হৃদয়জুড়ে প্রেয়সীর আভাস (২) পর্ব ২৪

0
1875

#হৃদয়জুড়ে_প্রেয়সীর_আভাস (২)
#পর্ব_২৪
#মোহনা_হক

আজ ইনিমা আর সায়হানের বাগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আত্মীয়, স্বজন সবাই চলে এসেছে একদিন আগেই। পুরো বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের লাইট চকচক করছে। চারপাশে মানুষের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। ফজলুল চৌধুরী তার চেনা পরিচিতি অনেক মানুষ কে দাওয়াত দিয়েছে। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান আরম্ভ হবে। সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সবাই এই অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। চৌধুরী বাড়ির বড় মেয়ের এনগেজমেন্ট বলে কথা!

ফজলুল চৌধুরী আর মাহের চৌধুরী তাদের চেনা জানা লোকদের সাথে কথা বলছে। সাথে আয়াজ ও আছে। আয়াজ ঘড়িতে সময় দেখে বললো,

-‘বাবা আটটা বাজতে চললো। ইনিমা কে নিয়ে আসা লাগবে এবার। মানুষ আর কতক্ষণ অপেক্ষা করবে? তালুকদার বাড়ি থেকেও এসে সবাই বসে আছেন।’

-‘তোমার মা কে বলো ইনিমা নিয়ে যেনো তাড়াতাড়ি নিচে আসে।’

আয়াজ মায়া চৌধুরী কে বলতে গিয়েছে। ইনিমার রুমে সবাই। তাই আর এদিক সেদিক না খুঁজে সোজা তার বোনের রুমের দিকে যায়। ইনিমার খোঁপায় এক এক করে ফুল লাগিয়ে দিচ্ছে রুয়াত নিমি। মায়া চৌধুরী সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছেন সবটা। আয়াজ একবার চারপাশে চোখ বুলিয়ে বললো,

-‘মা ইনিমা কে নিয়ে যেতে বলেছে। ওনারা সবাই এসে পড়েছেন।’

মায়া চৌধুরী রুয়াত আর নিমি কে তাড়া দিয়ে বললেন,
-‘তোদের হয়েছে? এবার কিন্তু বড় বাবা বকবে বলে দিলাম। তাড়াতাড়ি কর।’

-‘ওনাদের আরও অপেক্ষা করতে বলো। আমাদের এখনো হয়নি। সময় লাগবে।’

আয়াজ চক্ষুজোড়া ছোট ছোট করে রুয়াতের দিকে তাকায়। মেয়েটা খুব মনোযোগ ইনিমার খোঁপায় ফুল লাগিয়ে দিচ্ছে। এখানে যে আয়াজ এসেছে তা একবারও দেখলো না। বরং সে নিজের কাজে ব্যস্ত। গোলাপি রঙের একটা ড্রেস পড়েছে রুয়াত। আর মুখে হালকা সাজ। নিমিরও একই অবস্থা। আয়াজ একটু হকচকিয়ে গেলো। ইনিমা পড়েছে ঠিক আছে। তবে রুয়াত আর নিমির এরকম ড্রেস পড়ার কারণ কি? আবার দুজন একই ভাবে সেজেছে। হঠাৎ জেবা এসে মায়া চৌধুরী আর মেহরুবা কে ডেকে নিয়ে যায়। তালুকদার বাড়ি থেকে লোক এসেছে। ফজলুল চৌধুরী ডেকে পাঠিয়েছেন। সেজন্য জেবা মায়া চৌধুরী কে এসে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বলে গিয়েছে যাতে ইনিমা কে তাড়াতাড়ি নিয়ে আসে।

-‘বিয়েটা কি ইনিমার নাকি তোমাদের নিমি? চেহেরা, পোশাক, সাজে প্রকাশ পাচ্ছে আসলে বিয়েটা তোমাদের।’

রুয়াত কথাটি শোনামাত্র মাথা নিচু করে অধর কামড়ে ধরে। আরেকটু পেছনে গিয়ে আড়াল করে নেয় নিজেকে। কথাটা তে প্রচন্ড অস্বস্তি লেগেছিলো। আয়াজ ঠিক কি বোঝাতে চাইছে? বিয়েটা যার হোক তাই বলে কি তারা সাজবে না? আর সাজলে এমন কথা বলতে হবে? নিজেকে আড়াল করে স্বস্তিবোধ করছে রুয়াত। রুয়াতের এরূপ চুপ থাকা দেখে নিমি বলে উঠলো,

-‘ভাইয়া আমাদের একমাত্র বড় আপুর এনগেজমেন্ট বলে কথা। অবশ্যই সাজতে হবে। নাহলে মানুষ কি বলবে? আর আপনিও তো নতুন পাঞ্জাবী পড়েছেন। এর মানে কি বিয়েটা আপনার হচ্ছে?’

