#হৃৎপিণ্ড_২
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ
#পর্ব_৩১
#জান্নাতুল_নাঈমা
____________________
এ’শহর শুধু ভগ্নহৃদয়ের গল্পে ভরপুর। এ শহরের আনাচে কানাচে রয়েছে ব্যর্থ প্রেমিকদের আহাজারির দৃশ্য, হৃদয়বিদারক সুরধ্বনি। চোখের সম্মুখে দশজোড়া মানব-মানবীদের দেখা মিললে তাদের ন’জোড়ার থেকেই শুনতে পাওয়া যাবে না পাওয়া গল্পের কথাগুলো। যাদের শুরুটায় ভরপুর ছিলো সীমাহীন প্রাপ্তিতে,সীমাহীন ভালোবাসায়,মনোমুগ্ধকর প্রেমের গল্প। আর শেষটায় রয়েছে এক বুক যন্ত্রণা, না পাওয়া বেদনায় ভরপুর। তাদের চোখে থাকবে দায়িত্ববোধ, একে অপরকে ভালো রাখার অবিরাম চেষ্টা। কিন্তু ভালোবাসা? ভালোবাসার কিঞ্চিৎ আভাসও হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু সে দশজোড়ার একটি জোড়া অবশ্যই থাকবে যাদের মধ্যে না পাওয়ার কোন বেদনা থাকবে না। চোখে, মুখে থাকবে একরাশ প্রাপ্তি। তাদের গল্পের শুরুটায় থাকবে বহু ত্যাগ বহু তিতিক্ষা আর শেষটায় থাকবে পূর্ণতা। সে একজোড়া মানব-মানবীর মধ্যেই পড়ে ইমন এবং মুসকান৷ তবে তাদের সম্পর্কের বিশেষত্ব হলো, অভাবনীয়, অকল্পনীয় এক বন্ধনে কিছুটা আবেগ, কিছুটা বিবেক আর সীমাহীন ভালোবাসায় আবদ্ধ হয়েছে তারা। যে সময়টা বিয়ে করে সংসার শুরু করার কথা ছিলো ইমনের সে সময়টায় যৌবনের প্রথম ধাপে পা দেওয়া এক যুবকের ন্যায় প্রেমে পড়েছিলো সে। আটাশ বছর বয়সী ইমন চৌধুরী চৌদ্দ বছর বয়সী এক কিশোরী মুসকানের প্রেমে মজে উন্মাদ হয়ে গিয়েছিলো। সে কিশোরীটিও কিন্তু কম ছিলো না। তার অবুঝ মনের আশকারাতে দিশেহারা হয়ে আবেগান্বিত রূপে ধরা দিয়েছিলো প্রেমিক পুরুষটির কাছে। যেখানে সবাই চিন্তিত ছিলো তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সেখানে তাদের মনোবল ছিলো দৃঢ়। একজন আবেগে আরেকজন বিবেক বর্জিত করে ভালোবাসার মানুষটিকে কাছে পাবার নেশায়। বহু ঝড় উপেক্ষা করে, বহু ঝামেলা পাড় করে ছোট্ট কিশোরীর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তার কিশোরী কালের প্রথম পুরুষ হয়ে যেমনটি ঘটিয়েছিলো প্রণয়ের সম্পর্কে ঠিক তেমনি যৌবনের প্রথম পুরুষ হয়েই প্রণয় থেকে ঘটালো পরিণয়।
আমরা যখন কাউকে ভালোবাসি তাকে পাওয়া যেখানে অসম্ভব থাকে সেখানে সে অসম্ভব কে সম্ভব করে, মান -অভিমান,দুঃখ,কষ্ট যন্ত্রণার ইতি ঘটিয়ে যখন সম্পর্কটি বৈবাহিক সম্পর্কে রূপ নেয় কেমন অনুভূতি হয়? দূরত্ব অতঃপর কাছে আসা তারপর? আবারো হারিয়ে ফেলার ভয় আবারো ফিরে পাওয়া। সম্পর্কে উন্নতি, অবনতি চলতে থাকা কালীন সর্বশেষ যখন দুটি দেহ দুটি হৃদয় এক হয় উপরওয়ালার উপহার সরূপ আগাম বার্তা আসে তাদের ভালোবাসার পূর্ণতা সরূপ দুনিয়াতে আসছে ছোট্ট একটি প্রাণ। তাদের একে অপরের সন্তান অনুভূতি তা ঠিক কেমন হয়? একটু কল্পনা করে দেখা যাবে কি? কিছু সেকেন্ড চোখ বুঝে মূহুর্তগুলো অনুভব করলেই টের পাওয়া যাবে কতো সুখ… এ সীমাহীন সুখ, এ সীমাহীন প্রাপ্তিকেই ভালোবাসা বলে আখ্যায়িত করা যায়। ইমন মুসকানের ভালোবাসা বলেই আখ্যায়িত করা যায়। যে ভালোবাসা বিবেচনা করেনি পরিবেশ,বিবেচনা করেনি একে অপরের বয়স, বিবেচনা করেনি পারিপার্শ্বিক মানসিকতাকে। তারা সর্বদা অটল ছিলো নিজ অনুভূতিতে, নিজ ভালোবাসাতে। তারা সর্বদা মত্ত থেকেছে একে অপরের মাঝে। এ অনুভূতি গুলো যেনো চির স্মরণীয়।
.
