাবু খাইছো ?
গান বাজছে রাকিব আর শাহিন চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।সাদু আবারো একটা কিউট হাসি দিয়ে বললো,
-” চলো নাচ শুরু করো।”
রাকিব আর শাহিন চিল্লিয়ে বলে,
-” কিহহহহ! আমরা আর এই গানের নাচবো?”
-” হ্যা চলো নাচো!”
-” কোনদিন না!” চিল্লিয়ে।
সাদু আশে পাশে তাকালো তারপর একটা ছিড়া রিকশার টায়ার দেখলো ওটা হাতে নিয়ে ফ্লোড়ে বারি দিয়ে বললো,
-” নাচ বাসান্তি, থুক্কু রাকিব শাহিন নাচ।”
শাহিন হাত দিয়ে করুন স্বরে বললো,
-” বাসান্তি থুক্কু রাকিব ইন কু…”
শাহিন বলার আগেই সাদু চোখ রাঙালো তা দেখে শাহিন আবার ঘাবড়ে গিয়ে আবার বলে,,
-” রাকিব ইন ম্যেম কে সামনে মাত নাচনা।”
সাদু বেল্ট দিয়ে আবারো বারি দিয়ে চিল্লিয়ে উঠে,
-” আরে কিউ নেহি নাচেগা, আমাকে কিডন্যাপ করেছিস এখন নাচ। না নাচলে তোদের বস আসলে আমি বিচার দিবো যে তোরা আমাকে খেতে দিস নাই।”
রাকিব ভয়ে ভয়ে বলে
-” নাচ্ছি তো নাচ্ছি।”
শাহিন আর রাকিব একে অপরের দিকে তাকিয়ে কোমড় দুলিয়ে নাচ আরম্ভ করে দিলো।
?তুমি হলে বাবু
আমি তোমার হিরো,
করলে তোমায় টেলিফোন
বলবে তুমি বাবু খাইছো ?
সাদু ওদের নাচ দেখার মাজে ল্যাপটপের লোকেশন ওন করে মনিরের ফোনে টেক্সট করে দিলো যে এই জায়গার লোকেশন ট্র্যাকিং করে এখানে আসতে।বলেই আবারো ওদের দিকে নজর দিলো ভালোই লাগছে ওদের নাচ দেখতে লাগলো।শাহিন আর রাকিব নাচতেই আছে।
আর সাদু একটা গান শেষ হতে আর একটা গান দিচ্ছে।
? ওহ বেবি কাম কাম কাম কাম কাম টু মি?
?ওহ বেবি কাম কাম কাম কাম কাম টু মি?
-” ম্যেম আর পারছি না।”নাচতে নাচতে বললো শাহিন।
-” নাচবি না আবারো বলছিস।দ্বারা তোদের বসে আসলে বিচার দিবো।” বললো সাদু।
-” নাহ নাহ! এই শাহিন এতো বেশি কথা বলিস কেন? নাচতে থাক।” শাহিনকে ধাক্কা দিয়ে বলে উঠে রাকিব।
?আমি তোমাদের হিরো আলম আমি তোমাদের হিরো আলম,এইভাবেই তোমাদের ভালোবাসা চাই সারাজীবন?
-” ওয়াহ! ওয়াহ! ওয়াট আ হিরো আলম ড্যান্স।এক্কেবারে ঝাক্কাস?।” সাদু হাতি তালি দিয়ে বললো।
সাদু এবার হাতের ইশারায় শাহিনকে ডাক দিলো।শাহিন নেচে হাপাতে হাপাতে সাদুর কাছে আসতেই সাদু ‘হাইয়ায়ায়ায়া’ বলে শাহিনের মেইন পয়েন্ট এ লাত্থি মেরে দিলো। শাহিন নিচে ধপাস করে পড়ে গেলো।রাকিব ওকে ধরতে আসলেই সাদু চিল্লিয়ে বলে,
-” ডোন্ট ডেয়ার টু টাচ হিম।আদারওয়াইজ তোর ও অবস্থা এমন হবে নাচতে থাক।”
রাকিব ভয় পেয়ে আবারো নাচা শুরু করে দিলো।
এদিকে শাহিন কাতরাতে কাতরাতে বললো,
-” দাড়াতে পারি না আমি আর কোনমতে
মেইন পয়েন্টে যে হাহাকার করে।?”