মুখ ফসকে কথাটি বের হয়ে গিয়েছে নিমির। প্রথমে বুঝতে না পারলেও শেষে ভয়ে মুখে হাত চেপে ধরে। তার কথাটি বলা কি উচিৎ হয়েছে? ইনিমা ঘাড় ঘুরিয়ে অবাক চাহনিতে নিমির দিকে তাকায়। আয়াজ কে যে নিমি এতবড় কথা বলে ফেললো এটা কি সজ্ঞানে বলেছি কিনা সন্দেহ তার। নিমি মুখে হাত দিয়ে পিটপিট করে আয়াজের দিকে তাকায়। তার কপালে আজ কি আছে কে জানে? এতো বড় একটা অনুষ্ঠানে বোধহয় বকা খেতে হবে। সে তো আর ইচ্ছে করে বলেনি। মুখ ফসকে বের হয়েছে। তখন খুব আনন্দ নিয়ে বললেও এখন বকা খাওয়ার আগেই মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। আর এই কথা জেবার কানে গেলে তো সর্বনাশ! মায়ের মাইর একটাও নিচে পড়বে না। এতো বড় হয়ে আজ তার মায়ের হাতের মাইর খেতে হবে ভেবে মুখে অন্ধকার নেমে আসে।

আয়াজ তার পাঞ্জাবী টেনেটুনে ঠিক করে। স্বাভাবিক স্বরে বলে,

-‘ কথাবার্তা আরো সাবধানে বলতে হবে। এভাবে কোনো দিক বিবেচনা না করে হুট করে বলে দিলে তোমাকেই বিপাকে পড়তে হবে পরে।’

নিমি আর কিছু বললো না। সে যে আজকের মতো বেঁচে গিয়েছে তাতেই খুশি। যাক তাকে আর কারো কাছে কিছু শুনতে হবে না। ফের আয়াজ আবারও বললো,

-‘ইনিমা তোর হয়েছে? আমি কি চলে যাবো? তা এই ফুলগুলো লাগাতে লাগাতে কি সারাদিন পার করে দিবে।’

রুয়াতের হাতে মাত্র আর একটা ফুল। এটা লাগালেই হয়ে যাবে। রুয়াত তড়িঘড়ি করে ফুলটা লাগিয়ে দিলো খোঁপায়। আয়াজ এক পলক রুয়াতের দিকে তাকিয়ে ইনিমার হাত ধরে বেরিয়ে যায় রুম থেকে। নিমির দিকে বিরক্তিকর চাহনিতে চেয়ে রুয়াত বললো,

-‘তুই তখন ওটা কি বললি? আজ যদি ভাইয়া মেজো মায়ের কাছে এটা বলে দিত? তখন? পুরো মজাটাই মাটি হয়ে যেতো।’

-‘আরে আমি ইচ্ছে করে বলিনি। ওনার কথা তুই শুনেছিস? এরকম কথা বললে রাগ হবে না? আর আমারও মুখ ফসকে বের হয়েছে। ইচ্ছে করে তো বলিনি। এখন তাড়াতাড়ি নিচে চল।’

তালুকদার বাড়ি থেকে অল্প কয়েকজন লোক এসেছে। যেহেতু তাদের পরিবার এতো বেশি বড় না। ইনিমা সায়হানের পাশে দাঁড়ায়। আয়াজ একটু দূরে সরে আসে। উপরের দিকে তাকাতেই রুয়াত আর নিমি কে দেখে। গুটিসুটি পায়ে তারা নিচে নামছে। আর একজনের কানের কাছে আরেকজন ফিসফিস করে কি যেনো বলছে। রুয়াত তাকানোর আগেই আয়াজ তৎক্ষনাত দৃষ্টি ফিরিয়ে সামনে তাকায়। বরাবরের মতোই আয়াজ তাকে ইগনোর করলো।

.

