#হৃদয়_এনেছি_ভেজা – [১৬]
দুই ভাই মিলে এক ভার্সিটিতে এসেছে। দুজনের মুখেই কালো মাস্ক এবং চোখে কালো সানগ্লাস। ভার্সিটিতে অসম্ভব ভীড়। কোনো রকমে ভীড় ঠেলে অডিটোরিয়ামের দিকে ছুটলো দুই ভাই। সিদাত তো ঘেমে-নেয়ে একাকার। এমনিতেই ইদানীং তীব্র গরম, তার ওপর এত ভীড়ের মধ্যে এসেছে। বেশ নাজুক অবস্থা তার। সিদাত সাইফকে আবারও একই প্রশ্ন করলো,
–“হঠাৎ এখানে কেন আনলে ভাইয়া? এখানে কী?”
সাইফ খোলাসা করে কিছু বললো না। শুধু বললো,
–“সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে এসেছি!”
সিদাত অবাক হলো। বললো,
–“তুমি যেই মেয়েকে পছন্দ করেছো তার জন্যে ইতিমধ্যে-ই বাবা প্রস্তাব দিতে গিয়েছে। তাহলে আয়োজন করে এখানে আসার মানে কী?”
সাইফ কিছু বললো না। সিদাত শুধু অবাক-ই রইলো। অডিটোরিয়ামের ভেতরটায় সেরকম ভীড় নেই। বেশির ভাগ মানুষজন বাইরেই অবস্থান করছে। নিজেদের মতো করে চলছে। সাইফ এবং সিদাত এক পাশে দুটি সিট খালি পেলো। সেখানেই গিয়ে বসলো। এখন আবৃত্তির সময়। সাইফ তার মোবাইল নিয়ে রেডি থাকলো। মোবাইলের ক্যামেরা অন করে বললো,
–“তোর ভাবীকে অস্পষ্ট দেখলে জানাইস। আমি ক্যামেরা জুম করে দেখাবো!”
সিদাত সরু কন্ঠে বললো,
–“এই ব্যাপার তাহলে! কিন্তু তোমার ক্যামেরার জুম করার দরকার নেই। আমার চোখের পাওয়ার এখনো ভালো আছে!”
সাইফ হাসলো। কথাটা যে সাইফ মশকরা করে বলেছে সেটাই মনে করলো সিদাত। কিন্তু সাইফ মশকরা করলেও ক্যামেরা অন-ই রাখলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই দিয়া আহমেদ নাম ডাকা হলো। পরমুহূর্তেই নীল শাড়ি পরা এক সুন্দরী কন্যা ধীরপায়ে স্টেজে উঠে এলো। দিয়াকে চোখে পরতেই সাইফ ঝটপট ফটো ক্লিক করলো। যার ফলে দিয়ার বেশ কিছু ছবি পেয়ে যায় সাইফ। অতঃপর নিজেই জুম করে দিয়াকে দেখতে লাগে। দিয়াকে দেখতে গিয়ে তার চোখ আটকে যায়। দিয়া তার সামনের চুল কানে গুজে মাইকের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। অতঃপর সবার দিকে নজর বুলিয়ে কবিতা আবৃত্তি করতে লাগলো।
সিদাত মুগ্ধ হয়ে যায় দিয়ার কন্ঠের নমনীয়তায়। সিদাত ঘাট বাঁকিয়ে একপলক ভাইয়ের দিকে তাকালো। সাইফের মুখখানা দেখার মতো। চোখ কপালে তুলে চেয়ে আছে মোবাইলের স্ক্রিনে। সিদাত খানিকটা উঁকি দিয়ে দেখলো। অতঃপর যা বোঝার বুঝে নিলো। চাপা হাসলো সিদাত। এর মাঝে কী হলো কে জানে? তরীকে স্মরণে এলো সিদাতের। কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে হাসলো। হয়তো দিয়ার জায়গায় সে তরীকে বসিয়ে ফেলেছে।
—————–
দরজা খুলে নাজমুল সাহেব সাঈদ সাহেবকে দেখে যেন আকাশ থেকে পরলো। নাজমুল সাহেবকে দেখে সাঈদ সাহেব মুচকি হাসলেন। বিনয়ের সাথে সালাম জানালেন। নাজমুল সাহেব তখনো বিস্ময় ভরা চোখে চেয়ে আছে। সাঈদ সাহেবের সালামটা মস্তিষ্কে স্বল্প দেরীতেই টনক নাড়লো। ব্যস্ত সুরে সালামের উত্তর নিয়ে বললো,
–“আপ.. না মানে আপনি? আমার চৌকাঠে?”
