#এক_ফালি_রোদ্দুর?
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম?
#পর্ব:০৬
“অবাক চোখে তাকিয়ে আছে সবাই তানজুর দিকে’!!অবশ্য সবাই বললে একটু ভুল হবে কারন তানজু যা করছে তাতে রুহি,শিফা,তরী খুব একটা অবাক না হলেও আহান আর রিয়াদ চরম প্রকার অবাক হয়েছে’!!কারন তানজু কয়েকটা বাচ্চা ছেলে মেয়েদের সাথে কলা গাছ দিয়ে তৈরি ভেলায় উঠে ঘুরছে’!!আহান তো তানজুর কাজ দেখে অটোমেটিক বলে উঠলঃ
—-“এটা কি…
“আহানের কথা শুনে শিফা বলে উঠলঃ
—-“এটা হলো কলা গাছ দিয়ে তৈরি ভেলা,আর অন্যভাবে বললে এটা নৌকার মতো তবে নৌকা নয়…
—-“তানজু কি সাঁতার জানে যদি পড়ে যায়….
—–“সাঁতার জানে না তবে পড়বে না ও তো এসবের এক্সপার্ট, আর ওর সাথে যে বাচ্চাগুলো দেখছেন ওঁরা তো ওকে পরতেই দিবে না…
“শিফার কথাগুলো শুনে অবাক চোখে তাকালো রিয়াদ তানজুর দিকে’!!তাদের থেকে অনেকটা দূরে তানজু,পরনে তার হলুদ রঙের থ্রি-পিচ,দূর থেকে একদম হলদে পরীর মতো লাগছে তাকে রিয়াদ আনমনেই তার ক্যামেরায় তানজুর কিছু পিক সাথে তানজুর সাথে থাকা বাচ্চাগুলোর পিক তুলে নিলো’!!আনমনেই মুচকি হাসলো রিয়াদ,কিন্তু এগুলো কেন করলো সে তা নিজেও জানে না….
“কিছুক্ষণ পর…..
“তানজু পুরো মাঠ ঘুরে এসে থামলো রিয়াদ,শিফা,রুহি,তরী আর আহানের সামনে’!!আহান তো তাকে দেখেই বলে উঠলঃ
—-“উফ,তানজু এটা কিসে চরে ঘুরছো তুমি….
“আচমকা আহান ভাইয়ার কথা শুনে সামনে তাকালাম আমি’!!অবাক হয়ে বললামঃ
—-“তোমরা কখন এলে…
—-“আমরা তো অনেকক্ষণ এসেছি যখন তুমি বাচ্চাদের সাথে খেলছিলে….
—-“ওহ, ভাইয়া উঠবেন নাকি….
—-“আমি, যদি পড়ে যাই…
—-“আরে পরবেন না আমি আছি না….
—–“তুই ও আয় না রিয়াদ…
“আহান ভাইয়ার কথা শুনে আমিও বলে উঠলাম রিয়াদ ভাইয়াকেঃ
—-“আসবে ভাইয়া…
“রিয়াদ ভাইয়া কিছুক্ষন ভেবে বলে উঠলঃ
—-“আমি কি বাচ্চা নাকি যে এসবে উঠবো,
“মুহূর্তেই মেজাজ বিগড়ে গেল আমার,চোখ গরম করে বললাম আমিঃ
—-“না উঠলে না উঠবে এত বক বক করার কি আছে হুহ….
—-“হুম বুঝতে পারছি যাও এখন…
—-“আমি আসছিলাম তোমাদের কাছে নাকি তোমরা আসছো,ওই জুথি,টুম্পা,ফুলটুসি,ইব্রাহীম, অভ্র চলতো এদের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করে কী লাভ?…
—-“আরে আমায় নিবে না (আহান)
—-“আপনি যাবেন ভাইয়া….
—–“হুম…
“এমন সময় রুহি,শিফা,তরী বলে উঠলঃ
—-“আমরাও যাবো….
