ফিলোফোবিয়া
ঊর্মি প্রেমা ( সাজিয়ানা মুনির )
৩৬.
( কার্টেসী ছাড়া কপি নিষেধ )
সময় বহমান। কারো জন্য থেমে থাকেনা। দিন ঘুরে রাত নামছে। সাপ্তাহ ঘুরে মাসে পৌঁছাচ্ছে। কিন্তু সম্পর্ক গুলো তখনো এলোমেলো অগোছালো। প্রত্যেক সম্পর্কের ভিন্ন ভিন্ন সমীকরণ। দূর থেকে দেখতে সম্পর্কগুলো একইরকম হলেও, বিচ্ছেদের কারণ গুলো ভিন্ন। কারো কারো মাঝে হাজারো দূরত্ব, কারো আবার এক ছাদের তলায় থেকেও না ছুঁতে পারার আক্ষেপ!
ভালোবাসার মাস। চারিদিকে বসন্ত আগমনি গান। ডালে ডালে হলুদ সাদা নানারকম ফুল। প্রকৃতি নতুন রূপে সাজতে মশগুল।
উৎসব মুখর ভার্সিটির আঙ্গিনা। পহেলা ফাল্গুনের আয়োজন চলছে। সিনিয়র জুনিয়র সকলে একত্রে জড় হয়েছে। প্রিয় মুখখানার সন্ধানে চারদিকে চোখ বোলাচ্ছে। না, এখানে নেই সে।আশেপাশে কোথাও দেখছে না তুরফাকে। প্রচন্ডরকম বিরক্ত হলো শাদ। মোবাইল বের করে ফোন করতে, দেখল বন্ধ। ঢুকছে না ফোন। তুরফা কি আবারো তার নাম্বার ব্লক করেছে? আচমকা শাদের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। হন্য হয়ে তুরফাকে খুঁজতে শুরু করল। আশেপাশে খোঁজ করে, ক্যানটিনের দিকে পা বাড়াল। সদর দরজায় দাঁড়াতেই তুরফাকে দেখল। পেছনের টেবিলে জড়সড় হয়ে বসে। নোট বানাতে ব্যস্ত। ক্ষিপ্ত পা চালিয়ে তুরফার সামনে চেয়ার টেনে বসল।
শাদের উপস্থিতি ঠাহর করেও, মাথা তুলে চাইল না তুরফা। সম্পূর্ণ মনযোগ নিয়ে নোট বানাতে ডুবে আছে এখন।
তুরফার গম্ভীর মুখপানে নিমিষ চেয়ে শাদ। এতো এতো কৃত্রিমতার ভীড়ে , কোনরকম প্রসাধনী বিহীন সাদাসিধা সুশ্রী মুখ। মেয়েটার সাধারণ রূপই তাকে আরো বেশি অসামান্য করে বানায়। এইযে মেয়েটার গম্ভীরতা, রাগি দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা তাকে কতটা টানে সেই কথাটা কি মেয়েটা জানে? জানেনা। জানলে নিশ্চয়ই এভাবে তাকাত না।
কিছু সময় পিনপতন কাটল।গলা উঁচিয়ে শাদ ডাকল। তুরফা শুনেও, কানে তুলল না। রেগে গেল শাদ। তুরফার সামনের নোট খাতাটা টেনে নিলো। গম্ভীর হয়ে বলল,
‘ সমস্যা কি তোমার! আমার কথা কানে যাচ্ছে না? ‘
চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে তুরফা কোন উত্তর দিলোনা। শাদের রাগ আরো বাড়ল। শক্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
‘ আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেঞ্জার সব জায়গা থেকে ব্লক করেছ। ব্লাকলিষ্টে ফেলে রেখেছ। আমি কি তোমাকে খুব জ্বালাই?’
তুরফা এবার মুখ খুলল। চোখমুখে বিরক্তি এঁটে বলল,
‘ তোমাকে সহ্য হয়না। জাস্ট অসহ্য লাগে আমার!’
