#মনের_অন্দরমহলে
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১৭
–“দেখো, আমি ছেলের বউ হিসেবে আনিশাকে মেনে নিতে পারছি না। ওর মতো অন্ধ মেয়ে এই বাড়ির বউ ভাবতেই অসহ্য লাগছে আমার।”
কাঠ কাঠ গলায় স্পষ্ট করে কথাটি বলে দিলেন মিসেস. মালিহা। তা শুনে সাহাদ সাহেব মুখ তুলে তাকালেন। উনি ল্যাপটপে বসে প্রেজেন্টেশন চেক করছিলেন। অফিসের সবটা তো উনাকেই সামলাতে হয়। আয়াশ তো অফিসের কাজকর্ম সামলাবে না বলে একেবারেই অস্বীকার করে বসে আছে। তারপর সাহাদ সাহেব আবারও গম্ভীর ভাবভঙ্গিতে ল্যাপটপে চোখ রেখে বললেন…..
–“হঠাৎ ওকে নিয়ে পড়লে কেন? ছেলেকে নিয়ে তোমাকে চিন্তা নেই তাহলে ছেলের বউকে নিয়ে এতো মাথাব্যথা কেন?”
–“কারণ, আনিশার জন্য আমার ফেস লস হচ্ছে।”
–“ওর বিয়ের কথাটা তো কেউ জানে না। তাহলে ফেস লস হবে কি করে? আর যতদিনে ওদের বিয়ে সম্পর্কে জানাজানি হবে ততদিনে তো মেবি আয়াশ ঠিক ওর বউয়ের চোখের অপারেশন করে ঠিক করিয়ে নেবে।”
মিসেস. মালিহা তবুও দমলেন না। বেশ বিরক্ত হয়ে বললেন…..
–“কিন্তু ওদের স্ট্যাস্টাস তো যা ছিল তাই থেকে যাবে। গরীবকে বড়লোকে কি করে রুপান্তর করবে আয়াশ? আর ফেস লস হচ্ছে না বলছো? সেদিনই আমার ফ্রেন্ডের মেয়ের বিয়েতে গিয়েছিলাম। তারপরেই আমার এক ফ্রেন্ডে বলল তার ভাগ্নে নাকি রিপোর্টার। সেখান থেকে খবর পেয়েছে আয়াশ একটা অন্ধ আর কমবয়সী মেয়েকে বিয়ে করেছে। আমি সামলানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। এই নিয়ে কত কথা হয়েছে তুমি জানো? আমি জাস্ট মানতে পারঋু না এসব। তুমি কিছু একটা করো।”
–“অদ্ভুত তো! এতে আমি কি করব? ওদের তো বিয়েও হয়ে গেছে। আর আয়াশকে তুমি চেনো মালিহা। ও আনিশার জন্য কতটা ডেস্পারেট তুমি সেটা বিয়ের দিন সচক্ষে দেখেছো। এখন আনিশার নামে কোনো কথা বললে ও মানবে না।”
–“ও ডেস্পারেট তো কি? ও তো এমনই। পৃথিবীতে মেয়ের কম পড়েছে? তোমারও শেষমেশ মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হবে বলে রাখলাম আমি। এখনি কিছু একটা করো সময় থাকতে।”
অস্থির ভঙ্গিতে কথাগুলো একনাগাড়ে বলে দিলেন মিসেস. মালিহা। উনার কথায় এবার সাহাদ সাহেবও বিরক্ত হয়ে উঠলেন। তিক্ত মেজাজ নিয়ে বললেন….
