#শেষ_বিকেলের_প্রণয়
#আলো_ইসলাম
১৫
– তুমি কি সত্যি চাও ছায়ার সাথে আসিফের বিয়েটা হোক? ছুটির কথায় তাশরিফ ছোট ছোট চোখ করে তাকায়।
– তুমি কি এইসব কথা বলার জন্যই এখানে এসেছো? তাশরিফ কথাটা বলে বারান্দার দিকে যায়।
– কেনো তুমি কি অন্য কিছু আশা করেছিলে? ছুটি ভ্রু কুচকে বলে। তাশরিফ ছুটির কথার জবাব না দিয়ে বলে এক কাপ কফি খাওয়াবে, হঠাৎই মাথা ধরেছে। ছুটি অবাক হয়ে যায় তাশরিফের কথায়। তার থেকে কফি চেয়ে নিচ্ছে নিজ থেকে এ যেনো অবিশ্বাস্য এখনকার সময় অনুযায়ী।
– ছুটি কফি করার জন্য যেতে গিয়েও থেমে যায়। তাশরিফ উল্টো দিক ঘুরে দাঁড়িয়ে।
– তুমি কি কোনো ভাবে কথাটা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছো? ছুটির কথায় ঘুরে দাঁড়ায় তাশরিফ। ছুটির চোখে চোখ রেখে বলে, বলো কি জানতে চাও?
– ছায়ার আর আসিফের বিয়ের ব্যাপারে! শটকার্ট জবাব দেয় ছুটি।
– তোমার কি মনে হয় এমনি এমনি তোমার ওইখানে গিয়েছিলাম আমি। আমার কি আর কোনো কাজ নেই?
– আমার তো তাই-ই মনে হয়! গা ছাড়া উত্তর ছুটির।
* মানে? কৌতুহলী হয়ে বলে তাশরিফ।
– আমার মনে হচ্ছে তুমি অনিচ্ছা সত্ত্বেও গিয়েছো সেখানে! কিন্তু কেনো? বিস্ময় নিয়ে তাকায় ছুটি।
– আর সব ধারণার মতো এটাও তোমার ভ্রান্ত ধারণা। আমাকে দিয়ে কেউ কখনো জোর করে কিছু করাতে পারেনা,যদি আমি সেটা না চাই। আসিফ ছায়াকে পছন্দ করে, চেয়েছিলো বিয়ে করতে তাই ওকে নিয়ে যায়। দ্যাটস অল! তাশরিফ ছুটির দিক হতে চোখ নামিয়ে কথাটা বলে।
– তাহলে বলছো ছায়ার সাথে আসিফের বিয়েটা দেওয়া যায়? তাশরিফ আতংকিত চোখে তাকায় ছুটির দিকে। তা দেখে ছুটি মুচকি হাসে। কারণ ও আগেই সন্দেহ করেছিলো সব।
– কফি নিয়ে আসছি তোমার জন্য কথাটা বলে ছুটি চলে যেতে পা বাড়ায় তখন তাশরিফ বলে ছায়া তখন কাকে একটা ভালোবাসার কথা বলছিলো, তুমি জানো কে সে? ছুটির পা থেমে যায়।
– তোমার এইসবেও খেয়াল আছে নাকি? ব্যঙ্গ করে বলে ছুটি।
– সব কথা এত জটিল করে নাও কেনো তুমি? সোজা কথার সোজা উত্তর দিতে পারো না? ছুটি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে আবিরকে ভালোবাসে।
হোয়াট? উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠে তাশরিফ।
– কোনো সমস্যা তাতে? ভ্রু উঁচিয়ে বলে ছুটি।
– আবির জানে?
– ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে! ছুটির কথাটা শেষ হতেই তাশরিফের মুখে হাসি দেখা যায়। ছুটি তো চোখ মুখ কুচকে থাকে।
— আবির প্রেম করছে আর আমি জানিনা। ইডিয়টটা কখনো বলেওনি আমাকে। তাশরিফের মধ্যে বেশ আগ্রহ উচ্ছ্বাস দেখা যায়।
– কেনো বলতে হবে তোমাকে? তাছাড়া কে কি করলো না করলো তাতে তো তোমার কিছু যায়-আসে না। ছুটির কথায় তাশরিফ রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে বলে আমার ভাই প্রেম করছে আর আমি জানবো না।
– জানলে মনে হচ্ছে উদ্ধার করে দিতো, বিড়বিড় করে বলে ছুটি।
– যা বলার স্পষ্ট করে বলো, তাশরিফের গম্ভীর কণ্ঠে বলা কথায় দাঁত বের করে হেসে বলে কিছু না কফি নিয়ে আসি এবার।
– তাশরিফ ছুটির দিকে কিছুক্ষণ বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থেকে বলে আসতে পারো। ছুটি একটা ভেংচি কেটে বেরিয়ে যায়।
— কি উকিল সাহেব, মনে হচ্ছে খুবই চিন্তিত কিছু নিয়ে? রোহান ড্রয়িংরুমে একা একা বসে কিছু একটা ভাবতে ছিলো। তখনই ছুটি গিয়ে বলে।
— আর মাত্র ৩ টা দিন, এরপর কোর্ট। এখনো কোনো কিছুই করতে পারলাম না ব্রোর জন্য! ব্রো তার কথা থেকেও সরছে না৷ কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। হতাশ হয়ে বলে রোহান।
— ছুটিরও মন খারাপ হয়ে যায়।
— আচ্ছা সত্যি কি উনি দোষী? নাহলে এমন জেদ ধরে থাকবে কেনো? ছুটির কথায় রোহান অবাক চোখে তাকিয়ে বলে তুমিও তাই বিশ্বাস করো?
– করিনা! আর করিনা বলেই সত্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কিন্তু উনি যেভাবে একগুঁয়ে আচরণ করছেন তাতে আমার বিশ্বাসের ভীত নড়ে যাচ্ছে। তখনই একটা আননন নাম্বার থেকে ফোন আসে ছুটির ফোনে। ফোন স্ক্রিনে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে নাম্বারটা চেনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ততখনে কেটে যায় ফোন। আবারও পুনরায় বাজতে লাগলে ছুটি কৌতুহল নিয়ে ফোন রিসিভ করে।
রোহান আগ্রহপূর্ণ দৃষ্টি রেখেছে জানতে। ছুটি ফোন কানে নিয়ে রোহানের দিকে তাকায়৷ ছুটির চেহারার পরিবর্তন দেখা যায় ফোন টা আসায়।
– ওকে আমি আপনাকে পরে জানাবো বলে ফোন কেটে দেয় ছুটি।
– কে ফোন করেছে? পার্সোনাল কিছু? রোহানের কথায় ছুটি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে আসিফ আমার সাথে দেখা করতে চাই। আমাকে নাকি কিছু দেখানোর আছে তাশরিফ ভাইয়ার বিষয়ে। রোহানের চোখ চকচক করে উঠে তাশরিফের কথা শুনে।
– কখন যেতে বলেছে? আমিও যাবো তোমার সাথে। উত্তেজিত হয়ে বলে রোহান।
– আমাকে একা যেতে বলেছে৷ আর টাইম এখনো করিনি। আমার সুবিধা মতো যেতে বলেছে। কিন্তু কি দেখাবেন উনি তাশরিফ ভাইয়ার?
– না যাওয়া পর্যন্ত তো বোঝা যাবে না তাই না৷ তুমি আর দেরি করো না৷ কালই একটা টাইম দিয়ে দাও সুবিধা মতো। রোহানের কথায় ছুটি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে।
— আচ্ছা কফি খাবেন, আমি তাশরিফ ভাইয়ার জন্য কফি করতে যাচ্ছি। ছুটির কথায় রোহান বলে তোমার হাতের কফি৷ আমার পরম সৌভাগ্য হবে তাহলে তুমি নিজ হাতে কফি করে এনে দিলে, প্লিজ দিও। রোহানের কথায় ছুটি মুচকি হেসে চলে যায়। রোহানও হাসে ছুটির দিকে তাকিয়ে।
— পরের দিন সকালে… তাশরিফ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে রেডি হচ্ছে বাইরে যাবে৷ সকাল ৯টা বাজে। হাতে ঘড়ি পড়তে থাকে তাশরিফ তখনই মমতা খান আসেন তাশরিফ ঘরে।
