#আমি_তারে_দেখেছি
#১৪তম_পর্ব
হাতে থাকা অর্ধখাওয়া সিগারেটে সুখটান দিয়ে নিজের ক্লান্তি, চিন্তার প্যাঁচ নিকোটিনের ধোঁয়ায় উড়াল সে। এমন সময় মেয়েলী স্বর কানে এল,
“আপনি সিগারেট খান?”
কথাটা শুনতেই মাথা তুলে তাকায় শান্ত। হাতে থাকা সিগারেটটি মাটিতে বড্ড অবহেলায় ফেলে পা দিয়ে পিষে ফেলে বলল,
“ক্লাস শেষ?”
“হ্যা, আপনার?”
“সেই কখন”
“তাহলে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন?”
“তোমার জন্য”
শান্তর কথাখানা কানে বাজল। আবেগী হৃদয়খানা কিঞ্চিত উচ্ছ্বাসিত হতেই চলেছিল, কিন্তু তা নিষ্ঠুরতার সাথে দমিয়ে নিল নবনীতা। গালফুলিয়ে বক্ষস্থলের জমায়িত নিঃশ্বাস ছাড়ল। তারপর বলল,
“বুড়ো বয়সে এমন ছ্যাবলামি করতে লজ্জা করে না?”
নবনীতার কথায় একটু নড়েচড়ে উঠল শান্ত। তার মুখে বেশ চিন্তার রেখা উন্মোচিত হল। সে কিছু একটা নিয়ে তাকে চিন্তিত দেখাল। যা শান্তর স্বভাবের সাথে বেমানান। নবনীতা নিজের মুখরা স্বভাবের জন্য এবার একটু চিন্তায় পড়ে গেল। লোকটি কি কিছু মনে করল! কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবে তার পূর্বেই শান্ত গম্ভীর স্বরে বলল,
“এই ফেসবুক রাইটারদের ব্যান করা উচিত, এই তো কাল একটি গল্প সামনে এল। সেখানে পুরুষ চরিত্রটি যখন একই কথা নারীটিকে বলল, নারীটি লজ্জায় লাল হয়ে উঠল। তার হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। অথচ আমার ক্ষেত্রে সব ফক্কা, ভাবা যায়?”
শান্তর স্বগোতক্তি কর্ণপাত হতেই নবনীতা বিমূঢ় দৃষ্টিতে থাকিয়ে রইল। লোকটি এই বিষয়টি নিয়ে এতো সিরিয়াস ভাবে চিন্তা করছিল। তার ঠিক করে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত সত্যিই জানা নেই। এই লোকটি কখন গম্ভীর হয় কখন ফাজলামি করে এখন যেন অমীমাংসিত রহস্য নবনীতার কাছে। এর মাঝেই নবনীতার ডাক পড়ল। পেছনে ঘুরে তাকাতেই নিজের বন্ধুমহলকে দেখতে পেল। তার খুব ঘনিষ্ট বান্ধবী পুষ্পিতা তাকে ডাকছে। নবনীতা একান্তই ইন্ট্রোভার্ট নারী হলেও কোন না কোনভাবে তার বন্ধু-বান্ধব জুটেই যায়। স্কুলেও জুটেছে, কলেজেও জুটেছে এখন ভার্সিটিতেও জুটে গেছে। অবশ্য এর কৃতিত্ব নীলয়কে দিতেই হয়। সে সর্বদাই অন্তর্মুখী নবনীতার স্বচ্ছ হৃদয়টি বাহিরের মানুষের কাছে উন্মোচিত করতে সহায়ত করেছে। তাই তো ভার্সিটিতে তার খুব কাছের তিন চারজন বন্ধু-বান্ধব রয়েছে। তাদের মধ্যেই শিল্পী এবং পুষ্পিতা দুজন। পুষ্পিতাকে ডাকতে দেখে সে শান্তর দিকে তাকাল। শান্ত মাটিতে পড়া সিগারেটটিকে পা দিয়ে নাড়তে নাড়তে বলল,
“যাও কথা বলে আসো, আমি অপেক্ষা করছি”
বন্ধুমহলের কাছে যেতেই এক একটা প্রশ্ন ছুড়তে লাগল তারা। যেহেতু শান্ত দোলার মৃত্যুর কেসের ইনভেস্টিগেটিং অফিসার হিসেবে তাদের পরিচিত তাই নবনীতার সাথে তাকে দেখতে পেয়ে কৌতুহল দ্বিগুন হল। তাজ চিন্তিত স্বরে বলল,
“এই লোকত দেখছি আজকেই দোলার মৃত্যু রহস্য বের করবে, কি শানিত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে! আমার তো আত্নাই খাঁচা ছাড়া হচ্ছিল। তা তোকে কি জিজ্ঞেস করছিল?”