???
মনির যখন ড্রাইভ করতে ব্যস্ত তখনি ওর ফোনে মেসেজ টোন বেজে উঠায় মনির গাড়ি ধামিয়ে দিলো।মেসেজ ওপেন করে দেখে সাদু ওকে মেসেজ করেছে।খুশিতে আত্নহারা হয়ে ও তারাহুরো করতে নিলো।ওকে এরকম করতে দেখে আরিফ বলে,
-” কি হয়েছে দোস্ত তোকে এতো হাইপার লাগছে কেন?”
-” সাদু আমাকে মেসেজ দিয়েছে। এখন আমি আফরান, নিবির আর বাকিদের ফোন করে বলে দেই যেন এই লোকেশন ট্র্যাকিং করে সে অনুযায়ী চলে আসতে.”
-” কিহ! সাদু মেসেজ দিয়েছে জলদি কর ওদের ইনফোর্ম করে দে।”
মনির সহমত জানিয়ে সবাইকে ফোন করে বলে দিলো।
বর্তমান,
এদিকে যে লোকটি সাদুকে কিডন্যাপ করেছে সে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে পৌছালো সে গোডাউনে।গোডাউনে এসে গেট খুলে দেখে হিরো আলমের গান বাজছে আর গানের তালে তালে নাচ্ছে রাকিব আর শাহিন নিচে শুয়ে কাতরাচ্ছে আর সাদু চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে তা দেখছে আর হাতে তালি দিচ্ছে।
লোকটি চিল্লিয়ে বললো,
-” কি হচ্ছে এগুলো কি করছিস তোরা?
রাকিব নাচতে নাচতে বলে,
-“স্যার ড্যান্স হচ্ছে! ”
-” সেটা তো আমি দেখতেই পাচ্ছি গাধা।নাচ থামা।”
লোকটির বলতে দেরি রাকিবের ধপাস করে সুয়ে পড়তে দেরি নেই।তাও পড়লো একেবারে শাহিনের উপর। শাহিন ব্যাথা পেয়ে আরো মুচরাতে লাগলো।
লোকটি আবার বলে,
-” শাহিন তুই এমন করছিস কেন তোর আবার কি হয়েছে?”
-” বস মেইন পয়েন্টে হাহাকার করে।”
-” কিহ? কি বলছিস এইগুলো?”
সাদু এইবার উঠে দাড়ালো। একটা আয়েশি দিয়ে বলে উঠে,
-” বেশি কিছু না জাস্ট ওর তোতাপাখি লাত্থি দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছি।?।”
-“ওয়াট দ্যা।”
-” তোমার গেম তো ওভার মি.তানিম কারন আর একটু পরেই আমার ভাইয়ারা আর আমার স্বামি মনির এসে তোকে রাম ধোলাই দিবে।”
তানিম তেড়ে এসে বললো,
-” কি করেছিস তুই?আর ওরাই বা এখানে ঠিকানা পাবে কোত্থেকে?”
