#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 34 (last)
writer : Mohona
.
নীলিমা মেরিনকে খাইয়ে দিলো। মেরিন কোনো রিয়্যাক্টই করলোনা। নীলিমা নানা ধরনের কথা বলল। এরপর চলে গেলো।
নীড় : মেরিন…
মেরিন : কথা দিয়ে কথা ভাঙতে মেরিন শিখেনি ন… মিস্টার চৌধুরী।
নীড় : ডাকোনা একটাবার নীড় বলে।
মেরিন কিছু না বলে শুয়ে পরলো। নীড় মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
মেরিন : আমি কোনো ছোটবাচ্চা নই।
নীড় : তোমার প্রমিসের মধ্যে এটাও মানে আমার বউ হয়ে থাকাও কিন্তু একটা।
মেরিন : গুড। কন্টিনিউ…
মেরিন ঘুমিয়ে পরলো।
নীড় মনে মনে : তোমার ভেতরে ১টা অন্য তুমি আছো। ভয় হচ্ছে তোমার ইনার কন্ডিশন নিয়ে। তোমার কন্ডিশন জানতে হলে তোমার কিছু টেস্ট করানো প্রয়োজন যেটা তুমি কোনোদিনও করাবেনা। হিপনোটাইজ করাতে হলেও তোমার সম্মতি লাগবে। কি যে করি…
.
৩দিনপর…
নীড় মেরিনের অনেক কেয়ার করছে। মেরিন তবুও কোনো রিয়্যাক্ট করছেনা ।
নীড় : এই গান শুনবে। গান শুনলে বেবি আর তোমার … ২জনেরই ভালো লাগবে।
মেরিন : …
নীড় : বলোনা শুনবে?
মেরিন : …
নীড়ের মন খারাপ হলো । তবুও হতাশ না হয়ে গিটার এনে গান গাইতে লাগলো।
মেরিনের ভালো লাগলেও প্রকাশ করলোনা।
গান শেষ করে নীড় মেরিনের জন্য ফল কেটে নিয়ে এলো। এরপর খাইয়েও দিলো। খাওয়ানোর পর মেরিন হাত ২টা ধরলো।
নীড় : তোমাকে ভীসন ভাবে মিস করছি। তুমি আমার সাথেই আছো মনে হচ্ছো তুমি আমার সাথে নেই। সত্যিই নিজেকে ব্যার্থ মনে হচ্ছে। হাজার চেষ্টা করলেও কিছু ভুল শুধরানো যায়না। বড্ড বেশি অপরাধী মনে হচ্ছে নিজেকে। নিজের জীবন দিলেও হয়তে প্রমান করতে পারবোনা যে আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি । তোমাকেই ভালোবাসি … আসছি। আম্মুর কাছে যেতে হবে।
মেরিন : কিছু তো বলিনি … তবুও কেন কষ্ট পাচ্ছেন ?
নীড় : কষ্ট পাচ্ছি… তুমি কিছু বলছোনা কেন … যখন শুনতে চাইতাম না তখন বলতে। আর এখন…
নীড় চলে গেলো।
.
নীড় কনিকাকে হিপনোটাইজ করেছে।
নীড় : তোমার নাম?
কনিকা : কনিকা।
নীড় : তোমা পুরো নাম…?
কনিকা : আমার পুরো নাম… আমার পুরো নাম … আমার পুরো নাম কনিকা কবির মাহমুদ খান।
নীড় : গুড। তোমার বাবার নাম?
কনিকা : তপন মাহমুদ।
নীড় : তোমার স্বামীর নাম কি?
কনিকা : ককবির ফয়সাল খান।
নীড় : তোমার মেয়ের নাম?
কনিকা : আমার মেয়ে… আমার মেয়ে…
নীড় : হ্যা তোমার মেয়ে। তোমার মেয়ের নাম কি? বলো।
কনিকা : আমার মেয়ের নাম মে… মে… বনপাখি…
নীড় : মে দিয়ে কি ? বলো বলো… তোমার মেয়ের নাম বলো।
কনিকা : মেরিন বন্যা খান…
কনিকা ঘেমে অস্থির… নীড় আর না ঘেটে কনিকাকে নরমাল করলো। এরপর ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখলো ।
কবির : কি অবস্থা?
নীড় : খুবই ভালো। কেবল সময়ের অপেক্ষা । ৩টা ইনজেকশন আছে। ৩দিন পরপর দিতে হবে। আশা করি সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে যাবে।
কবির : আলহামদুলিল্লাহ। আচ্ছা তোমার মুখ এমন লাগছে কেন?