“তেমন কিছুই না, এই এদিক ওদিকের কথা”
“এভাবে মানা যায় না। কেউ আ/ত্মহ/ত্যা করবে আর আমাদের প্রতিনিয়ত হ্যারাস করবে এটা অন্যায়। একটা বিহিত করা প্রয়োজন। আমি ডিপার্মেন্টে জানাব, দরকার পরলে একাডেমিকে যাব”
তাজ ছেলেটি বরাবর ই নাচুনে বুড়ি, একটু ঢোলের বাড়ি পড়তেই সে পুরোদমে মাঠে নেমে তান্ডব শুরু করে। এতে পরে ভোগান্তি সবার পোহাতে হয়। সামান্য তিলকে তাল বানিয়ে পিঠেপুলির উৎসব ও তার করা হয়ে যায়। ফলে পুষ্পিতা তাকে শান্ত করে বলল,
“থাম তো, কিছু হলেই একাডেমিকে যাবে। যেন ওখানে তোমার শ্বশুর তোমার আর্জি শুনতে বসে আছে। অফিসার তো পারমিশন নিয়েই কাজ করছে। ভিসি স্যারের থেকে তার পারমিশন নেওয়া। তাহলে তুমি আমি বলার কে! আর নবনীতা তো বলছে কিছু না। তাহলে হাইপার হচ্ছিস কেন?”
“তোদের মত ভীতুদের জন্য ই দেশ আগাতে পারছে না। জাতি আজ পিছিয়ে। ল বলে কিছু আছে। সে তো জিজ্ঞেসাবাদ করেছে। আবার কেন নবনীতাকে আলাদা করে কথা বলছে। কি জিজ্ঞেস করছিল? যেমন আমাকে করেছে। উফ র্যা পিড রাউন্ড কোয়েশ্চন। নিশ্চয়ই নবনীতাকেও সেভাবে প্রশ্নের বানে আ/হ/ত করেছে। কিরে নবনীতা বল”
এবার আর মৌন থাকতে পারল না। পানি মাথার উপরে উঠে যাচ্ছে বিধায় বাধ্য হয়েই বলল,
“সে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল ঠিক ই, কিন্তু জিজ্ঞেসাবাদের জন্য নয়। আমাকে বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য। কারণ উনি আমার বাগদত্তা।“
বাগদত্তা শব্দটি বিস্ফারকের ন্যায় কাজ করল। পিলে চমকে উঠলো যেন সবার। মুখশ্রী ফ্যাকাশে হয়ে গেল তাজের। বিড়বিড় করে বলল,
“এই ব্যাটাকে তুই বিয়ে করছিস? মানে এই খ/চ্চ/র পুলিশকে?”
তাজের কথাকে উপেক্ষা করে পুষ্পিতা বলে উঠল,
“তুই সত্যি বিয়ে করছিস নবনীতা। আমরা তো কল্পনাও করি নি তুই তুষারের পর অন্য কাউকে সুযোগ দিবি। সত্যি ভালো লাগছে রে। অতীত ভুলে তুই এগিয়ে যাচ্ছিস”
পুষ্পিতার কথায় কৃত্রিম হাসি ঠোঁটে আঁকলো নবনীতা। অতীত কি সত্যি ই এতো সহজে ভোলা যায়। অতীত সেই চোরাবালির মতো তার টান কাটানো সত্যি অসাধ্যকর। এই মুক্তির জন্য খুব শক্ত মজবুত দড়ির; প্রয়োজন হয়। নবনীতা একবার শান্তর দিকে চাইল। শান্ত কি সেই দড়ি হতে পারবে? কে জানে?
