#এক_সমুদ্র_প্রেম!
লেখনীতে: নুসরাত সুলতানা সেঁজুতি
(৪৪)
সাদিফের ছুটি নেই। খুব দরকার ছাড়া সে ছুটি কা*টায়ওনা। প্রফেশনাল দিক দিয়ে ছেলেটা বেশ সিনসিয়ার! না পারতে কামাই দিয়েছে, এমন হয়নি। এই যেমন আজ, বাড়িতে এত বড় একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে, কিন্তু সে অফিসে। পুষ্পর আংটিবদলের জন্য ছুটি নিলো না। ইচ্ছে করেই নেয়নি। কারণ, সামনে বিয়ে,গায়ে হলুদ মিলিয়ে বেশ কিছুদিনের ছুটি লাগবে৷ আগেভাগে কামাই করে লাভ কী!
সাদিফ ঘাড়ে আড়াআড়ি ব্যাগ ঝুলিয়ে কেবিন ছেড়ে বের হলো। পথে বাঁধলেন পরিচিত মুখের মাহবুবুল ইসলাম। এখানকার সহকারী ম্যানেজার। বয়সে তিনি সাদিফের অনেকটা বড় হলেও, পদে নীচে। এই নিয়ে ভদ্রলোকের আক্ষেপের সীমা নেই! এত বছর এই অফিসে কাজ করলেন,প্রমোশন পেয়ে পেয়ে সহকারীতে এসে সেই যে লটকালেন ওপরে আর ওঠেন না। সাদিফ এসে মাঝ দিয়ে টুপ করে জায়গা আর চেয়ারখানা ছিনিয়ে নিলো। হাঁটুর বয়সী ছেলেকে স্যার, স্যার বলতে কী যে সম্মানে লাগত প্রথমে! এখন অবশ্য অভ্যেস হয়েছে। মনে বাঁধলেও, মুখে আর বাঁধে না।
সাদিফকে বের হতে দেখেই শুধালেন,
‘ স্যার কি বের হচ্ছেন?’
‘ জি।’
‘ আমিও বের হতাম। স্যার চলুন আজকে আপনাকে ড্রপ করে দেই! ‘
কথাটার উদ্দেশ্য কেবল তোষামোদ। সাদিফের যে বাইক আছে,আর সে যাবে না উনি খুব ভালো করে জানেন এসব।
হলোও তাই। সাদিফ বিনীত কণ্ঠে বলল,
‘ লাগবে না মাহবুব সাহেব। বাইক এনেছি তো। আপনার আর ক*ষ্ট করতে হবে না।’
মারিয়া আড়চোখে বারবার তাকাচ্ছে। চোখের কোনা আর মনের আনাগোনা দিয়ে দূরের এক সুপুরুষ কে নিপুন ভঙিতে দেখছে সে। আবিষ্কার করছে,এভাবে চেয়ে থাকতেই দারূন লাগছে ওর ! এই যে ছেলেটা হাসল,বক্ষ কেমন করে উঠল তাতে৷ এই যে কথার ফাঁকে ওষ্ঠ পৃষ্ঠ হতে একটু ঘাম মুছল, ইশ! মারিয়া খিচে বুজে নিল চক্ষু৷ সে টের পেতে সক্ষম,তার মন আর তার দখলে নেই। চুরি হয়েছে সাদিফ নামক এক ভয়ান*ক, অভদ্র লোকের দ্বারা। ভাবতেই অবাক লাগে,পাড়ায়,গ্রামে,ফেসবুকে কত ছেলের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখা*ন করল সে, অথচ শেষ মেষ নিজেই কুড়া*ল বসাল নিজের পায়ে? যেঁচে এক ছেলের প্রেমে এইভাবে পড়ল? তাও এমন এক তরফা প্রেম? যেখানে ওপাশের মানুষটার কোনও অনুভূতিই জানা নেই। মারিয়া বিলাপ করল মনে মনে। অদৃশ্য হস্তে কপাল চা*পড়ে ভাবল,
‘ হায়রে মারিয়া,এইভাবে নিজেকে শেষ করতে চাইছিস? কেন, আর কোনো রাস্তা পছন্দ হয়নি? ‘
মারিয়ার তাকানোর মধ্যেই সাদিফ মাহবুবের সাথে কথা শেষ করে। লম্বা কদমে অফিস ছাড়ে। মেয়েটা হা করে দেখে গেল সব। খেয়াল করতেই তটস্থ হলো। তড়িঘড়ি করে কাধে ব্যাগ চাপিয়ে তাড়াহুড়ো পায়ে ছুটল পেছনে। অফিস ছুটি হয়েছে অনেকক্ষন। কিন্তু ইচ্ছে করে এতটা সময় বসেছিল সে।
মারিয়া বাইরে এসে আশেপাশে তাকাল। তখন পার্কিং থেকে বাইক সাথে নিয়ে গেটের কাছে এলো সাদিফ। ওকে দেখেই উশখুশ শুরু করল মারিয়া। সে কী আগ বাড়িয়ে কথা বলবে? আবার ছ্যাচড়া ভাববে না তো?
