চুপিচুপি ভালোবাসি পর্ব ২৫

0
958

#চুপিচুপি_ভালোবাসি (পর্ব ২৫)
#আয়েশা_আক্তার
·
·
·
বাড়ি থেকে ফিরে যে যার কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম আমরা। মারুফাও নিজের পড়াশোনা কন্টিনিউ করছে। আমিও নিজের পড়াশোনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। এভাবেই চলে যায় বেশ কিছু দিন। এরপর একদিন বাড়ি থেকে কল আসে যে বাবা একটা গেট টুগেদার পার্টি আয়োজন করেছেন। যাতে করে পরিবারের সবার সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয় আর কিছুটা ফ্যামিলি টাইম স্পেন্ড করতে পারে সবাই। এদিকে কলেজ ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি হয়ে গিয়েছে। সবার সাথে দেখা হ‌ওয়ার লোভ টা সামলাতে পারলাম না। তাই আবার ছুটলাম বাড়ির পথে। পরের দিন নির্ভীকদের বাড়িতে পৌছালাম আমি, আমার পরিবারের সবাই, মারুফা, মারুফার বাবা, মা আর ওর ছোট বোন। ওর বড় বোন মানে নিলুফা আপু আসতে পারবেনা ওনার শাশুড়ি মা অসুস্থ তাই। ওবাড়িতে পৌঁছে দেখলাম বাবা মোটামুটি তার চৌদ্দ গুষ্টির সবাইকে ইনভাইট করেছে। বাড়িটাকে দেখে কোন বিয়ে বাড়ির চেয়ে কম লাগছে না। মামনি একা হাতে কয়দিক সামলাচ্ছে কে জানে। আমাদের বাবা মা সবার সাথে কথা বলায় ব্যাস্ত। আমি আর মারুফা ফ্রেশ হয়ে সোজা রান্নাঘরে আসলাম মামনি আর কাকিমনি কে হেল্প করতে। আমরা দু’জন মামনির হাতে হাতে কাজ করছি আর টুকটাক কথা বলছি। কিছুক্ষণ এর মধ্যেই রান্নাঘরে হাসির রোল পড়ে গেলো। আমরা দুই বেস্টু একসাথে যেখানে আছি সেখানকার পরিবেশ শান্ত থাকতেই পারে না। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় দিকে সব কাজ শেষ হলো। এরমধ্যে আমি নির্ভীক কে একবার ও দেখিনি। কোথায় আছে কে জানে। এরমধ্যেই আয়াত ভাইয়া এসে বেশ কয়েকবার মারুফা কে ডেকে গিয়েছে। আর মারুফা বিরক্তি নিয়ে ওনার দিকে তাকাচ্ছে। ওদের কান্ড দেখে কাকিমনি পর্যন্ত মুখ টিপে হাসছে। সবার হাসি দেখে বেচারী লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। শেষে ওকে ঠেলে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। ও যাওয়ার পর মামনি বললেন, নিজের ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিতে। কিছুক্ষণ পর‌ই সবাই একসাথে আড্ডা দিতে বসবে! এখন কথা হলো গিয়ে নিজের রুম বলতে কোন রুমের কথা বলছেন মামনি? নির্ভীকের রুম নাকি অন্য রুম। হ্যাঁ বিয়ের পর বরের রুম‌ই নিজের হয় কিন্তু আমাদের ব্যাপারটা তো আলাদা! আমাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মামনি হয়তো কিছুটা আন্দাজ করতে পারলেন। হেসে বললেন,,

–‘নির্ভীকের রুমে যাও আম্মু। ওটাই তোমার ঘর!”

