মায়াবতী পর্ব ২৭+২৮

0
806

#মায়াবতী
#পর্ব: ২৭
#তানিশা সুলতানা

আব্দুল্লাহ এর সামনে বসে আছে তন্নি। বেশ লজ্জা লাগছে তার। আব্দুল্লাহ একা একা বসতে পারে না। তার পাশে ছিলো সিফাত আর তার বাবা সাইদুল। দুজন মিলে ওনাকে বসিয়ে দেয়। আব্দুল্লাহ তন্নির দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। তন্নি এদিক ওদিক তাকাতে থাকে। সে নরমাল হতে পারছে না।
সিফাত তন্নির দোটানা বুঝতে পেরে বলে ওঠে

“তন্নি এগিয়ে বস। দাদু তোকে ছুঁতে চাইছে।

তন্নি জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে এগিয়ে বসে।।আব্দুল্লাহ তন্নির হাতটা ধরে। চোখ দুটো তন্নির দিকে স্থির।
একদম তার মেয়ের চোহারা। হুবুহু এক। মনে হচ্ছে সেই ছোট্ট তানিয়া।
কিন্তু একটা দিক দেখেই সে বুঝে যায় এটা তানিয়া না তার নাতনি তন্নি।
তানিয়া ভীষণ চঞ্চল ছিলো। এক দন্ড এক জায়গায় স্থির থাকতো না। আর তন্নি হলো জলের মতো। যখন যে পাত্রে রাখবে সেই পাত্রের আকার ধারণ করবে।
মেয়ের কথা খুব করে মনে পড়ে যায় তার। বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে। পুরুষ মানুষ কাঁদে না। তারপরও সে একজন কঠোর পুরুষ মানুষ। মেয়ে চলে যাওয়ার পরে সে হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলো ” আজকে থেকে তানিয়া মারা গেছে। তার নাম কেউ উচ্চারণ করলে আমি তাকেও বাড়ি থেকে বের করে দিবো”
তার এই হুঙ্কারে কেউ তানিয়ার নাম মুখে নেওয়ার সাহস পায় নি।

আর আজকে সেই কঠোর মানুষটা তন্নির হাতে কপাল ঠেকিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। সন্তান বেঁচে থাকুক বা মরে যাক সব সময়ই বাবা মায়ের কাছে প্রিয় থাকে। বাবা মায়ের মনের মধ্যে সারাক্ষণ থাকে তারা।

তন্নির নিজেরও কান্না পায়। সে কান্না আটকানোর চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। দুই চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে।

সাইদুল আর সিফাতেরও চোখ ভিজে ওঠে।

“আমাকে ছেড়ে যাস না বোনু। আমার কাছে থেকে যা।

কাঁদতে কাঁদতে এটাই বলতে থাকে আব্দুল্লাহ। তন্নি কিছু বলতে পারে না। কথা দিতে পারে না। কারণ তার মা ভাই তারাও তো কষ্ট পাচ্ছে। তাদের তন্নিকে প্রয়োজন।

সিফাত বুঝতে পারে তন্নি এখানে বেশিখন থাকলে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়বে আব্দুল্লাহ। তাই থেকে আব্দুল্লাহকে ছাড়িয়ে বলে

” দাদু তন্নি কোথাও যাবে না। তুমি রেস্ট নাও তো। তন্নিরও রেস্ট দরকার। তুমি মেয়েটাকে কাঁদিয়ে দিচ্ছো।

সাইদুলও সায় জানায়।
তন্নি উঠে চলে যায়।
চোখের পানি মুছে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
রুমে ঢুকে ওড়না খাটের ওপর রেখে ওয়াশরুমে ঢুকে চোখে মুখে পানি দিয়ে বের হতেই দেখে ফোন বাজছে।
তন্নি তারাহুরো করে কল রিসিভ করে।

“কতোবার কল করলাম মায়াবতী
কোথায় ছিলে?