নাজমুল সাহেবকে ব্যস্ত হতে দেখে সাঈদ সাহেবের ম্যানেজার তাকে থামালেন। শীতল গলায় বললো,
–“ব্যস্ত হবেন না নাজমুল সাহেব। আমরা কী ভেতরে আসতে পারি?”
নাজমুল সাহেব বোকা হেসে বললো,
–“আরেহ। দেখুন কান্ড। ভেতরে আসুন!”
ম্যানেজার সহ সাঈদ সাহেব ভেতরে প্রবেশ করলেন। নাজমুল সাহেব অতিথিদের তার নিজ হাতে সাজানো লিভিংরুমে নিয়ে বসালেন। অতঃপর ব্যস্ত পায়ে ছুটলেন রান্নাঘরের দিকে। রান্নাঘরে সুফিয়া বেগম রান্না করছে। স্বামীকে দেখে স্বল্প শব্দে শুধালো,
–“কে এসেছে?”
নাজমুল সাহেব তখনো ঘোরের থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। অস্ফুট স্বরে বললো,
–“সাঈদ সাহেব এসেছে!”
সুফিয়া বেহম ছুঁরি দ্বারা ধনিয়াপাতা কাটছিলেন। স্বামীর বলা বাক্য কর্ণগোচর হতেই সুফিয়ার ব্যস্ত হাত থমকালো। সঙ্গে থমকালো সুফিয়ার মস্তিষ্কের ভাবনা। ঘাড় বাঁকিয়ে অবাক চোখে চাইলো। তাকে দেখেও মনে হচ্ছে যেন আকাশ থেকে জমিনে ল্যান্ড করেছেন তিনি। অস্ফুট স্বরে বললো,
–“কী বলছেন?”
–“তোমার কী মনে হয় আমি মশকরা করছি?”
সুফিয়া বেগম দু’দিকে মাথা নাড়িয়ে বললো,
–“এ নিয়ে কখনো তো মশকরা করেননি। এছাড়া মেয়ের বিয়েও ঠিক করেছেন। এই মুহূর্তে কখনোই এরকম মশকরা করবেন না। তা আমার দৃঢ় বিশ্বাস!”
নাজমুল সাহেব বিরক্ত হলেন স্ত্রীর অযথা কথায়। বিরক্তি চেপে বললো,
–“এসব হিসেব পরেও করা যাবে। ঘরে কী শুকনো খাবার আছে সেসব রেডি করো। আমি যাচ্ছি তাদের কথা শুনতে!”
বলেই নাজমুল সাহেব আবারও ব্যস্ত পায়ে ছুটলো। স্বামীর উদ্বীগ্ন ভাব দেখে সুফিয়ার বুঝতে বাকি নেই, সে আসলেই কোনো রকম মিথ্যে বলছে না। সুফিয়া হাতের কাজ ফেলে চট করে ব্যস্ত হয়ে পরলো অতিথি আপ্যায়নের জন্যে। মেয়ের বিশ্বাস এভাবে ফলে যাবে কে জানতো?
–“আমার কী মনে হয় জানেন স্যার? আপনার টাকা-পয়সা দেখেই মেয়েটা সাইফ বাবাকে বশে এনেছে। নাহয় আপনার মতো সৌখিন মানুষের সাথে এই ছোটো-খাটো ব্যবসা করা পরিবার চলে নাকি? সেই মুরোদ কী তাদের আছে?”
চারপাশ নজর বুলিয়ে তাচ্ছিল্যের সুরে বেফাঁস কথাগুলো আওড়ালো ম্যানেজার। ম্যানেজারের এই কথা-বার্তা শুনে সাঈদ সাহেবের ভ্রু অসম্ভব রকম কুচকে যায়। রাগ কোনোরকমে চেপে ধমকে উঠলো ম্যানেজারকে। ম্যানেজার তৎক্ষনাৎ সোজা হয়ে বসলো ভয়ে। সাঈদ সাহেব ক্রোধ চেপে রাখা গলায় বললো,
–“অন্যকে বিবেচনা করার আগে নিজে কোথা থেকে উঠে এসেছো সেটা চিন্তা করো। আমি তোমায় জায়গা না দিলে এরকম বাড়িও তোমার কপালে জুটতো না, এটা মনে রেখো!”
ম্যানেজার সাহেব মুখখানা ছোটো করে বসে রইলো। সাঈদ সাহেবের এই বসে থাকাও সহ্য হলো না। চেঁচিয়ে বললো,
–“উঠে দাঁড়াও। আয়েশ করে বসার কোনো দরকার নেই তোমার!”
ম্যানেজার তাই করলো। বুঝতে পারলো না এইটুকুনি কথায় স্যার এত মনে কেন ধরলো? তবে মিনিটখানেক দাঁড়িয়ে থেকে পা ধরে এলো। মনে মনে বললো, সেই কমদামী সোফাই ঠিক ছিলো!
