#আমার_গল্পে_তুমি??
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#১০_পর্ব
,
ইয়ানার কথামত আর্দ্র অনিককে ফোন করে অফিসে আসতে বলল,,কিছুক্ষণের মধ্যে অনিক আসলো একরাতের মধ্যেই কেমন পাগল পাগল অবস্থা, চুল গুলো এলোমেলো মুখটা শুকনো চোখ দুটাও ফুলে গেছে অনিকের এমন অবস্থা দেখে আর্দ্র বলল,,,এক রাতের মধ্যে নিজের এ কি হাল করেছিস পুরাই দেবদাস, এতোই যখন ভাবিকে ভালোবাসিস তাহলে এই আকামটা করলি কেনো??
সেটাপ আর্দ্র আমি কোনো ভুল করিনি বরং তোরাই আমায় ভুল বুঝতেছিস।
হুমম আমার মনে হয় আমরাই অনিক স্যারকে ভুল ভাবতেছি, আর আমার তো ওই মেয়েটাকে কি যেনো নাম শেলী না ফেলি ওনাকেই সন্দেহ হয়, কেননা ওনি যখন কালকে অন্তরা আপুকে ধরে কাঁদতেছিলো আমি তখন ওনাকে ভালোভাবে খেয়াল করেছি ওনি তখন কাঁদতে ছিলো না কান্নার অভিনয় করতেছিলো।
তুমি কীভাবে বুঝলে??
বুদ্ধি থাকলে সবি বোঝা যায়,, আমরা মানে মেয়েরা যখন সত্যি সত্যি কান্না করি তখন দেখবেন চোখের পানি আর নাকের পানি এক হয়ে যায়,, যে কেউ কান্না করলে তার নাকেও পানি আসবে এটা শিওর কিন্তু ওই মেয়েটা তো একবারও নাক টানিনি শুধু কান্না করেছে আর চোখ থেকে পানি পরেছে যেনো মনে হচ্ছিল চোখে কিছু একটা দিয়ে কান্না করছে।
ইয়ানার কথা শুনে অনিক আর আর্দ্র একসাথে বলে উঠল,,হোয়াট?? কালকে মিস শেলীর কান্নার সময় ওনি নাক টানিনি বলে তোমার মনে হচ্ছে ওটা নকল কান্না ছিলো??
হুৃমম তা নয়ত কি।
রাবিশ,, ভাইয়া তুই ওর কথায় কান দিস না ওর কাজই হলো সব সময় তিলকে তাল করা,, তুই আমায় বল সেদিন পার্টিতে ঠিক কি হয়েছিলো।
তুই তো জানিস আমি ড্রিংক করি না তাই সেদিন পার্টিতে আমি শুধু জুস নিয়েছিলাম ওটাই খাচ্ছিলাম কিন্তু কিছুক্ষণ পরই মাথার মধ্যে কেমন যেনো ঝিমঝিম করছিলো তাই আমি আমার সাথে শেলি আর একটা ছেলে গিয়েছিলো আমাদের অফিসের স্টাফ সুজন ওকে ডাক দিয়ে বলি আমাকে আমার রুমে দিয়ে আসতে,, ও আমায় ধরে নিয়ে গেলো তারপর আমি হঠাৎ করে দেখি আমায় ওই ছেলেটা নয় অন্তরা ধরে আছে।
কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব আপু তো বাসায়।
হুমম আমিও তাই ভেবেছি যে অন্তরাতো বাসায় তাহলে এখানে আসবে কীভাবে তারপর আমি চোখটা ভালো করে ডলে আবার তাকালাম সবটা কেমন ঝাপসা লাগছিলো,, তারপর আর কিছু মনে নেই সকালে উঠে দেখি আমি বিছানায় খালি গায়ে শুয়ে আছি আর আমার পায়ের কাছে শেলী একটা চাদর জরিয়ে ধরে কাঁদছে।
ব্যাস এটুকু দেখেই তুই ভেবে নিলি যে রাতে ওই মেয়েটার সাথে তোর কিছু একটা হয়েছে?? পাগল নাকি তুই এটা তো সাজানো নাটক ও হতে পারে।
আমিও তো প্রথমে এটাই ভেবেছে তারপর শিওর হওয়ার জন্য হোটেলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখলাম ওখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আমি মাতাল হয়ে মিস শেলীর ঘাড়ে ভর দিয়ে আমার রুমে যাচ্ছি এখন বল তুই কি বলবি।
হুমম বিষয় টা খুবি সাংঘাতিক তুই বলছিস তুই ড্রিংক করিসনি আবার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে তুই মাতাল হয়ে মিস শেলীর ঘাড়ে ভর দিয়ে রুমে যাচ্ছিস ব্যাপারটা মনে হচ্ছে বড়সর একটা ঘাপলা আছে কেউ মনে হয় তোকে ফাঁসাতে চাচ্ছে।
স্যার আমার মাথায় একটা প্ল্যান এসেছে বলবো??
