#এক_ফালি_রোদ্দুর?
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম?
#পর্ব:২৭
“আমাদের গাড়ি এসে থামলো একটা সুন্দর বাড়ির সামনে, হয়তো এটাই আফরিন আপুর বাড়ি সাথে রিয়াদ ভাইয়ারও,,প্রচুর উওেজনা নিয়ে গাড়ির ভিতর থেকে বের হতে নিলাম আমি, এমন সময় রিয়াদ ভাইয়া আমার হাত ধরে ফেললো’!!ওনার এমন কাজে আমি বিষ্ময় চোখে তাকালাম রিয়াদ ভাইয়ার দিকে’!!যার অর্থ ‘কি হলো?’হয়তো রিয়াদ ভাইয়া আমার চোখের ভাষা বুঝতে পেরেছে তাই বলে উঠলঃ
—-“এত তাড়াহুড়ো কিসের আস্তে আস্তে নাম না?’
—-“ওহ এই ব্যাপার,আচ্ছা ঠিক আছে…
“বলেই আস্তে আস্তে গাড়ি থেকে নামলাম আমি’!!বিশাল বড় বাড়ি আফরিন আপুদের,পুরো বাড়িটাই রেড-ওয়াইট কালারের মিশ্রিত!’বাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে আমার,মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি আমি বাড়িটার দিকে…..
!!
“এদিকে রিয়াদ ভাবছে অন্যকিছু কিছুক্ষন আগে রিয়াদের বলা কথাটা একদমই সত্যি ছিল না,,সে তো কিছুতেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না ইচ্ছে করছে তার তানজুকে একবার জড়িয়ে ধরে মনের কথা বলে দিতে,,আর এ জন্যই নার্ভাসিং এ তানজুর হাতটা ধরে বসে সে’!!তাই তো তানজু যখন তার দিকে প্রশ্নসূচক ভাবে তাকালো তখনই
“এত তাড়াহুড়ো কিসের আস্তে আস্তে নাম না?’এই বাহানার কথা বলে দিল,,রিয়াদ হয়তো একটু বেশি মরিয়া হয়ে পড়েছে তানজুর প্রতি হয়তো এতটা মরিয়া হওয়া তার জন্য উচিত হচ্ছে না,কিন্তু কিছুতেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না সে,তানজুর চোখের দিকে তাকালেই সবটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে তার,কেমন একটা ঘোরে আঁটকে যাচ্ছে রিয়াদ,এমনটা হতে দিলে চলবে না___
‘নিজেই নিজেকে এসব বলে শক্ত করছে রিয়াদ….
“রিয়াদের ভাবনার মাঝখানে তার হাত স্পর্শ করলো কেউ’!!অবশ্য রিয়াদের বুঝতে বাকি নেই এই স্পর্শ কার?’রিয়াদ তাকালো তানজুর দিকে,তানজুর দিকে তাকাতেই বলে উঠল সেঃ
—-“কি হলো ভাইয়া বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি ভিতরে যাবে না…
“তানজুর কথা শুনে হুস আসলো রিয়াদের, সে তো ভুলেই গিয়েছিল তাঁরা বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে!’রিয়াদ কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বললোঃ
—-“ওহ,আমি তো ভুলেই গেছি…
—-“কি হয়েছে বলো তো তোমার, আজ তুমি কেমন একটু বিহেব করছো,সব ঠিক আছে তো ভাইয়া…
“রিয়াদ মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে উঠলঃ
—-“না তেমন কিছুই হয়নি ওই আফরিনের জন্য টেনশন হচ্ছিল আর ঠিকভাবে নাওয়াখাওয়া কিছু হয়নি তো তাই আর কি?’
—-“ওহ,টেনশন করো না ভাইয়া সব ঠিক হয়ে যাবে,আর নাওয়াখাওয়ার জন্য তো আমাদের ভিতরে যেতে হবে তাই না….
—-“হুম, চল তাড়াতাড়ি….
“বলেই রিয়াদ ভাইয়া আমায় রেখেই এগিয়ে গেল, আমিও আর বেশি কিছু না ভেবে চললাম রিয়াদ ভাইয়ার পিছন পিছন….
