#বিয়ে
#লেখনীতে -ইসরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-২৪
ধ্রুবর বিধস্ত চেহারা, ওর তীব্র অনুভূতি নিয়ে বলা বাক্য শূঁলের মতো বিঁধলো অদ্রির মনে। ওর মাথায় হাজারো কথা ঘুরপাক খেতে লাগলো। ধ্রুব উত্তরের আশায় চেয়ে রইলো ওর মুখপানে। অদ্রি কিছু বলতেই মুখ খুলবে তখনই ধ্রুব ওর মুখ চেপে
ধরে দাপুটে গলায় বলল,
— উহু! কোত্থাও যেতে পারবে না, আমি যেতে দেবো না তোমায়। তাই না বলার চেষ্টাও করো না, হয়তো আমি রেগে তোমাকে এই ঘরেই আটকে রেখে দিতে পারি!
অদ্রি ভ্রু কুঁচকে একদৃষ্টে শুধু তাকিয়ে রইলো। ধ্রুব’র চোখে নিজের জন্য ভালোবাসা মিশে থাকতে দেখলো সে! তীব্র উৎকন্ঠায় কাটতে লাগলো একেকটি ক্ষণ। ধ্রুব’র অধিকারবোধ নিয়ে বলা কথাগুলোর বিপরীতে অদ্রি কি বলবে তা ভাবতে লাগলো। ঢোক গিললো সে। গলা শুকিয়ে আসছে ওর। সংকোচ কাটানোর জন্য দু-চোখ বন্ধ করে ভাবলো কিছু মুহূর্ত! নিজেকে স্বাভাবিক দেখানোর নিদারুণ চেষ্টা করলো। একসময় ধ্রুব’র হাত সরালো। নির্লিপ্ত কন্ঠে বলল,
— এতো আহামরি কেউ নই আমি। আমার জন্য কিডন্যাপারের খাতায় নিজের নাম লেখানোর প্রয়োজন নেই।
ধ্রুব দীর্ঘশ্বাস ফেললো। ক্রুদ্ধ গলায় উত্তর দিলো
— তোমার কাজকর্ম, ভাবনাচিন্তা যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে
থাকে তাহলে কিডন্যাপারের খাতায় নাম লেখাতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। প্রয়োজন হলে লেখাবও।
তুমি আমার ভালো দিকটাই দেখছো। আমি সহজ,
তবে ক্ষেত্রবিশেষে কঠিনও হতে পারি!
অদ্রি ওর দিকে সন্দিগ্ধ চোখে তাকিয়ে ছিলো। যেন বোঝার চেষ্টা করছে ওকে আরও গভীরভাবে। অনেকক্ষণ পর বিব্রত কন্ঠে বলল,
— আপনার সাথে আমার তো আগেই কথা হয়ে গেছিলো, এখন এত কথা বলে লাভ নেই।
ধ্রুব গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
— তখন তোমাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে মানতে রাজি ছিলাম না, সেজন্য মাথা ঘামাইনি। তবে এখন যেহেতু আমি আমার দিকটা ক্লিয়ার করে দিয়েছি সেজন্য এ ব্যাপারে তোমার আর কোনো অহেতুক এবং অযৌক্তিক মতামত শুনতে চাইছি না আমি…
অদ্রি ভ্রু কুঁচকে বলল,
— জোর করে তো আর আপ….
— উহু! আর একটা বাক্যও শুনতে রাজি নই আমি।
আমাকে রাগালে তোমার জন্য ভালো হবে না। স্টিল ভদ্র আছি তেমনই থাকতে দাও..
ধ্রুব হাতের ইশারায় থামিয়ে দিলো অদ্রিকে। আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে ওয়াশরুমে চলে গেলো। অদ্রি অবাক হয়ে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে রইলো। দোটানায় ভুগতে লাগলো। কি করবে সে? কেন এখনো স্বাভাবিক হতে পারছে না? কেন নিজের মনকে মানাতে পারছে না? এটা সত্যি যে, ধ্রুব’র থেকে দূরে যাওয়ার ইচ্ছেটা ওর মন থেকে ধীরেধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে। তবুও নিজের কাছেই স্বীকার করতে চাইলো না অদ্রি, যে সে ধ্রুব’র সাথে ঠিক কতটুকু জড়িয়ে গেছে। কারো সাথে শেয়ার করতে পারছে না কথাগুলো, অদ্রির নিজেকে সত্যিই ভীষণ একা মনে হলো!
