#তবু_ভালো_আছি
#রাজেশ্বরী_দাস_রাজী
#পর্ব_২
“অদিতিই সেই মেয়ে যাকে তুমি ভালোবাসো, তাইতো?”
রণজয়ের কথার মাঝেই শ্রুতি বলে উঠে। রণজয় থামে, মাথা নেড়ে বলে, “হ্যাঁ।” তার মুখে সামান্য অনুতাপের ছাপ পর্যন্ত দেখা যায় না যেন। শ্রুতি আর একটাও কথা না বলে রণজয়কে পাশ কাটিয়ে বাড়ির ভেতরে এসে সোজা নিদেজের ঘরে চলে এলো। রণজয় ঘরে এসে প্রশ্ন করলো,
“সারা রাত কোথায় ছিলে?”
“জেনে কী করবে? আমি এতো রাতে কোথায় আছি, আদৌ বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি সেটা জানা প্রয়োজন মনে করেছো বলে তো মনে হচ্ছে না। তাই এখন এইসব ফর্মালিটি না করলেও চলবে, থাক। কারণ সত্যিই যদি প্রয়োজন বলে মনে করতে তবে অন্তত নিজের প্রেমিকাকে বাড়িতে ডেকে এভাবে সারারাত ফুর্তি করতে পারতে না।”
রণজয় উচ্চস্বরে বলল,
“শ্রুতি!”
শ্রুতি কঠোর গলায় বলল,
“চিৎকার করবে না একদম।”
রনজয় চাপা কণ্ঠে বলল,
“কেন? কী করবে?”
শ্রুতি তাকায় রণজয়ের মুখপানে, বলে,
“কী করবো! কী করবো সেই সিদ্ধান্ত আমি নিয়ে ফেলেছি রণজয়। আমি সেটাই করবো।”
“মানে? কীসের সিদ্ধান্ত? তুমি কী কর…”
রণজয় আরো কিছু বলতে যায়, তবে শ্রুতি তাকে থামিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক স্বরে শুধায়,
“তোমার ফোনটা কোথায়? ফোনটা দাও তো একটু।”
রণজয় অবাক হয়ে বলে,
“কেন? আমার ফোন নিয়ে কী করবে তুমি?”
শ্রুতি উত্তর না দিয়ে এদিক ওদিক তাকায়, একটু খুঁজতেই বিছানার ওপরেই রণজয়ের ফোনটা পেয়ে যায় সে। রনজয়ের ফোনটা লক করা ছিলো না, ফোনের কনট্যাক্ট লিস্ট ঘেঁটে রণজয়ের সামনেই একে একে নিজের মা-বাবা এবং শ্বশুর-শাশুড়ির নম্বর বের করে তাদের কল করে শ্রুতি। তাদের আজকে বিকেলেই মধ্যেই এখানে আসতে বলে সে। এভাবে এতো ভোরে ফোন করে জরুরি তলবে ডেকে পাঠানোর কারণটা অবশ্য সে জানায় না তাদের স্পষ্টভাবে। রণজয় বিস্মিত হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে সবটা, শ্রুতি কী করতে চাইছে সে বুঝতে পারছে না ঠিক। শ্রুতি কান থেকে ফোনটা নামাতেই সে বলে,
“ওদের কেন ডাকলে তুমি এখানে আজকেই বিকেলের মধ্যে? কী করতে চাইছো তুমি?”
শ্রুতি ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি টেনে বলল,
“ভয় নেই, তোমাদের সুবিধের জন্যই ডেকেছি। তুমি আর অদিতি একে-অপরকে ভালোবাসো না? তুমি তো চাও যেন তোমাদের রাস্তাটা পরিষ্কার হয়ে যাক, সেটা করার জন্যই ডেকেছি।”
“মানে?”