“বাড়ির দরজার লক খুললো ভাইয়া তারপর আমি আর ভাইয়া একসাথে ঢুকলাম বাড়ির ভিতর,,বাড়ির ভিতর ঢুকতেই আরো অবাক আমি,বাড়ির ভিতরটা বিশাল বড়,,বাহিরের থেকে বাড়ির ভিতরটা আরো বেশি সুন্দর,, বাড়ি দেখে রীতিমতো ক্রাশ খাইছি আমি পুরো বাড়িটাই থাই গ্লাসে ঘেরা…
“আমি আস্তে আস্তে আগে পুরো বাড়ির সাদা পর্দা গুলো সরিয়ে দিলাম,সাথে পুরো রুম আলোতে ভোরে গেল,,একে একে সব পর্দাগুলো সরাতে লাগলাম আমি,,বাড়িটা এতটাই সুন্দর যে আমি পুরো এক্সাইটিং হয়ে গেছি কখন সব পর্দাগুলো সরাবো আর পুরো বাড়িটাকে একসাথে দেখবো….
!!
“এদিকে রিয়াদ তানজুর দিকে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ নয়নে সে বুঝে গেছে তানজুর এই বাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে,রিয়াদের আবারো চোখ আঁটকে যায়, কিন্তু এইবার আর বেশিক্ষণ তাকালো না রিয়াদ,তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে নিয়ে বলে উঠল তানজুকেঃ
—-“আমি আমার রুমে গেলাম তানজু একটু ফ্রেশ হতে হবে…
“ততক্ষণে তানজু পুরো বাড়ির চারদিকে ঘেরা সাদা পর্দাগুলো সরিয়ে ফেলেছে!’রিয়াদের কথা শুনে বললো সেঃ
—-“হুম আমিও ফ্রেশ হবো ভাইয়া…
—-“ঠিক আছে উপরে চলে আয়,আমার পাশেই একটা রুম আছে ওইটায় গিয়ে ফ্রেশ হ তুই…
—-“ঠিক আছে….
“বিনিময়ে রিয়াদ আর কোনো উওর না দিয়ে তাড়াতাড়ি চলে যায়!’এখানে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না তাকে, মাথাটা পুরো হ্যাং হয়ে আছে তার,যখন থেকে তানজুকে দেখেছে সে কেমন যেন সবকিছু উলোট-পালোট লাগছে তার, ভালো মতো সাওয়ার নিতে হবে তাকে,,এসব ভাবতে ভাবতে উপরে চলে যায় রিয়াদ….
__________
“এদিকে আমি পুরো রুমটাকে একবার চোখ বুলালাম,অসম্ভব সুন্দর দেখতে,তুলতুলে নরম সোফা, এলিডি টিভি,সাথে আরো অনেক ফার্নিচার দিয়ে ঘেরা নিচটা,,আফরিন আপু সত্যি খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে তার বাড়িটাকে এসব ভেবে আমাদের ব্যাগগুলো হাতে নিয়ে উপরে উঠতে লাগলাম আমি,জলদি সাওয়ার নিতে হবে আমায়,,
“উপরে উঠতেই কিছুটা এগোতেই একটা রুম আসলো সামনে প্রথমে ভেবেছিলাম এটা হয়তো আমার রুম,কিন্তু দরজা বন্ধ থাকায় বুঝে গেছি এটা রিয়াদ ভাইয়ার রুম,তাই চলে গেলাম আমি পাশের রুমে….
“দরজা খুলতেই বিশাল বড় রুম,সাদা বেড সিটের সাদা তুলতুলে নরম বিছানায়,বিছানার পাশেই সুন্দর একটা আলমারি,,ব্যাগগুলো রেখেই দৌড়ে নরম বিছানায় শুয়ে পরলাম আমি,উফ,কি নরম আমার বেডের থেকেও নরম,হর্ঠাৎই চোখ গেল বেলকনির দিকে তবে আপাতত সেদিকে পা বাড়ালাম না আমি, আগে গোসল করতে হবে তারপর কিছু খাওয়ার জন্য তৈরি করতে হবে,এসব ভেবে চটজলদি একটা ড্রেস বের করে চলে গেলাম আমি ওয়াশরুমে….
“আধ ঘন্টা সাওয়ার নিয়ে….
“কোনো রকম চুল মুছে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম আমি!’
!!