নাজমুল সাহেব এসে ম্যানেজারকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভারী অবাক সুরে বললো,
–“একি! আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেন? বসুন!”
ম্যানেজার সাহেব আড়চোখে সাঈদ সাহেবের দিকে তাকালো। সাঈদ সাহেবের মুখখানায় তখনো লাল ভাব আছে। অর্থাৎ সে এখনো রেগে। ম্যানেজার সাহস পেলো না বসার। নাজমুল সাহেবও পীড়াপীড়ি শুরু করেছে। এজন্যে সাঈদ সাহেব খুবই ঠান্ডা গলায় বললো,
–“আহা। নাজমুল ভাই যখন বসতে বলছে তো বসো না।”
এবার সাঈদ সাহেবের দিকে পূর্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো ম্যানেজার। বিস্ময় যেন চোখ জোড়া থেক্ব কাটছে না। সাঈদ সাহেন চিবিয়ে চিবিয়ে বসতে ইশারা করলো। ম্যানেজার সঙ্গে সঙ্গে বসে পরলো। আহ্! শান্তি! তাদের বাড়ির সোফাও কী এই দামের হবে? নাকি আরেকটু দামী? কে জানে?
নাজমুল সাহেবও হাসি-মুখে বসলেন। কিছুক্ষণ কুশল বিনিময় করতে করতেই হালকা-পাতলা নাস্তা নিয়ে আসে দিয়ার মা। তার মুখ-জুড়েও সৌজন্যমূলক হাসি। নাস্তা দিয়ে, সালাম জানিয়ে সুফিয়া বেগম ভেতরে চলে গেলো।
নাজমুল সাহেব বিনয়ী হাসি দিয়ে বললো,
–“এই গরীবের ঘরে হঠাৎ এলেন যে? আমরা তো পূর্ব পরিচিত নই ভাইজান!”
সাঈদ সাহেব চায়ের পেয়ালাসহ কাপ হাতে নিয়ে হাসি বজায় রেখে বললো,
–“পরিচিত হতে সময়ের কোনো ধরা-বাধা নেই। এইযে, দিব্যি পরিচিত হয়ে গেলাম। আশা রাখছি এবার থেকে কাছের আত্মীয়ও শীঘ্রই হবেন।”
নাজমুল সাহেব কিছু একটা আঁচ করলেও মুখ-জুড়ে অবুঝ ভাব রাখবেন। না বোঝার ভান ধরে বললো,
–“ঠিক বুঝলাম না আপনার কথা ভাইজান!”
সাঈদ সাহেব চায়ের কাপে চুমুক দিলেন। কিছুক্ষণ নীরবও রইলেন। নাজমুল তখনো উৎসুক নজরে চেয়ে আছে সাঈদ সাহেবের দিকে। সাঈদ সাহেব গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,
–“আপনার একমাত্র মেয়েকে আমার বড়ো ছেলের বউ করতে চাইছি। আপনার মতামত কী?”
নাজমুল ভারী অবাক হলো। বাইরে-ই দাঁড়িয়ে ছিলো সুফিয়া। সাঈদ সাহেবের কথা-বার্তা কান খাড়া করে শুনছিলেন তিনি। সাঈদ সাহেবের এহেম প্রস্তাবে সুফিয়া বিস্মিত। নিজের কানকেও সে বিশ্বাস করতে পারছে না।
নাজমুল সাহেবের মুখ জুড়েও বিস্ময় ভাব বিরাজমান। সাঈদ সাহেব হাসলেন। নাজমুল সাহেব তার হতভম্ভতা কাটিয়ে কিছু একটা বলার চেষ্টা করলেন। তার আগেই সাঈদ সাহেব বললো,
–“জি। আমি জানি। সব খোঁজ-খবর নিয়েই এসেছি। যার সাথে আমাদের মামণির বিয়ে ঠিক হয়েছিলো তাকে মানা করে দিন। এই মুহূর্তে আমি আমার ছেলে এবং মামণির মনের অবস্থাকেই প্রাধান্য দিচ্ছি।”
নাজমুল সাহেব আরও অবাক। এত খবর সাঈদ সাহেব পেলো কোথা থেকে? সাইফ-ই বা দিয়ার সাথে কবে দেখা করলো? ভারী আশ্চর্য তো!!
——————-
দিয়া বেরিয়ে আসতেই সাইফ এবং সিদাতের মুখোমুখি হলো। সিদাত হেসে সালাম দিলো। দিয়া সিদাতকে চিনতে পেলে বিনয়ের সাথে সালামের উত্তর দিলো। দিয়া মুচকি হেসে সাইফের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“২য় বারের সাক্ষাৎ-টা এত দ্রুত হবে জানা ছিলো না!”