ড্রাইভ করছে ইমন। তার কাঁধে মাথা রেখে পাশেই চোখ বুজে বসে আছে মুসকান৷ আচমকাই গাড়ি থেমে যাওয়াতে চোখ মেলে তাকালো মুসকান। নম্র ভণিতায় ইমনের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো,
“কি হলো? ”
ইমন ইশারা করলো নামতে। মুসকান ভ্রু কুঁচকে আশেপাশে চেয়ে উৎকন্ঠিত হয়ে বলে,
“এ’মা এটাতো আমাদের বাড়ি তুমি না আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে? ”
“হুম বাবার বাড়ি,ভাইয়ের বাড়ি ঘুরতে নিয়ে এলাম। ”
“এটাকে ঘোরা বলে এভাবে ঘোরানোর মানে কি? অন্তত রেষ্টুরেন্টে তো নিয়ে যেতে পারতে…। ”
“নো ম্যাডাম এখন থেকে ঘুরতে হলে এভাবেই ঘুরতে হবে। আর খানাদানার ব্যাপারটাও বাসার ভিতরে সারতে হবে। বাইরের খাবার খাওয়া নিষেধ। যা খেতে চাও সব বাসায়ই তৈরি করে দেওয়া হবে। ”
“ওও আচ্ছা আপনি তাহলে নতুন নিয়ম তৈরি করছেন। ”
“নতুন সদস্য আসবে আর নিয়ম পুরোনো তাই কখনো হয়। ”
ডোর খুলে নেমে দাঁড়ালো মুসকান। গাড়ি লক করে ইমন নেমে আসার পর দু’জন একসাথেই বাসার ভিতরে ঢুকলো। ওদের দেখেই মুয়াজ ছুটে এসে মুসকানকে জড়িয়ে ধরলো। আধোআধো সুরে বললো,
“ফুমনি ফুমনি। ”
তিন’বছরের মুয়াজকে কোলে তুলে নিলো মুসকান। ইমন বিচলিত ভঙ্গিতে তৎক্ষনাৎ মুসকানের থেকে মুয়াজকে কেড়ে নিলো। চোখ রাঙিয়ে বললো,
“তুমি ওকে কোলে তুলেছো কেন ভারী জিনিস একদম ওঠাবে না। ”
মুসকান ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললো,
“কিহ ও ভারী ছিঃ এমন কথা তুমি বলতে পারলে? দাঁড়াও আমি ভাবিকে এখুনি বলছি। ”
ওদের কথার মাঝেই রিমি চলে এলো। খুশিতে গদগদ হয়ে বললো,
“এই তোরা এসে গেছিস… আরে ভাইয়া দাঁড়িয়ে কেন আমি আম্মাকে ডাকছি। মুসু কিছু বলবি? ”
এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে থামলো রিমি। মুসকান ইমনের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে উদ্যত হবে তার পূর্বেই ইমন মুয়াজের গাল টেনে রিমিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
“ভাইস্থা আমাদের খুব গুলুমুলু এটাই বলতে চাচ্ছে মুসকান তাইনা? ”
রিমি মাথা চুলকে হাসলো বললো,
“তোমরা বসো আমি তরকারি বসিয়ে আসছি। আম্মাকেও বলে আসি তোমরা আসছো। ”
রিমি চলে যেতেই মুসকান দ্রুত পায়ে গিয়ে সোফায় বসলো। গলা শুকিয়ে এসেছে তার ইমন বুঝতেই মুয়াজকে নিচে নামিয়ে ডায়নিং টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলো। গ্লাসে পানি ভরে মুসকানের সামনে ধরতেই মুসকান সেটা এক চুমুকে শেষ করলো। মুয়াজ এসে আবার মুসকানের কোলে বসতে নিলেই ইমন খপ করে তাকে নিজের কোলে বসিয়ে দিলো৷ মুসকান কপাল কুঁচকে হাত বাড়ালো শাসিয়ে বললো,