বলো।
বলছি কি আমরা যদি ওই শেলিকে ধরে নিয়ে আসি তারপর চেয়ারের সাথে বেঁধে উত্তম ম্যাধম দিই তারপর জিগাস করি যে সত্যিটা কি আমি শিওর ওনি সব গড়গড় করে বলে দেবে, প্ল্যানটা কেমন??
তোমার মাথা এসব আজগুবি প্ল্যান আবার যদি আমার সামনে বলো তো তোমার চাকরি আমি খেয়ে নেবো।
বাড়ি থেকে কিছু খেয়ে আসিনি নাকি আমার চাকরি খাবে, ধ্যাত আর কিছু বলবোই না,,, মনে মনে বলল ইয়ানা।
তাহলে এখন আমরা কি করবো আর্দ্র সত্যিটা কীভাবে বার করবো অন্তরা তো আমাকে বিশ্বাসই করছে না।
তোকে ওখানে পাঠানোই ভুল হয়েছে, এরপর থেকে আমি যাবো,, ভাবিকে এখন কিছু বলার দরকার নেই এমনিতেই ওনি অসুস্থ বেশি টেনশন দেওয়া ঠিক হবে না,,, ইয়ানা তোমার একটা কাজ আছে।
কি কাজ?? বিপদে পরলেই ইয়ানা আর এমনি সময় দূর দূর করে,,,
তুমি মিস শেলিকে ফলো করবে ওনি অফিস শেষে কোথায় যাচ্ছে কি করছে কার সাথে কথা বলছে সব কিছু দেখে আমায় বলবে ওকে৷
ওকে স্যার আমি রাজি,, আপুর চোখের পানি আমি মুছেই ছাড়বো,।
ডায়লগ কম মারো আর কাজে লেগে পড়ো।
একে দেখে তো মনে হচ্ছে আমার থেকে এরি বেশি টেনশন আমার বউকে নিয়ে,,, মনে মনে বলল অনিক।
,,,বিকেলে,,,,,
মিস শেলি অফিস থেকে বেরিয়ে একটা রিক্সা নিয়ে সোজা ওনার বাসায় চলে গেলো,, ইয়ানাও ওনাকে ফলো করে ওনার বাসায় গেলো,, একটা ফ্ল্যাটে ওনি একাই থাকেন রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো।
যাহ এখন আমি দেখবো কীভাবে যে ওনি ভিতরে কি করছেন,, অনেকক্ষন ভেবে ইয়ানা জানালার কাছে গেলো তারপর জানালা একটু ফাঁক করে দেখলো শেলি গোসল সেরে শুধু একটা টাওয়াল পড়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মাথা মুছতেছে,, তখনি একটা ছেলে ওকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
আরে ব্যাস ওনার স্বামীও আছে তাতো জানতাম না হুমম গভীর রহস্য দেখতে হচ্ছে ব্যাপারটা,, ইয়ানার আবার তাকালে দেখলো দুজন দুজনকে গভীরভাবে কিস করছে,, ছিঃ আরে ভাই আর কিছু করিস না বাকিটা পরে কর এখন তো কাজের কথাটা বল নয়ত আমার বিটকেল বস আমার চাকরি খেয়ে নেবে,,, একা একাই বিরবির করে বলল ইয়ানা।
আহ সুজন ছাড়ো আমায় আর বাসায় যাও কাল সকালে একটা বড় দাও মারতে হবে,,
ওহ হ্যাঁ আমার তো মনেই ছিলো না তা অনিক স্যারের কি খবর কিছু হলো??
