#আমার_গল্পে_তুমি??
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#৭_পর্ব
,
পড়ানো শেষে ইয়ানার কথামতো পরশ আর্দ্র রুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,,কিউটিপাই আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই কিছু হলে সব তোমার দোষ,, আমি কিন্ত বলে দেবো যে এই সব তোমার প্ল্যান।
পরশ চাচ্চুর চাম্প তুমি না সাহসী এতো ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই তুমি শুধু দরজায় টুকা দিয়ে বলবা যে চাচ্চু দরজা খোলো দেখ আমার হাতে কি এটা বলে জেদ করবে , এটা না করলে ওনি কিছুতেই দরজা খুলবে না,,জানি এটা ভুল পদ্ধতি তবুও ওনাকে কেস খাওয়ানোর জন্য এমনটা করায় যায়।
সাহসী না কচু চাচ্চু একবার রেগে গেলে আমার সাহস ফুস, পাপ্পার থেকে চাচ্চুকে বেশি ভয় লাগে,, এটা বলে পরশ আস্তে করে আর্দ্রর রুমের দরজায় টুকা দিয়ে বলল,,,চাচ্চু দরজাটা একটু খোলো না দেখো আমার হাতে কি,,,,
দীদুন নয়ত তোমার মাম্মামকে দেখাও চাম্প আমি কাজ করছি ,, ভিতর থেকে বলল আর্দ্র।
দেখেছো চাচ্চু কাজ করছে চলো চলে যায় ডিস্টার্ব করলে রাগ করবে,, ফিসফিস করে বলল পরশ ইয়ানাকে।
আরে ওনি ব্যাস্ত নাহ,, ওনি তো কেবল অফিস থেকে ফিরল তাই না?? তাহলে এখন কীসের ব্যাস্ত বলো,, আবার ডাকো।
তুমি একটুও কথা শোনো না,,, এটা বলে পরশ আবার আর্দ্র কে ডাকতে লাগল এভাবে বার বার ডাকায় আর্দ্র বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে বাইরে এসে বলল,, কি হয়েছে?? ততক্ষণে ইয়ানা লুকিয়ে পরেছে।
পরশ আর্দ্র কে বাইরে আসতে দেখে পাশে তাকিয়ে দেখলো ইয়ানা নেই,, পরশ চোখ বড় করে আর্দ্রের দিকে তাকিয়ে বলল,,, এই দাখো আমার হাতে বল।
এটা তো আমি দেখেছি চাম্প তুমি এটা দেখানোর জন্য আমায় ডাকলে?? তোমার পড়া শেষ না?? তাহলে যাও নিচে গিয়ে খেলো ওকে,, এটা বলে কেবলি আর্দ্র রুমে ঢুকতে যাবে তখনি পাশের একটা রুম থেকে আর্দ্রের ফুপি বেরিয়ে এদিকেই আসলো,,,আসলে ইয়ানা জানত যে আর্দ্রের ফুপি এখনি বেরোবে,, কেননা তখন অন্তরা বলেছিলো যে ওনি মাগরিবের নামাজ পড়ে তারপর কিছুক্ষণ জায়নামাজ এর উপর বসে জিকির করেন তারপর নিচে আসবে আর ইয়ানাও সেই সুযোগটাই কাজে লাগালো।
আরে আর্দ্র তুই এসেছিস আমি সেই কখন এসেছি তোকে একবার এর জন্যও দেখলাম না, চল নিচে চল কথা আছে,, এই বলে আর্দ্রের ফুপি শরীফা বেগম নিচে চলে গেলো।
হয়ে গেলো যেটার জন্য রুমে ছিলাম সেটাই হলো,, আর্দ্র বিরক্ত হয়ে ওর ফুপির পিছনে যেতে গেলে দেখলো ইয়ানা পরশের রুমের দরজার পিছনে দাঁড়িয়ে আর্দ্র কে দেখে হাসতেছে।
তারমানে এটা ওনার কাজ হুমম, একরাব হাতে পাই তারপর দেখাবো মজা।
ডয়িং রুমে শরীফা বেগম সহ কবির,, আশা ও অন্তরা সবাই বসে ছিলো তখনি পরশের হাত ধরে আর্দ্র নিচে নামলো,, আর্দ্র কে নিচে নামতে দেখে বাড়ির সবাই তো হা করে তাকিয়ে আছে।
আয় বস আমার কাছে,,, তা কবির ছেলের বয়স তো আর কম হইলো না আর কতদিন ছেলেকে বিয়ে না দিয়ে এভাবে বসায়ে রাখবি,, অন্তরার মতো একটা লক্ষী মেয়ে দেখে বিয়ে দিয়ে দে।
আমি কি করবো আপা ওই তো বিয়ে করে না।
সেকিরে আর্দ্র এসব কি৷ তুই জানিস না বিয়ে করা ফরজ,, এভাবে আরো নানা কথা বলে আর্দ্র কে জ্ঞান দিতে লাগল, আর এদিকে আর্দ্র পারছেনা এখান থেকে ছুটে চলে যেতে চুপচাপ দাঁড়িয়ে কথাগুলো হজম করছে,, ইয়ানা এককোনায় দাঁড়িয়ে ছিলো আর্দ্রের করুন মুখ দেখে ওর খুবি হাসি পাচ্ছে তবুও দাঁতে দাঁত চেপে কোনোমতে হাসিটা দামিয়ে রেখেছে, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো কই মুখ ফসকে একটু জোরেই হেসে ফেলল,, ইয়ানার হাসি শুনে সবার চোখ ইয়ানার দিকে গেলো অন্তরা ইশারায় ওকে চুপ থাকতে বলছে আর্দ্র রেগে লাল হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে যেনো কাঁচা চিবিয়ে খাবে।
ওই মাইয়া এদিকে আসো,,
শরীফা বেগমের কথা শুনে ইয়ানা হাসি বন্ধ করে হেঁটে ওনার সামনে এসে দাঁড়াল।
তুমি কে? তোমাকে তো চিনলাম না আর এতোক্ষণ কই ছিলে??
