বেমানান!
পর্ব ৬) তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী!
©মৌপর্ণা
এভাবেই কেটে গেলো আরো তিন তিনটে মাস….
রোজ ঘন্টা খানেক সকালে মর্নিং ওয়াক এর সাথে আড্ডা ও এক কাপ চা ওদের কে অনেকটাই কাছাকাছি এনে দিচ্ছিলো দিন প্রতিদিন!
ইদানিং চম্পার মা না এলে ঈশানি নিজেই এসে টিফিন ক্যারিয়েরে করে খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে স্নিগ্ধর Appartment এর নীচে!
স্নিগ্ধ যদিও ব্যাপারটা নিয়ে খুব রাগারাগি করে! শেষ দিন স্নিগ্ধ পরিষ্কার করে বলে –
“এরপর থেকে খাবার বানালে একটা পিং করে দিবি,,,,আমি নিজে তোর কোয়াটারে গিয়ে খাবার নিয়ে আসবো,,,এরম বয়ে বয়ে টিফিনে খাবার আনবিনা! আমার খুব ওকয়ার্ড লাগে ঈশানি!”
ঈশানি প্রতিবারের মতন বলে “আচ্ছা ঠিক আছে!”
ঈশানি মুখে কিছুনা বললেও স্নিগ্ধ বোঝে ঈশানির এই খাবার বয়ে আনার পেছনের কারণটা! কারণটা হলো ঈশানি কখনোই চায়না ব্যাংক স্টাফ কোয়াটারে কেউ জানুক যে ঈশানি খাবার বানিয়ে স্নিগ্ধ কে পাঠায়! এমনি লোক জন ঈশানি ও স্নিগ্ধ কে নিয়ে নানান কথা বলে,, বহুবার বাজারে ওদের কে একসাথে দেখেছে বাকিরা! আর তারপর যে কোনো কাজে যে কোনো সমস্যা তে স্নিগ্ধর, ঈশানি কেই চায়!
গতমাসের কথা! কাজটা পুরোপুরিই স্নিগ্ধরই ছিল,,,,
কিন্তু কোনো একটা ট্রান্সাকশনের হিসেব স্নিগ্ধ কিছুতেই মেলাতে পারছিলোনা! তারপর সত্যি তো ইশানেই শেষমেশ ভুলটা উদ্ধার করলো,,তার জন্যে সেদিন মেয়েটা সকাল নটায় এসে সেই রাত নটায় বেরিয়েছিল ব্যাংক থেকে!
এভাবেই আসতে আসতে শক্ত হচ্ছিলো ওদের সম্পকের বাঁধনটা!
**************************************************
আজ চম্পার জন্মদিন!
এ বছর দশে পড়লো ও!
চম্পার মা – ঈশানি ও স্নিগ্ধ দুজন কেই নিমন্ত্রণ করেছে আজ বিকেলে!
অক্টোবরের মাস,,,,রোববারের দিন! পরের সপ্তাহে থেকে টানা আট দিন ছুটি পড়বে পুজোর!
কিন্তু এই বছর পুজো পুজো করে তেমন উৎসাহ নেই ঈশানির!
ইদানিং বৃষ্টির কারণে একটা সকালে – মর্নিং ওয়াক টা বাদ গেলে মুড্ টা বিগড়ে যায় ঈশানির,,,,,স্নিগ্ধর ব্যাপারটা এখনো বোঝেনা ঈশানি,,,,স্নিগ্ধর তো যা মনে আসে তাই বলে দেয় তবুও সরাসরি কখনো আজ অবধি সেরম কিছু বলেনি!
এই সব কথা ভাবলেও মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায় ঈশানির,,,,কৌশানি কতবার বলেছে – “স্নিগ্ধ দা না বললে তুইই বলে দে!”
কৌশানির sixth সেন্স ভীষণ ভালো,,,আর কৌশানির মতে স্নিগ্ধও খুব পছন্দ করে ঈশানিকে!
