জীবন মানে তুমি পর্ব-২৯

0
4132

#জীবন মানে তুমি
#লেখিকা:H.B.Rini (Irini Ori)
#পর্ব:২৯

(১০৪)

-“লিসেন্স ফাইকা,তোর ভাবী রান্না করতে পারেনা।আর বাড়িতে এতো সার্ভেন্ট থাকতে আমার বৌয়ের এত দরকার কেন পড়লো বুঝলাম না।এখন যা এখান থেকে।আমি আমার রুমে কাউকে এলাও করিনা,তাছাড়া ওর ঘুমের ডিস্টার্ব হচ্ছে।সো,ইউ্ ক্যান গো নাও।”

ফাইকা রাগে ফুসফুস করতে করতে বলে,

-“কাজটা তুমি ভালো করলে না আবরার…”

আবরার এবার রেগে ধমক দিয়ে বলে,

-“যাবি তুই এখান থেকে?”

ওর ধমকে ফাইকা ভয়ে কেঁপে উঠে।নিজের ভালো পাগলেও বুঝে,আর ফাইকা জানে ও যদি আবরারকে রাগীয়ে দেয় তো ওর অবস্থা খুব খারাপ হবে।তাই আর না দাঁড়িয়ে সাথে সাথে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।ইয়ারাবী আবরারের বুক থেকে মাথা উঠিয়ে বলে,

-“এভাবে না বললেও পারতেন,আর ডিনারটাই তো বানাতে হতো।সার্ভেন্টদের সাহায্যে বানিয়ে ফেলতাম।পারিনা বলে যে পারবোনা তা তো নয়,
চেষ্টা করলে পারতাম।”

-“বাচ্চা মানুষ বাচ্চার মতো থাকবে,বেশি বুঝো কেন?”

ইয়ারাবী উঠে বসে,আবরার ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“না ঘুমিয়ে উঠছো কেন তুমি?”

-“একটু বাইরে যাবো….”

-“ইউ নো,যদি কিচেনের আশেপাশেও দেখেছিনা তবে জানো আমি কী করবো?”

-“আমি কিচেনে যাচ্ছিনা,একটু আপুর রুমে যাচ্ছি।”

-“হেডেক…”

-“ঠিক হয়ে গেছে,আচ্ছা আমি আপুর কাছে গেলাম।”

ইয়ারাবী মাথায় ওড়না দিয়ে চোখে চশমাটা পরে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

-“আপু আসবো…”

ইকরা জারবা সাথে গল্প করছিলো,ইয়ারাবীর স্বর শুনে দরজার দিকে তাকিয়ে বলে,

-“তোমার ভাইয়া আছে নাকী যে এখন অনুমতি নিচ্ছো,ভিতরে এসো।”

ইয়ারাবী যেয়ে ইকরার পাশে বসে।জারবা ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“ছোটভাবী,তোমার না মাথাব্যথা করছে?”

-“তুমি কীভাবে জানলে?”

-“আরে ফাইকা আপু যেয়ে মামীকে বললো তাই শুনলাম।মামীতো কোমড়ে কাঁপড় বেঁধে মাঠে নেমেছিলো তোমার হাতের রান্না খাবে বলে।”

-“ওহ্,কিন্তু জারবা আমার দেখিয়ে দিলে রান্না করতে পারতাম কিন্তু তোমার ভাইয়া আমাকে আগুনের কাছে যেতে নিষেধ করেছে।এখানে তো আমার কোনো দোষ নেই,আর আমি ওনার কথার অবাধ্য হতে পারবোনা।…”

-“আহ্ মন খারাপ করছো কেন বলতো?মামী এমনি খুদ ধরতে পছন্দ করে।”

-“আসলে আমি খুবই দুঃখীত,মামীর ইচ্ছাটা পূরন করতে পারলাম না।”

ইকরা ওর মাথায় হাত দিয়ে বলে,

-“বাদ দাও তো,কাল তো তোমরা শপিং এ যাবে তাইনা।”

-“কেন আপু?কাল কোনো বিশেষ দিন…”

-“না সোনা,কাল কোনো বিশেষ দিন নয় তবে পরশু তোমরা ইংল্যান্ড যাবে তার জন্য।”

-“এত দ্রুত কীভাবে পসিবল হলো?”

-“সবটা বাবা জানে,তাছাড়া তোমার কাগজ করা ছিলো এজন্য সবটা দ্রুত সম্পূর্ন হয়েছে।তুমি কী খুশি নও?”