“সেটা না হয় তখনই বুঝতে পারবে।”
রণজয় কিছু বলতে গেলে তাকে বলতে না দিয়েই শ্রুতি আবারো শান্ত কণ্ঠে বলল,
“আমার একটা কথা রাখবে? আমার এখন কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করছে না, আমি কিছুটা সময় একা থাকতে চাই, থাকতে দেবে একা? প্লীজ।”
রণজয় আর কিছু বলল না, শ্রুতি ফোনটা এগিয়ে দিলে সেটা নিয়ে বিরক্ত মুখ নিয়েই চলে গেল সে সেই ঘর থেকে। শ্রুতি বিছানায় বসে পড়লো ক্লান্ত ভঙ্গিতে, মন-মস্তিষ্ক সকলকিছু কেমন যেন ক্লান্ত অনুভূত হচ্ছে তার কাছে। বড্ড ক্লান্ত! চোখ থেকে জল গড়ালে সেটাকে মুছে ফেলে গভীরে শ্বাস টানলো শ্রুতি। অনুভূতি শূন্য চোখে চেয়ে রইলো সে সামনের দিকে।
.
.
ড্রয়িংরুমে দাঁড়িয়ে আছে শ্রুতির মা-বাবা এবং শ্বশুর-শাশুড়ি। তাদের একপাশে দাঁড়িয়ে আছে রণজয়। কিছুসময় আগেই এখানে এসে পৌঁছেছে শ্রুতির এবং রণজয়ের মা-বাবা। তাদের মনে জমে রয়েছে হাজারো একটা প্রশ্ন, শ্রুতির এভাবে ডেকে পাঠানোর কারণ তাদের কাছে এখনো অজানা। শ্রুতি ড্রয়িংরুমে এলো, সে তাদের সামনে এসে দাঁড়াতেই রণজয়ের মা প্রশ্ন করলো,
“কী হয়েছে বলো তো বৌমা? এভাবে হঠাৎ জরুরি তলবে ডেকে পাঠানোর কারণ কী? এই রণ কী হয়েছে বলতো?”
রণজয় উত্তর দিলো না কোনো। শ্রুতি কিছুসময় চুপ রইলো। সে একনজর রণজয়ের দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ ফিরিয়ে তার শাশুড়ি মায়ের দিকে তাকালো।
“প*র*কীয়া মানে বোঝেন নিশ্চয় মা আপনারা?”
শ্রুতির প্রশ্নটুকু শুনে অবাক চোখে তাকালো সকলে তার দিকে। রণজয়ের মা বললেন,
“কী!”
শ্রুতি পুনরায় বলল,
“হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, প*রকীয়া। আপনার ছেলে সেই প*রকীয়ায় লিপ্ত। বিয়ের চার বছর পর আপনার ছেলে আমায় জানিয়েছে যে সে নিজের বউকে ভালোবাসে না, সে অন্যকাউকে ভালোবাসে, আর সেই অন্যকেউ হলো তার বউয়েরই বেস্টফ্রেন্ড। অদিতি আর তার মধ্যে খুব গভীর একটা সম্পর্ক আছে এবং সেই সম্পর্ক এতটাই গভীর যে আমার বলতেও ঘৃনা করবে। আর সেই সম্পর্ক এতটাই গভীর যে সে তার জন্য নিজের অনাগত সন্তানকে পর্যন্ত খু*ন করতে চায়।”
শ্রুতির মা অবাক স্বরে বলেন,
“অনাগত সন্তান!”
“হ্যাঁ, আমি প্রেগনেন্ট। মা হতে চলেছি আমি। এই খবরটা তাকে দেওয়ার পর সে জানিয়েছে যে সে এই সন্তানকে মে*রে ফেলতে চায়। আমি রাজি হই আর না হই আমাকে নাকি এ্যা*বরশন করাতেই হবে, কারণ সে চায় না যে তাদের মাঝে, মানে তার আর অদিতির মাঝে কেউ কাঁটা হয়ে দাঁড়াক। কী, ঠিক বলছি না রণজয়? যদি এক ফোঁটাও মনুষ্যত্ব তোমার মধ্যে বেঁচে থাকে তবে আশা করি এখন এই বিষয়টা তুমি নাকচ করবে না।”
রণজয়ের দিকে তাকায় সকলেই বিস্মিত চোখে। রণজয় খানিক অবাক হয়, শ্রুতির মতো শান্ত নম্র একটা মেয়ে যে প্রতিবাদ করতে পারে বা সবার সামনে এইসব বলতে পারে সেটা ঠিক ঠাহর করে উঠতে পারেনি হয়তো সে। রণজয়ের মা প্রশ্ন করেন,
“রণজয়! এগুলো কী শুনছি আমি?”