*************************************************
ঈশানির ফোনের নির্দিষ্ট রিংটোনে ঈশানি বুঝলো স্নিগ্ধ ফোন করেছে! শাড়ির প্লিট টাতে কোনোরকমে সেফটি-পিনটা লাগিয়েই ফোনটা রিসিভ করে নিলো ঈশানি,,,,
“কিরে আর কতক্ষণ? আমি নীচে দাঁড়িয়ে কিন্তু!”
“ওওহ দাঁড়াও দাঁড়াও! প্লিজ আর পাঁচ মিনিট দাও! আমি আসছি,,,,,”
“রিলাক্স! তুই দশ মিনিট নে, কোনো তাড়াহুড়ো নেই! আমি অপেক্ষা করছি!”
ঈশানি যখন সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলো, পশ্চিম আকাশের সূর্য আকাশে দেখা না গেলেও, আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে রেখেছিলো তার রোশনাই!
আকাশ তখন লাল ও নীল রঙে রাঙা!
ঈশানির পায়ের শব্দ পেয়েই ফোনটা লক করে ঘুরে তাকালো স্নিগ্ধ, কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো বোধহয়, কিন্তু কিছু বললো না, শুধু অবাক হয়ে চেয়ে রইলো ঈশানির দিকে বেশ খানিকক্ষণ! ঈশানি ততক্ষণে এসে দাঁড়ালো স্নিগ্ধর সামনে, স্নিগ্ধ তখনও তাকিয়ে ঈশানির দিকে চেয়ে!
কোণে দেখা গোধূলি বেলায় ঈশানি কে প্রথম শাড়িতে দেখলো স্নিগ্ধ!
ঈশানির পরণে লাল ঢাকাই, লাল ঢাকাইয়ের ওপরে ছোট্ট – ছোট্ট সাদা ফুল আঁকা! সঙ্গে গ্লাস হাতা ব্লাউস, চোখের নীচে ও ওপরে সুন্দর করে আঁকা হালকা কাজলের রেখা,,,ঠোঁটে বেশ গাঢ় লাল লিপস্টিক,,, কৌশানি চাকরি পেয়ে প্রথম তার দিভাইয়ের জন্যে ওই লাল লিপস্টিক টা উপহার দিয়ে বলেছিলো – “একবার ট্রাই করিস দিভাই প্লিজ!! বিশ্বাস কর তোকে মানাবে! যদি খারাপ লাগে ফেলে দিস, আজও তো ওরি আবদারে এমন সাজ ঈশানির!”
ঈশানির দেখলো স্নিগ্ধ তখনও চেয়ে রয়েছে ঈশানির চোখ দুটোর দিকে,, এই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকাটা আজ যেন একদম আলাদা!
এক অদ্ভুত অনুভতি হচ্ছিলো ঈশানির! যেন অনেকখানি ভালো লাগার মধ্যে কেউ চুপিসারে মিশিয়ে রেখেছে একটু খানি ভয়! কিসের ভয়, ঈশানি জানেনা!
“স্যার! যাওয়া যাক!” বলেই ঈশানি মাথাটা নীচু করে নিলো……
“হমমম চল!” স্নিগ্ধ আর কিছু বললোনা….
মিনিট পাঁচেক অদ্ভুত ভাবে দুজনেই খুব চুপচাপ পাশাপাশি হাঁটতে থাকলো…..
অদ্ভুত এই চুপচাপ পরিবেশটা কাটিয়ে কোনোরকমে স্নিগ্ধ বললো –
“আচ্ছা ঈশানি! একটা কথা বল তুই কখনো গান শুনতে – শুনতে তোর স্বপ্নের মানুষকে দেখেছিস স্বপ্নে,,,,মানে মেয়েরা, জেনেরালি এরকম অনেক কিছু রিলেট করে গান শুনতে শুনতে!”
ঈশানির এক মিনিটের জন্যে মনে হলো নিশ্বাষ টা বন্ধ হয়ে গেলো টেনশনে! কিসের যে টেনশন কে জানে!
কোনোরকমে একটা ছোট্ট উত্তর দিলো – “হমম!”
