ভালোবাসি_প্রিয় পর্ব_৪০

0
1869

ভালোবাসি_প্রিয়
পর্ব_৪০
#সুলতানা_সিমা

এটা তোমার ভুল হয়েছে অজনি, তুমি কাউকে মিথ্যে বলবা কেন? তাও তোমার বাবার বয়সি কাউকে।” মায়ের ধমকে গাল ফুলিয়ে ফেলল অজনি। মেয়ের গোমড়া মুখ দেখে অরিনের খারাপ লাগলো। অজনিকে কোলে নিয়ে গালে চুমু দিলো। বাসায় আসতে না আসতেই তাঁর মেয়ে থাকে দুপুরের সবকিছু খোলে বলেছে। এটাও বলেছে সে তাঁর মায়ের নাম মিথ্যে বলেছে। অরিন অজনির চুল ঠিক করে দিতে দিতে বলল “যখন তুমি কাউকে মিথ্যে বলবে।আর তোমার মিথ্যেটা একদিন তাঁর কাছে ধরা পড়ে যাবে। তখন তোমার সত্যি কথা গুলাও সে মিথ্যে বলে এড়িয়ে যাবে। তাই কাউকে কখনো মিথ্যে বলতে নাই। বুঝেছো?” অজনি এখনো গাল ফুলিয়ে বসে আছে। অরিন অজনিকে খাটে রেখে কয়েকটা ব্যাগ বের করে আনলো। একটা ব্যাগ থেকে হোয়াইট গাউন বের করলো। একটা ছোট একটা বড়। আরেকটা থেকে ব্লু কালার ও আরেকটা থেকে সিলভার কালার। সব গুলায় একটা ছোট একটা বড়। মা মেয়ে সব সময় মেচিং করে সব কিছু পড়ে। অরিন অজনিকে বলল” নাউ চুজ করো।” অজনি চুপচাপ বসে থাকলো। অরিন বলল” কী হলো? বকা তো দেইনি তোমায়, রেগে আছো কেন?” অজনি এখনো চুপ। অরিন অজনিকে আবার কোলে নিলো। অজনির মাথা কাঁধে রেখে বলল “মন খারাপ করে থাকো কেন তুমি? তোমার মন খারাপ দেখলে আমার খুব কষ্ট হয় জানোনা?” অজনি মাথা তোলে অরিনকে বলল” মাম্মাম আমি তো মজা করেছিলাম।” অরিন মৃদু হাসলো। তাঁর মেয়ে স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে শিখে গেলেও, তাঁর এই পিচ্চি গলায় সব কথা গুলা অন্যরকম লাগে। স্পষ্ট হয়েও যেন স্পষ্ট না। আহ্লাদী মাথা কণ্ঠ। শুনতে অনেক ভালো লাগে । অজনি আবার বললো
_মাম্মাম ওই লোক না অনেএএএএএএক ভালো। আমাকে তোমার মতো করে আদর করে। জানো মাম্মাম, আমার উনাকে উনেএএএএক ভালো লেগেছে।
_ওকে তাহলে তোমার বার্থডেতে উনাকে দাওয়াত করা যায়, কী বলো?
_সত্যিইইইইই।
_হ্যাঁ তিন সত্যি।” অজনি অনেক খুশি হলো খুশিতে অরিনের গালে চুমু খেয়ে বলল” জানো মাম্মাম। ওই লোকটা না অনেক সুন্দর। সব থেকে বেশি সুন্দর।
_আচ্ছা তাই? এর থেকেও কিন্তু একজন সুন্দর মানুষ আছে।” অরিনের চোখে দিহানের চেহারা ভেসে উঠল” তাঁর হাসি,তাঁর কথা বলা,তাঁর দুষ্টুমি, তাঁর সেই ভয়ার্ত চেহারা, তাঁর রাগি লুক সব কিছুই আকৃষ্ট করার মতো। অনেক সুন্দর মানুষ সে।
_না গো মাম্মাম,তুমি দেখনি উনি বেশি সুন্দর। আমার মতো সুন্দর।
_হা হা হা। আচ্ছা তোমার মতো? আচ্ছা দেখা হলে দেখে নিবো কেমন সুন্দর। আসো এবার চুজ করো জামা। অজনি জামা চুজ করতে লাগলো। অরিন তাঁর মেয়ের দিকে তাকিয়ে মেয়ের কান্ড দেখতে লাগলো। অজনি আসলেই অনেক সুন্দর। একদম বাপের মতো সুন্দর হয়েছে। কে বলবে এটা অরিনের বাচ্চা? তাঁর বাবার গভীর চোখ, সেই সরু নাক, সেই গাল,সেই ঠোঁট। এমন কী বাপের গায়ের রংটাও পেয়েছে। দিহানের কথা মনে হতেই বুক ছিড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো অরিনের। কতোদিন হয়ে গেলো সে তাঁর ভালোবাসার স্বামীর চোখে চোখ রাখেনা। যেন কত যুগ পেরিয়ে গেলো তাঁর স্বামীকে সে দেখেনা। ভিজে যাওয়া চোখটা খুব সাবধানে মুছে নিলো অরিন।

সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট না করেই দিহান গেলো অজনিদের বাসায়। শাওন জানেইনা দিহান যে চলে গেছে, সে এখনো ঘুমেই আছে। দিহান কলিংবেল দিতেই অজনির নানু এসে দরজা খুলে দিলেন। অজনি সোফায় বসে বসে ভিডিও গেইম করছিলো। দিহানকে দেখেই দৌঁড়ে এসে দিহানের কোলে উঠল। দিহান অজনিকে কোলে নিয়ে তাঁর গালে নাকে কপালে অনেক গুলা চুমু এঁকে দিলো। অজনিও কম কিসে সেও দিহানের মতো করে দিহানকে চুমু এঁকে দিলো। দিহান হেসে তাঁর বুকে জড়িয়ে ধরলো। অজনিও দু’হাতে জড়িয়ে ধরে দিহানের গলায় মুখ লুকালো। কতো সুন্দর একটা দৃশ্য। এ যেন পৃথীবির সব থেকে সুখী বাবা আর সুখী মেয়ের ভালোবাসা। অরিনের মামার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। ইচ্ছে করছে মূহুর্তটা ভিডিও করে রাখতে। অজনিকে নিজের মা আর উনার পরে কারও সাথে মিশতে দেখেননি তিনি। এতোটা খুশিতেও বোধহয় দেখেন নি কোনোদিন। দিহানকে বসতে বলে উনি কিচেনে গেলেন।একটা ট্রেতে করে ভেজিটেবল পাস্তা,ক্রিস্পি ফ্রাইড চিকেন,সেন্ডুয়েচ এনে দিহানকে দিলেন। সাথে কফিও আছে। দিহান এসব দেখে শাওনের কালকে বলা কথাটা মনে পড়ে গেল। আসলে উনি ততটা কিপ্টা না যতটা কিপ্টা তাঁরা ভেবেছিলো। আবার হতে পারে এগুলা তাঁদের রেস্টুরেন্ট থেকে এসেছে খাওয়ার মানুষ নেই তাই দিহানকে খেতে দিচ্ছে? মাথায় হাবিজাবি প্রশ্ন উঠতেই দিহান নিজেকে নিজে গালি দিলো। দিহান উনাকে বললো” আংকেল শুধু শুধু কেন কষ্ট করছেন,এসবের কোনো প্রয়োজন ছিলোনা। উনি মৃদু হেসে বললেন” ভোরে ঘুম থেকে উঠে আমার মেয়ে, মানে অজনির মা নিজ হাতে এগুলা বানিয়েছে। হঠাৎ করে হসপিটাল থেকে একটা কল আসলো, তাই তাড়াহুড়া করে চলে গেলো। এখন আর এগুলা কে খাবে? তুমি যখন এসেছো আমরা সবাই মিলে খাই।” দিহান হাসলো। উনার কথাতে বা চেহারায় আজ কোনো রাগ নেই। দিহান পাস্তা হাতে নিয়ে আগে অজনির মুখে দিলো। অরিনের মামা বললেন” এই যে এতোকিছু বানানো হয়েছে, সব ওঁর জন্য বানানো। কাল ওঁর বার্থডে। তোমাদেরও দাওয়াত রইলো।
_অবশ্যই আসবো। দাওয়াত দিতে হবেনা।
_হা হা হা হা। তোমার সাথের জন আজ আসলো না যে?
_ও এখনো ঘুমে আছে। রাতে একটা প্রজেক্টের কাজে ঘুমাতে পারেনি।
_আরে তুমি শুধু ওকে খাওয়াচ্ছো কেন তুমিও খাও।
_খাবো আংকেল। আগে ওকে খাইয়েই নেই।” দিহান অজনিকে খাইয়ে সে শুধু একটা সেন্ডুয়েচ আর কফি খেলো। কিছুক্ষণ গল্প করে দিহান অজনিকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চাইলো। তাকে বিশ্বাস না হলে সাথে যেন উনিও আসেন সেটাও বললো। অরিনের মামা বললেন ” সমস্যা নেই তুমি একাই যাও। তবে যদি আমার মেয়ে তোমায় অনুমতি দেয় তো।” দিহান একটু চিন্তায় পড়ে গেলো। ডক্টর জুহা যদি যেতে না দেন? অরিনের মামার থেকে নাম্বার নিয়ে সে ফোন দিলো। প্রথম দুইটা কল দেওয়ার পরে ধরলো না। তিনবারের বেলায় ফোন রিসিভ করে অরিন হ্যালো বলল। ফোনের ওপাশের কণ্ঠস্বর শুনে, দিহানের বুকের ভেতর ধুক করে উঠল। খুব চেনা একটা অনুভূতি তাঁর মনের বন্ধ ঘরে কড়া নাড়লো। আবারও হ্যালো বলে উঠে সে। দিহান নিজেকে সামলে বললো”
_হ্যা হ্যা হ্যালো। মিসেস জুহা।

