#নিভৃতে_তেজস্বিনী
#পর্ব_২৯
#লেখায়_নামিরা_নূর_নিদ্রা
হুইলচেয়ারে নিজের ছেলেকে বসে থাকতে দেখে মারজিয়া শেখ অবাক নয়নে সদর দরজার পানে তাকিয়ে থাকে। আজ মাহতাবের মুখে কোনো কথা নেই। চোখে কোনো রাগ নেই। কেমন যেন নিষ্প্রাণ হয়ে গিয়েছে সে। সিরাত মাহতাবকে নিয়ে মারজিয়া শেখের সামনে এসে দাঁড়ায়। তন্মধ্যে নজরুল শেখ ও এসে হাজির হয়। তিনি ছেলের এমন অবস্থা দেখে জিজ্ঞেস করেন,
“কী হয়েছে আমার ছেলের?”
সিরাত নির্লিপ্ত কণ্ঠে জবাব দেয়,
“পাপের শাস্তি পেয়েছে।”
“মানে?”
সিরাত কিছু বলার আগেই মাহতাব হুইলচেয়ার ঠেলে নিজের ঘরের দিকে অগ্রসর হয়। নীরব থাকার দীর্ঘ এক বিরতির পর সিরাত সবকিছু বিস্তারিত বলে তাদের। মারজিয়া শেখ ছেলের এমন দশা মেনে নিতে পারেন না। মা*থা ঘুরে পড়ে যান মেঝের উপর। যে মানুষটা সিরাতকে নিজের মেয়ের মতো দেখত সেই মানুষটা আজ এমন একটা কাজ করে বসে যার জন্য সিরাত কখনোই প্রস্তুত ছিল না। সিরাতের গালে ক*ষে এক থা*প্পড় বসিয়ে দিয়ে নজরুল শেখ হুংকার দিয়ে ওঠেন।
“কী করেছ এটা তুমি? তোমার করা সবকিছু মেনে নিয়েছিলাম আমি। কিন্তু এটা? তুমি কি মানুষ!”
সিরাত কিছু না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে একই জায়গায়। তার মনের ভেতর যে কোন ঝড় বইছে তা কেউ হয়তো কখনো কল্পনা করতেও পারবে না।
“তুমি আমাকে আমার শত্রুদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। সেই ঋণ তো আমি কখনো ভুলে যাইনি। সেদিন যদি তুমি সঠিক সময়ে পৌঁছে সবার সাথে ল*ড়াই করে আমাকে না বাঁচাতে তাহলে হয়তো আজ আমি বেঁচে থাকতাম না। সেটা হলেই বোধহয় ভালো হতো। নিজ চোখে আমার সন্তানের এই সর্বনা*শ দেখতে হতো না।”
সিরাতকে এখনো ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি পুনরায় বলেন,
“এই মুহূর্তে তুমি বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে। আর কখনো যেন আমি তোমার মুখ না দেখি।”
সিরাত নির্বাক দৃষ্টিতে তার দিকে এক পলক তাকিয়ে বাইরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে পেছন থেকে ডেকে ওঠে মাহতাব।
“সিরাত দাঁড়াও!”
পেছন ফিরে তাকায় সে। মাহতাব তাকে ঘরে আসতে বলে। সাথে এটাও বলে,
“ওকে কেউ কিছু বলবে না। যা বলার আমি বলব।”
নজরুল শেখ কিছু বলতে যেয়েও ছেলের এহেন কথায় চুপ করে যায়।
রোবটের মতো সিরাত সেই ঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় যেটা এক সময় তার ঘর ছিল। আজ সেসব শুধুই অতীত!
মাহতাব কাঁপা কাঁপা গলায় সিরাতকে প্রশ্ন করে,
“তুমি অর্ষার কথা সব জানতে?”
সিরাত নিষ্পলক চেয়ে থাকে মাহতাবের দিকে। তার দিক থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে মাহতাব পুনরায় বলে,
“সবটা জানতে তুমি?”
