#Ragging_To_Loving__2
#পর্বঃ- ২৪ (১ম অংশ)
#রিধিরা_নূর
পার্লি, নূর দাদুর বাসায় গল্পে জুড়ে আছে। পার্লি ল্যাপটপে কিছু একটা দেখছে। পাশে বসে নূরও উঁকিঝুকি দিয়ে দেখছে। পর্যটন এলাকার দৃশ্য দেখছে। হঠাৎ মাথা ঘুরান্তি দিয়ে পার্লি চিৎপটাং হয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়ল। ল্যাপটপ নাড়া দিতেই নূর তড়িঘড়ি করে ধরে ফেলে। ভ্রু কুচকে পার্লির দিকে তাকায়।
পার্লি — চট্টগ্রামেই কতগুলো পর্যটন এলাকা রয়েছে। না জানি বাংলাদেশে কত জায়গা আছে।
নূর — হঠাৎ করে তোমার ট্রাভেলের ভূত চাপলো কেন? ভার্সিটি থেকে ফেরার পর থেকে দেখছি বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে কোথায় কোথায় পর্যটন এলাকা আছে তা গুগলে সার্চ দিয়ে দেখছ। হঠাৎ হলো কি তোমার?
পার্লি — না। তেমন কিছু না।
নূর — ওহ হ্যাঁ! আমাকে কেন বলবে? আমি কে তোমার? মাত্রই কিছুদিনের পরিচয়। এই তো ব্যস। (কৃত্রিম হাসি দিল)
পার্লি — শুরু হলো ঢং। আসলে ছোট থেকে ট্রাভেলের শখ। সিঙ্গাপুরে অনেক জায়গায় ট্রাভেল করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের মতো মুগ্ধতা আর কোথাও নেই। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আমি মুগ্ধ। গুগলে দেখেই লোভ সামলাতে পারছি না। না জানি সামনে থেকে কত সুন্দর হবে। আজ ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে যখন আমরা চা খেতে টং-এর দোকানে বসেছিলাম তখন একটি ট্যুরিস্ট বাস দেখেছিলাম। বানরের বন টাইপ কিছু একটা জায়গায়। দৃশ্য দেখে মনে ইচ্ছা জাগলো যাওয়ার।
নূর হাসছে। পার্লি সরু দৃষ্টিতে তাকাল। সে একটা গম্ভীর বিষয়ে কথা বলছে আর নূর হাসছে?
নূর — ওটা বানরের বন না। বান্দরবান। বেশ সুন্দর জায়গা। নীলগিরি, নীলাচল, নাফাখুম আরও অনেক জায়গা নাম মনে নেই। এছাড়াও খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, রাঙামাটি আরও অনেক পর্যটন এলাকা রয়েছে চট্টগ্রামে। আমারও স্বপ্ন ভ্রমণ করা। পোড়াকপাল আমার চট্টগ্রামে থেকেও এখনো কোথাও যাওয়া হলো না।
পার্লি — আমি যাব সব জায়গায়। আমি সিঙ্গাপুরে আর যাব না। পুরো বাংলাদেশ ভ্রমণ করব।
নূর — তার জন্য আমার কাছে একটা প্লান আছে।
পার্লি — কি? কি প্লান? প্লিজ বল তাড়াতাড়ি। (উত্তেজিত হয়ে)
নূর — তুমি না বাংলাদেশের কাউকে ধরে বিয়ে করে ফেল। এরপর বরকে নিয়ে আজীবন ট্রাভেল করতে থাক। মাঝখানে একটু আধটু বিরতি রেখো।
নূর দুষ্টু হাসি দিল। পার্লি বুঝতে পেরে ইচ্ছে মতো কিছুক্ষণ ধোলাই দিল। পরক্ষণে কি যেন ভেবে মুচকি হাসি দিল। হাসিটা নূরের চোখে এড়ালো না। নূর হুড়মুড়িয়ে পার্লিকে খোঁচা দিতে লাগলো।
নূর — সত্যিই কি কাউকে পেয়েছ?
পার্লি — তেমন কিছু না। (জামা খামচে ধরল।)
নূর — তেমন কিছু না হলে এভাবে ভয় পাচ্ছ কেন? নিজের অস্থিরতা দমিয়ে রাখতে জামা খামচে ধরেছ। (পার্লি জামা ছেড়ে অন্যপাশে মুখ ফিরিয়ে নিল।) গার্লস কানেকশন। মেয়েরা নাকি একে অপরের খুশি দেখে জ্বলে৷ কিন্তু তাদের মধ্যে আরেকটি বিশেষ গুণ আছে। তা হলো একে অপরের মন বোঝা। একজন মেয়ে অন্য মেয়ের মনের খবর খুব সহজেই বুঝতে পারে।
পার্লি — তুমি যেমন ভাবছ তেমন কিছু না। মাত্র দুই দিন আলাপ হলো।
নূর — দুই দিন! বাব্বাহ্! তা কে সে? নাম কি তার? আমি কি তাকে চিনি? কোথায় দেখা হয়েছে?