সাইফ দিয়ার মুখপানে চাইলো। সিদাত পাশ থেকে হেসে বললো,
–“শুধু দ্রুত নয়। বলুন সুপার ফাস্ট! আপনার বাড়িতে অলরেডি বিয়ের প্রস্তাব চলে গেছে মিস!”
দিয়া হতবাক। মুহূর্তে-ই হাসি মিলিয়ে গেলো। বড়ো বড়ো চোখে দুই ভাইয়ের দিকে চেয়ে বললো,
–“কিন্তু… আমার বিয়ে তো অলরেডি ঠিক হয়ে আছে!”
——————–
এক প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলো। সিদাতের কোনো দেখা নেই। তরী রোজ সিদাতকে খুঁজছে।
সিদাতকে বকা দেওয়ার জন্যে, তাকে সাবধান করার জন্যে। কিন্তু একি? সিদাতের যে কোনো খোঁজ-খবরই নেই। আগে যখন প্রয়োজন ছিলো না তখন তো দিব্যি যখন তখন দেখা হয়ে যেত। তাহলে এখন প্রয়োজন হওয়ার পরপরই মানুষটা গায়েব? দুনিয়ার অদ্ভুত নিয়ম তো! ওদিকে মঙ্গলবারেই তরীর বাবা-মা ফিরবে। আজকাল এ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত তরী। আত্মীয়-স্বজন ঘনঘন ফোন করছে তরীর বাবা-মায়ের খোঁজ-খবর জানার জন্যে। এতদিন তারা কেউ কল করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা পোষণ করেনি। একমাত্র ফুপি আর মামাটাই একটু আপনজন। আর বাকিরা স্বার্থের বাইরে চেয়েও দেখে না। এই যে, একেকজন বলছে নবীর দেশের খেঁজুর নিয়ে আসতে, জমজম কূপের পানি নিয়ে আসতে। আরও কত কত আবদার! তরী না চাইতেও সকলের চাওয়া গুলো নোট করে নিয়েছে। আর যাইহোক, তার বাবা-মা তাকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার শিক্ষা দেয়নি।
রোজ রাতে বাবা-মাকে তরী লিস্ট বুঝিয়ে দেয়। আর আকবর সাহেবও হাসি-মুখে তা গ্রহণ করে নেয়। অর্থাৎ সকলের আবদার সে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করবে।
আজ ফুপি একটু তার বাড়িতে গিয়েছে। হয়তো-বা সন্ধ্যার মধ্যেই চলে আসবে। দু’বোন বাসায় একা। তরীর মাথায় চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। বাবা-মা আসার দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই যেন তরীর ভেতরকার ভয় ক্রমশ বাড়ছে। তার ভয়টা সিদাতের হুটহাট চিঠি পাঠানোটা নিয়ে। অথচ এই মুহূর্তে-ই সিদাতের দেখা-সাক্ষাৎ নেই। অনয়কে বেশ কয়েকবার দেখেছিলো তরী। কিন্তু সিদাতের কথাটা সে সিদাতকেই বলতে চেয়েছিলো। নিশ্চয়ই এসবের মাঝে তাকে আনা ঠিক হবে না। এরকমটাই আগে ভেবেছিলো তরী। কিন্তু পরিস্থিতি আজ সম্পূর্ণ উলটো। সিদাতকে যেহেতু পাচ্ছে না সেহেতু তরীর কথাগুলো অনয়ের মাধ্যমে-ই সিদাতকে পৌঁছাতে হবে। এজন্য তরী নীরবে কিছুক্ষণ ভাবনায় মত্ত রইলো। পরমুহূর্তে কী ভেবে সাবিয়াকে মোবাইল দিয়ে বসিয়ে রেখে দরজার সামনে গেলো। ভালো করে ওড়না দিয়ে মাথা এবং মুখ পেচিয়ে দরজা খুলে অল্প করে ফাঁক করলো। অনয়ের ফ্ল্যাটে তালা নেই। এর মানে অনয় বাসাতেই আছে।
তরী এক বুক সাহস জুগিয়ে অনয়ের ফ্ল্যাটের সামনে এসে দরজায় নক করলো। আশেপাশে সতর্ক নজর ফেলতেও ভুললো না। অনয় কিছুক্ষণের মধ্যে দরজা খুলে তরীকে দেখে চমকালো। বড়ো বড়ো চোখে চেয়ে রইলো তরীর দিকে। নিজের চোখকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না সে। তরী কোনোরকম কুশল বিনিময় ছাড়া সোজা-সাপটা বলতে লাগলো,
–“আপনার বন্ধুকে বলে দিবেন আমাকে অযথা চিঠি দিয়ে বিরক্ত না করতে। আমি এবং আমার পরিবার আধুনিক মানসিকতার নই। উনি যদি নূন্যতম আমার ভালো চেয়ে থাকে তাহলে এই ধরণের অভদ্র কাজ থেকে আপনার বন্ধুকে বিরত থাকতে বলবেন। আসসালামু আলাইকুম।”
©লাবিবা ওয়াহিদ
~[ক্রমশ]
বিঃদ্রঃ ভুলত্রুটি ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন। গঠনমূলক মন্তব্যের অপেক্ষায় আছি।
#হৃদয়_এনেছি_ভেজা – [১৭]
দিয়া তার বাবা-মায়ের সঙ্গে নীরবে বসে আছে। নাজমুল সাহেব এতে বিচলিত হয়ে পরলেন। বললেন,
–“দু’দিন যাবৎ কথা বলছিস না, কী করলাম আমরা? এভাবে বাবা-মায়ের সাথে রাগ করলে চলে?”