“সিঁড়ির উপর থেকে নিচে নামছে রিয়াদ একটা ব্লাক টাউজার সাথে ফুল হাতার ওয়াইট টিশার্ট পড়েছে সে,চুলগুলো দিয়ে টপ টপ করে পানি পরছে তার!’ পুরো এক ঘন্টার সাওয়ার নিয়েছে রিয়াদ,এখন তার মাথাটা একটু ফ্রেশ লাগছে,হর্ঠাৎই রিয়াদের চোখ যায় কিচেনের দিকে মিষ্টি কালার ফুল হাতার টিশার্ট সাথে ওয়াইট জিন্স পড়ে আছে তানজু, চুলগুলো খোলা,দূর থেকেই বোঝা যাচ্ছে চুলগুলো ভেজা,তানজুকে দেখেই রিয়াদের চোখ আঁটকে যায়,রিয়াদ এক পা এক পা করে এগিয়ে গেল তানজুর দিকে…
“কিছু একটা বানাচ্ছে তানজু….
.
.
.
“আচমকা রিয়াদ ভাইয়াকে আমার সামনে দেখে চমকে উঠলাম আমি’!!হাল্কা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলামঃ
—“ভাইয়া তুমি…
“তানজুর ডাকে হুস আসে রিয়াদের মাথাটা ঝেরে বলে উঠল সেঃ
—-“না তুই কি করছিস এখানে….
—-“ওহ আমি,তেমন কিছুই নয় তোমার জন্য স্যান্ডউইচ বানাচ্ছি….(প্লেটে রাখা স্যান্ডউইচ গুলো দেখিয়ে)
“তানজুর কান্ডে রিয়াদ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললোঃ
—-“কি তুই স্যান্ডউইচ বানাতে পারিস….
—-“তোমার কি আমাকে অকর্ম মনে হয় যে কিছুই পারবো না….
—-“না আসলে তা নয়….
—-“হইছে তোমায় আর কিছু বলতে হবে না তুমি গিয়ে টেবিলে বসো আমি আসছি….
“রিয়াদও আর কথা বাড়ালো না চুপচাপ গিয়ে টেবিলে বসলো’!!রিয়াদ বসতেই তানজু খুব যত্নসহকারে খাবার দিল রিয়াদের সামনে,স্যান্ডউইচ, সাথে ফ্রিজে থাকা কিছু ফল আর ফলের জুস এর বেশি আর কিছু তৈরি করতে পারে নি তানজু…
“রিয়াদ স্যান্ডউইচে এক কামড় দিতে দিতে বললোঃ
—-“সব বুঝলাম কিন্তু তুই এই ব্রেড পেলি কই….
—-“কেন কিচেনেই ছিলো তো….
—-“নিশ্চয়ই আহান এনেছে সকালে এসেছিল তো…
—-“হয়তো জানি না ওসব বাদ দেও তুমি বলো স্যান্ডউইচ কেমন হয়েছে?’
“রিয়াদ স্যান্ডউইচে আরেক কামড় দিতে দিতে বললোঃ
—-“বলবো না…
“রিয়াদ ভাইয়ার কথা শুনে আমি হতাশ হয়ে বললামঃ
—-“কেন ভালো হয় নি….
—-“না…
“সাথে সাথে মনটা খারাপ হয়ে গেল আমার,
—-“ধুর এত কষ্ট করে বানালাম কোনো কাজেই দিলো না…(বিড় বিড় করে)
“রিয়াদ ভাইয়া আমার বিড়বিড়ানি দেখে বলে উঠলঃ
—-“কি বিড়বিড় করছিস বল তো…
—-“না কিছু না,,
—-“একটা কথা বলবো,,
—-“হুম বলো না….
—-“স্যান্ডউইচটা শুধু ভালো না খুব ভালো হইছে….
“সাথে সাথে চোখে মুখ হাসি ফুটে উঠলো আমার’!!খুশি হয়ে বলে উঠলাম আমিঃ
—-“সত্যি,,
—-“হুম…
—-“তাহলে কিছুক্ষন আগে যে বললে…
—-“মজা করছিলাম…
—-“ওহ…?
