ভালোবাসি_প্রিয় পর্ব_৪৯

0
1897

ভালোবাসি_প্রিয়
পর্ব_৪৯
#সুলতানা_সিমা

সব সুখ আকাশ ছুঁতে পারেনা। কিছু কিছু সুখ আছে, যেগুলা মনের অনেক গভীরের জায়গাটা ছুঁয়ে এসে অসীম আকাশটাও ছুঁয়ে যায়। এই সুখগুলা হয় ভিন্ন। বিশেষ কিছু ছাড়া এই সুখ অনুভব করা যায়না। যে সুখটা আজ সুমনা অনুভব করছেন এর আগে এমন সুখ কখনো অনুভব করেননি তিনি। এই ফুটফুটে বাচ্চাটা উনার নাতনী শুনে যে সুখ পাচ্ছেন। উনার মনে হচ্ছে এমন সুখ মনে হয় এই পৃথীবিতে কেউ কোনোদিন পায়নি। এটা দিহানের বাচ্চা শুনে সুমনা চৌধুরীর মনের আকাশে সূর্য উঁকি দিলো। মনের সব আঁধার কেটে যাচ্ছে। এতো লাগছে উনার, খুশিতে কেঁদে দিলেন তিনি। দিয়া খুশিতে আত্মহারা হয়ে দিশাকে বলল “আপু এটা ভাইয়ার মেয়ে। এটা আমাদের ফুপিন।” দিহানের বাবা চোখের চশমাটা খুলে চোখের পানি মুছলেন। খুশিতে কেঁদে তিনিও দিয়েছেন। উনার মুখে তৃপ্তির হাসি। দিহানের মা দিহানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। অজনির দিকে হাত বাড়িয়ে অজনিকে বললেন “দিদুন। তুমি আমার দিদুন। আসো,দিদুনের কোলে আসো।”

দিহান তাঁর মায়ের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হাসলো। তাঁর মায়ের হাতটা সরিয়ে দিয়ে বলল “এটা আমার সেই বাচ্চা। যে বাচ্চাকে তুমি এবোরশন করাতে বলেছিলে। এটা তাঁর গর্ভে বড় হয়েছিলো যাকে তুমি বস্তির মেয়ে বলেছিলে। তুমি তো আমার মা হতে আম্মু, তবুও আমার সন্তানকে কীভাবে মারতে চেয়েছিলে তুমি? মানুষ দাদী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আর তুমি কিনা আমার বাচ্চাকে দুনিয়াতে আনতেই নারাজ ছিলে?” দিহানের মায়ের মুখ ছোট হয়ে গেলো। উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে সুমনা চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে আছেন। উনি দিহানের বাচ্চা এবোরশন করতে বলেছিলেন এটা কারো বিশ্বাস হচ্ছে না। দিহানের বাবা রাগান্বিত স্বরে বললেন “সুমনা এসব কী বলছে দিহান?” উনি মাথা নিচু করে চুপ হয়ে থাকলেন। দিয়া ঘৃণা নিয়ে বলল” ছিঃ আম্মু। তুমি এটা করতে পারছিলা? ভাইয়ার বাবা হওয়ার স্বাদ কেরে নিয়ে কী পেতা তুমি?” সুমনার চোখ দিয়ে টুপ করে দুফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো। কারো কোনো প্রশ্নের জবাব নেই উনার কাছে। উনি সত্যিই এমনটা করেছেন। কীভাবে এখন মুখ খুলে কথা বলবেন? লারা দিহানের কোল থেকে অজনিকে নিতে চাইলো। দিহান দিলোনা। তাঁর বড়মা নিতে আসলে সে বলে উঠে “আমার মেয়েকে কোলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই। “দিয়া দিহানের সামনে দাঁড়িয়ে বলল” “ভাইয়া আমরা তো কিছু করিনাই আমাদের সাথে রাগ করনা প্লিজ।” দিহান কিছু বলল না। অরিনের অনুমতি না নিয়ে কারো কোলে দিবেনা অজনিকে। আর তাঁর মায়ের কোলে তো অরিন অনুমতি দিলেও দিবেনা।