কণ্ঠটা এসে অরিনের কলিজায় ধাক্কা দিলো। কেন জানি মনে হচ্ছে খুব চেনা কারও সাথে কথা বলছে সে।
_হ্যালো।
_জ জ জ্বি বলুন।
_আব,,,,আমি আপনার মেয়েকে নিয়ে একটু ঘুরতে যেতে চাই। আপনি যদি অনুমতি দিতেন।” অরিন কিছু বলতে গিয়েও তাঁর গলায় আটকে যাচ্ছে। এ কেমন অনুভুতি হচ্ছে তাঁর? দিহান আবারও বললো
_হ্যালো মিসেস জুহা।
_হুম।
_ আপনি হয়তো আমি যে কাল এসেছি তা শুনেছিলেন। আপনার মেয়েকে আমার মেয়ের মতোই দেখছি চিন্তা করবেন না। আমি কিডন্যাপার না।
_ওকে নিয়ে যান। সাথে ওঁর নানুকেও নিবেন। রাখছি।” অরিন ফোন রেখে ফুঁস করে দম ছাড়লো। কেমন জানি দম বন্ধ অনুভূতি হচ্ছিলো তাঁর।

।অজনিকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো দিহান। সাথে তাঁর নানুও আছেন। সারাদিন ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যায় রেস্তোরাঁয় আসে দিহান। শাওন জানায় আগামী ১৭ তারিখ এস আই গ্রুপ অফ কোম্পানিতে তাঁদের একটা প্রজেক্টের মিটিং। তাই ১৬ তারিখের মধ্যে সব কমপ্লিট করে তাঁদের দেশে ফিরতে হবে।

একটা অন্ধকার ঘরে দাঁড়িয়ে আছে দিহান। ঘরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। হঠাৎ দিহানের পিছন থেকে ছোট বাচ্চার গলা আওয়াজ আসলো ” where are you papa! please come to my life!” দিহান পিছন ফিরে তাকাতেই বাচ্চাটা দৌঁড় দিলো। দিহানও পিছু পিছু দৌঁড়াচ্ছে, চিৎকার দিয়ে দাঁড়াতে বলছে কিন্তু তাঁর চিৎকার সে নিজেও শুনতে পাচ্ছেনা। কথা মনে হয় গলা দিয়ে বের হচ্ছে না। দিহান খুব দ্রুত দৌঁড়াতে চাচ্ছে, কিন্তু তাঁর পা যেন চলছেই না। হঠাৎ একটা বড় গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে মেয়েটা ছিঁটকে পড়লো রাস্তার পাশে। রক্তাক্ত দেহটা উল্টাতেই ভেসে উঠল অজনির মুখ। দিহান চিৎকার করে বলল “অজনিইইইইইই।”