দোনামনা করে দাঁড়িয়ে থাকতেই সাদিফ উঠে বসে বাইকে। মারিয়া সজাগ হলো,দুপাশে ঘন ঘন মাথা নাড়ল। আর দাঁড়িয়ে থাকলে লস। চলেই যাবেন উনি।
সে ত্রস্ত ভঙিতে দুপা এগিয়ে আসতে আসতে ডাক ছুড়ল,
‘ হ্যালো, হ্যা.. হ্যালো স্যার।’
সাদিফ হেলমেট পরা মাথাটা চারপাশে ঘোরাল। কণ্ঠস্বর তার পরিচিত,কিন্তু সম্বোধন? পেছন ঘুরতেই মারিয়াকে দেখে কোঁচকানো ভ্রু শিথিল হয়। বি*রক্ত না হয়ে, স্বাভাবিক চোখে চাইল। মারিয়া চটজলদি পায়ে হেঁটে এসে কাছে দাঁড়াল। সাদিফ অনিশ্চিত কণ্ঠে বলল,
‘ আপনি কি স্যার আমাকে ডাকলেন? ‘
মারিয়ার দাঁত গুলো বেরিয়ে এলো বাইরে। মাথা ঝাঁকিয়ে জানাল,
‘ জ্বি।’
‘ কেন?’
‘ আপনি আমার সিনিয়র না?’
সাদিফ অবিশ্বাস্য চোখে তাকায়। একদিনে মারিয়ার রাতারাতি পরিবর্তন ভ্রু কপালে তুলে দেয়।
মেয়েটা অপ্রতিভ হলো তাকানোর ধরণ দেখে। মিনমিন করে বলল
‘ এভাবে দেখছেন কেন? সম্মান দিচ্ছি।’
‘ ওইটাইতো হজম হচ্ছে না। এর আগে বহুত সম্মান দিয়েছেন তো। ‘
মারিয়া মুখটা চুপসে ফেলে বলল,
‘ এরকম করে বলছেন কেন? কালতো সব কিছুর জন্য সরি বলেছি।’
সাদিফ হেসে বলল ,
‘ উদ্ধার করেছেন। তা আজ এত দেরী করে বের হলেন যে? আপনাদের যাওয়ার টাইমতো আরো আগে।’
মারিয়া মনে মনে বলল,
‘ আপনার জন্যেই বসে ছিলাম।’
মুখে বলল,
‘ একটু কাজ এগিয়ে রাখলাম। যাতে পরে অসুবিধে না হয়।’
সাদিফ ফের ভ্রু উঁচায়,
‘ কাজ এগিয়ে রাখছেন? নতুন নতুন এলেন,এত কী কাজ দিলো অফিসে?’
মারিয়া আমতা-আমতা করে বলল,
‘ ইয়ে আসলে হয়েছে কী… মানে…’
সাদিফ পথিমধ্যে কথা কে*ড়ে বলল,
‘ ইয়ে- মানে ছাড়ুন। শুনুন ম্যালেরিয়া,প্রথম প্রথম এত কাজ দেখাতে যাবেন না। এটা বোকামি। পরবর্তীতে এই দেখানোটাই কিন্তু কাল হবে আপনার । দেখবেন ইচ্ছে নেই,কিন্তু বস এক গাদা কাজ চাপিয়ে দিয়েছে আপনার ঘাড়ে। এক রকম পেয়ে বসবে। বুঝেছেন?’
মারিয়া মাথা দোলাল, ‘ জি, বুঝেছি। ‘
তারপর হাতঘড়ি দেখে বলল,
‘ দশটা বাজে। আপনি যান,আমি শুধু শুধু আপনাকে আটকালাম। আমিও যাই,দেখি বাস পাই কী না।’
মারিয়া পা বাড়াতে গেলে সাদিফ বলল,
‘ কাল ওই সময় পেলেন না,আজ তো দশটা বাজছে। পেলেও সিট হবে না শিয়র । দাঁড়িয়ে যেতে হবে।’
‘ কী আর করব বলুন! আমারতো আর বাইক নেই যে তাতে চড়ে যাব। আর আপনিও নিশ্চয়ই রোজ রোজ আমায় ড্রপ করে দেবেন না।’
সাদিফ কপাল গোছাল। মারিয়া ঘাবড়ে গেল । এই ছেলে আবার চেঁতে না যায়! অথচ সে কিছু একটা ভেবে বলল,
‘ প্রতিদিন পৌঁছে দিলে কানাঘুষা হবে অফিসে। তবে বিপদে পরলে অন্য কথা। রাস্তাটাতো দুজনেরই এক। উঠুন।’
মারিয়া অবাক কণ্ঠে বলল ‘ সত্যিই পৌঁছে দেবেন? ‘
সাদিফ হেসে বলল,
‘ মিথ্যে মিথ্যে দেয়া যায়? উঠুন।’
তারপর বাইক স্টার্ট হয়,মারিয়া উঠে বসে পেছনে। মুহুর্তে অধর ভরে ওঠে বিজয়ের, চকচকে হাসিতে। এই যে এতক্ষণ ইচ্ছে করে অফিসে বসে ছিল,কেন? ওর সাথে যাবে বলেইত। মারিয়া মিটিমিটি হেসে হেলমেট বাধল মাথায়। সাদিফ টান বসালে, এক হাতে আকড়ে ধরল কাঁধ। আজও এক যোগে চেয়ে রইল তার প্রসস্থ, চওড়া পিঠের দিকে।
সময় কা*টল অল্প নীরবতায়। মারিয়াই কথা শুরু করল প্রথমে,
‘ আজতো আপনাদের বাড়িতে অনুষ্ঠান হচ্ছে তাইনা?’