” নানাভাইয়ের রুমে ছিলাম।

“আমি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি। জলদি আসো।

অর্ণব কল কেটে দেয়৷ তন্নি ফোন রেখে ওড়না গলায় পেঁচিয়ে এক দৌড়ে বেরিয়ে যায়।
বাড়ির সামনে বড় একটা বটগাছ আছে। সেখানেই গাড়িতে ঠেস দাঁড়িয়ে আছে অর্ণব৷ হাতে ফোন। নজর ফোনের দিকে। কালো শার্ট সাদা জিন্স ঝাঁকড়া চুল গুলো আজকে একটু গোছালো লাগছে।
সব মিলিয়ে অসাধারণ। এতো বেশি কেনো ভালো লাগছে তন্নির? তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছে করছে।
অর্ণবের দিকে তাকিয়ে তাকিয়েই সামনে চলে আসে। তন্নির অস্তিত্ব টের পেয়ে অর্ণব ফোন পকেটে পরে তাকায় তন্নির দিকে।
তন্নির মুখের দিকে তাকাতেই ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে। এগিয়ে এসে তন্নি ওড়নার এক কোণা ধরে। তন্নি চমকে ওঠে। অর্ণব তন্নির মাথায় ঘোমটা টেনে দেয়।
তারপর পকেট থেকে রুমাল বের করে তন্নির মুখে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু পানি গুলো মুছে দিতে থাকে। তন্নির ভীষণ ভালো লাগছে। সে চোখ বন্ধ করে অর্ণবের কেয়ার অনুভব করতে থাকে।

“আর কখনো এমনটা করবে না। তারাহুরোর দরকার নেই। আমি তোমার জন্য ওয়েট করবো। তুমি মাথায় ঘোমটা টেনে ধীরে সুস্থেই আসবে।
কেমন?

তন্নি মুচকি হেসে মাথা নারায়। অর্ণবও হাসে।
তন্নির হাত ধরে বটগাছের জড়ের ওপর বসে। তন্নি বসতেই এক হাতে জড়িয়ে ধরে তন্নিকে।

” আমি না জাস্ট পাগল হয়ে যাচ্ছি।
চলো পালিয়ে যাই।

তন্নি তাকায় অর্ণবের মুখের দিকে। অর্ণব তন্নির নাক টেনে দিয়ে বলে

“এখান থেকে ডিরেক্ট কক্সবাজার চলে যাবো। সেখানে এক সপ্তাহ থেকে যাবো সাজেক।
মোটামুটি দুই মাস ঘুরে ফিরে অনিকে আনার ব্যবস্থা কনফার্ম করে চলে আসবো।
দেন বিজনেসে জয়েন করবো। চুটিয়ে রোমান্স করবো এন্ড এনার্জি নিয়ে কাজ করবো। পাপা খুশি হবে মাম্মা খুশি হবে অথৈ খুশি হবে আর্থি খুশি হবে আমি তো আরও বেশি খুশি। অনি খুশি আর আমার বউটা খুশি। আইডিয়াটা দারুণ না?

তন্নি লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। তার নিশ্বাস ভারি হয়ে গেছে। মাথা নিচু করে ফেলেছে। অর্ণব তন্নির লজ্জায় রাঙা মুখটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। তন্নির মাথায় বেশ খানিকক্ষণ সময় নিয়ে চুমু খায়।

” অনির মাম্মা আমি ছেলে হিসেবে যেমন তেমন কিন্তু বর হিসেবে খুব রোমান্টিক।

তন্নি আমতাআমতা করে বলে

“এতো জঘন্য কেনো আপনি?

” তুমি এতো লজ্জাবতী কেনো? পাগল করে দিচ্ছো আমায়।

তন্নি উঠে চলে যায়। একেবারে গাড়ির কাছে থামে। লজ্জায় তার গাল ভারি হয়ে গেছে। লোকটা আস্ত হনুমান।
অর্ণবও আসে পেছন পেছন।

“যাওয়া যাক তাহলে
পেছন থেকেই বলে ওঠে অর্ণব।

” কোথায়?