-‘আপনাকে সুন্দর লাগছে খুব ইনিমা।’

ত্বরিত চোখে ইনিমা সায়হানের দিকে তাকালো। সেদিনের মাথা নিচু করে কথা বলা লোকটা এ কথা বলছে? ইনিমা খানিকটা অবাক হয়। আজও সায়হান মাথাটা হালকা নিচু করে কথাটি বললো। অথচ মাথা নিচু করে থাকলে তাকিয়েছে কখন? সন্দেহ হলো তার। আর সব সময় এভাবে কথা বলাটাও কেমন জানি লাগে ইনিমার কাছে। তাই উল্টো প্রশ্ন করলো,

-‘মাথা নিচু করে আছেন। তাহলে তাকিয়েছেন কখন? আর আমায় যে সুন্দর লাগছে এটাই বা দেখলেন কখন?’

সায়হান অধর মেলে হাসে। মাথা চুলকে উত্তর দেয়,
-‘আপনার দৃষ্টির অগোচরে।’

মাত্র তিনটা শব্দে বক্ষ বিভাজনে কম্পনের সৃষ্টি হয়! হ্যাঁ এমন অনুভূতি প্রথম হচ্ছে তার। বুঝতে পারছে না হঠাৎ কেনো এমন হচ্ছে। দ্রুত গতিতে সায়হানের দিকে তাকালো। লোকটা তখনও সামনের দিকে তাকিয়ে আছে।

-‘কারো দৃষ্টির অগোচরে তাকানো ঘোর অন্যায়। আর তাকিয়েও তাকে সুন্দর বলা আরও বড় অন্যায়। আপনাকে আমি ভালো ভেবেছিলাম।’

ঘাবড়ে গেলো না সায়হান। বরং আরও একবার হাসলো সুন্দরী রমণীর কথায়। তা দেখে কিঞ্চিৎ ভ্রু কুচকায় ইনিমা। লোকটা হাসছে! সে কি কোনো হাসার কথা বলেছে নাকি?

-‘অনেকেই তাকায় আপনার দিকে। তাই আমি একা তাকালে কোনো দোষ বা অন্যায় হবে না মিস।’

ইনিমা চুপ হয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। ফজলুল চৌধুরী তার হাতে একটা রিং নিয়ে এসে বললো পড়িয়ে দিতে সায়হান কে। প্রথম প্রথম ইনিমার একটু গিল্টি ফিল হয়েছিলো৷ পরক্ষণে হাত এগিয়ে দেয় সায়হান। ইনিমা অবাক চোখে তাকাতেই ইশারা করে রিংটা পড়িয়ে দেওয়ার জন্য। ইনিমার পড়ানো শেষ হলে সায়হান যত্নসহকারে সুন্দরী রমণীর অনামিকা আঙুলে রিং পড়িয়ে দেয়। মুহুর্তের মধ্যেই সবাই তালি দিয়ে ওঠে।
সায়হান একটু মাথাটা নিচু করে বললো,

-‘ধন্যবাদ আমার জীবনে আসার জন্য বিউটিফুল।’

মাথা উঁচু করে ইনিমা সায়হানের দিকে তাকায়। লোকটার দৃষ্টি এবার তার দিকে। এটা এই প্রথম দেখলো সে। প্রতিউত্তরে ইনিমা নিজেও হেসে দিলো এমন কথায়।

(*)

-‘আমার আপনার সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে সাহেদ ভাইয়া।’

ফোনে কারো সাথে কথা বলছে সাহেদ। হঠাৎ চেনা পরিচিত কন্ঠস্বর শুনে পেছন ফিরে তাকায়। রুয়াত কে দেখে বেশ অবাক হয়। রুয়াত তার সাথে কথা বলতে এসেছে! ব্যাপারটা কেমন ঘোলাটে লাগলো তার কাছে। কারণ চৌধুরী বাড়িতে আসার পর পর কখনো কোনো মহিলা কিংবা এই বাড়ির কোনো মেয়ে আজ পর্যন্ত নিজ থেকে কথা বলতে আসেনি। অবশ্য দেখা হলে কথা বলে। আর আয়াজের দলের কোনো লোক যদি বাসায় আসে তাহলে কড়া নির্দেশ থাকে যেনো কেউ না বের হয় রুম থেকে। আর বের হলেও অবশ্যই তার রুমের পাশ দিয়ে যেনো না যায়। এই কথাটি মোটামুটি সবাই মান্য করে। রুয়াত যে করে না তেমনটিও নয়। সে ও খুব করে কথাটি মেনে চলার চেষ্টা করে। আজ ইনিমার এনগেজমেন্ট ছিলো বলে আয়াজ সাহেদ কে দাওয়াত দিয়েছে। সেই হিসেবেই আজ আসা এখানে। তবে রুয়াতের নিজ থেকে এসে কথা বলাটা একটু বেশিই সন্দেহজনক লাগছে সাহেদের কাছে। এখানে আবার প্রতিক্রিয়া না করেও উপায় নেই। অবশ্যই তার স্যারের বাড়ির মেয়ে। কিন্তু ভয় ও হচ্ছে। না জানি আয়াজ কি না কি বলে! খানিকটা ঘাবড়ে যায় সাহেদ! সৌজন্যবোধক হাসি দেয়। অতঃপর বললো,