সবাই সুমনা চৌধুরীর দিকে ঘৃণিত চোখে তাকাচ্ছে। একটা মা হয়ে বাচ্চার চিহ্ন নষ্ট করে দিতে বলেন কেমনে তিনি? এটা কেমন মা? কিছুক্ষণ পরে অজনি বলে উঠে “পাপা দেখো মাম্মাম আসছে।” অজনির কথায় সবাই লুপার কেবিনের দিকে তাকালো৷ সাদা অ্যাপোর্ন পরা অরিনকে দেখে সবার চোখ কপালে উঠে গেলো৷ অরিন একজন ডক্টর। কারো বিশ্বাস হচ্ছেনা যেন? লারার মুখে হাসি রেখা ফুটে উঠলো। কতদিন পরে অরিনকে দেখেছে সে। সবার চোখ অরিনের দিকে। অরিনের অ্যাপোর্ন খুলে ডক্টর মালিহার হাতে দিয়ে বলল “থেনক্সস মালিহা। আমাকে ট্রিটমেন্ট করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। যদিও এটা এখানের নিয়ম নয় তবুও তোমরা আমার কথা রেখেছো। ” তারপর অরিন রুহানের দিকে তাকিয়ে বলল “মিস্টার রুহান। আপনার বোন খুব শীঘ্রই সুস্থ হয়ে যাবেন। চিন্তা করবেন না। আপাতত উনাকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। উনার কেবিনের সামনে হৈ চৈ কম করবেন। আর উনার ঘুম ভাঙলে উনাকে খাইয়ে অষুধ খাইয়ে নিবেন।” রুহানকে কথাটা বলেই অরিন দিহানকে চলুন বলে যেতে লাগলো। অরিন এমনভাবে গেলো যেন এখানে কেউই তাঁর পরিচিত নয়। দিহান তানভীও অরিনের পিছু পিছু চলে গেলো। দিয়া কেঁদে দিলো। মায়ের দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে বলল “চলে যাচ্ছি আমি। ভাইয়া যদি আমাকে তাঁর বাসায় না রাখে যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাবো। তবুও তোমাদের সাথে আর থাকবো না আমি।” দিয়া চলে যেতে লাগলো। দিশা বলল “দিয়া দাঁড়া। আমিও যাবো তোর সাথে।” মায়ের দিকে ঘৃণাভরা চোখে তাকিয়ে চলে গেলো দিশা।

গাড়ি স্টার্ট দিবে এমন সময় দিয়া আর দিশা এসে গাড়ির সামনের দাঁড়িয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে দু বোন একসাথে বলল “ভাইয়া আমরাও যাবো।” দিহান অরিনের দিকে তাকালো। অরিন মৃদু হাসলো। তারপর দিশা দিয়াকে বলল “উঠে পড়ো দুজন।” বলতে দেরি হলেও দুবোনের উঠতে একটুও দেরি হলোনা। তানভী মাঝখানে দুবোন দুপাশে উঠলো। গাড়িতে উঠেই ঝগড়া শুরু কে আগে অজনিকে কোলে নিবে এ নিয়ে। দিয়া অজনিকে টান দিয়ে নিজের কোলে বসালো। দিশা অজনিকে টেনে নিয়ে আসলো। দিয়া আবার নিয়ে গেলো। দিশা আবার নিতে চাইলো কিন্তু মুটকি দিয়ার সাথে পেরে উঠলো না। রাগে দিয়াকে চুল ধরে টান দিলো দিশা। এদের এমন ঝগড়া দেখে দিহান আর অরিন হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। টানাটানির একপর্যায়ে অজনি কেঁদে দিলো। আর কারো কোলে থাকবে না সে তাঁর পাপার কাছে চলে যাবে। না রাখতে পেরে দিহানের কাছে দিতে হলো। গাড়ি থামিয়ে দিহান অজনিকে নিলো। দিয়া দিশাকে বলছে,”তোমার জন্য আমার কোলে রাখতে পারিনাই।” দিশা দিয়াকে বলল “তোর মারামারি দেখেই তো কান্না করছে।” দিহান ধমক দিয়ে উঠল। দুবোন চুপ হয়ে গেলো।