—–“তোরাও যাবি কিন্তু এত মানুষ তো একসাথে এই ভেলায় যাওয়া যাবে না,আচ্ছা কোনো ব্যাপার না অভ্র তোরা গিয়ে সেদিনের সেই নৌকাটা নিয়ে আয় আমরা সবাই একসাথে নৌকায় চড়ে শাপলা তুলতে যাবো….
“আমার কথা শুনে শিফা ওরা অবাক হয়ে বললোঃ
—-“শাপলা কোথায় পেলি তুই…
—-“ওই দূরেই আছে চল সবাই মিলে নৌকা করে যাই…
—-“উফ আমার তো এখনই খুশি খুশি লাগছে… (রুহি)
“আমার কথা মতো অভ্র আর ইব্রাহিম চলে গেল’!!কিছুক্ষন পর নৌকা করে আসলো ওঁরা’!!ওরা আসতেই আমি খুশি হয়ে বলে উঠলামঃ
—-“এখন তাহলে যাওয়া যাক…
“আমার কথা শুনে সবাই খুশি হয়ে বললোঃ
—-“হুম…
“একে একে সবাই উঠে পরলাম নৌকায় শুধু উঠলো না রিয়াদ ভাইয়া’!!যা দেখে আহান ভাইয়া বলে উঠলঃ
—-“এখন তো আয় রিয়াদ, এটা তো ভেলা নয় নৌকা….
—–“ছেড়ে দেও আহান ভাইয়া উনি হয়তো নৌকায় উঠতে ভয় পাচ্ছে যদি পড়ে যায় তাহলে তো মান সম্মান সব প্লাস্টিক হয়ে যাবে বুঝো না কেন….
“আমার কথা শুনে রিয়াদ ভাইয়া রেগে বলে উঠলঃ
—-“তোকে একদিন বলেছি না আমি কোনো কিছুতেই ভয় পাই না….
—-“ভয় যখন পাও না তাহলে আসছো না কেন?
—-“ঠিক আছে আসছি আমি….
“বলেই রিয়াদ ভাইয়াও উঠে পরলো নৌকায়’!!সবাই উঠতেই আমি ফুলটুসিদের বলে উঠলামঃ
—–“এখন তাহলে যাওয়া যাক মাই পুচকে নৌ-বাহিনীরা….
“আমার কথা শুনে ওঁরাও খুশি হয়ে বললোঃ
—-“একদম তানজু আপু….
“এদিকে রিয়াদ ভাবছেঃ
—-“যেমন এঁরা তেমন তাদের তানজু আপু!’
!!
“নৌকার দুই মাথায় বসেছে জুথি,টুম্পা,ফুলটুসি,ইব্রাহীম আর অভ্র,মাঝখানে বসেছে আহান শিফা পাশাপাশি আর ওদের সামনে রুহি তরী,আর আমি পা ঝুলিয়ে বসে আছি অভ্রের পাশে,আর রিয়াদ ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে,ফটো তুলতে ব্যস্ত উনি!’অবশ্য বিষয়টায় আমার খুব ভালো লাগছে….
“আস্তে আস্তে আমরা পাড়ি জমাতে লাগলাম মাঠ-ঘাট পেরিয়ে,চারপাশের ঠান্ডা বাতাস বইছে,সূর্য্যিমামা তার তীব্র আলোতে আলোকিত হয়ে আছে, সময়টা কম হলেও এখন ১১ঃ০০টা বাজে….আকাশটাও রয়েছে দবদবে সাদা হয়ে!’
“কিছুটা দূরে যেতেই দেখতে পেলাম আমি সারি সারি শাপলাফুল,পুরো মাঠ জুড়েই রয়েছে শাপলার সমোহর,,অপলকভাবে তাকিয়ে আছে সবাই,রিয়াদ তো কখনোই তার ক্যামেরায় ছবি তুলেছে শাপলার বাগানের!’শাপলার কাছাকাছি আসতেই আমি বলে উঠলামঃ
—-“অভ্র আরো কাছে চল আজকে শাপলা তুলবো অনেকগুলো…
—-“ঠিক আছে তানজু আপু…(অভ্র)
“একে একে শাপলা হাত দিয়ে শাপলা তুলতে ব্যস্ত হয়ে পরলাম আমি’!আর বাকি সবাইও…
“কিছুক্ষণ পর…..