দিয়া মুখ তুলে চাইলো না। সেভাবেই বসে রইলো। মিনমিন গলায় বললো,
–“আমি যখন বলেছিলাম বিয়ে করবো না তখন তুমি আমার মত ছাড়া-ই কেন আরেক জায়গায় বিয়ের কথা দিয়ে দিলে? তুমি যেদিন এই অকাজ করেছো সেদিন-ই আমি সাইফকে আমার মনের কথা জানাতে গিয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে শুনি এই কাজ করেছো। কথা বলার মতো অবস্থায় রেখেছিলে বাবা?”
নাজমুল সাহেব মুখটাকে ঘুঁচে বললো,
–“আমি আসলে ভাবিনি এমপির মতো লোক আমার মতো মধ্যবিত্ত পরিবারে নিজের ছেলের জন্যে প্রস্তাব নিয়ে আসবে।”
–“সবাইকে এক দাড়িপাল্লায় মাপা ঠিক নয় বাবা। প্রস্তাব না আনলেও আমি এখন বিয়ে করতাম না!”
পাশ থেকে দিয়ার মা বললো,
–“থাক, এখন এত চিন্তা করতে হবে না। পাত্রপক্ষকে তোর বাবা না করে দিয়েছে।”
দিয়া তাতেও খুশি হলো না। বললো,
–“এখন তো আবার ওরা ভাববে বড়োলোক পেয়ে টাকার লোভে পরে বিয়েতে না করে দিয়েছি। এই অপবাদ আমি কিছুতেই শুনতে পারবো না বাবা!”
দিয়া চোখ তুলে তাকাতেই নাজমুল সাহেব খুব চমকে ওঠলো। দিয়ার চোখে অশ্রু চিকচিক করছে। নাজমুল তৎক্ষনাৎ মেয়েকে বুকে টেনে বললো,
–“এই বোকা। কাঁদিস কেন? এরকম কিছুই হয়নি। আমি তাদের থেকে সময় নিবো বলেছিলাম। সরাসরি হ্যাঁ তো বলিনি৷ তাছাড়া আমার মেয়ের খুশি সবার আগে। তুই আমাদের কথা কত ভাবিস, আর আমরা তোর কথা ভাববো না? এতই পাষাণ লাগে তোর বাবাকে?”
দিয়ার মা নীরবে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। এই মেয়ে তাদের বড়োই আদরের, বড়োই সাধনার।
————–
বিয়ের তোড়জোড় শুরু হলো। বিয়ের সকল প্রকার আয়োজনের ভার সিদাত এবং সাঈদ সাহেবের ম্যানেজারের ঘাড়ে গিয়ে পরেছে। সিদাত তার অফিস সামলে যতটুকু পারে ততটুকু করছে। এর মাঝে মাকে সিদাত এবং সাইফ দুজন মিলেমিশে দেখাশোনা করছে। মেহমানদের তালিকাসহ নানান কাজে সাঈদ সাহেবও হাত লাগাচ্ছে। বিয়ে হবে আরও দশ দিন বাদেই। তাড়াহুড়োর মূল কারণ সিদাতের মা জয়া। সে অতি দ্রুত বউ দেখতে চায়। যখন শুনেছে বিয়ে আরও দুই – তিন মাস পরে হবে তখন তার নিঃশ্বাস বেড়ে যায়। সে আবারও অসুস্থ হয়ে পরলেন। সাঈদ সাহেব তখনই বুঝলেন তার স্ত্রী কী চাইছে। সঙ্গে বুকের বা পাশে চিনচিনে ব্যথা অনুভব করলেন। স্ত্রীর কথা না বলতে পারার যন্ত্রণাটা সে একটু হলেও অনুভব করে।
দিয়া তার কাজিন বোনেদের সাথে বসে আছে। আজ গায়ে হলুদ। মোটামুটি অল্প করে সাজগোছ করে বসে আছে সে। তার বোনেরা, আত্নীয়’রা তো বিশ্বাস-ই করতে পারছে না এমপির বড়ো ছেলের সাথে দিয়ার বিয়ে হচ্ছে৷ তারা ভীষণ খুশি। দিয়াকে হাসি-মুখে বহু দোয়া দিচ্ছে। তবে সুযোগ বুঝে তাদের আবদারও জানাচ্ছে। তাদের সুবিধার জন্যে বেশ কিছু অভিযোগও করছে, যাতে দিয়ার শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে দেওয়া হয়। দিয়ার বাবা-মাও নরম মনের মানুষ। তারা হাসি-মুখে সেসব গিলছে। কিন্তু দিয়া শুধু তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো। খারাপ সময়ে যারা পাশে থাকেনি তারা বোধহয় আবদারের ঝুলি নিয়ে বসেছে। কিছু কিছু স্বজন তো তাদের মেয়েকে সাইফের ছোটো ভাই অর্থাৎ সিদাতের সাথেও লাগাতে চাইছে।