শান্ত ক্ষণে ক্ষণে ঘড়ি দেখছে। নবনীতাকে হাসপাতালে ছেড়ে থানায় যেতে হবে। সময় ছেলেটিকে কাস্টেডিতে নেওয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তার ল্যাপটপ, মোবাইল সব কিছু এখন সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চে জমা করা হয়েছে। বীথি এবং সিন্থিয়া যে এলিগেশন তার উপর দিয়েছে সেটার সত্যতা প্রমাণের জন্য এই ব্যাবস্থা। তার সকল ড্রাইভ, হিডেন পেনড্রাইভ, হার্ডডিস্ক সব কিছু চেক করা হবে। পাজেলের একটি অংশ মিললেই সবগুলো মিলতে শুরু হবে। এর মাঝেই পকেটে থাকা মোবাইলটা ভাইব্রেট করে উঠল, সেটা বের করতেই ইরশাদের ম্যাসেজ পেল। যাতে লেখা,
“স্যার, রেজাল্ট শুন্য। সময়কে ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। লাই ডিটেক্টরেও লাভ হয় নি”
ম্যাসেজটা পড়তেই কপালের শিরা দপদপ করে উঠল শান্তর। সামনে থাকা খালি পেপসির বোতলটিকে সজোরে লাথির মেরে ক্রোধ দমনের চেষ্টা করল সে। কিন্তু ব্যর্থ হল। সেই মুহূর্তে নবনীতার আগমণ ঘটল। শান্ত নিজেকে নিপুনভাবে সামলে নিল। পার্ক করা মোটরসাইকেলটি স্টার্ট দিল সে। তারপর শুধাল,
“কোথায় যাবে? বাসা না হাসপাতাল?”
“আপনার কি কিছু হয়েছে?”
“কেন?”
“আপনাকে খুব অস্থির লাগছে। এনি প্রবলেম?”
নবনীতার বিচক্ষণতা সর্বদাই মুগ্ধ করে শান্তকে। এবার ও ব্যতিক্রম হল না। শান্ত ঠোঁট বাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল,
“তোমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে মনটা অস্থির হয়ে গিয়েছিল। এখন তুমি এসে গেছ, এবার সে শান্ত”
শান্তর কথা শুনে ভ্রু কুঞ্চিত হল নবনীতার। এই লোকের জন্য চিন্তা করাও বৃথা। সর্বদা রসিকতা।
********
হাসপাতালের কেবিনের বাহির থেকে কোলাহলের ধ্বনি কানে আসছে। নার্স, ওয়ার্ড বয়রা বিরক্ত। চার পাঁচবার ওয়ার্নিং দেওয়া সত্ত্বেও বুড়ো মানুষটা অভিযোগের সুর থামার নাম নেই। সে গজগজ করে নিজের ক্রোধ এবং তেজ জাহির করছে। নবনীতা এবং শান্ত দাঁড়িয়ে আছে কেবিনের দরজার এপারে৷ দুজনের মুখে দ্বিধার সূক্ষ্ণরেখা। শান্ত কণ্ঠ খাদে নিয়ে বলল,
“আংকেলের কি হিট উঠছে?”