লাফ দিয়ে উঠল দিহান। বড় বড় শ্বাস ফেলছে। হার্ট খুব দ্রুত উঠানামা করছে। এ কেমন স্বপ্ন দেখেছে সে? শাওন লাইট অন করলো। দিহান পুরো ঘেমে গেছে। শাওন হন্তদন্ত হয়ে বলল” কী হয়েছে দিহান? বাজে স্বপ্ন দেখেছিস?” দিহান দুহাতে মাথা চেপে ধরলো। তাঁর মাথা কাজ করছেনা। শাওন দিহানের দিকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো। দিহান ঢকঢক করে পানি খেয়ে শুয়ে পড়লো। দিহানের পৃথীবি থমকে আছে। অজনির রক্তাক্ত নিথর দেহটা বার বার চোখে ভেসে উঠছে। ফোন হাতে নিয়ে দিহান বারান্দায় আসলো। রাত তিনটা বাজে, এখন অজনির মাকে কল দেওয়া কী ঠিক হবে? দিহান একটা মেসেজ দিলো ” assalamualaikum! ojni kemon ache?” মেসেজ সেন্ড করে দিহানের মনে হলো এতরাতে মেসেজ দেওয়া বোকামি। আর ফোন দেওয়াটাও ঠিক হবেনা। কিন্তু অজনির খবর না জানলেও তাঁর ঘুম আসবে না। দিহান না পারতে কল দিয়েই দিলো। কয়েকবার কল দেওয়ার পরে কল রিসিভ করলো অরিন। ঘুমঘুম কণ্ঠে হ্যালো বললো। দিহানের মন আবারও চেনা সুখে জেগে উঠল। অরিন ছাড়া কোনো নারীর প্রতি তাঁর মন কখনো আকৃষ্ট হয়নি। এই প্রথম ফোনের ওপাশের নারীর কণ্ঠে সে আকৃষ্ট হলো। না না অরিন ছাড়া কারো প্রতি সে আকৃষ্ট হতে পারেনা। দিহান চট করে মাথা থেকে সব ঝেড়ে ফেলল। গলা খাঁকারি দিয়ে বলল”

_অজনি কী ঘুমাচ্ছে?
_জ্বি।
_ভালো আছে?
_জ্বি। আপনি এতোরাতে ফোন দিলেন যে?
_আসলে আমি অজনিকে নিয়ে একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি। তাই মনটা ছটফট করছে ওঁর খবর জানতে।
_জ্বি ভালো আছে সে। এখন রাখছি। আর হ্যাঁ কাল আমার অজনির পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। আপনিও আসবেন দাওয়াত রইলো।
_জ্বী অবশ্যই।
_বাই।”

অরিন ফোন রেখে দিলো। দিহান চিন্তিত মনে ভাবতে লাগলো। অজনির পাঁচ বছর পূর্ণ হবে কাল? অরিন পালিয়েছে পাঁচ বছর নয় মাস। এক কথায় ছয় বছর। তাহলে যদি অরিন এখনো তাঁর কাছে থাকতো তাহলে তাঁর বাচ্চাটাও অজনির সমান হতো। ভাবতেই বুক ভারি হয়ে এলো দিহানের। অরিন কই আছে কী করছে কেমন আছে সেটা তাঁর জানা নেই। শুধু জানে প্রতিটা মোনাজাতে সে অরিনকে ফিরে চায়। চাঁদের দিকে তাকিয়ে দিহান ভাঙ্গা গলায় বললো” কই তুমি অরি? আর কতো শাস্তি দিবে আমায়? মরে যাচ্ছি আমি। প্লিজ ফিরে আসো না। এতই অভিমান করেছো যে এই ছয় বছরে আমাকে তোমার ছায়াটাও দেখাওনি। মনে পড়ে কী অরি? তুমি সেই বৃষ্টি জল টুকু একটা বোতলে করে আলমারিতে খুব যত্ন করে রাখছিলে? জানো অরি,এখনো এই জল আমি যত্ন করে রেখেছি। সব থাকবে অরি শুধু আমি থাকবো না। তুমি ফিরে আসবে অরি, একদিন না একদিন ফিরে আসবে। কিন্তু ততদিনে তোমার দিহানের মৃত্যু চলে আসবে।” ডুকরে কেঁদে উঠল দিহান। প্রতিরাতেই সে অরিনের জন্য কাঁদে। যা অরিনের জানা নেই। অরিন যদি তাঁর কান্নাটা দেখতো তাহলে হয়তো পাগলের মতো ছুটে আসতো তাঁর কাছে। অরিনের অভাবে পোড়ে যাচ্ছে সে, তবুও সে চায়,অরিন যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক সুস্থ থাকুক । অজনির জন্য দিহানের বুকের ভেতর বার বার মুচড় দিয়ে উঠছে। ওয়াসরুমে গিয়ে অজু পড়ে এসে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়লো। অজনির জন্য আর অরিনের জন্য দোয়া করলো।