দিয়ার কয়েক জন বোন সিদাতের নাম্বার চেয়েছিলো। দিয়ার কাছে এমনিতেও নেই। তাই সে সোজা-সাপটা বলে দিয়েছিলো, “নেই।”
এতেই একেকজনের খোঁচানো শুরু। ঠাট্টা মশকরা, এমনকি দিয়াকে হিংসুটে বলতেও ছাড়ছে না তারা।
–“কী রে দিয়া? তুই দেবরের সাথে সেটিং করিয়ে দিতে ভয় পাচ্ছিস নাকি?”
–“ভয় পাবে না? ওর ভাগে যদি আমরা বসে যাই?”
–“আরে না। দিয়া লজ্জা পাচ্ছে বোধহয়। আচ্ছা, দেবরের নাম্বার দিতেও বুঝি লজ্জা পেতে হয়?”
–“থাক সমস্যা নেই। বিয়ের দিন আমরা নিজেরাই চেয়ে নিবো!”
কথাগুলো দিয়ার এতটা তিক্ত লাগছে বলার মতো নয়। কোনো-রকমে হলুদের অনুষ্ঠান গেলো। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই সাইফের কল এলো। দিয়া সাইফের কল দেখে কিছুক্ষণ নীরবে চেয়ে ছিলো। তার কেমন যেন লাগছে কল রিসিভ করতে। দিয়া আশেপাশে তাকালো। তার বোনেদের অনেকেই তার ঘরজুড়ে বিচরণ করছে। কেউ কেউ ঘুমোচ্ছে আবার কেউ ফোন দেখছে। দিয়া মোবাইল নিয়ে বারান্দায় চলে এলো। রিসিভ করতেই সাইফ খুবই নরম গলায় বললো,
–“ব্যস্ত ছিলে?”
দিয়া ম্লান গলায় বললো,
–“সেরকম না। বলুন!”
–“কী বলবো? বলবে তো তুমি? এতকিছু লুকিয়ে রেখেছো, যা জানতে পেট মোঁচড়ায়!”
–“তাহলে বিয়ে কী সব জানার জন্যে করছেন? এরকম হলে এখনই “না” করে দিন। আমি বিয়ে না করেও থাকতে পারবো।”
সাইফ শুয়েই ছিলো। দিয়ার এহেম কথা শুনে সাইফ শোয়া থেকে উঠে বসলো বিস্ময়ে। থতমত খেয়ে বললো,
–“আমি তো শুধু আমার আগ্রহ জানিয়েছি। আর তুমি কী না বিয়ে ভাঙার দিকে চলে গেলে! ভয়ানক চরিত্রের মেয়ে মানুষ তো তুমি!”
–“আমি এমনই! আমি কোনো জানার বস্তু হয়ে নয়, স্ত্রী হয়ে আপনার বাড়িতে পদার্পণ করতে চাই। যদি সম্পর্কে ভালোবাসা এবং সম্মান-ই না থাকে তাহলে এই সম্পর্ক জুড়ে কী লাভ? এজন্য আগে-ভাগে সব মিটিয়ে ফেলা ভালো!”
সাইফ চাপা হাসলো। আর কিছু থাকুক বা না থাকুক, তার এই হবু বউটার কথার তেজ অনন্য। কেমন বাড়ীর বড়ো বউ হওয়ার ভাব আছে তার মধ্যে। সাইফ চাপা হেসে বললো,
–“কথার ঝংকার বলে দিচ্ছে, তুমি বড়ো বউ হওয়ার জন্যে পারফেক্ট।”
দিয়া এবার হেসে বললো,
–“প্রপোজ করার ক্ষমতা থাকলে বড়ো বউ হওয়াটা বড়ো ব্যাপার না। কারণ আমাদের মতো মেয়েদের প্রপোজ করাটাই সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার।”
–“তা বুঝলাম। কিন্তু স্বভাব অনুযায়ী তুমি কখনো ত্যাড়া কথা বলো না। আজ কী এমন হলো যে এতটা চটে আছো? এনি প্রব্লেম?”