নীড় : কিছুনা বাবা।
.
বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে। মেরিন বৃষ্টি দেখছে বসে বসে। কিছু ১টা ভাবছে। অসময়ের বৃষ্টি… বৃষ্টি দেখার সৌভাগ্য কখনো কোনোদিনও হয়নি । সাহস হয়নি। আর যখন ভয়টা ভাঙলো তখন দেখার সময়-সুযোগ হয়নি । বৃষ্টিতে প্রকৃতি স্থির হয়ে যায়।
নীড় পেছন থেকে ওর গায়ে চাদর দিয়ে দিলো ।
নীড় : বৃষ্টি দেখছো?
মেরিন : না বৃষ্টির শক্তি …
নীড় : শক্তির সাথে কিন্তু বৃষ্টির সজীবতাও আছে ।
মেরিন : হামমম হয়তো ।
নীড় : কিছু খেয়েছো?
মেরিন : হ্যা …
দিন কাটতে লাগলো। আর প্রতিনিয়ত নীড়ের মনে হচ্ছে যে ও হেরে যাচ্ছে ।
.
২০দিনপর…
মেরিনের কোনো হেলদোল নেই। নীড় অনুশোচনায় পুরে মরছে । রাতে মেরিন ঘুমিয়ে আছে।
নীড় : হ্যালো সোনামনি। ইটস মি… তোমার বাবা। আর হয়তো বেশিদিন তোমার সাথে এভাবে কথা বলতে পারবোনা । তোমার আম্মুর মান আমি ভাঙাতে পারিনি। কারন অপরাধটাও বড়। আমার ধারনার ১মাস শেষ। জানিনা তোমার আম্মু কি করবে? কি বলবে… বাবা তোমাকে আর তোমার আম্মুকে ভীষন ভালোবাসে…
মেরিন রোজই ঘুমের ভান ধরে থেকে নীড়ের কথা গুলো শুনতে পায়। আর মনে মনে হাসে ।
.
পরদিন…
নীড় : মেরিন।
মেরিন : বলুন।
নীড় : তোমার মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে তুমি আমাকে ক্ষমা করোনি। সত্যিই কি তাই?
মেরিন : হ্যা হয়তো।
নীড় : তুমি কি ১টা বার আমাদের বেবির কথা ভেবেছো? তুমি কি চাও আরো ১টা ঘৃণার মেরিন সৃষ্টি হোক? তুমি কি চাও ওর ভবিষ্যৎ টাও নষ্ট হয়ে যাক… ওও সবার ঘৃণা পাক?
মেরিন : আমার বাচ্চাটাকে কেউ ঘৃণা করবেনা। সবাই ভালোবাসবে।
নীড় : মেরিন প্লিজ … ক্ষমা করে দাও। প্লিজ…
মেরিন : চেয়েছিলাম। কিন্তু …
নীড় : তুমি কি আমার দিকটা ভেবে দেখবেনা? তখন তো আমি নিরাকেই বনপাখি ভেবে ভালোবেসেছিলাম। তখন কি আমার পক্ষে পসিবল ছিলো তোমাকে সহজে মেনে নেয়ার? তুমিই বলো। ১টা কি সুযোগ দেয়া যায়না?
মেরিন : যেই স্বামী তার স্ত্রীকে পতিতালয়ে বিক্রি করতে চায়… প্রস্টিটিউট বলে… তার কি সুযোগ চাওয়া চলে? বলুন তো…?
নীড় : ছোট থেকে তোমাকেই তো অন্ধের মতো ভালোবেসেছি। তাই যখন বনপাখির খোজ পেলাম তখন নিরাকেই উন্মাদের মতো ভালোবেসেছি। তুমি আমাকে ভালোবাসো। আর শাস্তিও আমাকেই দিচ্ছো। নিরাকে শাস্তিও দিচ্ছোনা। আবার লুকিয়েও রেখেছো যেন আমি ওর কিছু না করতে পারি… দাও কষ্ট। তবে তুমি যেমন আমার কাছে আঘাত পেয়ে আমার থেকে দূরে সরে গেলে… ঘৃণা শুরু করলে … আমি তেমন কখনোই করবোনা। যতোদিন বেচে থাকবো ততোদিন তোমাকে ভালোবেসেই যাবো।
মেরিন : গুড।
নীড় : তবে আমার তরফ থেকে তোমার জন্য ১টা উপহার আছে।
মেরিন : কি?