‘ হ্যাঁ, পুষ্প আর ইকবাল ভাইয়ার এংগেজমেন্ট।’
সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
‘ আর আপনি অফিসে,কী কপাল তাইনা?’
‘ আপনার ও তো ইনভাইট ছিল। গেলেন না কেন?’
‘ কী করে যাই,আমারও যে অফিস!’
‘ দুজনেই ভুক্তভোগী তাহলে। ‘
পরমুহূর্তে বলল,
‘ আচ্ছা,আপনি পিউকে পড়াতে যাচ্ছেন না যে?’
‘ যেতে তো চাইছিলাম। কিন্তু অফিস করে বাড়ি ফিরতে প্রায় এগারটা বেজে যায় দেখে ধূসর ভাইয়া মানা করলেন। বলেছেন সময় আর ইচ্ছে থাকলে এমনি এসে পড়াতে। কোনও রকম চাপ যেন না নেই।’
সাদিফ নীচের ঠোঁটটা, দাঁত দিয়ে কা*মড়ে ধরল। ভ্রুয়ে দেখা দিলো সূক্ষ্ম ভাঁজ। এই যে ভাইয়ার সাথে ম্যালেরিয়ার এত ভাব,এর কী কোনও অন্য মানে আছে? ভাইয়া কি ওনাকে পছন্দ করেন? পরমুহূর্তেই চোখে ভাসল সেদিনের কথা। ধূসরের ফুলদানিতে লা*থি মা*রার দৃশ্য। দুপাশে ক্রমশ মাথা নেড়ে ভাবল,
‘ না না,ন্যালেরিয়ার প্রতি ভাইয়ার কিছু নেই,থাকলে অত রে*গে যেত না কি?’
‘ কী ভাবছেন?’
‘ হু? না, কিছু না।’
‘ একটা কথা বলি?’
‘ অনুমতি চাইছেন? এত ভদ্রতা! ‘
মারিয়া গাল ফুলিয়ে বলল,
‘ আচ্ছা যান,শুনতে হবে না।’
সাদিফ শব্দ করে হেসে উঠল। হাওয়ার সাথে সেই হাসিতে প্রাণ জুড়িয়ে গেল মারিয়ার। সাদিফ বলল
‘ আচ্ছা বেশ,বলুন।’
‘ না থাক।’
‘ আরে বলুন না। ‘
‘উম,আচ্ছা। বলছিলাম যে,এই যে আপনি আমাকে ড্রপ করে দিচ্ছেন,উপকার করছেন,এই উপকারের একটা প্রতিদান দেয়া উচিত না?’
‘ বিনিময় হিসেব করে তো উপকার করছিনা। তাও বললেন যখন শুনি,কী প্রতিদান দিতে চান! বাইকের তেল ভরে দেবেন না কী?’
কথাটা বলে আবার হো হো করে হাসল সাদিফ। মারিয়া ঠোঁট উলটে বলল,
‘ আমি মোটেও সেটা বলিনি। আপনিতো আমাকে কিছু বলতেই দিচ্ছেন না।’
‘ আচ্ছা,বলুন,বলুন।’
মারিয়া রয়ে সয়ে বলল,
‘ ইয়ে,ওই,আচ্ছা,আমরা যদি বন্ধু হই,তাহলে? ‘
দৈবাৎ বাইকে ব্রেক কষল সাদিফ। প্রস্তুত না থাকায়,মারিয়ার থুত্নীটা গিয়ে লাগল তার পিঠের হাড়ে। চমকে গিয়েছে সে। সাদিফ ত্রস্ত হেলমেট খুলে ঘাড় ঘোরায়। বুকপকেট থেকে চশমা বের করে পরে নেয়৷
ক*ঠিন কণ্ঠে বলে ‘ নামুন।’
মারিয়া ঘাবড়ে গেল। সে কি হাবিজাবি কিছু বলেছে? বন্ধু হওয়ার প্রস্তাবটা কি খুব খা*রাপ কিছু?
