#মায়াবতী
#পর্ব:৩৯
#তানিশা সুলতানা
অর্ণব বেরিয়ে গিয়েও আবার ফেরত আসে। ইতি বেগম সবেই খেতে বসেছিলো। মুখে ভাত পুরবে তখনই অর্ণবকে দেখে চমকে ওঠে। ভাত রেখে অর্ণবের দিকে তাকায়। অর্ণব মুচকি হেসে ওনার পাশে বসে পড়ে।
“শাশুড়ী মম জামাইকে খেতে না দিয়ে নিজেই খাচ্ছেন? ইটস নট ফেয়ার মম।
আগে জামাই আদর করতে হয়।
ইতি লজ্জা পায়। ঠিকই তো। মেয়ের জামাইকে সে খেতে না দিয়ে নিজে কি করে খেতে বসলো?
অবশ্য সে ভেবেছিলো চলে গেছে।
এমন সময় তামিম দৌড়ে আসে।
অর্ণবের গা ঘেসে দাঁড়ায়। অর্ণব কোলে তুলে নেয় তামিমকে।
” শালাবাবু। এতোখন কইছিলা?
তামিম অর্ণবের ঝাঁকড়া চুলে হাত ঢুকিয়ে দেয়। এমন চুল সে আগে দেখে নি। আজকেই প্রথম দেখলো। তার ছোট্ট মনে প্রশ্ন আসছে “এই চুলে চিরুনি দেয় কিভাবে? কিন্তু প্রশ্নটা করতে পারে না সে।
শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়েই থাকে।
ইতি বেগম ডিম ভাজতে চলে গেছে। তারা ডাল রান্না করেছিলো। আর এই ডাল দিয়েই সবাই রাতের খাবারটা শেষ করতো। কিন্তু অর্ণবকে তো শুধু ডাল দিয়ে খেতে দেওয়া যাবে না।
অর্ণব রান্না ঘরের দিকে তাকাচ্ছে। তার আসলে খাওয়ার মুড নাই। কিন্তু শাশুড়ীর সাথে ভাব জমাতে হবে বলেই চলে গিয়ে আবার ফিরে আসলো শাশুড়ীর থেকে খাবার খেতে।
অর্ণব তামিমের নরম তুলতুলে গাল দুটো টেনে দেয়।
তারপর জিজ্ঞেস করে
” শালাবাবু কোন ক্লাসে পড়ো?
তামিম বিরক্ত। তার নাম তামিম। তাকে কেনো শালাবাবু বলে ডাকবে?
সে নাক মুখ কুঁচকে জবাব দেয়।
“আমার নাম তামিম। শালাবাবু না।
অর্ণবের হাসি পায়। একদম বোনের মতো।
” তোমার নাম তো তামিমই। তুমি আমার শালাবাবু লাগো।
“না না
আমি শালাবাবু হবো না। তামিমই থাকবো। শালাবাবু নামটা সুন্দর না।
” হ্যাঁ তুমি তো তামিমই থাকবে। শুধু আমি শালাবাবু বলে ডাকবো।
“নাহহহহহ
এটা হবে না।
অর্ণব দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। একে বুঝিয়ে লাভ হবে না।
ততখনে ইতি বেগম ডিম ভেজে চলে আসে। ভাত বেরে দেয় অর্ণবকে। অর্ণব কখনো এরকম ভাবে ডাল ডিম দিয়ে ভাত খেয়েছে কি না মনে নাই তার।
তবে মনে হচ্ছে ভালোই হবে খেতে। সে খাবারের দিকে এক পলক তাকিয়ে ইতি বেগমের দিকে তাকায়।
” আমি সুইট কিউট বউটাকেও ডাকুন। ডিনারটা এক সাথে করি।
ইতি ডাকে তন্নিকে। তন্নি দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে লুকিয়ে দেখছিলো অর্ণবকে। মায়ের ডাকে এগিয়ে আসে। কেনো জানি তারও এক সাথে খেতে ইচ্ছে করলো।
তন্নি গিয়ে অর্ণবের মুখোমুখি বসে। তামিমকে অর্ণব পাশে বসিয়ে দেয়। ঘরে দুটো ডিম ছিলো দুটোই ভেজে এনেছে ইতি বেগম। অর্ণব দুটো ডিমকে চার খন্ড করে। এক খন্ড নিজে নেয় আরেকটা তামিমকে দেয় আরেকটা তন্নিকে দেয়। আর বাকিটা রেখে দেয় ইতি বেগমের জন্য।
অর্ণবের এরকম ব্যবহারে তন্নি বেশ খুশি হয়। ইতি বেগম লজ্জায় ওখান থেকে চলে যায়। ভালো মন্দ দুটো খেতে দিতে পারলো না সে।
খাওয়ার সময় কথা বলা ভালো না তামিম শিখেছে তন্নির থেকে। অর্ণবকেও বলেছিলো তন্নি একবার। তাই চুপচাপ খেতে থাকে সবাই। অর্ণব খেতে খেতে তাকায় তন্নির দিকে। তার মায়াবতী। কবে তাকে ঘরে তুলতে পারবে? কবে তাকে সারাক্ষণ দেখতে পারবে? কবে তাদের অনি আসবে?