নীড় : নিচে চলো।
নীড় মেরিনের হাত ধরে নিচে নিয়ে গেলো।
মেরিন নিচে গিয়ে দেখে কবির-কনিকা দারিয়ে আছে। দাদুভাই আর জনও আছে।
মেরিন : আম্মুকে এখানে কেন এনেছেন?
নীড় : তোমার আম্মুই আসতে চেয়েছে।
মেরিন : মানে?
নীড় : মানের জবাব পেয়ে যাবে। যদি আম্মুর মুখোমুখি হয়ে আম্মুকে এই প্রশ্নটা করতে পারো।
মেরিন : আম্মুকে নিয়ে খেলা আমার পছন্দনা।
নীড় : আমি এবার কোনো খেলা খেলছিনা …
দাদুভাই : দিদিভাই… এখানে এসো।
মেরিন দাদুভাইয়ের কাছে গেলো।
দাদুভাই : কনামা… এটাই তোমার…
কনিকা : বনপাখি… আমার বনপাখি…
মেরিন অবাক হয়ে নীড়ের দিকে তাকালো। নীড় ১টা মিষ্টি হাসি দিয়ে মাথা হালকা নারিয়ে হ্যা বলল।
কনিকা : আমার বাচ্চাটা কতো বড় হয়ে দিয়েছে কবির… এখন সেও নাকি মা হতে চলেছে ।
বলেই কনিকা মেরিনের কপালে চুমু একে দিলো। মেরিনের চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো। মাকে জরিয়ে ধরে নিরবে চোখের পানি ফেলতে লাগলো।
কনিকা : কাদেনা বনপাখি… আম্মু এসে গিয়েছিনা.. আর কাদতে হবেনা । তুমি যে আমার সব। তোমার জন্যই তো জীবনের সাথে যুদ্ধ করে আজও বেচে আছি।
অনেক মেলোড্রামা হলো। সব সত্য সামনে এলো। দাদুভাইয়ের খানিকটা অনুশোচনা হলো। সে মনে করলো সবকিছুর জন্য নিজেকেই দায়ী মনে করলো। পরে সবাই মিলে দাদুভাইকে সামলে নিলো। নীড় কনিকাকে সবটাই বলেছে কবিরের দুর্বলতাটা। কনিকা ১জন ভালো মনের মানুষ হওয়াতে কবিরকে ক্ষমা করে দিয়েছে।
.
পরদিন…
কনিকা : কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমাকে?
মেরিন : এখনই দেখতে পারবে।
কনিকা কিছুটা সামনে এগিয়ে দেখে সেতু আর নিরা ১টা কাচের বদ্ধ জায়গায় বন্দী অবস্থায় আছে। আসলে ওরা প্রায় ১টা মাস ধরে এখানে বন্দী । ওদের রোজ জাস্ট বেচে থাকার জন্য একটু খাবার আর পানি দেয়া হয়েছে। বিষাক্ত গ্যাস দেয়া হয়েছে কাচের ভেতরে। এসিডও ফেলা হয়েছে ওদের ওপর। আবার কখনো গরম পানি। আবার কখনো হাত-পা ক্ষত বিক্ষত করা হয়েছে । ওদের শরীরে চামড়া গুলোর করুন অবস্থা । ওরা এখন প্রতি পলকে পলকে কেবল নিজেদের মৃত্যুই কামনা করছে।
কনিকা : সেতুর সাথে ও নিশ্চয়ই নিরা।
মেরিন : হামমম।
কনিকা : ওদেরকে এভাবে?
মেরিন : আম্মু তোমার সকল অপরাধীদের আমি শাস্তি দিয়েছি। শুধু এই সেতু বাদ। নিরা আমার অপরাধী । গত প্রায় ১টা মাস ধরে ওরা এখানে বন্দী । ওদের চুরান্ত শাস্তিটা তোমাকে নিজের চোখে দেখাবো বলেই ওদের এতোদিন বাচিয়ে রেখেছি…
কনিকা : বনপাখি… আমি তোমাকে এই শিক্ষা দিয়েছি ? আমি তো তোমাকে সবাইকে ভালোবাসতে শিখিয়েছিলাম। হ্যা আমি জানি… যে গত ১৫-১৬টা বছর ধরে তুমি অনেক কিছু সহ্য করেছো। কিন্তু মা… মানুষের জীবন নেয়া কি ঠিক ?