দিয়া তাচ্ছিল্যের সুরে বললো,
–“এটা মধ্যবিত্তদের সমস্যা বুঝলেন। যখন পরিস্থিতির খপ্পরে পরে মানুষ চিনতে শিখলাম, তখন থেকেই এই স্বভাব আমার মধ্যে উদয় হয়েছে। তাদের ভালো-মানুষী রূপ আজকাল সহ্য হয় না!”
সাইফ অবশ্য এসব ঘাটলো না। বেশি প্রশ্ন করতে নিলে না জানি দিয়ার মনটাই বিষিয়ে যায়। এজন্য সাইফ প্রসঙ্গ বদলে বললো,
–“হাতের মেহেদী দিয়ে আমার নাম লিখেছো তো? না লিখলে এখনই লিখে ফেলো। মেহেদী আমার খুব পছন্দ। নিজের নাম দেখলে আরও ভালো লাগবে।”
পরেরদিন বিয়ের অনুষ্ঠান হলো কমিউনিটি সেন্টারে। দিয়ার বাবা মোটামুটি খরচ করার অনুমতি পেয়েছে। এছাড়া সাঈদ সাহেব আর কোনো অনুমতি দেয়নি। নাজমুল সাহেব নিজের সাধ্য অনুযায়ী মেয়ের জন্যে স্বর্ণের অলংকার এবং মেয়ে জামাইয়ের জন্যে দামী ঘড়ি উপহার দিয়েছে। কারণ সে আগে থেকেই অবগত স্বর্ণ ছেলেদের জন্যে হারাম। এই কথাটা সাইফ নিজেই তাকে জানিয়েছে। নাজমুল সাহেব চেয়েও বেশি কিছু করতে পারেনি। এই একমাত্র মেয়েকে নিয়ে তার কতশত স্বপ্ন। মেয়েকে সে পেয়েছে বিয়ের প্রায় নয় বছর পর। আল্লাহ্’র কাছে অনেক চাওয়ার পরপর-ই এই দম্পতি দিয়াকে পেয়েছে। তাও দিয়া শুরুর দিকে ভীষণ অসুস্থ থাকতো। দুই বছর হবার পর থেকেই ধীরে ধীরে আল্লাহ্ মুখ তুলে তাকায় তাদের দিকে। নাজমুল সাহেবের পাইকারি কাপড়ের ব্যবসা ছিলো। তাই আগে তাদের পরিবার ভালোই স্বচ্ছল ছিলো। যখন দিয়া এইচএসসি দেয় তখনই হয় বিপত্তি। আগুন ধরে তার পুরো ব্যবসা শেষ। সেই সময় তার পথে বসার মতো অবস্থাম তাও বাড়ির ভাড়া এবং দোকানের ভাড়া নিয়ে কোনোরকম দিন পার করছে। সেই থেকে নাজমুল সাহেব ঘরেই বসা। চাকরি করতে চেয়েছিলো, কিন্তু চাকরি করতে গিয়ে রোগ-ব্যাধি দেহে বাঁধে। এই বিপদের দিনগুলোতে কোনো আত্নীয়-স্বজন তাদের খোঁজ নেয়নি। সবসময় দূরে দূরে থাকতো টাকা দেওয়ার ভয়ে।
সারা অনুষ্ঠানে দিয়ার বোনেরা বেয়াইয়ের সাথে ভাব জমাতে চেয়েছিলো অনেকবার। কিন্তু সিদাত এবং তার কাজিনরা সেভাবে তাদের গুরত্ব দেয়নি। শুধুমাত্র ভদ্রতার খাতিরে হাসি-মুখে কথা বলেছিলো এই যা!
