একটা বসন্ত বিকেলে পর্ব ৪

0
772

#একটা_বসন্ত_বিকেলে
#অরনিশা_সাথী

|৪|

রাফিয়া আফিয়া আয়াত তিনজনেই গাড়িতে উঠে বসলো। শান আরাফকে কোলে নিয়ে সামনে বসবে। দিহান গাড়িতে উঠবে এমন সময় দেখতে পেলো শ্রাবণকে। উলটোদিক ঘুরে ফোনে কথা বলছে। দিহান ডাকলো শ্রাবণকে। শ্রাবণ পেছন ঘুরে ওদের দেখতে পেয়ে কল কেটে এগিয়ে এলো ওদের দিকে। শ্রাবণ ভ্রু কুঁচকে সবার দিকে একবার তাকিয়ে দিহানকে বললো,
–“বের হচ্ছিস কোথাও?”

–“হ্যাঁ, চট্টগ্রাম থেকে ফুপ্পির মেয়ে আয়ু এসেছে বেড়াতে। বাচ্চাপার্টি বায়না ধরেছে ঘুরতে যাবে, সেজন্যই যাচ্ছি।”

–“আচ্ছা তাহলে যা।”

দিহান আমতা আমতা করে বললো,
–“তুইও চল না আমাদের সাথে।”

–“কাজ আছে আমার, তোরা যা।”

শান এবার এগিয়ে এলো। শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“কাজ তো সবসময়ই করো, আজ চলো না আমাদের সাথে।”

শ্রাবণ এক পলক শানের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,
–“রেডি হয়ে আসছি।”

কথাটা বলেই গটগট করে ভিতরে চলে গেলো শ্রাবণ। শ্রাবণের যাওয়ার কথা শুনে শান রাফিয়া দিহানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। দশ মিনিটের মাথায় শ্রাবণ রেডি হয়ে আসলো। দিহান গাড়ির চাবি শ্রাবণের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বললো,
–“ড্রাইভ তুই কর।”

শ্রাবণ কিছু না বলে চাবিটা ক্যাচ ধরে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো। অপরদিকে দিহান আরাফকে কোলে নিয়ে সামনে বসলো। শান গিয়ে পেছনে আফিয়ার পাশে বসলো। শ্রাবণ গাড়ি চালাতে শুরু করলেই রাফিয়া বললো,
–“শ্রাবণ ভাইয়া একটা গান ছাড়ুন না, এভাবে চুপচাপ বসে থাকতে ভালো লাগছে না।”

লুকিং গ্লাসের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালো শ্রাবণ। তা দেখে রাফিয়া অন্যদিকে তাকালো। শান রাফিয়ার মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
–“ভাইয়া আমাদের সাথে যাচ্ছে এই অনেক। তুই আবার উল্টাপাল্টা বলে ভাইয়াকে রাগাস না।”

রাফিয়া চোখ কটমট করে তাকিয়ে বললো,
–“তোর কি মনে হয়? আমি শ্রাবণ ভাইয়াকে রাগানোর জন্য গান ছাড়তে বলেছি? আজাইরা পাবলিক কোত্থেকে যে আমার আশেপাশে আসে এসব।”

শানকে ভেংচি কেটে অন্যদিকে তাকালো রাফিয়া। আজাইরা পাবলিক শুনে শানের মাথা গরম হয়ে গেলো। রেগেমেগে জোরে রাফিয়ার চুল ধরে টেনে দিলো। রাফিয়া মৃদু চিৎকার করে বললো,
–“আউচ___”

শ্রাবণ গাড়ি থামিয়ে পেছনে রাগান্বিত চোখে তাকালো। গম্ভীর স্বরে বললো,
–“দুটোকেই ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে বের করে দিবো বলে দিলাম, দুজনে একসাথে থাকলেই এত ঝগড়া হয় কেন? দূরে দূরে থাকতে পারিস না? ঝগড়াও করবি আবার আশেপাশেও থাকবি। রিডিকিউলাস।”

শ্রাবণের ধমক শুনে দুজনেই ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ হয়ে গেলো। আয়াত মুচকি হেসে বললো,
–“এখন দুজনেই চুপ কেন? আরো ঝগড়া করো। কান্টিনিউ প্লিজ।”

রাফিয়া আর শান দুজনেই চোখ কটমট করে তাকালো আয়াতের দিকে। আয়াত মুচকি হেসে জানালার বাইরে দৃষ্টি দিলো।