পার্লি — স্টপ। ব্রেক মার। ওর নাম আ…. (হঠাৎ দাদী আসায় থেমে গেল)
দাদী — নূর, পায়েলি খেতে এসো।
পার্লি — দাদী। পার্লি।
দাদী — ওই একটাই। চল এবার।
দাদী তাদের সাথে করে নিয়ে গেল। নূর ভাবছে “আ..?” আ তে কি নাম হতে পারে? খাবার শেষে নূর পার্লির সাথেই রয়ে গেল। সাথে করে চিপস নিল।
নূর — মিউজিক থুক্কু স্টার্ট। কাহিনী বল।
“”যেদিন পার্লির ফ্লাইট ঢাকায় ল্যান্ড হয়। সেদিন ঢাকায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চট্টগ্রামের বাসে উঠে। দাদু দাদী মাঝ বরাবর সিটে বসে। পার্লির সিট পড়ে তাদের পিছনে। সে পথটা উপভোগ করতে চায় জানালার পাশে বসে। কিন্তু জানালার পাশে আগে থেকেই অন্য একজন বসা ছিল এক তরুণ। প্যাডনোটে কিছু লিখছে। পরক্ষণে ফোনের গ্যালারিতে কিছু ছবি বের করল। প্রাকৃতিক কিছু দৃশ্য। পাহাড়, পর্বত, ঝর্ণা।
ছেলেটা — আমি কিছু ছবি দিচ্ছি সেগুলো ব্যানারে দিও।
এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে পার্লির মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল,
পার্লি — ওয়াও! (পরক্ষণে খেয়াল হলো) সরি। আসলে বাইরে তাকাতে গিয়ে ছবিগুলোর উপর নজর পড়ল। এটা কোন জায়গা?
ছেলেটা — বান্দরবান। চট্টগ্রামে অবস্থিত।
পার্লি — ওহ্! আর ব্যানার কেন?
ছেলেটা — আমাদের একটি অফিশিয়াল ট্যুর টিম রয়েছে। কোন কোম্পানির অফিশিয়াল ট্যুর আয়োজন করার জন্য আমাদের টিম কাজ করে। আগামী মাসে একটি প্রাইভেট কোম্পানির কলিগদের জন্য ট্যুর আয়োজন করা হয়েছে। তাতে আমাদের টিম কাজ করছে। এবং তার দায়ভার আমার কাঁধে।
পার্লি — ওহ্!
পুরো রাস্তায় দুজনের মধ্যে বেশ আলাপ আলোচনা হলো। তার সব কিছু বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে। পার্লি যত শুনছে ততই মুগ্ধ হচ্ছে।
অবশেষে চার ঘন্টার যাত্রা অতিক্রম করে চট্টগ্রাম পৌঁছালো। দাদী, দাদু বাস থেকে লাগেজ নামাতে ব্যস্ত। পার্লি এবং ছেলেটা বাস থেকে নেমে পড়ল।
পার্লি — অনেক্ষণ আলাপ করলাম। নাইচ টু মিট ইউ। (হাত বাড়িয়ে।) আমি পার্লি।
ছেলেটা — নাইচ টু মিট ইউ টু। (হাত মিলালো) আরফি রেজওয়ান। (ফোন বেজে উঠল) ওকে বাই দ্যান। (চলে গেল)
এভাবে হলো প্রথম দেখে প্রথম আলাপ। “”
নূর — বাহ্ দারুণ তো। একেবারে সিনেমার মতো। দ্বিতীয় আলাপ কীভাবে হলো?
পার্লি — আজ ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে যখন চায়ের দোকানে বসেছিলাম তখন ট্যুরিস্ট বাস দেখি। ব্যানার লাগানো। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো ব্যানারের ছবিগুলো আরফির ফোনে দেখা সেই ছবি। তোমার মনে আছে আমি ওয়াশরুমের নাম করে বেরিয়ে ছিলাম। আসলে তখন আমি ওই বাসের কাছেই গিয়েছিলাম। সেখানে দ্বিতীয় বারের মতো আরফির সঙ্গে দেখা হয়।
চলবে
।
বিঃদ্রঃ ????? copy-paste করতে গিয়ে অর্ধেক cut করে ফেলছি। আজকে এই অংশটুকু ম্যানেজ করে নিন। বাকি অংশ রাতে দিব। ???????????????????????