এর কারণ সারা পথে সাইফ তাদের ট্রেনিং দিয়ে এনেছে, যেন ওদের সাথে সেভাবে কেউ না মিশে। সাইফ গতকাল দিয়ার সাথে কথা বলে সে যা বোঝার বুঝে গিয়েছিলো। দিয়া মুখ ফসকে সিদাতের কথাও বলে ফেলেছিলো। কারণ এই মেয়েগুলো স্বার্থ বুঝে টোপ ফেলছে। এই টোপ কেউ একবার গিললে সে একাই ধ্বংস হবে না। সঙ্গে পুরো পরিবারকেও শেষ করতে পারবে।
সিদাত অবশ্য একজনের মোহেই আটকে আছে। সে সচরাচর অন্য মেয়ের সাথে এতটা মিশে না। এটা তার স্বভাবে নেই। কথা বললেও কথা বলার সীমা লঙ্ঘন করে না। সে নারী জাতিকে যথেষ্ট সম্মান করে চলে।
বিয়েতে এসে অজানা কারণে তরীর কথা বড্ড মনে পরছে। গত পনেরো দিন যাবৎ তরীকে সে দেখেনি। চিঠি দেয়নি। কাজের ফাঁকে বহুবার যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু বাবার অসন্তুষ্টির ভয়ে যায়নি। অথবা এই সময়টায় অনয়ের বাসায় গিয়ে অন্তত একটি রাত থাকাটাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিলো৷ সিদাত আনমনেই ভাবলো,
–“আচ্ছা, এই অনুভূতিটা কী শুধুমাত্র বন্ধুত্বের? নাকি এর মাঝেও অনুভূতির বিরাট রহস্য লুকিয়ে আছে?”
এমন সময় অনয় এলো। একপ্রকার ছুটতে ছুটতে। সিদাতের কাঁধে চাপড় মেরে বললো,
–“শালা। এতক্ষণ ধরে খুঁজতেছি, দেখাই পাই না। মানে কী এসবের?”
–“দেখা তো আগেও হয়েছে। হঠাৎ এখন উত্তেজিত হওয়ার কারণ কী?” ভ্রু কুচকে বললো সিদাত।
–“আরে ধুর। জরুরি কথা আছে যা সপ্তাহখানেক ধরে বলার চেষ্টা করছি। কিন্তু নানা কারণে সে-কথা ভুলে যাই। এখন বহু কষ্টে মনে রেখে তোকে বলতে আসছি!”
–“কী কথা?”
–“তরী মেয়েটা তোকে চিঠি দিতে মানা করেছে। তার তোর বন্ধুত্বের প্রস্তাবও আজীবনের মতো প্রত্যাখান করে দিয়েছে। তুই আর ওকে চিঠি দিস না। ওর বাবা-মা অলরেডি দেশে ফিরছে। কোনো ভাবে তাদের হাতে চিঠি পরলে তরী না চাইতেও ফেঁসে যাবে।”
সিদাত নীরবে শুনলো। কিছুক্ষণ অন্যমনস্কও থাকলো। পরে কী মনে করে বললো,
–“বউ করার প্রস্তাব দিলে মানবে তো?”
অনয় যেন আকাশ থেকে পরলো। চোখ জোড়াও কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছে না। সিদাতের মাথা কী গেলো নাকি? কী-সব বাজে বকছে? অনয় অস্ফুট স্বরে বললো,
–“তুই বিয়ে করবি? তাও ওকে?”
দিয়ার দুজন কাজিনবতাদের পাশ কেটে যাচ্ছিলো। ওমনি ওদের কথোপকথন শুনে দুজনেই চমকালো। আহত সুরে বললো,
–“সিদাত, তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে?”
সিদাত তাদের দেখে হাসি চওড়া করলো। বললো,
–“গার্লফ্রেন্ড নয় অবশ্য। বলতে পারেন মনের মানুষ আছে!”
ব্যথিত চোখে দুজন দুজনার দিকে চাওয়া-চাওয়ি করলো। অতঃপর অধরে কৃত্রিম হাসি ঝুলিয়ে কোনো রকমে পাস কাটিয়ে চলে গেলো। তাদের চেহারা দেখার মতো হয়েছিলো। অনয়ের মুখ-ভঙ্গি সবচেয়ে হাস্যকর।
–“তুই সিরিয়াস ভাই? আমার মনে হচ্ছে আমার পা জোড়া কাঁপছে। মাথা ঘুরিয়ে পরে যাবো ভাব। কী করে তুই এমন আতঙ্কে পা দিলি বাপ? কলিজা কাঁপলো না?”
সিদাত এবার স-শব্দে হেসে দিলো। বললো,
–“থাম অনয়। বেশি নাটক করিস না। আম জাস্ট কিডিং। সিরিয়াস নেওয়ার কিছু নেই।”
কিন্তু সিদাতের মনে হলো তার খাচায় বন্দি মনখানা খাচা ভেঙে মুক্তি পেয়েছে। তার স্বাধীন-চেতনা মন তার মুখের কথার তীব্র প্রতিবাদ জানালো।
©লাবিবা ওয়াহিদ
~[ক্রমশ]
বিঃদ্রঃ বইয়ের পান্ডুলিপি এখনো লেখা শেষ হয়নি। এজন্য চেয়েও রেগুলার গল্প দেওয়া হচ্ছে না। অত্যন্ত দুঃখিত পাঠকমহল। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুলভ নজরে দেখবেন। গঠনমূলক মন্তব্যও কিন্তু চাইছি❤️