স্নিগ্ধ মৃদু হেসে আবার জিজ্ঞেস করলো – “তো! কি দেখিস সেই স্বপ্নে! মানে তুই আর তোর স্বপ্নের মানুষটা হেঁটে বেরোচ্ছিস মালদ্বীভস এর কোনো এক ওয়াটার রিসোর্টে বা একটা নাম না জানা সুন্দর ফাঁকা beach……
আর স্বপ্নের মানুষটার হাতে গিটার,,,,,একটা টেবিল সুন্দর করে সাজানো গোলাপের পাপড়িতে,,,,,মানে ঠিক যেমন দেখায় সিনেমাতে….”
“নাহ স্যার! সেরকম কিছু দেখিনা! আসলে আমি খুব সাধারণ মেয়ে তো, আমার কাছে আমার স্বপ্নের মানুষের সাথে মাটির ভাঁড়ে এক কাপ চা, অনেকখানি আড্ডা, বৃষ্টি ভেজা একটা দিনে দুজন একসাথে বসে চিৎকার করে বেসুরো গান গাওয়া,, এগুলোই আমার স্বপ্নে আসে বারবার ঘুরে ফিরে,,,,,বা ধরুন এরম একটা কাঁচা পাকা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া আর মন খুলে গল্প করা এটাই আমার স্বপ্ন!”
ঈশানির কথা শেষ হতেই দেখলো, স্নিগ্ধর চোখ দুটো কেমন জ্বলজ্বল করে উঠলো! ঠোঁটের দু কোণায় হাসিটা একটু বেড়ে গেলো মনে হলো,,,,,,,সারাটা রাস্তায় আর কোনো কথা বললোনা ওরা! এক অদ্ভুত ভালোলাগার নীরবতা ওদের জড়িয়ে ধরলো!
**************************************************
চম্পা দেড় বাড়িতে যখন ঢুকলো তখন সন্ধ্যের তারাগুলো টিমটিম করে জ্বলছিল আকাশ জুড়ে, তুলসী মঞ্চতে ঈশানি কে প্রণাম করতে দেখে স্নিগ্ধও হাত দুটো জোড় করে দাঁড়ালো তুলসী মঞ্চের সামনে!
“ঈশানি দিদি! তোমরা এসেছো? এসো দাদাবাবু!”
চম্পার মা ঘরে থাকা দুটো টুল এগিয়ে দিয়ে বললো – “আমি কিন্তু ভাবিনি ঈশানি দিদি, দাদাবাবু আসবে তোমার সাথে, রবিবার ছাড়া তো দেখাই হয়না আমার দাদাবাবুর সাথে!”
ঠিকই তো চম্পার মায়ের সাথে স্নিগ্ধর কতটাই বা কথা হয়, স্নিগ্ধ ব্যাংক থেকে ফেরার আগেই চম্পার মা সব রান্না শেষ করে ঘরে আবারো তালা দিয়ে বেরিয়ে আসে স্নিগ্ধর বাড়ি থেকে! তবে কেন এলো আজ স্নিগ্ধ?
*****************************************************
খানিকক্ষণ চম্পার সাথে গল্প করলো ওরা দুজন,,, চম্পার হাতে একে একে উপহার দিলো দুজনে!
আর তারপর একটা দুটোর কথার পরেই চম্পার আবদার –
“দিদি! মা বলে তুমি খুব ভালো গান গাও! একটা গান আজ শোনাও না! আমাদের বাড়িতে তো টিভি নেই, তাই মা কে লুকিয়ে, আমি তিস্তার দেড় বাড়ি গিয়ে গান শুনি! একটা গান শোনাও না দিদি! ও দিদি!”
এ তো আচ্ছা জ্বালায় ফেললো মেয়েটা! এদিকে স্নিগ্ধও বলেই চলেছে – “গেয়েই ফেলনা! এখানে তো দু-একটা বাচ্চা ছাড়া আর কেউ নেই সেরকম! এতবার যখন বলছে মেয়েটা, গেয়েই ফেলনা! অগত্যা আর কি একটা রবীন্দ্রসংগীত ধরলো ঈশানি!
“তুমি কেমন করে গান কর হে
গুণী,
অবাক হয়ে শুনি, কেবল
শুনি।………………
…………………….”