____
শায়লা হাসানের মেঝো ভাইয়ের বড় মেয়ে আদিবার বিয়ে উপলক্ষে পুরো পরিবারকে আবারও নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। মায়ের শরীরটাও ইদানীং ভালো যাচ্ছে না ভেবে পারিবারিক আড্ডায় শায়লারা ঠিক করলেন এবার গ্রামে যাবেন। তাছাড়া এতদিন অদ্রির এক্সামের জন্য যে বাধাটা ছিলো সেটাও আর নেই। নাতবউকে দেখার জন্য বাড়ির সবাই একপ্রকার মরিয়াই বলতে গেলে। তবে রুখসাত জাহানকেও শায়লা আমন্ত্রণ জানালেন তাদের সাথে গ্রামে বেড়াতে যাওয়ার জন্য, সেক্ষেত্রে রাদিফের জন্য মেয়ে দেখাও হয়ে যাবে।। তারাও রাজি হলেন। তবে নাজমুল সাহেব যাবেন না, তিনি খুব শ্রীঘ্রই কানাডাতে ফিরে যাবেন। তার আগে নিজের গ্রামের বাড়িতে ক’টা দিন কাটাতে চান। বাবাকে দেখে রাদিফও বেঁকে বসলো। সেও যাবে না। কোনোভাবেই ওকে রাজি করানো গেলো না। রুখসাত জাহান ছেলের ওপর হতাশ হলেন। ছেলে না গেলে তো তার উদ্দেশ্যে পূর্ণ হবে না। যদিও রাদিফ জানে না তার মা লুকিয়ে লুকিয়ে তার জন্য মেয়ে দেখছেন।
এ সবকিছু মিলিয়েই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলো কাল-পরশুই তারা রওয়ানা দেবেন। শায়লা
ফোন করে ব্যাপারটা বড়ভাই আঁইয়ুব আলীকে জানাতেই তিনি বাড়ির সবাইকে নিয়ে হুলস্থুল কান্ড শুরু করলেন। আর আশফাক সাহেব সবাইকে নিজেদের গোছগাছ সেরে নিতে বললেন। বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান শুনে ফ্লোরা খুবই এক্সাইটেডড ফিল করলো! অদ্রিকে সঙ্গে নিয়ে নিজের গোছগাছ সারলো। বেশিরভাগই ওয়েস্টার্ন ড্রেস দেখে অদ্রি ওকে বোঝালো গ্রামীণ পরিবেশে এসব পোশাক বেমানান। সেখানে কেউ এসব ভালো চোখে দেখবে না। ট্র্যাডিশনাল পোশাকের কালেকশন ফ্লোরার খুবই কম থাকায় অদ্রি নিজের কিছু জামা ওকে গিফট করলো। দারুণ খুশি হলো ফ্লোরা। এদিকে অদ্রির মনও আজ বেশ ভালো। যখন থেকে শুনেছে তারা গ্রামে বেড়াতে যাবে তখন থেকেই ওর মন বেশ ফুরফুরে। এত বছরের জীবনে এর আগে গ্রামে সে খুব কমই গিয়েছে। তার কাছে ভীষণ ভালো লাগে গ্রামীণ পরিবেশ। সবকিছু সে খুব মন দিয়ে উপভোগ করে। ফ্লোরাকে ওর গোছগাছে সাহায্য করে, একেবারে খেয়ে ঘরে এলো। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলো কি কি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেবে। তবে খুব ক্লান্ত থাকায় অলসতা জেঁকে ধরলো ওকে। এখন আর গোছগাছ করতে ইচ্ছে না করায় ফোন স্ক্রল করতে লাগলো। গ্রুপচ্যাটে নীরা, পরশ, রাহাতদের ম্যাসেজ জমে আছে। অদ্রিও যোগ দিলো তাতে। বহুদিন পরে বেশ কথাবার্তা বিনিময় হলো সবার মধ্যে। পরশের কথা শুনে সবাই হাসির ইমুজি দিচ্ছে। এভাবেই চ্যাট করতে করতে কখন যে ফোনটা হাতে রেখেই ঘুমিয়ে পড়লো বুঝতেই পারলো না অদ্রি। অন্যদিকে চলতে লাগলো বাকিদের কথাবার্তা। নোটিফিকেশনের টুংটাং শব্দ জানান দিচ্ছিলো সেগুলো।