রণজয় চোখ নামিয়ে মেঝের দিকে তাকায়, সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে বলে,
“আমি অদিতিকে ভালোবাসি আর সেও আমাকে ভালোবাসে।”
“এতটাই ভালোবাসে যে স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে এই বাড়িতে তাকে এনে নোং*রামো করতেও বাঁধে না তাদের।”
শ্রুতির কথা শুনে রণজয় চোখ গরম করে তাকালো শ্রুতির দিকে, দাঁতে দাঁত চেপে রাগী স্বরে বলল,
“শ্রুতি!”
শ্রুতি কঠোর স্বরে বলল,
“একদম চিৎকার করবে না রণজয়। আমি আর তোমার চিৎকার শুনবো না। তোমার গলায় তোমাদের সেই নোং*রামোর চিহ্ন কিন্তু এখনো জ্বলজ্বল করছে।”
সকলের চোখ গিয়ে পড়লো রণজয়ের গলার দিকে, সেখানে একটি জায়গায় লাল দাগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। রণজয় কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে নিজের শার্টের কলার টেনে ঠিক করে নিজের গলা ঢাকার চেষ্টা করলো। রণজয়ের বাবা ছেলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে বললেন,
“ছিঃ রণজয়! তোর থেকে অন্তত এটা আশা করিনি! কীভাবে করতে পারলি তুই এমন একটা কাজ?”
রণজয়ের মা সামান্য ভেবে শ্রুতির কাছে এগিয়ে এলেন। শ্রুতির মাথায় হাত বুলিয়ে মুখে হাসি টানার চেষ্টা করে বললেন,
“দেখো মা সংসারে থাকতে গেলে তো অনেককিছু মানিয়ে চলতে হয়। আমি মানছি আমার ছেলে ভুল করেছে। ছেলেমানুষ ভুল করে ফেলেছে। আমি তোমায় বলছি, আমি ওকে বোঝাবো, ও এমন ভুল আর কখনো করবে না। তুমি এইসব কথা ভুলে যাও। আমি বলছি…”
রণজয়ের মাকে কথাটুকু শেষ করতে না দিয়েই শ্রুতি বলল,
“এইসব আমি ভুলে যাবো! কীভাবে বললেন আপনি এটা মা? প্লীজ, এবার অন্তত একটা মেয়ে হিসেবে ভেবে দেখুন ব্যপারটা। আর কীভাবে বোঝাবেন আপনি আপনার ছেলেকে? সেভাবেই, যেভাবে বিয়ের প্রথম থেকেই তাকে বোঝাতেন যে বউকে মাথায় তুলতে নেই! বউকে কীভাবে জব্দ করতে হয়! সেভাবেই বোঝাবেন আপনি?”
রণজয়ের মা কথাটুকু শুনেই যেন দমে গেলেন, সত্য কথাটা তার আত্মসম্মানে আ*ঘাত হা*নলো বেশ। শ্রুতি নিজের চোখে জমে আসা জলটুকু মুছে বলল,
“এতদিন চুপচাপ অনেককিছু সহ্য করেছি আমি, কিন্তু আর করবো না। আর না আমি আমার সন্তানের কোন ক্ষ*তি হতে দেবো। আমি ডিসিশন নিয়ে ফেলেছি যে আমি কী করবো। আর সেটা পরিষ্কারভাবে জানানোর জন্যই আমি আপনাদের সবাইকে এখানে ডেকেছি।”
শ্রুতির বাবা শুধালেন,
“কী ডিসিশন মা?”