গানের মাঝেই ঈশানি চেয়ে দেখলো স্নিগ্ধ আবারো অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে ঈশানির দিকে, বিদ্যুৎ খেলে গেলো ঈশানির শরীর জুড়ে, তবুও সুর হারালো না একটুও, চোখ দুটো বুজে ঈশানি এক মনে গান গেয়ে চললো!
****************************************************
রাতে খাবার শেষে ওরা চম্পার বাড়ির সবাইকে বিদায় জানিয়ে ঘরের পথে রওনা হলো –
“তারপর – কত বছর গান শিখেছিস?”
“আমি তো ছোট থেকেই গান গাই, দশ বছর শিখেছি,,,,তারপর উচ্চমাধ্যমিকের সময় থেকে সেই যে বাদ পড়লো আর শুরু করেনি, কিন্তু বাড়িতে মাঝে মাঝে ওই টুকটাক!”
“টুকটাক! এটা টুকটাকের নমুনা ছিল বুঝি? তুই না গাইলে আমি বোধহয় কোনোদিনই জানতে পারতাম না যে রবীন্দ্রসংগীত এতটা Soulful!”
“ওহ! প্লিজ!”
“কি ওহ! প্লিজ! দুর্দান্ত ছিল ট্রাস্ট মি! মাস্ট সে ঈশানি তোর স্বপ্ন গুলোর মধ্যে একটা বড়ো মিথ্যে বললি আজ কিন্তু! আর এই গান গাওয়ার কথাটা নিজে থেকে বলিসনি আগে! আমি কিন্তু তোকে বলেছি আমি ছবি আঁকি! ইনফ্যাক্ট ব্যাংকে আঁকার স্কেচ এনে লুকিয়ে তোকে দেখিয়েওছি! আর তুই! এটা কিন্তু ঠিক করলিনা বস!”
ঈশানি একটু মৃদু হেসে জবাব দিলো –
“বুঝলাম! কিন্তু স্বপ্নর কথা কি মিথ্যে বললাম শুনি?”
“আচ্ছা! বৃষ্টি ভেজা দিনে চিৎকার করে বেসুরো গানের ব্যাপারটা! তোর সাথে গাইলে বেসুরোও সুরে গাইবে!”
সামনের মোড়ের বাঁকটা আসতেই ঈশানি বললো – “ওকে চলো Good Night ”
Good Night মানে? নো way! আমি তোকে ছেড়ে দিয়েই তবেই ফিরবো! এরম রাতে একা একা একদম সেফ নয়!
আর তারপর আবার শাড়ি পরে এসেছেন ম্যাডাম! দৌড়োতেই পারবিনা কেউ পিছু নিলে!
“কেন ভালো লাগছেনা বুঝি শাড়ি পড়ে?” ঈশানি না চেয়েও বলে ফেললো কথাটা!
“ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছে আজ তোকে! ইন ফ্যাক্ট আমি তো ……..” বলতে বলতে হঠাৎ থেমে গেলো স্নিগ্ধ……..
একটা অদ্ভুত নীরবতা ঘিরে নিলো আবারো ,,,,রাস্তাতে আর কোনো কথা হলোনা ওদের,
ঈশানির কোয়াটার এলে একটা মৃদু হাসি হেসে স্নিগ্ধ Good Night বলে বিদায় জানালো ঈশানিকে ,,,
তবে অন্য দিনের মতন বাই বলেই এগিয়ে চললোনা নিজের পথের দিকে,, খানিক দাঁড়িয়ে রইলো ঈশানির কোয়াটারের বাইরে, কোয়াটার কমপ্লেক্সের সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে!
ঈশানি অন্ধকারে মিলিয়ে গেলে আসতে আসতে রওনা হলো নিজের পথে!
**************************************************
রাতে গা হাত পা ধুয়ে ঈশানি হেডফোন টা কানে দিয়ে এলিয়ে বসলো খাটে,,,আজ গান শুনতে শুনতে বারেবারে স্নিগ্ধর মুখটা মনে পড়ছিলো ঈশানির! ঘড়িতে ঠিক তখন নটা পঞ্চান্ন,,,
আর মিনিট পাঁচেকের অপেক্ষা,,,এমনি রোজ দশ টা নাগাদ নিয়মিত পিং আসে স্নিগ্ধর!