আমি মাথা নাড়িয়ে চলে এলাম। ঘরে ঢুকতেই দেখি মহাশয় উল্টো হয়ে শুয়ে আছেন। দেখেই মেজাজ খারাপ হলো আমার। এখন শুয়ে থাকার সময় নাকি? কিন্তু আবার মনে হলো উনার শরীর খারাপ নয়তো? নাহলে এখন তো এভাবে! আর কিছু না ভেবে উনার মাথার কাছে গিয়ে বসলাম। উনি ঘুমুচ্ছেন! ডাকতে গিয়েও ডাকলাম না। উনার ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে আর ডাকতে ইচ্ছে করলো না। এতোটা রাস্তা জার্নি করে ফিরেছে একটু ঘুমাক। উনার চুলগুলোতে হা বুলিয়ে উঠে আসতে নিলেই হাতে টান পড়লো। টাল সামলাতে না পেরে সোজা ওনার উপর গিয়ে পড়লাম আমি। হাতখোপা করা চুলগুলো খুলে গিয়েছে। মুখ তুলে তাকিয়ে দেখি উনার চোখ খোলা। তারমানে উনি জেগে গিয়েছেন। এক হাতে আমার কোমর জড়িয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে আমার চুল সরাতে সরাতে বললেন,,

–“কি ব্যাপার মহারানী! একেবারে আমার রুমে এসে আমার দিকে এমন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিলে কেন তুমি? কি মতলব তোমার?” (এক ভ্রু উঁচিয়ে)

প্রথমত উনার এতো কাছে থাকায় অস্বস্তি হচ্ছে আমার তার উপর উনার ছোঁয়ায় বারবার কেঁপে উঠছি আমি। কিছু বলতে গিয়েও পারছি না। সব কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। নাহ আর এভাবে থাকা যাবে না। উনাকে ধাক্কা দিয়ে উনার উপর থেকে উঠে এলাম আমি। নিজেক স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বললাম,,

–“ফ্রেশ হতে এসেছিলাম। আর এটা আপনার ঘর মানে? এটা আমার বরের ঘর বুঝেছেন। আমার যখন ইচ্ছা আসবো তাতে আপনার কি? বাই দ্যা বিমানের চাকা আপনি না ঘুমিয়ে ছিলেন এতক্ষণ? তাহলে জনলেন কিভাবে যে আমি আপনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম? ঐ আপনি সত্যি ঘুমিয়েছিলেন তো?” (সন্দেহের চোখে তাকিয়ে)

উনি উঠে বসলেন। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,,,

–“এই তো ঠিক বুঝে গিয়েছো। ঘুম তো আমার তখন‌ই ভেঙে গিয়েছিল যখন তুমি আমার পাশে এসে বসেছিলে। আমি তো দেখতে চাইছিলাম তুমি ঠিক কি করো! তুমিতো আমাকে এমন ভাবে দেখছিলে যেন আমাকে খেয়েই ফেলবে। কে তুমি মেয়ে! কোথা থেকে এসেছো হ্যাঁ? আমার দিকে এভাবে তাকানোর অধিকার শুধু আমার ব‌উয়ের আছে। তুমি কোথাকার কে হ্যাঁ? যাও যাও আমার ব‌উ এসে তোমাকে দেখলে রাগ করবে।”

আমি চোখ ছোট ছোট করে তাকালাম উনার দিকে। উনি হাত পা ছেড়ে উঠে গিয়ে দড়জা লাগিয়ে দিলেন। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালাম। উনি হেসে দিয়ে বললেন,,

–“যাও গোসল করে নাও! রান্নাঘর থেকে এসেছো সেটা তোমাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এখানে ওখানে হলুদ, মরিচ লাগিয়ে এসেছো। নিশ্চয়ই খুব গরম ও লাগছে। গোসল করে নাও ভালো লাগবে!”

ঠিক ই বলেছেন। আসলেই গা জ্বালা করছে, হাত পা চুলকাচ্ছে। গরমের ফলে এ্যালার্জি হয়ে গিয়েছে মনে হয়। শাওয়ার নেওয়াটা দরকার। কিন্তু বিপত্তি হলো আমি ড্রেস কোথায় পাবো! আমি তো ড্রেস নিয়ে আসিনি। আমি বললাম,,

–“কিন্তু আমি ড্রেস কোথায় পাবো?”

–“ক্লোজেট খুলে বাম পাশে দেখো।”

–“কেন?”

–“আরে বাবা খোলো তো!”