“আমি রণজয়কে ডিভোর্স দেবো, অ্যান্ড ইটস মাই ফাইনাল ডিসিশন।”
রণজয়ের মা আতকে উঠে বললেন,
“সেকি কথা বৌমা! এইসব কী বলছো তুমি? সংসার ভাঙবে নিজেদের? বেয়াই বেয়ান আপনারাই কিছু বলুন আপনাদের মেয়েকে।”
শ্রুতির বাবা মেয়ের কাছে এসে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে বললেন,
“এটা কী বলছিস শ্রুতি তুই? শান্ত মাথায় ভেবে দেখ এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, এখনই হুট করে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিস না।”
“আমার ভাবা শেষ, আর কিছু ভাবার নেই আমার। আর এটাই আমার শেষ কথা, আমার সিদ্ধান্ত আমি বদলাবো না কিছুতেই। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব জরুরী বাবা। কারণ এই সিদ্ধান্তের ওপর অনেককিছু নির্ভর করে থাকে। চার বছর আগে যদি তোমরা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলতে তবে হয়তো আমাকে এই দিনটা দেখতে হতো না।”
শ্রুতির মা এবং বাবা একে-অপরের মুখপানে চাইলেন। শ্রুতি ঠিক কোন কথা ইঙ্গিত করতে চেয়েছে তা তারা ঠিকই বুঝেছেন। শ্রুতি শ্বাস টেনে পুনরায় বলল,
“আমি এই ভুল করবো না আর। আমার সন্তানের সাথে অন্তত কোন অন্যায় আমি কখনো হতে দেবো না। আমার সন্তানের জন্য, ওকে ভালো রাখার জন্য যে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার সঠিক বলে মনে হবে আমি সেগুলো অবশ্যই নেবো। আর এবারও আমি সেটাই করেছি। আমি আমার সিদ্ধান্তটা তোমাদের সবাইকে জানিয়ে রাখলাম। আশা করি আমার এই সিদ্ধান্তে রণজয়েরও কোন সমস্যা হবে না, কারণ সেও নিশ্চয় এমন কিছুই চায়। আমার আর কিছু বলার নেই।”
শ্রুতি নিজের কথাটুকু বলেই হাঁটা ধরলো ঘরের দিকে।
রণজয়ের মা-বাবার সাথে কিছু কথা শেষ করে শ্রুতির মা-বাবা গেলেন ঘরে মেয়ের কাছে। শ্রুতির তাদের আসতে দেখে তাদের দিকে মুখ তুলে তাকাতেই শ্রুতির মা নরম স্বরে বলল,
“শ্রুতি মা দেখ, শান্ত মাথায় ভাব। এভাবে সংসার ভেঙে দেওয়া ঠিক হবে না। এভাবে হুট করে ডিভোর্স চায় বললেই তো আর হয়ে যায় না। আর মেনে নিলাম তুই ডিভোর্স দিয়ে দিলি, তারপর কী করবি? তুই ডিভোর্স দিয়ে আবার বাবার বাড়িতে গিয়ে বসে থাকলে লোকে কী বলবে ভেবে দেখেছিস? তাও আবার তুই তো এখন একাও না, তুই মা হতে চলেছিস।”
শ্রুতির বাবাও একই সুর টেনে বলল,
“হ্যাঁ তাই তোর এই ডিভোর্সের ভুত বা সংসার ছেড়ে যাওয়ার কথা, এইসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল। তাছাড়া তুই আমাদের কথাটাও ভেবে দেখ। আর এখন আমি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি, সংসার তোর দাদা সামলায়, সংসারটা তো তাদেরই বলা চলে। তোর দাদা বৌদি ব্যপারটা কীভাবে নেবে সেটাও তো ভেবে দেখ। তুই এখন ডিভোর্স নিয়ে এভাবে ওখানে গিয়ে উঠলে তারাও যে সন্তুষ্ট হবে তা তো না।”
শ্রুতি অবাক চোখে তাকালো তাদের দিকে। পরমুহুর্তেই অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বলল,