“হাসলো রিয়াদ ভাইয়া!’এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল রিয়াদের!’ভাইয়া খেতে খেতে বলে উঠলঃ
—-“ফোনটা তোল তো তানজু,,
—-“ঠিক আছে,,
“বলেই রিয়াদ ভাইয়ার ফোনটা হাতে নিলাম আমি টেবিলের উপরই ছিল,উপরে মিষ্টি খালামনি লেখা দেখে বুঝে গেছি আম্মু ফোন করেছে,খুশি মনে ফোনটা তুলে বলে উঠলাম আমিঃ
—-“হ্যালো আম্মু কেমন আছো?’
“অপরপাশে আম্মু হাল্কা চিন্তিতকন্ঠে বলে উঠলঃ
—-“হ্যালো কেমন আছিস?
—-“আমি ভালো আছি তোমরা?’
—-“আমাদের কথা ছাড় ওখানে অবস্থা কি সেটা বল আফরিন কেমন আছে,আর তোর খালামনি বেশি ভেঙে পড়ে নি তো,তোরা ঠিক ভাবে পৌঁছাতে পেরেছিস তো?(উওেজিত কন্ঠ)
—-“আরে আম্মু শান্ত হও সব ঠিক আছে, আফরিন আপুও সুস্থ জ্ঞান ফিরেছে তার, ডাক্তার বলেছে আপু একদম ঠিক আছে,খালি পুরোপুরি সুস্থ হতে একটু টাইম লাগবে..
“আমার কথা শুনে আম্মু সস্থির নিশ্বাস ফেললো’!!তারপর বললোঃ
—-“আফরিন যতক্ষণে পুরোপুরি সুস্থ না হয় ততক্ষণে তুই আর তোর খালামনি ওখানেই থাকিস,আর তোর খালামনিকেও বলিস এদিকটা নিয়প বেশি চিন্তা না করতে আমি আছি….
—-“ঠিক আছে আম্মু তাহলে এখন রাখি পরে কথা হবে….
—-“আচ্ছা রাখ আমি আবার ফোন দিবো ঠিক আছে….
—-“ঠিক আছে আম্মু…
—-“আচ্ছা শোন সবার খেয়াল রাখিস কিন্তু,,
—-“ঠিক আছে আম্মু…
“বলেই ফোনটা কেটে দিলাম আমি!’
||
“এদিকে রিয়াদ তার মতো খাবার খেয়ে চলেছে মা মেয়ের কথা শোনার প্রতি আপাতত তার কোনো ইন্টারেস্ট নেই!’
“তানজু তার মায়ের সাথে কথা বলা শেষ করে চলে আসলো রিয়াদের সামনে তারপর ফোনটা রিয়াদের পাশ দিয়ে রেখে বললোঃ
—-“এই তোমার ফোন ভাইয়া…
“রিয়াদ তার খাওয়া শেষ করে বলে উঠলঃ
—-“হুম খালামনি তো,
—“হুম…
—-“কি কি বললো?’
—-“তেমন কিছুই না আফরিন আপুর কথা জিজ্ঞেস করলো….
—-“ওহ আচ্ছা শোন তুই তাড়াতাড়ি খেয়ে নে তারপর আমরা বের হবো আমরা গেলে মা আর দুলাভাই আসবে হসপিটাল থেকে….
—-“আচ্ছা পাঁচ মিনিট….
“বলেই একটা স্যান্ডউইচের দু – কামড় নিয়ে আর এক গ্লাস জুসে এক চুমুক দিয়ে বললামঃ
—-“আমি এক্ষুনি তৈরি হয়ে আসছি…
—-“তোর খাওয়া শেষ….
—-“হুম…
“বলেই যেই না চলে আসতে নিবো সাথে সাথে রিয়াদ ভাইয়া আমার হাত ধরে টেনে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে বললোঃ
—-“বস এখানে কি খেয়েছিস তুই একটা স্যান্ডউইচ ও পুরোপুরি শেষ করিস নি…
—-”আমার আর খেতে ইচ্ছে করছে না ভাইয়া…
—-“তা বললে তো শুনছি না পুরোপুরি শেষ কর এটা (স্যান্ডউইচ টা এগিয়ে দিয়ে)
—-“বললাম তো আর খেতে ইচ্ছে করছে না…
—-“বুঝেছি তুই এভাবে মানবি না…
“বলেই স্যান্ডউইচটা মুখে ভরে দিলো ভাইয়া,ঘটনাটা হুট করে হয়ে যাওয়াতে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার!’মুখের ভিতর স্যান্ডউইচ রেখে বলে উঠলাম আমিঃ
—“উমম….উমমা…
“রিয়াদ ভাইয়া আমার কথা বুঝতে না পেরে বলে উঠলঃ
—-“কি…
“ভাইয়ার কি শুনে তাড়াতাড়ি স্যান্ডউইচ খেয়ে ফেলে বললাম আমিঃ
—-“এটা কি হলো?