ইয়ারাবী খানিকটা মৃদ্যু হেসে বলে,

-“খুশি কেন হবোনা,অবশ্যই খুশি তবে সম্পূর্ন অজানা একটা জায়গা তাই…”

-“তুমি বিচক্ষণ আর বুদ্ধিমতী।তাছাড়া তুমি তোমার স্বামীর সাথে যাচ্ছো,আর মেয়েদের বিয়ের পর স্বামীর থেকে আপন কেউ হয়না।”

-“আমরা নিখুঁত ব্যক্তি খুঁজে না পেয়ে একজন অসম্পূর্ণ ব্যক্তিকে পুরোপুরি দেখতে শেখার মাধ্যমে প্রেমে আসি।তবে আবরার সম্পূর্ন ভিন্ন ব্যাক্তি এবং তাকে আমি সম্পূর্ন বিশ্বাস করি।কেননা সম্পর্কের মধ্যে যদি বিশ্বাস জিনিসটা না থাকে তবে সেই সম্পর্ক ঠুনকো হয়ে যায়।”

ইকরা বিমোহিত নয়নে ওর দিকে তাকায়।তার সামনে যে মেয়েটি বসে আছে তার ঠোঁটের কোনে বিচক্ষণ হাসির আভাস,কথাগুলো শান্ত হলেও কোমলতায় বলিষ্ঠ এক একটি আওয়াজ, চোখগুলো স্থীর।সদ্য অষ্টাদশী মেয়েটি আজ নারীর ভূমিকায় যে কথাগুলো বলছে সেগুলো সত্যিই অতুলনীয়।এমন শ্যামলীনি মায়াবিনী মেয়ের সাথে কেউ কীভাবে অবিচার করতে পারে।আবরার ঠিকই বলে মেয়েটা চমৎকার।কখনো মনখুলে না হাসলেও কথাবলার সময় হাসির আভাস থাকে ঠোঁটে ।

জারবা চোখগুলো ছোট ছোট করে একটা মাসুম চেহারা বানিয়ে বলে,

-“ছোট ভাবী,ননদটাকে ভুলে যাবেনা,কিছু গিফ্ট নিয়ে আসবে আমার জন্য পছন্দ করে।ভাইয়ার পছন্দ খুব খারাপ,শুধু স্ট্যাডি রিলেটেড গিফ্টস্ দেয়।”

ইয়ারাবী খানিকটা হেসে ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“শুনেছি আমিও নাকী তোমার ভাইয়ার পছন্দ, তাহলে আমিও কী খারাপ?”

-“কী বলো এসব?আমাদর দু’টো ভাবী সবার থেকে সেরা।”

ইকরা আর ইয়ারাবী ওর কথা শুনে হেসে দেয়।

এদিকে আবরার হিটারটা বন্ধ করে দিয়ে ব্লাঙ্কেট দিয়ে মুড়ি দিয়ে শুতে গেলেই চেলসি এসে দাঁত দিয়ে টেনে ব্লাঙ্কেট ফেলে দেয়।আবরার একটা হামি তুলে ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“হুয়াটস্ হ্যাপন্ড?খুব ঘুম পাচ্ছে ঘুমাতে দাও।”

চেলসি ওর মাথা দুলিয়ে দু’বার ডেকে ওর প্যান্ট কামড়ে ওকে উঠতে ইশারা করে।আবরার ওর দিকে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বলে,

-“চেলসি,গুড বয় তুমি।চুপচাপ নিজের যায়গায় যাও,আমি এখন কোথাও যাবোনা।”

চেলসি ওকে টেনে হেঁচড়ে রুম থেকে বের করে নিয়ে যাও।রুম থেকে বেরিয়ে বুঝতে পারে এটা মেঘের কাজ যে ওকে নিচে আনার জন্য চেলসিকে পাঠিয়েছে।আবরার আরমোরা ছেড়ে চেলসিকে কোলে নিয়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে ওদের সামনে বসে মেঘের মাথায় একটা চাটি মেরে বলে,

-“আমার ঘুমের সাথে তোর শত্রুতা কেন বলতো?”

মেঘ মাথা ঢলতে ঢলতে বলে,

-“আহ্,আমার ঘুমের সাথেও তো তোমরা দুশমনি করো।তাই রিভেঞ্জ নিয়েছি….”