শাদ ক্ষে*পে গেল। পা দিয়ে তুরফার টেয়ার টেনে সামনে আনল। ভারী খড়খড় শব্দ হলো। তুরফার মুখের দিক ঝুঁকে গম্ভীর হয়ে বলল,
‘ কি করেছি আমি? জোর করে চুমু খেয়েছি। নাকি বাজে ভাবে স্পর্শ করেছি?’
রাগে ফেটে পড়ল তুরফা। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
‘ দিন দিন অসভ্যতার মাত্রা ছাড়াচ্ছ। কি দারুণ! অপরাধ করে সাধু সাজছ। ছি আমার ভাবতেও অবাক লাগছে। নিজ স্বার্থে এত নিচে নামতে পারো তুমি?’
হতভম্ব শাদ। কন্ঠে বিস্ময় জুড়ে জিজ্ঞেস করল,
‘ আশ্চর্য! আসার পর থেকে যা মুখে আসছে তাইল বলছ। কি করেছি তা বলবে তো অন্তত।’
অগ্নিদৃষ্টিতে চেয়ে রইল তুরফা। রাগে চেচিয়ে বলল,
‘ তোমার তরফদারি করে আমাকে বুঝাতে প্রিয় আপাকে বলোনি?’
বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে চেয়ে আছে শাদ। বিস্ময় কাটিয়ে বলল,
‘ উনাকে আমার হয়ে তরফদারি করতে কেন বলবো?’
‘ মিথ্যা বলবেনা প্লিজ। তুমি না বললে তো আপা এমনি এমনি বলেনি।’
শাদ শান্ত স্বরে জিজ্ঞেস করল,
‘ কি বলেছে উনি?’
তুরফা খানিক চুপ থেকে শিথিল কন্ঠে বলল,
‘ গতরাতে আপার সাথে ফোনে কথা হচ্ছিল। কথা বলার এক পর্যায় তোমার কথা তুলল। সম্পর্কটা নিয়ে আরেকবার ভাবতে বলল। এসব বলতে তুমিই বলেছ। তাইনা?’
শাদ হতভম্ব, গম্ভীর। প্রিয় সাথে তার দেবর ভাবির হলেও সম্পর্ক হলেও। এখন অবধি ঠিকঠাক ভাবে তার সাথে কথাটা পর্যন্ত বলেনি। সেখানে তার জন্য তুরফার কাছে তরফদারি করতে বলবে! অসম্ভব। শাদ আরো গম্ভীর হয়ে তাকাল। বলল,
‘ তোমার কি সত্যি মনে হয় উনাকে এসব বলেছি? আমি কি এতটাই দুর্বল যে, আমার জন্য আকুতি মিনতী করতে অন্য কাউকে পাঠাব!’
তুরফা চুপ। শাদ আবারো বলল,
‘ আমার আত্মীয় তোমার বোনকে মে*রেছে এই অযুহাত দেখিয়ে সম্পর্ক মানতে চাইছ না। তাহলে উনাকে কেন এত পছন্দ করো? যাকে আপা আপা বলে মুখে ফেনা তুলো সে এখন আমাদের পরিবারেরই একজন।’
তেতে গেল তুরফা। রেগে চেয়ার ছেড়ে উঠল। শাদের দিক ঝুঁকে বলল,
‘ তোমার এখনো অযুহাত মনে হয়? এই বিশ্বাস করো আমায়।’
তাচ্ছিল্য হাসল তুরফা। ক্রোধান্বিত স্বরে বলল,
‘ প্রিয় আপা তোমাদের পরিবারের অংশ হয়েও, তোমাদের কেউনা। এই বিয়ের পেছনে বড় উদ্দেশ্য আছে আপার। সে আমাকে কথা দিয়েছে, ন্যায় বিচার এনে দিবে।’
ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে হনহন করে বেরিয়ে গেল তুরফা। চেয়ারে হতভম্ব হয়ে বসে রইল শাদ। তুরফার বলা কথা গুলো যদি সত্যি হয়। তাহলে, কি উদ্দেশ্যে এসেছে প্রিয়? কেন-ই বা শতাব্দকে বিয়ে করল।
ভার্সিটিতে ক্লাস ছিলনা আজ। সকাল সকাল অফিসে চলে গেছিল। পহেলা ফাল্গুন আজ। বেশ কয়েকটা লাইভ, ইভেন্ট ছিল। সব কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা হলো। টি টেবিলে ব্যাগ রেখে, চোখ বুজে গা এলিয়ে দিলো সোফায়। ক্লান্তিতে ম্যাচ ম্যাচ করছে গা। অমনি ভেতর ঘর থেকে শতাব্দ এলো। হাতে ফোন। শতাব্দের আঁচ পেয়ে চোখ খুলল প্রিয়। শতাব্দ ফোন এগিয়ে দিলো। বলল,
‘ তোমার জন্য ফোন।’
ভ্রু কুঁচকে নিলো প্রিয়। ফোন কানে ধরতে অপর পাশ হতে রিক্তা বলল,
‘ কেমন আছো প্রিয়? রাতে ডিনারে তোমরা আসছো তো?’