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মুখ খোলে সিরাত। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া বাঁধ ভাঙা পানিকে উপেক্ষা করে সে উত্তর দেয়,
“হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে ভেবেছিলাম তোমাকে ছেড়ে দিব। আর কত যুদ্ধ করব? হাজার হোক, একটা সময় তো তোমাকে ভালোবেসে তোমার হাত ধরে সংসার জীবন শুরু করেছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দেখ, বাড়ি ফেরার দুই দিনের মধ্যে একটা অচেনা কল আসে আমার নাম্বারে। কল রিসিভ করলে একজন মেয়ে আমাকে বলে, আপনার লাইভ আমি দেখেছি। এতদিন আমি চুপ করে ছিলাম। কারণ গরীবের পক্ষে তো আইন রায় দেয় না। কিন্তু আজ আমার মনে হচ্ছে আপনি পারবেন আমাকে উপযুক্ত বিচার দিতে। মেয়েটার কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। সদ্য হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে শরীরটাও তেমন ভালো ছিল না। তাই তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এসব বলার মানে কী? তখন সেই মেয়ের উত্তর কী ছিল বলতে পারবে? জীবনের সবচেয়ে বড়ো ধাক্কা তো আমি তখন খেলাম যখন জানতে পারলাম আমি এতদিন একজন ধ*র্ষকের সাথে সংসার করেছি। ঐ মুহূর্তে আমার ম*রে যেতে ইচ্ছা করছিল। আমার বুক ফেটে যাচ্ছিল কষ্টে। দম বন্ধ হয়ে আসছিল। এই দেখ না, এখনও কেমন দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার!”
সিরাতকে অস্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে দেখেও মাহতাব কিছু বলতে পারে না। সে সবকিছু বলার ভাষা একেবারেই হারিয়ে ফেলেছে। সিরাত লম্বা শ্বাস টেনে বলে,
“মেয়েটা নিজের নাম বলল, অর্ষা। একই কলেজে পড়াশোনা করতে তোমরা। গ্রাম থেকে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে শহরে আসা মেয়েটা তখনও শহুরে আদবকায়দার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি। এই অচেনা শহরে তার কোনো বন্ধু ছিল না। সহজসরল মেয়েটার বন্ধু হয়ে ওঠার চেষ্টা করলে তুমি। বন্ধুদের সাথে বাজি ধরেছিলে, ওই মেয়েকে নিজের বিছানায় নিয়ে যাবে তুমি। নতুবা মেনে নেবে, তুমি ব্যর্থ এক পুরুষ। কী সুন্দর তাই না? সহজসরল মেয়েটার প্রথমে বন্ধু হয়ে উঠলে। তারপর নিজের প্রেমের জালে খুব সূক্ষ্মভাবে আটকে নিলে তাকে। জীবনের প্রথম প্রেমের স্বাদ পেয়ে মেয়েটাও তখন আনন্দিত। কিন্তু সে কখনো তোমার কাছাকাছি আসতে চায়নি। তার হাত ধরাটাও বারণ ছিল তোমার। মেয়েটা যখন তোমাকে মনেপ্রাণে ভালোবেসে ফেলেছে তখনও তোমার মনে একটাই চাওয়া। তাকে বিছানা অবধি নিয়ে যেতে হবে। বন্ধুদের সামনে নিজের পুরুষত্ব দেখাতে হবে। একদিন সেই কাজে সফল হয়েও গেলে তুমি। নিজের জন্মদিনের কথা বলে তাকে এক বন্ধুর বাড়ি নিয়ে গিয়ে সফট ড্রিংকস বলে ম*দ খাওয়ালে। আর তারপর!”