–“আমি কি করতে পারি? আয়াশ কোনো বাধ্য মা-বাবার ছেলে নয় যে আমি ওকে বুঝিয়ে দেব আর ও সেটা হাসিমুখে পালন করে যাবে। আনিশার থেকে ওকে দূরে করতে চাইলে বাড়িটাই তছনছ করে দেবে ও। আমি এসব পারব না।”
–“যতই হোক ও তো তোমার ছেলে। বুঝিয়ে না হয় ব্ল্যাকমেইল করো বা বাধ্য করো। আনিশাকে আমি নিতে পারব না। আমাদের প্রেস্টিজ এর কথা অন্তত ভাবো। আর যদি আনিশাকে এই বাড়ি থেকে না তাড়াতে পারো আমি চলে যাব আমার মায়ের বাড়ি। এই বলে রাখলাম।”
কথাগুলো চিল্লিয়ে বলে ঘর থেকে হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলেন মিসেস. মালিহা। সাহাদ সাহেব পড়লেন এক বিরক্তিকর অবস্থায়। কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারলেন না। উনার ছেলেকে উনি ভালো ভাবেই চিনেন। যেখানে ও নিজের বাবাকে বাবাই হিসেবে মানে না সেখানে নিজের বাবার কথায় নিজের বউকে ছেড়ে দেওয়া একটা স্বপ্নের মতো!
বিষন্ন মনে বেলকনিতে হাঁটু গুঁজে বসে আছি আমি। একবার ভাবছি নীলাদ্রের কথা। আর একবার আয়াশের কথা। দুজনের কথায় আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। আয়াশের বারংবার করা আমার প্রতি সেইসব খারাপ আচরণ সহ্য করার পর মনে হচ্ছে নীলাদ্রের কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে ঠিক। আমার উচিত লোকটাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়া। কিন্তু তাতে সায় দিয়েও কথা থেকে যেন বাঁধা পাচ্ছি। সব মিলিয়ে আমার মাথা কাজ করছে না। আজ আয়াশ সকলের সামনে আমার সঙ্গে যা ব্যবহার করেছেন তা মানার মতো নয়। এসব মেনে নেওয়া যায় না।
এসব ভেবে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলতেই পিহুর ডানা ঝাপটানো সঙ্গে তার আওয়াজও পেলাম।
–“পিহু, তুই-ই বলে দে আমি কি করব? কোনদিকে যাব? আমার সামনে কতগুলো অচেনা রাস্তা আর বাঁক রয়েছে। কি করে পাড়ি দেব সেইসব? কাকে বেছে নেব? আয়াশ নাকি নীলাদ্র? কার সঙ্গে নিজের ঘর বাঁধা উচিত? এটা কোন গোলকধাঁধা?”
–“পি….পি…পিহু পিহু!”
–“ধুর আমিই বোকা। তোর থেকে সাজেশন চাইছি। সারাদিন তো এই একটা ওয়ার্ড কিছুই বলতে পারিস না।”
একটু থামলাম। আবারও বললাম…..
–“তোর কি মনে হয়? আমি ঠিক নাকি আয়াশ?”
পিহুর কাছে উত্তর হিসেবে রয়েছে শুধু তার নিজের নাম ধরে ডাকা। সেটাই সে করছে। আমার বড় শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করতেই আমায় অশান্ত করার লোকটা হাজির হলেন। সঙ্গে সঙ্গে অস্থিরতা বাড়লো। তবুও এমন হাবভাব নিয়ে থাকলাম যেন আয়াশের উপস্থিতি আমি টের পাইনি।
–“সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। এখনো এখানে বসে কি করছো? চলো ঘরে চলো।”
আমি আগের মতোই বিষাদ মুখে বসে রইলাম। যেন আমি আয়াশের কথা শুনতেই পাইনি।
–“কি হলো শুনতে পাচ্ছো না? ঘরে চলো। তোমার নামে কিছু জিনিস এনেছি। দেখবে চলো।”
–“পিহু? তোকে দুপুরে কিছু খেতে দেওয়া হয়নি না? খেতে দেব তোকে?”