সবার তীক্ষ্ণ চোখ সুমনা চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে আছে। এতো বড় কাজ কিভাবে তিনি করতে চাইলেন? তাও আবার এখন দিদুন বলে আহ্লাদ দেখাতে গেছিলেন। হানিফ চৌধুরী রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বেরিয়ে গেলেন হসপিটাল থেকে। লারা কান্না করছে। জিহান লারাকে নিয়ে একটু আড়ালে আসলো। তারপর বলল “লারা কেঁদোনা প্লিজ। কষ্টের হচ্ছে আমার।” লারা জিহানকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠল। কাঁদতে কাঁদতে বলল “বলেছিলাম না অরিন আমাকে ভুল বুঝবে। দেখেছেন? ও আমার দিকে একবারও তাকালো না। অথচ আমি দেখেছি ও কেবিন থেকে বেরিয়ে সবাইকে দেখছে।” জিহান লারার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল, “কেঁদোনা লারা। দিহান যখন অরিনকে খুঁজে পেয়েছে অরিন সবকিছু জানতে পারবে। ওঁর সাথে যা হয়েছে,তাতে ওঁর এমনটা করা স্বাভাবিক। তুমি দেখো একদিন ওঁর অভিমানের পাহাড় ভেঙে ভালোবাসার সাগরে পরিনত হবে।”