“বাড়িতে।
আমাকে সবার সাথে মিট করিয়ে দিবে।

তন্নি বড়বড় চোখ করে তাকায়।

” না মানে
আপনাকে কি করে
সবাই

তন্নি ঠিক ভাবে কথাও বলতে পারছে না।

“নো এক্সকিউজ
আমি যাবোই।

অর্ণব বাড়িতে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় তখনই কেউ ডেকে ওঠে

” অর্ণব

অর্ণব পেছন ফিরে নিজেও অবাক হয়ে যায়।

“তিশা তুমি?

“এটা আমার ফুপি বাড়ি।
তুমি এখানে?

” তোমার ফুপি বাড়ি দেখতে আসছি। চলো চলো ভেতরে যাই।

বলেই তিশাকে এক প্রকার টানতে টানতে নিয়ে যেতে থাকে অর্ণব। তন্নি হা করে তাকিয়ে থাকে। এইটা কি হলো?

তন্নির বড় মামি তিশার ফুপি। সে অতিথি আপ্যায়নে সেরা। বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে কিন্তু দেখে বোঝার উপায় নেই৷ তার নামটা মায়া। নামও যেমন তারা চেহারাও তেমন।

তিনি অর্ণব আর তিশাকে খুব যত্ন করে আপ্যায়ন করে। এতো এতো খাবার এনে রাখে সামনে। কিন্তু অর্ণব একটা খাবারও ছুঁয়ে দেখে না। সে শুধু শরবতটা খায়।
অর্ণব এদিক ওদিক দেখতে থাকে৷ এই বাড়িতে ছেলে থাকলে সে তন্নিকে এখানে রাখবে না। এটা দেখতেই সে ঢুকেছে বাড়িতে। কিন্তু আপাতত ছেলে দেখা যাচ্ছে না। তাহলে তন্নি থাকতে পারবে।

কিন্তু হঠাৎ করে সিফাত আর সিফাতের ছোট ভাই সিমায়ের আগমন হয়। অর্ণব সবেই নিশ্চিন্তে একটা আপেলের টুকরো মুখে পুরতে যাচ্ছিলো তখনই ওদের দেখে আপেলের টুকরোটা ঠাসস করে নিচে পড়ে যায়।
ওদের পেছনে তন্নি।
সিফাত তন্নিকে খেয়াল করে বলে

“মা তুমি তন্নিকে ঠিকভাবে কেয়ার করো না। মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে দেখছো।

সিফাতের এরকম কেয়ার দেখে অর্ণবের মাথা গরম হয়ে যায়। তন্নিকে সে কেয়ার করবে অন্য কেউ কেনো?
মায়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই অর্ণব হুরমুরিয়ে উঠে তন্নির কাছে গিয়ে বলতে থাকে

” অথৈয়ের তন্নি সর্বনাশ হয়ে গেছে। তোমার অথৈ

তন্নি ভয় পেয়ে যায় অথৈ ঠিক আছে তো? বিচলিত গলায় বলে

“কি হয়েছে অথৈয়ের?

” তোমাকে এখুনি যেতে হবে আমার সাথে। অথৈ অথৈ

তন্নির চোখে পানি টলমল করছে। বাকি সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।
তিশা বলে ওঠে

“তুমি ওকে চিনো অর্ণব?

” না না চিনি না তো। কে ও?
কিন্তু আমার বোন চিনে।
তুমি চলো চলো

“আমাকে এখুনি নিয়ে চলুন।
(মায়াকে) মামি আমি যাচ্ছি। আমার অথৈ ঠিক নেই আমাকে যেতেই হবে।