“হাত ভর্তি করে শাপলা ফুল নিয়েছি আমি’!!আচমকাই রিয়াদ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম আমিঃ
—-“বলছিলাম কি ভাইয়া…
—-“কি….
—-“তোমার ক্যামেরায় আমাদের কিছু পিক তুলো পরে আমাকে ওয়াট’সআপে পাঠিয়ে দিও…
“রিয়াদ ভাইয়াও আর কিছু বললো না একে একে আমাদের সবার পিক তুললো সে’!!আমি তো মহা খুশি….
“জায়গাটা অসম্ভব সুন্দর, মাঠের চারপাশে রয়েছে দূর দূরান্তে পানি আর পানি,সেই হিসেবে এটাকে ছোট খাটো সমুদ্র বললে মন্দ হবে না,পুরো জায়গা জুড়ে রয়েছে শাপলাফুল,,নজর কারা তার সৌন্দর্য,প্রকৃতির এই মন মাতাল সৌন্দর্যের প্রেমে পরেছি নিমিষেই,….
“সারাদিন ঘোরাঘুরি করে আমার সবাই চলে আসলাম বাড়িতে,,আমাদের হাতে এত শাপলা ফুল দেখে সবাই অবাক হয়ে বললোঃ
—-“এগুলো কোথায় পেলি….
—-“অনেক দূর থেকে এনেছি এই নেও…
“বলেই খালামনি-আর আম্মুর হাতে তুলে দিলাম আমি’!!তারপর দৌড়ে চলে গেলাম রুমে,প্রচুর ক্লান্ত লাগছে এখন গোসল করতে হবে না হলে ভালো লাগবে না আমার….
______________
“দুপুর দুটো বেজে ১৫ মিনিট….
“উঁকি মারছি আমি রিয়াদ ভাইয়ার রুমে দিকে, উদ্দেশ্য হচ্ছে রিয়াদ ভাইয়ার মোবাইলটা খুঁজে পাওয়া’!!রুমে উঁকি মারতেই দেখলাম কেউ নেই হর্ঠাৎই ওয়াশরুম থেকে শব্দ পেলাম আমি হয়তো রিয়াদ ভাইয়া গোসল করছে,,
—-“উফ, কি টাইমিং এই তো সুযোগ ফট করে রুমে ঢুকে ছবিগুলো ডিলিট করে আবার ফট করে বেরিয়ে আসবো…
“এই ভেবে আস্তে আস্তে চললাম আমি রিয়াদ ভাইয়ার রুমের ভিতরে’!!কিন্তু ফোনটা কোথায় রেখেছে কে জানে?
“আশেপাশে খুঁজতেও কোথাও পেলাম না ফোনটা!’
—-“কোথায় রাখছে মোবাইলটা বিলেতি হনুমানটা উফ পাচ্ছি না কেন?
“হর্ঠাৎই চোখ গেল আমার টেবিলের দিকে একটা বইয়ের নিচে আছে মোবাইলটা আমি তো খুশি হয়ে বের করলাম মোবাইলটা’!!মোবাইলটা খুলতেই দেখলাম লক করা হায়রে এখন কি করে খুলবো ফোনটা মনে তো হচ্ছে ফিঙ্গার পিন দেওয়া,,কিন্তু কোনো ব্যাপার না আমি তখন নৌকায় বসে দেখেছিলাম ভাইয়ার প্যাটান লক কি দিয়েছে,মনে পরতেই যেই অনুযায়ী প্যাটান দিতেই মোবাইলটা খুলে গেল’!!উফ এখন আমার খুশি দেখে কে,তাড়াতাড়ি এলবামে ঢুকে আমার সব ফটো একে একে ডিলিট করে দিলাম আমি, লাস্ট ফটো ডিলিট করতে যাবো এমন সময় পিছন থেকে বলে উঠল রিয়াদ ভাইয়াঃ
—-“তুই এখানে কি করছিস…
“রিয়াদ ভাইয়ার কন্ঠ শুনে ঘাবড়ে গেলাম আমি,পিছন ঘুরে রিয়াদ ভাইয়ার অবস্থা দেখে আরো ভয় পেলাম আমি, সাথে সাথে এক চিৎকার দিতে যাবো তার আগেই রিয়াদ ভাইয়া এসে মুখ চেপে ধরল আমার’!!থরথর করে শরীর কাঁপছে আমার,এইভাবে শুধু টাওয়াল পড়ে রিয়াদ ভাইয়া ওয়াশরুম থেকে বের হবে এটা একদমই কল্পনার বাহিরে ছিল আমার চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি আমি’!!আমার অবস্থা দেখে রিয়াদ ভাইয়া বলে উঠলঃ
—-“তুই আমার রুমে করে করছিস,আর এভাবে চেচাচ্ছিা কেন?