বিরক্তি নিয়ে ক্লোজেট খুললাম। বাম পাশে তাকাতেই আমি অবাক! অনেকগুলো মেয়েদের ড্রেস, শাড়ি। এগুলো কোথা থেকে আসলো? আমি উনার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালাম। উনি এগিয়ে এসে একটা মেরুন কালার ড্রেস আমার হাতে দিয়ে বললেন,,

–“অনেক দিন ধরে একটু একটু করে এগুলো কিনে রেখেছি যাতে করে তুমি যখন বরাবরের জন্য এ বাড়িতে চলে আসবে তখন কোন প্রবলেম না হয়। এখনো অনেক কিছু কেনা বাকি আছে অবশ্য কিন্তু ঠিক গুছিয়ে নিবো!”

আমি একবার উনার দিকে তাকাচ্ছি আরেকবার ড্রেস গুলোর দিকে। উনি এখন থেকেই সব কিনে রেখেছেন? না জানি আর কত কিছু ভেবে রেখেছেন উনি। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ড্রেস টা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে এলাম। গোসল করে ভেজা চুল গুলো ঝাড়তে ঝাড়তে বাইরে বেরোলাম আমি। উনি ল্যাপটপে কাজ করছেন। হয়তো পেশেন্ট দের শিডিউল দেখছেন। আমি গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসলাম। ঠিক তখনই কেউ পেছনে দাঁড়িয়ে আমার চুল মুছতে লাগলো। সামনে আয়নায় নির্ভীককে দেখা যাচ্ছে। উনি বললেন,,

–“কবে বড় হবে শর্মি? এখনও পর্যন্ত নিজের চুল টাও মুছতে পারো না। মাঝে মাঝে মনে হয় বাল্যবিবাহ করে ফেললাম না তো? এই তোমার বয়স সত্যি ১৯ বছর তো?”

আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম,,
–“১৯ বছর ৯ মাস ২৬ দিন।”

উনি হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর আবার চুল মুছতে লাগলেন। চুল মোছা শেষ হতে না হতেই আজান শোনা গেল। উনি টুপি নিয়ে চলে গেলেন।
আমিও উঠে নামাজ পড়ে নিলাম। তারপর চুলগুলো ঠিক ঠাক করে নিলাম। ব্যাগ থেক কাজল বের করে চোখে কাজল টেনে বাইরে চলে এলাম। চুলগুলো ভেজা থাকায় আর বাধা হলো না। মারুফা বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিলো। ও আমার দিকে এগিয়ে এসে শয়তানি হাসি দিয়ে বলল,,

–“কিরে তুই তো ফুল চেঞ্জড। আবার চুলগুলোও ভেজা দেখছি। ঐ তোর ব্যাপার কি বলতো? (সন্দেহের চোখে তাকিয়ে)

এই মেয়ে জীবনে শোধরাবে না। হুদাই আজাইরা কথা মাথায় ঘোরে। আমিও কম নাকি? একটা ডেভিল স্মাইল দিয়ে বললাম,,
–“তোর তো দেখছি লিপস্টিক লেপ্টে আছে বেইব! ঠিক করে বেরোবি না!”

কথাটা শুনেই ও হাত দিয়ে মুখ ঢেকে চোখ বড়বড় করে তাকালো। তারপর দৌড়ে চলে গেল। ওর দৌড়ানো দেখে ব্যাপক হাসি পাচ্ছে আমার। এদিকে সবাই নিজেদের জায়গায় বসে পড়েছে। উঠোনে খোলা আকাশের নিচে সবার বসার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সামনে একটুখানি উঁচু করে একটা স্টেজ মতো করা আর তার ঠিক শেষ প্রান্তে একটা প্রজেক্টর রাখা। অনেকটা নাচ গানের আসরের মতো। এই প্ল্যানটা ছোটদের। যেহেতু সবাই অনেকদিন পর একসাথে হয়েছে একটু গান বাজনা না হলে কি আসর জমে নাকি? এইসব বলেই বাবাকে রাজি করানো হয়েছে। একদিকে সব ছোট সদস্যরা মানে আমরা সবাই। আর অন্যপাশে বড়রা। তাশাও এসেছে দেখছি। আর এসেই মৌমাছির মতো নির্ভীকের পেছনে পরে আছে। কিন্তু খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না। কিছুক্ষণ পর‌ই সবাই যে যার জায়গায় বসে পড়লো। বেশ অনেক্ষণ গল্পগুজব করার পর রিদওয়ান ভাইয়া বললেন,,

–“অনেক তো হলো এবার একটা গেইম খেলা যাক কি বলো সবাই!”