সাদু একটা বাকা হাসি দিয়ে বললো,
-” জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ লুচু পোলা তানিম্মা ঘানিম্মা।”
তানিম রেগে আবারো সাদুকে বেধে রাখলো।আর সাদু তারপরেও হাসতে লাগলো।কারন একটু পরেই তানিম যে গরুতে পরিনত হবে তা ও ভালোভাবেই জানে।তবে সাদুর ভালোই লাগছে কিডন্যাপ হওয়াতে ফ্রিতে অনেক বিনোদন এঞ্জয় করলো।
চলবে,,,
ভূল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।কেমন হয়েছে জানাবেন।
আমি চেষ্টা করবো দ্রুত আর এক পার্ট দেওয়ার।
#পঞ্চভূজ_তারা
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ২৯
-” তোর যে কি হাল হবে তা ভেবেই আমার হাসি পাচ্ছে।” বলেই হাসিতে ফেটে পড়লো সাদু।
তানিম তেড়ে আসলো সাদুর চোয়াল শক্ত করে চেপে ধরে হুংকার দিয়ে বললো,
-” তোকে নিয়ে আমি এক্ষুনি এখান থেকে চলে যাবো।”
-” তা তুই কখন পারবি না।”
-” দেখা যাক?”
তানিম সাদুর হাতের আর পায়ের বাঁধন খুলে দিলো। হাত পা ছাড়া পেয়েই সাদু তানিমের নাক বরাবর ঘুশি মেরে দিলো।আকস্মিক আক্রমনে তানিম ব্যালেন্স রাখতে না পেরে নিচে ধপাস করে পড়ে গেলো। সাদু’র পরিকল্পনা সে এখান থেকে যাবে না। যে করেই হোক তানিম কে নিয়ে ওর এইখানেই থাকা লাগবে।তানিম নিজের নাক চেপে ধরে রইলো কতোক্ষন প্রচুর ব্যাথা পেয়েছে সে।তারপর ধীরে ধীরে উঠে দাড়ালো।সাদু’র দিক তাকিয়ে বললো,
-” তোকে তো আজ আমি মেরেই ফেলবো।আমাকে আঘাত করিস?”
তানিম এগোতেই সাদু উঠে দৌড়ে অন্যপাশে চলে গেলো।তানিম আবারো আগালে সাদু আবারো অন্য দিকে চলে গেলো।এইভাবে তানিম যতোবার সাদুকে ধরতে যায় সাদু এক এক জায়গায় সরে যায়।এইভাবে দৌড়াতে গিয়ে সাদু হঠাৎ করে হোচট খেয়ে পরে যায়।তা দেখে তানিম দ্রুত গতিতে গিয়ে সাদুকে ধরে ফেলে।সাদু’র চুল মুঠি ধরে টেনে তুলে ওকে।এইদিকে সাদু ব্যাথায় কুকিয়ে উঠে,চোখে জল চলে এসেছে ওর।
-“খুব তো দৌড়াচ্ছিলি এখন আমার হাত থেকে তোকে কে বাচাবে বল?”
বলেই সাদু’কে টেনে একটা রুমে গিয়ে বিছানায় ছুড়ে মারলো।আর নিজের শার্ট খুলতে লাগলো তানিম।ব্যাপারটা বুজতে পেরেই আতকে উঠে সাদু।দ্রুত উঠে নিজেকে বারান্দায় গিয়ে দরজা লক করতে নিতেই তানিম এসে আটকে ধরে দরজা।সাদু প্রচন্ড শক্তি দিয়েও পারলো না সাদু তানিমের সাথে।তানিম ওকে ঠেলে ভীতরে ডুকে সাদু’কে জোড়ে একটা থাপ্পর দেয়।সাদু ছিটকে গিয়ে দেয়ালে বারি খায়।মাথায় প্রচন্ড আঘাতে ঝিম ধরে থাকে সাদু।তানিম সাদু’র সামনে বসে বাকা হেসে বললো,
-” কি বেবি আগুন শেষ?এতো তেজ এক নিমিষেই নিভে গেলো।ভেবেছিলাম তোকে বিয়ে করে তারপর ভোগ করবো।কিন্তু তুই তো সোজা কথার মানুষ না তোকে বাকা ভাবেই বুজানো লাগে।তো এখন তোর সাথে যা হবে তার জন্যে একমাত্র দ্বায়ী থাকবি তুই!”