ধ্রুব অফিস থেকে ফিরলো বেশ দেরি করে। ডিনার সেরে ঘরে এসে দেখলো অদ্রি ঘুমিয়ে পড়েছে। বরাবরের মতো এলোমেলো ভঙ্গিতে শোয়া অদ্রিকে দেখতে ভালো লাগছিলো। হাজারো প্রজাপতি ডানা মেলে ওড়ে বেড়াতে শুরু করলো ওর মন-মস্তিষ্ক এবং সর্বত্র জুড়ে। অদ্রির চুলগুলো বাতাসে ওড়ছে; কপালের ওপর পড়ে আছে কিছু। পরণে আকাশি রঙের জামাটা কিছুটা ওপরে সরে আছে। ওখান দিয়ে ফর্সা, মেদহীন পেটের অংশটুকু দেখা যাচ্ছে। ধ্রুব নজর তুলে চায়। শুকনো গলায় ঢোক গিলে তীব্র নিষিদ্ধ ইচ্ছে দমন করে। পায়ের কাছে পড়ে থাকা চাদরটা দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে দেয় ওকে। তখনই অদ্রির হাতে থাকা ফোনের নোটিফিকেশনের শব্দ ওর গোচরে আসে। ধ্রুব ব্যস্ত ভঙ্গিতে ফোনটা সরিয়ে নেয় ওর মাথার কাছ থেকে। অফ করতে রাখতে যাবে তখনই স্ক্রিনে নজর পড়ে ওর।
“ঘুমিয়ে পড়েছো নাকি? আজ কিন্তু বেশ মজা হয়েছে, তাইনা? চলো একদিন দেখা করি আমরা।”
ম্যাসেজ দেখে ধ্রুব’র ভ্রু আপনা-আপনিই কুঁচকে আসে “Rahat” নামের আইডি দেখে। এরপর ফোনটা অফ করে টেবিলের ড্রয়ারে রেখে দেয়! ব্যলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়। নিকষ কালো অন্ধকারের সাথে সাথে ওর মনে তীব্র রাগ আর ক্রোধ জেগে ওঠে; “রাহাত” নামের ব্যক্তিটির ওপর। কে হয় ও অদ্রির?
শব্দ শুনে অদ্রির কাঁচা ঘুমটা ভেঙে গেলো। চোখ খুলে তাকালো ধীরভাবে। নিজের মস্তিষ্ক খানিকটা সচল করার চেষ্টা করলো ও। কখন ফিরেছে লোকটা? ক’টা বাজে এখন? ধ্রুব কি কফি খেয়েছে? কে এসে কফি দিয়ে গেছে ওকে? নাকি দিতে ভুলে গেছে? লোকটা প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে কফি খায়, নয়তো হাসফাস করতে থাকে। অদ্রিই তো প্রতিদিন ওর কফিটা এনে দেয়। আজ কি হলো ওর? ঘুমে এতটাই মগ্ন ছিলো যে ও কফিটা দিতে ভুলে গেল? অদ্রি অলসতা কাটিয়ে ওঠে বসলো। ইতস্তত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
— কখন ফিরলেন? কফি খাননি? আমি তাহলে
নিয়ে আসি…
ধ্রুব ওকে থামিয়ে দিয়ে গম্ভীর স্বরে বলল,
— ঘুমাও তুমি…
অদ্রি কয়েক সেকেন্ড ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। যেন কফি খেতে না চাওয়ার পেছনের কারণ উদঘাটন করছে। তবে সমীকরণ মেলাতে ব্যর্থ হলো।
এরপর আবারও গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়লো। আরামদায়ক শীতল আবহাওয়া। জড়িয়ে আসা চোখদুটো খুব বেশি সময় নিলো না ঘুমের দেশে নিয়ে যেতে অদ্রিকে। ধ্রুব ওর কান্ডে বিরক্ত হলো না, রাগ করলো না এমনকি এটা নিয়ে বিন্দুমাত্র কোনো বাক্যব্যয় করলো না। বুঝলো মেয়েটা ঘুমের ঘোরেই এরকম করেছে। মাঝেমধ্যে ওর মনে হয় অদ্রি একটা বাচ্চা মেয়ে, সবসময় কেমন কাঠখোট্টা হয়ে থাকে,
গাম্ভীর্যতা নিয়ে থাকে। যেন ওর কোনো অনুভূতি নেই, কোনোকিছুতেই ওর কিছু যায় আসে না। ধ্রুব জানে, মেয়েটা নিজের ভেতর সবকিছু চাপা দিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু বুঝতে পারে না এসব কাজকর্ম ওর পাশাপাশি আশেপাশের মানুষকেও এফেক্ট করে!