বিভ্রান্ত হয়ে নামল সে।
শঙ্কিত নেত্র পিটপিট করল। সাদিফ অদ্ভূত চোখে চেয়ে। হঠাৎই বলল,
‘ আপনি কি সত্যিই ম্যালেরিয়া? যাকে আমাদের বাড়িতে প্রথম দেখেছিলাম? ‘
মারিয়া কম্পিত গলায় বলল,
‘ ককেন?’
‘ যে মেয়ে প্রথম দিন আমার সাথে কোমড় বেঁ*ধে ঝ*গড়া করল,সে আজ বন্ধু হতে চাইছে?’
সাদিফের কণ্ঠে বিস্ময়। যেন আকাশ থেকে পরেছে। মারিয়া হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। সেত ভয়ে প্রায় আধমরা হয়ে যাচ্ছিল। সাদিফ সংশয়ী কণ্ঠে বলল,
‘ আপনি কি সত্যিই আমার বন্ধু হতে চাইলেন?’
মারিয়া মাথা নামিয়ে বলল,
‘ কেন? হওয়া যায়না?’
‘ বয়সে এত ছোট মেয়ে,বন্ধু কী করে হয়?’
মারিয়া ভ্রু কুঁচকে চাইল। ঘাবড়ানো,আর ইতস্তত ভাবটা দুম করে পালিয়ে গেল অদূরে। হাত নেড়ে বলল,
‘ শুনুন, বন্ধুত্বে না এসব কোনও ব্যাপারই নয়। বয়স,সময়, দিন এসব কিছুই গুরুত্বপূর্ন না। আসল হলো, বন্ধুত্বের গভীরতা। আপনি কতটা কী তাকে নিজের ভাবছেন, কতটা ভরসা করছেন,তাকে বিশ্বাস করে নিজেকে ঠিক কতটা মেলে ধরতে পারছেন তার কাছে,এসবই হলো মূল। বাকী সব তুচ্ছ,পৃথিবী এক জায়গায় কিন্তু সত্যিকারের বন্ধুত্ব আরেক জায়গায়। কারণ যারা প্রকৃত বন্ধু হয়,তারাই জানে,এর মাপকাঠি সীমাহীন। ধরিত্রীর কোনও কিছু দিয়ে এর পরিমাপ করা যায়না,যাবেও না।’
সাদিফ পুরো কথা মন দিয়ে শুনল। সে থামতেই বলল,’ তাই?’
‘ হ্যাঁ তাই।’
‘ তাহলে কী বলছেন? বন্ধু হব?’
‘ সেটা আমি কেন বলব? আপনার ব্যাপার, আপনার মন কি চাইছে? আমার বন্ধু হওয়া যায় কী না!’
সাদিফ ঠোঁট কা*মড়ে ভাবার নাটক করে বলল,
‘ উম,অল্প স্বল্প।’
মারিয়া বুঝতে পেরে হাসল। বলল,
‘ তাহলে আপাতত অল্পুই থাকুক। সময় সুযোগ বুঝে না হয় এই অল্প টুকুই একদিন বেড়ে যাবে।’
সাদিফ মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,
‘ মন্দ হয়না,করাই যায়।’
মারিয়া হেসে হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
‘ তাহলে ফ্রেন্ডস?’
সাদিফ বিনা দ্বিধায় সেই হাতে হাত মিলিয়ে বলল ‘ ফ্রেন্ডস!’
****
পিউয়ের কপালে ভাঁজ পরেছে। অনেকক্ষন যাবত একটা বিষয় খেয়াল করেছে সে। সেটা হলো, ইফতি ওর দিকে তাকাচ্ছেই না। অন্য সময় ক্যাবলার মত চোখ দিয়ে গিললেও এখন মাথাটা নোয়ানো। সে কতবার অতিথিদের এটা -সেটা দিতে এসেছিল,ইফতি না চেয়েই হাতে নিয়েছে। কথাও বলেনি। এ নিয়ে মেয়েটা এতক্ষণ বিরক্ত থাকলেও এবার বিভ্রান্ত। এই ছেলেত সেইদিন থেকেই কেমন ছুঁকছুঁক করছিল,কলেজেও চলে গেলো। এই একটু আগেও কেমন করছিল! সে কী ওসবের মানে বোঝেনি? একটা মেয়ে যত বোকাই হোক,ছেলেরা কীভাবে তাকায় বুঝতে পারে। সেও পেরেছে। কিন্তু হঠাৎ এত ভদ্র হয়ে গেল কী করে?চৈতন্য হলো না কী?