মেঝের উপর বসে পড়ে সিরাত। তার মা*থা ঘুরছে ভীষণ। চোখের সামনে সব অন্ধকার লাগছে। তবুও তার কথা বলা থামে না।
“মেয়েটার সর্বস্ব লু*টে নিয়ে তার গোপন ভিডিয়ো ধারণ করে ভয় দেখালে। গ্রামের মেয়ে হওয়ায় সম্মানের ভয় বড্ড বেশিই ছিল তার। তবুও মনে সাহস জুগিয়ে সে থানায় গেল। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হলো না। তোমার বাবা নিজের অর্থের প্রভাব দেখিয়ে ছাড়িয়ে নিল তোমাকে। মেয়েটার সুন্দর জীবন নিমিষেই কালো আঁধারে ছেয়ে গেল। লোকে বলতে লাগল, সে ধ*র্ষিতা! পরিবার, আত্মীয়স্বজন, পাড়াপড়শি কেউ তার পাশে দাঁড়াল না। বরং তার বেঁচে থাকার ইচ্ছাকে সযত্নে মে*রে ফেলতে লাগল। তবুও মেয়েটা এখনও বেঁচে আছে। কেন বেঁচে আছে জানো? যেন সে ম*রার আগে তার ধ*র্ষকের শাস্তি নিজ চোখে দেখে যেতে পারে। একা একা বাঁচার লড়াই সে এখনো লড়ে যাচ্ছে। বদ্ধ ঘরে এক কঠিন জীবনযাপন করছে সে। মেয়েটা ভালো নেই। অবশেষে সে আমাকে বলল,”
থেমে যায় সিরাত। তার নিঃশ্বাস আটকে আসছে। মনে হচ্ছে কেউ যেন তার গলা খুব শক্ত করে চেপে ধরেছে।
“সমাজে একজন ধ*র্ষিতা নারী যখন বদ্ধ ঘরে বন্দী তখন ধ*র্ষক বুক ফুলিয়ে হেঁটে চলে বাংলার রাজপথে। তাদের কোনো শাস্তি হয় না। কারণ তারা তো ছেলে। তারা স্বভাবতই একটুআধটু দুষ্টুমি করে। এতে তাদের কোনো পাপ হয় না। তারা তো মুক্ত, স্বাধীন। সব শাস্তি তো কেবল মেয়েদের জন্য। তাই তো কিছু না করেও আমার মতো মেয়েদের নামের পাশে যুক্ত হয় ধ*র্ষিতা শব্দ। তাদের জন্য বেঁচে থাকাটাই যেন এক মহান যুদ্ধ!”
মেঝের উপর দাঁড়িয়ে টালমাটাল পায়ে সিরাত এগিয়ে যায় মাহতাবের কাছে৷ তার সামনে দুই হাঁটু মুড়ে বসে বলে,
“শেষে মেয়েটা আমায় বলল, আপনিও তো এক কন্যা সন্তানের মা। আপনার মেয়ের সাথে যদি কেউ এমন করে তবে আপনি কি তাকে ছেড়ে দেবেন? আপনাকে সবাই তেজস্বিনী বলে ডাকে। তেজস্বিনীরা কি কেবল নিজের স্বার্থে তেজস্বী হয়? আপু আপনি পারবেন আমার সাথে যে অন্যায় করেছে তাকে শাস্তি দিতে? বলুন না, পারবেন? আমি যে এই আশাতেই আজও বেঁচে আছি। আমার বেঁচে থাকাটা স্বার্থক করবেন আপনি? তার এহেন প্রশ্নে আমি তখন নির্বাক ছিলাম। কী বলতাম আমি? আমি যে কিছু বলার মতো অবস্থাতেই ছিলাম না। আমার দুনিয়াটা তখন আমার চোখের সামনে উল্টে যাচ্ছিল। আমাদের মেয়ের দিকে তাকিয়ে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। পুরো একটা রাত আমার দমবন্ধ অবস্থায় কাটল। অবশেষে ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম একজন স্ত্রী হিসেবে নয়, বরং একজন নারী হিসেবে আমি সেই মানুষটাকে শাস্তি দিব যার জন্য একটা জীবন্ত ফুল ফোটার আগেই ঝরে গিয়েছে।”