সোফায় মেঘ,আবীর,ফারহান আর ওদের মাথা বসে আছে।ওদের মামা ওদের সাথে অনেক ফ্রি।ওরা কথা বলছে এমন সময় হঠাৎ করে ওখানে ফাইকার আগমন ঘটে।আবরারের পাশের জায়গাটা খালি দেখে ফাইকা খুব খুশি হয়।ওর পাশে বসতে গেলেই চেলসি আবরারের কোল থেকে নেমে ওর পাশের জায়গায় হাত-পা ছড়িয়ে আরাম করে বসে।ফাইকা চেলসিকে সরাতে গেলে ও চিল্লিয়ে উঠে,তাই ভয়ে আর ওর গায়ে হাত দেয়না।চুপচাপ ও ওর বাবার পাশে বসে পরে।

আসলে ফাইকা চেলসিকে দেখে একটু বেশি ভয় পায়।কেননা এর আগে দুইবার যখন ও আবরারকে নিজের দিকে আকর্ষন করার চেষ্টা করেছে ততবার চেলসি ওকে কামড় দিয়েছে,অবশ্য ওর ভ্যাকসিন নেওয়া আছে বলে সমস্যা হয়নি।আবরারের মামা ওদের দিকে তাকিয়ে বলেন,

-“মাশাল্লাহ্,দু’টা বৌমা অনেক ভালো হয়েছে।ওদের ব্যবহারগুলো খুবই সুন্দর।”

ফাইকা কিছুটা মুখ বাঁকিয়ে বলে,

-“ইকরা ভাবীরটা তো জানি,কিন্তু ইয়ারাবী।একদিনে বুঝে গেলে ড্যাড,আমার তো ওর চেহারা দেখে তেমন একটা মনে হলোনা।কিছু মনে করনা আবরার,আমি স্পষ্টবাদী মেয়ে….”

মেঘ ফাইকার দিকে তাকিয়ে বলে,

-“ইয়ারাবী সম্পর্কে তোমার ভাবী,তাই নাম ধরে ডাকাটা তোমার সাজেনা।”

-“ওতো তোর ও ভাবী,তাহলে তুই কেন নাম ধরে ডাকছিস?”

-“কারন ভাবী হওয়ার আগে ও আমার ফ্রেন্ড।আর কারো চেহারায় তার পরিচয় ফুটে ওঠেনা,তার ব্যবহারে বোঝা যায়।”

ওর মামা মেঘের কথায় একমত প্রকাশ করে বলেন,

-“একদম ঠিক বলেছিস তুই।আরেকটা কথা কী জানিস,জীবন একটি আয়না মত। আমরা যদি এটি ভ্রূণত করি তবে তা পিছন দিকে ফিরে আসে। যদি আমরা হাসি, এটি শুভেচ্ছা ফিরে আসে।”

আবীর হেসে বলে,

-“জানো মামা,আমাদের তো ভয় ছিলো ওই বাচ্চা মেয়েটা আবরারের রাগকে কন্ট্রোল করতে পারবে কীনা?কিন্তু আমাদের ধারনা ভুল কেননা একমাত্র আবরার আর ওর রাগকে সামলাতে ভালো ইয়ারাবী পারে।”

ফাইকা আবরারের দিকে তাকিয়ে বলে,

-“তবুও আমি বিশ্বাস করিনা যে এই চারমাসে তোমাদের বৈবাহিক জীবনে ঝগড়া হয়নি।”

আবরার মুখে একটা চিকেন বল ঢুকিয়ে মাথা হালকা নাড়িয়ে বলে,

-“হয়নি তা কিন্তু নয়,ঝগড়া,মা-অভিমান এটা সব পরিবারে হয়ে থাকে।তাই আমাদের মধ্যেও হয়েছে তবে সেটা এক তরফা।”

-“মানে?”

-“শুধু আমার দিক থেকে,সবাই জানো আমার রাগটা বরাবরই বেশি।তবে সেটা অযৌক্তিক বিষয় নিয়ে নয়,মাঝে মাঝে ও পড়ার মধ্যে এতটাই ডুবে থাকে নিজের খেয়াল রাখতে পারেনা।যখন আমি ওর সাথে রাগারাগি করি তখন ও প্রত্যুত্তরে কোনো কথা বলেনা।ও চুপ করে থাকে,কেননা ওর ধারনা দু’জনে কথা কাঁটাকাঁটি করলে ঝগড়া আরো বেশি হয়,সমাধান নয়।রাসূলুল্লাহ (সা.) এর একটি হাদিস আছে:

‘স্বামী-স্ত্রীর মাঝে শয়তানে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়, যাতে তারা একজন থেকে আরেকজন পৃথক হয়ে যায়।’ (সহিহ মুসলিম : ৫০৩৯)”

-“তারপরও ও তোর সাথে কোনো তর্ক করেনা?এটা অসম্ভব,কেননা মানুষের একটা সহ্যের সীমা থাকে।”

-“তুমি ঠিক বলেছো মামা,বাট্ ইয়ারাবী সেমন নয়।ও যতটুকু পাড়ে,ইসলাম মেনে চলার চেষ্টা করে।ও অসাধারন চমৎকার একটা মেয়ে,প্রচুর যুক্তিবাদী।কম বয়সে প্রচুর ক্রিয়েটিভ।তবে ওর স্বামীর সাথে দুর্ব্যবহার করা,চেচামেচি,ধমকে কথা বলা,লেট নাইট পার্টি করা,হৈচৈ করা এসব পছন্দ নয়।ইসলামে এসব করা অন্যায় আর ওর এগুলো পছন্দ নয়।”

-“তবে কী পিচ্চিভাবী তোমাকে কিছু বলেনা?”