পরক্ষনে নিজের ওপর ফুঁ*সে উঠল। ইফতি গোল্লায় গেলেও বা,ওর কী? এতক্ষণ তো তাকাচ্ছিল বলে রাগ হচ্ছিল,তাহলে এখন এসব ফা*লতু চিন্তাভাবনা কেন মাথায়?
ভালোই হয়েছে। এমনিতেই আজকাল এসব নিতে পারেনা সে। যার আদ্যপ্রান্ত,মাথামুণ্ডু, মন মস্তিষ্ক, সব জুড়ে আস্ত আরেক মানুষ, তার অন্যদের সহ্য হয়?
ইফতি চুপচাপ বসে রইলেও ইকবাল ছটফট করছে। সেই থেকে সে ঘুরছে ধূসরের পেছনে। ছেলেটা যেদিকে যায়,সেও ইউটার্ন নেয় ওদিকে। ধূসর অনেকক্ষন খেয়াল করলেও কিছু বলেনি। ভাণ করেছে না দেখার। কিন্তু শেষে বিরক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। দাঁড়াল ইকবালও। ধূসর চোখমুখ শ*ক্ত করে বলল’ কী সমস্যা তোর?’
‘ তুই আমার সাথে কথা বলছিস না কেন? আমিত সরি বললাম।’
‘ যা এখান থেকে।’
ইকবাল আ*হত গলায় বলল,
‘ এভাবে বলিস না ধূসর,আমি ইচ্ছে করে করিনি কিছু। কদিন ধরে এত ক্লান্ত ছিলাম,বাড়ি গিয়েই ঘুমিয়েছি। দুনিয়া খেয়াল ছিল না।’
ধূসর আরেকদিক তাকিয়ে রইল। ইকবাল দুকানে হাত দিয়ে বলল,
‘ এই দ্যাখ ভাই,কান ধরছি,তুই বললে ওঠবস ও করব। তবুও এরকম করিস না। মাফ চাইছি তো!’
‘ তোর আমি মাফ আমি চাইনি।’
‘ সেটাইত সমস্যা। তুই মাফ চাসনি আমার। কেন চাইবিনা? তুই একটু চা,আমি এতগুলো দেব। ‘
ধূসর চোখ কুঁচকে চাইল। তাকানোর ধরণ এমন, যেন সহ্য হচ্ছেনা তাকে। ইকবাল কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলল,
‘ আমি সত্যিই ইচ্ছে করে করিনি। তুই এইভাবে তাকালে আমার ক*ষ্ট হয়।’
ধূসর বুকের সাথে হাত ভাঁজ করে বলল,
‘ তো কী করতে পারি?’
ইকবাল অবিলম্বে কী যেন ভাবল। দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
‘ কিচ্ছু করতে হবে না, দাঁড়া আসছি।’
বলে হনহন করে চলে গেল। ধূসর ভ্রু বাঁকিয়ে চেয়ে রইল সেদিকে।
ইফতি বাবার পাশে বসা। গুটিশুটি মেরে একেবারে ভদ্র ছেলের মতোন। ইকবাল সবার মধ্যে গিয়েই খেঁকিয়ে ডাকল,
‘ এই ইফতি,এদিকে আয়।’
ছেলেটা চমকে তাকাল। মুমতাহিনা বললেন,
‘ ওমা, ওমন ধম*কাচ্ছিস যে,কী করল ও?’
‘ কিছু না। তুই এদিকে আয়।’
ইফতি ঢোক গি*লল। ধূসর ভাই কিছু বলে দিয়েছেন নির্ঘাত। সে ভীত লোঁচনে মায়ের দিক চেয়ে সাহারা খোঁজে। তবে তার খেয়াল থাকলে তো! তাকে সঙ্গ দিতে জবা বেগমকে বসিয়ে রেখে গিয়েছেন মিনা। খোশগল্পের চূড়ায় দুজন।
ইফতি অসহায় বনে ভাইয়ের পিছু নিলো। ইকবাল একদম এক কোনায় এসে দাঁড়াল। ইফতি সামনে আসতেই ধম*কে বলল,
‘ তুই পিউকে লাইন মারছিস?’
ছেলেটার বুক কাঁ*পে। যা ভ*য় পেয়েছে, তাহলে তাই সত্যি। ধূসর ভাই বলে দিয়েছেন সব।
স্বীকার করলে ভাইয়া এক্ষুনি থাবা বসাবেন। মা*রের হাত বাঁচতে
বলল ‘ ন না, না তো। ‘
ইকবাল রা*গে গনগনে কণ্ঠে বলল,
‘ না হলেই ভালো৷ বয়স কত তোর? বই নিয়ে বসতে দেখিনা,রেজাল্টতো বাধিয়ে রাখার মতো করিস। আবার মেয়ে দেখলে পেছনে ঘোরে। তাও ভাইয়ের শালী? সাহস কত!’