আয়াশের কথায় পাত্তা না দিয়ে পিহুর উদ্দেশ্যে কথাগুলো বললাম আমি।
–“আনিশা! আই এম টেলিং ইউ সামথিং।”
উনি আমায় আনিশা তখনই ডাকেন যখন উনি ভীষণভাবে রাগতে শুরু করেন আমার ওপর। তবে আজ আমিও উনার রাগের ভয়ে সকল কথা মানতে মানতে ক্লান্ত। আমি আবারও পিহুকে বললাম…..
–“পিহু, দাঁড়া তোকে খাবার দিচ্ছি।”
বলেই খাঁচার পাশে খাবার হাতাতে লাগলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ হলো। চোখমুখ খিঁচে ফেললাম আমি। যেন পিহুর খাঁচাটা নিচে পড়ে গেল। আমি উঠে দাঁড়িয়ে অস্থিরতার সঙ্গে নড়াচড়া করে বোঝার চেষ্টা করলাম কি হলো। পিহু জোরে জোরে ডাকছে। তার কন্ঠস্বর শুনে বুঝতে পেরেছি ওর কিছু একটা হয়েছে। আর অস্ফুটস্বরে বললাম…..
–“পি…পিহু?”
আমার চুল টেনে হাতের সঙ্গে পেঁচিয়ে ধরলেন আয়াশ। পেঁচাতে পেঁচাতে একেবারে গোঁড়ায় ধরতেই ‘আহহ’ করে উঠলাম আমি। তাতে কোনো ভাবান্তর হলো না আয়াশের। আগের ন্যাশ শক্ত গলায় বলে উঠলেন….
–“যেদিন ওই পাখিকে এনেছিলে সেদিন স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছিলাম যে আমার থেকে ওকে বেশি পাত্তা ওকে মারতে আমার শুধু কয়েক মিনিটই যথেষ্ট। আমার থেকে ওকে গুরুত্ব দিচ্ছো তুমি? ওই সামান্য পাখিকে?”
–“তো? ও অন্তত আপনার মতো নিজের সিদ্ধান্ত আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দেয় না। ও আপনার মতো ক্ষণে ক্ষণে শাসায় না। ও অবলা প্রাণী। তবুও হয়ত আমাকে বুঝতে পারে। আপনি কি করেন?”
আয়াশ যেন থমকালেন। উনার নিশ্বাসপ্রশ্বাসের শব্দ ছাড়া কিছুই শোনা গেল না। পিহু এখনো ব্যাথাকাতুর হয়ে ডেকে চলেছে। হঠাৎই নিজের দিকে আমার মুখ ঘুরিয়ে নিলেন উনি। গরম নিঃশ্বাস আমার মুখে পড়তেই আমার অবাধ্য অনুভূতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। কিছু সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা মনে এলো।
–“তুমিও তো আমাকে বুঝতে পারো না। আমাকে চিনতে পারো না। আমার ভেতরের আমিটাকে খুঁজে বের করতে পারো না। আমি তখন শপিংমলে কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম সেটা তুমি করে বুঝবে? বুঝবে না। ওই রঙটা অভিশপ্ত। বেগুনী রঙ যতটা সুন্দর ততটাই অভিশপ্ত। সেই রঙের শাড়ি পড়ে আমার মা…..!”
–“আপনার মা কি?”
–“ওই রঙের শাড়ি সেদিন আমার সো কলড বাবা গিফট করেছিল। আর সেই শাড়ি পরেই আমার মায়ের শাড়িতে আগুন লাগে। আর কিছু বোঝার আগেই সব শেষ হয়ে যায়।”
কথাগুলো কাতর সুরে বললেন আয়াশ। আস্তে আস্তে উনার হাত থেকে চুলগুলো আলগা হয়ে এলো। তবে উনি অন্য হাত দিয়ে আমার কোমড়ও খামচে ধরে আছেন। আমি উনাকে আশ্বস্ত করে বললাম…..