-“না,তবে নিজেকে সাজা দেয়।ঘন্টা দুয়েক শাওয়ারের নিচে বসে থাকে,নিজে নিজেকে হার্ট করে, যা দেখে আমার খারাপ লাগে।”

ফাইকা এতোক্ষণ ধরে ওর কথা শুনছিলো,ওতটুকু মেয়ে আবরারের রাগকে কীভাবে কন্ট্রল করতে পারে?যেখানে ও আবরারের চোখ রাঙানোকে ভয় পেয়ে যায়।ও খানিকটা নড়েচড়ে বসে বলে,

-“তার মানে তুমি ওকে ভালোবাসো?”

-“অবশ্যই,আমার স্ত্রী ও…ভালো তো বাসবোই।মায়ের পরে যদি কোনো চমৎকার মেয়ে হিসাবে কাউকে দেখি তবে সে ইয়ারাবী।”

-“তাহলে তো দেখতে হয় কেমন চমৎকার মেয়ে?”

কথাটা বলে ফাইকা উঠে চলে যায়।আবরার অবশ্য বুঝতে পারছে ওর মাথায় কী চলছে?ও চেলসির দিকে তাকিয়ে বলে,

-“চেলসি মায়ের কাছে যাও,ওকে তোমার দরকার।”

চেলসি আবরারের কথা শুনে সোফা থেকে নেমে দৌঁড়ে সিড়ি দিয়ে উঠে ইকরার রুমে প্রবেশ করে।ওর মামা আবরারের দিকে তাকিয়ে বলে,

-“মায়ের কাছে যেতে বললি দৌঁড়ে চলে গেলো।”

-“ওমনি,ইয়ারাবীকে পেলে ওর আর কিছু চাইনা।যতক্ষণ ও বাড়িতে থাকে ওর পিছে পিছে ঘুরঘুর করে।তবে ওর পড়ার সময় ও চুপচাপ এক কর্ণারে বসে থাকে,কোনো ডিস্টার্ব করেনা।”

-“এরা খুব ফ্রেন্ডলি হয়।ওডেন ও তেমন তবে এক প্রজাতির নয়।তোর গুনধর ভাই দেশে আসার এক মাস আগে ব্রুটেন নামের আরেকটা ডগিকে বাসায় নিয়ে এসেছে।”

ফারহান ফোনে গেম খেলতে খেলতে বলে,

-“ওকে রেস্কিউ না করে কী করবো?বাচ্চাটার খুব খারাপ অবস্থা ছিলো,তবে ওডেন ওকে নিজের ছেলের মতো ট্রেন্ড করে।”

আবরার বলে,

-“ওরা বেজুবান বলে নিজেদের অনুভুতি বলতে পারেনা,তবে কাজ দ্বারা প্রকাশ করে।”

-“ভাইয়া শুনলাম তোমরা ইংল্যান্ড যাচ্ছো?”

-“ইয়াহ,আসলে বিয়ের পর কোথায় ওকে নিয়ে যেতে পারিনি।ওর এক্সাম,আমারো খুব কাজের চাপ ছিলো।তাছাড়া ঘুড়ার বাহানায় ওখানের কাজটাও দেখা হবে।”

(১০৫)

মানুষের মন খুব বিচিত্র তার থেকেও বিচিত্র তাদের অনুভুতি।এতটাই তারা বিচিত্র যে আজ একজনের সাথে কিছুটা পথ এগিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখিয়ে বিতাড়িত করে আবার আরেকজনের সাথে স্বপ্ন বুনে।আচ্ছা ভালোবাসার সংজ্ঞা কী?আসলে এক একজন মানুষের কাছে এক এক রকম।একজনের কাছে হতে পারে মৃত প্রায় জীবনকে বাঁচিয়ে তাকে নতুন রুপে সাজানো তো আরেক জনের কাছে সাদা-কালো ধোঁয়াশার গোলকধাঁধার ভিতর আটকে যাওয়া।কেউ স্বপ্ন দেখতে শেখে তো কেউ নিজের স্বপ্নের জাল ছিড়তে শেখে।আসলে পৃথিবী একটা বিশাল বই যেখানে সবাই এক সাথে পড়তে চায়।

চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে নিজের অতীতে ডুব দেয় য়ুহার।সময়টা ছিলো বর্ষাকালের শ্রাবন মাস, চারিদিকে প্রকৃতি পানিতে থৈ থৈ করছে।নিজের রুপে সম্পূর্ন দিককে সাজিয়ে প্রতিনিয়ত জানাচ্ছে বর্ষার উপস্থিতি।এমন এক দিনে ভার্সিটির সামনে ছাতা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে য়ুহার।অপেক্ষা করছে তার প্রাণ প্রিয় বান্ধবী প্রানোর জন্য।ঝিমঝিম করে বৃষ্টির সাথে থেমে থেমে মেঘের বর্জ্রপাত হচ্ছে।আজ মনে হচ্ছে প্রকৃতি খুব বেশি রেগে আছে তাই চেহারা অনেক কালো বানিয়ে রেখেছে।

হঠাৎ একটা ছেলে এসে য়ুহারের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,

-“হাই আমি অর্কভ,তোমাদের সিনিয়র।”

-“তো আমি কী করতে পারি?”

অর্কভ হেসে বলে,

-“একটু ভালোবাসলেই হবে।কেননা আমি তোমাকে নিয়ে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দিতে চাই…”

-“হুয়াট?কী ভেবেছেন সিনিয়র বলে যা ইচ্ছা তাই করবেন?”

-“ফিরে শুনতে আমি বলিনি “আমি তোমাকে ভালবাসি”। তুমি এটি জানলে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য আমি এটি বলেছিলাম।”

য়ুহার অর্কভের কথা শুনে হেসে ফেলে,

-“সরি,রেগে যাওয়ার জন্য।আসলে রিলেশনটা আমার কাছে কোনো খেলা নয়…”

-“ওহ্,কারোর জন্য ওয়েট করছো বুঝি?”

-“হ্যাঁ,আমার বান্ধবী প্রানোর জন্য।”

-“ওহ্,এই বৃষ্টির মধ্যে মনে হয় নাও আসতে পারে।অনেকেই তো আসেনি…”

-“হতে পারে কেননা ওর ফোনটাও বন্ধ।”

-“আমিও আমার বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছি তারও কোনো দেখা নেই।”

-“কী নাম আপনার বন্ধুর?”

-“শৈল”

-“শৈল হাসান,ফার্স্ট বয়।আমি চিনে তো ওনাকে।উনি প্রানোর বড় ভাই।”

-“ঠিক বলেছো,হতে পারে দুই ভাইবোন বৃষ্টির ভিতর ঘুমাচ্ছে।”

-“কী জানি?”

-“কেউ তো আসেনি চলো কিছুক্ষণ তোমার সাথে গল্প করি।তুমি মনে হয় রিলেশন ব্যাপারটা নিয়ে খুব সিরিয়াস।”

য়ুহার ওর সাথে ক্যান্টিনে ঢুকে এক কাপ চা নিয়ে বলে,

-“অবশ্যই,ভালোবাসা হয় এক অনুভুতি দিয়ে।আর অনুভুতি মনের কোন থেকে সৃষ্টি হয়।কেন আপনার কী মনে হয়?”

-“দেখো জীবনে সব কিছুর অভিজ্ঞতা থাকা উচিত।আমার মতে রিলেশনের ক্ষেত্রেও…”

য়ুহার মাথা নাড়িয়ে বলে,

-“সম্পর্ক এবং বোঝাপড়া আত্ম-সম্মান এবং অহংকার ধারণার অধীনে সমাধিস্থ হয়। এটি খনন মোটেও সম্ভব নয়।”

হঠাৎ মায়ের ডাকে য়ুহার বাস্তবে ফেরে।ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,

-“কিছু বলতে চাও আম্মু?”

মিসেস অচলা বিছানায় বসে ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“কী হয়েছে তোর?আজকাল দেখি খুব বেশি ভাবনা-চিন্তা করিস?”

-“তেমন কিছু নয় আম্মু,একটু কাজ বেশি তাই।জানো আম্মু বাচ্চা না অনেক বুঝতে শিখেছে।”

-“ও ছোট থেকেই অনেক বুদ্ধিমতী,জ্ঞানসম্পন্ন মেয়ে।”

-“এই চারমাসে আরো অনেকটা চমৎকার হয়ে উঠেছে।ও বলে,এই পৃথিবীতে অনেক লোক আছেন যারা তোমার কেয়ার করে, তোমার কেবল তাদের খুঁজে বের করা দরকার।আজ কাল ইচ্ছা করে ওকে মোটিভেশনাল ইস্পিকার বলে ডাকি।”

মিসেস অচলা হেসে দেন মেয়ের কথা শুনে।য়ুহার চায়ের কাপে শেষ চুমুকটা দিয়ে বলে,

-“কিছু বলতে এসেছিলে?”