বলেই সে অর্নবের আগে আগে হাঁটতে থাকে।

চলবে

#মায়াবতী
#পর্ব:২৮
#তানিশা সুলতানা

অথৈ আর সাগর পাশাপাশি হাঁটছে। হাইটে সাগর পারফেক্ট ছয় ফুট। কিন্তু বেশ রোগা পাতলা আর অগোছালো। এই যে সাদা টি শার্ট পড়েছে তারওপর কালো শার্ট। কালো জিন্স। জিন্সের গোড়ালি মুড়িয়ে বেশ খানিকটা উঁচু করে রেখেছে। ফর্সা পায়ের কালো লোম গুলো দৃশ্যমান। স্কিচার জুতো পড়েই বেরিয়েছে সে। চাপ দাঁড়ি গুলো বেশ বড় হয়ে গেছে মুছে ঠোঁট ঢেকে যাচ্ছে।
অথৈ আনমনে হাসে। এই অগোছালো মানুষটার জন্য একটা গোছালো মেয়ে দরকার।
অথৈয়ের হাইট ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। ওয়েট বিয়াল্লিশ। সে সাগরকে ঠিক করে দেখতে পারছে না। তাছাড়া পা মেলাতেও বেশ কষ্টকর হচ্ছে। বিষয়টা সাগর খেয়াল করে। সাগর দাঁড়িয়ে যায়। অথৈ চমকে তাকায় সাগরের দিকে।

“যেভাবে আমাকে দেখছো যেকোনো সময় উষ্ঠা খেয়ে পড়বা।

অথৈ মাথা নিচু করে ফেলে।
তারপর সাগর আস্তে আস্তে হাঁটতে থাকে।

” অথৈ সত্যি করে একটা বলবা?

“আমি মিথ্যে বলি না।

” অর্ণব ভাইয়া পছন্দ করে তন্নিকে?

“হুমমম

সাগর কথা বলে না। চুপচাপ হাঁটতে থাকে। মায়া হয় অথৈয়ের। সাগরের চোখে মুখে তন্নির জন্য ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছে অথৈ। বুকটা শান্ত হয় অথৈয়ের।
তন্নি ভালোবাসার কাঙাল। তন্নিকে কেউ ভালোবাসলে অথৈয়ের ভালো লাগে। কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায়।

” তন্নিকে ভালোবাসেন?

সাগর দাঁড়িয়ে যায়। তাকায় অথৈয়ের দিকে।
মুচকি হেসে বলে

“হ্যাঁ বাসি। তন্নিকে আমি ভীষণ ভালোবাসি।

কথাটা বলার সময় সাগরের চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিলো। তাকে পৃথিবীর সব থেকে সুখী ব্যক্তি মনে হচ্ছিলো। ভালোবাসার মানুষটির নাম উচ্চারণ করাতেও সুখ লুকিয়ে থাকে।
অথৈও হাসে।

” আমার থেকে বেশি না।

সাগর হেসে ফেলে৷ অথৈয়ের কপালের সামনে পড়ে থাকা ছোট চুল গুলো একটা আঙুল দিয়ে সরিয়ে দেয়। অথৈ চোখ বন্ধ করে হাসে।

“তুমি হচ্ছো তন্নির জান। তোমার থেকেও বেশি ভালোবাসার সাহস কি আমার আছে? গ*র্দা*ন যাবে তো।

খিলখিল করে হেসে ওঠে অথৈ। ফাস্ট টাইম সাগরের নজর পড়ে অথৈয়ের ঠোঁটের বা পাশের ছোট্ট টোলটার দিকে।
মেয়েটার হাসি সুন্দর। আচ্ছা তন্নি এভাবে হাসলে তাকে কেমন দেখাবে? এ জীবনে কখনো তন্নির হাসি দেখার সৌভাগ্য হবে?

” অথৈ তন্নি আমার হবে না
তাই না?

অথৈয়ের হাসি থেমে যায়। সাগরের মুখের দিকে তাকায়। বড্ড মায়া হয় অথৈয়ের।

“পাওয়ার আশা করে ভালোবাসতে নেয় সাগর ভাইয়া। ভালোবাসা সুন্দর। ভালোবাসায় চাওয়া পাওয়া থাকতে নেয়।

সাগর মুচকি হাসে।

” ঠিক বলেছো তুমি অথৈ। তন্নি আমার হোক বা হোক আমি তাকে ভালোবেসে যাবো।

অথৈ মনে মনে বলে
“আর আমি আপনাকে।

__

অর্ণব শুকনো ঢোক গিলে। তন্নি ভীষণ সিরিয়াস। মেয়েটা কাঁদছে। অর্ণব থামানোর সাহস পাচ্ছে না।