গাড়ি এসে থামলো একটা ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে। গাড়ি থেকে নেমে বাড়িটার দিকে থাকালো অরিন। দোতলার বাড়িটা খুব সুন্দর ডিজাইন। চারদিকে কতশত ফুল গাছ। বাড়ির সামনে একটা সুইমিংপুল। এই সুইমিংপুলটা একদম ভিন্ন। এখানের পানিটা দেখলে নীল লাগছেনা। গুলাপি লাগছে। পুলের নিচের কাজটা যে রংয়ের আছে পানিটাও সেই রং ধারণ করেছে।
অরিন বাড়ির দিকে তাকালো। একটা বারান্দায় গোলাপ ফুলের গাছ। অরিন খুব মনোযোগ দিয়ে তাকালো। এখানে আরো অনেক ফুলের গাছ লাগানো আছে। দিহান অরিনের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল” এটা আমাদের বেডরুমের বারান্দা।” অরিন খুশি হয়ে বলল “সত্যিইইইইইই?” দিহানকে অরিনের চোখে তাকিয়ে হাসলো। অজনিকে দিয়ার কাছে দিতে গেলে অজনি যায়নি। দিশার কাছেও যায়নি। শেষমেষ তানভীর কাছে গেলো। অরিন চারদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভিতরের দিকে যাচ্ছে। দিহান গিয়ে অরিনকে কোলে তোলে নিলো। আচমকা এভাবে কোলে তুলায় অরিন প্রথমে ভয় পেয়ে যায়। বুকে হাত দিয়ে দিহানকে বলে “উফ আপনি তো ভয় পাইয়ে দিছিলেন।” পিছন থেকে দিশাদের চাপা হাসি শুনা যাচ্ছে। অরিন দিহানকে বলল “এই কী করছেন এগুলা ওঁরা হাসছে।” দিহান দাঁড়িয়ে গেলো। দিশাকে ডাক দিয়ে বলল “দিশা আমি আমার বউ কোলে নিয়েছি বলে তোরা নাকি হাসছিস?” দিয়া দিশা একসাথে বলে উঠে “কই হাসছি। হাসবো কেন?” দিহান অরিনকে নিয়ে ভিতরে ঢুকলো। বাহিরটা যতটা সুন্দর ভেতর তাঁর থেকে বেশি সুন্দর। সব আসবাবপত্র গুলো বিদেশী। একেকটা ফার্নিচারের দামও হবে লাখের উপরে। দিহান অরিনকে নিয়ে তাঁদের রুমে গেলো। রুমটা আরো সুন্দর। সব কিছু শুধু সাদা আর সাদা। অরিন মুগ্ধ হয়ে চারদিকে তাকালো। দিহান অরিনকে কোল থেকে নামিয়ে বলল” পছন্দ হয়েছে।” অরিন বলল” অন্নেক পছন্দ হয়েছে।” দিহান অরিনের কোমর জড়িয়ে ধরে বলল” মনে আছে? একদিন রাতে বুকে মাথা রেখে ঠিক এইরকম একটা বাড়ি বানানোর পরিকল্পনা করেছিলে?” অরিন অবাক হয়ে তাকালো। কত বছর আগে বলেছে সে দিহান সেটা মনে রেখেছে। দিহান অরিনের কানের নিচে হাত রেখে বলল”তোমার স্বপ্ন ছিলোনা,আমাদের একটা ভিন্ন রকম সুইমিংপুল হবে সেখানে আমরা একসাথে সাতার কাটবো। তুমি বলেছিলে না, এমন একটা বেডরুম আমাদের থাকবে যেখানে শুধু সাদা রংয়ের সমাহার। কিন্তু সেই বেডরুমের বারান্দা হবে লালে লালে সাজানো। এই দেখো তোমার স্বামী সব দিয়েছে তোমায়। তখন ছোট্ট একটা চাকরি দিয়ে তোমার সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারতাম না বলে খুব কষ্ট হতো। কিন্তু আজ আমি অনেকখুশি। কারণ আজ আমি আমার বউয়ের একটা স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। তুমি খুশিতো সোনা?” অরিনের দিহানের হাতের উপর তাঁর হাত রেখে ছলছল চোখে তাকিয়ে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালো। দিহানকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো সে। দিহানের ভালোবাসা অদ্ভুত। সবার থেকে আলাদা।” অরিন দিহানকে বলল” আপনি না খুবই অদ্ভুত।”
_কী রকম?
_ আপনি জানেন? আপনি যতটা রাগি ঠিক ততটাই বউ পাগল।” দিহান হেসে উঠে বলল “আমি বউ পাগল হলে তুমিও জামাই পাগল।
_আচ্ছা এই বাড়িতে কে কে থাকে?
_আমি একাই থাকতাম।
_আপনার আব্বু আম্মু?
_উঁহু উনারা কখনো এসে থাকেননি তবে মাঝে মাঝে যখন আমি দুদিন তিনদিন হয়ে যেতো বাসায় যেতাম না। তখন নিতে আসতেন।”
_বাসায় যেতেন না কেন?
_একা থাকতে ভালো লাগতো তাই।” কিছুক্ষণ গেলো আর কারো মুখে কথা নেই। কিছুক্ষণ পরে দিহানের বুক থেকে মাথা তুলে অরিন বলল”আচ্ছা সবাইকে হসপিটাল দেখলাম, শাওন ভাই আর নীল ভাইকে দেখলাম না যে?” দিহানের কপালে ভাঁজ পড়লো। চিন্তিত হয়ে বলল,”আসলেই। ভালো কথা মনে করেছো একটা ফোন দেই।” দিহান ফোন বের করে আগে শাওনকে ফোন দিলো শাওন ধরেনি। তারপর নীলকে দিলো কিন্তু নীলের ফোন বন্ধ। দিহান অরিনকে বলল “আমার মনে হয় ওঁরা এখনো জানেনি।
_হতে পারে।