সময় কেনো দ্রুত চলে যায় না? কেনো সব কিছু ঠিকঠাক থাকে না?
__
অর্ণবের রুম থেকে সাগরের রুমটা স্পষ্ট দেখা যায়। বেপারটা অথৈ কেবলই খেয়াল করলো। সে বেলকানিতে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকে সাগরের রুম। কি সুন্দর গোছালো রুমটা। খাটের পাশে থাকা কাবাডের ওপরে শারি শারি হেলমেট সাজানো। বাইক তার ভীষণ পছন্দ। দুটো বাইক তার। সাথে অনেক গুলো হেলমেট। একেকদিন একেকটা হেলমেট নিয়ে সে কলেজে যায়।
এই হেলমেট গুলো অথৈয়ের পছন্দের। তার ভীষণ ইচ্ছে একদিন সাগরের বাইকের পেছনে বসে সাগরের হেলমেট মাথায় পড়ে সারা শহর ঘুরবে, সাগরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরবে, শার্টের ঘ্রাণ নিবে। অনেক অনেক কথা বলবে সাগরের সাথে।
কিন্তু এই ইচ্ছে কখনোই পূরণ হলো না। মুখ ফুটে সাগরকে কয়েকবার বলতে চেয়েছে “আমাকে এলটু লিফট দিবেন?”
কিন্তু বলতে পারে নি। যদি না দেয়। মুখের ওপর না করে দেয়? তাহলে তো অথৈ লজ্জায় ম*রেই যাবে।
এসব ভাবতে ভাবতে অথৈয়ের মাথা ঘুরে আসে। ভীষণ দুর্বল সে।
মাথা ধরে অর্ণবের ফুল সাজানো খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ে। সাগরকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখ লেগে আসে বুঝতেই পারে না।
জীবনে প্রথমবার অর্ণব ডিপ্রেশন শব্দটার সাথে পরিচিত হয়েছে। টেনশন তাকে গ্রাস করেছে। পরিস্থিতি বিগড়ে যাচ্ছে। অর্ণব নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ভালোবাসাটা এমন কেনো?
সব সময় হাসি খুশি থাকা অর্ণব হঠাৎ করেই চুপসে গেছে। বাঁকা ঠোঁটের মুখখানি গম্ভীর হয়ে গেছে।
একটা নিউজ পুরো দুনিয়া ওলট পালট করে দিয়েছে অর্ণবের।
দরজা খুলে রুমে ঢুকতেই প্রথমে অর্নবের নজরে পড়ে ফুল সাজানো খাটটার দিকে। কিছুটা মজা করেই সাজিয়েছিলো সে। সে জানতো তন্নি আসবে না। আর এভাবেও সে তন্নিকে আনবে না। তার মায়াবতীকে সে মায়ার রাজ্যে নিয়ে আসবে পুরো শহর জানিয়ে।
বিছানায় অথৈকে হা করে ঘুমতে দেখে এগিয়ে যায় অর্ণব। বালিশ ছাড়া ঘুমিয়েছে। তাই মুখটা খুলে গেছে। অন্য সময় হলে অর্ণব এটা পিক তুলতো। তারপর অথৈকে প্রতিদিন জ্বালাতো। কিন্তু আজকে সেরকম মুড নেই।
অর্ণব অথৈয়ের পাশে বসে। মাথাটা তুলে বালিশ দিয়ে দেয়। মুখের ওপর পরে থাকা ছোট চুল গুলো কানের পেছনে গুঁজে দিয়ে চুমু খায় অথৈয়ের কপালে। ডান হাতের কবজিতে ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ লাগানো। অর্ণব সেখানেও চুমু খায়।
বোনকে সে বড্ড বেশি ভালোবাসে। হ্যাঁ সারাক্ষণ সে বোনের পেছনে লেগে থাকে ঠিকই কিন্তু ভালোবাসে খুব।
অথৈ নরেচরে ওঠে। তার ঘুম পাতলা একটু শব্দ হলেই সে জেগে যায়।
অথৈকে চোখ খুলতে দেখে অর্ণব তাকে ধরে বসিয়ে দেয়। হাই তুলে অথৈ ভাইয়ের দিকে তাকায়।
“সাগরকে ভালোবাসিস?
