#হৃদহরিনী
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ২০
আমাকে ঘুমোতে দে ডা’ইনি। তা না হলে সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারবো না পরে আব্বু রাগ করবে৷ তুই নিজেও ঘুমাচ্ছিস না আর না আমাকে ঘুমোতে দিচ্ছিস। তুই তো ঠিকই সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারবি৷
হায়াতি অর্ণকে বললো, রাগ করলে আমার কি! তুই আমাকে ভয় দেখালি কেন? এখন তোর রাতে ঘুম নেই। তার থেকে চল ছাদে গিয়ে দুজনে আড্ডা দেই৷ আজকের আকাশটা অনেক সুন্দর৷
‘ তারপর আমাকে ছা’দ থেকে নিচে ফেলে দে৷ ভালোই প্ল্যান করেছিস। তোর ভিতর মাঝে মাঝে ডা’ইনি ভর করে। তোকে আমি বিশ্বাস করিনা৷ নিশ্চই এখন তোর ভিতর ডা’ইনি ভর করেছে তাই আমাকে ছাদে নিয়ে যেতে চাইছিস৷
‘ দিবো এক থা’প্প’ড়। তুই ছাদে আসবি কিনা বল
‘ ছাদে আসতে পারি তবে একটা শর্ত আছে
‘ কি শর্ত?
‘ আমাকে সি’গা’রে’ট খেতে দিতে হবে৷ তখন তোর জন্য সি’গা’রে’ট খেতে পারিনি
‘ আচ্ছা দিবো
হায়াতির কথায় অর্ণ অবাক হয়ে গেলো। অর্ণ বুঝতে পারছেনা হঠাৎ করে হায়াতি এতটা পরিবর্তন হয়ে গেলো কি করে। তখন সি’গা’রে’ট খাওয়ার জন্য কত কিছু বললো আর এখন রাজি হয়ে গেলো। সত্যিই কি ওর ভিতর কোনো ডা’ইনি ভর করলো নাকি। অর্ণ হায়াতিকে বললো, আমার তো তোকে সন্দেহ হচ্ছে৷ প্ল্যান করে আমাকে ছাদে নিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার ধান্ধা তাইনা।
‘ সামনে থাকলে এখনই থা’প্প’ড় দিতাম। তাড়াতাড়ি আয় ছাদে। আমি যাচ্ছি।
অর্ণ ছাদে গিয়ে দেখলো হায়াতি কার সাথে যেনো কথা বলছে। এত রাতে কার সাথে কথা বলছে এটা ভেবেই অর্ণর মন খারাপ হয়ে গেলো। অর্ণ ভাবলো, ও ওর বিএফের সাথে কথা বলছে তার জন্য আমাকে ছাদে ডেকে আনলো। হায়াতি অর্ণকে দেখে কল কেঁটে দিলো৷ অর্ণ বললো, কল কাঁটার কোনো প্রযোজন নেই। ওই আদ্রিবের সাথে কথা বল আমি বিরক্ত করবো না৷ আর তাতেও সমস্যা হলে আমি চলে যাচ্ছি।
হায়াতি কিছু না বলেই অর্ণকে থা’প্প’ড় মা’রলো৷ অর্ণ গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভাবলো, এত রাতে কি ওকে থা’প্প’ড় দেওয়ার জন্যই ছাদে নিয়ে আসলো নাকি।
হায়াতি বললো, কোনো কিছু না জেনে আগেই যে কিছু একটা বলে দিসনা এটা খা’রাপ৷ আমি ইরার সাথে কথা বলতে ছিলাম।
‘ তাই বলে থা’প্প’ড় দিবি! ইরার সাথে কথা বলতে ছিলি সেটা বললেই তো হত
‘ তুই আগেই এসে উল্টা- পাল্টা বললি কেন?