-“ওহ্,বলছি কাল আমার সাথে একটু মার্কেটে যাবি মা যদি তোর কোনো কাজ না থাকে।আসলে কিছু জিনিস কিনবো,আর তোর পছন্দ বরাবরই ভালো।”

-“ওকে কাল দশটার দিকে মার্কেটে যাবো,রেডি হয়ে থাকবে।আর ওই বাদরটাকে পড়তে বসতে বলো,আমি ওর রুমে যাচ্ছি পড়া দেখতে।”

মিসেস অচলা মাথা নাড়িয়ে চায়ের কাপটা ওর হাত থেকে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।

(১০৬)

সকালে আজ রানে বের না হয়ে আবরার নামায পড়ে ঘুমাচ্ছে।ইয়ারাবী অনেক আগে ঘুম থেকে উঠে যাওয়ার ওর শ্বাশুড়ির সাথে কথা বলছিলো।এদিকে ইয়ারাবীকে রুম থেকে বের হতে দেখে ফাইকা রুমে যেয়ে দেখে আবরার ঘুমাচ্ছে।ঘুমন্ত চেহারা ওকে আরো বেশি আকর্ষন করছে।ফাইকা যেয়ে ওর চাপ দাঁড়িতে আস্তে করে হাত বুলাতে থাকে।আবরারের বরাবরই ঘুমটা পাতলা,তাই ঘুমের ঘোরে অনুভব করছে কেউ ওর দাঁড়িতে হাত বুলাচ্ছে।প্রথমে ভেবেছিলো ওটা ইয়ারাবী তাই হাত ধরে টান মেরে বুকের উপর ফেলে দিতেই অনুভব করে এটা অন্য কেউ।সাথে সাথে চোখ খুলে দেখে এটা ফাইকা।ও সাথে সাথে ফাইকা ধাক্কা দিয়ে একটা কঠিন চড় দেয়।ফাইকা গালে হাত দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।ও আসলে ভাবতে পারেনি এমন কিছু হবে।

-“তুমি আমাকে মারলে আবরার?”

-“এটা তোর কৃতকর্মের ফল,কেননা ঘুমন্ত কোনো বিবাহিত পুরুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছিলি।তোর সাহস কী করে হয়,আমার রুমে আসার।”

-“কেন এমন করছো,নতুন করে সব কিছু শুরু করলে তো পারতে?আর তুমি তো এভাবে ঘুমাতে না।”

আবরার খানিকটা বাঁকা হেসে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,

-“সময়ের সাথে সবকিছু বদলায়।তাছাড়া ইয়ারাবী তোর মতো এক্ট আর লো-মাইন্ডের মেয়ে নয় যে হট বয়দের বডির প্রতি আকৃষ্ট হবে।আমার স্ত্রীর রুচি তোর থেকে অনেক ভালো।আর কী বললে নতুন করে শুরু করতে তাইতো?শেম অন ইউ।”

ইয়ারাবী রুমে ঢুকতে দেখে ফাইকা একটা অতি আকৃষ্ট পোশাক পড়ে দাঁড়িয়ে আছে,বুঝাই যাচ্ছে আবরারকে আকৃষ্ট করতে চাইছে।ইয়ারাবী ফাইকার দিকে তাকিয়ে বলে,

-“আপু আপনি এরুমে কী করছেন?”

-“সেটা তোমাকে কেন বলতে হবে?আমি আবরারের সাথে কথা বলছিলাম দেখছনা।”

ইয়ারাবী মৃদ্যু হেসে বলে,

-“আপনি নিশ্চয় ভুলে যাচ্ছেন আমি উনার স্ত্রী।আর এখন উনি একা নন।তাই এভাবে সকাল সকাল কাউকে বিরক্ত করা নিশ্চয় ভালো নয়।”

-“তোমার সাহস তো মন্দ নয় তুমি আমাকে জ্ঞান দিচ্ছো?”

-“না আপু,আপনি আমার থেকে বড় আর একজন স্টাবলিস মেয়ে তাই আপনাকে জ্ঞান দেওয়া আমার সাজেনা।তবে যদি প্রয়োজন হয় তবে দিবো।”

-“মিডিল-ক্লাস কোথাকার?তুমি আমাকে ম্যানার্জ শিখাও।আমার আগে তো জারবা এসেছিলো এই রুমে তাছাড়া যখন-তখন মেঘও আসে কই সে সময় তোমার এই ম্যানার্জ কোথায় যায়?”