মেরিন : আজকে আমি যেখানে দারিয়ে আছি আম্মু … সেখানে দারিয়ে ঠিক-ভুল বলতে কিছুই আমি বুঝিনা। আমি যে আজও নিজেকে শেষ করে দেইনি তার ২টা কারন… এক তোমাকে সুস্থ করা। আর দুই … ওদেরকে শেষ করা … তুমি সুস্থ হয়েছো… যদি ওদের আমি শেষ করতে না পারি… তবে যে মরেও শান্তি পাবোনা আম্মু।
কনিকা : বনপাখিই।।
মেরিন : আম্মু… আমি কখনো তোমার অবাধ্য হইনি। কিছু চাইওনি। আজকে চাইছি… ওদের শেষ করতে অনুমতি দাও প্লিজ… কথা দিচ্ছি আর কখনো কোনো অন্যায় কাজ করবেনা মেরিন… অন্যকারো জীবন নিয়ে খেলবে না মেরিন … প্লিজ আম্মু … প্লিজ।
মেয়ের করুন মুখটাই বলে দিচ্ছে যে কতোটা কষ্টে ও বড় হয়েছে। কতো কি সহ্য করেছে।
কনিকা : বেশ অনুমতি দিবো। তবে আমারও ১টা কথা আছে। রাখবে।
মেরিন : হ্যা আম্মু। তুমি যা বলবে আমি তাই শুনবো। শুধু এই অনুমতিটা দাও…
কনিকা : বললাম তো দিবো। তবে কবির আর নীড়কে ক্ষমা করে দিতে হবে… কবিরকে বাবা বলে ডাকবে…
মেরিন : বেশ ডাকবো।
কনিকা : নীড়কে ক্ষমা…?
মেরিন : আম্মু নীড়কে বহু আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি… তোমারই তো মেয়ে আমি বলো… যাকে ভালোবাসি তাকে ক্ষমা না করে পারি কি করে? অনেক অনেক ধন্যবাদ আম্মু। পারমিশন দেয়ার জন্য ।
মেরিন ২জনকে গুলি করে মেরে ফেলল।
.
নীড়ের দেয়া ১মাস আজ শেষ হলো। নীড় বুঝতে পেরেছে যে ও হেরে গিয়েছে। মেরিনকে আটকে রাখার কোনো হাতিয়ারই ওর এখন নেই । কিন্তু মেরিনকে অন্যকারো হতে দেখা যে ওর পক্ষে সম্ভবনা। সবাই নিচে বসে আছে। অপেক্ষায় আছে কখন মেরিন নিচে নামবে? কি বলবে?
সকলের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মেরিন নিচে নেমে এলো। সবাই দারিয়ে গেলো।
মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : আমার হাজার হিংস্রতার মধ্যে আপনার প্রতি আমার হিংস্র ভালোবাসা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার অহংকার থাকবে। যে নামের সাথে আপনার নাম জরিয়ে আছে তার সাথে অন্যকারে নাম আর কখনো জরানো সম্ভব না। হৃদয়ে জায়গা দেয়াও সম্ভবনা। আর কারো বউ হয়ে বেচে থাকাও সম্ভব না। তাই টনি-তপু… কাউকেই আর বিয়ে করা সম্ভবনা। কিন্ত কিছু কিছু জিনিস আমাদের হাতে থাকেনা। আমরা চাইলেও সেগুলো নিয়ন্ত্রন করতে পারিনা। চাইলেও আমার থাকা সম্ভব না। তবে আমার শেষ বিদায় এখান থেকেই হবে। আর আমাদের সন্তান আপনার পরিচয়েই পরিচিত হবে। এ বাড়িতে আমি ফিরে আসবো। নতুন সদস্য কে নিয়ে… কিন্তু এখন আমায় যেতে হবে। প্লিজ যাওয়ার অনুমতি দিন নীড়…
আজ অনেকদিন পর ভালোবেসে মেরিন নীড় বলে ডাকলো। নীড়ের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো। মেরিন নিহাল-নীলিমার সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : তোমাদের জন্যই আমি মা-বাবার ভালোবাসা উপলব্ধি করেছি। তোমরা অসাধারন। তোমাদের মতো কেউ নেই। অনেক অন্যায় তোমাদের সাথেও করেছি… ক্ষমা করে দিও।
নীলিমা মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।
নীলিমা : থেকে যা না মায়ের কাছে।…
মেরিন : …
নিহাল-নীলিমা-নীড় কে কাদিয়ে মেরিন খান বাড়িতে চলে গেলো। খান সম্রাজ্ঞ মেরিন কবিরের নামে করে দিয়েছে।
.