সময়টা তখন কত, ঠিক জানেনা অদ্রি। ঘুমের ঘোরে নড়ার চেষ্টা করলো, কিন্ত আবছা আবছা বুঝতে পারলো কেউ একজন ওকে জড়িয়ে ধরে আছে। নিভু নিভু চোখে তাকানোর চেষ্টা করলো অদ্রি। ঘুমে মগ্ন থাকা ধ্রুব’র মুখটা চোখের সামনে দেখতে পেলো সে। চমকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু ঘুমন্ত ধ্রুব আগের চেয়ে আরও জোরালোভাবে জড়িয়ে ধরলো ওকে। অদ্রি হতবিহ্বল হয়ে ওর বুকের ভেতর চুপটি করে পড়ে রইলো। ওর শক্তি বা ইচ্ছে কোনোটাই কাজ করলো না ধ্রুব’র থেকে দূরে সরে থাকতে।
বাইরে ঝলমল করছে দুপুরের রোদ। একটু আগেই ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি হয়ে গেছে। এখন বইছে শান্ত বাতাস।
কালো মেঘ একটু পরপরই ঢেকে দিচ্ছে সূর্যকে।
শাওয়ার নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরোলো ধ্রুব। চুল মুছতে মুছতে খেয়াল হলো অদ্রি পুরো মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটয়ে রেখেছে ওর জামাকাপড়। বিরক্ত ভঙ্গিতে গোছগাছ সারছে ও। আচমকা শব্দ পেয়ে ঘুরে তাকালো পেছনে। ধ্রুব খালি গায়ে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। তাকাতেই ওর সাথে দৃষ্টি বিনিময় হলো ধ্রুব’র। অদ্রি কপট বিব্রতবোধ করলো। ভীষণ রাগ নিয়ে বলল,
— ওয়াশরুমে চেঞ্জ করতে পারেন না? জানেন তো
আমি ঘরে আছি।
ধ্রুব ওর কথায় তেমন রিয়েক্ট করলো না। তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলল,
— সামান্য ব্যাপার অদ্রি।
অদ্রি রেগে বলল,
— এর আগেও বলেছি আপনাকে। একটা মেয়ের সামনে এভাবে ঘুরে বেড়াতে আপনার লজ্জা করে না?
ধ্রুব অবাক হয়ে বলল,
— ঘুরে বেড়ালাম কখন? আর এখানে লজ্জার কি আছে? তুমি তো আর বাইরের কেউ না।
— আশ্চর্য! বাইরের কেউ না হলেও রুমে চেঞ্জ করার অভ্যাস পাল্টান।
— তোমার মানসিকতা পাল্টাও।
অদ্রি নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে করতে ব্যর্থ হলো। বলল,
— এ বাড়িতে আগে আন্টি ছাড়া আর কোনো মেয়ে ছিলো না। তখন এটা স্বাভাবিক ব্যাপার ছিলো। এরপর আমি এলাম, আমার সামনেও আপনি লজ্জাবোধ করেন না। এতটুকু মানা যায়, কিন্তু বাকিরা? ওরা দেখলেও কি আপনি লজ্জা পান না? আন্টিরা আছে, জরিনা আছে, ফ্লোরা আছে। আপনি জানেন সেদিন এসব নিয়ে ফ্লোরা কতকিছু বলছিলো? লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছিলো…
ধ্রুব বিস্মিত হওয়ার ভান করে বলল,
— কানাডার মানুষের কাছে এসব এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। বাট আমার জন্য তোমার মাথা কাটা গেলো কীভাবে? স্বামীর প্রশংসা নিতে পারছিলে না অন্য মেয়ের মুখ থেকে?
ধ্রুব’র ঠোঁটে বাঁকা হাসি। অদ্রি কটমট করে তাকালো। ও কি ইচ্ছে করে অদ্রির সাথে ফাজলামো করছে? অদ্রির গা জ্বলছিলো ওর হাসিতে, হার মানতে নারাজ। তাচ্ছিল্য করে বলল,
— প্রশংসা? তাও আপনাকে? ফ্লোরা আসলে
সৌন্দর্যের সংজ্ঞাটাই জানে না।
ধ্রুব ভ্রু উঁচিয়ে বলল,
— ওহ আই সী। তো তোমার মতে সৌন্দর্যের আসল সংজ্ঞা কি?
অদ্রি কাঠ কাঠ গলায় বলল,
— সুন্দর একটি মন।
ধ্রুব হাত ভাঁজ করে দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালো। ওর চোখের মণিদুটো জ্বলজ্বল করছে। অসহ্য রাগে প্রসন্ন কন্ঠে থেমে থেমে বলল,
— আমার সেটা নেই বুঝলাম। কিন্তু তোমার কেন
সেটা নেই?
অদ্রি চরম বাকরুদ্ধ হলো। কথার মর্মার্থ ধরতে না পেরে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়লো,
— মানে?
— সুস্থ, সুন্দর একটি মন; তোমার কেন সেটা নেই? যেখানে মায়া, প্রেম-ভালোবাসা লুকানো থাকে?
শেষ কথাটা ধ্রুব এমনভাবে বললো যে অদ্রির মুখে অন্ধকার নেমে এলো। মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বলল,
— আছে তো!
[ ভুলভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।]
চলবে….