“ওকে আমার কোলে দাও ভালো হবে না বলছি। ”
“একদম না ও ছোট তোমার সমস্যা বুঝবে না। দেখো কেমন নড়াচড়া করে তুমি সামলাতে পারবে না ব্যথা দিয়ে দেবে। ”
“আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি এমন করছো কেন? মুয়াজ বাবা দেখি আসোতো কোলে আসো। ”
মুসকান হাত বাড়াতেই ইমন বললো,
“মুয়াজ বাবা আমরা এখন কি খাবো বলোতো আমরা এখন চকলেট খাবো ”
বলেই পকেট থেকে চকলেট বের করে সোফা থেকে ওঠে বাইরে চলে গেলো। মুসকান লম্বা এক শ্বাস ছেড়ে বললো,
“তোমার খবর আছে তুমি একবার আমার কাছে এসে দেখো আমি কি করি। ”
_____________________
আড়াই মাস চলছে মুসকানের। শুরুর দিক শরীরটা বেশিই খারাপ যাচ্ছে। সারাদিন ইমনের অফিস থাকে। সময় দিতেই পারেনা তাই ইরাবতীর থেকে পারমিশন নিয়েই মুসকানকে বাপের বাড়ি রাখা হলো। ইরাবতী অবশ্য রাগ করেনি কারণ তার শরীর টাও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ইচ্ছে থাকলেও মুসকানকে সেভাবে দেখতে পারছে না। যেহেতু বাইরের খাবার খাওয়া নিষেধ করেছে ইমন সেহেতু নিজেও রান্না করে খাওয়াতে পারছেনা। এ সময় নিজের মায়ের কাছে থাকাটাই মঙ্গলজনক ভেবে পাঠানো হলো মুসকানকে। ইমনও যখন সময় পায় তখন চলে যায় সেখানে। বাড়ি বসে বোরিং হয়ে যায় মুসকান তাই প্রতি শুক্রবার বিকেলে ঘুরতেও নিয়ে যায়৷ কখনো মাঝরাতে নিজহাতে রান্না করেও খাওয়াতে হয় বউটাকে। দিনগুলো তাদের এভাবেই বেশ যেতে থাকে। মা,ভাই,ভাবি, স্বামীর ভালোবাসায় কোন ত্রুটি নেই। তাদের ভালোবাসায় নিজের অসুস্থতাটুকুও ভুলে যায় সে। বাচ্চা পেটে আসার প্রথম ক’মাস যতোটা অসুস্থ বোধ করেছে এখন অনেকটাই কমেছে সে অনুভূতি। এখন তার পাঁচ মাস চলছে। দুপুর দুটা বাজে বারোটার দিকে খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলো সে। আচমকাই ঘুম ভেঙে যায় মুসকানের। তলপেটের যে অংশটুকু কিঞ্চিৎ উঁচু হয়েছে সেখানটায় কেমন অদ্ভুত ব্যথা অনুভব করে। এই ব্যথার অর্থ কিছু সময় নিয়ে বোঝার চেষ্টা করে। ধীরে ধীরে ব্যথাটা বাড়তে থাকে। নিঃশ্বাস হয়ে আসে রুদ্ধ। সে নিঃশ্বাস নিতে পারছেনা, তার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। নিজের সঙ্গে কি ঘটছে ভাবতেই পুরো শরীর শিউরে ওঠলো মুসকানের। হাত,পা কাঁপতে শুরু করলো অবিরত। ভয়ে কথাও বলতে পারছেনা৷ পেটের ভিতর কেমন বুদবুদ উঠছে এমন অনুভব হচ্ছে। বালিশের পাশ থেকে কাঁপা হাতে ফোন নিয়ে ইমনকে ছোট্ট একটি ম্যাসেজ করলো মুসকাম যেটাতে লিখা ছিলো – “নানাভাই আমার পেটে অস্থির লাগছে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে, আমার খুব পেইন হচ্ছে। ”