ইফতি মাথা নামিয়ে নিলো। ইকবাল ক*ড়া গলায় বলল,
‘ ফের এরকম কিছু শুনলে চ*ড়িয়ে চোখ-মুখ অন্ধকার করে ফেলব। তাছাড়া পিউ তোর ভাবি। ভাবি হলো সম্মানের পাত্রী। তার দিকে অন্য নজরে তাকানো ঘোর পাপ। মনে থাকবে?’
ইফতি ঘাড় কাত করল। ইকবাল কপাল গোছাল তাতে। ভাবি বলেছে,কেমন ভাবি,কোন ভাইয়ের বউ, কিছু জানতে চাইল না কেন? ভ*য় পেয়েছে মনে হয়। ইকবাল গম্ভীরতা বজায় রেখে বলল,
‘ আচ্ছা ঠিক আছে,কথা শুনলেই হবে। যা এখন।’
ইফতি চলে গেল। ইকবাল বিশাল কাজ সাড়ার ভঙিতে বুক ভরে শ্বাস টানে। বিজয়ী হেসে বন্ধুর দিক এগিয়ে যায়৷ ধূসরের ভ্রু এখনও গোঁটানো। সাথে গুটিয়ে রাখা নাক-মুখ। ইকবাল আনন্দিত কণ্ঠে বলল,
‘ বঁকে দিয়েছি। হতচ্ছাড়া টা আর জীবনে পিউয়ের দিক তাকাবে না। ‘
ধূসরের কৌতুক শোনার ভঙিতে হেসে বলল,
‘ ও এখন এমনিও তাকাবে না।’
‘ কেন?’
‘ তোর আগেই, আমার সব বলা শেষ। ‘
ইকবাল অষ্টমাশ্চর্য চোখে তাকায়। ধূসর হেসে ওর গাল চা*পড়ে চলে গেল পাশ কা*টিয়ে।
***
পিউ মহাব্যস্ত আজ। বোনের বিয়েতে বেশ কিছু কাজ তার কাঁধেও পরেছে। বসে বসে খাওয়ার ফুরসত নেই। বাড়িতে এত মানুষ থাকতেও,মিনা বেগম ওকেই কাজে লাগান। মেহমানদের শরবত থেকে শুরু করে সব তাকে দিয়ে দেয়ালো। কত যে সাবধানে, আল্লাহ, আল্লাহ বলে সে ওসব কাঁচের জিনিস নিয়ে হেঁটেছে, সেই জানে। একটাও যদি পরে ভাঙতো,মা হয়ত সবার মধ্যেই ওর হাড্ডি ব্লেন্ড করে ওকেই জুস বানিয়ে খাওয়াত।
এই পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য হলো, বড় ভাই বোনদের বিয়েতে সবথেকে বেশি ধকল যায় ছোটদের ওপর। তারা দুদন্ড শ্বাস নেয়ারও জো পায় না। এখানে ছোটে, সেখানে যায়। পা দুটো একটুখানি জিরোয় না। অথচ এই ধকল,এই ছোটাছুটি কেউ চোখে দ্যাখে না। পরিবারে ছোট মানেই, বড়দের চোখে শুয়ে -বসে খাওয়া এক সুখী মানব।
পিউ নিজেকে নিয়ে বড্ড চিন্তিত। আজকে যেই পরিমানে সে খেটেছে গায়ে হলুদেও এরকম হবে না কি? মন ভরে, মজা করতে পারবে তো? ইয়া আল্লাহ! শখ করে আবার শাড়ি কিনল যে। পরাই যদি না হয়,ধূসর ভাইকে আবার পাগল করা হবে নাতো। পিউ ভাবতে ভাবতে বিছানায় উপুড় হয়ে শুলো। একবার আড়চোখে তাকাল ড্রেসিং টেবিলের সামনের টুলে বসা পুষ্পর দিকে। গুনগুন করে গান গাইছে সে। ঠোঁট উপচে আসা হাসি নিয়ে একটা একটা করে চুড়ি খুলে রাখছে।
পিউয়ের সমস্ত ক্লান্তি উবে গেল। এক হাত মাথায় ঠেস দিয়ে বোনের দিক চেয়ে রইল। ভালোবাসার মানুষকে নিজের করে পাওয়ার কী সুখ! এই যে,আপুকে এখন দুনিয়ার সবচাইতে সুখী মেয়ে লাগছে। এমন সময় রুবায়দা ঘরে এলেন। ট্রে ভর্তি তিন কাপ চা। পুষ্পর সামনে এক কাপ রাখতেই সে বলল,
‘ আমিত চা চাইনি মেজ মা।’
‘ জানি। বলছিলি মাথা ব্য*থা করছে,তাই নিয়ে এলাম। খা ভালো লাগবে।’
পুষ্প বিনীত, চমৎকার হাসল। হাসল পিউও। মুগ্ধতা ইউটার্ন নিলো মেজো মায়ের ওপর। আহা! তার শ্বাশুড়িটা কী অমায়িক! এত ভালো শ্বাশুড়ির আন্ডারে থাকলে জীবন ধন্য।
রুবায়দা জিজ্ঞেস করলেন,
‘ তুই খাবি চা?’