“অথৈয়ের জাস্ট একটু গ্যাস্টিকে পবলেম হইছিলো। জাস্ট একটুখানি।

আমতা আমতা করে বলে অর্ণব। তন্নি হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে তাকায় অর্ণবের দিকে।

” গড প্রমিজ একটুই।
এখন ঠিক আছে ও। ধরো কথা বলো।

অর্ণব ফোন বের করে তন্নিকে। তন্নি নেয় না। তার হাতে ফোন ছিলো সেটা থেকে কল করে অথৈকে। অথৈ তন্নিকে বোঝায় একটুখানি গ্যাস্টিকে পবলেম হইছিলো।
এখন ঠিক আছে। এটা শুনে তন্নি শান্ত হয়ে যায়। মেজাজটা তার ফুরফুরে হয়ে ওঠে। নানুবাড়ি থাকতে হবে না এটা ভাবতেই মনটা খুশি হয়ে যায়।

অর্ণব বিউটি পার্লারের সামনে গাড়ি থামায়। তন্নি ভ্রু কুচকে তাকায়।

“মাম্মা বলছিলো বিয়ের পর মেয়েদের নাকে নাক ফুল পড়তে হয়।
তুমি তো নাক ফুটো করে নি তাই নিয়ে আসলাম৷

” আমার বিয়ে হয় নি।

“হয়েছে।

” হয় নি

“বড় কে?

” আপনি

“বুদ্ধি কার বেশি

” আপনার

“শক্তি কার বেশি?

” আপনার।

“বেশি বুঝে কে?

” আপনি।

“তাহলে কটামি করছো কেনো? যা বলছি শুনো।

তন্নি ভেংচি কাটে অর্ণবের আড়ালে।
তারপর বলে

” সবাই জিজ্ঞেস করবে তো।

“অথৈ মেনেজ করে নিবে। তুমি চলো

অর্ণব আগে নেমে তন্নির হাত ধরে বের করে৷ অর্ণবের একটা বান্ধবীর পার্লার। সে এসে তন্নিকে নিয়ে যায় অর্ণব গাড়িতেই অপেক্ষা করতে থাকে।

পাঁচ মিনিটের মধ্যে চলে আসে তন্নি। অর্ণব দরজা খুলে দেয়। তন্নি গুটিগুটি পায়ে বসে পড়ে।
অর্ণব হা করে তাকিয়ে থাকে। নাকফুল পড়লে মানুষকে এতোটা সুন্দর লাগতে পারে? সাদা পাথরের মাঝারি একটা নাক ফুল। নাকের চারপাশ লাল হয়ে গেছে।
একদম অন্য রকম লাগছে তন্নি। অন্যরকম মায়াবতী।

অর্ণব এক টানে তন্নিকে কোলে বসিয়ে নেয়। তন্নি ভয়ে কেঁপে ওঠে। খামচে ধরে অর্ণবের শার্ট।
অর্ণব তন্নির দুই গালে হাত দিয়ে মুখটা উঁচু করে বন্ধ চোখের পাতায় ঠোঁট ছোঁয়ায়।
তারপর নাক ফুলের ওপর ঠোঁট ছুঁয়িয়ে বলে

” নাক ফুলে তোমাকে পার্মানেন্টলি নিজের নিজের লাগবে জানলে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করার সাথে সাথে নাক ফুল পড়িয়ে দিতাম।

তন্নির ঘোর কেটে যায়। ভ্রু কুচকে তাকায় অর্ণবের দিকে। চমকে বলে ওঠে।

“রেজিস্ট্রি?

অর্ণব শার্টের কলার পেছনে ঠেলে ভাব নিয়ে বলে

” তো তোমার কি মনে হয়? বিয়ে ছাড়া তোমাকে টাচ করবো আমি?

তন্নি অর্ণবের চুল টেনে ধরে।

“শয়তান ছেলে আমাকে বোকা বানানো হয়েছে?

অর্ণব চুল ছাড়িয়ে হেসে বলে

” তুমি তো বোকাই।
আস্ত গাঁধা। তোমাকে আর কি বোকা বানাবো?

দূর থেকে এসব দেখে ফেলে আনোয়ার।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here