প্রিয় হতভম্ব দৃষ্টিতে শতাব্দের মুখপানে চাইল। ডিনারের কথা আগে বলেনি শতাব্দ। প্রিয়’র ক্লান্ত চোখমুখ দেখে শতাব্দ রিক্তাকে না করতে যাচ্ছিল, অমনি প্রিয় কথা কে*টে হাস্যোজ্জ্বল কন্ঠে বলল,
‘ ভালো। আপনি কেমন আছেন? জি আপু আমরা আসছি।’
দুজনের আরো কিছু কথা হলো। কথা শেষে ফোন রাখতে শতাব্দ বলল,
‘ মেডিকেল ফ্রেন্ডদের গেট টুগেদারের আয়োজন। তুমি ক্লান্ত। ডিনারে যাওয়াটা জরুরী না। তুমি যেতে না চাইলে কোন বাহানা দিয়ে স্কিপ করতে পারি।’
‘ স্কিপ করার দরকার নেই। যেতে চাইছি আমি।’
‘ আর ইউ শিয়োর?’
প্রিয় মাথা নাড়াল।
খুব অল্প সময়ে প্রিয় তৈরি হয়ে এলো। ড্রইং রুমে আগে থেকে তৈরি হয়ে প্রিয়’র অপেক্ষায় বসে ছিল শতাব্দ। উঁচু হিলের ঠকঠক আওয়াজে শতাব্দের ঘোর কা*টল। ফোন থেকে চোখ উঁচিয়ে সামনের দিক চাইল। কালো মসলিন শাড়ি পড়ে, চোখে গাঢ় কাজল ল্যাপে, ঠোঁট মেরুন লিপস্টিকে রাঙিয়ে চমৎকার সেজে। চুলের খোপা ঠিক করতে করতে এদিকে আসছে প্রিয়। মন্ত্রমোহের মত উঠে দাঁড়াল শতাব্দ। প্রিয়’র মুখপানে নিগূঢ় চেয়ে রইল। ছোট ছোট পা চালিয়ে শতাব্দের সামনে এসে দাঁড়াল।
দু’কদম এগিয়ে গিয়ে মুখোমুখি দাঁড়াল শতাব্দ। ঘাবড়ে গেল প্রিয়। চোখজোড়া নামিয়ে নিলো। শতাব্দ আরো বেশি ঘনিষ্ঠ হলো।প্রিয়’র খোপার ক্লিপ খুলে দিলো। সুড়সুড় করে লম্বা কেশ কোমর গড়িয়ে পড়ল।চুলে আলতো হাত চালিয়ে, ছাড়িয়ে দিলো শতাব্দ। কানের কাছে চুল সরিয়ে, মুখ এনে মৃদু স্বরে ফিসফিসিয়ে বলল,
‘ নাও পার্ফেক্ট।’
প্রিয় যেন থমকে গেল। ফ্যালফ্যাল চেয়ে রইল।স্মিত হাসল শতাব্দ। ভ্রু নাচিয়ে বলল,
‘ তুমি চাইলে ডিনারে না গিয়ে, আমরা এখানে নিজেদের ব্যক্তিগত সময় কা*টাতে পারি।’
প্রিয় নড়েচড়ে উঠল। বড়বড় পা চালিয়ে আগে আগে রওনা হলো। পেছন থেকে হেসে ফেলল শতাব্দ।
ঢাকার নামীদামী রেস্তোরাঁয় রিজার্ভেশন করা ছিল। সবাই অনেক আগেই পৌঁছে গেছে। প্রিয়দের যেতে দেরি হলো। রিক্তা ছাড়া আশেপাশে সকলেই অচেনা। বান্ধুবী ইরার বড় বোন রিক্তা। সেই সুবাদেই রিক্তাকে মোটামুটি চেনা। বন্ধুমহলে সবার সাথে এক এক করে পরিচয় করিয়ে দিলো শতাব্দ। সকলেই প্রিয়’কে দেখে হতভম্ব। মাঝের থেকে অঞ্জন বলে উঠল,
‘ এর আগে তোমার সাথে দেখা না হলেও, আমরা সবাই তোমার সাথে পরিচীত। আমাদের কাছে রূপকথার নায়িকা তুমি। হোস্টেলে থাকা কালিন নিয়ম করে রোজ দুইবেলা তোমার গল্প শুনেছি। কি সাহসী, কি অকপটে মেয়ে ছিলে তুমি! ‘