-‘আসসালামু আলাইকুম ম্যাম।’

রুয়াত সালামের জবাব নিলো। আরেকটু সামনে এগিয়ে এসে বললো,

-‘ভাইয়া আপনার সাথে আমার জরুরী কিছু কথা ছিলো। সেজন্যে এখানে আসা। আমি জানি আপনি ছাড়া আর কেউ কথাটির যথাযথ উত্তর দিতে পারবে না। তেমন কাউকেও আমি চিনিনা আপনি ছাড়া। তাই আমার উত্তর খোঁজার জন্য আপনিই ঠিক বলে মনে হয়েছে।’

এহেন কথায় ভ্রু কুচকালো সাহেদ। কি এমন জানার জন্য রুয়াত তার কাছে এসেছে? কথা বাড়াল না। সোজাসাপ্টা বললো,

-‘আমার যদি জানা থাকে তাহলে অবশ্যই বলবো। কি কথা ম্যাম?’

রুয়াত মাথা ঘুরিয়ে চারপাশে তাকালো। দেখলো আয়াজ কোঁথাও আছে কিনা! সাহেদের সাথে যে কথা বলতে এসেছে তা শুধু নিমি জানে। আর কেউ জানে না। ব্যাপারটা সম্পুর্ণ গোপন রাখতে চাচ্ছে সে। জিহ্বা দ্বারা অধর ভেজায়। বেশ সাহস নিয়ে বলে,

-‘আপনাদের স্যারের ব্যাপারে কিছু কথা জানতে এসেছি। শুনুন আগেই ভয় পাবেন না। আমিও কিন্তু রিস্ক নিয়েই এসেছি এখানে। কথাগুলো না জানতে পারলে হতাশ হবো। আশাকরি আপনি যা সত্যি তাই বলবেন।’

দু পা পিছিয়ে যায় সাহেদ। আয়াজের ব্যাপারে জানতে এসেছে? কি জানার আছে রুয়াতের? একটু হকচকিয়ে যায় সে। রুয়াত আবারও বললো,

-‘আমি একদিন আকস্মিক ভাবে একটা কথা শুনে ফেলেছিলাম। যেখানে আপনাদের স্যার মানুষ খু’নের কথা বলেছিলো। জানি না কথাটি কতটা সত্যি। আর এটার জন্যই আজ অনেক দিন আমাকে পস্তাতে হচ্ছে। এ কথাটির মানেও আমার জানা নেই। ওনি এসব কাজের সাথে জড়িত সেটাও জানি না। কোনো কিছুই ক্লিয়ার করা হয়নি। আপনি ওনার সবচেয়ে কাছের মানুষ। আপনার সাথে তিনি সব শেয়ার করেন। একই সাথে কাজ করেন। আপনি জানবেন না তা হয় না। দয়া করে আমাকে সত্যিটা বলুন।’

একসঙ্গে এতগুলো কথা বলে হাঁপিয়ে যায় রুয়াত। সাহেদ ভাবলো সে কি বলবে? তবে এটা এমন কোনো কথা না যে প্রকাশ করে দিলে খুব বেশি ক্ষতি হবে। আয়াজ সম্পূর্ণ ঘটনা সাহেদ কে বলেছিলো। এমনকি তার এসবের পেছন থেকে সরে আসার কারণ ও। তাই বলতে অসুবিধে নেই সাহেদের। এ কথা অবশ্য রুয়াত জানলে কিছুই হবে না। বেশ কিছুক্ষণ ভাবার পর সাহেদ মুখ খুললো,