আসোলে ফুপি ও হলো ইয়ানা পরশের টিউশন টিচার, কয়দিন হলো ও পরশকে পড়াচ্ছে।
ওহ মাস্টারনী,, তা আর্দ্র বাড়িতেই এতো সুন্দর একটা মেয়ে থাকে তবুও তোর পছন্দ হয় নাহ?? এতো সুন্দর মেয়ে পছন্দ হলে নিঃসংকোচে বলবি, তুই কি বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিস নাকি??
শরীফা বেগমের কথা শুনে ইয়ানা চোখ বড় বড় করে আর্দ্রের দিকে তাকালো দেখলো আর্দ্র বিরক্তি নিয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।
শরীফা বেগম আরো কিছু বলতে যাবে তখনি পরশ বলে উঠল মাম্মাম আমি মিষ্টি খাবো ,, অন্তরা কেবলি উঠতে যাবে তখনি ইয়ানা বলল,, আরে আপু তোমাকে উঠতে হবে না তুমি থাকো আমিই পরশকে কিচেনে নিয়ে যাচ্ছি,, এই মহুর্তে এখান থেকে সরতে হবে নয়ত এই মহিলা না জানি ধরে বেঁধে আবার ওই গোমরা মুখো লোকটার সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়,, মনে মনে বলল ইয়ানা।
দেখেছো আমি তোমাকে বললাম না চাচ্চু রাগ করবে,,, মিষ্টি খেতে খেতে বলল পরশ।
হুমম তাতো দেখলামই,
,, কি গো পেয়েছো নাকি মিষ্টি?? কিচেনে এসে বলল অন্তরা।
হুম আপু, আচ্ছা আপু আমি এখন আসি বেশি রাত হলে আম্মু আবার রাগ করবে।
আচ্ছা ঠিক আছে যাও,,,
অন্তরার থেকে বিদায় নিয়ে কেবলি কিচেন থেকে বেরোতে যাবে তখনি সামনে আর্দ্র এসে দাঁড়াল।
কি হলো এভাবে সামনে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো??
তা তোমার উত্তর কি কাল থেকে অফিস জয়েন করছো তো??
হুম আমি রাজি।
গুড,, ওকে এখন যাও।
কি হলো ওনি কিছু বললেন না কেনো ওনাকে এতোগুলা ভাষণ শুনালাম তবু ওনি এমন চুপচাপ আছেন,, কি জানি ওনার মনের ভিতর কি চলছে,, মনে মনে এটা বলে বেরিয়ে গেলো ইয়ানা।
কাল থেকে বুঝবে কাজ কি, আর্দ্র এর সাথে লাগতে আসলে পস্তাতে হয় সেটা তুমি খুব ভালো করেই টের পাবে মিস ইয়ানা,, মনে মনে বলল আর্দ্র।
,,,,,রাতে,,,,,
শোনোনা আম্মু আমি ভেবেছি যে টাকা গুছায়ে একটা স্কুটি কিনবো তারপর তোমাকে পিছনে বসায়ে সারা ঢাকা শহর ঘুরাবো,,, খেতে খেতে বলল ইয়ানা।
হুমম এখনো অফিসে গিয়ে কাজই করলো না তার আগেই কতশত ভেবে বসে আছে। ইয়ানাকে খাইয়ে দিতে দিতে বলল ওর মা।
ভাবতে তো হবেই, তুমি দেখো আম্মু আমি তোমার কোনো কষ্ট পেতে দেবো না, একদম রাণীর মতো করে রাখবো।
আচ্ছা রাখিস পাগলি একটা,, এখন চুপচাপ খেয়ে নে তো, অনেক রাত হয়েছে কালকে আবার অফিস আছে।
হুম ঠিক বলেছো আজকে সকাল সকাল শুয়ে পড়তে হবে কাল তো আবার অফিস আছে,, দাও যলদি খাইয়ে দাও,,,
,,,,সকালে,,,
ঢাকা শহরে যে জ্যাম তাই একটু তারাতারিই বেরিয়ে পড়েছি নয়ত দেরি হলে আবার ওই গোমরা মুখো টা কি বলবে কে জানে,,, অবশেষে অফিসে আসতে পারলাম যাক বাবা টাইমের মধ্যেই এসেছি তবে আমি বসবো কোথায়?? হায় হায় এটা তো আমি জানি না এখন কি করবো,, আশেপাশে তাকিয়ে দেখি এরি মধ্যে প্রায় অনেকেই চলে এসেছে আর তারা তাদের ডেস্কে বসে পড়েছে,, সবাই সবার কাজ নিয়ে ব্যাস্ত কেউ আমার দিকে তাকাচ্ছেই না,, উফফ কি যে করি,,, কিছুক্ষণ ভেবে মাথায় একটা বুদ্ধি এলো,, কালকে যে রুমে ইন্টারভিউ হয়েছিলো সেই রুমে গিয়ে বসে থাকি তারপর ওনি আসলে ওনার থেকে জেনে নেবো যে আমার ডেস্ক কোনটা,, সকালে ফোন করে ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলাম তাও এতো লেট হুমম?? সে আবার বড় বড় কথা বলে।
আজকে একটু দেরি হয়ে গেলো,, তারাহুরো করে আর্দ্র অফিসে ঢুকে সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিজের কেবিনে চলে গেলো গিয়ে দেখলো সোফায় ইয়ানা বসে আছে।
তুমি?? এখানে কি করছো??
চলবে,,,,,???