–“ওই রঙের শাড়িতে আগুন লেগেছিল বলেই যে আমার শাড়িতেও তাই হতো এমনটা তো নয়। এজন্য এতোটা সিনক্রিয়েট না করলেও পারতেন।”
–“তুমি জানো না। কেউ জানে না। ওটা বাজে রঙ।”
রেগে বললেন আয়াশ। আমি ঢক গিলে বললাম….
–“আমায় পিহুকে তুলতে দিন। ওর লেগেছে। আপনি কেন ওই অবলা প্রাণীর ওপর নিজের রাগ দেখাচ্ছেন? এটা কেমন আচরণ?”
–“আমারও তো লাগে। খুব ব্যাথা লাগে। তবে এখানে। যেটা তুমি দেখতে পাও না। হয়তবা দেখতেই চাও না।”
কথাগুলো শান্ত কন্ঠে বলে আমার হাতটা নিয়ে রাখলেন উনার বুকের বাম পাশে। আমার হাতে অনুভূত হলো উনার হৃৎস্পন্দন। ধক ধক করে ওঠা হার্টবিটের তালে তালে আমিও কেঁপে উঠছি। আমি সরিয়ে নিলাম হাত। উনার কাছ থেকে সরে আসতে চাইলে উনি ছেড়ে দেন আমায়। স্বস্তি নিয়ে নিচু হয়ে খাঁচা তুলে সোজা করে রাখলাম। তবে বুঝতে পারছি না পিহুর কোথায় লেগেছে! ভাবলেশহীন হয়ে খাঁচাতেই হাত বুলিয়ে যাচ্ছি আমি। আয়াশ একসময় নিজ থেকে বললেন…..
–“ওর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। যখন ফেলে দিয়েছিলাম উড়ে উঠেছিল মাত্র।”
–“খুব নৃশংস মানুষ আপনি আয়াশ।”
শুকনো গলায় বললাম আমি। পাখিটা আমার খুব প্রিয়। এর যদি কিছু একটা হয়ে যায় জানি না আমি কি করব! ওর প্রতি যা মায়া আমার সৃষ্টি হয়েছে তা বোঝানোর ক্ষমতা নেই। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে কান্না আটকাবার চেষ্টায় রয়েছি।
–“হ্যাঁ আমি জানি আমার মধ্যে ভালোর কোনো ছিটেফোঁটাও নেই। কথায় বলে বিপরীত মানুষের প্রতিই মানুষ আসক্ত হয়। আমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। কেউ বলেছে, একজন নারী যেমন একটা মানুষকে ভালো থেকে খারাপ পথে নিয়ে যেতে পারে ঠিক তেমনই একজন নারীই পারে খারাপ মানুষকে ভালো পথে নিয়ে আসতে। একটা নারী যে সর্বগুন সম্পন্ন হয়। পুরুষের পরিপূরক হয়। সেই নারীকে এনেছি আমার জীবনে। আমার জীবনটা ধন্য করতে।”
আয়াশের প্রতিটা কথা আমার মনের ভেতরে গভীর ভাবে নাড়া দিয়ে উঠল। মস্তিষ্কে কথাগুলো পুরোপুরি ভাবে ঢুকে গেল। কথাগুলোতে গভীর আবেশ ছিল। ছিল স্নিগ্ধতা। উনার কন্ঠে ছিল না কোনো কাঁপুনি। ছিল না মিথ্যে। শুধু ছিল সত্যি!
পায়ের শব্দ পেয়ে ধ্যান ভেঙ্গে নড়েচড়ে উঠে দাঁড়াই। আয়াশ হয়ত চলে গিয়েছেন। রয়ে গেলাম আমি। উনি চলে তো গেলেন আমায় রেখে গেলেন দিশেহারা বানিয়ে!