আয়াত এতদিন শুধু রাফিয়ার মুখে হাতিরঝিলের সৌন্দর্যের বর্ণনা শুনে এসেছে। আর আজ ও হাতিরঝিলের সেই সৌন্দর্য নিজ চোখে দেখবে ভাবতেই মনটা বেশ খুশি খুশি লাগছে আয়াতের। ওর নানু বাসায় সেরকম একটা আসা হয় না। লাস্ট মনে হয় আরাফ হয়েছে পর ওকে দেখতে এসেছিলো। আরো সাত/আট বছর আগের কথা, তখন বেশ ছোটও ছিলো আয়াত। সেরকম ভাবে বলতে গেলে ঢাকার কোনো দর্শনীয় স্থানগুলো আয়াতের দেখা হয়ে উঠেনি।

সন্ধ্যার পর আয়াতদের গাড়ি হাতিরঝিলে এসে থামলো। ৩০২ একরের হাতিরঝিল রাতে যেন সেজে উঠে এক অপরূপ সাজে। এক উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় এখানে। প্রতিটি ব্রিজের চোখ ধাঁধানো আলোর সৌন্দর্যের বর্ণনা দেয়াটা খুবই কঠিন। চোখে না দেখলে যেন এর সৌন্দর্য বোঝা যাবে না। দিনের চেয়ে রাতে হাতিরঝিল বেশি মুখর হয়ে উঠে দর্শনার্থীদের পদচারণায়। প্রশস্ত ব্রিজে কিংবা ছোট ব্রিজের উপরে অথবা লেকের পাড়ে বেঞ্চগুলোতে যেখানেই চোখ যায় না কেন, পুরো হাতিরঝিল দেখে মনে হচ্ছে স্বর্গীয় কোনো স্থান। সান্ধ্য ভ্রমণের জন্যেও এটি উপযুক্ত স্থান। নিরিবিলি পরিবেশে লেকের পাড় ঘেসে হাঁটার অনুভূতিটাই যেন অন্যরকম। লোকমুখে আয়াত প্রায়শই শুনেছে নিরব, শান্তিপূর্ণ এবং একই সঙ্গে সুন্দর জায়গার বড় অভাব এই ঢাকা শহরে। সেই ক্ষেত্রে দেখতে গেলে হাতিরঝিল একদমই ব্যতিক্রম জায়গা মনে হচ্ছে আয়াতের কাছে। খোলা আকাশের নিচে মুক্ত হাওয়ার পাশাপাশি হাতিরঝিলে যোগ হয়েছে রঙ বেরঙের আলোর সঙ্গে পানির ফোয়ারা। মিউজিকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচতে থাকে এসব ফোয়ারাগুলো। সঙ্গে চোখ ধাঁধানো আলোর ঝলকানি। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউণ্টেইন। এর ফোয়ারার পানি ১০ মিটার থেকে ৮০ মিটার পর্যন্ত ওপরে উঠতে পারে। মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউণ্টেইন এবং অ্যাম্পিথিয়েটারের বাড়তি বিনোদন উপভোগ করার সুযোগ মিলে বিভিন্ন উৎসবে। এ ছাড়া মাঝে মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা এবং রাত সাড়ে ৯টা, ১৫ মিনিটের জন্য চালু করা হয় এ বর্ণিল ফোয়ারা।

সবকিছু দেখে আয়াতের চোখ জুড়িয়ে গেলো। শ্রাবণ আর দিহান লেকের পাড়ের একটা ফাঁকা বেঞ্চিতে বসে পড়লো। আফিয়া আরাফকে নিয়ে নিজের মতো এদিক সেদিক হাঁটছে। রাফিয়া ব্যস্ত ছবি তোলায়। শান রাফিয়াকেই বিরক্ত করছে। এদিকে আয়াত মুগ্ধ চোখে চারিপাশটা দেখছে। রাফিয়া ওদের কাছে জায়গাটা পুরাতন। বেশ কয়েকবার এসেছেও ওরা। তাই ওদের চোখে সেরকম মুগ্ধতা নেই। আয়াতের এই প্রথম এখানে আসা, ওর চোখমুখে মুগ্ধতা বিরাজমান। নিরিবিলি পরিবেশে লেকের পার ধরে হাঁটতে শুরু করলো আয়াত। এখানে এসে ওর মনটা নিমিষেই ভালো হয়ে গেছে। ঘুরে ঘুরে দেখছে সবটা৷ শান দৌড়ে এসে আয়াতের সঙ্গ দিলো। আয়াত মুচকি হেসে বললো,
–“জায়গাটা প্রচন্ড সুন্দর।”

–“পছন্দ হয়েছে তোমার?”