“আমাকে তোমরা পর করে দিয়েছো জানতাম কিন্তু এতটা সেটা বুঝতে পারিনি। চিন্তা নেই, তোমাদের বাড়িতে আমি ফিরে যাবো না। তোমাদের বোঝা বাড়াবো না আমি কখনো। আমি যথেষ্ট শিক্ষিত, গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছি। হ্যাঁ, রণজয়ের কাছে এটার জন্য আমি কৃতজ্ঞ যে সে তখন আমার আকুতি-মিনতি শুনে আমাকে সংসারের সবকিছু সামলানোর পাশপাশি পড়ার সুযোগটা দিয়েছিল। সবকিছু সামলে হলেও অনেক কষ্টে অন্তত সেটা শে*ষ করতে পেরেছিলাম আমি বিয়ের পরেই। যদিও নিজেদের বিষয়ে সামান্য আপোস করেনি কখনো সে, নিজের দিকটা ঠিকই বুঝে নিয়েছে। যা হোক, আমি ঠিক কিছু একটা ব্যবস্থা নিজের করেই নেবো। হয়তো একটু কষ্ট হবে, তবে কোন একটা চাকরি খুঁজে নিজের আর নিজের সন্তানের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ঠিকই করে নিতে পারবো।”
“এইসব মুখে বলা বা ভাবা সহজ। আর যা তোর ভাগ্যে ছিল তা হয়েছে। এই ঝেমেলাটা বাড়িয়ে লাভ আছে কি কোন? তুই কেন…”
শ্রুতি তার মাকে থামিয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরে বলল,
“প্লীজ। আমি খুব ক্লান্ত, কোন কথা বলতে চাই না আমি এখন আর এইসব নিয়ে।”
শ্রুতির বাবা বললেন,
“বেশ, তুই তবে এখন বিশ্রাম নে। ঠান্ডা মাথায় ভাব, ঠিকই তবে আমাদের কথা বুঝতে পারবি।”
শ্রুতির মাকে ইশারা করলেন তিনি, শ্রুতির মা মাথা নাড়ালেন। তারা দুজন বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে। তারা বেরিয়ে আসতেই রণজয়ের মা প্রশ্ন করলেন,
“কী হলো? ওকে বোঝাতে পারলেন আপনারা?”
শ্রুতির বাবা নিরাশ কণ্ঠে বললেন,
“না, আমার মনে হয় ওর কিছুটা বিশ্রামের প্রয়োজন। আগামীকাল না হয় আমরা কথা বলবো ওর সাথে, আজকে ও একটু রেস্ট নিক।”
রণজয়ের মা মৃদু মাথা নাড়ালেন, রণজয়ের বাবার দিকে চেয়ে বললেন,
“কী? তুমি কিছু বলবে না?”
রণজয়ের বাবা তাচ্ছিল্যের সুর টেনে বললেন,
“কাকে কী বলবো? কেনোই বা বলবো? এতদিন যখন চুপ করে থেকেছি তখন এখনো চুপ থাকবো। না শ্রুতিকে কিছু বলবো না অন্যকাউকে। শ্রুতি মা যা সিদ্বান্ত নেবে তাতে কোন বাঁধা দেবো না আমি।”
রণজয় নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে ছিল একপাশে। রণজয়ের বাবা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একনজর তার দিকে চেয়ে চলে গেলেন সেই স্থান থেকে। রণজয়ের মা সহ বাকি সকলেই সরে এলেন, সকলেরই বিশ্রামের প্রয়োজন খানিক।
এদিকে ঘরে শ্রুতি ধপ করে বসে পড়লো মেঝেতেই। বুক ফেঁটে কান্না পাচ্ছে তার এখন, চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু না, তাকে যে ভে*ঙে পড়লে চলবে না। তাকে শক্ত হতেই হবে।
.
.
গভীর নিস্তব্ধ রাত, বাড়ির সকলে গভীর ঘুমে মগ্ন হয়তোবা। শ্রুতি নিজের ব্যাগটা নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে…
চলবে,..
[ বিঃদ্রঃ সামান্য ধৈর্য্য ধরে পাশে থাকবেন। ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ। ]