মাহতাবের পায়ের কাছে বসে অঝোরে কাঁদে সিরাত। কাঁদতে কাঁদতে জামার একাংশ খামচে ধরে বলে,
“আমি একজন স্ত্রী হিসেবে এমন কাজের জন্য অনুতপ্ত। কিন্তু একজন নারী হিসেবে এমন কাজের জন্য আমি গর্বিত। ধ*র্ষণ, পরকীয়া, বহু নারীতে আসক্ত হওয়া, এসবের ফলে যে একজন মেয়ের জীবনে কতটা বিরূপ প্রভাব পড়ে তা কি তোমরা জানো? একজন স্ত্রী হিসেবে আমি তোমার কাছে মাফ চাইছি। তবে একজন নারী হিসেবে তোমার প্রতি আমার আজন্ম ঘৃণা জন্মেছে। তা আর কখনো মিটবার নয়। আমি এখন সবার চোখে দোষী। কারণ তারা আসল কারণটা জানে না। চিন্তা করো না। তোমার এই অতীত আর কেউ জানবে না। তার জন্য আমি না হয় হলাম সকলের চোখে অপরাধী।”
ঠোঁট কাম*ড়ে কান্না আটকানোর বৃথা চেষ্টা করে সিরাত উঠে দাঁড়ায়। এক পা, দুই পা করে এগিয়ে যায় দরজার দিকে। শেষবারের মতো পেছন ফিরে তাকালে সে লক্ষ্য করে মাহতাব নিষ্পলক চেয়ে আছে তার দিকে। যাওয়ার আগে সিরাত শেষবারের মতো বলে,
“তোমার সাথে আমি যা করেছি তার জন্য যদি তুমি আমায় শাস্তি দিতে চাও তাহলে থানায় যেতে পারো। আমি সবকিছুর জন্য প্রস্তুত। আর রইল আমাদের মেয়ের কথা। নাবিহা আমার মেয়ে। তেজস্বিনীর মেয়ে কখনো ভেঙে পড়তে পারে না। পুরো পৃথিবীর সাথে লড়াই করে সে ঠিক বাঁচতে পারবে। আসি!”
ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে যায় সিরাত। মাহতাব চেয়েও কিচ্ছু বলতে পারে না।
বাইরে বেরিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসে সিরাত। সবাই গাড়িতে বসে তার জন্য অপেক্ষা করছিল।
“চল।”
পথিমধ্যে অনেকে অনেক প্রশ্ন করলেও তার কোনো জবাব দেয় না সিরাত। একটা ফাঁকা মাঠের পাশ দিয়ে গাড়ি গেলে সিরাত আচানক বলে ওঠে,
“গাড়ি থামা। ইভান তোর সাথে আমার কথা আছে। তুই আমার সাথে এখানে থাক। বাকিরা চলে যা।”
সিরাতের মানসিক অবস্থা খানিকটা বুঝতে পেরে আর কেউ কোনো প্রশ্ন করে না। নাবিল কিছু বলতে চাইলেও অথৈ তার হাত ধরে থামিয়ে দেয় তাকে। সিরাত আর ইভানকে রেখে বাকিরা চলে যায়।
পড়ন্ত বিকেলে খোলা মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে ইভান প্রশ্ন করে,
“কী বলবি আমাকে?”
মাঠের একপাশে ঘাসের উপর বসে সিরাত বলে,
“আমাকে যখন তোর বাবা দেখল তখন পছন্দ করেছিল ঠিকই, কিন্তু আমার পরিবার মধ্যবিত্ত শুনে তোর বাবা আর চাচ্চু আমার বাবাকে যে অপমান করেছিল তা প্রাপ্য ছিল না আমাদের। তোর চাচি যখন আমাকে সুযোগসন্ধানী বলল তখনও তুই ছিলি একেবারেই নীরব। আচ্ছা একটিবার কি তাদের কথার প্রতিবাদ করা যেত না ইভান?”