অর্ণবের প্রশ্নে থমকে যায় অথৈ। তার ভাই জানলো কি করে?
মাথা করে শুকনো ঢোক গিলে অথৈ। ভাই তাকে কখনো বকে না। কিন্তু তবুও তার শক্ত মুখখানা দেখে ভয় হচ্ছে।
জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে অথৈ রিনরিনিয়ে বলে ওঠে
” আসলে ভাইয়া সেরকম কিছু না। আমি জাস্ট একটু ঘাবড়ে গেছিলাম।
অর্ণব সরু চোখে তাকায় অথৈয়ের দিকে।
“ইয়েস ওর নো?
অথৈ দুই মিনিট সময় নিয়ে ভাবে। ভাই যখন প্রশ্ন করছে তখন জেনেই প্রশ্ন করছে। মিথ্যে বলার কোনো জায়গাই নেই।
” হ্যাঁ
“প্রেম করতে চাস না কি বিয়ে?
” দুটোই
“গেট রেডি ফর ম্যারেজ।
অথৈয়ের চোখ দুটো বড়বড় হয়ে যায়। কি বলছে তার ভাই? বিয়ে?
” ভাইয়া তুই
“নো মোর ওয়ার্ডস।
বলেই অর্ণব ওয়াশরুমে ঢুকে যায়। খুশিতে অথৈয়ের চোখ দুটো চকচক করে ওঠে। কালকেই তার বিয়ে? তার ভাই যখন বলেছে বিয়ে তো হবেই কনফার্ম। মানে এতো তাড়াতাড়ি কোনো সাধনা ছাড়াই অথৈ সাগরকে পেয়ে যাবে?
চলবে
#মায়াবতী
#পর্ব:৪০
#তানিশা সুলতানা
সাগর হাসপাতালে থাকতে চায় না। বাড়ি যেতে চায়। কিন্তু ডাক্তার তাকে ছাড়তে নারাজ। তাদের মতে আরও পনেরো দিন তাকে হাসপাতালে থাকতে হবে৷ সাগর সাফ সাফ মানা করে দিয়েছে। সে ইতোমধ্যে বেড থেকে নেমেও পড়েছে। সালমা ছেলেকে সামলাতে পারছে না।
তখনই কেবিনে ঢোকে অর্ণব। সাগরের অর্ণবের দিকে চোখ পড়তেই সে মাথা নিচু করে শান্ত হয়ে যায়। অর্ণবের মুখটা দেখলেই তার মনে পড়ে যায় তন্নির বিধস্ত মুখটা। দুনিয়া ওলট পালট করে দিতে ইচ্ছে হয়।
অর্ণব গিয়ে সাগরের পাশে দাঁড়ায়।
“আন্টি আপনি গিয়ে কিছু খেয়ে নিন। আমি কথা বলছি সাগরের সাথে।
চোখের ইশারায় চলে যেতে বলে। সালমা বেরিয়ে যায়। ডাক্তারও চলে যায়। অর্ণব সাগরের পাশে বসে।
” কেমন আছো?
“ভালো
গম্ভীর গলার উওর সাগরের।
” আমি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলতে পারি না। স্পষ্ট ভাবে বলছি। আমার বোন অথৈ তোমাকে ভালোবাসে।
সাগর কথা বলে না। অথৈ তাকে ভালোবাসে কথাটা সে আগেই আন্দাজ করেছিলো। কিন্তু ভাবনাটা সিরিয়াসলি নেয় নি।
“আমি চাই তুমি আজকেই অথৈকে বিয়ে করো।
সাগর বাঁকা চোখে তাকায় সাগরের দিকে। কিছু বলে না।
” আমার বউকে ভালোবেসে আমারই বোনকে বিয়ে করতে খুব প্রবলেম হবে তাই না? অনির মাম্মা ভালো আছে। সে আমার সাথে হ্যাপি আছে এটা দেখে বুক জ্বলবে তোমার? হিংসা হবে?