অবাক চোখে শতাব্দের মুখ পানে চাইল প্রিয়। শতাব্দের নিগূঢ় চাহনি, ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি। পাশ থেকে রিক্তা বলল,
‘ কত আগে থেকে তোমাকে চিনি। অথচ জানতাম না, যে তুমিই আমাদের ডক্টর শতাব্দের প্রাণপ্রিয়! অনেক গল্প শুনেছি তোমার। সত্যি তুমি মনমুগ্ধকর।’
অঞ্জন আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল কথা কা*টলো শতাব্দ। কথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলো। শতাব্দের লুকোচুরি ধরতে পেরেও সবার সামনে কিছু জিজ্ঞেস করল না প্রিয়।
ঘড়িতে তখন রাত এগারোটা চল্লিশ। অঞ্জনের ঘাড়ে ভর দিয়ে চোখজোড়া ছোট ছোট করে আলতো চেয়ে দাঁড়িয়ে আছে শতাব্দ।
শতাব্দকে ড্রাংক দেখে হতভম্ব প্রিয়। ছেলেরা আলাদা আড্ডা দিচ্ছিল। সেই আড্ডায় ড্রিংকস ছিল জানা ছিলনা প্রিয়’র। শতাব্দের উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। ইচ্ছে করছে চুল ছিড়ে ফেলতে এখন। ক্রু*দ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল। অঞ্জন আমতা আমতা করে বলল,
‘ ওর কোন দোষ নেই। বিকাশ! বেটা ফাজিল নতুন জামাই বলে বলে ধরে বেঁধে খাওয়াল। বেটা জানে শতাব্দের পেটে এসব পঁচা পানি সয়না। দু প্যাঁক মা*রতেই হুঁশ হারায়। তবুও এসব।’
এতটুকু বলে থেমে গেল। অসহায় দৃষ্টিতে চেয়ে রইল প্রিয়। বাড়ি ফিরবে কি করে এখন? শতাব্দ ড্রাংক, ড্রাইভারকেও সাথে আনেনি।
অঞ্জন হয়তো বুঝল। বলল,
‘ সমস্যা নেই ভাবি, আমি বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি। ওই রোডেই আমার বাড়ি।’
স্বস্তির শ্বাস ফেলল প্রিয়। শতাব্দকে নিয়ে গাড়ির পেছনে সিটে বসলো। প্রিয়’র কাঁধে মাথা রেখে শুয়ে আছে শতাব্দ। বিড়বিড় করে কিছু বলছে আলতো। রাত বেশি হওয়ায় রাস্তাঘাট খালি প্রায়। মিনিট বিশেকে পৌঁছে গেল বাসায়। শতাব্দকে ঘর অবধি ছেড়ে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেল অঞ্জন।
অঞ্জন চলে যেতেই সদর দরজা বন্ধ করে শতাব্দের ঘরে এলো। হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুয়ে আছে শতাব্দ। প্রিয় বিরক্ত হলো। এমন অবস্থা হবে আগে জানলে কখনো যেত না প্রিয়। একজন মানুষের কন্ট্রোল লেভেল এতটা ডাউন কি করে হয়।