৭মাসপর…
সবাই অপারেশন থিয়েটারের বাহিরে দারিয়ে আছে। অপেক্ষা করছে কখন খুশির সংবাদটা পাবে…
নীড়ের যেন দেরি সইছেই না। অবশেষে ডক্টর বেরিয়ে এলো।
ডক্টর : ছেলে হয়েছে…
সবাই তো আনন্দে আত্মহারা… তবে নীড়ের দৃষ্টি ডক্টরের মলিন মুখে।
নীড় : ডক্টর … আমার মেরিন কেমন আছে?
ডক্টর : …
নীড় : বলছেননা কেন?
ডক্টর : ওর হাতে বেশি সময় নেই…
কথাটা শুনে সবার পায়ের নিচেরই মাটি সরে গেলো।
নীড় : মমমানে?
ডক্টর : মেরিনের হার্ট ব্লক … ওর প্রেগনেন্সিতেও অনেক ইস্যু ছিলো। ও জানতো যে বেবি জন্মানোর প্রায় ৭২ঘন্টার মধ্যেই ও মারা যাবে। প্রায় শুরুর দিকেই ওকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু যখন ওকে এটা জানাই তখন ও হাহা করে হেসে ওঠে। আর আমাকে হুমকি দেয় যেন বেবি পৃথিবীতে আসার আগ পর্যন্ত আমি কাউকে কিছু না বলি। যখন না করি তখন ও বলে ও নিজেকে শেষ করে দিবে। সেই সাথে আমার মেয়েকেও আটক করে । তাই আই ওয়াস হেল্পলেস…
নীড় বুঝতে পারলো যে কেন সেদিন মেরিন ওদের বাসায় ১মাসের জন্য গিয়েছিলো? আর কেনই বা চলে যাওয়ার সময় কথাগুলো বলেছিলো।
.
কয়েকঘন্টাপর…
নীড় মেরিনের সাথে দেখা করতে গেলো।
মেরিন : রেগে আছেন বুঝি?
নীড় : না রেগে থাকবো কেন? আমি তো মহাখুশি। তাকধিনাধিন নাচতে ইচ্ছা করছে।
মেরিন মুচকি হাসি দিলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
নীড় : ঘৃণা করি…
মেরিন : আমার মৃতদেহ কিন্তু চৌধুরী বাড়িতে নিয়ে যাবেন। ওখান থেকেই শেষ বিদায় দিবেন।
নীড় : …
মেরিন : নীড়… মিস করবেন আমাকে?
নীড় : না। মিস করার কোনো কারন নেই।
মেরিন : গুড।
নীড় : কি ভেবেছো? জিতে গিয়েছো? নো নেভার… । বলেছিলামনা কখনো হারোনি কারন তোমার সামনে নীড় আসেনি।। তাই হারোনি। আজকে হারবে । আর তোমাকে মিস তো তখন করবো যখন তুমি আমাকে ছেরে যাবে… তুমি কোথাও যাচ্ছোনা। আমি আমার প্রাইভেট জেট দিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ১ডজন বেস্ট ডক্টর আনিয়েছি… তারা যদি তোমাকে সুস্থ করতে না পারে তবে জীবন নিয়ে আর দেশে ফিরতে পারবেনা।
মেরিন : কি বলছেন কি?
নীড় : যেটা শুনলে… তোমারই তো বর আমি… আফটার অল সাইকো বউয়ের সাইকো জামাই। সাইকো কাপল আমরা … 😎।
মেরিন : …
একটুপর মেরিনকে আবার ওটি তে নেয়া হলো….
.
৩দিনপর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। আউট অফ ডেঞ্জার ।
নীড় : হারিয়ে দিলাম তো?
মেরিন মুচকি হাসি দিলো।
নীড় : ভালোবাসি.. ভীষন ভালোবাসি। আই জাস্ট লাভ ইউ ।
মেরিন : আই লাভ ইউ টু …
নীড় : তুমি ঘৃণার নও । ভালোবাসার মেরিন। নীড়ের মেরিন।
ওদের ছেলের নাম রাখা হলো নির্বন ।
ফাইনালি ঘৃণা শেষ হলো।
.
💖💖💖সমাপ্ত💖💖💖