তানিম সাদুকে আবারো টেনে তুলে। ওকে টানতে টানতে আবারো বিছানায় নিয়ে ফেললো।সাদু নিজেকে বাচানোর আবারো চেষ্টা করতে তানিম দড়ি এনে ওর হাত পা বাধে দেয় আবারো।সাদু’র চোখ দিয়ে টপাটপ অস্রু ঝরতে লাগলো।ও কি পারবে না নিজের সবচেয়ে বড় সম্পদ নিজের সম্মান রক্ষা করতে পারবে না।ও কি তবে হেরে গেলো?ও কিভাবে নিজেকে বাচাঁবে এই জানোয়ার এর হাত থেকে।ও যে সইতে পারবে না এতো বড় ধাক্কা।ওর শরীরে যে একমাত্র মনিরের স্পর্শ থাকবে।সেখানে অন্যকারো স্পর্শ ও নিতে পারবে না। নাহ নাহ এটা হতে পারবে নাহ।এই জানোয়ারের হাতে নিজেকে বিলীন করে দেওয়ার আগে।নিজেই নিজেকে শেষ করে দেবে ও।হ্যা এটাই করবে।
♣️
এদিকে সাদু’র কথামতো লোকেশন ট্র্যাকিং করে মনির, আফরান,মেরাজ,আরিফ,নিবির সেখানে পৌছে যায়।গেটের সামনে যতো লোক ছিলো তাদের ইচ্ছামতো ধোলাই দিয়ে ভীতরে ডুকে ওরা।সেখানে প্রতিটা রুম খুজতে লাগলো ওরা।মনির খুজতে খুজতে সেই রুমে চোখ পড়ে যেখানে সাদু’কে বেধেঁ রাখা হয়েছিলো।দেখে নিচে শাহিন আর রাকিব গড়াগড়ি খাচ্ছে।মনির আফরানদের ডাক দিয়ে জলদি শাহিনদের কাছে গিয়ে এক লাত্থি দিয়ে ওদের জিজ্ঞেস করে,
-” সত্যি করে বল উম্মি কোথায়?”
ওরা কিছু বলছে না দেখে মনির ওদের এলোপাথাড়ি লাত্থি দিতে লাগলো।আফরান রা এসে এইসব দেখে জলদি গিয়ে মনির কে আটকালো নাহলে বেচারাদের অবস্থা কাহিল হয়ে যেতো।আফরান অত্যন্ত গম্ভীর গলায় বললো,
-” দেখ ভালোই বল পিকু মানে আমার বোন সাদু কোথায়?”
-” বলছিলাম এই তো আমার যে অবস্থা বলতে কষ্ট হয় না।তার এগেই তো ইনি(মনিরকে উদ্দেশ্য করে) মারা শুরু করলো।শুধু মার ওই খাচ্ছি কতোক্ষন ধরে ওই মেয়েটা কতোক্ষন আগে যা করলো আল্লাহ্।” ব্যাথায় কাতরাতে কাতরাতে বললো শাহিন।
-” কি করেছে তোমাকে?” প্রশ্ন করলো মেরাজ।
-” শাহিন ভাই দাড়াতে পারে না অনেক চেষ্টা করে,
মেইন পয়েন্টে তার হাহাকার করে।”
-” এ্যাাাাাাা!” সবাই অবাক।
-” কি বলছিস ক্লিয়ার করে বল?” রেগে লাল মনির।
শাহিন আর রাকিব একে একে সব খুলে বললো সাদু ওদের সাথে কি কি করেছে।এতো টেন্সনের মাঝেও সবাই হেসে দিলো।
আরিফ বলে,
-” ভাই আসলেই এরা প্রত্যেকটা বান্ধবি এক একটা চিজ। এদের কে কি করবে? উলটো এরাই অন্যদের অবস্থা টাইট করে দেয়।”
মনির তারপরেও চিন্তিত গলায় শাহিনকে জিজ্ঞেস করলো,
-” উম্মি কোথায় এখন জলদি বল?”