‘ ঠিকই তো বলেছি৷ ওই ছেলে তোকে বিরক্ত করে তুই আমাকে বললি না কেন
‘ আরে রাতে কল দিছিলো আমি কেঁটে দিছি অপরিচিত নাম্বার থেকে৷ পরে ভার্সিটিতে বলে এটা ও। তার আগে তো জানতাম না। তারপর যা বলার আমিই বলে দিয়েছি।
‘ কল দিবে কেন? তোর নাম্বার ও কিভাবে পেলো?
‘ আমি জানিনা৷ হয়তো পেয়েছে কোনভাবে৷ তা কোনো ছেলে আমাকে কল দিলে তোর সমস্যা কি?
‘ আমার কোনো সমস্যা না। যা ওই আদ্রিবের সাথে কথা বল৷ আমি সি’গা’রে’ট খাবো
হায়াতির কথা হলে অর্ণর মন খারাপ হয়ে গেলো। অর্ণ চুপচাপ সি’গা’রেট খেতে লাগলো৷ হায়াতি অর্ণর কাছে গিয়ে বললো, আজকের আকাশটা অনেক সুন্দর তাইনা
অর্ণ কোনো কথা বলছেনা৷ হায়াতি অর্ণর হাতে মোবাইলটা দিয়ে বললো, দেখ আমি কার কার সাথে কথা বলি। কোনো ছেলের সাথে কথা বলি কিনা সেটাও দেখে নে৷
‘ আমার দেখার দরকার নেই। আমি কে যে দেখবো। তোর বিএফকে নিয়ে দেখা
‘ আবার
অর্ণ গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বিএফের কথা বললেই তো হায়াতি থা”প্প’ড় মা’রে। তাই অর্ণ ভেবেছিলো এবারও থা’প্প’ড় দিবে। হায়াতি বললো, হাত সরা
‘ না,তাইলেই তুই থা’প্প’ড় দিবি
‘ সরাতে বলছি না
অর্ণ ওর হাত সরানোর সাথে সাথেই হায়াতি ওর গালে কিস করে দিলো৷ অর্ণ অবাক হয়ে হায়াতির দিকে তাকিয়ে আছে৷ অর্ণর হাত থেকে সি’গা’রে’টটাও পরে গেলো। অর্ণ বুঝতে চেষ্টা করছে এটা কি হলো৷
হায়াতি অর্ণর এরকম রিয়্যাকশন দেখে হাসতে লাগলো। হায়াতি এবার অর্ণর অন্য গালে কিস করলো। অর্ণকে বললো, কি হলো কিছু বলছিস না কেন?
‘ আমাকে একটা চিমটি দে তো। মনে হচ্ছে যেনো আমি কোনো স্বপ্ন দেখছি।
‘ বাস্তবেই আছিস। এখন মোবাইলে দেখ আমি কার সাথে কথা বলি। তুই বলছিলি না আমার বিএফকে দেখাতে তাকেই দেখাচ্ছি। আমার বিএফ একটা হা’দা’রাম। আমি ওকে এতটা ভালোবাসি কিন্তু ও বুঝেনা৷ উল্টো আমি জ্বালানোর জন্য অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলে৷ ফা’জিলটার আমাকে ভালোবাসি বলার সাহস নেই৷ তাই আমি বলে দিচ্ছি, ভালোবাসি!
অর্ণর মনে হচ্ছে ও কোনো ঘোরের ভিতর আছে৷ অর্ণ ওর নিজের মা’থায় আঘাত করে দেখলো এটা স্বপ্ন না বাস্তব। হায়াতি বললো, এখনও হা’দা’রামটা আমাকে ভালোবাসি বলছেনা৷ হায়াতি অর্ণর গালে থা’প্প’ড় মে’রে বললো, ভালোবাসি বলছিস না কেন?