শান্তর কথার প্রত্ত্যুতরে নবনীতা অসহায় স্বরে বলল,
“ওয়েলকাম টু মাই ওয়ার্ল্ড”
“প্যারা খেও না। আমার ওয়ার্ল্ড এর থেকে বিতিকিচ্ছিরি। আমার মা জননীকে যতটা অভিজাত্যের মূর্তি মনে হয় ভাবির সাথে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সব অভিজাত্য পানি হয়ে তিনি হয়ে যান হিন্দি সিনেমার নিরুপা রায়”
কথাটা শোনামাত্র না চাইতেও হেসে উঠল নবনীতা। শান্তর কথাগুলো দমকা হাওয়ার ঝোকার মত, মুহূর্তেই শীতলতা ছড়িয়ে দেয় অন্তস্থলে।
জসীম সাহেবের মেজাজ খারাপ সকাল থেকেই। প্রথমত নিজের পুরোনো শত্রুকে সকাল সকাল নিজের সম্মুখে দেখেছেন। সে তার অহমিকার চাঁদরে বিশ্রীভাবে আ/ঘা/ত হেনেছে। ফলে মেজাজ তুঙ্গে। সেই অগ্নিতে ঘি এর মত কাজ করলো নিশাদের হেলামি। ফলে আগ্নেয়গিরি বিস্ফারিত হল। আর তুমুল তেজে জ্বলে উঠলেন জসীম সাহেব। নিশাদের দায়িত্ব ছিল বাবাকে ক্ষণে ক্ষণে বাথরুমে নিয়ে যাওয়া, ধরে ধরে তোলা। বিছানায় মলমূত্র করলেও সেটা পরিষ্কার করা। বাবার জামাকাপড় বদলানো। পুত্র হিসেবে সে নিপুণভাবেই দায়িত্ব পালন করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পূর্বেই জসীম সাহেবের গা মোছার সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে ব্যাথা স্থানে দ্বিতীয় দফা ব্যাথা দিয়ে দিল সে। অমনি শুরু হল বাক্যযুদ্ধ। হিংস্র বাঘের ন্যায় গজরাতে গজরাতে বলল,
“সুজাতের ঘরে সবসময় কুজাত জন্ম নেয়। তুই হল সেই কুজাত। একেই আমার মাজা ভেঙ্গে শান্তি হল না। এখন আমাকে পঙ্গু করার ধান্দা”
“আব্বু, তুমি একটু বেশি অভাররিয়েক্ট করছো। আমি কি ইচ্ছে করে করেছি নাকি?”
“আমি বুঝি না মনে করো? তোমাদের আমি জন্ম দিয়েছি নাকি আমাকে তোমরা? ছেলে তো ছিলাম আমরা। আব্বা কথা বলতে দেরি হত, সেই কথাকে হুকুমের মত পালন করতাম”
নবনীতা বাবার হুংকারে পাত্তা দিল না। বাবার এটা রোজের ঘটনা। এদিকে শান্ত মুগ্ধ নয়নে শ্বশুরের মেজাজ দেখছে। লোকটার মাজে একটা ব্যাপার তো আছেই, রগরগে মেজাজ, বজ্রকন্ঠ ধ্বনি। আহা, যেন যাত্রার মুগলে আজমের আকবর কে দেখছে। বাবার অপমানের বান যখন তীক্ষ্ণ হতে শুরু করল, তখন নিশাদ বেশ ভাবুক কণ্ঠে বিজ্ঞের মত বলল,
“সুজাতের ঘরে কুজাত হলে, কুজাতের ঘরে কি সুজাত হয়?”
“আলবৎ, দেখবি তোর ছেলে আমার মত হবে”
“তাহলে দাদা জান আমার মত ছিল? কুজাত?”
নিশাদের পালটা জবাবে থতমত খেয়ে গেল জসীম সাহেব। যতই হোক নিজের বাবাকে কুজাত শুনতে তার মোটেই ভাল লাগছে না। উপরন্তু নিজের ব্যাখ্যায় নিজেই আটকে গেছেন। এদিকে নিশাদের কথায় শান্ত খুব কষ্টে নিজের হাসি দমালো। ফলে অপমানের ধার বাড়ল। জসীম সাহেব অনেক ভেবে বললেন,
“এই প্রথা আমার থেকেই শুরু হয়েছে”
নিশাদ বাবার যুক্তিতে হার মানল। এই ব্যক্তির সাথে ঝগড়া করে লাভ নেই। শান্ত কিছু সময় থেকে উঠে দাঁড়াল, নবনীতাকে কোমল স্বরে বলল,
“আমি থানায় যাচ্ছি, আজ রাতে কি এখানে থাকছ?”