-” স্যার ম্যাম কে ওই রুমটায় নিয়ে গেছে।”
শাহিনের বলতে দেরি সবার সেদিকে যেতে দেরি নেই।
♣️
এদিকে তানিম সাদু’র কাছে আসতে নিলেই সাদু নিজের সর্বশক্তি দিয়ে তানিমকে ধাক্কা দিয়ে দরজার কাছে চলে গেলো।দরজা খুলতে নিলেই তানিম পিছন থেকে সাদু’র ঘাড় চেপে ধরলো।
সাদু ব্যাথায় ‘ আহহহ’ করে শব্দ করে উঠলো।
এদিক মনির সাদু’র আওয়াজ পেয়ে দ্রুত পায়ে এসে দরজা ধাক্কাতে লাগলো।আফরানরাও ওকে হেল্প করলো অবশেষে দরজা খুলে তারা যা দেখলো একেক ওদের সবার মাথায় রক্ত চেপে গেলো।
তানিম একহাত দিয়ে সাদু’র ঘাড় চেপে ধরে রেখেছে আর আর একহাত দিয়ে ওর ওরনা টেনে ধরে রেখেছে।সাদু ওর ওরনা আকড়ে ধরে আছে।ওর চোখে পানি,শরীর যে কাপছে স্পষ্ট বুজা যাচ্ছে,ঠোঁট দিয়ে রক্ত ঝরছে,মাথায় এক সাইড ফুলে আছে বুজাই যাচ্ছে ভীষন ব্যাথা পেয়েছে ও।এই দৃষ্য দেখে সয্য করতে পারলো না আফরান আর নিবির, মনির।মনিরের নিজের সহধর্মিনীর এই অবস্থা দেখে রাগে তেড়ে গিয়ে তানিম কে সাদু থেকে ছুটিয়েই ইচ্ছামতো মারতে লাগলো।আফরান আর নিবির ও তাল মেলালো ইচ্চামতো মারতে লাগলো।আরিফ আর মেরাজ গিয়ে সাদু’কে ধরে বিছানায় বসালো।আরিফ নিজের জ্যাকেট খুলে সাদু’কে পড়িয়ে দিলো,আর মেরাজ পানি এনে সাদু’কে খাইয়ে দিলো,তারপর এক সাইড দিয়ে জড়িয়ে ধরার মতো করে ধরে বলে,
-” ভয় পাস না বোন।তোর চার চারটা ভাই আছে। তোর কিচ্ছু হবে না।”
সাদু ছল ছল চোখে তাকালো আরিফ আর মেরাজের দিকে।কে বলেছে রক্তের সম্পর্ক ছাড়া কেউ আপন হয় না। তাকে টেনেটুনে এনে আরিফ আর মেরাজকে দেখানো উচিত।সাদু ঠুকড়ে কেদে উঠে মেরাজকে জড়িয়ে ধরলো।আরিফ ও সাদু’র মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
-” কাদিঁস না! দেখ আমরা এসে পড়েছি তো তোর কিচ্ছু হবে নাহ।”
সাদু কান্নামাখা চোখে আরিফের দিক তাকালো।
-” ভাইয়া একে মেরে ফেলবে একদম।এ এ আমার সম্মান নিয়ে…”
আর বলতে পারলো ভীষন কষ্ট হচ্ছে ওর।আজ মনির’রা যদি সময় মতো না পৌছাতো তবে কি হতো ভাবতেই শরীর ঠান্ডা হয়ে আসতে চাচ্ছে সাদু’র।
আরিফ আর মেরাজ বহু কষ্টে সাদু’কে ঠান্ডা করালো।তারপর পুলিশকে ফোন করলো কিছুক্ষন পুলিশ এসে তানিম আর ওর সাথে যারা ছিলো সবাইকে ধরে নিয়ে চলে গেলো।
পুলিশ যাওয়ার পর আফরান আর নিবির এসে সাদু’র পাশে দাড়ালো।বোনকে এইভাবে দেখে কলিজা কেপে উঠলো দুজনের।ওদের আদরের বোনের সাথে এই শয়তানটা কি অত্যাচার করেছে।আফরান কাপাকাপা হাতে বোনকে জড়িয়ে ধরে বললো,