__________________

পিটপিট করে চোখ খুললো লুপা। চোখ খুলতেই চোখে পড়ে রুহানের কান্নারত চেহারা। কাঁদতে কাঁদতে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলছে। লুপা চোখ খুলতেই তাঁর বাবা মা রুহান হন্তদন্ত হয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন তাঁর কেমন লাগছে। কষ্ট হচ্ছে কিনা। রুহান বলে ” আপ্পি খুব কষ্ট পাচ্ছিস? কথা বল আপ্পি প্লিজ।” কোনো জবাব দেয়না লুপা। ভাইয়ের কথায় ডুকরে কেঁদে উঠে সে। লুপার মা বলেন “কাঁদিস না রে মা। কী এমন কষ্ট তোর যে মাকে ছেড়ে চলে যেতে চাইলি?” লুপা সবার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। চোখ দিয়ে অঝোর ধারা বৃষ্টি ঝরছে। কেন বেঁচে গেলো সে? এই অসয্য জীবন নিয়ে বাঁচবে কেমনে? নিজেকে অপরাধী মনে হয় তাঁর। অপায়া মনে হয়। নীলের জন্যও বেহায়া মন কাঁদে। এসব কিছুর তো একটাই সমাধান ছিলো। মৃত্যু। তাহলে কেন বাঁচালো তাকে। রুহান লুপাকে ধরে বসালো। লুপা কেঁদেই যাচ্ছে। তাঁর বাবা মা বার বার জিজ্ঞেস করছেন কি চাই তাঁর একটাবার বলতে, উনারা তাকে এনে দিবেন। লুপা কিছু বলছে না। কী বলবে সে? যে মানুষটাকে চায় সে মানুষটা তো তাকে চায়না। তাহলে কীভাবে সে তাকে আবদার করবে। কিছুক্ষণ পরে রুহান লুপাকে খাওয়াতে চাইলে লুপা খায়না। রুহান কান্নাজড়িত গলায় বলল,”আপ্পি জানিস আমি এখনো কিছু খাইনি।” লুপা ঠোঁট কামড়ে কেঁদে উঠে। চোখের পানি মুছে হা করে খেয়ে নিলো। লুপাকে খাইয়ে অষুধ খাওয়ালো রুহান। তারপর অরিন অজনির ব্যাপারটা লুপাকে বলল। অরিন তাঁর ট্রিটমেন্ট করেছে সেটাও বলল। সব শুনে লুপা রুহানকে বলল “আমাকে অরিনের কাছে নিয়ে যাবি রুহান? একটাবার আমি অরিনের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবো। শুধু একটাবার ক্ষমা চেয়ে বলবো ও যেন আমাকে নিজ হাতে খুন করে ওঁর সাথে হওয়া অন্যায়ের বদলা নেয়। ” বলেই হাউমাউ করে কাঁন্না করতে লাগে লুপা।

_______________________________

মদ খেয়ে মাতাল হয়ে খাটে পড়ে আছে নীল। মাতাল অবস্থায়ও বার বার লুপার নাম আওড়াচ্ছে। শাওন সোফায় বসে বসে নীলের এসব দেখছে। কষ্ট হচ্ছে তাঁর। খুব কষ্ট হচ্ছে নীলের জন্য। কিন্তু কী বা করবে সে? লুপার সাথে ফোনে কথা বলে তাঁর বাসায় ছুটে এসেছে নীল। এসে আবদার করছে তাকে এক বোতল মদ এনে দিতে। শাওন না বললে নীল মরে যাওয়ার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে শাওন গিয়ে এক বোতল নিয়ে আসে। সোফা থেকে উঠে শাওন তেঁতুলের টক জল নিয়ে আসলো। নীলকে ধরে বসিয়ে বলল “এই নে এটা খা। হাঁ করো।” নীল হা করলো না। ভাঙা গলায় বলল”

_এইইই শাওন জানিস লুপা না অনেএএএএএক হট। ওর ঠোঁট জোড়া,,উফফফ। উম্মা।”ফ্লায়িং কিস দিলো নীল। শাওন ধমক দিয়ে বলল ”
_ওই চুপ। নে ধর হাঁ কর।
_হাঁ করলে লুপা আসবে?
_হ্যাঁ আসবে। এসে তোর ভেতরে ঢুকে যাবে। নে হাঁ কর।” নীল হাঁ করে মুখে ঢুকিয়েই মুখটা বাঁকা করে সবটুকু জল শাওনের মুখের উপর ফেলে দিলো। শাওন রাগি লুকে তাকিয়ে ধমক দিয়ে বলল “এই কুত্তা ফেলবি তো ফেল। সবটুকু আমার মুখে ফেললি কেন?” নীল বাচ্চাদের মতো হাসতে হাসতে কেঁদে দিলো। তারপর শাওনের হাত দোয়ার মতো করে রেখে ভাঙা গলায় বলল “শাওন আল্লাহকে বল লুপাকে আমার করে দিতে। আমি আর মদ খাবোনা প্রমিজ। শুধু আল্লাহকে বল লুপাকে নীলের চাই-ই চাই।

চলবে,,,,,,,।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here