হঠাৎ ঈশানির ফোনটা বেজে উঠলো,,, হঠাৎ আজকে ফোন!
ঈশানি : “হ্যালো!”
স্নিগ্ধ : “হমম কি করছিস? বাড়ির সাথে কথা হয়ে গিয়েছে?”
ঈশানি : “হ্যাঁ সব সেরে বসলাম!”
স্নিগ্ধ : “শোন না!”
ঈশানি : “হমম বলো!”
স্নিগ্ধ : “আমি অত ভালো বয় ফ…………
আমি অত রোমান্টিক,,,,,
মানে আমি অত ঠিক……
মানে আমি ঠিক অত শত কারুর প্রশংসা করতে পারিনা বুঝলি! …….বুঝলি?”
ঈশানি ঠিক শুনলো তো! বয় ফ্রেন্ড বলতে গিয়েছিলো কি স্নিগ্ধ! হৃদস্পন্দন টা হঠাৎ বেড়ে গেলো ঈশানির!
স্নিগ্ধ : হ্যালো! ঈশানি!
ঈশানি : আচ্ছা তো?
স্নিগ্ধ : হমমম…… তো আবার কি? তো এই জন্যেই তোকেও কখনো বলেনি!
ঈশানি : কি বলোনি?
স্নিগ্ধ : যে তুই খুব ভালো রান্না করিস,,,, আজ খুব ভালো গান গাইলি,,,,আর আজ তোকে খুব সুন্দর লাগছিলো,,,,,আর তোর মনটাও ভীষণ ভালো,,,,আর ………আপাতত আর কিছু মনে পড়ছেনা বুঝলি!”
ঈশানির মুখে আবার মৃদু হাসি ফুটে উঠলো!
স্নিগ্ধ : আচ্ছা চল রাখছি,,,,এটাই বলার ছিল! হয়ে গিয়েছে বলা,,,অনলাইন আসছি কেমন!
ঈশানি : হমম ওকে!
সেদিন ঘন্টা খানেক কথা চললো ওদের রাতে হোয়াটস্যাপে! আজ কেমন যেন ঈশানির সত্যি মনে হলো কৌশানি ঠিক বলে,,,,স্নিগ্ধ একটু হলেও …….
আর বেশি কিছু ভাবলোনা ঈশানি!
আজ মনটা কেন যে এতো ছটফট করছিলো কে জানে!,,,,এতদিন ঈশানি জানতো মন ভাঙলে ঘুম আসেনা!
আজ তো মন ভাঙেনি! তবে আজ মনটা শান্ত নয় কেন? কেন ইচ্ছে করছিলো ছাদে গিয়ে চাঁদের আলোয় ভিজতে! বা বিছানায় উঠে একটু লাফ লাফি করতে ঠিক যেমন ছোট বেলায় করতো ক্লাসে ফার্স্ট হওয়ার পর!
খানিকক্ষণ আগে বেডসাইড টেবিলে রাখা ফোনটা তুলে নিয়ে স্নিগ্ধর হোয়াটস্যাপ ডিপির দিকে চেয়ে রইলো ঈশানি, বেশ কিছুক্ষণ……তারপর ফোনটা লক করে রাখতেই যাবে কি হঠাৎ হোম স্ক্রিনটা জ্বলে উঠলো!
স্ক্রিনে ডিসপ্লে হচ্ছিলো হোয়াটস্যাপে স্নিগ্ধর লেখা মেসেজটার প্রথম লাইনটা – “ঈশানি – একটা কথা বলার ছিল জানিস! আর পারছিনা……”
ঈশানি মুহূর্তের মধ্যে হোয়াটস্যাপ টা খুলতে খুলতেই দেখলো
” This message was deleted ”
মুহূর্তের মধ্যে ডিলিটও করে দিলো স্নিগ্ধ! কি ছিল পুরো মেসাজটা……
(চলবে……….)