—-“এখন যেটা হবে সেটা…
“বলে আরেকবার স্যান্ডউইচ মুখে ঢুকিয়ে দিল ভাইয়া,রিয়াদ ভাইয়ার কথা আর কাজ দেখে হা হয়ে তাকিয়ে আছি আমি!’যেন সবটা মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে….
“এভাবে সব খাবার খাইয়ে দিল রিয়াদ তানজুকে,আর তানজু প্রথমে ভালো না লাগলেও পরক্ষণেই খুশি হয়ে সবটা খেয়ে নেয় সে’…..
_________________________________________
_____________________
“মাঝখানে কাটলো দু’দিন!’আজ বিকেলে আফরিন আপু আসবে বাসায়,তাই পুরো বাড়ি সুন্দর করে গোছগাছ করছি আমি আর রিয়াদ ভাইয়া,,আফরিন আপুর রুম,সাথে আপির বেবির জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিসপএ কিনেছি আমি আর রিয়াদ ভাইয়া,এখন আফরিন আপুর রুম সাজাতে ব্যস্ত “রিয়াদ তানজুর”…
.
“একটা উচু চেয়ারের উপর উঠে আপির রুমের দেয়ালটাকে পেইন্টিং করছি আমি,সাদা দেয়ালোর উপর গোলাপি রঙের পেইন্টিং…
—-“তানজু তুই পারবি না আমার কাছে দে….
—-“তুমি তো কিছুই জানো না ভাইয়া আমি হলাম পেইন্টিং এর মাস্টার এমন ছবি আঁকবো আফরিন আপুসহ সবাই চমকে যাবে….
—-“যদি পেইন্টিং খারাপ হয় তাহলে তোর কিন্তু খবর আছে….
—-“আরে চাপ নিও না ভাইয়া আমি তো আছি…
“পুরো রুম জুড়ে সুন্দর সুন্দর বেলুন দিয়ে সাজানো,সাথে বেবিদের অসংখ্য খেলনা,বিছানার পাশেই বেবিদের ছোট্ট একটা মিষ্টি কালালের দোলনা,দোলনাটাকেও খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে ‘রিয়াদ আর তানজু’,,,,
.
“কাঁপা কাঁপা হাত নিয়ে তুলিতে রং লাগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি আমি দেয়ালের দিকে এমন নয় আমি পেইন্টিং জানি না কিন্তু রিয়াদ ভাইয়ার থ্রেট শুনে এখন ভয় হচ্ছে যদি ভালো না হয় তখন….
“এদিকে রিয়াদ তানজুর কাঁপাকাঁপি দেখে বুঝে গেছে এই মেয়ে লাস্ট টাইমে হয়তো সব গন্ডোগোল করে দিবে’!!তাই রিয়াদ তানজুর পাশে দাঁড়িয়ে বললোঃ
—-“থাম তানজু….
“আচমকা রিয়াদ ভাইয়ার কথা শুনে থেমে গেলাম আমি তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বললামঃ
—-“কি হয়েছে ভাইয়া….
—-“এক মিনিট দাঁড়া…
“এই বলে ভাইয়া রুমে থেকে বেরিয়ে গেল!’
“কিছুক্ষণ পর একটা বড় টেবিল নিয়ে এসে রাখলো দেয়াল ঘেঁসে তারপর বললোঃ
—-“এটায় উঠে আঁক,….
“আমিও বেশি কিছু না ভেবে বলে উঠলামঃ
—-“ঠিক আছে….
“তারপর চেয়ার রেখে টেবিলের উপর উঠে দাঁড়ালাম!’মনে মনে আল্লাহর নাম নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করলাম পেইন্টিং,,
“হর্ঠাৎই হাতে কারো শীতল স্পর্শ পেতেই কেঁপে উঠলাম আমি!’পিছন ঘুরতে যাবো এর আগেই রিয়াদ ভাইয়া বলে উঠলঃ
—-“হুস পিছন ঘোরার কোনো প্রয়োজন নেই,দুজন একসাথে আমাদের বেবির জন্য ছবি আঁকবো…
“রিয়াদ ভাইয়ার কথা শুনে আমি চোখ বড় বড় করে বললামঃ
—-“কি….