সাগর হাসে। ঠোঁটের পাশে কেটে গেছিলো। সেখানে র*ক্ত জমে আছে। ফোলা ঠোঁটের বাঁকা হাসি ভারি অদ্ভুত লাগে অর্ণবের।
“আমি আপনার মতো নই ভাইয়া। আমি যাকে ভালোবাসি তাকে আমি সবসময়ই ভালোবাসি। সাথে তার ভালোবাসার মানুষ গুলোকেও ভালোবাসি। সে ভালো আছে এটা জেনে আমার বুক জ্বলবে না। কিন্তু সে খারাপ আছে তার পাশের মানুষটা তাকে সম্মান দিতে জানে না এটা জানলে অবশ্যই আমার বুক জ্বলবে। হাহাকার করবে বুকটা। কারণ আমি তাকে ভালোবাসি।
অর্ণব রেগে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলে। চোয়াল শক্ত করে চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়। রাগে তার শরীর কাঁপছে। এটা দেখে সাগর আলতো হাসে।
“আমার ভালোবাসার মানুষটিকে আপনি বিয়ে করে ফেলেছেন। আমার তো রাগ হয় না।
অর্ণব ফোঁস করে শ্বাস টানে।
” সব সময় তুমি এটাই বোঝাতে চাও আমি মায়াবতীর জন্য পারফেক্ট না। সে তোমার ভালোবাসা ডিজার্ভ করে। আমি জাস্ট উড়ে এসে জুড়ে বসেছি। সে আমার জেদ।
এক সপ্তাহ
এক সপ্তাহের মধ্যে তুমি নিজে বলবে “অর্ণব মায়াবতীর জন্য পারফেক্ট। আমি পারফেক্ট ছিলাম না”
বলতেই হবে ইটস মাই চ্যালেন্স।
সাগর তৃপ্তির হাসি হাসে। এটাই চাইছিলো সে। তার জন্যই অর্ণবকে উস্কে দিচ্ছিলো।
অর্ণব কল করে অথৈকে। অথৈ ফোন নিয়েই বসে ছিলো।
রিং হওয়ার সাথে সাথে রিসিভ করে
“তুই যার পেছনে ছুটেছিস সে তোর জন্য পারফেক্ট না। তুই কখনোই তার সাথে ভালো থাকবি না। বাকিটা তোর সিদ্ধান্ত।
অথৈ জোর গলায় বলে
” আমার সাগরকেই চাই। ভালোবাসতে হবে না। শুধু আমার পাশে থাকলেই হবে।
লাউডস্পিকারে দেওয়া ছিলো। কথাটা সাগরও শুনতে পায়। অর্ণব কল কেটে দেয়।
“তুমি কি বলো? আমি চাই তুমি আজকেই অথৈকে বিয়ে করো।
” আমিও অথৈকে বিয়ে করতে চাই৷ আর আপনাকে দেখিয়ে দিতে চাই “ভালো কি করে বাসতে হয়”
অর্ণব আর এক সেকেন্ড ও দাঁড়ায় না। এই ছেলেটার বাঁকা বাঁকা কথা তার বিরক্ত লাগে। রাগ কন্ট্রোল করতে পারে না। সোজা লথা কখনোই সোজা ভাবে বলতে পারে না সে।
দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলো সালমা বেগম।
অর্ণব তাকে বলে
“আপনার ছেলে আমার বোনকে বিয়ে করতে চায়। আর আমিও দিতে চাই। আজকেই৷
ডাক্তারের সাথে কথা বলছি। আংকেল আসলে ছেলেকে নিয়ে পৌঁছে যাবেন।
বলেই সে চলে যায়। সালমা হতদম্ভ হয়ে যায়। তার অসুস্থ ছেলেটা বিয়ে করবে?
__
আশা বেগম রেগে আছে। তার মেয়ের বিয়ে দিবে? তার কাছে একবার পারমিশনও নিলো না? আনোয়ার একটু পরপর পানি খাচ্ছে। তার ছেলেটা যে চরম লেভেলের বেপরোয়া। বাই এনি চান্স যদি জানতে পারে আশা তন্নিকে পছন্দ করছে না। তখন কি করবে?
আশা দাঁত কটমট করে আনোয়ারকে বলে
” ছেলেকে থামাচ্ছো না কেনো?