আসবো? মায়ের কন্ঠস্বর পেয়ে তাশরিফ মুচকি হেসে বলে আম্মা তুমি! ভেতরে এসো।
— কোথাও কি যাচ্ছিস? কথার মধ্যে মলিনতা প্রকাশ পাই মমতা খানের।
– তাশরিফ কিছুটা বিচলিত চোখে তাকিয়ে থেকে মমতা খানকে ধরে বিছানায় বসায়।
– তোমার কি শরীর খারাপ আম্মা? কি হয়েছে তোমার? তাশরিফের কথায় হুহু করে কেঁদে দেন তিনি। তাশরিফের বুকে পাথর জমে আসে যেনো সে কান্নায়। নিশ্বাস ভারী হয়ে আসে তার।
– কি হয়েছে আম্মা? তুমি কান্না করছো কেনো? মলিন কন্ঠে জিজ্ঞেস করে তাশরিফ।
– আর মাত্র দুদিন। এরপর তুই হারিয়ে যাবি আমার থেকে। একবারও আমার কথাটা ভাবলি না তাই না? তুই ছাড়া যে তোর আম্মার আর কেউ থাকবে না এটা একবারও ভেবে দেখলি না। সেই জেদ ধরে বসে থাকলি তুই। কেনো তা্শরিফ? তোর কি কোনো দায়িত্বই নেই মায়ের উপর? কেনো এত কষ্ট দিচ্ছিস বাবা? এর থেকে নিজ হাতে মে’রে ফেলতি আমায় তবুও শান্তি পেতাম আমি। তাশরিফের হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কথা বলার শক্তিটুকু করে উঠতে পারছে না সে। মায়ের চোখের পানি গাল বেয়ে তার ডান হাতে গিয়ে পড়ছে।
— জানিস তাশরিফ, তোর বাবা সব সময় একটা কথা বলতেন আমায়। শুনো মমতা, কখনো যদি আমি হারিয়ে যায় তাহলে মন খারাপ করবে না, কষ্টও পাবে না। আমার থেকেও দামি জিনিস তোমাকে উপহার দিয়ে যাচ্ছি আমি আমাদের সন্তানকে৷ আমি না থাকলেও সে তোমাকে আগলে রাখবে দেখো। আমি উনার কথার প্রতিবাদ করতাম না৷ কারণ সত্যি তুই ছিলিস আমার জন্য। আমার সবচেয়ে সুখের স্থান৷ তোর বাবা চলে যাওয়াতে আমি একটুও ভেঙে পড়িনি। তার কথাটা আমাকে শক্তি যুগিয়েছে, আমার ভরসার জায়গা দেখিয়েছে৷ আর আজ! আজ সে ভরসাটাও আমার জন্য বিদ্যমান থাকছে না৷ আমি নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি একবারে৷ আমি কিভাবে বেঁচে থাকবো বাবা? কি হবে আমার বেঁচে থেকে বলতে পারিস? তাশরিফের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। চোখের পানি মুছে মাথা নিচু করে রাখে মায়ের পায়ের কাছে বসে। মমতা খানও অঝোরে কান্না করছেন আজ৷ দুদিন পর যে তার বুকের মানিক আর থাকবে না৷ কিছু করতে পারবে না তার জন্য। চিরদিনের মতো হারিয়ে ফেলবে তাকে৷ আর এটাই মানতে পারছেন না তিনি। যতবার ভাবছেন ততবারই হাহাকার ডেকে যাচ্ছে ভেতরে।
— তাশরিফ নিজেকে সামলে নিয়ে, মায়ের চোখে চোখ রাখে। হাঁটুতে ভড় দিয়ে বসে, মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ দেন৷ মমতা খান ছেলের ভালোবাসার আবেশে আবারও শব্দ করে কেঁদে উঠেন।
– শান্ত হও আম্মা! এইভাবে ভেঙে পড়লে হবে? তুমি তো স্ট্রং মাদার আমার। সবাইকে একদিন না একদিন চলে যেতে হয়। হয় আগে নয় পড়ে। ধরে নাও না তোমার ছেলেরও সময়টা আগে নির্ধারণ করা হয়েছে। আমি অনেক অন্যায় করেছি তোমার প্রতি জানি, তোমাকে ভালো রাখতে পারিনি। তোমার কথা শুনিনি কিন্তু বিশ্বাস করো আম্মা আমি এমন কিছু হোক কখনোই চায়নি৷ কিন্তু ভাগ্য! ভাগ্য আমার সাথে অনেক নিষ্ঠুর খেলা খেলেছে আম্মা৷ ভালো থাকতে দেয়নি আমাকে,তোমাকে,ইলহামকে সবাইকে। আমরা ভাগ্যের কাছে হেরে গেছি।
— তুই নির্দোষ আমি জানি তাশরিফ। মায়ের মন কখনো মিথ্যা বলে না। তাহলে কেনো সত্যিটা বলছিস না আমায়? কেনো সবটা নিজের উপর নিচ্ছিস?