কি হবে ওই এক বাচ্চার বাপকে বিয়ে করবো নাকি?? যদিও দেখতে হেব্বি তবুও না,, আর্দ্র স্যারকে ফাঁসাতে পারলে ভালো হতো উফ কি জোশ একটা ছেলে,,, কামুক ভঙ্গিতে ঠোঁট কাঁমড়ে বলল শেলী।
জোশ না ছাই গোমরা মুখো একটা সব সময় শুধু মুড নিয়ে চলে,,, আর কি বলল ও ফাঁসিয়েছে?? হুম দেখতে হচ্ছে ।
কিহ আমি থাকতে তুমি আর্দ্র স্যারকে বিয়ে করবে??,, রাগ দেখিয়ে বলল সুজন।
আরে রাগ করছো কেনো ওর থেকে টাকা নিতাম আর তোমার সাথে রোমান্স করতাম,।
হুমম ভালোই ফাঁসিয়েছ বেচারাকে।
হুমম তাইতো এবার মোটা অংকের টাকা আদায় করতে হবে ওনারা নিজেদের সম্মান বাঁচাতে আমার মুখ বন্ধ করতে চাইবে আর আমিও সেই সুযোগে টাকা হাতিয়ে নেবো,, বেচারা অনিক স্যার কিছু না করেই ফেঁসে গেলো।
আচ্ছা আমি চলে আসার পর রুমে কি হয়েছিলো ওইদিন।
আরে আমাদের প্ল্যানমতো অনিক স্যার এর জুস এ ঘুমের ওষুধ মিশানোর পর ওনি যখন ঘুমে ঢলতেছিলো তুমিতো ওনাকে রুমে দিতে গেলে, মাঝ পথে আমি ওনাকে নিয়ে রুমে গেলাম তারপর ওনাকে খাটে শুইয়ে ওনার জামা খুলে মুখে আর বুকে লিপস্টিক লাগিয়ে দিয়ে চলে আসছিলাম তারপর সকালের দিকে গিয়ে আমার জামা একটু ছিঁড়ে ওনার পায়ের কাছে বসে এমন ভান করলাম যেনো রাতে ওনি আমার সব কিচু কেঁড়ে নিয়েছে,,, আসল কাহিনি তো এটা রাতে আমি তোমার সাথে বাসর করেছি।
ওমমম সত্যি তোমার মাথায় অনেক বুদ্ধি চলো এখন আবার বাসর করবো,, তারপর দুজনে নিজেদের চাহিদা মিটাতে ব্যাস্ত হয়ে গেলো।
ছিঃ এসব আর দেখা যাচ্ছে না ভ্যাগিস এসব ভিডিও হয়নি,, এবার দেখাবো চান্দু এই ইয়ানা কি জিনিস অনিক স্যার এর মতো এতো ভালো একজন মানুষ কে ফাঁসানো তাও আবার টাকার জন্য।
ইয়ানা ওখান থেকে সোজা আর্দ্রদের বাসায় চলে গেলো তারপর আর্দ্রর সাথে দেখা করে ফোনটা আর্দ্র সামনে ধরে বলল। স্যার এখানে আমি সবকিছু ভিডিও করে এনেছি,,, ভাব নিয়ে বলল।
তাই নাকি কই দেখি,,
ইয়ানা ভিডিওটা অন করে আর্দ্র সামনে ধরতেই আর্দ্র ফোনের দিকে তাকিয়ে ইয়ানাকে একটা রাম ধমক দিয়ে বলল,, এসব কি দেখাচ্ছো আমায়??
কেনো স্যার প্রমাণ।
এটা প্রমাণ?? ফোনটা ইয়ানার দিকে ঘুরায়ে ধরে বলল,, ইয়ানা ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখল তখন শেলি আর সুজন এর কিসিং এর সিন চলছে ফোনে,, অনেক আগে থেকে ভিডিও অন করে রাখায় ওটাও ভিডিও হয়ে গেছে,, ইয়ানা জিব্বায় কাঁমড় দিয়ে একটা হাসি দিয়ে ভিডিও টা টেনে একটু সামনে আগায় দিয়ে আর্দ্রকে দেখালো।
চলবে,,,,,,,??