-‘প্রথমেই বলি ম্যাম কথাগুলো আপনার মাঝেই রাখবেন। এগুলো যেনো আর কেউ না জানে। আপনাকে বলার একটাই উদ্দেশ্য কারণ আপনিও এসব কারণে স্যার কে ভুল বুঝেছেন। এই কথাটা স্যার আমাকে বলেছে। যারা পলিটিক্স করে তাদের শত্রুর অভাব নেই। এমন অনেক শত্রু আছে যারা সামনাসামনি খুব ভালো সেজে থাকে অথচ আড়ালেই তাদের আসল রূপ প্রকাশ পায়। রাজনীতি এমন একটা প্লাটফর্ম যেখানে সমাজের সব ভালো খারাপ লোকদের সাথে মিশতে হয়। এখন ধরুন আপনি জানেন মানুষটা খারাপ। অনেক অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত তাও আপনার তার সাথে পুরো দিন সব মুখ বুজে সহ্য করে নিয়ে দিব্যি হাসিখুশিতে কথা বলতে হবে। আপনি গোপন সুত্রে জানতে পেরেছেন লোকটা আপনার বিরুদ্ধে কাজ করছে, অন্য কারো সাথে হাত মিলিয়ে আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে তাহলেও সব ভুলে ওই সময়টাতে তার সাথে একদম সহজ ভাবে সাধারণ মানুষের মতো কথা বলা লাগবে। আর স্যার যেহেতু অনেক বড় একটা পদবী তে আছেন স্যারের ও এমন করতে হয়। কিছুদিন আগে জানতে পেরেছিলেন কেউ একজন স্যার কে মা’রার চিন্তা করছে। তাকে খুঁজতেই দিশেহারার মতো অবস্থা হয়েছিলো আমাদের পুরো দলের। শেষ পর্যন্ত খুঁজে পেয়েও আপনার জন্য পিছিয়ে এসেছি। কোনো রকম শাস্তি না দিয়ে স্যার তাকে ছেড়ে দিয়েছে। রাগের মাথায় স্যার বলে ফেলেছিলো খু’ন করার কথা। অথচ আপনি সেটা সত্যি সত্যি মনে করে বসেছিলেন। আমি এত বছর কাজ করেছি ওনার সাথে কখনো এসব কর্মকান্ডে জড়ায়নি ওনি। আচ্ছা ম্যাম আপনি সম্পূর্ণ নির্দোষ শুধুমাত্র আপনাকে আপনার জায়গা থেকে সরানোর জন্য মা’রার প্ল্যান করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তখন ঠিক কি করবেন আপনি? স্যারের জায়গায় অন্য কেউ হলে কারো কথার পরোয়া না করে ঠিকই লোকটা কে খু’ন করে ফেলতো। তাদের দু দন্ড হাত কাঁপতো না। আর আপনি কিনা স্যার কে খু’নি খু’নি বলে ফেললেন। শুধুমাত্র আপনার কথাটা ধরে রেখে স্যার লোকটা কে ছেড়ে দিয়েছে। এবং এটাও মানা করেছে যাতে কখনো আবার কোনোদিন এসব প্ল্যান করলে যেনো কেউ স্যার কে না জানায়। তবে তিনি সিকিউরিটি বাড়িয়ে দিয়েছেন। নিজেকে প্রটেক্ট করার জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পুরো কথাটি শোনার পর কি মনে হচ্ছে আদোও কি সত্যি বলেছেন ম্যাম?’

রুয়াত পুরো কথাটি শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো। সে সম্পূর্ণ না জেনে বুঝে আয়াজ কে বারবার একই শব্দ উচ্চারণ করে লোকটার হৃদয় ক্ষত করেছে। মনোক্ষুণ্ণ করেছে। এখন তো সবটা শোনার পর মনেহচ্ছে দোষটা রুয়াতের। পুরো কথা না জেনে আয়াজ কে দোষ দিয়েছিলো বিশ্রি ভাবে। কিসব জঘন্য কথা বলেছে। অথচ মানুষটার এখানে কোনো দোষ নেই। অনুশোচনায় লজ্জায় মাথা নুইয়ে নেয় রুয়াত। সেই আয়াজের সামনে দাঁড়িয়ে আবার কিভাবে ক্ষমা চাইবে। হৃদয় ভার হয় মেয়েটার। আচমকা কারো রাগান্বিত স্বরে ভেসে আসে,

-‘সাহেদ।’

একটি শব্দের মাঝে হাজার হাজার রাগ। ঝংকার তোলা শব্দ শুনে রুয়াত ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। আয়াজ কে এখানে দেখে হতভম্ব হয়ে যায়!

#চলবে…

[আসসালামু আলাইকুম। রি-চেক দেওয়া হয়নি। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here