খেয়েদেয়ে বসে ছিলাম নিত্যদিনের মতো ঘরের কোণে। আমার পাশে হরেকরকম শপিং ব্যাগ। আয়াশের দেওয়া সেইসব। কোনোটাতে শাড়ি আর কোনোটাতে অর্নামেন্টস। কয়টা বাজে আমার জানা নেই। আচমকা টুং টাং শব্দে চমকে উদভ্রান্ত হয়ে পড়লাম। বিষন্ন মনটায় হারমোনিয়ামের সুরের ছোঁয়া পেয়ে যেন চারিদিকে সুন্দর হয়ে উঠল। আয়াশ হারমোনিয়ামে সুর তুলছেন। আমি উচ্ছ্বাসের অন্ত খুঁজে পেলাম না। এটাই যেন আমার দরকার ছিল। কিন্তু সুরগুলোও যেন আজ বিষন্ন।
আগ্রহের সঙ্গে পা বাড়ালাম আয়াশের ঘরের দিকে। উনার ঘরে ঢুকলাম। হারমোনিয়াম রাখা ঘরের কাছে গিয়ে থামলাম। উনি হয়ত নিজের সুর তুলতেই মগ্ন। সেই মগ্নতা দূর করে উনি বলে উঠলেন…..
–“ভেতরে এসো। তোমারই অপেক্ষায় ছিলাম।”
আমি বিস্ময় হয়ে ধীর পায়ে ঘরে ঢুকলাম। সঙ্গে সঙ্গে হেঁচকা টেনে হারমোনিয়ামের সামনে বসিয়ে দিলেন আয়াশ।
–“আ….আপনি কি করছেন?”
–“হুঁশশ! দেখোই না কি করি। আপনা-আপনি বুঝতে পারবে।”
আয়াশ আমার হাতের ওপর হাত রেখে আমার হাত ধরে হারমোনিয়ামে আমার আঙ্গুল দ্বারাই সুর তুলতে থাকলেন। আমার দিকে নিচু হয়ে রয়েছেন উনি। আমায় আবদ্ধ করে সুর তুলছেন। এই প্রথম এই হারমোনিয়ামে সুর তুলে আমার মনে অন্যরকম আনন্দ লেগে গেল। মুখে ফুটে উঠল হাসির রেশ। বিষন্নতা কেটে গেল নিমিষেই। ভুলে গেলাম আয়াশের রুড ব্যবহার! তবে সুরগুলোতে রয়েছে বিষন্নতায় ভরা!
একটা সময় থামিয়ে দিলেন আয়াশ সুর তোলা। আমায় উনার দিকে করে নিচু হয়ে বসে আমার কোলে মাথা রাখতেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ি আমি। পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিই। আমায় কাছে টেনে আমার পেটে মাথা গুঁজে দিতেই বিপাকে পড়ে যায় আমি। তড়তড় করে ঘেমে যাই। কয়েক সেকেন্ড পর অনুভব করি আমার জামা ভিজে গিয়েছে আয়াশ যেখানে মাথা গুঁজে দিয়েছেন। বুঝতে একটু সময় লাগলো যে আয়াশ চোখের পানি ফেলছেন অর্থ্যাৎ কাঁদছেন। বুকটা ধক করে উঠল। সঙ্গে অনেক বিস্ময় জমা হলো আমার চোখে। ‘আয়াশ’ নামক মানুষটার সামনে ‘কান্না’ শব্দটা ঠিক যায় না! তাই বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে উনি কাঁদছেন। উনি ফুঁপিয়ে উঠে আগের অবস্থাতেই বললেন…..
–“আই মিস মাই মাদার নিশাপাখি! আজ বেশি করে মনে পড়ছে মায়ের কথা।”
চলবে…….
[বি.দ্র. আনিশাকে কেউ দোষারোপ করবেন না। ও বয়সে নিতান্তই বেশ ছোট। তাই ওকে যে যা বোঝাবে তাই বুঝবে তা স্বাভাবিক। এই বয়সে বেশির ভাগ মানুষের বোঝার ক্ষমতা একটু কমই থাকে। বিশেষ করে ভালোবাসা সংক্রান্ত বিষয়ে। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]