‘ ভালোবাসি
‘ আর যদি কখনও অর্ণ মেয়েদের দিকে তাকিয়েছিস তাহলে তোর খবর আছে। এখন চুপচাপ গিয়ে ঘুমিয়ে থাকবি৷ সকালে আমি ঘুম থেকে ডেকে দিবো৷
অর্ণ ওর রুমে এসে শুয়ে পরলো৷ অর্ণর এখনও বিশ্বাস হচ্ছেনা এটা বাস্তবে হচ্ছে। হায়াতিকে ভালোবাসার কথা কখনও ভয়ে বলতে পারলোনা৷ তার জন্য তো মেয়েদের সাথে কথা বলতো যাতে হায়াতি রিয়্যাক্ট করতো। এরকম থা’প্প’ড়ের বিনিময়ে যদি কিস পাই তাইলে তো ভালোই৷
****
সকালে অর্ণের কারও ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো৷ অর্ণ ঘুমের ঘোরেই বললো, এত সকালে কানের কাছে এসে ডাকাডাকি করছিস কেন? ঘুমোতে দে ডা’ইনি
হায়াতি অর্ণর মুখে পানি ছিটিয়ে দিলো৷ অর্ণ ঘুম থেকে উঠে হায়াতিকে বললো, রাতে কি এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছি।
‘ কি স্বপ্ন দেখেছিস?
‘ দেখেছি তুই আমাকে ভালোবাসি বলেছিস তারপর আমার গালে কিস করেছিস
অর্ণ হায়াতিকে সাথে সাথেই থা’প্প’ড় দিলো৷ অর্ণকে বললো, ফাজিল ছেলে ওইটা স্বপ্ন ছিলোনা৷ রাতের কথাই ভুলে গেলি৷ আমি নিশ্চিত তুই বিয়ের পরও আমাকে ভুলে যাবি৷
‘ বাস্তব ছিলো৷ তারমানে তুই আমাকে ভালোবাসিস ডা’ইনি। আমি তো ঘোরের ভিতর ছিলাম। যাইহোক এখন থা’প্প’ড় দিয়েছিস তার পরিবর্তে কিস দে এখন
‘ আবার দিবো কিন্তু থা’প্প’ড়। তোর নাকি মনে ছিলোনা কিছু
‘ সবই মনে আছে। ফান করলাম আর কি৷ গতকালকের রাতটা কখনও ভুলবো না৷
‘ হইছে, এখন তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আয়
*****
অর্ণ ওর বাইক স্টার্ট করবে তখনই হায়াতি পিছনে বসলো, অর্ণ বললো, তোর স্কুটি থাকতে বাইকে বসছিস কেন?
‘ বিএফ থাকতে স্কুটি নিবো কেন! এখন থেকে তোর বাইকে যাবো।
‘ তাইলে তেলের টাকা অর্ধেক দিতে হবে
‘ তুই আমার বয়ফ্রেন্ড। এখন থেকে আমার সব খরচ তোর। আবার টাকা চাস। থা’প্প’ড় দিবো কিন্তু। এখন থেকে আমাকে তুমি করে বলবি। তুই বললে তোর খবর আছে
‘ এতদিনের অভ্যাস হঠাৎ করে তুমি কি করে বলি। তারপরও চেষ্টা করবো
‘ এখন যাও
হৃদিতা,আরিয়া, নির্ঝর,নুশান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ওরা ভাবছে সকাল থেকে অর্ণ আর হায়াতি কেমন অদ্ভুত আচরন করছে৷ আগে তো শুধু ঝাগড়া করতো দুজনে৷ হঠাৎ এরকম পরিবর্তন কি করে হলো
ভার্সিটিতে আসার পর হায়াতি বললো, রাফসান কি বলবে আমাকে?
‘ সেটা ওর কাছেই জিজ্ঞেস করিস
হঠাৎ তাসফিয়া এসে অর্ণকে বললো, ভাইয়া সরি আমি। আপনাকে ওইভাবে বলা ঠিক হয় নায়। আচ্ছা ভাইয়া আসি ক্লাস আছে।
হায়াতি অর্ণকে বললো, কি হচ্ছে এসব বলবি আমাকে
চলবে—-