সবাই সম্মতি দিলো। গেইমটা এমন যেখানে সবাইকে একটা করে চিরকুট দেওয়া হবে। তাতে বিভিন্ন জিনিস লেখা থাকবে যেমন- গান, নাচ, আবৃত্তি, অভিনয় ইত্যাদি ইত্যাদি। এবং চিরকুটের উপর নম্বারিং করা থাকবে।যার চিরকুটে যা লেখা থাকবে তাকে তাই করতে হবে। নাম্বার অনুযায়ী এক এক করে সবাই পারফর্ম করবে। সবাইকেই পারফর্ম করতে হবে। কাউকেই বাদ দেওয়া যাবে না মানে যাবে না। আমার আম্মু, মারুফার মা সহ কয়েকজন মহিলা পারফর্ম করতে রাজি নয়। তারা সবার টা দেখবে কিন্তু নিজেরা করবে না। অনেক বলেও তাদের রাজি করানো গেলো না। শেষে আর কেউ তাদের জোর করলো না। অবশেষে গেইম শুরু হলো। সবাইকে চিরকুট দেওয়া হলো। নির্ভীক কে চিরকুট দেওয়ার সময় রিদোয়ান ভাইয়া, রাইসা আপুসহ কয়েকজন শয়তানি হাসি দিলো।কেউ গান, কেউ নাচ, কেউ আবৃত্তি করছে। বাবা আর আব্বু দুজন মিলে তো কৌতুক করলেন। সবাই হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে। আব্বু কিছু হাস্যকর গল্প শোনালেন। আয়াত ভাইয়ার টা ছিলো রোমান্টিক স্টাইলে ব‌উকে প্রোপজ করা। সেটা করতে গিয়ে সবার সামনে নাকানিচোবানি খেয়েছে বেচারা। কোনমতেই হচ্ছিলো না। যতবার বলতে যায় ততবার সব কাজিনগুলা কিছু না কিছু বলে বসে। আয়াত ভাইয়ার আর বলা হয় না। অনেক কষ্টে শেষ মেষ বলেই দেয়। শাম্মী আর জান্নাত মিলে নাচলো। বেশ ভালো নেচেছে দুইজনেই। মারুফা ওর বাবাকে ডেডিকেট করে গান গাইলো। তাষা বেশ ভাবে ছিলো কিন্তু বেচিরীকে দুঃখী মায়ের অভিনয় করতে হলো।ওর ছেলে হলো নির্ভীক। তাশা রাগে গজগজ করতে করতে বসে পড়লো। ওর এমন রিয়্যাকশ দেখে সবাই হাসতে হাসতে শেষ। এবার এলো নির্ভীকের পালা। সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রিদোয়ান ভাইয়া নির্ভীকের হাত থেকে কাগজটা কেড়ে নিয়ে পড়তে লাগলেন। জোরে জোরে বললেন,,

–“আব আয়েগা উট পাহাড় কি নিচে। নির্ভীক উঠে পর ভাই। নিজের ভালোবাসা কে ডেডিকেট করে একটা সুন্দর গান গাইতে হবে এবং গানটা অবশ্যই তোর মনের সিচুয়েশনের সাথে মিলিয়ে গাইতে হবে এবং এবং এবং, গানের শেষে তার নামটাও আমাদের বলতে হবে। অনেক জ্বালাইছিস আমাদের। অনেকবার জিগাইছি কেউ আছে কিনা নাম কি? কিন্তু কিছুই বলিস নাই। আজ তো বলতেই হবে বাছা।”

নির্ভীক রহস্যময়ী একটা হাসি দিয়ে বললেন,,
–“এই ব্যাপার! ঠিক আছে আজ তোদের শুধু নাম বলবো না তার সাথে পরিচয় ও করিয়ে দিবো। আমিও কিছু প্ল্যান করেছি আজকের জন্য। দুটো একসাথেই করা হবে ভালোই হবে।”