“রিয়াদ ভাইয়ার কথা শুনে আমি শুধু উম উম আওয়াজ করলাম, যার অর্থ মুখ থেকে হাত সরাও আগে…
“রিয়াদ ভাইয়া হয়তো আমার আওয়াজের অর্থ বুঝতে পেরেছে’!!তাই নিজের হাত সরিয়ে বলে উঠল সেঃ
—-“এখন বল…
“আমি দু-হাত দিয়ে আমার চোখ বন্ধ করে বলে উঠলামঃ
—-“তুমি এইভাবে কেন,তাড়াতাড়ি জামাকাপড় পড়ো….
“তানজুর মুখে এমন কিছু শোনার জন্য একদমই প্রস্তুত ছিল না রিয়াদ,সে জিজ্ঞেস করেছিল তানজু এখানে কি করছে, আর কি এমন অবস্থায় আছে সে যে তানজু তার দিকে তাকাতে লজ্জা পাচ্ছে’!!হর্ঠাৎই তানজুর হাতে নিজের ফোন দেখে অবাক হয়ে বললো রিয়াদঃ
—-“তোর হাতে আমার মোবাইল কি করছে….
“আমি চোখ বন্ধ করেই কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলামঃ
—-“তুমি আগে গিয়ে জামা পড়ে আসো….
“তানজুর কথার তেমন গুরুত্ব না দিয়ে রিয়াদ রেগে বলে উঠলঃ
—-“তোর সাহস কি করে হলো আমার ফোন ধরার…
“রিয়াদ ভাইয়ার ধমক শুনে পুরো কেঁপে উঠলাম আমি’!!কিছুটা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলামঃ
—-“আমি আসলে…
—-“তুই কি…
—-“আমার ছবি ডিলিট করতে এসেছি তুমি কি ভেবেছো তুমি খালি আমায় ব্ল্যাকমেল করে তোমার সব কাজ করাবে হুহ…
—-“এই তুই লক জানলি কিভাবে…
“বলেই ভাইয়ার হাত একটু আলগা হতেই আমি দৌড়ে বিছানার উপর উঠে গেলাম,কারন এখনও একটা ফটো ডিলিট করা বাকি আমার…
“আমার কাজে রিয়াদ ভাইয়া আমার দিকে তেরে এসে বললোঃ
—-“আমার ফোন দে বলছি….
—-“না দিবো না কি করবে তুমি….
—-“তোকে তো আমি, নিচে নাম বলছি
—-”না নামবো না…
—-“আমি যদি উপরে আসি তাহলে কিন্তু…
—-“আরে আসো না উপরে আমি কি তোমায় বারন করেছি নাকি…
“আমার কথা শুনে ভাইয়া উপরে উঠতেই আমি নিচে নেমে গেলাম’!!একে পর্যায়ে রিয়াদ-তানজু দুজনই ছোটাছুটি করতে লাগলো পুরো রুম জুড়ে…
“আচমকাই রিয়াদ ভাইয়া ধরে ফেললো আমার হাত’!!তারপর বললো সেঃ
—-“এবার কোথায় পালাবি তুই….
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে……
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!জানি আজকে পার্টটা একটু ছোট হয়ে গেছে আসলে বাসায় মেহমান এসেছে সাথে এসাইনমেন্টের ফুল প্যারার ভিতর আছি আমি’ ইনশাআল্লাহ কাল বড় করে দিবো]
#TanjiL_Mim♥️