-” বোন বোনরে মাফ করেদিস আমাকে! তোর ভাই তোকে দেখে রাখতে পারেনি।”
-” এইসব কি বলছো ভাইয়া।তোর কোন দোষ নেই।আমার ভাগ্যে এটাই লিখা ছিলো তাই এটাই হয়েছে।তবে আল্লাহ্ ভালো মানুষের সাথে কখনো খারাপ কিছু হতে দেয় না।তাই তো তোমাদের সঠিক সময়ে পাঠিয়ে দিয়েছে।”
সাদু তাকিয়ে দেখে নিবিরের চোখে পানি টলমল করছে।সাদু করুন চোখে তাকায় ওর দিকে।ওর এই ভাই টা ভিষন নরম দিলের। আর সাদু’র বেলায় তো কথাই নাই।সাদু’র কিছু হলে কেঁদে কেটে অস্থির হয়ে যায়।সাদু ছলছল চোখ হেসে নিবিরের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো।বোনের সাপোর্ট পেয়ে নিবির ঝাপটে ধরলো ওকে।সাদু দুষ্টুমি করে বললো,
-” আরে কি করছিস মেরে ফেলবি না-কি আমাকে?”
সাদু’র কথায় নিবির রেগে তাকালো ওর দিকে।
-” কি সব বাজে কথা বলছিস?একে থাপ্রিয়ে দাত ফেলে দেবো বেয়াদ্দপ।”
নিবিরের ধমকে সাদু ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলো। আসলে দুষ্টুমি করে কাঁদছে।ওকে এইভাবে কাঁদতে দেখে দু ভাই অস্থির হয়ে গেলো।আফরান নিবির ধমকে বললো,
-” নিবির তুইও না কেন ওকে শুধু শুধু ধমক দিলি?”
-” আমি কি করবো ও মরার কথা কেন বললো?”
আবারো সাদু’র দিকে করুন চোখে তাকিয়ে বললো,
-” পিকু কান্না থামা নাহলে কিন্তু আমিও কেঁদে দেবো?”
সাদু তাকিয়ে দেখে অবস্থা বেগতিক।সত্যি নিবির যেকোন সময় কেদে দিবে।তাই বললো,
-” সরি সরি সরি মজা করছিলাম।”
দুভাই বোনের এমন বাচ্চামি দেখে হেসে দিলো।তারপর ওরা সাদু’কে নিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো।বাড়িতে গিয়ে সাদু’র বাবা,মা কতোক্ষন মেয়েকে ধরে কাদঁলেন। তারপর নূর,আলিফা,আলিশা,মিম ওরা চারজন তো পারলে সাদু’কে ভর্তা করে ফেলে এক জন একজন বাধে ওকে এসে জড়িয়ে ধরে রাখছে।আফরান’রা সাদু’র অবস্থা বুজতে পেরে সবাই মুখ টিপে হাসছে।এরা সবাই যে একটা পাগল তা তো ওরা আগে থেকেই জানে।অবশেষে বহু কষ্টে রেহাই পায় সাদু।তারপর সবাই সাদু আর মনিরকে একা সময় কাটাতে একলা রুমে রেখে চলে যায়।কারন সবাই দেখেছে মনির সেই কখন থেকে ছটফট করছিলো সাদু’র কাছে আসার জন্যে।আফরান মনিরকে আজ রাত সাদু’র কাছেই থাকতে বলে গেছে।সবাই চলে যাওয়ার পর মনির দরজা লক করে সাদু’র কাছে এসে বসলো।
।
।
।
চলবে,,,,,,,,
ভূল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।আজ অনেক বড় করে দিয়েছি?