“তানজুর কি শুনে ধ্যান ভাঙলো রিয়াদের,তাড়াতাড়ি টপিক চেঞ্জ করতে বলে উঠল সেঃ
—-“কিছু বলি নি তাড়াতাড়ি কাজটা শেষ কর আফরিন আপু তো চলে আসবে তারপর আমাদের আর সারপ্রাইজ দেওয়া হবে না….
—-“হুম ঠিক বলেছো ভাইয়া….
—-“তাহলে শুরু করা যাক মিস “ডেইরি-মিল্ক”..
“রিয়াদ ভাইয়ার কথা শুনে আমি হা হয়ে বললামঃ
—-“কি?’
—-“এত কি যেনে তুই কি করবি?’
“বলেই আমার হাত ধরে রিয়াদ ভাইয়া দেয়ালে আঁকতে শুরু করল…
“শুরুতেই একটু অপ্রস্তুত হলেও পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিলাম আমি….
“তানজুর পিছনে দাঁড়িয়ে তানজুর হাত ধরে দেয়ালে ছবি আঁকছে রিয়াদ,এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যাচ্ছে তার ভিতর,তানজুর মাথার চুল হাল্কা উড়ে আসছে তার মুখে,ভালো লাগছে রিয়াদের,খুব মনোযোগ দিয়েই ছবি আঁকছে যেন এক ঘোরে আঁটকে গেছে সে…..
“প্রায় এক ঘন্টা ধরে দেয়ালে ছবি আঁকলো ‘রিয়াদ আর তানজু’,ছবিটা হচ্ছে গ্রামীণ কোয়ালিটির যেমনটা রিয়াদ গ্রামের দেখেছিল….
“ছবি শেষ হয়ে গেছে অনেক্ক্ষণ হলো কিন্তু এখনো রিয়াদ তার ঘোর থেকে বের হতে পারে নি,,
—-“কি হলো ভাইয়া আর কতক্ষণ আমার হাত ধরে থাকবে ছবি তো আঁকা শেষ….
“আচমকা তানজুর কথা শুনে রিয়াদ তার ঘোর থেকে বেরিয়ে আসলো মিনমিন করে বললো সেঃ
—-“ওহ হয়ে গেছে…
—-“হুম অনেক্ক্ষণ আগে…
—-“হয়ে গেছে তুই আমায় বলবি না…
“বলেই তাড়াতাড়ি তানজুকে ছেড়ে চলে আসতে নেয় রিয়াদ,অতিরিক্ত তাড়াতাড়ি করায়, রিয়াদের পায়ের নিচেই ছিল রং ছবির আঁকার ফোঁটা পড়েছিল টেবিলের উপর,তার সাথে রঙের বাক্সটাও ছিল তার পায়ের কাছে অতিরিক্ত তাড়াতাড়ি করে চলতে গিয়ে তাতে পা ছিলিপ কেটে পড়ে যেতে নেয় রিয়াদ তার পিছনে তানজু থাকায় সে গিয়ে পরলো তানজুর উপর ঘটনাটা হুট করে হয়ে যাওয়াতে তানজু কিছু বুঝতেই পারলো না টেবিলের পাশেই ছিল বিছানা সাথে সাথে দুজন একসাথে গিয়ে পরলো বিছানার উপর তানজু নিচে আর রিয়াদ ওর উপরে….
“ঘটনাটা এতটাই দ্রুত হয়ে গেল যে, কেউ কিছু বুঝতেই পারে নি,হা হয়ে তাকিয়ে আছে রিয়াদ তানজু একে অপরের দিকে……
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে……
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!জানি কালকে সবাই অপেক্ষায় ছিলে গল্পের জন্য, আসলে কি বলো তো কাল রাতে ঘুমের মাত্রারা এতটাই তীব্র ছিল যে গল্প অর্ধেক লিখতে লিখতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আমি তাই গল্প লেখাও হয় নি আর দেওয়াও হয় নি,কালকে অপেক্ষা করানোর জন্য সরি সবাইকে]
#TanjiL_Mim♥️