রিদোয়ান ভাইয়া সহ আরো কিছু কাজিন রা সমসরে চেঁচিয়ে উঠলো। তারা হয়তো এমন কিছু আশা করেননি। বাবাকে দেখলাম মুখ টিপে হাসছেন। বাদ বাকি সবাই যারা ব্যাপারটা জানে তারা ভাবলেশহীন ভাবে বসে আছে। তাশা তো খুশিতে গদগদ হয়ে আছে। আর আমি নির্ভীকের দিকে তাকিয়ে আছি। উনি উঠে গিটার গিয়ে স্টেজে থাকা টুলের উপর বসলেন। ঠিক তখনই প্রজেক্টর অন হয়ে গেল। প্রোজেক্টরের আলো পর্দার উপর পড়তেই নির্ভীক গিটার বাজিয়ে গাইতে শুরু করলেন,,,

🎶 বলতে চেয়ে মনে হয়
বলতে তবু দেয়না হৃদয়
কতটা তোমায় ভালবাসি।
চলতে গিয়ে মনে হয়
দুরত্ব কিছু নয়
তোমারি কাছেই ফিরে আসি।🎶

[ কিছু অস্পষ্ট ছবি স্লাইড করছে। ঠিক বোঝা যাচ্ছে না]

তুমি তুমি তুমি,
শুধু এই মনের আনাচে কানাচে
সত্যি বলনা,
কেউ কি প্রেমহীনা কখনো বাঁচে। (x2)

বলতে চেয়ে মনে হয়
বলতে তবু দেয়না হৃদয়
কতটা তোমায় ভালবাসি।

[পর্দায় আমার ২ বছর আগের ছবি স্লাইড করছে। দুই পাশে বেণী করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি।]

মেঘের খামে আজ তোমার নামে
উড়ো চিঠি পাঠিয়ে দিলাম
পড়ে নিও তুমি মিলিয়ে নিও
খুব যতনে তা লিখে ছিলাম (x2)

[এই লাইনটা গাওয়ার সময় আমি দাঁড়িয়েওনার ডাইরি পড়ছি সেই ছবি স্লাইড করছে। আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। এটা কখন তুললেন উনি?]

ও চাই পেতে আরও মন
পেয়েও এত কাছে..

বলতে চেয়ে মনে হয়
বলতে তবু দেয়না হৃদয়
কতটা তোমায় ভালবাসি।

[এইবারের ছবিটা হলো আমি একচোখ বন্ধ করে আরেক চোখ খুলে ভ্রু উঁচিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি আর উনি আমার কপালে আঙ্গুল ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন]

মন অল্পতে প্রিয় গল্পতে
কল্পনায় স্বপ্ন আঁকে
ভুল ত্রুটি আবেগী খুঁনসুটি
সারাক্ষণ তোমায় ছোঁয়ে রাখে (x2)

[উনি আমার চুল টেনে ধরে আছেন আর আমি রাগী চোখে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি,, উনি আমার সামনে আইস্ক্রিম ধরে আছেন আর আমি আড়চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি এরকম টাইপের ছবি]

ও চাই পেতে আরও মন
পেয়েও এত কাছে..

বলতে চেয়ে মনে হয়
বলতে তবু দেয়না হৃদয়,
কতটা তোমায় ভালবাসি।

[উনি আমার শাড়ির আঁচল ধরে টানছেন আর আমি কাঁধে হাত দিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি সেই ছবিটা এসে স্ক্রিনে আটকে গেলো]

গিটারে একটা টিউন তুলে গান শেষ করলেন উনি। আমি এখনও অবাক হয়েই তাকিয়ে আছি। এই ছবিগুলো কখন তুললেন? কিভাবেই বা তুললেন। হঠাৎ খেয়াল হলো সবাই আমার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে। তাশা তো হাঁ করে তাকিয়ে আছে। আমি উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম।নির্ভীক গিটার রেখে আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। এক হাত দেয়ালে ঠেকিয়ে অন্য হাত নিজের পকেটে ঢুকিয়ে বললেন,,

–“Will you marry me again?”🙄

ঐ সময়ে আমার রিয়্যাকশন ছিলো কিছুটা “😒🙄” এমন। এইভাবে কেউ প্রোপজ করে নাকি? কোনকিছুই সিধা ভাবে করে না এই ছেলে। এভাবে ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে বলছে, উইল ইউ ম্যালি মি অ্যাগেইন!!
·
·
·
চলবে………………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here