ম্যাসেজটা পাঠানোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কল করলো ইমন৷ ফোন রিসিভ করে মুসকান ক্রন্দনরত কন্ঠে হাঁপানো সুরে বললো,
“তুমি কোথায়। ”
“আমি এখনি আসছি এই বেরিয়েছি ভয় পেয়ো না। তুমি রিমিকে ডাকো দরজা কি আঁটকে রেখেছো? ”
“না তুমি আসো। ”
“আরে বোকা কাঁদছো কেন এইতো গাড়িতে ওঠেছি। তুমি রিমিকে ডাকো, কাকিমাকে ডাকো মুসু। ”
মুসকান কিছু বললো না শুধু ঘনঘন নিঃশ্বাস নিতে শুরু করলো৷ ইমন ফোন কেটে রিমিকে কল করলো। ছেলেকে সবেই ঘুম পাড়ালো রিমি। তখনি ইমনের কল এলো। কল পাওয়া মাত্রই মরিয়ম আক্তার কে নিয়ে ছুটে মুসকানের ঘরে গেলো ওরা। পরিস্থিতি ঠিক কি বোঝা মাত্রই হেসে ফেললো রিমি। মুসকান মরিয়ম আক্তারের বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে আছে। রিমি বললো,
“আরে পাগলী বেবি রেসপন্স করছে এতো নার্ভাস হওয়ার কিছু নাই। বরং খুশি হো তোর বাচ্চা ঠিক আছে বলে। ”
গেটে শব্দ হতেই রিমি চটপট গিয়ে গেট খুলে দিলো। ইমনের চিন্তান্বিত মুখখানা দেখে বললো,
“বড্ড ভয় পেয়েছেন বুঝি? এই ননদিনীকে নিয়ে আর পারিনা অল্পতেই ভয় পেয়ে যায়। ”
কথা বলতে বলতেই গেট লাগিয়ে ভিতরে গেলো দু’জন। ইমন রুমে ঢুকতেই মরিয়ম আক্তার বললো,
“আব্বা অফিস থেকে আসলা? ”
স্বস্তির শ্বাস ছেড়ে ইমন বললো,
“হুম ছুটি নিয়ে নিয়েছি ওকে কি ডক্টরের কাছে নিতে হবে? হঠাৎ এমন হলো যে…। ”
মরিয়ম আক্তার ওঠে দাঁড়ালো ইমন গিয়ে বসলো বিছানায়। রিমি বললো,
“আরে ভাইয়া তেমন কিছুনা এটা স্বাভাবিক পাঁচ মাস পড়েছে বেবি নড়াচড়া করবেই আর দুমাস পরে তো আরো বেশি নড়াচড়া করবে তখন তো এর থেকেও কষ্ট হবে। ”
ইমনের মুখটা ছোট হয়ে গেলো। মুসকান’কে দেখে সে বেশ বুঝতে পারছে বেচারীর ওপর দিয়ে কি যাচ্ছে। আর রিমি কিনা বলছে এর থেকেও কষ্ট হবে? মরিয়ম আক্তার রুমের বাইরে চলে গেলেন। ইমন মুসকানের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
“অনেক পেইন হচ্ছে? ”
মুসকান মাথা নাড়িয়ে না বোঝালো। রিমি চেয়ার টেনে ওদের সামনে বসতে বসতে বললো,
“আরে ভাইয়া টেনশন করবেন না। মুসু ব্যথার থেকে ভয়েই এমন করছে এতো ভয়ের কিছু নেই এটা স্বাভাবিক। ”
ইমন অবুঝের মতো অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো রিমির দিকে। মুসকান ইমনের একটি হাত শক্ত করে চেপে ধরে আছে। রিমি ইমন মুসকান দু’জনের দিকেই দৃষ্টি বুলিয়ে বললো,