“হ্যা।“
“কোনো সমস্যা হলে ফোন দিও”
“এত ব্যস্ততার মধ্যে আমার ফোন অহেতুক বিরক্ত করবে”
“ওহে রমনী, তোমার জন্য আমার শত ব্যস্ততা তুচ্ছ”
নবনীতার কানের কাছে মুখ নামিয়ে ধীর কণ্ঠে কথাখানা বলল শান্ত। মুহূর্তেই শ্যাম গালজোড়ায় রক্ত জমল। লজ্জাদেবী তাকে গ্রাস করতে উঠে পড়ে লাগল যেন। লোকটির কথাগুলো এতটা মোহনীয় কেন। শান্ত কথাখানা বলেই পা বাড়াল নিজ গন্তব্যে। তার এখন অনেক কাজ______
******
নিগূঢ় রাত, চার দেওয়ালে ঘেরা একটি স্যাঁতস্যাতে ঘর। দেওয়ার চলতে খসে পড়ছে। ছাঁদের ফাটল থেকে পানি পড়ছে। তার মাঝে একটি বিছানা এবং টেবিল। বিছানাটি অবিন্যস্ত, ময়লা। তার আশেপাশে এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে আছে কাগজের দলা। সময় একের পর এক পৃষ্ঠা নিচ্ছে, খসখস করে কিছু লিখছে আর সাথে সাথে তা আবার ছিড়ে ফেলে দিচ্ছে মাটিতে। তার কপালে ঘাম। যেন কাজটি তার দায় পড়া। এর মাঝেই গাঢ় স্বরে শোনা গেল,
“টিক টিক টিক, চার, তিন, দুই, এক। সময় শেষ”
সাথে সাথেই সময় ভীত চোখে পেছনে তাকাল। আকুতি করে বলল,
“আমার ভুল হয়ে গেছে, আর হবে না। আমার সত্যি ই ভুল হয়ে গেছে”
কিন্তু তার অনুনয় বিনয় গুলো পাথরের মন গলাতে পারলো না। নিষ্ঠুর ভাবে ধরিয়ে দেওয়া হল তার হাতে ধারালো ছু/রি। দুহাত শক্ত করে ধরল মাস্ক পরিহিত মানুষটি। তার চোখ জ্বলজ্বল করছে। চোখের ভাষা ভয়ংকর। শিরদাঁড়া কেঁপে উঠল নবনীতার সেই চোখ দেখে। মুহুর্তেই কাঠের পুতুল হয়ে গেল সময়। তার হাত যেন ওই মানুষটির নিয়ন্ত্রণে। ফলে না চাইতেও ছু/রি ধরা হাতটি চালিয়ে নিলো নিরস্ত্র হাতের উপর। চামড়া, শিরা কেটে ফিনফিন করে র/ক্তের ফোয়ারা বইল। অমসৃণ মেঝে রক্তিম হয়ে উঠল। সাথে সাথেই ঘুম ভেঙ্গে গেল নবনীতার। আশপাশ তাকিয়ে দেখল সে তার ঘরেই আছে। কণ্ঠ শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাবে। বিশ্রী কালো ভয় তাকে গ্রাস করে রেখেছে। মনে হচ্ছে কেউ ঘাড়ে চেপে বসেছে। অসাড় লাগছে হাত পা। সাইড টেবিলের ল্যাম্পটি জ্বালাতেই ভয়টা গাঢ় হল। নিজের হাতের দিকে চাইতেই ভয়ে থিতিয়ে গেল। গাঢ় লাল রক্তে হাত রক্তিম হয়ে আছে তার। শুধু তাই নয়, সাদা জামাটিতেও লেগে আছে তাজা রক্তের দাগ…………
চলবে