“তোমারও তো ছেলে। তুমি সামলাও।
আশা হতাশ হয়ে বসে পড়ে। তার ছেলে কি আর তার কথা শুনবে? কখনোই না।
তখন অর্ণব ঢোকো বাবা মায়ের রুমে।
বাবার পাশে গিয়ে বসে।
আনোয়ার ছেলের মতিগতি দেখে বলে
” বাবা আমার হার্ট দুর্বল। আর কিছু বলিস না
অর্ণব মুচকি হাসে। বাবার শার্টের বোতাম খুলে দেয়। কারণ সে ঘামছে।
“ছোট্ট একটা কথা বলবো। বাড়ির মেয়ের বিয়ে। সেখানে বাড়ির বউ না থাকলে জমবে?
তুমি আর মাম্মা গিয়ে আমার বাচ্চার মাকে নিয়ে আসবে৷ তার মাকে বোঝাবা। তার বাবার কথা বলবা। দেন ভালোবেসে তাকে নিয়ে আসবা হবু পুত্রবধু হিসেবে।
আনোয়ার খুশি হয়। আশার মুখ কালো হয়ে যায়। সেদিন এতো অপমান করলো আর আজকে তাদের সামনে গিয়ে ক্ষমা চাইবে? মানসম্মান থাকবে।
” মাম্মা যাবে তো?
আশা চমকে ওঠে। ছেলের মুখের ওপর না বলার সাহস তার নেই।
সে মাথা নারায়। অর্ণব মুচকি হাসে।
“তাহলে এখুনি বেরিয়ে পড়ো।
আমি গিয়ে বাকি কাজ গুলো সেরে ফেলি।
অর্ণব চলে যায়।
আশা চিন্তা করতে থাকে।
অর্ণব নিজের রুমে গিয়ে তন্নিকে কল করে। তন্নি রান্না করছিলো। অর্ণবের কল দেখে মুচকি হেসে কল রিসিভ করে।
” পাপা আর মাম্মা যাচ্ছে তোমায় আনতে।
তন্নি অবাক হয়
“কিহহহ
” আজকে অথৈয়ের বিয়ে দিবো সাগরের সাথে। সেখানে তোমাকে ভীষণ প্রয়োজন। তুমি বলেছিলে না আমার জন্য তোমার আর অথৈয়ের দুরত্ব তৈরি হচ্ছে? সেটাই মেটানোর চেষ্টা করছি। তোমাকে আমার বাবা মা আজকে সসম্মানে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসবে বাড়ির হবু বউ হিসেবে।
তন্নি রহস্যময় হাসি হাসে।
“আমি তো ঘোড়ায় চেপে যেতে চাইছিলাম
” সবে এটা বোঝাবো তোমায়। আমাদের বাড়ির সবাইকে আমি মেনেজ করে ফেলেছি। যখন তোমার বাবা মাকে মানাতে পারবো তখন পুরো শহর জানিয়ে ঢাক ঘোল পিটিয়ে ঘোড়ায় চেপে রাজপুত্রের মতো তোমায় আনতে যাবো সারাজীবনের জন্য।
তন্নি হাসে।
অর্ণব তন্নির হাসি অনুভব করে
“ভালোবাসি অনির মাম্মা
” আমিও ভালোবাসি তাতানের পাপা।
“তাতান?
” ছেলেও তো হতে পারে। আমাদের ছেলের নাম থাকবে তাতান।
“বাহহহ বাহহহ
আমার পালাই পালাই বউ দেখি বেশ রোমান্টিক হয়ে গেছে। বাচ্চার নামও ঠিক করে ফেলেছে।
এবা আমাদের ফুলসজ্জা আর খুব বেশি দুরে না।
” অজাত
তন্নি কল কেটে দেয়। অর্ণব হেসে ফেলে। কয়েকবার তাতান নামটা উচ্চারণ করে।
___
অথৈ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আজকে তার বিয়ে। ইসস কাল ওবদি ভাবতে পারছিলো না। আজকে সাগর পুরোপুরি তার হয়ে যাবে। কেউ আর কখনো তাদের আলাদা করতে পারবে না। সারাক্ষণ সাগরকে সামনে থেকে দেখতে পারবে ছুঁয়ে দিতে পারবে। আর কি চাই?
আর্থি বোনের ভাবসাব দেখছে৷ নিজের বিয়েতে কেউ এতো খুশি থাকে সেটা অথৈকে না দেখলে বুঝতেই পারতো না আর্থি। নিলজ্জের একটা সীমা থাকে।
“দাঁত বের করিস না তো অথৈ। কেউ দেখলে নিলজ্জ বলবে।
অথৈ আর্থির দিকে তাকিয়ে মুখ বাঁকায়।
” তুই ছাড়া আর কেউ বলবে না।
চলবে
তন্নি কি আসবে? আসা উচিত কি?
মতামত জানাও।