–“ভীষণ।”

–“এর থেকেও সুন্দর সুন্দর দর্শনীয় স্থান আছে ঢাকায়। তোমাকে সব ঘুরে দেখাবো।”

শানের কথায় আয়াত মৃদু হেসে বললো,
–“কিন্তু আমি তো আর দুদিন আছি ঢাকায়, দুদিন পরই ভার্সিটি খুলবে।”

–“ব্যাপার না, এই দুদিনে যতটা দেখানো যায় দেখাবো।”

প্রত্যুত্তরে আয়াত কিছু না বলে মুচকি হাসলো। রাফিয়া শানকে ডাকলো ওর ছবি তুলে দেওয়ার জন্য। তাই শান সেদিকে চলে গেলো। রঙ বেরঙের পানির ফোয়ারার দিকে তাকিয়ে চলতে চলতে আয়াত আচমকা কারো শক্তপোক্ত বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে ক্ষানিকটা পিছিয়ে গেলো৷ আয়াত কপাল ডলে সামনে তাকাতেই দেখলো শ্রাবণ গম্ভীর চোখে আয়াতের দিকে তাকিয়ে আছে৷ আয়াত মাথা নিচু করে বললো,
–“স্যরি আসলে আমি খেয়ালি করিনি।”

–“তা খেয়াল করবেন কেন? চোখ তো পানির ফোয়ারার দিকে ছিলো। তা এতই যেহেতু দেখার ইচ্ছে এক জায়গায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখলেই তো পারতেন। স্টুপিড একটা।”

শ্রাবণের গম্ভীর কন্ঠস্বর শুনে বেশ রাগ হলো আয়াতের। মানলো ওর ভুল ছিলো, কিন্তু ও তো স্যরি বলেছে তাহলে এরপরেও এত কথা কেন শোনাতে হবে? আয়াত বিরক্তি সুরে বললো,
–“তো আপনি যেহেতু দেখেছেন আমি অন্যদিকে তাকিয়ে হাঁটছি তাহলে আপনি কেন থেমে গেলেন না? বা অন্যপাশ দিয়ে চলে গেলেন না? আপনার চোখ কোথায় ছিলো তাহলে? স্টুপিড টু।”

আয়াতের কথা শুনে রাগ হলো শ্রাবণের। বিশেষ করে “স্টুপিড টু” কথাটা শুনে। শ্রাবণ চোয়াল শক্ত করে তাকালো আয়াতের দিকে। আয়াত শ্রাবণের ওরকম দৃষ্টি থেকে ক্ষানিকটা দমে গেলো। লোকটা যদি ওকে ধাক্কা দিয়ে লেকের পানিতে ফেলে দেয়? কেমন হবে তখন? মান সম্মান কিছু অবশিষ্ট থাকবে কি ওর? মনে মনে এসবই ভাবলো আয়াত৷ শ্রাবণ রাগী লুকে আয়াতের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“ননসেন্স।”

কথাটা বলেই হনহনিয়ে চলে গেলো শ্রাবণ। সেদিকে তাকিয়ে দাঁত কিড়মিড়ালো আয়াত। তারপর আবার নিজের কাজে ব্যস্ত হলো। আশপাশটা ভালোভাবে ঘুরে রাফিয়া দের কাছে চলে এলো। সেখানে রাফিয়া শান ওদের সকলের সাথে ছবিও তুললো বেশ কয়েকটা। দিহানের সাথেও তুলেছে৷ রাফিয়া গিয়েছিলো শ্রাবণের সাথে ছবি তুলতে, ছেলেটা এমন লুক দিয়েছে রাফিয়া কিছু না বলেই চলে এসেছে সেখান থেকে।

হাতিরঝিলেরই একটা রেস্তোরাঁয় বসে আছে ওরা সকলে। এখান থেকে একেবারে ডিনার সেরেই বাড়ি ফিরবে ওরা।

আজ রাতেই ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে আয়াত। কাল সকাল সকাল আবার চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়বে ও। ঢাকায় কাটানো সাতটা দিন ওর অনেক ভালো লেগেছে। শানের সাথে বন্ধুত্বটাও ভালো একটা পর্যায়ে গিয়েছে। নাম্বার এফবি একাউন্ট আদান-প্রদান হয়েছে। এর মাঝে শান আয়াতকে লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, জিয়া উদ্যান, স্মৃতিশৌধ ঘুরিয়ে দেখিয়েছে, সাথে ছিলো রাফিয়া।