-“আমি জানি আমি মিডিল-ক্লাসের মেয়ে মানে মধ্যবিত্ত পরিবার।তাতে আমার একটু আফসোস নেই, তবে বিয়ের পর একটা মেয়ের পরিচয় বদলে যায় তাই এখন যদি আপনি মিডিল-ক্লাস বলেন তবে সেটা এই পরিবারকে বলা হবে।আর হ্যাঁ, জারবা, মেঘ এরা আমার পরিবারের আপজন।সরি টু সে,আপনার সাথে কিন্তু ততটা গভীর সম্পর্কের নন।”

ইয়ারাবীর কথা শুনে আবরার মিটমিট করে হাসে।এদিকে ফাইকার ভিতরটা জ্বলে যাচ্ছে।ইয়ারাবী আবরারের দিকে তাকিয়ে বলে,

-“ব্রেকফাস্টের টাইম হয়ে গেছে,আসুন।”

-“তুমি নিজের মেডিসিনগুলা নাও, আমি ফ্রেশ হচ্ছি।”

-“আমি নিয়েছি,তবে একটা শেষ হয়ে গেছে কিনতে হবে।আপনি আসুন আমি যাচ্ছি…”

ইয়ারাবী চলে যেতেই আবরার ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“বলেছিলাম না,ও তোর থেকে ছোট হলেও ওয়াইফ ম্যাটারিয়াল মেয়ে।এটাকেই বলে স্পষ্টভাষী।”

কথাটা বলে আবরার ওয়াশরুমে চলে যায়।ফাইকা নিজের রুমে যেয়ে দরজা আটকিয়ে ব্যাগ থেকে শ্যাম্পেইনের বোতল বের করে খেতে থাকে।ও যদি ওই ক্ষুদ্র ভুলটা না করতো তবে আবরারকে পাওয়া সহজ হয়ে যেতো।

ব্রেকফাস্ট করে রুমে এসে কেবল বসতেই আবরার কাবার্ড থেকে নিজের কাপড় বের করে ওর একটা প্যাকেট দিয়ে বলে,

-“রেডি হয়ে নাও…”

-“আমার যেতে ইচ্ছা করছেনা,তাছাড়া কাপড় তো আছে।”

-“বেশি কথা না বলে রেডি হয়ে নাও”

-“এতদিন আপনি নিজে নিয়ে আসতেন,তাহলে..”

-“তুমি আজকাল বড্ডো বেশি কথা বলো ইয়ারাবী।আর একটা কথাও না চুপচাপ তৈরি হয়ে নাও।”

ইয়ারাবী কোনোদিন আবরারের উপর দ্বিতীয় কথা বলেনি।বিছানায় বসে প্যাকেটটা খুলে দেখে ভিতরে ম্যাজেন্টা কালারের নতুন বোরখা।ও আবরারের দিকে তাকিয়ে বলে,

-“এই চারমাসে মোট কতগুলো বোরখা কিনেছেন একটু বলবেন?”

-“কেন?”

-“এমন পাগলামি মানুষ করে,শুধু শুধু টাকাগুলো নষ্ট।”

আবরার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘড়ি পড়তে পড়তে বলে,

-“আমার বৌ বাকীদের মতো ড্রেস আপ, কসমেটিক্স ব্যবহার করেনা।তাই তার জন্য বোরখা নিয়ে আসি।”

ইয়ারাবী ওয়াসরুম যেয়ে ড্রেস চেন্জ করে বোরখা পড়ে বেরিয়ে আসে।আবরার একবার ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“পার্ফেক্ট,এখন চলো।শোনো আমার ল্যাবে একটু কাজ আছে তাই প্রথমে ওখানে যাবো।আসলে বেশ কিছুদিন যেতে পারবোনা তো তাই।”

-“সমস্যা নেই আমি অপেক্ষা করবো।”

আবরার হেসে প্রথমে ল্যাবের দিকে যায়।এর আগেও একবার এসেছে তবে বেশিক্ষণের জন্য নয়।চারিদিকে শুধু ক্যামিক্যালের ছড়াছড়ি,আর নানা ধরনের যন্ত্রপাতি।আবরার ওকে নিয়ে নিজের কেবিনে যায়।কেবিনে যেয়ে ইয়ারাবী খুব অবাক হয়,কেননা ওর ডেক্সের উপর ইয়ারাবীর ছবি রয়েছে।তবে ছবিটা বেশ পুরানো বিয়ের আগে।প্রথমে অবাক হলেও পরে আর বেশি মাথা ঘামায়না,কেননা ওর ফোন থেকে নিতে পারে।আবরার ওর দিকে বলে,

-“কিছু অর্ডার দিবো?”

-“খেয়েই তো আসলাম..”

আবরার হেসে কাউকে ফোন দিয়ে আইসক্রিম নিয়ে আসতে বলে।ইয়ারাবী ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“নিজেই তো কাল বললেন শীতের মধ্যে আইসক্রিম খেতে হবেনা।আর আজ আনতে বললেন।”

-“আমার ইচ্ছা,আমার মার্জি।কাল ঠান্ডাটা একটু বেশি ছিলো তাই।”

-“স্যার আসবো?”