কপাল কুঁচকে নিলো প্রিয়। কোমরে শাড়ির আঁচল গুজে বিছানায় উঠে শতাব্দকে ঠিকঠাক শুয়িয়ে দিলো। পায়ের জুতা খুলে দিয়ে শরীরে চাদর টেনে যেই নিজের ঘরের দিক যেতে পা বাড়াল। অমনি শতাব্দ খপ করে পেছন থেকে হাত টেনে ধরল। বিমূঢ় মুখ নিয়ে প্রিয় পেছনে ফিরল। আধোআধো চোখে চেয়ে আছে শতাব্দ। আচমকা হেঁচকা টান দিলো। প্রিয় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শতাব্দের বুকে যেয়ে পড়ল। হতভম্ব প্রিয় তড়িঘড়ি করে উঠতে নিলে শতাব্দ আরো বেশি চেপে ধরল। কাছাকাছি মুখ এনে নিগূঢ়, মিহি কন্ঠে বলল,
‘ আজকের রাতটা এখানে থেকে যাও।’
বড় গোল গোল চোখ করে চেয়ে রইল প্রিয়। শতাব্দের চোখে গভীর ঘোর। ঘাবড়ে গেল প্রিয়। সুস্থ স্বাভাবিক শতাব্দকেই তার প্রচন্ড ভয় হয়। এখন তো পুরোপুরি বেঘোরে সে। নিজেকে ছাড়ানো যথাসম্ভব চেষ্টা চালাল প্রিয়। কাজ হলো না। আরো আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরল। স্বাভাবিক থাকলে কয়েকটা কড়া আঘা’ত করে কথা বলে রাগিয়ে, নিজেকে ঠিক ছাড়িয়ে নিতো। কিন্তু এখন রাগিয়ে দেওয়া মোটেও উচিত নয়। হিতের বিপরীত হবে উল্টো। অনেক চেষ্টা চালিয়ে কোন কায়দা করতে পারল না প্রিয়। ভারী-ভারী চোখ তুলে মুখপানে তাকাল শতাব্দ’র। শতাব্দ নাছড়বান্দা নিমিষ চেয়ে। প্রিয় ঢোক গিলল ভীতু স্বরে বলল,
‘ আমাকে ছেড়ে দিন। ঘুম ধরেছে, ঘরে যেয়ে ঘুমাব।’
শতাব্দে গাঢ় আওয়াজ,
‘ এটা কি ঘর না?’
‘ ছাড়ুন। আমি আমার ঘরে যাবো।’
‘ ছাড়বোনা। পারলে ছাড়িয়ে যাও।’
অসহায় হয়ে চেয়ে রইল প্রিয়।
শতাব্দ বুক থেকে নামিয়ে প্রিয়’কে পাশে শুয়িয়ে কোমরে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। নিজের সাথে আরো ঘনিষ্ঠ করে মিশিয়ে নিলো। এবার প্রিয় আরো বেশি ঘাবড়ে গেল। এক ধ্যানে নিগূঢ় চেয়ে আছে শতাব্দ। মনে অদ্ভুত এক অস্বস্তি হতে শুরু করল। থরথর করে কাঁপছে হাতপা। শতাব্দ আরো ঝুঁকে এলো। তার তপ্ত নিশ্বাস মুখে পড়ছে প্রিয়’র। থরথরে কাঁপতে থাকা প্রিয় খানিক সাহস করল। আধোআধো স্বরে বলল,
‘ অস্বস্তি হচ্ছে। এমন করে তাকিয়ে আছেন কেন?’
হাসল শতাব্দ। কপালের চুল সরিয়ে দিয়ে, প্রিয়’র ঠোঁটে আঙ্গুল বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
‘ কেমন করে তাকিয়ে আছি প্রিয়?’
ভয়ে ঢোক গিলল প্রিয়। এই শতাব্দকে কি করে সামলাবে এখন!
চলবে…….
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই সবার মতামত জানাবেন।
টাইপোগ্রাফি: Maksuda Ratna আপু🌺❤️