ইভান মা*থা নত রেখে জবাব দেয়,
“ঐ মুহূর্তে বাবার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস আমার ছিল না।”
কথাটা শুনে সিরাতের মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে ওঠে।
“অথচ এখন তোর ভয়ে বাড়ির সবাই তটস্থ থাকে তাই না?”
“তোকে হারানোর পর অনেকটা পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম আমি। আমাকে সামলানো কঠিন হয়ে গিয়েছিল। পড়াশোনার বাইরে আর কোনোকিছুর প্রতিই আগ্রহ ছিল না আমার। কারণ তুই আমাকে বলেছিলি, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মানুষের কথার জবাব দিতে হয়। আজ আমি সফল একজন মানুষ। কিন্তু আফসোস! সফল হয়েও শখের নারীকে পাওয়া হলো না আমার।”
“আজও বিয়ে করিসনি কেন? আমার অপেক্ষায় আছিস?”
“যদি বলি, হ্যা!”
“যে পুরুষ তার শখের নারীকে যোগ্য সম্মান দিয়ে নিজের করে নিতে পারে না তার প্রতি আমার এক জন্ম ঘৃণা জন্মাক!”
“সিরাত!”
“অনেক তো হলো এসব। এবার একটু শান্তি চাই আমি। নিজের বাবা-মা আর সন্তানকে নিয়ে শান্তিতে বাঁচতে চাই। যদি আমার অপেক্ষায় থাকিস তাহলে বলব এই অপেক্ষা নিরর্থক। আমাকে ভুলে অন্য কাউকে আপন করে নে।”
“যদি সেটা না পারি?”
“তাহলে আজীবন চিরকুমার হয়ে থাক। ভাবিস না আমি ডিভোর্সি বলে আমাকে পাওয়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিস তুই। হয়তো তুই এখন সুপুরুষ। কিন্তু আমার চোখে কা*পুরুষ হয়েই থেকে যাবি সব সময়। আমি আর যাইহোক, কোনো কা*পুরুষের সাথে জীবন শুরু করতে পারব না।”
নিজের সবচেয়ে কাছের মানুষটার চোখে নিজের জন্য এক আকাশ সমান ঘৃণা দেখে ইভানের হৃদয়ে আঘাত লাগে। মেয়েটাকে কিছু বলেও তো লাভ নেই। দোষটা যে তার নিজেরই। নিজের ভুলেই সে তার শখের নারীকে হারিয়েছে চিরতরে।
হঠাৎ ফোনের কাঁপা-কাঁপি দেখে সিরাত ফোন হাতে তুলে নেয়। কল রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে ভেসে আসে তার মায়ের ভয়ার্ত কণ্ঠস্বর,
“সিরাত নাবিহাকে নিয়ে তোমার বাবা একটু বাইরে গিয়েছিল। সেই সময় নাবিহাকে কেউ একজন নিয়ে গিয়েছে। ওকে কোত্থাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!”
আপনাআপনি ফোনটা তার হাত থেকে পড়ে যায়। পাথরের মতো শক্ত হয়ে সিরাতকে বসে থাকতে ফোনটা তুলে নিজের কানে নেয় ইভান। সবটা শুনে বাকরূদ্ধ অবস্থায় ইভান ভাবে,
“আর কত?”
চলবে??
বিঃদ্রঃ একজন লেখিকা হিসেবে নিজেকে ভীষণ ব্যর্থ মনে হচ্ছে আমার। নামিরা নূর নিদ্রা যে আজন্ম আপনাদের নিরাশ না করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেটা হয়তো আপনারা খেয়ালই করেননি কখনো। গত পর্বের রেসপন্স আর মন্তব্যগুলো দেখে আমি শুধু ভেবেছি, আমার লেখার স্বার্থকতা কোথায়? আমার বোধহয় এখনই থেমে যাওয়া উচিত। এই গল্পটা লেখা হয়তো একদম ঠিক হয়নি আমার। ধন্যবাদ আপনাদের, আমাকে এত সুন্দর একটা বিষয় উপলব্ধি করানোর জন্য। 💙