আবরার দরজায় দিকে তাকিয়ে দেখে বিহান দাঁড়িয়ে আছে।হেসে ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“ভিতরে এসো।”

বিহান এসে ইয়ারাবীর দিকে তাকিয়ে বলে,

-“হ্যালো ম্যাম,কেমন আছেন?”

ইয়ারাবী বিহানের দিকে না তাকিয়ে নিজের দিকে চোখ নামিয়ে বলে,

-“আলহামদুলিল্লাহ,ভালো।”

-“ইয়ারাবী এ হচ্ছে বিহান,আমার সবচেয়ে বিশ্বাসত্ব।”

ইয়ারাবী বিহানের দিকে তাকিয়ে খানিকটা চমকে যায়।কেননা বিহানকে দেখে ওর কেমন একটা পরিচিত লাগে কিন্তু ঠিক মনে করতে পারছেনা।ইয়ারাবী বিহানকে উদ্দেশ্য করে বলে,

-“আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনাকে আগে কোথাও দেখেছি?”

কথাটা শুনে আবরার আর বিহান দু’জনে চমকে যায়।বিহান কিছু বলছে না দেখে আবরার মুখে কিছুটা হাসির রেখা এনে বলে,

-“তুমি ওকে কোথায় দেখবে?হয়তো অন্য কারো সাথে গুলিয়ে ফেলছো।”

-“কিন্তু..মনে হয় আপনার কথায় ঠিক।”

আবরার খানিকটা হেসে বিহানকে উদ্দেশ্য করে বলে,

-“বিহান,আমি দু’সপ্তাহ খানিকের মতো ইংল্যান্ডে যাচ্ছি।এদিকের কাজগুলো তুমি আর প্রাপ্ত মিলে সামলিয়ে নিবে।”

-“স্যার,চিন্তা করবেন না আমি সবটা সামলিয়ে নিবে।”

-“ইয়ারাবী এখানে বসে থাকবে,আমার কিছু কাজ আছে ঘন্টাখানিকের মধ্যে হয়ে যাবে।নেকাবটা খুলে ফেলো,আমার পারমিশন ছাড়া কোনো ছেলে আসবেনা।জয়িতা তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসবে।”

ইয়ারাবী মাথা নাঁড়ায়।আবরার রুম থেকে বের হয়ে আবার কিছু একটা মনে করে রুমে এসে বলে,

-“ডান পাশের রুমটাতে যাবেনা,আর হ্যাঁ,এই সারির একটা ড্রয়ারেও হাত লাগাবেনা।বামপাশের টা ওয়াশরুম।”

-“জ্বি,”

আবরার চলে যেতেই ইয়ারাবী নিজের ফোনটা অন করে ম্যাসেন্জারে ঢুকে অনু,চৈতির সাথে কথা বলতে থাকে।ঠিক পাঁচ-দশ মিনিট পর একটা মেয়ে দরজায় নক করে বলে,

-“ম্যাম ভিতরে আসতে পারি?”

ইয়ারাবী তাকিয়ে দেখে দরজায় ২৩-২৪ বছরের একটা মেয়ে ব্লাক কালারের থ্রী-পিচ পরে দাঁড়িয়ে আছে।এর ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে এই জয়িতা।ইয়ারাবী ইশারা করে ওকে রুমে আসতে বলে।জয়িতা হাসি-মুখে রুমে ঢুকে ওর হাতে একটা আইসক্রিম দিয়ে নিজে একটা নিয়ে বলে,

-“ম্যাম আমি জয়িতা।স্যারের পিএ…”

-“কিন্তু উনার পিএ তো..”

-“হ্যা জানি,ওনার পিএ হলো,বিহান।তবে আমি স্যারের এই ল্যাব এসিস্ট্যান্ট।আপনার নামটা যেনো কী,ও হ্যাঁ মনে পরেছে ইয়ারাবী।তবে আপনাকে দেখে মনে হয়েছিলো আপনি ষোল-সতের বছরের।”

-“আপু আমার আঠারো চলছে,আর আমি আপনার অনেক ছোট,প্লীজ তুমি করে বলেন।”

-“কিন্তু..”

-“কোনো কিন্তু নয়।”

-“ওকে তুমি করেই বললো।আমি কিন্তু খুব বাচাল,একবার কথা বলা শুরু করলে আর থামিনা।একারনে বিহান আমাকে বাচাল বলে ডাকে”

-“বিহান মানে?”

-“আমার ভাই,ওই যে ছেলেটাকে দেখলে।আমরা টুইন।”

#চলবে_____

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here