পিউ দুপাশে মাথা নাড়ল। রুবা বললেন,
‘ আচ্ছা,তাহলে আমিই খাই বরং। আগে যাই ছেলেটাকে দিয়ে আসি।’
পিউ তৎপর, উঠে বসে বলল,
‘ ধূসর ভাইকে দিতে যাচ্ছো?’
‘ হ্যাঁ। ‘
পিউ এক লাফে বিছানা থেকে নেমে চলে গেল তার সামনে। ট্রে-টা কে*ড়ে নিয়ে বলল,
‘,আমি দিয়ে আসি।’
‘ ওমা কেন,তুই আজ কত কাজ করলি,বিশ্রাম নে।’
‘ বিশ্রাম লাগবে না। নাও, তোমার কাপটা রাখো।’
‘ পারবি? হাতে পায়ে ফেলবি না তো?’
‘ আরে না না,জীবন দিয়ে হলেও কাপের চা রক্ষা করব। নাও তো।’
রুবায়দা দোনামনা করে কাপ হাতে নিলেন। পিউয়ের আছা*ড় খাওয়ার অভ্যাস নিয়ে সে চিন্তায়। কাপ ভাঙু*ক,চা ফেলুক,ব্য*থা না পায়। তার চিন্তিত চোখ-মুখ দেখে পুষ্প মিটিমিটি হেসে বলল,
‘ মেজো মা,অত ভেবোনা। পিউ আর যাই হোক,ধূসর ভাইয়ের চা নিয়ে আ*ছাড় খাবে না। তুমি এসে বসো তো এখানে,একটু গল্প করি দুজন।’
রুবায়দা হেসে,চা সমেত এসে বিছানার প্রান্তে বসলেন। পিউ ততক্ষনে হেলেদুলে বেরিয়ে গিয়েছে।
***
পিউ ঘর থেকে বের হতেই দেখল ধূসর নিজের রুমে ঢুকছে। তৎক্ষনাৎ পিছু ডাকল সে।
‘ ধূসর ভাই!’
ধূসর থামল। ইকবালদের এগিয়ে দিয়ে মাত্রই ফিরেছে। পিউ কাছে এসে বলল,
‘ আপনার চা।’
ধূসর একবার তার হাতের দিকে তাকায়। কথাবার্তা না বলেই আচমকা ভেতরে ঢুকে যায়। আদেশ ছোড়ে,
‘ দিয়ে যা।’
পিউ কপাল কুঁচকে ফেলল। নিয়ে গেলে কী হোতো?
ধূসর ভাই ইচ্ছে করে এমন করেন। বেশি ভালোবাসি বুঝতে পেরে খুশিমনে খাটান। ফায়দা নিচ্ছেন তো? নিতে থাকুন। যেদিন আপনিও জালে ধরা পরবেন না?দেখবেন,আপনাকেও নাকানিচুবানি খাওয়াব। পেট চে*পেও সেই পানি বের করতে পারবে না কেউ,হুহ।
পিউ পর্দা সরিয়ে ভেতরে ঢোকে। ধূসর কাউচে বসল গিয়ে। ফোন,ওয়ালেট বের করে সেন্টার টেবিলে রাখল। সে ঢুকতেই জায়গা দেখিয়ে বলল,
‘ রাখ।’
পিউ ট্রে শুদ্ধ রাখল। ঘুরে হাঁটা ধরতেই ধূসর ডাকল,
‘ দাঁড়া।’
পিউ ঝটপট ফিরে তাকালে বলল ‘ তোকে যেতে বলেছি?’
দুপাশে মাথা নাড়ল সে।
ধূসর কাউচে বসেই কম্পিউটার টেবিলের সামনে থেকে পা দিয়ে চেয়ারটা টেনে আনল। চোখ দিয়ে দেখিয়ে বলল ‘ বোস।’
পিউ ভেতর ভেতর হাঁস*ফাঁস করে উঠল। দুঃশ্চিন্তায় বুক ধড়ফড় করছে। ধূসর ভাইয়ের হাবভাব তো সুবিধার ঠেকছে না। আবার কী করল সে? কোন বিপ*দসংকেত ঝু*লছে মাথায়!
ধূসর ঝুঁকে এসে চা তুলল হাতে। ছোট্ট একটা চুমুক দিয়ে বলল,
‘ ইফতিকে ছাদে নিয়ে গেলি না যে?’