যদি এই কথার উত্তর তোমায় আজ দিতে পারতাম তাহলে অনেক আগেই কারণ গুলো বলে দিতাম তোমায় আম্মা। এমনকি সবাই জানতে পারতো তাশরিফের সত্যি। দুনিয়ার সবাই আমাকে যে ঘৃণার চোখে দেখে সে দেখার বদল ঘটতো। কিন্তু আমি এর কোনো কিছুই চাইনা৷ কিছু করতে পারবোও না। তাই যা হচ্ছে হতে দাও, মেনে নাও। আবির,ছুটি, ছায়া এরা আছে তোমাকে দেখার জন্য। আমার বিশ্বাস আমি না থাকলেও এরা তোমাকে সামলে রাখবে।
— মমতা খান কি বলবে আর৷ তাশরিফ এখনো তার কথায় অনড়। অনেক আশা নিয়ে এসেছিলেন তিনি ততটাই নিরাশ হয়ে ফিরছেন।
– আল্লাহর কাছে দোয়া করিস বাবা,তোর মৃ’ত্যুর আগে আমার ম/রার খবরটা যেনো তোর কানে যায় কথাটা বলে মমতা খান কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে যায়। তাশরিফ ওইখানেই বসে পড়েন। চোখ বারবার ঝাপসা হয়ে আসছে তার পানিতে৷ মায়ের বলা শেষ কথাটা বারবার কানে বাজছে।
–বিকালের দিকে ছুটি রেডি হয়ে বেরিয়ে যায় আসিফের সাথে দেখা করার জন্য। রোহান ছাড়া আর কেউ জানে না। ছুটি সকালে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু আসিফের কাজ থাকায় বিকেলে আসতে বলে।
— রোহান চেয়েছিলো ছুটিকে পৌছে দেবে ক্যাফেতে৷ কারণ তারা সেখানেই মিট করবে দুজন। কিন্তু ছুটি বারণ করে। সে একাই যাবে জানায়।
– আসিফ আগে থেকে অপেক্ষা করে ছুটির জন্য। পুরো ক্যাফে বুক করে নিয়েছে আসিফ।
*-কিছুক্ষণ বাদে ছুটি উপস্থিত হয়। ছুটিকে দেখে আসিফ উঠে দাঁড়ায় হাসি মুখে।
— ছুটি পুরো ক্যাফেতে চোখ বুলিয়ে নেয় একবার, এরপর সন্দিহান চোখে আসিফের দিকে তাকালে আসিফ মৃদু হেসে বলে ভয় নেই ছুটি, তুমি আর আমি ছাড়া কেউ আসবে না এখানে৷ পুরো ক্যাফেটা আমি বুক করে নিয়েছি একদিনের জন্য। ছুটি ভ্রু কুচকে তাকায়।
– দাঁড়িয়ে কেনো বসো! আসিফ কথাটা বলে বসে সাথে ছুটিও সামনের চেয়ারে বসে।
— কি খাবে বলো? আসিফের কথায় ছুটি বিরক্ত হয়ে বলে আমি এখানে কিছু খেতে বা আড্ডা দিতে আসিনি। কেনো ডেকেছেন তাই বলুন, আমার হাতে বেশি সময় নেই।
– আসিফ আবারও হাসে। এরপর একজনকে ডেকে বলে দুইটা কোল্ড কফি দিতে।
– ওকে তাহলে শুরু করা যাক….
— বিকেলের দিকে তাশরিফ হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি ফিরে। বাড়ির মধ্যে ঢুকেই ছুটিকে ডাকে সে। তাশরিফের ডাকে রোহান,আবির বেরিয়ে আসে। মমতা খান বাসায় নেই।
– কি হয়েছে ব্রো? রোহানের কথায় তাশরিফ ব্যস্ত হয়ে বলে ছুটি কোথায় রোহান? রোহান ঘাবড়ে যায় তাশরিফের কথায়। তাহলে কি সবটা জেনে গেছে তাশরিফ।
– ছুটিকে কেনো ডাকছিস তুই? ওকে তো দেখলাম বিকেলে কোথায় একটা যেতে আবির বলে।
– আমার ওর সাথে কথা আছে অনেক ইমপোর্টেন্ট। ইনফ্যাক্ট তোদের সবার সাথে আমার কথা আছে। কিন্তু ছুটি না থাকলে তো হবে না৷ ওকে আমার বেশি দরকার এই মুহুর্তে। অনেক দেরি হয়ে গেছে আর নয়।
– তাশরিফের কথা শুনে রোহান রিলাক্স হয়। শান্তির নিশ্বাস ছেড়ে ভ্রু কুচকে বলে কিসের দেরি হয়ে গেছে ব্রো?
চলবে…
❌কপি করা নিষেধ ❌আগামী পর্বে ধামাকা হবে। ভুলক্রুটি মাফ করবেন।