আজও আয়াত একাই ফিরবে বাসায়। তবে বাসে করে যাবে আজ। এতে ওর মামাদের ঘোর আপত্তি। তাদের এক কথা আয়াতকে একা ছাড়বে না। ভাগ্য ভালো বিধায় আসার সময় সানিয়া আর শানের সাথে দেখা হয়েছিলো। কিন্তু এবার ফেরার সময় যদি খারাপ লোকের পাল্লায় পড়ে তখন? এই ভেবে উনারা রাজি না আয়াতকে একা ছাড়ার। আমান দিয়ে আসবে আয়াতকে। দিহানের একটা কাজ পড়ে গেছে নয়তো ও নিজেই যেতো। আয়াত লাগেজ নিয়ে বের হলো। সকলকে বিদায় জানিয়ে বাসা থেকে বের হতেই দেখা মিললো সানিয়া মেহরাব, শ্রাবণ এবং শানের। শ্রাবণ গাড়িতে বসে আছে। কোথাও একটা যাবে মেবি। আয়াত এগিয়ে গিয়ে সানিয়াকে বললো,
–“আসছি আন্টি, নেক্সট টাইম চট্টগ্রাম গেলে অবশ্য আমাদের বাড়িতে উঠবেন।”

শান পাশ থেকে বললো,
–“এখনই বের হচ্ছো?”

–“হ্যাঁ।”

–“আই উইল মিসড ইউ সো মাচ আয়ু।”

আয়াত একগাল হেসে বললো,
–“মি টু।”

এরমাঝেই শ্রাবণ বললো,
–“আম্মু? আসছি আমি__”

–“এক মিনিট।”

মায়ের কথায় ভ্রু কুঁচকায় শ্রাবণ। সানিয়া আয়াতের গালে হাত রেখে বললো,
–“আজও কি একাই ফিরছো?”

–“মামারা একা যেতে দিবে না। ছোট মামা দিয়ে আসবে।”

সানিয়া মেহরাব কিছু একটা ভেবে বললেন,
–“আমান ভাইয়ের যেতে হবে না, শ্রাবণও চট্টগ্রাম যাচ্ছে। ওর সাথেই চলে যাও।”

আয়াত সঙ্গে সঙ্গেই নাকোচ করে বললো,
–“না আন্টি, মামার সাথে চলে যেতে পারবো আমি।”

–“শ্রাবণ যেহেতু ওদিকেই যাচ্ছে তাহলে কষ্ট করে আর আমান ভাই যাবে কেন? আমি আমান ভাইকে বলছি।”

–“আন্টি শুনুন আমি___”

আয়াতের কোনো কথা না শুনে সানিয়া চলে গেলো আমানের সাথে কথা বলতে। শান আয়াতের পাশে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে বললো,
–“আরেহ ফ্রিতে একটা হ্যান্ডসাম ড্রাইভার পাচ্ছো, এমন সুযোগ কেউ হাতছাড়া করে নাকি?”

আয়াত চোখ রাঙিয়ে তাকালো। শান ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ হয়ে গেলো। সানিয়া মেহরাব আর আমান আয়াতের সামনে এসে দাঁড়ালো। আমান বললো,
–“তাহলে শ্রবাণের সাথেই চলে যাও মামণি?”

আয়াত কিছু বলার আগেই শান বললো,
–“আরেহ চাচ্চু নো চিন্তা, ও যাবে।”

আয়াত কটমটে চোখে তাকালো। শান মুখ টিপে হাসলো। সানিয়া শ্রাবণকে বললো,
–“আয়াতকে নিয়ে যাও তোমার সাথে।”

শ্রাবণ সম্মতি জানালো। শ্রাবণ মুখে কিছু না বললেও মনে মনে বেশ বিরক্ত হলো। কি দরকার ছিলো এই উটকো ঝামেলা সাথে নেওয়ার? শান এগিয়ে গিয়ে ফ্রন্ট সিটের দরজা খুলে দিলো। আয়াত তাকালো চোখ পাকিয়ে। আয়াতকে উঠতে না দেখে শ্রাবণ বললো,
–“আম্মু লেট হচ্ছে আমার।”

সানিয়া মেহরাব আয়াতকে ঠেলেঠুলে গাড়িতে উঠিয়ে দিলো। শান বাঁকা হাসলো। আয়াত রাগী একটা লুক দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। শ্রাবণ চুপচাপ গাড়ি স্টার্ট দিলো।

চলবে~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here