পিউয়ের চোখ বেরিয়ে এলো। তটস্থ ভঙিতে উঠে,ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,
‘ আমি কিছু বলিনি। ওই বলে…’
‘ বোস।’
শীতল আওয়াজে,পিউ বসে গেল আবার। মিনমিন করে বলল ‘ আমি কিন্তু না বলেছিলাম।’
ধূসর কথাটুকুন এড়িয়ে গিয়ে বলল,
‘ টেবিলের ওপর থেকে একটা বই নিয়ে আয়।’
পিউ বুঝল না ঠিক শুনেছে কী না। নিশ্চিত হতে শুধাল,
‘ হ্যাঁ? ‘
‘ বই নিয়ে আয় ওখান থেকে। ‘
সে মাথা চুল্কে উঠে গেল। ধূসরের স্টাডি টেবলটা পুরোনো। সেগুন কাঠের হওয়ায়,এখনও চকচকে, মজবুত। ইউনিভার্সিটির সমস্ত বই সেখানে সাজানো। টেবিল নয়,যেন আস্ত বইয়ের স্তুপ। পিউ সিদ্ধান্তের টানাটানিতে পরে গেল কী বই নেবে! এই এত মোটা মোটা বই দেখেই তার মাথা ভোঁ ভোঁ করছে। সে অসহায় ভাবে ফিরে তাকিয়ে বলল,
‘ কী বই নেব ধূসর ভাই?’
‘ যেটা ইচ্ছে।’
পিউ দিশেহারা হয়ে পড়ল আরো। যেটা ইচ্ছে? তারতো ইচ্ছেই করছেনা বই ধরতে। এসব হাতে নিলেই শরীর হাই ভোল্টেজে ঝাঁকি মা*রে। কে যেন ভেতর থেকে চেঁচিয়ে বলে, ‘ পিউ বই রাখ,বই রাখ।’
কী বই নেবে ভেবে ভেবে হাত বাড়াল একটা কারেন্ট এফেয়ার্সের দিকে। তার সাধারন জ্ঞান একেবারেই শূন্য৷ পাঠ্য বই-ই তো পড়েনা,আবার অন্য বই! যা দেখলেই ওর জ্বর আসে,ঘুম পায়,দুনিয়ার সব পায়? না সব না,শুধু প্রেম প্রেম পায় ধূসর ভাইকে দেখলে।
এছাড়া সব এক।
পিউ পাতলা কারেন্ট এফেয়ার্স বুকে চে*পে এগিয়ে আসে। ধূসরের দিক বাড়িয়ে ধরে। ধূসর ধীর,দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
‘ আমি না,তুই পড়বি।’
পিউ সপ্তমাকাশে বিস্ময় তুলে বলল,
‘ আমি? এখন?’
‘ হু,বোস।’
‘ কিন্তু এখন তো বাসায় অনেক কাজ!’
‘ থাকুক। কী লেখা আছে পড়। ‘
‘ আপনাকেও শোনাব?’
‘ হু।’
পিউ বিরক্ত হলো। এই ভর সন্ধ্যে বেলা পড়ার জন্য একটা সময় হলো না কি? এইত পরশু শেষ হয়েছে তার পরীক্ষা। একটু বিশ্রামও তো দরকার এখন।
কিন্তু কার হুকুম, অমান্য করার সাধ্য আছে?
পিউ বসল। অনিচ্ছা,আর অনাগ্রহ সমেত বই মেলে সামনে ধরল। কী মুসিবত!প্রতিটি শব্দই তো মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। কে লিখেছে এই বই? ছাপালোটাই বা কে!
পিউয়ের পড়তে ইচ্ছে করল না। একটুও না। তাও ঠোঁট নেড়ে আওয়াজ বের করল,
‘ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেকেন্ড কনফারেন্স হয়েছিল কোন দেশে?’
পড়তে পড়তে একবার বইয়ের ওপর দিয়ে ধূসরের দিক তাকাল সে। ধূসর নীচের দিক চেয়ে ফোন দেখছে। সে ফোস করে শ্বাস ঝেড়ে বইয়ের পাতায় মন দিলো ফের।
ফোন টিপছে,একে কোন ঘোড়ার ডিম পড়ে শোনাবে শুনি? কেমন রসকষহীন প্রেমিক এ? প্রেম করেনা, দুটো মিষ্টি করে কথা বলে না। রুমে এনে পড়তে বসায়?
অথচ মেয়েটা বুঝলোই না,সে যতবার বইয়ের দিকে চায়,একজনের পূর্ন দৃষ্টি সঙ্গে সঙ্গে নি*ক্ষেপ হয় তার ওপর। সেকেন্ডে সেকেন্ডে মুগ্ধ,মোহিত চোখে দ্যাখে। অক্ষিপট নড়েনা,উহু এক চুলও এপাশ ওপাশ হয়না।
চলবে।
আপনাদেরত জানিয়ে দিয়েছিলাম আমার এক্সাম নোটিশের কথা। এই সময় আরো বেশি অনিয়মিত হওয়াটাই কি স্বাভাবিক নয়?🙄