সারা রাত চলে গেলো দিহানের চোখের পাতা আর এক হলোনা। শুধু অপেক্ষা করে যাচ্ছে কখন সকাল হবে আর সে গিয়ে অজনিকে দেখবে। অপেক্ষা করতে করতে এক সময় তাঁর অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। দিহান শাওন রেডি হয়ে বের হলো। হোয়াইট ব্লেজার,ব্ল্যাক জিন্স পড়েছে দিহান। শাওন অ্যাশ কালার ব্লেজার পড়েছে। দিহান আর শাওন আগে শপে গেলো। অনেকগুলা গিফট কিনলো দিহান। শাওন দিহানকে বলল” দিহান শুধু শুধু এতোগুলা টাকা নষ্ট করার মানে হয়? এসব কী করছিস? যা চোখে পড়ছে তাই কিনে নিচ্ছিস?
_থাম ভাই, আমি তোর মতো ওতো কিপ্টা না। তুই তো বিশ টাকার নোট দশ ভাগ করে দুই টাকা করে দান করিস।
_ওই আমি কবে কাকে দুইটাকা দান করলাম?

_ভুলে গেছিস সেদিন দৌঁড়ে দৌঁড়ে কী দোয়া করছিলি? দিছিস টাকা? একটা ফকিরকে দুইটাকার দশটা নোট?

দুইটা মেয়ে তখন দিহান আর শাওনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো, দিহানের কথা শুনে কিঞ্চিৎ শব্দ করে হেসে উঠল তাঁরা। মেয়েগুলা একটু দূর যাওয়ার পরে দিহানকে শাওন এলোপাতাড়ি মারতে লাগলো। দিহান হেসে হেসে বললো ” আহা লজ্জা লাগে,মেয়েদের সামনে ইজ্জতের ফালুদা হলে?” শাওন রাগে বলল” শালা তোকে তো পরে দেখে নিবো।

দিহান একটা টেডিবিয়ার কিনলো অজনির জন্য। কেনাকাটা শেষে চলে আসলো তাঁরা। অজনিদের বাসার সামনে এসে গাড়ি থেকে নেমে। সব কিছু নিয়ে দরজার সামনে আসলো তাঁরা। কলিংবেল বাজালো শাওন। দিহানের হাতে ইয়া মোটা টেডিবিয়ার আরও কয়েকটা গিফট বক্স। দরজা খুলে দিলেন অরিনের মামা। উনি বললেন” কী ব্যাপার এতো লেট হলো কেন? আসো আসো ভিতরে আসো।” দিহান আর শাওন ভিতরে ঢুকলো। ভিতরে ঢুকে দু কদম এগিয়েই থেমে গেলো দিহান। তাঁর পায়ের শিরা থেকে মাথার শিরা পর্যন্ত শীতল হয়ে গেলো। চোখ দুটো ছলছল হয়ে জ্বলতে লাগলো। হাতের সব কিছু পড়ে গেলো ফ্লোরে। অস্পষ্ট ঠোঁটে বলে উঠল, ”অরি।”

চলবে…..।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here