“আহারে এরা তো দেখা যায় দু’জনই বেশ ভীতু। ভয়ের কিছুই নাই একটু সাহসী হো মুসু আর ভাইয়া আপনি ওকে সাহস দিন। ”
রিমি কিছু সময় থামলো তারপর আবার বললো,
“গর্ভবতী থাকাকালীন সবথেকে দারুণ সময় তো এটাই মুসু আর তুই কিনা ভয়ে এ সময়টা উপভোগই করছিস না। কদিন পর বেবি যখন বড়ো বড়ো কিক মারবে তখন কি করবি তাহলে? ”
ভ্রুজোড়া কুঁচকে গেলো ইমনের। মুসকান দুর্বল চোখে তাকিয়ে রইলো ইমনের দিকে। ইমন বললো,
“সে যাইহোক ওর অবস্থা এমন হচ্ছে কেন রিমি? আমার মনে হয় ডক্টরের কাছে যাওয়া উচিৎ একবার। ওর শরীর ঠিক আছে কিনা বেবি ঠিক আছে কিনা সেটা জানা দরকার। ”
“আজ তো সময় নেই কাল না হয় যাবেন। এতো ভয় পাবেন না তেমন কিছুই হয়নি এটা স্বাভাবিক বিলিভ না হলে সায়রী আপুকে ফোন করুন সেম কথাই বলবে। ”
কথাগুলো বলে ওদের একাকী সময় কাটাতে দিয়ে বেরিয়ে গেলো রিমি। ইমন ওঠে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে আগে পোশাক পাল্টে নিলো। তারপর ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো মুসকানের দিকে। আধশোয়া হয়ে বসে আছে মুসকান। ইমন তার ভারী নিঃশ্বাস ত্যাগ করে মুসকানের পাশে বসলো। মুসকান দুর্বল চোখে তাকিয়ে বললো,
“আমার জন্য আজ অফিসটা মিস গেলো। ”
ইমন কিছু বললো না নিঃশব্দে কেবল মুসকানের পরিহিত কামিজের একপার্ট ওঠিয়ে পেটের নিচের ভাগ উন্মুক্ত করে দিলো। আলতো হাতে স্পর্শ করে শান্ত গলায় বললো,
“মুসু এখানটায় ওকে ফিল করছো? ”
শিউরে ওঠলো মুসকান। আনন্দানুভূতিতে ছেয়ে গেলো বুকটা। ইমনের আলতো ছোঁয়া হাতটির ওপর দৃঢ় স্পর্শ করে বললো,
“ফিল করছি এখনো ফিল করছি ওকে আমি। আমার নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। আচ্ছা তোমরা দু’জন এমন কেন বলতো? তোমাদের উপস্থিতির সাথে আমার নিঃশ্বাসের কি সম্পর্ক ? ”
আলতো হাসলো ইমন। মুসকানের হাতটি সরিয়ে দিয়ে মাথা নিচু করে উদরে গভীরতমভাবে ওষ্ঠ ছোঁয়ালো। সে গভীর ওষ্ঠজোড়া কিঞ্চিৎ হালকা করে উদর ছুঁয়ে ছুঁয়ে বললো,
“কারণ আমরা দু’জনই তোমার হৃদস্পন্দনের সাথে জড়িত। আমি যদি হই তোমার হৃদপিণ্ড সে তোমার কলিজার টুকরো ডু ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড? ”
চোখ বন্ধ করে ঠোঁট কামড়ে আছে মুসকান। তার এক হাত ইমনের চুলগুলো আঁকড়ে ধরে আছে। ইমন মাথা তুলে এক পলক মুসকানকে দেখে নিয়ে বাঁকা হেসে বললো,
“হায়রে বউ আমার বাচ্চা এসে গেলো তবুও তার খিঁচমারা বন্ধ হলোনা। ”
চলবে…